18-06-2021, 08:56 PM
#অন্য_রূপকথা
আজকাল আমাকে বাজারে যেতে হয় না!
লকডাউনের পর থেকেই আমাদের পাড়ায় সাইকেল ভ্যানে করে সবজি, মাছ, ফল এমনকি পুজোর ফুল মালা নিয়ে আসেন অনেকে। কোভিড সেরে গেলেও আমি এখনো বেশ দুর্বল, তাই মোটামুটি সকাল আটটা বেজে গেলেই তক্কেতক্কে থাকি, আর দরকার মতো ওঁদের ডাক শুনে নেমে আসি বাড়ির নিচে, সবজি, ফল, এসব কেনার জন্য।
আজ ঘুম ভেঙেছে টাপুরটুপুর নূপুর বাজার শব্দে। বেশ মনোরম সকাল। আষাঢ়স্য দ্বিতীয় দিবস... আহা! কিন্তু বাকি কিছু ভাবার আগেই "সবজি লাগবেএএএএএ সবজি" শুনে মনে পড়ে গেল আজ কেনাকাটা করতেই হবে।
রাস্তায় এসে দেখি বেশ কয়েকজন ভ্যানের কাছে এসে দাঁড়িয়ে আছেন। একটু দূরত্ব রেখে আমিও দাঁড়ালাম। সবার পরে ওই সবজি দাদা আমাকে আমার প্রয়োজনীয় জিনিস গুলো দিতে শুরু করলেন। আর তখনই আমার চোখ গেল ওঁর দিকে। আসলে, ওঁর বুকপকেটের দিকে, সেখানে রাখা একটা বেশ বড় চকোলেট।
আমি আবার বড্ড কৌতূহলী। তাই জিজ্ঞেস করেই ফেললাম "দাদা, চকোলেট ভালোবাসেন বুঝি? এভাবে পকেটে রেখেছেন, গলে যাবে তো..."
আমার জন্য পটল আর হিমসাগর আম ওজন করার ফাঁকেই একগাল হেসে বললেন "আর বলবেন না বৌদি, ওই হলুদ বাড়ির ভদ্রমহিলা দিলেন। ওই বাড়ির সবার করোনা হয়েছিল, তখন আমি ওঁদের যা যা দরকার এনে দিয়েছি, ওই ফুল ফল দুধ এইসব, এখন সুস্থ হয়ে আমাকে থ্যাংকইউ বলে এইটা দিলেন। এতবার করে বললাম এ তো আমার কর্তব্য ছিল, তেমন কিছুই করিনি... শুনলই না...হেঁ হেঁ..."
বৃষ্টিভেজা সকালে, হাঁটু পর্যন্ত গোটানো প্যান্ট, মলিন চেককাটা জামা আর ক্লান্ত, তোবড়ানো মুখে একগাল হাসি... আমার সামনে তখন এই পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী মানুষটি দাঁড়িয়ে...! যিনি নিজের সাধ্যমতো সাহায্য করেছেন কয়েকটি অসুস্থ মানুষকে, আর কয়েকজন মানুষ...আহা, মানুষের মতো মানুষ, তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নিজেদের মনের মাধুরী মিশিয়ে। কখনো কখনো জীবনে ক্ষয়াটে রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে আমরা ভুলেই যাই, ধন্যবাদ দেবার প্রয়োজন কতটা... প্রায়শই 'টেকেন ফর গ্রান্টেড' হিসেবে নিয়ে ফেলি উপকারী মানুষদের। অথচ, একটু ভালবাসা...একটু উষ্ণতা...এইটুকুই... এইটুকুই তো পারে অপার আনন্দ নিয়ে আসতে।
আর...ওই হাসি! আজ সবজিদাদা সারাদিন হাসবেন...আরও আরও মানুষকে সাহায্য করবেন, আমি যেন দেখতে পাচ্ছিলাম...
স্যাঁতসেঁতে দিন আর কানায় কানায় ভরে যাওয়া মন - শুধু সবজি দাদা ই নয়, আমিও আজ খুব, খুব সুখী মানুষ...
