Thread Rating:
  • 24 Vote(s) - 3.21 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Thriller RE: '' মিকি মাউস '' (সমাপ্ত ) ।
#41
[Image: micky-1.jpg]

পর্ব ৭।

------------------------- ।

মিস শালিনী কোনদিনই ছেলেদের পছন্দ করতো না কারন সে ছোট থেকেই দেখেছিলো যে তার বাবা কীভাবে নিত্যনতুন গার্ল ফ্রেন্ড নিয়ে বাড়ীতে নোংরামির আসর বসাতো আর সে বাচ্চা অবস্থায় এটাও চোখের সামনে দেখেছে সেই আসরের প্রতিবাদ করলে তাঁর মাকে ঠিক কতটা অত্যচার সহ্য করতে হতো ।
শালিনী নিজের চোখেই দেখেছিলো যে তার মা কীভাবে তিল তিল করে শেষ হয়ে গেছিলো, সেই ব্যাভিচারি বাবার প্রতি ঘৃণাতেই শালিনী নিজেকে আজ ঘোরতর পুরুষ বিদ্বেষী করে তুলেছিল। নিশিকান্তর কথাতে এইবার শালিনী আবার বর্তমানে ফেরত আসে, শালিনী জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাতে নিশিকান্ত আবার বলে
'' ম্যাডাম আমার মনে হয় ওই শুয়োরের বাচ্চা সুমিতকে আমাদের ইমিডিয়েট গ্রেফতার করা উচিত, কারন আমার কাছে পুরো প্রমান আছে ওর বিরুদ্ধে ''। পুরনো কথা মনে পড়ে যাওয়াতে শালিনী এমনিতেই একটু বিষণ্ণ বোধ করে তার উপর নিশিকান্তর মুখে খিস্তি শুনে শালিনী এইবার একটু বিরক্ত হয়েই বলে
'' আপনি তখন থেকে শুধু বলে যাচ্ছেন যে সুমিত দোষী, আপনার কাছে প্রমান আছে টা কি প্রমান আপনার কাছে আছে তা শুনি!''। শালিনীর বিরক্তি নিশিকান্তের চোখে ভালোই ধরা পড়ে কিন্তু সে রাগে না কারন সে জানে এর পড়ে সে যা বলতে চলেছে সেটা শুনেই ম্যাডামের চোখ ছানাবড়া হয়ে যাবে। নিশিকান্ত অল্প হেসে প্রত্যায় এর সঙ্গে  বলে  '' ম্যাডাম এখন মডার্ন টেকনোলজির যুগ তাই অপরাধী অন্যায় করে ছাড়া পাবেনা, লাস্ট চারটে মৃত্যুর সময় আমাদের সুমিত বাবুকে কেউ কেউ দেখেছে সেই নদীর পাড়ে ঘুরতে।  দ্বিতীয়ত সুমিত নিজে থার্ড ইয়ার অব্দি ডাক্তারি পড়ে ছেড়ে দেয় আর মৃত্যুগুলো যে রকম জটিল তাতে এটা যে একদম পাকা হাতের কাজ তা তো বোঝায় যায় আর .........''
