20-06-2021, 08:53 AM
আমি কাঁপতে কাঁপতে উপরে উঠে এলাম। আমার দিকে কটমট করে চেয়ে সুজন পিল্লাই বলল, তুমি না বড় নচ্ছার মেয়ে। এতটা বেয়াদপি করলে ক্লাবের সন্মান হানি হবে। তুমি কাল থেকে আর ক্লাবে আসবে না। তাছাড়া রক্তিম তোমার সম্পর্কে যা তা বলে গেছে। তুমি ক্লাবের সুষ্ঠ পরিবেশ নষ্ট করছ। সুইমিং এর নামে তুমি এখানে ব্যভিচার করতে আসো। দেহ প্রেম করার জায়গা লোটাস নয়। রাণা রাজন পর্যন্ত তোমাকে যথেষ্ট ঘৃণা করে। আই সে ইউ গেট লষ্ট।
এরপর গাড়ী ড্রাইভ করে আমি বাড়ি ফিরলাম। স্টিয়ারিং ধরতে হাত কাঁপছিল। কোনরকমে অ্যাক্সিডেন্টের হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে বাড়ি এলাম।
আমার নরম বিছানায় আছড়ে পড়লাম। হু হু করে আমি কাঁদতে লাগলাম। নরম বিছানাটায় যেন অজস্র কাঁটা আমাকে ক্ষত বিক্ষত করল। এত একসময় রানা রাজনের গাঢ় স্পর্ষ অনুভব করি। ওরা আমার শরীর দংশায়। লুটে পুটে নিতে গেলেই বাঁধা পায়। আর সেই বাঁধায় রানা, রাজন, ত্রিনাথ, বিপ্লব এমনকি রক্তিমও রেগে আগুন।ওরা আমার ইজ্জৎ লুটেপুটে খেতে চায়। কিন্তু আমি তো নিজেকে নষ্ট করতে চাই না। আমার ফুলের মতন এত সুন্দর শরীর আমি নোংরা নর্দমায় মাখামাখি করতে পারব না। বাবা আমাকে বিশ্বাস করে। সে বিশ্বাসের মর্যাদা নষ্ট করতে আমি নারাজ। তাছাড়া অর্পিতাও বলেছে, ওদের লোভে কখনও পা গলাবি না। যত খুশি ফুর্তী করবি। জীবন ফুর্তী চায়। ছেলেদের সঙ্গ দিবি আনন্দ নিবি। শরীর আরাম দিতে যেটুকু ভদ্রতা, তার বেশি নিজেকে সঁপে দিবি না। বাবাও আমাকে আড়ালে ডেকে, বুকে জড়িয়ে ধরে আদর করতে করতে বলেছে, তৃষ্ণা, তুই নিজেকে যদি ভালবাসিস তবে নিজেকে কখনও নষ্ট করবি না। তোর আগুন ধরা রূপ দেখে অনেক ছেলে তোকে যৌবনের উত্তাপে দগ্ধ করতে চাইবে। পুরুষ মাত্রই মেয়েদের যৌবন রাঙা দেহতে লালায়িত হয়। বিয়ের আগে ওসব একদম না।আমার নরম গালে গাল রেখে বাবা সস্নেহ উপদেশ আমাকে অনেক দিয়েছে। কিন্তু লোটাসের ম্যানেজার আমাকে দূর করে দিল? রাত ভোর আমি শুধু কেঁদেই ভাসালাম। কেঁদে কেঁদে চোখ ফুলে উঠেছে। সকালে চায়ের আসরে যখন বাবার পাশে বসলাম, তখনই অর্পিতার ফোন পেলাম।
ফোনে অর্পিতা বলল, তৃষ্ণা, ম্যানেজার পিল্লাই আজ সন্ধেবেলা তোকে তার বাড়ীতে দেখা করতে বলেছে। তুই আমার সাথে চল।
অর্পিতার মুখ থেকে এমন কথা শুনে আমি লাফিয়ে উঠলাম। অর্পিতা এরপরে গাড়ী নিয়ে হর্ণ দিতে আমি টগবগ করে ওপর থেকে নেমে এলাম। আসার সময় বাবাকে গলা জড়িয়ে একটা হামি খেয়ে বললাম, যাই?
