24-06-2021, 09:30 PM
রাত্রে পার্টি ছেড়ে আসবার সময় অবশ্য সুনীলকে আবার আশার আলো দেখাল রিমঝিম। ওকে বলল, কি আমার বন্ধুটিকে পছন্দ হয়েছে? ওতো তোমার কথা খুব বলছিল,একেবারে মুগ্ধ হয়ে গেছে তোমার সাথে আলাপ করে। যাবে নাকি একবার ওর বাসায়? কলকাতাতেই থাকে, টালীগঞ্জে।
প্রথম দর্শন আর আলাপে সুনীলও মুগ্ধ। মনীষা ওর আশাতে জল ঢেলে দেয় নি। তখনকার মতন রিমঝিম কে বিদায় আর ধন্যবাদ জানিয়ে সুনীল ফিরে এল নিজের বাড়ীতে। রিমঝিম ওকে সেলফোন নম্বরটা দিয়ে বলল, আমাকে ফোন কোরো। কবে তুমি যাবে আমাকে বলে দিও। আমি মনীষাকে আগে থেকে বলে রাখব।
আজকের জন্মদিনের পার্টিটা ওর কাছে এক স্মরনীয় দিন। এক নতুন সম্পর্কের সূচনা হল। বাড়ীতে ফিরে সুনীল মনে মনে ঠিক করে নিল, এই মেয়ের কাছেই ও বিয়ে করার প্রস্তাব রাখবে। এত সুন্দরী, ভদ্র, মার্জিত মেয়ে। মনীষাকে জীবন সাথী হিসেবে পেলে দারুন হবে।
ঠিক করল, দুদিন বাদেই মনীষার বাড়ীতে যাবে, ওর সাথে গিয়ে দেখা করবে। তার আগে রিমঝিমকে শুধু একটা ফোন করে জানিয়ে দিতে হবে।
মনীষার বাড়ীটা টালীগঞ্জ মেট্রো স্টেশনের খুব কাছেই। ওর বাবা বাড়ীটা কিনেছিলেন বছর চারেক আগে। ভেবেছিলেন শিলিগুড়ি ছেড়ে কলকাতায় এসে পাকাপাকি ভাবে বসবাস শুরু করবেন। কিন্তু মনীষার মা রাজী হন নি। শিলিগুড়ির মেয়ে মনীষার মা। তার বাপের বাড়ীও খুব কাছে। মনীষার বাবার সাথে বিয়ে হওয়ার পরও উনি শিলিগুড়ির মোহ ত্যাগ করেননি। মনীষার বাবা শিলিগুড়িতে থেকেই ওখানে ব্যাবসা করেছেন, বড় করেছেন একমাত্র কন্যাটিকে। বাড়ীও করেছেন, তিনতলা বাড়ী। মনীষা চেয়েছিল কলকাতায় এসে পড়াশুনো করবে। সেই ইচ্ছেতে সাধ দেবার জন্যই কলকাতায় বাড়ীটা কেনা। খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দেখে বাড়ীটা কিনেছিলেন মনীষার বাবা। কিন্তু ঐ দ্বোতলা বাড়ীতে মনীষার সাথে তারা দুজনের কেউই থাকেন না। মেয়েকে দেখতে মাসে একবার যাওয়া আসা করেন শিলিগুড়ি থেকে মনীষার বাবা। মনীষার মা প্রথম প্রথম আসতেন। এখন নিয়মিত আসতে পারেন না।
মনীষার এখন বি.এ. ফাইনাল ইয়ার চলছে। বাবা ঠিক করেছেন, কলকাতায় যদি কোন সুপাত্র জুটে যায়, তাহলে মেয়ের বিয়েটা এখানেই দিয়ে তারপর মেয়ে এবং জামাই বাবাজীবনকে বাড়ীটা দিয়ে দেবেন তাদের থাকার জন্য। মনীষা তার স্বামীকে নিয়ে এই বাড়ীতেই সুখে কাটাবে। আর শিলিগুড়িতে থেকে মনীষার বাবা মা বাকী জীবনটা কাটাবে।
একমাত্র কন্যা সুন্দরী মনীষার পাত্রের যখন অভাব হবে না তখন একটু জানাশোনার মধ্যে দেখে নিয়ে বিয়ে দিতে পারলে আরও ভাল হবে।
