28-06-2021, 01:20 PM
যতই বিপদের চিন্তা থাকুক, আমার জীবনের আজকের দিনটা সেরা। এই নয় যে শুধুমাত্র আমার ভালোবাসা খুঁজে পেয়েছি বলে। পুরো পরিবার একসাথে বসে খাওয়ার আনন্দটা যে কি তা আজ আমি বুঝলাম। হাসি গল্প ঠাট্টার মধ্যে খাওয়ার আনন্দটাই আলাদা।
খাওয়া দাওয়া সাঙ্গ হতেই বেলা গড়িয়ে গেলো। সন্ধ্যায় গল্পের মাধ্যেমে অনেক না জানা কথা জানলাম। ছোটবেলার নানান মজার মজার ঘটনা শুনলাম। কথায় কথায় জিজ্ঞেস করলাম -- আমরা যে এখানে আছি তা ত কাকা জানে, যদি এখানে এসে হামলা চালায়।
-- সে গুড়ে বালি বাপজান। এত বড় বুকের পাঠা ওর এখনো তৈরী হয়নি। আমি যে কি ভালোরকম জানে ও।
-- বুঝলাম, আচ্ছা একটা কথার উত্তর আমায় দাও। আমায় যে ছাড়ানোর ব্যাবস্থাটা করেছিলে সেটা কিভাবে করলে।
একটু হেসে নিলেন মোক্তার -- বাপজান সেই আট বছর বয়স থেকে ঠাকুরের সাথে থেকেছি। অনেক চরাই উতরাই আমরা একসাথে পার করেছি। ঠাকুরের শিষ্য হয়ে অনেক কিছুর মার প্যাঁচ আমার জানা। তোমার বাবা এখানে আসার সাথে সাথে কিছু প্ল্যান তৈরী করে নিলাম। আমার বয়স হয়েছে আগের মত অত আর দৌড়ঝাঁপ করতে পারিনা। তাই মুক্তই আমার ভরসা। অন্য যারা আছে তাদের ওপর ভরসা থাকলেও তোমার ব্যাপারে অন্যের ভরসাতে ছারতে পারবোনা। ঠাকুর আমায় ক্ষমা করতেন না। মুক্তকে সবটা বুঝিয়ে দিলাম। তোমায় ওরা কোথায় রেখেছে এই খবর জোগার করতে বেশি সময় লাগেনি। খিদিরপুর ডক থেকে একটু তফাতে মাঝ নদীতে একটি জাহাজে তোমাকে রেখেছিলো। জাহাজের ক্যান্টিনের ছেলেটিকে গুম করে মুক্তকে পাঠিয়ে দিলাম। আমি আশেপাশেই ছিলাম। মুক্তর মিষ্টি ব্যাবহারে মন গোলে ও ওদের বিশ্বাসভাজন হয়ে উঠলো। তারপর আমার চিঠি তোমায় দেখিয়ে বের করে আনতে ওর কোন অসুবিধাই হইনি।
-- ওই চিঠিটা তোমার লেখা?
