Thread Rating:
  • 19 Vote(s) - 3.26 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance টুকরো টুকরো ভালোবাসার গল্প by romanticboy400
#25
ফেরার সময় নিঝুম কল্পনাও করতে পারেনি তার জন্য এরকম একটি খবর অপেক্ষা করে থাকবে বাড়ি ফিরে দেখে কেউ নেই কোথায় গেল সবাই ভাবতে ভাবতেই ল্যান্ডলাইনটা বেজে ওঠে ফোন ধরে নিঝুম মাকোথায় গেছ মা??”, মা গলা শোনার সাথে সাথে ভয় আর উদ্বেগমিশ্রিত কণ্ঠে প্রশ্ন করে নিঝুম কিন্তু তার প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়ে মা তাকেই প্রশ্ন করেন, “কখন ফিরেছ?” নিঝুম জানায় যে মাত্রই বাসায় ঢুকেছে সে এরপর মা বলেন, “শোন, বাসার দরজা ভাল করে লাগিয়ে সাবধানে থাক আর ফ্রিজে খাবার আছে, গরম করে খেয়ে নিও আমি তোমার বাবার সাথে হসপিটালে ওঁর হঠাৎ হার্টঅ্যাটাক করেছে অপারেশন লাগবে সম্ভবত সাবধানে থাক মা আমি পরিস্থিতি বুঝে আসছি তাড়াতাড়িই ফেরার চেষ্টা করব তখন তোমাকেও নিয়ে আসব সম্ভব হলেবলে নিঝুমকে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়েই ফোনটা কেটে দেন তিনি নিঝুম তখনও ফোন ধরেই রেখেছে নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছেনা সে বাবা হার্টঅ্যাটাক করেছেন! নিজের অজান্তেই হাঁটু ভাঁজ হয়ে আসে তার কোনমতে ফোনটা ক্রেডলে রেখে মেঝেতেই বসে পড়ে সে সমস্ত বোধবুদ্ধি, আবেগ কোথায় হারিয়ে গেছে যেন কাঁদতেও পারছেনা বাবা কোন হসপিটালে আছে নামটাও তো জানা হয়নি তার হঠাৎ করেই নিজেকে বড় অসহায় লাগতে থাকে নিঝুমের বাবা

ক্রিং ক্রিং! ক্রিং ক্রিং! ফোনের শব্দে বাস্তবে ফিরে আসে নিঝুম। কতক্ষণ একভাবে বসে আছে সে নিজেই জানেনা। কেমন একটা ঘোরের মধ্যে ছিল। ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকে অপলকে। বাজছে, ধরতে হবে, কোন খেয়ালই নেই যেন তার। ক্রিং ক্রিং! এবার যেন কারেন্টের শক খেয়ে হুঁশ ফেরে, তাড়াহুড়ো করে ফোন কানে ঠেকায়।হ্যালো!!” মা করেছেন আবার। জানান যে ডাক্তাররা বলছেন এখন বাবা বিপদমুক্ত। কয়েকদিন ভর্তি থাকতে হবে, তারপর অপারেশন করা হবে। তবে আপাতত আর কোন ভয় নেই। অনেকটা আশ্বস্ত হয়ে ফোন রাখে নিঝুম। এবার হসপিটালের নামও জেনে নিয়েছে। মা চলে আসবেন একটু পরেই। ইতিমধ্যে আত্মীয় স্বজনদের ফোন আসা শুরু হয়ে গেছে। সবার একই প্রশ্ন, কী হয়েছে বাবার আর অভয় প্রদান। একনাগাড়ে অনেকগুলো কল অ্যাটেনড করে একটু হাঁপিয়ে ওঠে নিঝুম। বসে না থেকে একটু হাঁটাচলা করে। অসম্ভব শূন্যতা অনুভব করে এইসময়। ফাঁকা বাড়িটা যেন তাকে গিলে নিতে চাইছে। হঠাৎ স্পষ্ট শুনতে পায় মা তাকে ডাকছে ড্রয়িং রুম থেকে, “নিঝুম! নিঝুম!” অথচ মা তো বাসায় নেই। তাহলে? তাহলে কে ডাকছে? তবে কি মনের ভুল? কেমন একটা ভয় ধরে যায় নিঝুমের মনে। একছুটে মা ঘরে এসে বসে পড়ে বিছানায়। বিকেলে মা আসা পর্যন্ত আর একটাবারের জন্যও বের হয়না ওই ঘর থেকে, দুপুরে খায় পর্যন্ত না।


মা আসেন বিকেলে। তাঁর কাছ থেকে জানতে পারে নিঝুম যে সে চলে যাওয়ার কিছুক্ষন পরই হঠাৎ ভীষণ ব্যথা হতে থাকে বাবার বুকে। পারিবারিক ডাক্তারের কাছে ফোন করলে তিনি বলেন যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে মুভ করাতে। হাসপাতালে নেওয়ার পর আই সি ইউ তে নিয়ে যাওয়া হয় বাবাকে। কিছুক্ষণ পর ডাক্তাররা জানান মাইল্ড একটা অ্যাটাক হয়েছে তাঁর, অপারেশন করতে হতে পারে। আরও দু-তিন ঘণ্টা পর জানা যায় হার্টে কিছু ব্লক আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, অপারেশন লাগবে। তবে আপাতত ভয়ের কোন কারণ নেই বলেও জানিয়েছেন ডাক্তাররা। কিছু টেস্ট দিয়েছেন, সেগুলো করার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে এখন ঠিক কী অবস্থা তাঁর হৃদযন্ত্রের। এখন ঘুমের ওষুধ দিয়ে রাখা হয়েছে, ঘুমুচ্ছেন। সেই ফাঁকে মা বাসায় এসেছেন। সারাদিন অভুক্ত আর অসম্ভব দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মাকে জোর করে খাওয়ায় নিঝুম, নিজেও কিছু খায় কোনমতে। মা আবার হসপিটালে যাওয়ার জন্য বের হবেন একটু পরেই। এবার নিঝুমকেও নিয়ে যাবেন বলেন।

হসপিটালে গেলেও বাবার সাথে দেখা হয়না। এখনও অবজারভেশনে রাখা হয়েছে তাঁকে। রাতে থাকারও কোন ব্যবস্থা নেই তাই। কিছুটা হতাশ মন নিয়েই বাড়ি ফেরে মা-মেয়ে। তবে ডাক্তাররা আশ্বাস দিয়েছেন ভয়ের কিছু নেই বলে, এটুকুই সান্ত্বনা।
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: টুকরো টুকরো ভালোবাসার গল্প by romanticboy400 - by ddey333 - 25-06-2021, 08:48 AM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)