মনীষাকে সুনীল দেখার আগেই ওকে দেখে পছন্দ করে ফেলেছিল, সুনীলের বাবা। রিমঝিমের সাথে সেদিন মনীষাও ছিল। প্রশান্ত চৌধুরীকে বেশ আগ্রহ নিয়েই সুনীলের বাবা বলেছিল, বাহ্ মেয়েটি বেশ সুন্দরী তো? রিমঝিমের বন্ধু বুঝি? এমন মেয়েকে ঘরের বউ করতে পারলে তো ভালই হবে। আপনি মেয়েটিকে চেনেন নাকি? কোথায় বাড়ী? কলকাতায়? আমার ছেলের সাথে তো একে দারুন মানাবে।
প্রশান্ত চৌধুরি বলেছিলেন, হ্যাঁ ওর নাম মনীষা। ওর বাবা আমার বিশেষ পরিচিত। শিলিগুড়িতে দোকান, ব্যাবসা, বাড়ী, সম্পত্তি সবই আছে। আপনি চাইলে আমি মনীষার বাবার সাথে কথা বলতে পারি। তাছাড়া সুনীলও তো পাত্র হিসেবে খুব ভাল। আমার বিশ্বাস মনীষার বাবা রাজী হয়ে যাবেন এ বিয়ে দিতে।
সুনীলের বাবা ইচ্ছে করেই সুনীলকে পাঠিয়েছিল সেদিন রিমঝিমের জন্মদিনের পার্টিতে। আগে তো সুনীল ওকে দেখে পছন্দ করুক। তারপর না হয় পাকা কথা বলা যাবে।
সুনীলের মত ছেলেকে প্রশান্ত চৌধুরীরও খুব পছন্দ ছিল। সুনীলের বাবা যখন তার ব্যাবসায়িক পার্টনার তখন তার ছেলের সাথে নিজের মেয়ে রিমঝিম এর বিয়ে দিতে কোন আপত্তি নেই। শুধু এখানে গন্ডোগোল পাকিয়ে বসেছে রিমঝিম। কারণ ও যে ছেলেটিকে ভালবাসে, তাকে ছাড়া ও কাউকে বিয়ে করবে না।
রিমঝিম বাবার মুখ থেকে শুনে আগেই বলে রেখেছিল মনীষাকে। আমার জন্মদিনে একজন আসবে। তার বাবা তোকে দেখে আগেই পছন্দ করেছে। এবার দেখ ছেলেরও তোকে পছন্দ হয় কিনা? পার্টিতে এলে ছেলেটাকেও তুই এক ঝলক দেখে নিতে পারবি। তারপরই শুভ মূহূর্ত। মালাবদল করে বিয়ে হবে তোদের দুজনের। আমরা সবাই মিলে শিলিগুড়ি যাব। আনন্দ করব, কি মজা হবে তখন বলতো? আমার মন বলছে, ছেলেটাকে দেখলে তোরও পছন্দ হবে।
ঠিক রিমঝিমের জন্মদিনের পরের দিনই রিমঝিমকে ফোন করে মনীষার বাড়ীতে যাওয়ার ইচ্ছাটা প্রকাশ করে সুনীল একটু চটপটই করে ফেলল কাজটা। সুনীলকে রিমঝিম বলে দিল, ঠিকই আছে আমি এখনই মনীষাকে বলে দিচ্ছি, ও তাহলে কলেজ থেকে ফিরে তোমার জন্য অপেক্ষা করবে।
সুনীল চেয়েছিল রিমঝিমও ওর সাথে যাক। কিন্তু রিমঝিম রাজী হয় নি। বলল, শুধু শুধু তোমাদের মধ্যে পড়ে আমি কি করব? নিজেরা দুজনে মিলে একটু মনের কথা সারবে, তার মধ্যে আবার আমি কেন? আমি না গেলেও কোন অসুবিধে হবে না। মনীষা কিছু মনে করবে না। আমি বরং মনীষাকে বলে দিচ্ছি।
বিকেলবেলা ঠিক পাঁচটার সময় সুনীল এলো মনীষাদের কলকাতার বাড়ীতে। পুরো বাড়ীটায় ও একা শুধু একটি কাজের লোক ছাড়া।
ঘরে বসে দুজনে দুজনের মুখোমুখি। সুনীল বলল, এত বড় বাড়ীতে একা থাকেন, ভয় করে না? আপনার বাবা মাও তো কাছে নেই।
-একটু ভয় তো করেই। কিন্তু কি করব? কলকাতায় থেকে পড়াশুনো করছি। মা ও জেদ করে শিলিগুড়ি ছেড়ে কলকাতায় এলেন না। আমার তো একা ছাড়া কোন গতি নেই। রিমঝিমরা আছে তাই রক্ষে। মেসোমশাই তো আমাকে নিজের মেয়ের মতই দেখেন। ওদের জন্যই কলকাতায় আছি। ওনারা আমার কথা খুব চিন্তা করেন।
-আপনি কলেজে পড়েন?