বাবা আমার বন্ধুর মতন।মাকে আমি ভয় করি। তার ওপরে কলেজের লেকচারার ব্যক্তিত্ববোধ সাংঘাতিক। কথা যেটুকু বলে মেপে বলে। আমি মায়ের কাছে বেশি ঘেঁসি না।
অর্পিতা গাড়ীর স্টীয়ারিং ধরে দরজা খুলে আমায় বলল, আয়, কি চমক দিয়েছিস রে? ম্যানেজার পিল্লাই এর তো পিলে একেবারে চমকে যাবে।
আমি বললাম, তুই যাবি না? অর্পিতা মুখ ঘুরিয়ে চোখ ছোট করে বলল, আজ্ঞে না। আমার ওখানে নো এন্ট্রি। রক্তিম থাকলেও থাকতে পারে।ও তো পিল্লাই এর চামচা।
আমি শুনে বললাম, তার মানে?
অর্পিতা সামনের দিকে স্থির তাকিয়ে স্টিয়ারিং ঘোরাতে ঘোরাতে বলল, রক্তিম হচ্ছে লোটাসের ইনস্ট্রাকটার। আর ম্যাডোনা ডান্স সেন্টারের ম্যানেজার। চাকরিটা ও পায় ওর স্মার্টনেস আর হ্যান্ডসাম ফীগারের জন্য।
আমি বললাম, রক্তিম তো আমার ওপর ক্ষেপে রয়েছে।
অর্পিতা বলল, জানি।
আমি বললাম, কি জানিস? রক্তিম আমার শরীর লুন্ঠন করতে এগিয়ে আসে। আমি ধাক্কা মেরে ওকে সরিয়ে দিতে রক্তিম সে কী কাকুতি মিনতি করে। আমি টাটা করে পালাই। ওকে ছুঁতেই দিই না।
অর্পিতা বলে, বেশ করিস। ওরা আসলে মেয়েদের দেহটা খুব সস্তা ভাবে।রক্তিম সম্পর্কে আমার কাকা। সাধে কি ওর নাম ধরে ডাকি?
আমি বললাম, সে তো জানি। তবে তুই রক্তিম বলে ডাকিস। কাকা বলিস না কেন?
অর্পিতা নাক কুঁচকে বলে, বাড়ীতে যখন তখন আমাকে ধরবে, চটকাবে। চুমু খাবে। বুক দুটো টাটিয়ে দেবে। বয়সে মাত্র পাঁচ বছরের বড়। কে ওকে কাকা বলবে? তবে তৃষ্ণা, তুই যাই বল, বিপ্লবেরে আদর খেতে আমার কিন্তু বেশী ভাল লাগে।নাম বিপ্লব। কাজে কত নরম সরম। ও যা করে, আগে বলে নেয়। বার বার প্রশ্ন করে, ভাল লাগছে তো?
আমি বললাম, তুই ওকে সব দিয়েছিস?অর্পিতা গাড়ীতে ব্রেক মারলো। আমি হুমড়ি খেয়ে পড়লাম। সামনে একটা কুকুরকে বাঁচাতে গিয়ে ওকে ব্রেক মারতে হল। তারপর অর্পিতা ঘাড় ঘুরিয়ে বলল, বিপ্লবের দাপট আমি না রেখে পারলাম না। প্রথম প্রথম যন্ত্রণা। তারপর সুখের মৃদু বাতাস। গায়ে শিরশিরানি আবেশে কত তৃপ্তির স্বাদ।
আমি ওকে বললাম, মুখ পুড়ি ডুবে ডুবে জল খাচ্ছিস? আর আমাকে অযথা জ্ঞান দিলি?
কথা গুলো আর পুরোটা বলা হল না। গাড়ি সুইনো স্ট্রিটে আসতে অর্পিতা বলল, ড্রিম সার্কেল। অ্যাপার্টমেন্টের তিনতলায় মিঃ পিল্লাই থাকে।