01-07-2021, 10:49 PM
দুই
মা বলল, কি রে দেব? তুই কি আজকে অফিস যাবি না? সকালে উঠে লেখালেখি করতে শুরু করলি, অফিস যাবি কখন? নটা তো বেজে গেল। এরপরে কখন চানে যাবি, আর কখন তৈরী হবি। তোকে দেখে মনে হচ্ছে তোর আজ কোন তাড়া নেই।
মাকে বললাম, না গো মা। অফিস তো যাবই। আজ আবার শুভেন্দুর বাড়ীতেও একটু আমাকে যেতে হবে। ও বলেছে সাতটার পরে আসতে। ভাবছি অফিস থেকে বেরিয়ে সোজা ওখানেই-
মা বলল, শুভেন্দু? কেনরে? হঠাৎ এতদিন পর?
কারনটা আমিও জানি না। মা’ কে বললাম, ওকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, বলেনি। শুধু বলল, তোকে ডেকেছি যখন ব্যাস আসতেই হবে। আর কিছু আমি শুনতে চাই না। আজ তোকে আসতেই হবে উইথ আউট ফেল। তোর জন্য এখানে অনেক সারপ্রাইজ আছে।
শুভেন্দু বলেছে, অথচ আমি ওর ডাকে যাইনি, এমন খুবই কম হয়েছে। শুভেন্দু আমাকে একসময় অনেক হেল্প করেছিল। ব্যাবসার আর্থিক ক্ষতিতে দেনায় একসময় ডুবে গিয়েছিলাম। শুভেন্দু আমাকে বেশ কিছু টাকা ধার দিয়ে তখন বাঁচিয়েছিল। দেনাগুলো শোধ করেছি, ওকেও একটু একটু করে পুরোটা শোধ করেছি। শুভেন্দুর করা উপকার জীবনে কোনদিন ভুলতে পারব না। একমাত্র কলেজের পরে ওই আমার সাথে যোগাযোগটা রেখেছিল। পিকনিক গার্ডেনে চারতলা ওদের বিশাল বাড়ী। শুভেন্দুরা চার ভাই। শুভেন্দু তার মধ্যে ছোট। বড়ভাই ওকালতি করেন, মেজভাই ডাক্তার। আর সেজ ভাইয়ের সাথে শুভেন্দু জয়েন্টলি প্রোমোটারি ব্যাবসা করে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে কয়েকটা ফ্ল্যাট বাড়ী তৈরী করে অনেক টাকা রোজজগার করে নেয়। শুভেন্দুর একটি মাত্র বোন মাধুরীকে বিয়ে করল রনি। এদিক দিয়ে রনি খুব লাকি। আসলে রনিদের আবার বড়বাজারে বিশাল বিল্ডিং মেটারিয়ালের দোকান। রনি যখন কলেজে পড়ে, তখন ওর বাবা দোকানটা চালাতো। বিশাল ব্যাবসা। রনি ব্যবসার দায়িত্ব নিল কলেজ পাশ করার পর। সেজভাই দীপেন্দু আগে থেকেই প্রোমোটারি লাইনে ছিল। শুভেন্দু এবার যুক্ত হল। ব্যাবসায়িক এবং কলেজের বন্ধুত্বের গাঢ় সম্পর্ক। রনি তারপর থেকেই শুভেন্দুর বাড়ীতে যাতায়াত শুরু করল। মাধুরীকে দেখে রনির প্রেম। তারপরেই বিয়ে। রনির বিয়েতে আমরা সবাই গিয়েছিলাম। বিদিশাও এসেছিল। তার ঠিক পরের দিনই বিদিশা আমাকে ছেড়ে চলে যায়। বৌভাতে বিদিশা যায় নি। বলেছিল, ‘দেব’ যেখানে থাকবে, সেখানে কোনদিন যাব না। ও ভীষন পাপী। মিনুকে নিয়ে যা কান্ডটা ‘দেব’ করেছে, তারপর ওর মুখ দেখাটাও পাপ। আমি কেন যে ওকে ভালবেসে ভুলটা করেছিলাম, সেটাই এখন বুঝতে পারছি। ‘দেব’ ই আমার চোখ খুলে দিয়েছে।
