25-06-2021, 11:38 PM
তিন
বেলা তখন পড়ে এসেছে। তারই ফাঁকে ফাঁকে পশ্চিম দিকের সোনালী আকাশে তখন ছোট-ছোট মেঘের সংঘর্ষ চলেছে অবিরাম। রাস্তার দুই পাশের সবুজ গাছগুলো ডানা বিস্তার করে দিয়েছে অদূর নিবিড় কালো রাত্রির দিকে আঁখি তুলে।
সঞ্জীববাবু চলেছেন বংকুকে নিয়ে দেবলীনাকে দেখতে। যদি সম্ভব হয়, আজই তিনি পাকাপাকি সব রকম ব্যবস্থা করে আসবেন।
কালো ভ্রমরের মতো গাড়ীটা চলেছে ঘরঘর শব্দ করতে করতে মোহিত গ্রামে।
দেবলীনার বাবা ছিলেন সাংবাদিক। সপরিবারে বেশির ভাগ সময় তিনি বাংলার বাইরেই থাকতেন। সঙ্গে থাকতো তার ছোট ভাই বিশ্বনাথ। দেবলীনার বাবার মৃত্যুর পর তিনি যা কিছু টাকা পয়সা রেখে গিয়েছিলেন সেই টাকা দিয়ে দেবলীনার মা অরুণা দেবীর ইচ্ছা মতো বিশ্বনাথবাবু মোহিতপুর গাঁয়ে স্থায়ী বাসিন্দা হবেন বলে এই বাড়ীটি নতুন তৈরী করেছেন।
দেবলীনা যদিও ইউনিভার্সিটিতে পড়াশুনা করেছে তবু তার শিক্ষাগুরু ও দীক্ষাগুরু বলতে গেলে তার বাবা আর তার বাবার একান্ত বন্ধু অধ্যাপক চন্দ। বাবার বলিষ্ঠ চরিত্র আর মানবতার আদর্শে সে সব সময় নিজেকে অনুপ্রানিত করতে চেয়েছে।
গাড়ীটা দেবলীনাদের বাড়ীর দরজায় এসে গঁ গঁ শব্দ করতে করতে একরাশ ধূয়ো ছেড়ে থেমে গেলো।
দেবলীনা গ্রামের কতগুলো ছোট ছোট ছেলে মেয়ের সাথে ফুল বাগানটায় লুকোচুরি খেলছিলো, হঠাৎ গাড়ীটার সামনে এসে ভীড় করলো।
সঞ্জীবাবু গাড়ী থেকে নেমেই তাঁর মানস কন্যাকে দেখতে পেলেন। ভিতরে তাঁর আনন্দ-স্রোত উত্তাল বেগে বইতে লাগলো।
কেউ কিছু বলার আগেই বিশ্বনাথবাবুও ভিতর থেকে গাড়ীর শব্দ পেয়ে বেরিয়ে এসেছিলেন। তিনিই সঞ্জীববাবুকে জিজ্ঞাসা করলেন - আপনাকে তো ঠিক চিনতে পারলাম না।
সঞ্জীববাবুর মুখ যেন একটা ঈষৎ হাসিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠলো !
বিশ্বনাথবাবু বললেন - আসুন ভিতরে আসুন।
বংকু গাড়ীতে বসে রইলো, সঞ্জীববাবু ভিতরে গেলেন।
দেবলীনা নিজে এসে আসন পেতে দিলো।
সঞ্জীববাবু আগে কোন সংবাদ দিয়ে আসেন নি সুতরাং তাকে সব কথাই আগাগোড়া খুলে বলতে হলো।
এতে গররাজী হবার কিছু নেই। দেবলীনার মা অরুণা দেবী ও কাকা বিশ্বনাথবাবু দুজনেই রাজি হয়ে গেলেন। কথাবার্তা সব ঠিক হলো। দেবলীনাকে সেই কাপড়েই সঞ্জীববাবুর সামনে নিয়ে আসা হলো।
সঞ্জীববাবু বললেন - মেয়ে আমার দেখা আমি শুধু আশীর্বাদ করে যাবো। তবু সঞ্জীববাবু ভাবী পুত্রবধূকে আর একবার স্নেহের চোখে দেখে নিলেন। মন তার আনন্দের অতিশয্যে ডুবে গেলো।
দেবলীনার মাথায় হাত রেখে বললেন - তোমার নাম ?