বলতে বলতেই নিশিকান্ত কে এবার থামতে হয় কারন তখন ঘরে সহায় সাহেব ঢুকেছেন।  তিনি ঢুকেই বলে উঠেন '' কি হলও নিশি তুমি থামলে কেন? ভালোই তো বলছিলে বাকিটা বলো ''।
নিশিকান্ত সহায় সাহেবের ভরসা পেয়ে আবার বলতে শুরু করে, সে বলে '' ম্যাডাম আর সহায় সাহেব আপনারা দুজনেই যখন এখানে আছেন তখন ভালোই হলো, আমার সন্দেহের কথা ভালো করেই আপনাদের কাছে ব্যাক্ত করবো। আমার প্রথম মৃত্যুর পরেই একটা সন্দেহ মনে দানা বাধে তবে দ্বিতীয় মৃত্যুর পড়ে সেই ধারনাটা আমার আরও পোক্ত হয়ে যায়। দুজন ছেলেমেয়ে মারা গেলো একি রকম সিম্পটম, একি ধরনের পোশাক আসাক, পড়াশোনার ধরনও প্রায় এক । তবে এই মৃত্যুর পেছনে লুকিয়ে থাকা মানুষটি নিজেকে খুবই বুদ্ধিমান/ বুদ্ধিমতি মনে করেন কারন এই মৃত্যুগুলো যে খুন আমি অবশ্য সেটা এখনো প্রমান করতে পারিনি । তবে সুমিতের মোবাইল টাওয়ারের লোকেশন কিন্তু সেই নদীর পারেই ছিল চারটে মৃত্যুর সময়েই, তাই দুইয়ে দুইয়ে চার করেই বলছি যে সুমিতকে তুলে আনার পারমিশন দেন। বাকী আমি রুল ভরে সব সত্যি বার করে আনবো''।
সহায় সাহেব আর শালিনী দুজনেই গভীর মনোযোগে নিশিকান্তের বয়ান শুনে যাচ্ছিলো, নিশিকান্তের বক্তব্য শেষ হতেই সহায় সাহেব বললেন '' সবই বুঝলাম নিশি কিন্তু আদালতে তো তোমাকে দাঁড়িয়ে প্রমান করতে হবে যে সুমিতই খুনি, যদি অবশ্য তুমি এই চারটে মৃত্যুকে খুন বলে প্রমান করতে পারো তবেই। কারন প্রথম দুজনের ময়না তদন্ত রিপোর্টে কিছুই অস্বাভাবিক পাওয়া যায় নি, জাস্ট হার্ট ব্লক হয়ে মারা যাওয়া ছাড়া। আর বাকীদের ক্ষেত্রে তো তাঁদের বাড়ীর লোক অভিযোগ ও করেনি অস্বাভাবিক মৃত্যুর, তাই তাঁদের দেহের ময়না তদন্ত অব্দি হয়নি  '' বলে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে উঠে দাঁড়ান।
নিশিকান্ত ঝাঁপিয়ে উঠে বলে '' স্যার আমি তো এটাই বলতে চাইছিলাম, সুমিত কেন করতে দেবে তাঁর মামার দেহের ময়না তদন্ত ? স্যার প্লিস আমায় একবার পারমিশন দিন ওই কালপ্রিট কে লকআপে তুলে আনার,বাকী আমি বুঝে নেব '' কিন্তু তাঁর সবটা শুনেও শালিনীর আর সহায় সাহেবের মুখের নির্লিপ্ত অভিব্যাক্তি জানিয়ে দেয় যে তাঁর দলিল এবারের মত খারিজ হয়ে গেল ।
