Thread Rating:
  • 19 Vote(s) - 3.26 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance টুকরো টুকরো ভালোবাসার গল্প by romanticboy400
#24
চোখে ভোরের আলো এসে পড়ায় ঘুম ভেঙ্গে যায় নিঝুমের তবে চোখ খোলে না পাশ ফিরে শোয় চোখের পাতাগুলো অসম্ভব ভারি হয়ে আছে,চোখ না খুলেই বুঝতে পারে ঘুমের মধ্যেও কেঁদেছে সম্ভবত অবসাদটা ফিরে আসে আবার মনে তবে আজ কিছুটা প্রকৃতস্থ সেমা তাকে নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন, কাল বুঝেছে তাই অন্তত বাবা মা সামনে নিজের বিষণ্ণতাটা প্রকাশ করা চলবেনা কোনমতেই, ভাবে সেওহ আজ তো আবার নিলীমার সাথে ক্লাস আছে দুদিন ফোন করে পায়নি, আজ নিশ্চয়ই আমাকে চেপে ধরবে আর তারমানে নিবিড়ের বিষয়টা নিয়ে কথা বলবেই…”, নিজের অজান্তেই একটা গোঙানি বের হয়ে আসে মুখ থেকে চোখ বন্ধ অবস্থাতেই বিছানার এপাশ থেকে ওপাশে শরীরটাকে নিয়ে যায় গুটিসুটি মেরে লেপের নিচে ঢুকে যায় আরও ভালোমতো ঘুমিয়ে পড়ে আবার কখন যেন অদ্ভুত একটা স্বপ্ন দেখে অনেকগুলো নিবিড় তার চারপাশে যেদিকেই যাচ্ছে শুধু নিবিড় আর নিবিড় পালাতে চায় সে অনেক দূরে পারেনা হাত টেনে ধরে রেখেছে নিবিড় ছাড়ানোর চেষ্টা করে, পারেনা ধীরে ধীরে অনেক নিবিড়ের মুখ মিলে যায় একটা নিবিড়ে কী যেন বলতে চাইছে নিবিড় কিন্তু নিঝুম কিছুতেই শুনতে চাইছেনা শেষ পর্যন্ত জোরে টান দিয়ে নিজের খুব কাছে নিয়ে আসতে থাকে নিবিড় নিঝুমকেআরও কাছেআরও ……ধড়মড় করে উঠে বসে নিঝুম এই শীতেও ঘামে ভিজে গেছে শরীর ঘড়ির দিকে তাকায়, আটটা বেজে পাঁচ তাড়াহুড়ো করে উঠে পড়ে ফ্রেশ হতে দৌড় লাগায় বাথরুমের দিকে, ক্লাস আছে সাড়ে আটটায় স্বপ্নটা থেকে যেন জোর করে বের হয়ে আসতে চায় সে, একবার ভাবেওনা যে কী দেখল, কেন দেখল, জোর করে দূরে সরিয়ে রাখে স্বপ্নটাকে

নাস্তার টেবিলে নিঝুমকে দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন মা আবার আগের মত উৎফুল্ল নিঝুম এই প্রথমবার মেয়ের দুষ্টুমিতে বাধা দেন না তিনি বরং খুশি হন ভাবেন যে মেয়ের শরীর খারাপ ছিল হয়ত এই দুদিন মায়ের স্বস্তি নজর এড়ায় না নিঝুমের তবে কিছু বলেনা মাকে খুশি দেখার জন্যই তো তার খুশি থাকার এই অভিনয়

ক্লাসে যেয়ে দেখে প্রচুর ছাত্রছাত্রী হাজির তবে নিলীমা তখনও আসেনি বেছে বেছে একদম পিছনের সীটে যেয়ে বসে নিঝুম যাতে নিলীমা আসলেও তাকে দেখতে না পায় কিন্তু বিধি বাম নিলীমা ঠিকই খুঁজে বের করে ফেলে তার অবস্থান নিঝুমের পাশের সীটে বসে থাকা মেয়েটিকে একরকম জোর করেই উঠিয়ে দিয়ে সীটটা দখল করে নিঝুম দেখেও দেখেনা এসব চুপচাপ ক্লাস লেকচার তুলতে থাকে খাতায় নিলীমা কোন ভুমিকায় যায়না সোজা নিঝুমের কানে মোবাইল ঠেকিয়ে দেয়, “কথা বলসে কিছু বলার আগেই ওপাশ থেকে নিবিড়ের অস্থির, উদ্বিগ্ন কণ্ঠ ভেসে আসে, “হ্যালো!” উত্তর দেয়না নিঝুম নিলীমার দিকে তাকিয়ে ইশারা করে ফোনটা তার হাতে ছেড়ে দিতে নিলীমা দিয়ে দেয় ফোন হাতে পেয়েই নিঝুম কান থেকে নামিয়ে নিয়ে কেটে দেয় একটা কথাও বলেনা নিবিড়ের সাথে নিলীমা রেগে যেয়ে বলে, “তুই এটা কী করলি? তুই জানিস এই দুদিন ছেলেটা কী পরিমাণ টেনশন করেছে তোর জন্য?” নিঝুম উত্তর দেওয়ার আগেই আবার ফোনের স্ক্রিনে নিবিড়ের নামটা জ্বলতে নিভতে শুরু করে নিঝুম কেটে দেয় নিলীমা এবার ভীষণ রেগে যায় নিঝুমের ওপর বলে, “শোন নিঝুম, তুই বাড়াবাড়ি করছিস খুব বেশি যা হয়েছে তাতে তোর তো কোন