22-06-2021, 09:45 PM
(This post was last modified: 05-07-2021, 11:24 AM by ddey333. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
দু’দিন যায়। তিনদিন। কোচিঙেও কোন দেখা নেই, বাসার সবাইকে লুকিয়ে মোবাইলও চেক করে নিঝুম। কোন মেসেজ নেই।
“চড়টা কি বেশি জোরে হয়ে গেছে? আমার হাত তো আবার চড় মারার জন্য বিখ্যাত।…আচ্ছা বেশি রিঅ্যাক্ট করে ফেললাম নাকি? নাহ যা করেছি একদম ঠিক করেছি। আনটি কে ডেকে যে মার খাওয়াইনি, এটাই বহুত। কিন্তুহ…শালার পেটে পেটে এত রাগ কেন? ব্যাটা তুই তো দোষ করেছিস বলেই থাপ্পড়টা খেলি, এখন নিদেনপক্ষে সরি তো বল! তা না, বাবুর উল্টা আমার উপরেই রাগ দেখান হচ্ছে। দেখাক গা। who cares?!”- এমনি সব সাতপাঁচ ভাবে নিঝুম, ফোনটা হাতে নিয়ে মেসেজ করতে যেয়েও রেখে দেয়।
চারদিনের দিন আর ধৈর্য রাখতে পারেনা নিঝুম। একটা গুরুগম্ভীর মেসেজ পাঠিয়েই দেয়,”তুই কি আমার সাথে কথা বলবি? হ্যাঁ, নাকি না?” এরপর নিবিড় আর রিপ্লাই না করে কীভাবে? জানে তো মেয়ের জেদ। যদি না বলে, জীবনেও আর কথা বলতে আসবেনা তার সাথে। মাঝ থেকে কোথাকার কোন আকাশের জন্য এতদিনের বন্ধুকে হারাতে হবে। তারচেয়ে রিপ্লাই করেই দেওয়া যাক! তবে… চড় মেরেছে যে সেই রাগটাও ভোলা যাচ্ছেনা। থাক কী আর হবে রাগ করে, যে মেয়ে রে বাবা! “একটু রাগ দেখিয়েই রিপ্লাই করি নাহয়, দুধের স্বাদ ঘোলে তো মিটুক!”, এই ভেবে রিপ্লাই করে দেয় নিবিড়-“হু।” ওপাশ থেকে রিপ্লাই আসে-” গুড। কিন্তু আমার সাথে রাগ দেখিয়ে লাভ নেই। তোর এই রাগ আমি পরোয়া করবনা। আর কোনদিন ওই রকম কথা বললে হাঁটুর মালাইচাকি ভেঙ্গে হাতে ধরিয়ে দিব মনে রাখিস।” আহা! কোথায় ভেবেছিল থাপ্পড় মারার জন্য স্যরি টরি বলে মেসেজ দিবে, তা না, এ কী! “হে ঈশ্বর! এই মেয়ে এত দস্যি কেন??!”, ভেবে একটা দীর্ঘশ্বাস বের হয় বুক থেকে।
আবার কাটতে থাকে সময়। পুরনো ঝগড়া ভুলে বন্ধুত্ব আবার এগিয়ে যায়। তবে আকাশের প্রতি বিদ্বেষের কোন পরিবর্তন হয়না নিবিড়ের। বরং দিন দিন বেড়েই যায় আকাশকে নিয়ে নিঝুমের উচ্ছাস দেখে। তবে সেদিনের মতো নিঝুমকে কষ্ট দিয়ে কথা বলেনা আর নিবিড়, সে খুব ভালভাবেই জানে এখন যে নিঝুমের এই শিশুসুলভ উচ্ছাস শুধুই নতুন বন্ধু পাওয়ার আনন্দ আর নিবিড়কে সব বলার আগ্রহ। তবুও, মনের কোথায় যেন খচখচ করে। কেন করে, নিজেকে জিগ্যেস করেছে বহুবার। উত্তর-জানিনা, বুঝিনা, বুঝতে চাইও না, আমি আকাশকে সহ্য করবনা ব্যস। আকাশের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশও করে ফেলে মাঝে মাঝে, কিন্তু নিঝুম আর পাত্তা দেয়না, তার মতে, বন্ধু বন্ধুই। নিঝুম ভাবে, নিবিড় হয়তো মনে করছে আকাশ তার বন্ধুত্বকে কেড়ে নিবে। কিন্তু নিঝুমের জীবনে নিবিড়ের যে জায়গা, সেখানে আকাশ তার হাজার ভালো বন্ধু হলেও বসতে পারবেনা। নিবিড় তা বুঝুক না বুঝুক, সে তো জানে নিবিড় তার সবচেয়ে ভালো বন্ধু, bestfriend. তার সিংহাসন তারই থাকবে। তবে খুঁটিনাটি মান অভিমান যে চলেনা, তা