বৌভাতে আমিও যাইনি। বিদিশার দূঃখে সারারাত অনেক কেঁদেছিলাম। ছেলে হয়ে কোন মেয়ের জন্য কাঁদছি। মা বলেছিল, তুই কি পাগল? যে বিদিশার জন্য এত কষ্ট পাচ্ছিস? মাকে বলেছিলাম, মা কষ্ট কেন পাচ্ছি, তুমি বুঝবে না। পৃথিবীতে ছেলেরাই শুধু দোষ করে আর মেয়েরা বুঝি সব ধোয়া তুলসী পাতা। বিশ্বাসটা অর্জন করতে যে অনেক সময় লেগে যায় মা, কিন্তু ভাঙতে একদিনও যে লাগে না এটা যেমন সত্যি। তেমনি সত্যি আর মিথ্যের বিচার না করেই, কেউ কাউকে অবিশ্বাস করতে একমূহূর্তও সময় নেয় না। এটা কি সহজে মেনে নেওয়া যায়? বিদিশা কেন এমন করল? ও যদি সত্যিটা একবার আমার কাছে জানতে চাইত, তাহলে হয়তো-
বিদিশাকে মা যতবারই দেখেছে, বিস্মিত হয়েছে। আমাকে বলেছে, নারে মেয়েটার মুখ চোখ খুব সুন্দর। আজকাল তো এমন মেয়ে পাওয়াই যায় না। কি রূপ, সুন্দর মুখশ্রী ওর। ভগবান যেন আলাদা তুলি দিয়ে ওকে গড়েছেন। ওর দিকে তাকিয়ে থাকলে মনে হয়, কলেজে ওই বোধহয় সবচেয়ে সুন্দরী। কেবল তোকেই ও শুধু ভালবেসেছে। আমি বলতাম, মা, বিদিশা শুধু সুন্দরী নয়। ওর মনটাও খুব ভাল। একেবারে ফুলের মতন নরম। বিদিশার পক্ষে আঘাত সহ্য করা তাই খুব কষ্ট। ও বলে, ‘‘জানোতো দেব, তোমার কাছ থেকে কোনদিন তো আমি আঘাত পাব না। তাই তোমার সাথে প্রেম করতেও খুব নিশ্চিন্ত বোধ করি। কি জানি অন্যের মনে কি আছে? তুমি খুব সরল। তোমার এই সরল মনটাই আমার সবচেয়ে বেশী ভালো লাগে। তাই তোমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখি, ভাবি দেব বলে পৃথিবীতে বোধহয় একজনই পুরুষ আছে, যে বিদিশার মনটাকে বুঝবে, তাকে ঠকাবে না। কোনদিন বিদিশাকে ছেড়ে দেব চলে যাবে না।’’
কলেজে বিদিশা সবসময় শাড়ী পড়ে আসত। কলেজ ছুটীর পরে আমরা দুজনে ঠিক দুঘন্টা একসাথে ঘুরতাম। কখনও কলেজ স্কোয়ারে, কখনও লেবুতলা পার্কে। এছাড়া ছুটীর দিনগুলোতে ভিক্টোরিয়া, গঙ্গার পাড় তো আছেই। বিদিশা বেশ কয়েকবার আমার বাড়ীতে এসেছে। মা’র সাথে প্রথম যেদিন আলাপ করালাম। ঢুপ করে মাকে একটা প্রনাম করে বসল। মা ওর থুতনীতে হাত রেখে আশীর্ব্বাদ করে বলল, বাহ্ তোমার মুখটা তো খুব সুন্দর। তুমি কি দেবের বন্ধু? না অন্যকিছু?
বিদিশা মুখ নিচু করে লজ্জায় হেসেছিল। আমাকে পরে বলেছিল, তুমি খুব দুষ্টু। মাকে বলোনি কেন? আমি তোমার কে?