-- হ্যাঁ। ঠাকুরের কাছে অস্ত্রচালনার সাথে সাথে লেখাপড়াও কিছু শিখেছি বৈকি।
গল্প করতে করতে অনেক রাত হলো খাওয়ার পর্ব শেষ হতেই সবাই এর অলক্ষে মিত্রার হাত ধরে বাইরে চলে এলাম। পুকুরের ধারটা বেশ ফাঁকা ফাঁকা ওখানে এখন কেউ যাবার প্রশ্নই ওঠে না। সেখানেই গেলাম দুজনে। আকাশ পরিষ্কার পূর্ণ চাঁদ মাথার ওপর রয়েছে। চন্দ্র স্নিগ্ধ আলোয় মিত্রার দিকে তাকালাম। আশ্চর্য মোহময়ী লাগছে। এই মেয়েকে আমি কিছুতেই কিছু লুকোতে পারবোনা। আজ দুপুরের ঘটনাটায় এখনও মনের মধ্যে খচখচ করছে। যা করেছি তা আমার ভালোবাসার কাছে অকপটে স্বীকার করতে চাই তাতে যা শাস্তি আমায় দেবে আমি মাথা পেতে নেব।
মিত্রার সামনে দাঁড়িয়ে মাথা নীচু করে বললাম -- তোমায় কিছু বলতে চাই আমি।
-- বলো
-- আজ তোমার অজান্তে আমি একটা ভুল করে ফেলেছি।
-- কি ভুল
দুপুরে মাসির সাথে ঘটে যাওয়া সবটাই বলে দিলাম মিত্রাকে।
বেশ কিছুক্ষন কেটে গেছে। দুজনেই নীরব। লজ্জায় মাথা তোলার আর সাহস করতে পারিনি। আমার গালে মিত্রার নরম হাতের স্পর্শ পেলাম। আমার মুখটা তুলে ধরলো। লক্ষ করলাম মিত্রার চোখের কোনে জল চিকচিক করছে। বুকটা মোচড় দিয়ে উঠলো।
জলে ভরা চোখে একটু হেঁসে বললো -- তুমি যে আমার কাছে কিছু লুকালে না এতে আমি খুব খুশি হয়েছি। ভালোবাসাটা দাঁড়িয়ে থাকে একটা বিশ্বাসের ওপর। বিশ্বাস ভেঙে গেলে ভালোবাসাও ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। তুমি যা করেছো সেটা এই যে আমার কাছে স্বীকার করলে এতেই আমি খুশি। কিজানো আমি তোমাকে মন থেকে ভালোবেসেছি। শরীর ত একটা নিমিত্ত মাত্র। তুমি তোমার মনটা শুধু আমার জন্যই রেখো তাহলেই আমার হবে।
আমার চোখেও জল চলে এসেছিলো আবেগে মিত্রাকে বুকে জড়িয়ে ধরলাম। এই পাগলিটা আমাকে এত ভালোবাসে?
-- জানো রাজ একটা মেয়ে নিজের ভালোবাসাকে কোনদিন কারোর সাথে শেয়ার করতে চায়না। এদিক দিয়ে আমরা সত্যি খুবই স্বার্থপর। তবে মাসির জন্য তুমি যা করেছো তাতে তোমার প্রতি আমি একটুও রাগ করিনি। জানো রাজ, মাসি ভীষন একা আমি ওনার কষ্টটা বুঝি। স্বামী সুখ পাওয়ার আগেই স্বামীকে হারান। স্বামীকে খেয়েছে, এই অপবাদে সারাজীবন কাটানো, এটা যে কতবড় কষ্ট তা বলে বোঝানো যায়না। আমায় উনি খুব ভালোবাসেন ওনার সাথে আমি বন্ধুর মতো মিশি। তোমার ব্যাপারে আমার মুখ থেকে অনেক কিছু শুনেছেন। আমাদের ছোটবেলার স্মৃতি আমি ওনাকে বলেছি। হঠাৎ একদিন আমায় বলে মিতু তোর বরকে ফিরে পেলে একদিন আমায় ধার দিবি। প্রথমটা মজার ছলে উড়িয়ে দিতে চাইলাম কথাটাকে কিন্তু ওনার চোখমুখের অভিভ্যাক্তি দেখে বুঝলাম কতটা আকুল উনি। এবার তোমায় আমি একটা সত্যি বলি?
