25-06-2021, 11:34 PM
এক
দেবলীনাকে এগাঁয়ে কে না চেনে। ওর নাম প্রায় সকলের মুখে মুখে।
মোহিত গ্রামের মেয়ে দেবলীনাকে নিয়ে সকলের ঘরে ঘরে আর এই হীরামতিঝিলের শেওলা পড়া ঘাটটার ওপর দাঁড়িয়ে যতো আলোচনা, যতো কথা।
অবশ্য আলোচনা হওয়ারই কথা। এত লেখাপড়া জানা মেয়ে নাকি এ গ্রামে কেউ ছিলো না। দেবলীনাই প্রথম। তাই সংস্কারবদ্ধ মেয়েদের কাছে ও এক বিস্ময় ভয়ংকর।
ওর সব কিছুই ছিল এ গাঁয়ের অন্যান্য মেয়েদের থেকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। ওর চলা ফেরা দেখে গ্রামের অনেক মেয়েরই পছন্দ হতো না, হিংসে হতো।
দেবলীনা শহুরে মেয়েদের মতো ফুলপ্যান্ট পড়ে সাইকেলে চেপে এ ঝিলটার পাশের চওড়া রাস্তাটা দিয়ে চলে যেতো, কারো কথা বা মন্তব্যের দিকে কোনো রকম নজর দিতো না।
কোথায় যেতো তা কেউ জানতো না। হয়তো কখনো বেড়াতে কখনো কারো বাড়ী বা কোন কাজে।
কেউ কেউ বলতো মেয়েটা পার্টি করে, নইলে অমন চলা-ফেরার পোষাক হয় ?
গ্রাম্যমেয়েরা ছোট বড় মিলিয়ে সবাই যখন খুশি সকাল সন্ধ্যায় এই হীরামতিঝিলটার শেওলা পড়া স্যাঁৎসেঁতে সিঁড়িগুলোতে দাঁড়িয়ে এ ধরণের নানান রকম কথা বলতো দেবলীনাকে নিয়ে।
অনেকেরই ধারণা মেয়েটা এত শিক্ষিতা হলে কী হবে একেবারে বাজে মেয়ে। আবার কেউ কেউ হয়তো কথাটা পুরোপুরি একবারে সমর্থনও করতো না। বলতো ধ্যাত ওসব কিছু না শহুরে মেয়ে তো তাই ওরকম।
তখনো হীরামতিঝিল গ্রাম্যমেয়েদের গুঞ্জনে মশগুল হয়ে ওঠেনি। সবে একে একে মেয়েরা আসতে আরম্ভ করেছে।
মংলির মা এসেছে প্রথমে। আধাআধি বয়েস। মাথার চুলে কোনদিনই তেল মাখে না, একগোছা চুল খয়েরি রঙের মতো লাল হয়ে রয়েছে। মংলির মা একটা ঘড়া কাঁকে, গামছা কাঁধে, সকলের একটু আগে এ সময়ে রোজই আসে। এতো বড় ঝিলটা সে নাকি একাই পার হতে পারে, বাপের বাড়ী সে এরচেয়ে বড় ঝিল পার হয়েছে। এ নিয়ে সে রোজই সকলের সঙ্গে বাজি রাখে কিন্তু তার সঙ্গে এনিয়ে বাজি রাখতে কেউ সাহস করে না। সকলে তো মংলির মায়ের কথা শুনে অবাক হয়ে যায়।
একে একে অনেকেই আসতে আরম্ভ করলো। বীণাও এসেছে। বীণা চুপটি করে বসে থাকে পাথর বাঁধানো রকটায়। মংলীর মার মতো এরকম আরও কয়েকজন আছে যেমন বিন্দুবালা, বিমলা কাকী এদের কথাবার্তা তার একদম ভালো লাগেনা। তাই সে কোন কথা না বলে চুপ করে বসে বসে শেওলা পড়া রকটা থেকে সবুজ ছোট ছোট গাছগুলো নাড়াচাড়া করতে থাকে।
মংলীর মা জলে নেমেছে, কখন জল থেকে উঠবে কেউ জানে না। কোন কোন দিন সকলের আগে নামে সকলের পরে যায়।
বীণা বসে থাকে তার সমবয়সী আরও সব মেয়েরা আসবে ওদের সঙ্গে একসাথে জলে নামবে।
হঠাৎ সাইকেলের ঘন্টার আওয়াজ শোনা গেল।
মংলীর মা জলে ডুব দিয়েছিল কিন্তু সে যেন জলের তলা থেকে ঘন্টার আওয়াজ শুনতে পেয়ে মাথা তুললো। মুখ উঁচু করে চেয়ে দেখলো সেই মেয়েটা যাচ্ছে। দেবলীনার এ ধরণের চাল চলন সে মোটেই পছন্দ করতো না। সে নাক সিঁটকিয়ে আবার জলে ডুব দিলো।