বিদিশার গালে হাত রেখে বলেছিলাম, মা বাবাকে যেচে কিছু বলতে হয় না। ওনারা দেখলেই সব বুঝতে পারেন। মা যেমন তোমাকে দেখে বুঝে গেছে তুমি আমার কে?
বিদিশা একবারই আমাকে ওর বাসায় যেতে বলেছিল। সেদিন ওর জন্মদিন ছিল। তার আগে জানতাম না বিদিশারা খুব বড়লোক। ল্যান্সডাউনে বিশাল ওদের বাড়ীটা দেখে আমার মাথা ঘুরে গিয়েছিল। রনি সেদিন টিপ্পনি কেটে আমায় বলেছিল, ওরেব্বাস, দেব, তুই কি লাকী রে। বিদিশারা এত বড়লোক, আমরা কেউ তো এটা জানতাম না। কপাল করে তুই ই ওকে শুধু পেলি। না এর জন্য তোকে এবার একটা পার্টী দিতে হবে।
পার্টি আমি দেবো কি? সেদিন যা এলাহী ব্যাপার দেখেছিলাম, আমার মাথার ঠিক ছিল না। লোকে লোকারণ্য। যেন বিয়েবাড়ী। জন্মদিনেও এত অতিথির সমাগম হতে পারে, আমার ধারনা ছিল না। কম করেও চারশোর ওপরে অতিথি। এলাহী খাবারের আয়োজন। আমি জীবনে এরকম বার্থডে পার্টি দেখিনি।
অত বড় বাড়ীতে গাদা গাদা লোকের মধ্যে আমি যেন নেহাতই এক নগন্য অতিথি। চুপচাপ এক কোনে দাঁড়িয়ে বিদিশাকে একদৃষ্টে দেখে যাচ্ছিলাম। ও ঘোরাঘুরি করছিল, সবাইকে অ্যাটেন্ড করছিল। কিন্তু কিছুতেই একবারও আমার কাছে এসে কথা বলছিল না। কারুর সাথে আমার পরিচয়ও করিয়ে দিচ্ছিল না। হয়তো আমাকে সেদিন পরীক্ষা করেছিল বিদিশা। শুভেন্দুর সাথে একটা সিগারেট টানবো বলে সবে মাত্র বাইরে বেরিয়ে এসেছি। এমন সময় বিদিশা বাইরে এসে আমাদেরকে বলল, ‘‘এখানে কি করছ? ও ফোঁকার জন্য বাইরে আসা হয়েছি বুঝি? এই শুভেন্দু চল শীগগীর ভেতরে চল। কেক কাটা হবে। তোদেরকে বাদ দিয়ে আমি কেক কাটতে পারছি না।’’ আমাকে বলল, ‘‘যেই একটু কথা কম বলেছি, অমনি রাগ হয়েছে বুঝি? চলো ভেতরে চলো। বাবা মা দুজনেই তোমাকে দেখেছে দূর থেকে। বলেছি, ‘দেব’ হচ্ছে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। দেখোতো ওর সাথে কথা বলে, তোমাদের মেয়ে যাকে ভালবেসেছে, সে একদম ঠিকঠাক হয়েছে কিনা?বিদিশার বাবা মা আমার সাথে কথা বলবে? তার আগেই আমার হাত পা গুলো কেমন কাঁপছিল। শুভেন্দু বলল, ‘এই দেব, নার্ভাস হয়ে গেলি নাকি? তোকে দেখে তো মনে হচ্ছে বহূত টেনশনে পড়ে গেছিস। চল চল ভেতরে চল। কেক কাটা হবে। বিদিশা নয়তো আমাদের জন্য অপেক্ষা করবে। বাবা মার পর তোকেই ও ফার্স্ট কেকটা খাওয়াবে। এমন সুযোগ কিছুতেই মিস করিস না।’’
বিদিশার মা বাবা খুব ভাল। দুজনেই খুব অমায়িক। কেক কাটার পর বিদিশা ঠিক আমার মুখে প্রথম কেকটা গুঁজে দিল। তাই দেখে রনি আবার বলল, কিরে আমাদেরকেও খাওয়া। শুধু দেবকে খাওয়াবি, আর আমরা বাদ?
