25-06-2021, 10:41 PM
সুনীল বলল, আমি সব শুনেছি মনীষার মুখে। তবে তুমি সঠিক লোককেই বিয়ে করেছে। বাপীর মতন মানুষ হয় না। ঠিক একেবারে আমার বাবার মতন। আমার বাবাও মাকে খুব ভালবাসেন। মা বাবাকে পুরো দেবতার মতন দেখেন।
মনীষার মা জবাবে বললেন, কিন্তু সুনীল আমার স্বামী দেবতাটি যে বড্ড বেরসিক। প্রেম করা তো দূর, আমার সাথে সারাদিনে কথা বলারও সময় হয় না তার। সারাদিন শুধু কাজ আর কাজ। আমি এখন প্রেম করার জন্য কার কাছে যাই বলো?
সুনীল খালি ঝ্যামেলায় পড়ে যাচ্ছিল মনীষার মায়ের কথা শুনে। এবার দেখল শাশুড়ী মা ওর হাতের ওপর নিজের হাতটা দিয়ে বোলাচ্ছে। জীবনে এমন তড়িতাহত হয় নি। নিজেকে ছাড়ানোর জন্য ও মনীষার মাকে বলল, মা মনীষাকে একটু ডাকো না। ও কোথায় গেল?
সুনীলকে অবাক করে মনীষার মা বললেন, কেন? আমি তো রয়েছি। আমাকে পছন্দ হচ্ছে না?
সুনীল কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না। একটু পরে মনীষাও ঢুকল ঘরে। সুনীলকে আরও অবাক করে মনীষার মা মনীষাকে বললেন, হ্যা রে মনি, আজ থেকে যদি একমাস তোর বরের সাথে আমিই প্রেম করি তোর কোন আপত্তি নেই তো?
মনীষাও ঘাড় নেড়ে বলল, কোন আপত্তি নেই মা। একেবারে সাচ্ছন্দে। বলে হাসতে লাগল সুনীলের দিকে তাকিয়ে।
একেবারে সাংঘাতিক শ্বাশুড়ী। সুনীলকে এতক্ষণে নাকের জলে, চোখের জলে করে ফেলেছে। মহিলা একেবারে নাছোরবান্দা। সেই যে জামাইকে চেপে ধরেছেন আর ছাড়ছেন না।
সুনীলের হাতটা থেকে এবার নিজের হাতটা মুক্ত করে মনীষার মা বললেন, এই তোরা একটু কথা বল, আমি বরঞ্চ জলখাবারটার ব্যাবস্থা করি। তারপর চুটিয়ে আড্ডা দেব তিনজনে। তোর বাপীরও সময় হয়ে এল ফিরে আসার। বাজারটা করে আনলেই আমি রান্না চাপিয়ে দেব। আজকে জামাই এর জন্য অনেক পদ রান্না করব ঠিক করে রেখেছি।
মনীষার মা উঠে চলে গেলেন। সুনীল যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো। মনীষা পাশের ঘরে গিয়ে ড্রেসটা চেঞ্জ করে এসেছে। সুনীলকে বলল, তুমিও জামাকাপড় ছেড়ে নাও এবারে। ট্রেনের পোশাকটা খুলে ফেল। পারলে চান করে নিতে পারো। বাথরুমে সব ব্যাবস্থা আছে।
সুনীল কি বলতে যাচ্ছিল, মনীষা বলল, তুমি আসলে মার সাথে এই প্রথম মিশছ তো, একটু মানিয়ে নিতে অসুবিধে হবে। কয়েকদিন গেলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। আমার মায়ের এটাই স্টাইল। আমি, বাপী মার এই স্বভাবটা জানি, তাই বিচলিত হই না। তুমি নতুন তাই-
সুনীল বলল, আসলে তোমার মায়ের বয়সটা খুব বেশি নয়। এখনও একটা ছেলেমানুষি ভাব আছে তোমার মায়ের মধ্যে। এটা থাকে কারুর কারুর মধ্যে। প্রসেনজিত নামে আমার এক বন্ধু থাকে দিল্লীতে। ওর বউ ও অনেকটা এইরকম। ও আমাকে প্রায়ই বলে, বউ এর মধ্যে একটা ছেলেমানুষি ভাব আছে, জানিস তো সুনীল। কোথায় কখন কি বলতে হবে জানে না। তবে প্রসেনজিতের বউ তোমার মায়ের থেকে অনেক ছোট। আমার সেই কথাটাই বারে বারে মনে পড়ছিল।
মনীষা বলল, মাকে বুঝতে তোমার একটু সময় লাগবে। বললাম তো।
সুনীল একটু বোকার মতই বলল, মা যেই প্রেম করবে বলল, অমনি তুমি শুনে হাসলে কেন?মনীষা বলল, বা হাসির কথায় হাসব না? মা তোমাকে টেনশনে ফেলে পরখ করছে বুঝতে পারছ না? তোমাকে পরীক্ষা করছে? দেখছে তুমি ব্যাপারটাকে কিভাবে নাও। আমি বলেছি, তোমার জামাই খুব ঠান্ডা, যতই তুমি ক্ষ্যাপাও, ও চটবে না। মা আমার কথার সাথে মিলিয়ে দেখছে। তুমি সত্যি রেগে যাও কিনা? রাসভারী জামাই মার পছন্দ নয়।
সুনীল এবার একটু টেনশন মুক্ত হল। তার মানে ওর সাথে অভিনয় করছে শ্বাশুড়ি মা। মহিলা ভালই রসিকতা জানেন। স্বামীকে বেরসিক বলেছিল একটু আগে, সুনীলের এবার খেয়াল পড়েছে। মনীষাকে এবার একটু হাম্বড়ি ভাব দেখিয়ে সুনীল বলল, তাহলে তোমার মায়ের সাথে প্রেম করব বলছ?
