30-06-2021, 06:06 PM
একটু বিশ্রাম নেবার পর আকাশ ওর বইটা নিয়ে বাইরে গিয়ে বসে। কিন্তু সুনিতার কোন চিহ্ন নেই। অনেকক্ষণ আকাশ একা একা বসে থাকে। এক সময় সুনিতার মা বাইরে গিয়ে আকাশকে বসে থাকতে দেখে ভেতরে গিয়ে সুনিতাকে বললেন বাইরে যেতে। সুনিতা বলে ও যাবে না আকাশের কাছে। ওর মা বুঝলেন কিছু একটা হয়েছে। মেয়ের কাছে বসে ওর মাথায় হাত দিয়ে জানতে চাইলেন কি হয়েছে ওর। সুনিতা মায়ের কোলে মুখ লুকিয়ে কাঁদতে কাঁদতে অনেক কিছুই বলে গেল যার একটা কিছু ওর মা বুঝতে পারলেন না। শুধু বুঝতে পারলেন যখন দিব্যা ক্যানালে চান করছিল তখন আকাশ তাকিয়ে তাকিয়ে দেখেছে। মা বললেন শুধু একটু দেখলে কি হয়েছে। ছেলে মানুষ সুন্দর কিছু দেখলে তো তাকিয়ে দেখবেই। সুনিতা বলে উঠল আকাশ শুধু ওর, আর তাই ও অন্য কাউকে দেখবে না। মা বললেন জীবনে অতো কঠোর হতে নেই। সুনিতা যদি আকাশকে বেশী বেঁধে রাখতে চেষ্টা করে তবে আকাশ ওর কাছ থেকে পালিয়ে যাবে। সুনিতা বুঝেও মুখ গুঁজে বসে থাকে। মা ওকে ধরে উঠিয়ে ওর চুল ঠিক করে দিয়ে ওর হাত ধরে বাইরে নিয়ে গেল। তারপর আকাশের সামনে নিয়ে গিয়ে ওর হাতে সুনিতার হাত দিয়ে ওনার ভাষায় বললেন উনি ওনার সুনিতার হাত আকাশকে দিলেন আর আকাশ যেন চিরদিন সুনিতাকে আগলে রাখে। স্বভাবতই আকাশ কিছু বুঝতে পারে না। সুনিতা তখন আসতে করে মানে বুঝিয়ে দিল। আকাশ বলে যে ও সবসময় সুনিতাকে নিয়েই থাকবে আর ওর সব রকম প্রয়োজন পুরন করবে। ওর মা চলে গেলেন।
আকাশ এই ব্যাপারটা জানত। তাই সুনিতাকে কোন কিছু না বলে ওর মাথা বুকের মধ্যে ধরে বসে থাকে। পাঁচ মিনিট চুপ করে বসে থাকার পর সুনিতা বলে আকাশ আরও একমাস থেকে যেতে পারে না ওর সাথে। আকাশ বলে ও চেষ্টা করবে আর বুধবার জানাবে। সাথে সাথে মুখ হাঁসি হাঁসি করে বলে সেদিন সূর্য বেশী উজ্জ্বল লাগছে। আরও বলে যতদিন আকাশ পালঘাটে থাকবে সেই কদিনে যতক্ষণ আকাশ বাড়ীতে থাকবে সুনিতা ওর সাথে থাকতে পারে, ওর মা সেই অনুমতি দিয়েছেন। আকাশও খুব খুশী হল।