সেদিন বিদিশার জন্মদিনে আমরা সবাই গিয়েছিলাম। শুধু মিনু বাদে। শুক্লা এসেছিল একটু রাতের দিকে। সৌগত, শুক্লা আসছে না দেখে ওর জন্য ছটফট করে মরছিল। শেষ পর্যন্ত শুক্লা এলো। তবে দেরীতে। বলল, সরি গাইস্। একটু লেট হয়ে গেল। বাড়ীতে মার শরীরটা খুব খারাপ। হঠাৎই জ্বর। আমি শুধু এলাম, বিদিশার জন্য। ও অনেক করে আসতে বলেছে। আর যাই হোক বিদিশার কথা তো আর চট করে কখনও ফেলা যায় না। পার্টিটা অন্যকারুর হলে হয়তো আসতাম না।
সেদিন অনেক রাত্রি অবধি বিদিশাদের বাড়ীতে ছিলাম। ফেরার পথে সবাই মিলে একটা ট্যাক্সি ধরলাম। শুভেন্দু আর রনি এমন বদমাইশ, সৌগতকেও পটিয়ে নিয়ে, ট্যাক্সিভাড়াটা আমাকে দিয়েই দেয়া করালো। ফেরার পথে আবার দোকান থেকে তিনবোতল বিয়ার কিনলো ওরা তিনজনে। সে পয়সাও আমি দিলাম। আমাকে বলল, ‘‘আজকি শাম, তোর আর বিদিশাকে নাম। এবার থেকে মাঝে মধ্যেই আমরা তোর আর বিদিশার খুশীতে পার্টি দেবো। আর সে খরচা পুরো তুই বীয়ার করবি। বিদিশার সাথে যতদিন তোর বিয়ে না হচ্ছে, এইভাবেই তুই আমাদের খুশি করে যা। বন্ধুদের খুশি করলে, আমরাও তোকে আশীর্ব্বাদ করব। প্রেমটা তাহলে আরও জমাট বাঁধবে।’’
সত্যিই জমাট বেঁধেছিল আমার আর বিদিশার প্রেমটা। প্রথম প্রথম ওকে অবশ্য বেশী পাত্তা দিতাম না। একদিন লাইব্রেরী রুমে বসে আছি। দেখলাম বিদিশা ঢুকলো, তিনটে মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে। আমি যে টেবিলটায় বসে বায়োলজী পড়ছি, ও ঠিক তার পাশের টেবিলটাতেই বসল। আড়চোখে আমাকে দেখছে। আমি বইয়ের মধ্যে চোখটাকে নিবদ্ধ করে বসে আছি। মেয়েটাকে ক্যান্টিনে দেখেছি, বেশ কিছুদিন ধরে। মূগ্ধ হয়ে আমার গান শোনে। কিন্তু আজকে হঠাৎ লাইব্রেরী রুমে আমার পাশে বসে এখানে কি করছে?
ও এভাবে আড়চোখে দেখছেই বা কেন আমাকে? মনে হল, কিছু একটা মতলব নিয়ে এসেছে মনে হয়। কিছুক্ষণ বসে, আমার দিকে ওভাবে তাকিয়ে তারপর চলে গেল। একটু পরে শুভেন্দু এলো ওখানে। ওকে বললাম, মেয়েটাকে চিনিস?শুভেন্দু বলল, কোন মেয়েটা বলতো?