জিজ্ঞাসা ভরা দৃষ্টিতে তাকালাম মিত্রার চোখে।
-- আজ মাসির চোখের অভিব্যাক্তি ঠিক সেইদিনের মত দেখলাম। আকুতি ভরা চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। মানা করতে পারলাম না। নিজের বুকে পাষান চাপা দিয়ে মাথা হেলিয়ে সম্মতি দিলাম। আমি মেয়ে হয়ে নিজের ভালোবাসাকে অন্যের হাতে তুলে দিলাম।
চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়লো মিত্রার। বুড়ো আঙুল দিয়ে মুছে কপালে ছোট একটা চুমু খেয়ে জড়িয়ে ধরলাম ওকে, সারাজীবন একে এভাবেই বুকের মাঝে লুকিয়ে রাখবো। কোনমতেই একে হারাতে পারবো না।
খাওয়া দাওয়া সাঙ্গ হতেই বেলা গড়িয়ে গেলো। সন্ধ্যায় গল্পের মাধ্যেমে অনেক না জানা কথা জানলাম। ছোটবেলার নানান মজার মজার ঘটনা শুনলাম। কথায় কথায় জিজ্ঞেস করলাম -- আমরা যে এখানে আছি তা ত কাকা জানে, যদি এখানে এসে হামলা চালায়।
-- সে গুড়ে বালি বাপজান। এত বড় বুকের পাঠা ওর এখনো তৈরী হয়নি। আমি যে কি ভালোরকম জানে ও।
-- বুঝলাম, আচ্ছা একটা কথার উত্তর আমায় দাও। আমায় যে ছাড়ানোর ব্যাবস্থাটা করেছিলে সেটা কিভাবে করলে।
একটু হেসে নিলেন মোক্তার -- বাপজান সেই আট বছর বয়স থেকে ঠাকুরের সাথে থেকেছি। অনেক চরাই উতরাই আমরা একসাথে পার করেছি। ঠাকুরের শিষ্য হয়ে অনেক কিছুর মার প্যাঁচ আমার জানা। তোমার বাবা এখানে আসার সাথে সাথে কিছু প্ল্যান তৈরী করে নিলাম। আমার বয়স হয়েছে আগের মত অত আর দৌড়ঝাঁপ করতে পারিনা। তাই মুক্তই আমার ভরসা। অন্য যারা আছে তাদের ওপর ভরসা থাকলেও তোমার ব্যাপারে অন্যের ভরসাতে ছারতে পারবোনা। ঠাকুর আমায় ক্ষমা করতেন না। মুক্তকে সবটা বুঝিয়ে দিলাম। তোমায় ওরা কোথায় রেখেছে এই খবর জোগার করতে বেশি সময় লাগেনি। খিদিরপুর ডক থেকে একটু তফাতে মাঝ নদীতে একটি জাহাজে তোমাকে রেখেছিলো। জাহাজের ক্যান্টিনের ছেলেটিকে গুম করে মুক্তকে পাঠিয়ে দিলাম। আমি আশেপাশেই ছিলাম। মুক্তর মিষ্টি ব্যাবহারে মন গোলে ও ওদের বিশ্বাসভাজন হয়ে উঠলো। তারপর আমার চিঠি তোমায় দেখিয়ে বের করে আনতে ওর কোন অসুবিধাই হইনি।
-- ওই চিঠিটা তোমার লেখা?
-- হ্যাঁ। ঠাকুরের কাছে অস্ত্রচালনার সাথে সাথে লেখাপড়াও কিছু শিখেছি বৈকি।
গল্প করতে করতে অনেক রাত হলো খাওয়ার পর্ব শেষ হতেই সবাই এর অলক্ষে মিত্রার হাত ধরে বাইরে চলে এলাম। পুকুরের ধারটা বেশ ফাঁকা ফাঁকা ওখানে এখন কেউ যাবার প্রশ্নই ওঠে না। সেখানেই গেলাম দুজনে। আকাশ পরিষ্কার পূর্ণ চাঁদ মাথার ওপর রয়েছে। চন্দ্র স্নিগ্ধ আলোয় মিত্রার দিকে তাকালাম। আশ্চর্য মোহময়ী লাগছে। এই মেয়েকে আমি কিছুতেই কিছু লুকোতে পারবোনা। আজ দুপুরের ঘটনাটায় এখনও মনের মধ্যে খচখচ করছে। যা করেছি তা আমার ভালোবাসার কাছে অকপটে স্বীকার করতে চাই তাতে যা শাস্তি আমায় দেবে আমি মাথা পেতে নেব।