-হ্যাঁ বি. এ. ফাইনাল ইয়ার।
-কলেজের পড়া শেষ হলে কি করবেন?
হাসছিল মনীষা। -মেয়েরা যা করে। বাবা মা আমার কারুর সাথে বিয়ে দিয়ে দেবেন। তারপর তার সাথেই বাকী জীবনটা।
-আপনার কাউকে পছন্দ?
সুনীল নিজের পছন্দের কথাটা না বলে, উল্টে মনীষাকেই প্রশ্নটা করে ফেলল বোকার মতন। একুশ বছরের মনীষা ওর দিকে তাকিয়ে রইল চোখের অব্যক্ত আকুতি নিয়ে। কি জবাব দেবে মনীষা বুঝতে পারছে না। সুনীলই শেষ পর্যন্ত মনের কথাটা বলল, আমি যদি আপনাকে বিয়ে করতে চাই? আপনি রাজী হবেন? আপনার বাবা মার সাথে কথা বলার জন্য আমি না হয় বাবাকে রাজী করাবো। বাবা লন্ডন থেকে ফিরে আসবে দুদিনের মধ্যেই। তারপর-
মনীষা যে এক কথাতেই সন্মতি জানিয়ে দেবে, সুনীলও আশা করেনি। মেয়েটা এত সুন্দর। কাল রিমঝিমের জন্মদিনে আলাপ হয়েই মনে দাগ কেটে গেছে। সুনীল যেন এমন একটা মেয়েকেই জীবন সাথী বানাবে, মনে মনে স্বপ্ন দেখেছিল একদিন। আজ তার স্বপ্ন সত্যি হতে চলেছে। ভাবেনি এক কথায় ঘাড় নেড়ে মনীষা বলবে, আমার আপত্তি নেই। শুধু আমাকেও একবার বাবা মাকে জানাতে হবে।
কাল রাতেই সুনীলকে দেখে মনে মনে পছন্দ করে নিয়েছে মনীষা। শুধু সুনীল ওকে প্রস্তাব দেয় কিনা, অপেক্ষা ছিল সেটারই দেখার। একদিনও অপেক্ষা করতে না পেরে আজ সুনীল যখন মনীষার টানে চলে এসেছে এখানে। তখন আর কি চাই? প্রেম ভালবাসার সমুদ্রে অবগাহন করতে সুনীল এখন পুরোপুরি তৈরী। মনীষাও হ্যাঁ বলে দিয়েছে, সুনীলের ভীষন আনন্দ হচ্ছিল।
অতবড় বাড়ীটায় একা পেয়ে সুনীলের খুব ইচ্ছে করছিল মনীষাকে একটা চুমু খেতে। একটু কাছে এসে মনীষার ঠোঁটে চুমুটা খেতেই যাচ্ছিল। কিন্তু মনীষা ওর মুখে হাত চাপা দিয়ে বলল, না না আজ নয়। সময় মত সব হবে।
খুব বেশি দেরি হল না। সময়টা এল মাসখানেকের মধ্যেই। এত তাড়াতাড়ি বিয়েটা হয়ে যাবে সুনীলও আশা করেনি। বাবা লন্ডন থেকে ফিরতেই ছেলে যখন বাবাকে মনীষার ব্যাপারটা বলল, বাবা বললেন, আমি তো তোকে আগে থেকে এইজন্যই তোকে কিছু বলিনি। বললে তুই হয়তো রিমঝিমের জন্মদিনের পার্টিটাই অ্যাটেন্ড করতিস না। আর মনীষার সাথেও তোর আলাপ হত না। কি সুন্দর মেয়ে বলতো? আমার তো প্রথম দিন ওকে দেখেই ভাল লেগে গিয়েছিল। জানতাম, তুইও দেখলে পছন্দ করবি মনীষাকে। লাখে একটা হয় ওরকম মেয়ে।
শিলিগুড়ি থেকে খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ছুটে এলেন মনীষার বাবা। প্রশান্ত চৌধুরী আলাপ করালেন সুনীলের বাবার সঙ্গে। বললেন, এই এবার আপনারা দুজনে একসাথে। আমি দুজনকেই খুব কাছ থেকে চিনি। সুতরাং আমার মনে হয় পৃথিবীতে এর থেকে ভাল সন্মন্ধ আর কিছু হতে পারে না।