না। এই তো সেদিনই নিঝুমকে আবার রাগিয়ে দিল নিবিড়। না, আকাশকে নিয়ে নয়। বান্ধবীর সাথে কী নিয়ে লেগেছে নিঝুমের, তা নিঝুমকে জিগ্যেস করায় উত্তর পায়নি। পরে আবার নিঝুম একটু দরকারে কথা বলতে আসলে,প্রশ্ন করলে নিবিড় বিরক্তি দেখায়। পরে জানতে পারে সেদিন নিঝুমের মন অনেক খারাপ ছিল বলে উত্তর দেয়নি, কারণ বৃষ্টি তার অনেক ভালো বন্ধু, নিবিড়ের মতো না হলেও কাছাকাছি। তার সাথে কিছু হলে মন খারাপই লাগে। কিন্তু নিবিড় তাকে এভাবে ভুল বুঝবে সে ভাবেনি। একটু মুখভার করে নিঝুম। মেসেজ দিয়ে দেয়,”আমার ভুল হয়েছে। আর কোনদিন তোকে কিছু জিগ্যেস করবনা। স্যরি বিরক্ত করার জন্য। বাই”। নিবিড় ভুল বুঝতে পেরে অনেক স্যরি বলে মেসেজ দিলেও উত্তর দেয় না। পরদিন কোচিঙে অঙ্ক পরীক্ষা ছিল। নিবিড়ের সাথে কথা বলেনি বলে জানেনা সে আসবে কিনা। নিঝুম নিজের ক্লাস টাইমে যেয়ে বসে থাকে। জানালার ধারের সীট তার খুব পছন্দ। সেখানেই বসে তাকিয়ে থাকে বাইরে। এমন সময় দেখতে পায় নিবিড় আসছে। বাইরে থেকে নিঝুমকে দেখতে পেয়ে হাসি দেয় একটা। নিঝুম অন্যদিকে তাকায়। ক্লাসে ঢুকে আর কোনদিকে না যেয়ে সোজা নিঝুমের কাছে এসে বসে পড়ে। মাথায় আদুরে একটা চাঁটি মেরে আরও আদুরে গলায় বলে,”তুই এমন বাচ্চাদের মতো রাগ করিস কেন রে?” ব্যস, রাগ গলে জল। “মোটেও আমি বাচ্চাদের মতো রাগ করিনা”, প্রতিবাদ করতে যেয়ে হেসে ফেলে নিঝুম। মান অভিমানটা বড্ড বেশিই যেন তাদের, তারপরও বন্ধুত্বটা বড় মধুর লাগে,নিবিড়ের ফার্স্ট বেঞ্চ আর নিঝুমের লাস্ট বেঞ্চ মিলেমিশে পরীক্ষা দিতে দিতে এরপর পুরো সময় জুড়ে এই কথাই ভেবে চলে।
“চড়টা কি বেশি জোরে হয়ে গেছে? আমার হাত তো আবার চড় মারার জন্য বিখ্যাত।…আচ্ছা বেশি রিঅ্যাক্ট করে ফেললাম নাকি? নাহ যা করেছি একদম ঠিক করেছি। আনটি কে ডেকে যে মার খাওয়াইনি, এটাই বহুত। কিন্তুহ…শালার পেটে পেটে এত রাগ কেন? ব্যাটা তুই তো দোষ করেছিস বলেই থাপ্পড়টা খেলি, এখন নিদেনপক্ষে সরি তো বল! তা না, বাবুর উল্টা আমার উপরেই রাগ দেখান হচ্ছে। দেখাক গা। who cares?!”- এমনি সব সাতপাঁচ ভাবে নিঝুম, ফোনটা হাতে নিয়ে মেসেজ করতে যেয়েও রেখে দেয়।
চারদিনের দিন আর ধৈর্য রাখতে পারেনা নিঝুম। একটা গুরুগম্ভীর মেসেজ পাঠিয়েই দেয়,”তুই কি আমার সাথে কথা বলবি? হ্যাঁ, নাকি না?” এরপর নিবিড় আর রিপ্লাই না করে কীভাবে? জানে তো মেয়ের জেদ। যদি না বলে, জীবনেও আর কথা বলতে আসবেনা তার সাথে। মাঝ থেকে কোথাকার কোন আকাশের জন্য এতদিনের বন্ধুকে হারাতে হবে। তারচেয়ে রিপ্লাই করেই দেওয়া যাক! তবে… চড় মেরেছে যে সেই রাগটাও ভোলা যাচ্ছেনা। থাক কী আর হবে রাগ করে, যে মেয়ে রে বাবা! “একটু রাগ দেখিয়েই রিপ্লাই করি নাহয়, দুধের স্বাদ ঘোলে তো মিটুক!”, এই ভেবে রিপ্লাই করে দেয় নিবিড়-“হু।” ওপাশ থেকে রিপ্লাই আসে-” গুড। কিন্তু আমার সাথে রাগ দেখিয়ে লাভ নেই। তোর এই রাগ আমি পরোয়া করবনা। আর কোনদিন ওই রকম কথা বললে হাঁটুর মালাইচাকি ভেঙ্গে হাতে ধরিয়ে দিব মনে রাখিস।” আহা! কোথায় ভেবেছিল থাপ্পড় মারার জন্য স্যরি টরি বলে মেসেজ দিবে, তা না, এ কী! “হে ঈশ্বর! এই মেয়ে এত দস্যি কেন??!”, ভেবে একটা দীর্ঘশ্বাস বের হয় বুক থেকে।