মিত্রার সামনে দাঁড়িয়ে মাথা নীচু করে বললাম -- তোমায় কিছু বলতে চাই আমি।
-- বলো
-- আজ তোমার অজান্তে আমি একটা ভুল করে ফেলেছি।
-- কি ভুল
দুপুরে মাসির সাথে ঘটে যাওয়া সবটাই বলে দিলাম মিত্রাকে।
বেশ কিছুক্ষন কেটে গেছে। দুজনেই নীরব। লজ্জায় মাথা তোলার আর সাহস করতে পারিনি। আমার গালে মিত্রার নরম হাতের স্পর্শ পেলাম। আমার মুখটা তুলে ধরলো। লক্ষ করলাম মিত্রার চোখের কোনে জল চিকচিক করছে। বুকটা মোচড় দিয়ে উঠলো।
জলে ভরা চোখে একটু হেঁসে বললো -- তুমি যে আমার কাছে কিছু লুকালে না এতে আমি খুব খুশি হয়েছি। ভালোবাসাটা দাঁড়িয়ে থাকে একটা বিশ্বাসের ওপর। বিশ্বাস ভেঙে গেলে ভালোবাসাও ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। তুমি যা করেছো সেটা এই যে আমার কাছে স্বীকার করলে এতেই আমি খুশি। কিজানো আমি তোমাকে মন থেকে ভালোবেসেছি। শরীর ত একটা নিমিত্ত মাত্র। তুমি তোমার মনটা শুধু আমার জন্যই রেখো তাহলেই আমার হবে।
আমার চোখেও জল চলে এসেছিলো আবেগে মিত্রাকে বুকে জড়িয়ে ধরলাম। এই পাগলিটা আমাকে এত ভালোবাসে?
-- জানো রাজ একটা মেয়ে নিজের ভালোবাসাকে কোনদিন কারোর সাথে শেয়ার করতে চায়না। এদিক দিয়ে আমরা সত্যি খুবই স্বার্থপর। তবে মাসির জন্য তুমি যা করেছো তাতে তোমার প্রতি আমি একটুও রাগ করিনি। জানো রাজ, মাসি ভীষন একা আমি ওনার কষ্টটা বুঝি। স্বামী সুখ পাওয়ার আগেই স্বামীকে হারান। স্বামীকে খেয়েছে, এই অপবাদে সারাজীবন কাটানো, এটা যে কতবড় কষ্ট তা বলে বোঝানো যায়না। আমায় উনি খুব ভালোবাসেন ওনার সাথে আমি বন্ধুর মতো মিশি। তোমার ব্যাপারে আমার মুখ থেকে অনেক কিছু শুনেছেন। আমাদের ছোটবেলার স্মৃতি আমি ওনাকে বলেছি। হঠাৎ একদিন আমায় বলে মিতু তোর বরকে ফিরে পেলে একদিন আমায় ধার দিবি। প্রথমটা মজার ছলে উড়িয়ে দিতে চাইলাম কথাটাকে কিন্তু ওনার চোখমুখের অভিভ্যাক্তি দেখে বুঝলাম কতটা আকুল উনি। এবার তোমায় আমি একটা সত্যি বলি?
জিজ্ঞাসা ভরা দৃষ্টিতে তাকালাম মিত্রার চোখে।
-- আজ মাসির চোখের অভিব্যাক্তি ঠিক সেইদিনের মত দেখলাম। আকুতি ভরা চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। মানা করতে পারলাম না। নিজের বুকে পাষান চাপা দিয়ে মাথা হেলিয়ে সম্মতি দিলাম। আমি মেয়ে হয়ে নিজের ভালোবাসাকে অন্যের হাতে তুলে দিলাম।
চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়লো মিত্রার। বুড়ো আঙুল দিয়ে মুছে কপালে ছোট একটা চুমু খেয়ে জড়িয়ে ধরলাম ওকে, সারাজীবন একে এভাবেই বুকের মাঝে লুকিয়ে রাখবো। কোনমতেই একে হারাতে পারবো না।