01-07-2021, 10:55 PM
বিছানায় উঠে বসে গালে হাত দিয়ে কি যেন ভাবতে লাগলো বিদিশা। মনে হল, এমন ভাবে আমার জন্য চিন্তা করা শুরু করে দিয়েছে, এবার কিছু একটা ও করেই ছাড়বে।
কিছুক্ষণ ভেবে টেবে এবার নিজেই খুশিতে আমার গালে একটা চুমু খেয়ে বসলো। আমাকে বললো, হয়ে গেছে। আর কোন চিন্তা নেই।
আমি বললাম, কি হয়ে গেছে? কি চিন্তা নেই?
বিদিশা বললো, চাকরি করে কি হবে? তুমি বরং ব্যাবসা করো।
‘ব্যাবসা? সে তো অনেক টাকার ব্যাপার বিদিশা। অত টাকা আমি কোথায় পাবো?’
বিদিশা আবার শুয়ে পড়ে, আমার মুখের কাছে মুখটা এনে বললো, ‘তুমি ব্যাবসা করবে কিনা বলো। টাকার জন্য তোমাকে ভাবতে হবে না।’
যেন লাগলে টাকা দেবে গৌরী সেন। বুঝলাম বাবাকেই গৌরী সেন বানাতে চাইছে বিদিশা। আমার বুকের ওপর আবার আঙুল দিয়ে হিজিবিজি কাটতে কাটতে বললো, কত চাই? দুলাখ, পাঁচলাখ, না আরো বেশী? যা চাইবে, তাই পাবে। আমি আছি না?
‘ও আমার দরদীনি গো। কি বলে কি মেয়েটা? অত টাকা জোগাড় করে দেবে তুমি আমাকে?’
বিদিশা বললো, কেন বিশ্বাস হচ্ছে না?
আমার বুকের ওপর হাতটা রেখে আস্বস্ত করলো বিদিশা। চোখের পাতাদুটো একবার বুজিয়ে বোঝাতে চাইলো, আমি আছি না?
আমি জানি বিদিশারা খুব বড়লোক। দু পাঁচ লাখ টাকা ওর বাবার কাছে কিছুই নয়। তবু বললাম, ‘বিদিশা, তুমি আমার জন্য এতটা করবে?’
‘কেন করতে পারি না?’ বিদিশা যেন এবার একটু অভিমানি হয়ে গেল। আমাকে বললো, ‘আমি কি তোমার কেউ নই?’
উঠে বসে ওর গাল দুটো দুহাতে ধরলাম। বললাম, তুমিই তো আমার সব কিছু বিদিশা। আমার সাথী তুমি, আমার ভালোবাসা তুমি, আমার প্রেরণা তুমি। আমার জীবনের যা কিছু, সবকিছু তুমি।
বিদিশা চোখে চোখ রেখে বললো, থাক আর কবি হতে হবে না। তাহলে তুমি আমাকে না করবে না বলো।
ঘাড় নেড়ে ওকে জানান দিলাম। বললাম, তোমাকে আমি কি কখনও না করতে পারি?
দেখলাম ওর ঠোঁটদুটো আমার ঠোঁটের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে এবার। চুমুটা খেতেই যাচ্ছিলাম। বিদিশা বললো, মা বাড়ীতে নেই, আমাকে পেয়ে খুব দস্যিপানা করতে ইচ্ছে করছে বুঝি?
আমি ওর কথা শুনে মুখটা ঘুরিয়ে নিলাম। দেখলাম বিদিশা আবার নিজে থেকেই আমার গালে গাল ঘষছে। যেন রাগ ভাঙাচ্ছে, সেভাবেই আমার থুতনীটা হাত দিয়ে নাড়তে লাগল। আমাকে বললো, কি রাগ আমার পতিদেবতার? আমি বুঝি চুমু খেতে মানা করেছি তোমাকে?
নিজেই নরম ঠোঁটটা আমার কঠিন ঠোঁটের সাথে ডুবিয়ে দিলো। চুম্বনটা গাঢ হচ্ছে, এই প্রথম ভালবাসার গভীরতা অনুভব করছি। আমাকে চুমু খেতে খেতেই বিদিশা আমাকে জড়িয়ে ধরে হাত দিয়ে আমার পিঠের সবল মাংস পেশীর সাথে খেলা করতে লাগল। সুখটটা যেন ভালবাসার আলিঙ্গনে ক্রমশ আছড়ে পড়ছে। ভাবছি বিদিশার মত মেয়ে আমি পেয়েছি, আমার জীবন ধন্য। আজ যেন বিদিশার মধ্যে এক অনন্য রূপকে আমি দেখলাম। ওকে যেন নতুন করে আমি আবিষ্কার করলাম।
সেদিনের সেই অনুভূতির স্মৃতি আজও আমার মনকে অস্থির করে তোলে। মাঝে মাঝে ভাবি, কেন তুমি আমাকে ছেড়ে চলে গেলে বিদিশা? আমি তো তোমাকে ঠকাতে চাইনি। সত্যিই চাইনি।