নিশিকান্ত নিজেও খুব হতাশ বোধ করলো কারন তার মনে হয়েছিলো যে সহায় সাহেব হয়তো তাকে এই কেসটা নিয়ে এগিয়ে যাবার অনুমতি দেবেন,আর সে খুবই নিশ্চিত ছিল যে সুমিত কে তুলে নিয়ে এলেই হয়তো এই কেসটার একটা সুরহা হবেই । তবে এখন সে বুঝতে পারে, যে যতক্ষণ না তার কাছে কোনও অকাট্য প্রমান আসছে যে ওই চারটে মৃত্যু খুনই , আর তাদের সঙ্গে সুমিতবাবু জড়িত ততক্ষণ তাকে কোন রকম ধরপাকড়ের অনুমতি দেওয়া হবে উপরমহল থেকে।
শালিনী আর সহায় সাহেব কে কোন ব্যাপারে একটু নিচুস্বরে আলোচনা করতে দেখে নিশিকান্ত বুঝে যায় যে সে এইখানে সে এখন অযাযিত, তাই দুজন অফিসারের কাছে মৃদু স্বরে পারমিশন নিয়ে সে চুপচাপ ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যায়।
নিশিকান্তের মনটা খুব খারাপ হয়ে ছিলো কারন সে স্পষ্ট বুঝে গেছিলো যে তার তদন্তের ধারা তার দুই অফিসারের মনে ধরেনি। বিক্ষিপ্ত মনে  বাইরে আসতেই সে অপর্ণা ঘোষের একদম মুখোমুখি হয়ে যায়, তাকে দেখে যেন অপর্ণা ঘোষ আকুল পাথারে একটা কিনারা পান। এত খুশী যে তাঁর মত একটা বাজে লোককে দেখে কেউ হতে পারে তা নিশিকান্তর ধারনার বাইরেই ছিলো।  অপর্ণা ঘোষের মুখের পবিত্র হাসি দেখে নিশিকান্তর মনের সব অন্ধকার যেন কেটে যায়, তার মনে হয় এই পৃথিবীতে তো কত মানুষ মনে কত দুঃখ নিয়ে বেঁচে আছে তাদের থেকে সে তো অনেক গুন ভালো আছে, নিজের দুঃখ কে মদ মাগী দিয়ে ভুলে থাকতে পারে । এটা ভাবতেই তার মনটা অনেকটা হাল্কা হয়ে গেলো।
সে এবার হাসি মুখেই অপর্ণার দিকে এগিয়ে যেয়ে নিজে থেকেই বলে '' কি ব্যাপার আপনি এখানে আবার? সব ঠিক আছে তো?''।
এই কথা শুনেই অপর্ণা দুঃখী মুখে মাথা নেড়ে বলে '' না সার যে কে সেই, আপনি একবার চলুন না তাহলেই হয়তো আমার ছেলেটার ভয় কেটে যাবে, সার প্লিস একবার চলুন''। নিশিকান্ত অপর্ণার নিস্পাপ মুখটার দিকে তাকিয়ে আর না করতে পারে না, তাছাড়া সেও চাইছিলো এই থানার চৌহদ্দি থেকে একটু বাইরে বেড়িয়ে খোলা হাওয়ায় একটু শ্বাস নিতে।  গাড়ীতে অপর্ণা সমানে নিশিকান্তকে তার ছেলের ব্যাপারেই গড়গড় করে অনেক গল্পই করে যায়, তবে নিশিকান্ত কিন্তু সেদিকে কান না দিয়ে মাঝে মাঝে শুধু আড়চোখে দেখে যাচ্ছিলো। যে হাওয়ায় অপর্ণার চুলের গছি কীভাবে বারবার তার কপালে আসছিলো আর অপর্ণা তা আলগোছে সরিয়ে দিয়ে নিজের কথা বলে যাচ্ছিলো অত্যান্ত সরলতার সঙ্গে, নিশিকান্ত মাঝে মাঝেই অপর্ণার কথা শুনতে শুনতে ভাবছিলো যে এই হানাহানির যুগে মানুষ এতটাও সরল হতে পারে?