আজকাল আমাকে বাজারে যেতে হয় না!
লকডাউনের পর থেকেই আমাদের পাড়ায় সাইকেল ভ্যানে করে সবজি, মাছ, ফল এমনকি পুজোর ফুল মালা নিয়ে আসেন অনেকে। কোভিড সেরে গেলেও আমি এখনো বেশ দুর্বল, তাই মোটামুটি সকাল আটটা বেজে গেলেই তক্কেতক্কে থাকি, আর দরকার মতো ওঁদের ডাক শুনে নেমে আসি বাড়ির নিচে, সবজি, ফল, এসব কেনার জন্য।
আজ ঘুম ভেঙেছে টাপুরটুপুর নূপুর বাজার শব্দে। বেশ মনোরম সকাল। আষাঢ়স্য দ্বিতীয় দিবস... আহা! কিন্তু বাকি কিছু ভাবার আগেই "সবজি লাগবেএএএএএ সবজি" শুনে মনে পড়ে গেল আজ কেনাকাটা করতেই হবে।
রাস্তায় এসে দেখি বেশ কয়েকজন ভ্যানের কাছে এসে দাঁড়িয়ে আছেন। একটু দূরত্ব রেখে আমিও দাঁড়ালাম। সবার পরে ওই সবজি দাদা আমাকে আমার প্রয়োজনীয় জিনিস গুলো দিতে শুরু করলেন। আর তখনই আমার চোখ গেল ওঁর দিকে। আসলে, ওঁর বুকপকেটের দিকে, সেখানে রাখা একটা বেশ বড় চকোলেট।
আমি আবার বড্ড কৌতূহলী। তাই জিজ্ঞেস করেই ফেললাম "দাদা, চকোলেট ভালোবাসেন বুঝি? এভাবে পকেটে রেখেছেন, গলে যাবে তো..."
আমার জন্য পটল আর হিমসাগর আম ওজন করার ফাঁকেই একগাল হেসে বললেন "আর বলবেন না বৌদি, ওই হলুদ বাড়ির ভদ্রমহিলা দিলেন। ওই বাড়ির সবার করোনা হয়েছিল, তখন আমি ওঁদের যা যা দরকার এনে দিয়েছি, ওই ফুল ফল দুধ এইসব, এখন সুস্থ হয়ে আমাকে থ্যাংকইউ বলে এইটা দিলেন। এতবার করে বললাম এ তো আমার কর্তব্য ছিল, তেমন কিছুই করিনি... শুনলই না...হেঁ হেঁ..."
বৃষ্টিভেজা সকালে, হাঁটু পর্যন্ত গোটানো প্যান্ট, মলিন চেককাটা জামা আর ক্লান্ত, তোবড়ানো মুখে একগাল হাসি... আমার সামনে তখন এই পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী মানুষটি দাঁড়িয়ে...! যিনি নিজের সাধ্যমতো সাহায্য করেছেন কয়েকটি অসুস্থ মানুষকে, আর কয়েকজন মানুষ...আহা, মানুষের মতো মানুষ, তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নিজেদের মনের মাধুরী মিশিয়ে। কখনো কখনো জীবনে ক্ষয়াটে রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে আমরা ভুলেই যাই, ধন্যবাদ দেবার প্রয়োজন কতটা... প্রায়শই 'টেকেন ফর গ্রান্টেড' হিসেবে নিয়ে ফেলি উপকারী মানুষদের। অথচ, একটু ভালবাসা...একটু উষ্ণতা...এইটুকুই... এইটুকুই তো পারে অপার আনন্দ নিয়ে আসতে।
আর...ওই হাসি! আজ সবজিদাদা সারাদিন হাসবেন...আরও আরও মানুষকে সাহায্য করবেন, আমি যেন দেখতে পাচ্ছিলাম...
স্যাঁতসেঁতে দিন আর কানায় কানায় ভরে যাওয়া মন - শুধু সবজি দাদা ই নয়, আমিও আজ খুব, খুব সুখী মানুষ...