মনীষা সুনীলের পাশে বসে চুলগুলো হাত দিয়ে ঠিক করতে করতে বলল, নেভার মাইন্ড। উইশ ইউ অল দ্য বেস্ট।
সুনীল এবার কিছু না বলে মনীষাকে জাপটে জড়িয়ে ধরল। ওর গালে ঘাড়ে গলায় চুমু খেতে লাগল। ভীষন আগ্রাসী হয়ে মনীষার ঠোঁটেও ঠোঁট দিয়ে দাঁত লাগিয়ে অল্প করে দিল কামড়ে। মনীষাকে বলল, আচ্ছা আচ্ছা, এখন শিলিগুড়িতে এসে আমার হাত থেকে মুক্তি? আছে না কি এখানে কেউ? পুরোনো প্রেমিক? এবার যদি এই আদরটা আমি তোমার বদলে আমি তোমার মাকে করি? কেমন লাগবে?
মনীষা সুনীলের নাগাল থেকে মুক্ত হতে চাইছিল। মুখে বলল, এই ছাড়ো ছাড়ো, এক্ষুনি বাপী এসে পড়বে। ইস কি অসভ্য।
সুনীল তবু মনীষাকে ছাড়ল না। ওর ঠোঁট চুষে একাকার করে দিল। দুহাত দিয়ে মনীষার গাল দুটো ধরে মধুর আস্বাদন করতে লাগল ঠোঁটে ঠোঁটে লিপ্ত হয়ে। মনীষাও সুনীলকে ছাড়াতে না পেরে বাধ্য হয়েই ওর ঠোঁটের মধ্যে নিজের ঠোঁটদুটোকে খেলাতে লাগল। দুজনের কেউই খেয়াল করল না কখন মনীষার মা দুটো থালায় লুচি ভর্তি করে, মেয়ে জামাই এর জন্য জলখাবার নিয়ে এসে দাঁড়িয়েছেন দরজার সামনে।
-এই তোরা কি করছিস?
কথাটা শুনে সুনীল এমন জবুথবু হয়ে গেল, যে ও দেখল মনীষাও হকচকিয়ে গেছে মায়ের এই আগমন দেখে। মাকে ম্যানেজ করার জন্য মনীষা বলল, এই দেখো না। তখন থেকে বলছি, চান করে নিতে। কিছুতেই আমার কথা শুনছে না।
মনীষার মা দুটো থালা ভর্তি লুচি নিয়ে ঘরে ঢুকলেন। সুনীলের দিকে একটা থালা বাড়িয়ে দিয়ে বললেন, যাবে খন চানে। তুই অত ব্যস্ত হচ্ছিস কেন? আজ থেকে ও তোর কথা শুনবেই না। ওকে আমি যা বলব, ও তাই শুনবে। বলেই ফিক ফিক করে হাসতে হাসতে বেরিয়ে গেলেন ঘর ছেড়ে।
সুনীল ভীষন লজ্জায় পড়ে গেছে। মনীষা বলল, দেখলে তো আমি তোমায় বলছিলাম। মা এসে ঠিক দেখে ফেলল। সুনীল জবাবে কিছু বলতে পারছে না। লুচির টুকরোটা মুখে নিয়েও কেমন গলায় আটকে গেছে। কারণ শিলিগুড়িতে এসে শ্বশুর বাড়ীটা কেমন অন্যরকম লাগছে।
চলবে -