-একটু আগে এখানে এসেছিল। আমাকে দেখছিল আড়চোখে। মেয়েটাকে কদিন দেখেছি ক্যান্টিনে। দেখতে বেশ ভালো। স্লিম ফিগার, লম্বা হাইট। চোখ মুখও খুব সুন্দর। কিন্তু আমার প্রতি ওর এত ছোঁক ছোঁক কেন? এত আগ্রহ নিয়ে দেখছিল, মনে হল-
শুভেন্দু বলল, কোন মেয়েটা বলতো? আমাদের ক্লাসের নিশ্চই নয়। তাহলে তুইও বুঝতে পারতিস। এ কলেজে সুন্দরী বলতে তো একজনই আছে। তুই যা বর্ণনা দিচ্ছিস, তাতে মনে হচ্ছে, ফার্স্ট ইয়ারের ওই মেয়েটা। কি যেন নাম। ওকে আমিও দেখেছি একদিন, ক্লাসে এসে তোর খোঁজ করছিল। তুই সেদিন কলেজে আসিস নি।
আমি অবাক হলাম। বললাম, আমার খোঁজ করছিল? কে বলতো? ফার্স্ট ইয়ারে ভর্তি হয়েছে। এমন সুন্দরী মেয়ে এ কলেজে কে আছে? তুই কার কথা বলছিস?
শুভেন্দু বলল, প্রেমঘটিত কোন ব্যাপার মনে হচ্ছে। এ মেয়েটা তোর প্রেমে পড়ল না তো? কি রে দেব? এতো লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট মনে হচ্ছে।
কলেজে এত মেয়ে। আমি তো কারুর সাথে প্রেম করিনি। শুভেন্দুকে বললাম, হেঁয়ালি ছাড়। ব্যাপারটা জানতে হবে। তুই খবর নিয়ে দেখতো মেয়েটা আসলে কে? দেব চটকরে কারুর সাথে ভীড়বে না।
শুভেন্দু আমার কথা মত কাজ করল। আমাকে বলল, তুই এখানেই বস। আমি এখুনি আসছি।
আমাকে লাইব্রেরী রুমে বসিয়ে রেখে ও চলে গেল। ফিরে এল আধঘন্টা পরে। আমাকে এসে বলল, এই দেব, বিদিশা তোকে ডাকছে, চল আমার সঙ্গে একটু তিনতলায় চল। ও সিঁড়ির মুখে দাঁড়িয়ে আছে। আমাকে বলল, ওকে একটু ডাকবে? বলো, আমি ওর জন্য এখানে অপেক্ষা করছি।
আমি একটু বিরক্ত হলাম। শুভেন্দুকে বললাম, কেন? আমি যাব কেন? কে না কে বিদিশা আমাকে ডাকছে, ওর কিছু বলার থাকলে, ওকে বল, এখানেই আসতে। আমি তো লাইব্রেরী রুমেই বসে আছি।
শুভেন্দু ঠিক বুঝতে পারল না। আমাকে বলল, ‘‘যা বাবা। মহা হ্যাপাতো? তুই তো বললি, আমাকে যেতে। ও তোকে কিছু হয়তো বলতে চায়। চল না আমার সঙ্গে। তাহলেই বুঝতে পারবি।’’
আমি কিছুতেই গেলাম না। শুভেন্দুকে বললাম, ছাড় ওকে। ছেড়ে দে। পরে দেখা যাবে। ওর যদি দরকার থাকে, ও নিজেই আমার কাছে আসবে। আমি যাব না।
আসলে বিদিশাকে আমি খেলাতে চাইনি। কিন্তু কেন জানি আমার মনে হয়েছিল, কলেজের মেয়েগুলো সব বন্ধু হিসেবেই ঠিকই আছে। বেশী প্রেমের খেলা খেলতে গেলে মুশকিল। একেতো কলেজে এসে গান গেয়ে এমনই হীরো বনেছি, তাতেই পড়াশুনার বারোটা বাজছে। তারপরে আবার প্রেমে পড়লে, পড়াশুনা একেবারেই ডকে উঠবে। ভালো চাকরি পাওয়া তো দূর কেরানীর চাকরীও তখন জুটবে না কপালে। অতএব এসব বিদিশা টিদিশাকে যত দুরে রাখা যায় ততই মঙ্গল।