দেবলীনাকে এগাঁয়ে কে না চেনে। ওর নাম প্রায় সকলের মুখে মুখে।
মোহিত গ্রামের মেয়ে দেবলীনাকে নিয়ে সকলের ঘরে ঘরে আর এই হীরামতিঝিলের শেওলা পড়া ঘাটটার ওপর দাঁড়িয়ে যতো আলোচনা, যতো কথা।
অবশ্য আলোচনা হওয়ারই কথা। এত লেখাপড়া জানা মেয়ে নাকি এ গ্রামে কেউ ছিলো না। দেবলীনাই প্রথম। তাই সংস্কারবদ্ধ মেয়েদের কাছে ও এক বিস্ময় ভয়ংকর।
ওর সব কিছুই ছিল এ গাঁয়ের অন্যান্য মেয়েদের থেকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। ওর চলা ফেরা দেখে গ্রামের অনেক মেয়েরই পছন্দ হতো না, হিংসে হতো।
দেবলীনা শহুরে মেয়েদের মতো ফুলপ্যান্ট পড়ে সাইকেলে চেপে এ ঝিলটার পাশের চওড়া রাস্তাটা দিয়ে চলে যেতো, কারো কথা বা মন্তব্যের দিকে কোনো রকম নজর দিতো না।
কোথায় যেতো তা কেউ জানতো না। হয়তো কখনো বেড়াতে কখনো কারো বাড়ী বা কোন কাজে।
কেউ কেউ বলতো মেয়েটা পার্টি করে, নইলে অমন চলা-ফেরার পোষাক হয় ?
গ্রাম্যমেয়েরা ছোট বড় মিলিয়ে সবাই যখন খুশি সকাল সন্ধ্যায় এই হীরামতিঝিলটার শেওলা পড়া স্যাঁৎসেঁতে সিঁড়িগুলোতে দাঁড়িয়ে এ ধরণের নানান রকম কথা বলতো দেবলীনাকে নিয়ে।
অনেকেরই ধারণা মেয়েটা এত শিক্ষিতা হলে কী হবে একেবারে বাজে মেয়ে। আবার কেউ কেউ হয়তো কথাটা পুরোপুরি একবারে সমর্থনও করতো না। বলতো ধ্যাত ওসব কিছু না শহুরে মেয়ে তো তাই ওরকম।
তখনো হীরামতিঝিল গ্রাম্যমেয়েদের গুঞ্জনে মশগুল হয়ে ওঠেনি। সবে একে একে মেয়েরা আসতে আরম্ভ করেছে।
মংলির মা এসেছে প্রথমে। আধাআধি বয়েস। মাথার চুলে কোনদিনই তেল মাখে না, একগোছা চুল খয়েরি রঙের মতো লাল হয়ে রয়েছে। মংলির মা একটা ঘড়া কাঁকে, গামছা কাঁধে, সকলের একটু আগে এ সময়ে রোজই আসে। এতো বড় ঝিলটা সে নাকি একাই পার হতে পারে, বাপের বাড়ী সে এরচেয়ে বড় ঝিল পার হয়েছে। এ নিয়ে সে রোজই সকলের সঙ্গে বাজি রাখে কিন্তু তার সঙ্গে এনিয়ে বাজি রাখতে কেউ সাহস করে না। সকলে তো মংলির মায়ের কথা শুনে অবাক হয়ে যায়।
একে একে অনেকেই আসতে আরম্ভ করলো। বীণাও এসেছে। বীণা চুপটি করে বসে থাকে পাথর বাঁধানো রকটায়। মংলীর মার মতো এরকম আরও কয়েকজন আছে যেমন বিন্দুবালা, বিমলা কাকী এদের কথাবার্তা তার একদম ভালো লাগেনা। তাই সে কোন কথা না বলে চুপ করে বসে বসে শেওলা পড়া রকটা থেকে সবুজ ছোট ছোট গাছগুলো নাড়াচাড়া করতে থাকে।
মংলীর মা জলে নেমেছে, কখন জল থেকে উঠবে কেউ জানে না। কোন কোন দিন সকলের আগে নামে সকলের পরে যায়।
বীণা বসে থাকে তার সমবয়সী আরও সব মেয়েরা আসবে ওদের সঙ্গে একসাথে জলে নামবে।
হঠাৎ সাইকেলের ঘন্টার আওয়াজ শোনা গেল।
মংলীর মা জলে ডুব দিয়েছিল কিন্তু সে যেন জলের তলা থেকে ঘন্টার আওয়াজ শুনতে পেয়ে মাথা তুললো। মুখ উঁচু করে চেয়ে দেখলো সেই মেয়েটা যাচ্ছে। দেবলীনার এ ধরণের চাল চলন সে মোটেই পছন্দ করতো না। সে নাক সিঁটকিয়ে আবার জলে ডুব দিলো।