সুনীলের বাবা যেহেতু প্রশান্ত চৌধুরির ব্যাবসায়িক পার্টনার, ছেলেও সুপুরুষ। মনীষার বাবা এক কথায় রাজী হয়ে গেলেন এই বিয়ে দিতে।
সুনীলের বাবা ইচ্ছে করেই সুনীলকে পাঠিয়েছিল সেদিন রিমঝিমের জন্মদিনের পার্টিতে। আগে তো সুনীল ওকে দেখে পছন্দ করুক। তারপর না হয় পাকা কথা বলা যাবে।
সুনীলের মত ছেলেকে প্রশান্ত চৌধুরীরও খুব পছন্দ ছিল। সুনীলের বাবা যখন তার ব্যাবসায়িক পার্টনার তখন তার ছেলের সাথে নিজের মেয়ে রিমঝিম এর বিয়ে দিতে কোন আপত্তি নেই। শুধু এখানে গন্ডোগোল পাকিয়ে বসেছে রিমঝিম। কারণ ও যে ছেলেটিকে ভালবাসে, তাকে ছাড়া ও কাউকে বিয়ে করবে না।
রিমঝিম বাবার মুখ থেকে শুনে আগেই বলে রেখেছিল মনীষাকে। আমার জন্মদিনে একজন আসবে। তার বাবা তোকে দেখে আগেই পছন্দ করেছে। এবার দেখ ছেলেরও তোকে পছন্দ হয় কিনা? পার্টিতে এলে ছেলেটাকেও তুই এক ঝলক দেখে নিতে পারবি। তারপরই শুভ মূহূর্ত। মালাবদল করে বিয়ে হবে তোদের দুজনের। আমরা সবাই মিলে শিলিগুড়ি যাব। আনন্দ করব, কি মজা হবে তখন বলতো? আমার মন বলছে, ছেলেটাকে দেখলে তোরও পছন্দ হবে।
ঠিক রিমঝিমের জন্মদিনের পরের দিনই রিমঝিমকে ফোন করে মনীষার বাড়ীতে যাওয়ার ইচ্ছাটা প্রকাশ করে সুনীল একটু চটপটই করে ফেলল কাজটা। সুনীলকে রিমঝিম বলে দিল, ঠিকই আছে আমি এখনই মনীষাকে বলে দিচ্ছি, ও তাহলে কলেজ থেকে ফিরে তোমার জন্য অপেক্ষা করবে।
সুনীল চেয়েছিল রিমঝিমও ওর সাথে যাক। কিন্তু রিমঝিম রাজী হয় নি। বলল, শুধু শুধু তোমাদের মধ্যে পড়ে আমি কি করব? নিজেরা দুজনে মিলে একটু মনের কথা সারবে, তার মধ্যে আবার আমি কেন? আমি না গেলেও কোন অসুবিধে হবে না। মনীষা কিছু মনে করবে না। আমি বরং মনীষাকে বলে দিচ্ছি।
বিকেলবেলা ঠিক পাঁচটার সময় সুনীল এলো মনীষাদের কলকাতার বাড়ীতে। পুরো বাড়ীটায় ও একা শুধু একটি কাজের লোক ছাড়া।
ঘরে বসে দুজনে দুজনের মুখোমুখি। সুনীল বলল, এত বড় বাড়ীতে একা থাকেন, ভয় করে না? আপনার বাবা মাও তো কাছে নেই।
-একটু ভয় তো করেই। কিন্তু কি করব? কলকাতায় থেকে পড়াশুনো করছি। মা ও জেদ করে শিলিগুড়ি ছেড়ে কলকাতায় এলেন না। আমার তো একা ছাড়া কোন গতি নেই। রিমঝিমরা আছে তাই রক্ষে। মেসোমশাই তো আমাকে নিজের মেয়ের মতই দেখেন। ওদের জন্যই কলকাতায় আছি। ওনারা আমার কথা খুব চিন্তা করেন।
-আপনি কলেজে পড়েন?
-হ্যাঁ বি. এ. ফাইনাল ইয়ার।
-কলেজের পড়া শেষ হলে কি করবেন?