- দেবলীনা দত্ত।
সঞ্জীববাবু যেন আর কিছু জিজ্ঞেস করার কথা মনেই আনতে পারলেন না। তিনি জানেন এ মেয়েকে আর কিছু জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন পড়বে না। মেয়ে তাঁর সব দিক দিয়েই পছন্দ হয়ে গেছে। কিন্তু মেয়েরও তো মতামত কিছু নেওয়া দরকার। তিনি দেবলীনাকে বললেন - হ্যাঁ মা, তোমার কি মত? সৌরভ এম, এ, বি, এল । এখন সে ওকালতিই করে। ভগবানের কৃপায় যশ, সন্মান এর মধ্যে সে সবই পেয়েছে। নেবে মা আমার এ আশীর্বাদ ?
দেবলীনার মুখ দিয়ে কোন কথা বের হয় না। নির্বাক হয়ে মাটির দিকে চেয়ে বসে থাকে সে।
সঞ্জীববাবু আবার বললেন - আমি জোর করে বলতে পারি, আমার এ আশীর্বাদ গ্রহন করলে জীবনে কোনদিন তুমি অসুখি হবে না।
বাতাসে ঝিরঝির করা গাছগুলোর মতো দেবলীনা মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো
সঞ্জীববাবুরই আজ জয় হলো। তিনি আনন্দের সাথে দেবলীনাকে মাথায় ধান দুলপো ও কপালে চন্দনের টিকা দিয়ে প্রাণ ভরে আশীর্বাদ করলেন।
বেলা তখন পড়ে এসেছে। তারই ফাঁকে ফাঁকে পশ্চিম দিকের সোনালী আকাশে তখন ছোট-ছোট মেঘের সংঘর্ষ চলেছে অবিরাম। রাস্তার দুই পাশের সবুজ গাছগুলো ডানা বিস্তার করে দিয়েছে অদূর নিবিড় কালো রাত্রির দিকে আঁখি তুলে।
সঞ্জীববাবু চলেছেন বংকুকে নিয়ে দেবলীনাকে দেখতে। যদি সম্ভব হয়, আজই তিনি পাকাপাকি সব রকম ব্যবস্থা করে আসবেন।
কালো ভ্রমরের মতো গাড়ীটা চলেছে ঘরঘর শব্দ করতে করতে মোহিত গ্রামে।
দেবলীনার বাবা ছিলেন সাংবাদিক। সপরিবারে বেশির ভাগ সময় তিনি বাংলার বাইরেই থাকতেন। সঙ্গে থাকতো তার ছোট ভাই বিশ্বনাথ। দেবলীনার বাবার মৃত্যুর পর তিনি যা কিছু টাকা পয়সা রেখে গিয়েছিলেন সেই টাকা দিয়ে দেবলীনার মা অরুণা দেবীর ইচ্ছা মতো বিশ্বনাথবাবু মোহিতপুর গাঁয়ে স্থায়ী বাসিন্দা হবেন বলে এই বাড়ীটি নতুন তৈরী করেছেন।
দেবলীনা যদিও ইউনিভার্সিটিতে পড়াশুনা করেছে তবু তার শিক্ষাগুরু ও দীক্ষাগুরু বলতে গেলে তার বাবা আর তার বাবার একান্ত বন্ধু অধ্যাপক চন্দ। বাবার বলিষ্ঠ চরিত্র আর মানবতার আদর্শে সে সব সময় নিজেকে অনুপ্রানিত করতে চেয়েছে।
গাড়ীটা দেবলীনাদের বাড়ীর দরজায় এসে গঁ গঁ শব্দ করতে করতে একরাশ ধূয়ো ছেড়ে থেমে গেলো।
দেবলীনা গ্রামের কতগুলো ছোট ছোট ছেলে মেয়ের সাথে ফুল বাগানটায় লুকোচুরি খেলছিলো, হঠাৎ গাড়ীটার সামনে এসে ভীড় করলো।
সঞ্জীবাবু গাড়ী থেকে নেমেই তাঁর মানস কন্যাকে দেখতে পেলেন। ভিতরে তাঁর আনন্দ-স্রোত উত্তাল বেগে বইতে লাগলো।
কেউ কিছু বলার আগেই বিশ্বনাথবাবুও ভিতর থেকে গাড়ীর শব্দ পেয়ে বেরিয়ে এসেছিলেন। তিনিই সঞ্জীববাবুকে জিজ্ঞাসা করলেন - আপনাকে তো ঠিক চিনতে পারলাম না।
সঞ্জীববাবুর মুখ যেন একটা ঈষৎ হাসিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠলো !
বিশ্বনাথবাবু বললেন - আসুন ভিতরে আসুন।
বংকু গাড়ীতে বসে রইলো, সঞ্জীববাবু ভিতরে গেলেন।
দেবলীনা নিজে এসে আসন পেতে দিলো।
সঞ্জীববাবু আগে কোন সংবাদ দিয়ে আসেন নি সুতরাং তাকে সব কথাই আগাগোড়া খুলে বলতে হলো।
এতে গররাজী হবার কিছু নেই। দেবলীনার মা অরুণা দেবী ও কাকা বিশ্বনাথবাবু দুজনেই রাজি হয়ে গেলেন। কথাবার্তা সব ঠিক হলো। দেবলীনাকে সেই কাপড়েই সঞ্জীববাবুর সামনে নিয়ে আসা হলো।
সঞ্জীববাবু বললেন - মেয়ে আমার দেখা আমি শুধু আশীর্বাদ করে যাবো। তবু সঞ্জীববাবু ভাবী পুত্রবধূকে আর একবার স্নেহের চোখে দেখে নিলেন। মন তার আনন্দের অতিশয্যে ডুবে গেলো।
দেবলীনার মাথায় হাত রেখে বললেন - তোমার নাম ?
- দেবলীনা দত্ত।
সঞ্জীববাবু যেন আর কিছু জিজ্ঞেস করার কথা মনেই আনতে পারলেন না। তিনি জানেন এ মেয়েকে আর কিছু জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন পড়বে না। মেয়ে তাঁর সব দিক দিয়েই পছন্দ হয়ে গেছে। কিন্তু মেয়েরও তো মতামত কিছু নেওয়া দরকার। তিনি দেবলীনাকে বললেন - হ্যাঁ মা, তোমার কি মত? সৌরভ এম, এ, বি, এল । এখন সে ওকালতিই করে। ভগবানের কৃপায় যশ, সন্মান এর মধ্যে সে সবই পেয়েছে। নেবে মা আমার এ আশীর্বাদ ?
দেবলীনার মুখ দিয়ে কোন কথা বের হয় না। নির্বাক হয়ে মাটির দিকে চেয়ে বসে থাকে সে।
সঞ্জীববাবু আবার বললেন - আমি জোর করে বলতে পারি, আমার এ আশীর্বাদ গ্রহন করলে জীবনে কোনদিন তুমি অসুখি হবে না।
বাতাসে ঝিরঝির করা গাছগুলোর মতো দেবলীনা মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো
সঞ্জীববাবুরই আজ জয় হলো। তিনি আনন্দের সাথে দেবলীনাকে মাথায় ধান দুলপো ও কপালে চন্দনের টিকা দিয়ে প্রাণ ভরে আশীর্বাদ করলেন।