তবে সে এতদিনে এটা জানতো যে অপর্ণা মানসিক ভাবে একটু অসুস্থ, কিন্তু নিশিকান্ত গাড়ী চালাতে চালাতে ভাবে যে হয়তো এই যুগের পৃথিবীতে একটু মানসিক ভাবে অসুস্থ মানুষরাই সরল কারন তাদের মনে কোন কালিমা লাগেনা। নানা কথা ভাবতে ভাবতে নিশিকান্ত অপর্ণার নির্দেশে গাড়ী চালিয়ে যাচ্ছিলো সে খেয়ালও করেনি যে তাড়া গাড়ী নিয়ে ততক্ষণে শহরের একদম শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছিলো। শহরের তুলনায় এই শহরতলি অনেক বেশী নির্জন, শেষ বিকেলে চারিদিকে বড় বড় গাছের ছায়ায় ততক্ষণে প্রায় অন্ধকার হয়ে আসছিলো, নিশিকান্ত জয়েন করার পড়ে এই এলাকায় এর আগে হয়তো বার দুয়েক এসেছিলো।
আদতে ওই জায়গাটা একটা রেলওয়ে কলোনি আর একদম শান্তশিষ্ট ভদ্রলোকেদের জায়গা । চারিদিকে শুধু ছবির মত সাজানো লাল রঙের বাংলো টাইপের সব ঘর আর তাদের সামনে সাজানো বাগান দেখলেই যে কোনও মানুষেরই মন ভালো হয়ে যায়।
শেষ বিকেলে ততক্ষণে পাখীরা সব বাসায় ফিরছিলো আর সেই প্রকিতির বুকে সাজানো কলোনিটি যেন একটি অদ্ভুত নির্জনতায় ডুবে যাচ্ছিলো।  নিশিকান্ত এতক্ষণে একটু চিন্তিত হয়ে পড়েছিলো কারন তারা প্রায় একঘণ্টা ধরে যাচ্ছিলো তবুও তাদের গন্তব্য এসে পৌঁছায়নি, গাড়ী আস্তে আস্তে এবার রেলওয়ে কলোনির সীমাও অতিক্রম করে যায় কিন্তু তখনো অপর্ণার বাড়ী এসে পৌছয়নি। নিশিকান্ত আবছা অন্ধকারের মধ্য গাড়ীর জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখে যে তারা জনপদ ছাড়িয়ে একটু জঙ্গল ঘেঁষা নির্জন জায়গা দিয়ে যাচ্ছিলো যার দূর দুরান্তেও কোন লোকালয়ের চিহ্নও দেখা যাচ্ছিলো না।
নিশিকান্ত এইবার অধৈর্য হয়েই জিগ্যেস করে উঠে '' আচ্ছা আর কত দুরে আপনার বাড়ী ?রাস্তা তো শেষই হয়না দেখছি ''। অপর্ণা নিশিকান্তর কথাতে নিজের বকবকানি বন্ধ করে তার দিকে একবার আহত পাখির মত তাকিয়ে করুন স্বরে বলে উঠে '' আমার জন্য আপনার খুব সময় নষ্ট হছে তাই না? ঠিক আছে আপনি আমাকে এখানে নামিয়ে দিয়ে চলে যান বাকি পথটা না হয় আমি হেঁটেই চলে যাবো '', বলে ছলছল চোখে তাকিয়ে থাকেন নিশিকান্তর দিকে।
নিশিকান্তর অতি বড় শত্রুও কোনোদিন বলবে না যে সে সুন্দরী মেয়েদের প্রতি কক্ষনো কঠোর হতে পেরেছে বলে !  আর সে নিজের ট্র্যাক রেকর্ড ঠিক রেখে আজকেও অপর্ণার চোখে জল দেখে গলে গেল । নিশিকান্ত কথা না বাড়িয়ে গাড়ীটা সোজা চালিয়ে দেয় সামনে দেখা জঙ্গলের মধ্য একটি মাত্র সরু রাস্তা ধরেই।