আবার কাটতে থাকে সময়। পুরনো ঝগড়া ভুলে বন্ধুত্ব আবার এগিয়ে যায়। তবে আকাশের প্রতি বিদ্বেষের কোন পরিবর্তন হয়না নিবিড়ের। বরং দিন দিন বেড়েই যায় আকাশকে নিয়ে নিঝুমের উচ্ছাস দেখে। তবে সেদিনের মতো নিঝুমকে কষ্ট দিয়ে কথা বলেনা আর নিবিড়, সে খুব ভালভাবেই জানে এখন যে নিঝুমের এই শিশুসুলভ উচ্ছাস শুধুই নতুন বন্ধু পাওয়ার আনন্দ আর নিবিড়কে সব বলার আগ্রহ। তবুও, মনের কোথায় যেন খচখচ করে। কেন করে, নিজেকে জিগ্যেস করেছে বহুবার। উত্তর-জানিনা, বুঝিনা, বুঝতে চাইও না, আমি আকাশকে সহ্য করবনা ব্যস। আকাশের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশও করে ফেলে মাঝে মাঝে, কিন্তু নিঝুম আর পাত্তা দেয়না, তার মতে, বন্ধু বন্ধুই। নিঝুম ভাবে, নিবিড় হয়তো মনে করছে আকাশ তার বন্ধুত্বকে কেড়ে নিবে। কিন্তু নিঝুমের জীবনে নিবিড়ের যে জায়গা, সেখানে আকাশ তার হাজার ভালো বন্ধু হলেও বসতে পারবেনা। নিবিড় তা বুঝুক না বুঝুক, সে তো জানে নিবিড় তার সবচেয়ে ভালো বন্ধু, bestfriend. তার সিংহাসন তারই থাকবে। তবে খুঁটিনাটি মান অভিমান যে চলেনা, তা না। এই তো সেদিনই নিঝুমকে আবার রাগিয়ে দিল নিবিড়। না, আকাশকে নিয়ে নয়। বান্ধবীর সাথে কী নিয়ে লেগেছে নিঝুমের, তা নিঝুমকে জিগ্যেস করায় উত্তর পায়নি। পরে আবার নিঝুম একটু দরকারে কথা বলতে আসলে,প্রশ্ন করলে নিবিড় বিরক্তি দেখায়। পরে জানতে পারে সেদিন নিঝুমের মন অনেক খারাপ ছিল বলে উত্তর দেয়নি, কারণ বৃষ্টি তার অনেক ভালো বন্ধু, নিবিড়ের মতো না হলেও কাছাকাছি। তার সাথে কিছু হলে মন খারাপই লাগে। কিন্তু নিবিড় তাকে এভাবে ভুল বুঝবে সে ভাবেনি। একটু মুখভার করে নিঝুম। মেসেজ দিয়ে দেয়,”আমার ভুল হয়েছে। আর কোনদিন তোকে কিছু জিগ্যেস করবনা। স্যরি বিরক্ত করার জন্য। বাই”। নিবিড় ভুল বুঝতে পেরে অনেক স্যরি বলে মেসেজ দিলেও উত্তর দেয় না। পরদিন কোচিঙে অঙ্ক পরীক্ষা ছিল। নিবিড়ের সাথে কথা বলেনি বলে জানেনা সে আসবে কিনা। নিঝুম নিজের ক্লাস টাইমে যেয়ে বসে থাকে। জানালার ধারের সীট তার খুব পছন্দ। সেখানেই বসে তাকিয়ে থাকে বাইরে। এমন সময় দেখতে পায় নিবিড় আসছে। বাইরে থেকে নিঝুমকে দেখতে পেয়ে হাসি দেয় একটা। নিঝুম অন্যদিকে তাকায়। ক্লাসে ঢুকে আর কোনদিকে না যেয়ে সোজা নিঝুমের কাছে এসে বসে পড়ে। মাথায় আদুরে একটা চাঁটি মেরে আরও আদুরে গলায় বলে,”তুই এমন বাচ্চাদের মতো রাগ করিস কেন রে?” ব্যস, রাগ গলে জল। “মোটেও আমি বাচ্চাদের মতো রাগ করিনা”, প্রতিবাদ করতে যেয়ে হেসে ফেলে নিঝুম। মান অভিমানটা বড্ড বেশিই যেন তাদের, তারপরও বন্ধুত্বটা বড় মধুর লাগে,নিবিড়ের ফার্স্ট বেঞ্চ আর নিঝুমের লাস্ট বেঞ্চ মিলেমিশে পরীক্ষা দিতে দিতে এরপর পুরো সময় জুড়ে এই কথাই ভেবে চলে।