হাসছিল মনীষা। -মেয়েরা যা করে। বাবা মা আমার কারুর সাথে বিয়ে দিয়ে দেবেন। তারপর তার সাথেই বাকী জীবনটা।
-আপনার কাউকে পছন্দ?
সুনীল নিজের পছন্দের কথাটা না বলে, উল্টে মনীষাকেই প্রশ্নটা করে ফেলল বোকার মতন। একুশ বছরের মনীষা ওর দিকে তাকিয়ে রইল চোখের অব্যক্ত আকুতি নিয়ে। কি জবাব দেবে মনীষা বুঝতে পারছে না। সুনীলই শেষ পর্যন্ত মনের কথাটা বলল, আমি যদি আপনাকে বিয়ে করতে চাই? আপনি রাজী হবেন? আপনার বাবা মার সাথে কথা বলার জন্য আমি না হয় বাবাকে রাজী করাবো। বাবা লন্ডন থেকে ফিরে আসবে দুদিনের মধ্যেই। তারপর-
মনীষা যে এক কথাতেই সন্মতি জানিয়ে দেবে, সুনীলও আশা করেনি। মেয়েটা এত সুন্দর। কাল রিমঝিমের জন্মদিনে আলাপ হয়েই মনে দাগ কেটে গেছে। সুনীল যেন এমন একটা মেয়েকেই জীবন সাথী বানাবে, মনে মনে স্বপ্ন দেখেছিল একদিন। আজ তার স্বপ্ন সত্যি হতে চলেছে। ভাবেনি এক কথায় ঘাড় নেড়ে মনীষা বলবে, আমার আপত্তি নেই। শুধু আমাকেও একবার বাবা মাকে জানাতে হবে।
কাল রাতেই সুনীলকে দেখে মনে মনে পছন্দ করে নিয়েছে মনীষা। শুধু সুনীল ওকে প্রস্তাব দেয় কিনা, অপেক্ষা ছিল সেটারই দেখার। একদিনও অপেক্ষা করতে না পেরে আজ সুনীল যখন মনীষার টানে চলে এসেছে এখানে। তখন আর কি চাই? প্রেম ভালবাসার সমুদ্রে অবগাহন করতে সুনীল এখন পুরোপুরি তৈরী। মনীষাও হ্যাঁ বলে দিয়েছে, সুনীলের ভীষন আনন্দ হচ্ছিল।
অতবড় বাড়ীটায় একা পেয়ে সুনীলের খুব ইচ্ছে করছিল মনীষাকে একটা চুমু খেতে। একটু কাছে এসে মনীষার ঠোঁটে চুমুটা খেতেই যাচ্ছিল। কিন্তু মনীষা ওর মুখে হাত চাপা দিয়ে বলল, না না আজ নয়। সময় মত সব হবে।
খুব বেশি দেরি হল না। সময়টা এল মাসখানেকের মধ্যেই। এত তাড়াতাড়ি বিয়েটা হয়ে যাবে সুনীলও আশা করেনি। বাবা লন্ডন থেকে ফিরতেই ছেলে যখন বাবাকে মনীষার ব্যাপারটা বলল, বাবা বললেন, আমি তো তোকে আগে থেকে এইজন্যই তোকে কিছু বলিনি। বললে তুই হয়তো রিমঝিমের জন্মদিনের পার্টিটাই অ্যাটেন্ড করতিস না। আর মনীষার সাথেও তোর আলাপ হত না। কি সুন্দর মেয়ে বলতো? আমার তো প্রথম দিন ওকে দেখেই ভাল লেগে গিয়েছিল। জানতাম, তুইও দেখলে পছন্দ করবি মনীষাকে। লাখে একটা হয় ওরকম মেয়ে।
শিলিগুড়ি থেকে খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ছুটে এলেন মনীষার বাবা। প্রশান্ত চৌধুরী আলাপ করালেন সুনীলের বাবার সঙ্গে। বললেন, এই এবার আপনারা দুজনে একসাথে। আমি দুজনকেই খুব কাছ থেকে চিনি। সুতরাং আমার মনে হয় পৃথিবীতে এর থেকে ভাল সন্মন্ধ আর কিছু হতে পারে না।
সুনীলের বাবা যেহেতু প্রশান্ত চৌধুরির ব্যাবসায়িক পার্টনার, ছেলেও সুপুরুষ। মনীষার বাবা এক কথায় রাজী হয়ে গেলেন এই বিয়ে দিতে।