গাড়ীর হেডলাইটের মায়াবি আলোতে নিশিকান্ত তার ঘাড় না ঘুরিয়েই মাঝে মাঝেই আড়চোখে অপর্ণার অনন্য সুন্দর মুখটা দেখে যাচ্ছিলো আর নিজের একাকীত্বর কথা ভেবে বড় বড় দীর্ঘশ্বাস ফেলে যাচ্ছিলো। অপর্ণার মুখটা দেখে নিশিকান্তর ইচ্ছা হচ্ছিলো যে সে নিজের হাত বাড়িয়ে তার চোখের জল মুছিয়ে দিয়ে তার মাথাটা ধরে নিজের চওড়া কাঁধে রেখে দেয়, কিন্তু সংযম আর সম্ভ্রম এই দুই যে বড় বালাই।  তাই নিশিকান্তকে তার এই ইচ্ছা কে নিজের মনেই পুষে রেখে দিয়ে সামনের রাস্তায় মনঃসংযোগ করতে হয়।  কিছুক্ষণ চলার পর এইবার জঙ্গলের গভীরতা কেটে গিয়ে সামনে যেন একটা হাল্কা আলোর রেখা দেখা যেতে থাকে। নিশিকান্তর মন একটু বিষণ্ণ হয়ে যায় কারন গোধূলির আলোতে অপর্ণার মত অপার্থিব সুন্দরীর সঙ্গও যে এইবার শেষ হয়ে আসছে সেটা নিশিকান্ত বুঝতে পারছিলো। নিশিকান্তর আশঙ্কায় সত্যি হয় আর তারা রাস্তা শেষেই একটি বাড়ীর সামনে এসে দাঁড়ায়।ঘরটি এমন ভাবে বানানো যে রাস্তা শেষ হতেই ঘরটি যেন একটি পাহাড়ের মত পথ আটকে দাঁড়িয়ে ছিল।  ঘরটির জন্যই যেন রাস্তাটা এইখানে বানানো হয়েছিলো কারন নিশিকান্ত তার অভিজ্ঞ চোখেও আশেপাশে অন্য কোনও জনপদের চিহ্ন দেখতে পেলো না।
গাড়ী থামতেই অপর্ণা তার সেই অভিমানী স্বরে বলে '' এবার আপনি যেতে পারেন, আমি ভালো ভাবেই পৌঁছে গেছি, ধন্যবাদ''।
নিশিকান্তর মনে হয় তার যেন আবার সেই কলেজের বয়েস ফিরে এলো, কারন অপর্ণার অভিমানী কণ্ঠে এই কথা শুনে তার মনে হয় যেন বুকটা ফেটে যাবে।  সবাই জানে যে নিশিকান্ত কামুক, মাতাল, ঘুষখোর, গুন্ডা  কিন্তু এই নিশিকান্তর বুকের মধ্য যে এতটা ভালবাসা সেধিয়ে ছিল নিশিকান্ত মনে হয় তা নিজেই আজই প্রথম জানতে পারে!
অপর্ণা চলে যেতে উদ্যাত হলে নিশিকান্ত পেছ থেকে শুধু বলে ''চা না খাইয়েই দরজা থেকেই বিদায় করে দেবেন তো?
অপর্ণা এবার চকিতে ঘুরে দাঁড়িয়ে একটু রেগে গিয়েই বলে উঠে ''আপনার তো আমার জন্য সময় নেই, আপনি ভারী ব্যাস্ত ''। নিশিকান্তর আর সহ্য হলো না, সে এবার এগিয়ে এসে সোজা অপর্ণার চোখের দিকে তাকিয়ে নিচু গলাতে বলে '' ক্ষমা চাইছি, অনেক দিন পড়ে কারুর সান্নিধ্য এসে একটু শান্তি পেলাম, আমার অশান্ত মনটা জুড়িয়ে গেছে, দয়া করে আমাকে আপনার থেকে দুরে চলে যেতে বলে শাস্তি দেবেন না''।
নিশিকান্তর কথা শেষ হতে অপর্ণাও যেন থম মেরে যায়,  সে ভাবতেও পারেনি যে নিশিকান্তর মত রাশভারী অফিসার তার সঙ্গে ভালো করে পরিচিত না হয়েই দ্বিতীয় আলাপেই এইভাবে কথা বলবে। তার এই জীবনে অপর্ণা অনেক অনুরাগী দেখেছে যারা তার জন্য জীবন দিতেও রাজী ছিল, কিন্তু এইভাবে সত্যি কথাটা তার মুখের উপর বলার মত সৎসাহস কেউই দেখাতে পারেনি।
