16-06-2021, 07:51 PM
"কিরে কয়েকদিন ধরে তুই ভার্সিটি যাচ্ছিস না কেন?" চায়ে চুমুক দিতে দিতে বলে কবির।
স্নিগ্ধাদের এপার্টমেন্টের সামনে চায়ের দোকানে বসে স্নিগ্ধা ও কবির চা খাচ্ছিল।
"কিরে উত্তর দিলি না। শরীর খারাপ নাকি?"
"নারে ঠিকই আছি। এমনিই যাইনি।"
"সামনে সেমিস্টার ফাইনাল, এসময় এমনি এমনি ক্লাস মিস করলে চলে?" বলে স্নিগ্ধার দিকে তাকায় কবির। কিন্তু স্নিগ্ধা ওর কথা শুনতে পেল বলে মনে হলোনা, অন্যমনস্কভাবে এক দিকে তাকিয়ে আছে।
হাত দিয়ে তুড়ি মারে কবির স্নিগ্ধার সম্বিত ফিরিয়ে আনার জন্য।
"কিরে ঝিম মেরে গেলি কেন? কি ভাবছিস এতো? আবার ঝগড়া করেছিস নাকি বয়ফ্রেন্ডের সাথে।" কবির বলে।
"ধুর, আর রিলেশনই রাখব না।" দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে স্নিগ্ধা।
"কেন কি হল আবার?"
"ওকে আমি যেমনটা ভাবতাম তেমন নয় ও। এতোদিন আমার সাথে ভালমানুষের অভিনয় করে গেছে। আমার আর প্রেমপ্রীতির ভেতর যাবার ইচ্ছা নেই, প্রেম মানেই অভিনয়।" স্নিগ্ধা বলে।
"একজনকে দিয়ে সবাইকে বিবেচনা করে নিলি?"
"আমার আর বিবেচনা করে কাজ নেই, মা বাবা যার সাথে বিয়ে ঠিক করবে তাকেই বিয়ে করব। ওহো আম্মু তো জামাই পছন্দ করেই রেখেছে, তাকেই বিয়ে করে নেই?" বলে মিটিমিটি হাসে স্নিগ্ধা।
"বিয়ে করলে কর, সমস্যা কোথায়?" কবিরও মিটিমিটি হেসে বলে।
"সমস্যা তো আছেই, ঘুমালো নাক ডাকে। রাতে ঘুমাতেই দিবেনা।"
"কি বললি? আমি নাক ডাকি?"
"ডাকিস না আবার?" বলে নাক ডাকার অনুকরন করে দেখায় স্নিগ্ধা।
"মিথ্যা বলছিস তুই। তুই কিভাবে জানিস?"
"জানব না কেন? তুই আর আমি কি একসাথে ঘুমাইনি?"
"সে তো ছেলেবেলায়। এখন কি আর নাক ডাকি নাকি?"
"এখন আর নাক ডাকিস না?"
"আরে নাহ।"
"আরো সমস্যা আছে। তুই খুব বেশিই চিকন। গলার হাড় দেখা যায় তোর।"
"তুইও তো চিকন।"
"আমাকে তো আর বাহাদুরি দেখাতে হবেনা। গায়ে জোর না থাকলে স্ত্রীকে রক্ষা করবি কিভাবে? বেশি খেয়ে গায়ে শক্তি বাড়া, নিয়মিত জিম কর, আর মার্শাল আর্ট শিখে নে। তারপর দেখা যাবে।"
"হয়েছে হয়েছে, আমাকে আর তোর বিয়ে করতে হবেনা।" নিরাশ হওয়ার ভঙ্গিতে বলে কবির।
খিল খিল করে হাসতে থাকে স্নিগ্ধা কবিরের কথা শুনে। ইদানিং স্নিগ্ধার এই মিষ্টি হাসিতে কবির কেন যেন বুকের ভেতর ব্যাথা অনুভব করে।
সারাদিন মন খারাপ ছিল স্নিগ্ধার, কিন্তু কবিরের সাথে কথা বলে মনটা ভাল হয়ে গেছে। আগেও লক্ষ করেছে স্নিগ্ধা মন যতই খারাপ থাকুক, ওর সাথে কথা বললেই ভাল হয়ে যায়, কি জাদু আছে কে জানে?