দোষ নেই এভাবে নিজেকে আর আরেকটা মানুষকে কষ্ট দেওয়ার মানে কী? তুই যদি এবার কথা না বলিস, আমি আর কক্ষনও তোর সাথে কথা বলবনা এটা আমার শেষ কথাএতক্ষণে মুখ খোলে নিঝুম, “এভাবে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করছিস কেন?” নিলীমা উত্তর দেয়, “ব্ল্যাকমেইল হলে তাইই কিন্তু কথা তোকে বলতেই হবে নিবিড়ের সাথেহাল ছেড়ে দেয় নিঝুম তবুও শেষ চেষ্টা করে, “কিন্তু এখন তো ক্লাসে আছি স্যারও আছেন ক্লাসে এখন কথা বলা সম্ভব নানিলীমা এবার তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠে, “কেন লিখতে জানিস না নাকি তুই?? নিবিড়কে না এত এত মেসেজ দিয়েছিস? ভাবটা এমন দেখাচ্ছিস যেন শুধু ফোনেই কথা হয়েছে কথা ক্লাস শেষ হলে বলবি দরকার হলে এখন এস এম এস দে যা বলছি করবান্ধবীর রাগ দেখে এত অসহায় অবস্থায়ও হেসে দেয় নিঝুম ফোনের দিকে তাকায় দেখে ইতিমধ্যে সাতটা মিসডকল এসে গেছে নিবিড়ের নাম্বার থেকে ফোন সাইলেন্ট থাকায় রিং শোনা যায়নি আবার বাজতে শুরু করে নিঝুম কেটে দিয়ে মেসেজ লেখে, “আমি ক্লাসেএক মিনিটও পার হয়না, উত্তর আসে, “আমি কিচ্ছু কেয়ার করিনা আই জাস্ট ওয়ানট টু টক টু ইউ রাইট নাওনিঝুম লেখে, “নিবিড় একটু বোঝার চেষ্টা কর প্লিস আমি ক্লাসে আছিনিবিড় উত্তর দেয়, “ফোন ধরে একটাবার শুধু হ্যালো বল, তারপর কেটে দিয়ে মেসেজ দেবঅগত্যা তাই করে নিঝুম ফোন আসলে ধরেহ্যালোবলে অপর প্রান্ত থেকে কিছু বলা হয়না ফোন কেটে যায় এরপর অনেক তর্কবিতর্ক হয় দুজনের মধ্যে মেসেজে নিবিড়ের অস্থিরতা, নিঝুমের দূরে সরে যাওয়ার চেষ্টা, আর নিবিড়ের বারবার তাকে ধরে রাখার ব্যাকুলতা, কাকুতিমিনতিভরা অসংখ্য মেসেজ আদানপ্রদানের পরও নিঝুমের সিদ্ধান্তের কোন পরিবর্তন না হওয়া শেষপর্যন্ত নিঝুম লিখে দেয়, “দ্যাখ নিবিড়, আমার জন্য তোর আর রূপার মধ্যে নরমাল ফ্রেন্ডশিপটাও নষ্ট হয়ে গেছে আমি চাইনা আর তোর জীবনে থেকে তোর আরও বড় কোন ক্ষতি করে ফেলতে তুই প্লিস আর আমার সাথে যোগাযোগ করিস না নতুন একটা জীবন শুরু কর যেখানে কোন নিঝুম নেই ভাল থাকিস বাইতারপর নিলীমার হাতে ফোন দিয়ে দেয় রিপ্লাইটা নিলীমার কাছে পরে সে মেসেজটা পড়ে একটা কথাও না বলে নিঝুমের চোখের সামনে তুলে ধরে ফোনটা তাতে লেখা, “আমি পারবনা আমার জীবনে আমি তোমাকে চাই, ব্যস চাই এরপর আর একটা কথাও আমি শুনতে চাইনা রূপার সাথে বন্ধুত্বের দাম তোমার সাথে এত বছরের বন্ধুত্বের থেকে বেশি না আর সত্যি কথা বলতে গেলে এমন কোন গভীর বন্ধুত্ব নেইও ওর সাথে আমার যে তা নষ্ট হলে আমার জীবন চলে যাবে আমি আজ মামাবাড়ি থেকে ফিরব আজ রাতের মধ্যে যদি কোন খোঁজ না পাই তোমার তাহলে সোজা তোমার বাসায় যেয়ে উপস্থিত হব এখন তুমি ভেবে দেখ কী করবেনিবিড়ের এমন অবুঝ কথায় নিঝুম নির্বাক হয়ে যায় নিলীমা আস্তে আস্তে বলে, “এই মানুষটাকে হারাসনা রে নিঝুআর কোন কথা হয়না দুজনের মাঝে এরপর ক্লাস শেষ হয়ে যায় একটু পর নিঝুম বের হয়ে দেখে তার গাড়ি এসেছে ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করে কেউ আসেনি কেন বাসা থেকে ড্রাইভার বলে যে হঠাৎ জরুরি কাজ পড়ে যাওয়ায় কেউ আসতে পারেনি বাসায় ফিরে ভীষণ একটা দুঃসংবাদের সম্মুখীন হয় নিঝুম
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: টুকরো টুকরো ভালোবাসার গল্প by romanticboy400 - by ddey333 - 25-06-2021, 08:46 AM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)