অপর্ণা বোঝে যে নিশিকান্ত অন্তত তার শরীরের জন্য লালায়িত নয়, তার চোখে অপর্ণা মুগ্ধতা ছাড়া আর কিছুই লক্ষ্য করেনি। একটা নারী ঠিকই বুঝতে পারে উপস্থিত পুরুষটা তাঁর থেকে ঠিক কি চাইছে ! অপর্ণা এটাও জানে যে লোকে আড়ালে তাকে পাগল বলে , কেন বলে তার কারণটাও সে ভালো করেই জানে।
আর এই শহরের পুলিসের হিরো হয়ে নিশিকান্ত সেই খবরটা জানবে না সেটা ভাবাও যে বাতুলতা সেটা বোঝার মত বুদ্ধি এই পাগল অপর্ণার ও আছে । অপর্ণা এবার দেখে নিশিকান্তর চোখে মুখে একটা নিঃস্ব , রিক্ত ভাব ফুটে উঠেছে।
অপর্ণার মনের মধ্য স্নেহময়ি ভাবটা এবার জেগে উঠে আর ঘরের দিকে অগ্রসর হতে হতে একবার নিশিকান্তর দিকে তাকিয়ে অল্প হেসে বলে ''আসুন নাহয় চায়ের সঙ্গে একটু ডিমও খেয়ে যাবেন''।
অপর্ণার এই সামান্য কথাতেই নিশিকান্তর মনে হয় যেন সে একটা বন্দি দশা থেকে মুক্তি পেলো , এমন ভাবেই ছোট্ট ছেলের মত প্রায় লাফিয়ে লাফিয়ে অপর্ণার পেছনে তার ঘরে গিয়ে ঢোকে। সদর দরজার তালাটা অপর্ণা নিজের ব্যাগ থেকে একটা চাবি বের করে খুলতে থাকে, তা দেখে নিশিকান্ত একটু অবাক হয়েই জিগ্যেস করে '' আপনার বাড়ীতে আর কেউ নেই? আপনার ছেলে যার জন্য আপনি আমাকে ডেকে নিয়ে এলেন সে কোথায়? আর আপনার মা?''। নিশিকান্তর এই পর পর প্রশ্নের অপর্ণা কোনও জবাব না দিয়ে শুধু মৃদু স্বরে বলে '' আপনি ভেতরে চলুন আপনার সব প্রশ্নেরই জবাব মনে হয় পেয়ে যাবেন''।
ঘরে ঢুকতেই নিশিকান্ত একটু বিস্মিত ভাবেই চারিদিকে তাকিয়ে দেখে। তার কোনোভাবেই মনে হচ্ছিলো না যে এই ঘরে কারুর সংসার থাকতে পারে। এতটা অন্ধকার আর নিস্তব্ধ ছিল যে নিশিকান্ত যেন একটু সন্দিহান হয়েই পড়ে,অপর্ণার সম্বন্ধে যে কথাটা শুনেছিলো তার সত্যতা নিয়ে।
অপর্ণা কিন্তু শুধুমাত্র সুন্দরী ছিলনা তারও প্রমান নিশিকান্ত এবার পেয়ে যায়। তার ঘরের ব্যাপারে সে নিশিকান্তর যে একটু হলেও তাল কেটেছে সেটা না বোঝার মত বোকা অপর্ণা ছিলনা।  নিশিকান্ত এবার কিছু বলার আগেই অপর্ণার হাত এসে পড়ে তার কাঁধে আর নিশিকান্ত চমকে ঘুরতেই দেখে মুখে একটা স্মিত হাসি নিয়ে অপর্ণা তার দিকে অপলক চেয়ে আছে।  নিশিকান্তর মনে হচ্ছিলো যেন সময় তখনই থমকে দাঁড়াক, এই মুহূর্ত যেন আর শেষ না হয় ! তাঁর একাকী জীবনে এই মুহূর্তটার জন্যই হয়তো সে অপেক্ষা করেছিল, কিন্তু নিশিকান্ত জানতো যে তাঁর জীবন অভিশপ্ত, তাই হয়তো আজীবন একা থাকাই তাঁর ললাট লিখন। কিন্তু তবুও সে সব জেনেও এই সামান্য মুহূর্তটা কে আঁকড়ে ধরতে চেয়েছিল, কিন্তু সে হয়তো জানতো না যে বিধাতা এখানেও তাঁর জন্য কাঁটা বিছিয়ে রেখেছেন !
ধৃতরাষ্ট্র - দা বস !
