20-06-2021, 03:14 PM
সৌম্য জানায় ওকে একটু বের হতে হবে, বিক্রমের গাড়িতে, ফিরতে রাত হতে পারে, বের হলে জানিয়ে দেবে। ওরা বেড়িয়ে যায়, তবে ওদের চোখের খেলা অন্তরাল থেকে অঞ্জু ছাড়া আর কেউ দেখতে পায়না। অঞ্জু রাত্রের রান্না করে চলে গেলে বাপ্পা কে নিয়ে বসে সোহিনী তবে নিজেকে কেমন যেন অস্থির অস্থির লাগে। আর তক্ষনি ম্যাসেজ আসে বিক্রমের কাছ থেকে-
- হাই… সোহিনী
- হাই… পৌঁছে গেছেন?
- কখন! আপনার হাসব্যান্ড সাহেব এখন মিটিঙে ব্যাস্ত, তাই ভাবলাম দেখি সাহেবের সুন্দরী বউ টি কি করছে…হা হাঁ হা…
- এই… ছেলেকে পড়াতে বসেছি।
- ও হাঁ, ছেলে তো এবার এঞ্জিনারিং দেবে… টিজ করে বিক্রম।
- ইস… না তা না…আসলে বসে আছি… একটু সময় ও কাটে এই আর কি।
- আজ কিন্তু আপনাকে দারুন লাগছিল্, মানে সেক্সি।
- ইস,…। চমকে উঠে উত্তর দেয় সোহিনী। এতটা আশা করেনি।
- রাগ করলেন? জিজ্ঞেস করে বিক্রম।
- না … এমনি।
- সত্যি, দারুন লাগছিলেন। আপনার হাত দুটোর সেপ এত সুন্দর, তারসাথে মানিয়ে ছিল খয়েরি কুর্তি টা। চোখ ফেরান যাচ্ছিল না।
কথা গুলো আপাত সাধারণ হলেও সোহিনীর মতো একজন সাধারণ পরিবারের মেয়েকে কতটা নাড়িয়ে দিতে পারে তা বোধহয় বিক্রমের অজ্ঞাত না। তাছাড়া সে কলকাতায় অনেক দিন কাটিয়েছে, বাঙালি মানসিকতার সাথে পরিচিত।
- ওহ… খুব সংক্ষিপ্ত উত্তর দিয়ে সামলাতে চায় কথা গুলো
- কি ইচ্ছে করছিল জানেন?
- কি? জানতে চায় সোহিনী।
- আপনাকে ভীষণ ভাবে আদর করতে।
- ধ্যাত।
- সত্যি বলছি। বিশ্বাস করুন।
সোহিনীর বুকে আলোড়ন ওঠে। আর কথা বাড়ানো উচিত না। লগ অফ করে হোয়াটসআপ থেকে। মাথা টা কেমন যেন হয়ে যায়। আর তখনই ফোন বেজে ওঠে। বিক্রম ফোন করছে। বুঝতে পারে না কি করবে। ধরবে না কেটে দেবে। কয়েকটা রিং হওয়ার পরে ধরে।
- হ্যালো
- কি হল? অফ হয়ে গেলেন যে।
- নাহ এমনি। উত্তর দেয় সোহিনী
- রাগ করেছেন?
- এমা না… রাগ কেন করব? গলাটা স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করলেও ফোনের ওপারে বিক্রমের পক্ষে বুঝতে অসুবিধা হয় না।
- আমার কি ইচ্ছে করছে জানেন?
- কি? জানতে চায় সোহিনী।
- আপনার ওই ফরসা গোল গোল হাত দুটো চুমুতে চুমুতে ভিজিয়ে দিতে। আমি জানি অসম্ভব নরম আপনি। আপনাকে আদর করলে আপনি সম্পুরন গলে যাবেন। ভিজে ভিজে শেষ হয়ে যাবেন। কি ঠিক বলছি সোহিনী?
- জানিনা। থেমে যায় সোহিনী। এর উত্তর হয় না।
- কেন। আপনি আদর খেতে পছন্দ করেন না?
- আমি কি তাই বললাম?
- আমি যদি ভুল না হই তাহলে বলতে পারি আপনি এখনও আদর কাকে বলে জানেন না।
- আপনি ভুল বিক্রম বাবু।
- ঠিক আছে সময় বলবে কে ভুল।
কিছুক্ষণ চুপ থাকে সোহিনী। বিক্রম সোহিনীর শ্বাস প্রশ্বাস শুনে যা বোঝার বুঝে যায়। বিক্রম নিস্তব্ধতা ভাঙ্গে-
- সৌম্য বাবু আসছেন। রাখি। আবার পরে কথা হবে।
- -আচ্ছা।
সোহিনী ফোন কেটে কল লিস্ট ডিলিট করে দেয় যাতে কোন প্রমান না থাকে। ওর চোখ মুখ জালা করছে, জল দিয়ে ধোয়, মাথা টা কেমন যেন করছে, জর জর ভাব, একটু শুয়ে পড়ে। সৌম্য ফোন করে জানায় ও বেড়িয়ে পড়েছে।
সেদিন রাত্রে কেন জানি সোহিনী সৌম্যর বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ে। সৌম্যর’ ভালো লাগে। বেশ দায়িত্তের চাকরী করছে, এমন সংসারী বউ, সুস্থ ছেলে। আর কি চায়! সুখি মানুষ সৌম্য। ভাবতে ভাবতে সকাল হয়ে যায়।
পর দিন সকালে রোজকার মত ব্যস্ত হয়ে ওঠে সোহিনী। ওর স্বামী কোনদিন অফিসে লেট করা পছন্দ করে না, বলে আমি যদি লেটে যাই তাহলে অন্য দের কি বলব? ওর নিয়ম শৃঙ্খলার জন্য গর্ব বোধ করে সোহিনী। ১০ টা নাগাদ বেড়িয়ে যায় বাপ্পা কি কলেজে নামিয়ে দিয়ে ফিরে আসবে। ও ফিরলে সৌম্য অফিস বেড়িয়ে পড়ে ওর গাড়িতে। ঘরে এসে টিফিন করে বারিতে ফোন করে, আর তার মাঝেই গাড়ির হর্ন কানে আসে। এটা বিক্রমের গাড়ির হর্ন তা বলে দিতে হয় না। একটু পরে ফোন রেখে বাইরে বেড়িয়ে আসে। ড্রয়িং রুমে বসে আছে বিক্রম। অঞ্জু কফি এনে দিয়েছে এর মধ্যে। মুচকি হেসে অভিবাদন করে নিজের টেনশন লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করে সোহিনী।