24-06-2021, 09:54 AM
(This post was last modified: 05-07-2021, 11:28 AM by ddey333. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
এরপর কেটে গেছে বেশ কয়েকদিন। সেদিন ভীষণ মন খারাপ করে বাসায় ফিরেছিল নিঝুম। এসে দেখে বন্ধুরা চলে গেছে। রাতে মোবাইল চেক করে। না, কোন মেসেজ নেই। পরদিন একটা জাতীয় দিবস ছিল। সেই দিবসের শুভকামনা জানিয়েছিল রাতে নিবিড়কে। ব্যস, এইই। এরপর আর কোন কথা হয়নি প্রায় একসপ্তাহ। এরপর একটা নতুন ঘটনা ঘটে। নিঝুম যে স্যারের কাছে বাংলার জন্য কোচিং করছিল,অযাচিতভাবেই সেখানে ভর্তি হয় রূপা। হ্যাঁ, সেই রূপা যার কথা ঈশিতা বলে গিয়েছিল নিঝুমকে। প্রথমে রূপা নাম শুনে বিশ্বাস করতে পারেনি নিঝুম যে এই রূপা-ই সেই রূপা। পরে পুরো নাম মিলিয়ে দেখেছে যে হুম, এ সেই। খুশিতে লাফালাফি করা বাকি রাখে শুধু নিঝুম। উত্তেজনা চেপে পরিচয় করে রূপার সাথে। বলে যে সে নিবিড়ের বন্ধু। নিঝুমের নাম শুনে একটা মিষ্টি কিন্তু রহস্যময় হাসি দেয় রূপা, “ও তুমিই নিঝুম?” “আমিই নিঝুম মানে?”, অবাক হয়ে প্রশ্ন করে নিঝুম। “না কিছুনা, নিবিড়ের কাছে অনেক শুনেছি তোমার কথা।”, রূপার উত্তর। নিঝুম আরও অবাক হয়। তার ব্যাপারে অনেক আবার কী বলবে নিবিড়? জিগ্যেস করে রূপাকে। কিন্তু রূপা কিছু একটা চেপে যায় নিঝুমের কাছে “এই তো তেমন কিছুনা” বলে। কৌতূহল হলেও আর চাপাচাপি করেনা নিঝুম, নতুন পরিচয় কেবল, এখনই কিছু নিয়ে চাপাচাপি করা ঠিক হবেনা ভেবে চুপ হয়ে যায়। পিছনের সীটে বসে রূপাকে দেখতে থাকে তার অলক্ষ্যে। দেখতে ভালোই রূপা। লম্বা কোঁকড়া চুল, হালকা ফোলা গাল, দেখলেই টিপতে ইচ্ছে করে, আর মুখটা, নিঝুমের মনে হয় অবিকল নিবিড়ের মায়ের মুখের গড়ন সেখানে। নিবিড়ের মাকে ছোটবেলা থেকেই নিঝুমের খুব পছন্দ। ছোট থাকতে নিঝুমের মা তো তাকে স্কুলে দিয়ে চলে যেতেন। নিবিড়ের মা রোজ বসে থাকতেন, স্কুল শেষ হওয়া পর্যন্ত। নিঝুমের মনে পড়ে, তাকে টিফিন খাইয়ে দিতেন রোজ আনটি। সেই চার বছর বয়স থেকেই যেন নিঝুমের আরেক মা হয়ে গেছেন নিবিড়ের মা। ছোটবেলায় কতদিন মনে মনে চেয়েছে অবুঝ নিঝুম যাতে সৃষ্টিকর্তা নিবিড়ের মাকে তার মা করে দেন। নিঝুমের কাছে অফুরন্ত মমতার প্রতিমূর্তি এক নারী নিবিড়ের মা। রূপাকে দেখতে দেখতে শৈশবের অজস্র এলোমেলো কথা মনে পড়ে যায় নিঝুমের, নস্টালজিক হয়ে যায়।