আকাশ সুনিতাকে বুকের মধ্য জড়িয়ে ধরতেই সুনিতা ওর বুকে মুখ রেখে আবার কেঁদে ফেলে। বলতে থাকে ও কেন অন্যদের দেখবে। আকাশ যত বলে ও আর কোনদিন কাউকে দেখবে না সুনিতার কান্না তত বেড়ে যায়। একটু পরে সুনিতা আকাশের লিঙ্গ খামচে ধরে বলে ও কেন দিব্যাকে ওইটা ধরতে দিয়েছিল। ওর নিশ্চয়ই মাথায় খারাপ মতলব ছিল। তারপর আকাশ অনেক কষ্টে, অনেক প্রতিজ্ঞা করে, অনেক আদর করে আধ ঘণ্টা পরে সুনিতাকে শান্ত করতে পারে। আকাশ ওর চেয়ারে বসে পড়তে সুনিতা অভ্যেস মত ওর কোলে মাথা রেখে বলে ও আকাশকে খুব ভালোবাসে, শুধু আকাশকেই ভালোবাসে। যেমন আকাশকে কেউ যদি কখনো কষ্ট দেয় ও সেটা সহ্য করতে পারবে না সেইরকম অন্য কেউ যদি আকাশের সাথে সেক্স জাতীয় কোন আনন্দ করতে যায় সেটাও মেনে নেবে না। আর বার বার বলতে লাগে আকাশ শুধু ওর, শুধু ওর নিজের। আরও অনেক পরে সুনিতা শান্ত হলে আকাশ ওকে ঘরে দিয়ে এলো। সেদিন আর “তিনবন্ধু” পড়া হল না। রাত্রে আকাশ সুনিতার দুঃখ বলে রাজনকে। রাজন বলে ও আর দিব্যা দুজনেই খুব খোলা মনের। ওরা এইসবকে কখনই সিরিয়াসলি নেয় না।
পরদিন সোমবার। আকাশের শেষ সপ্তাহ। রবিবার রাত্রে ও ব্যাঙ্গালর চলে যাবে। সকালবেলা দুজনে পাশাপাশি বসে, চুপ করে সূর্য দেখছিল। আকাশের হাত সুনিতার কাঁধে আলতো করে রাখা। আকাশ ওর চুল নিয়ে খেলছিল। হাত আস্তে আস্তে ওর গালে যেতেই আঙ্গুলে জল ঠেকল। আকাশ চমকে উঠে ঘুরে দেখে সুনিতার চোখ দিয়ে জল গরিয়ে পড়ছে। আকাশ ওর মাথা নিজের বুকে টেনে নিতে সুনিতা আরও জোরে কেঁদে ওঠে। আকাশ ওকে কাঁদতে দেয়। কারণ ও যদি সান্তনা দিতে যায় সুনিতা আরও কাঁদবে। সুনিতা কাঁদতে থাকে।
সব মেয়েদেরই কান্নার একটা সময়সীমা থাকে। বেশিরভাগ মেয়ে ৬ মিনিটএর বেশী একটানা কাঁদতে পারে না। কিন্তু ওদের ৬ মিনিট শেষ হবার আগে যদি কেউ সান্তনা দেয় বা কোন কিছু কথা বলে তবে ওদের টাইমার রিসেট হয়ে যায় ওরা আবার ৬ মিনিট কাঁদতে পারে। অনেক সময় এই রিসেট কোন নতুন লোক দেখলে বা কিছু মনে পড়লেও হতে পারে। কিচু মেয়েদের ক্ষেত্রে এই সময়সীমা একটু বেশী আর কিছু মেয়ের একটু কম। ছেলেদের এই সময়সীমা ১ থেকে ২ মিনিট।
আকাশ এই ব্যাপারটা জানত। তাই সুনিতাকে কোন কিছু না বলে ওর মাথা বুকের মধ্যে ধরে বসে থাকে। পাঁচ মিনিট চুপ করে বসে থাকার পর সুনিতা বলে আকাশ আরও একমাস থেকে যেতে পারে না ওর সাথে। আকাশ বলে ও চেষ্টা করবে আর বুধবার জানাবে। সাথে সাথে মুখ হাঁসি হাঁসি করে বলে সেদিন সূর্য বেশী উজ্জ্বল লাগছে। আরও বলে যতদিন আকাশ পালঘাটে থাকবে সেই কদিনে যতক্ষণ আকাশ বাড়ীতে থাকবে সুনিতা ওর সাথে থাকতে পারে, ওর মা সেই অনুমতি দিয়েছেন। আকাশও খুব খুশী হল।