[+] 3 users Like DHRITHARASTHA's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.


Messages In This Thread
RE: '' মিকি মাউস '' - by ddey333 - 14-06-2021, 09:06 AM
RE: '' মিকি মাউস '' - by Bichitro - 14-06-2021, 10:35 AM
RE: '' মিকি মাউস '' - by Bichitro - 14-06-2021, 07:23 PM
RE: '' মিকি মাউস '' - by ddey333 - 14-06-2021, 07:46 PM
RE: '' মিকি মাউস '' - by Bumba_1 - 14-06-2021, 07:22 PM
RE: '' মিকি মাউস '' - by Baban - 14-06-2021, 09:12 PM
RE: '' মিকি মাউস '' - by ddey333 - 16-06-2021, 09:24 AM
RE: '' মিকি মাউস '' - by Bumba_1 - 16-06-2021, 04:00 PM
RE: '' মিকি মাউস '' - by Bumba_1 - 16-06-2021, 08:08 PM
RE: '' মিকি মাউস '' - by Bumba_1 - 17-06-2021, 09:57 PM
RE: '' মিকি মাউস '' - by raja05 - 17-06-2021, 10:56 PM
RE: '' মিকি মাউস '' - by DHRITHARASTHA - 18-06-2021, 10:08 AM
RE: '' মিকি মাউস '' - by ddey333 - 18-06-2021, 10:39 AM
RE: '' মিকি মাউস '' - by ddey333 - 18-06-2021, 04:42 PM
RE: '' মিকি মাউস '' - by RANA ROY - 19-06-2021, 05:41 PM
RE: '' মিকি মাউস '' - by Bumba_1 - 19-06-2021, 05:45 PM
RE: '' মিকি মাউস '' - by Bichitro - 20-06-2021, 12:04 AM
RE: '' মিকি মাউস '' - by Bichitro - 20-06-2021, 11:58 AM
RE: '' মিকি মাউস '' - by RANA ROY - 21-06-2021, 11:43 AM
RE: '' মিকি মাউস '' - by Bumba_1 - 21-06-2021, 09:52 PM
RE: '' মিকি মাউস '' - by chndnds - 21-06-2021, 10:52 PM
RE: '' মিকি মাউস '' - by Bichitro - 22-06-2021, 09:19 AM
RE: '' মিকি মাউস '' - by Bichitro - 22-06-2021, 03:08 PM
RE: '' মিকি মাউস '' - by Bichitro - 22-06-2021, 07:06 PM
RE: '' মিকি মাউস '' - by Bichitro - 22-06-2021, 09:02 PM
RE: '' মিকি মাউস '' - by Bichitro - 22-06-2021, 09:32 PM
RE: '' মিকি মাউস '' - by Bumba_1 - 22-06-2021, 09:42 PM
RE: '' মিকি মাউস '' - by RANA ROY - 23-06-2021, 03:04 AM
RE: '' মিকি মাউস '' - by chndnds - 23-06-2021, 07:37 AM
RE: '' মিকি মাউস '' - by chndnds - 23-06-2021, 04:09 PM
RE: '' মিকি মাউস '' - by Bichitro - 23-06-2021, 07:17 PM
RE: '' মিকি মাউস '' - by Bichitro - 23-06-2021, 10:06 PM
RE: '' মিকি মাউস '' - by Bumba_1 - 23-06-2021, 07:23 PM
RE: '' মিকি মাউস '' - by chndnds - 24-06-2021, 03:07 PM
RE: '' মিকি মাউস '' - by Bichitro - 24-06-2021, 06:54 PM
RE: '' মিকি মাউস '' - by Bichitro - 24-06-2021, 07:29 PM
RE: '' মিকি মাউস '' - by Bichitro - 24-06-2021, 09:15 PM
RE: '' মিকি মাউস '' - by Bichitro - 24-06-2021, 10:47 PM
RE: '' মিকি মাউস '' - by Rajibbro - 25-06-2021, 04:51 AM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)