হঠাত রিংটোন বেজে ওঠে স্নিগ্ধার মোবাইলে। সজল কল দিয়েছে, দুইবার রিং হওয়ার পর রিসিভ করে স্নিগ্ধা।
"হ্যালো স্নিগ্ধা, তুমি কালকে একটু আসতে পারবে বাসায়? আম্মা তোমাকে খুব দেখতে চাচ্ছেন।" সজল বলে।
"কালকে আমার ক্লাস আছে। পরীক্ষার আগে ক্লাস মিস করা উচিত হবেনা।" স্নিগ্ধা বলে।
"অন্তত বিকেলের দিকে এসো।"
"ঠিক আছে। কিন্তু আমার দুটি শর্ত আছে। প্রথমতো আমাকে নিতে আসবে না, দ্বিতীয়ত তখন তুমি বাসায় থাকবে না।" স্নিগ্ধা বলে।
"ঠিক আছে, তবুও এসো।" দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে সজল।
স্নিগ্ধা কল কেটে দেয়।
"তুই না বললি রিলেশন রাখবি না?" কবির বলে।
"কি করব বল, পাঁচ বছরের রিলেশন। মাকড়শার জালের মতো আষ্টেপিস্টে আটকে গেছি, যতো ছাড়াতে চাই ততো আটকে যাচ্ছি। আর তাছাড়া ওর মা বেশ সহজ সরল মানুষ, ওর মতো না। তুইও চল না, তোরও ভাল লাগবে।"
"আরে না, বিকেলে আমার টিউশনি আছে।"
"একদিন টিউশনি মিস দিলে কিছু হবে না।" স্নিগ্ধা বলে।
বিকেল চারটের সময় স্নিগ্ধা কবিরকে কল করে। কয়েকবার রিং হওয়ার পর রিসিভ হয়।
"হ্যালো কবির, কোথায় তুই?"
"আমি বাসে। ধানমন্ডি যাচ্ছি, টিউশনি আছে।" কবির বলে।
"তোর না আমার সাথে এক যায়গায় যাওয়ার কথা? " স্নিগ্ধা বলে।
"আমি বললাম না যে আমি যেতে পারবনা, টিউশনি আছে?" কবির বলে।
"আমি কোন কথা শুনবনা, তোকে আমার সাথে যেতেই হবে। তুই পান্থপথে অপেক্ষা কর, আমি আসছি।"
"সামনে ছাত্রের পরীক্ষা, এসময় টিউশনি ফাঁকি দেয়া ঠিক হবে?"
"আমি ওসব কথা শুনব না, আমি এখন রওনা দিচ্ছি, যদি পান্থপথ মোড়ে তোকে না পাই তো তোর খবর আছে।" বলে ফোন কেটে দেয়।
স্নিগ্ধা তারপর এপার্টমেন্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসে।
স্নিগ্ধা পান্থপথ মোড়ে এসে কবিরকে আবারও কল দেয়।
"কোথায় তুই?" স্নিগ্ধা বলে।
"পান্থপথ মোড়ে, যেমনটা হুকুম করেছেন আমায়।"
"ও, তোকে দেখতে পেয়েছি, রাস্তা পার হয়ে আয়।"
"আপনার হুকুম শিরোধার্য শাহাজাদী।"
"চুপ।" বলে কেটে দেয় স্নিগ্ধা।
"চা খাবি? দারুন চা বানায় ওই চাচা।" ফুটপাতে একটি চায়ের দোকানে দেখিয়ে বলে কবির।
"না, পরে খাব, এখন চল, বনানি যেতে হবে।"
"তুই তোর হবু শাশুড়ির সাথে দেখা করতে যা না, আমাকে টানছিস কেন?"
"চুপ, তুই খুব বেশি কথা বলিস। চুপচাপ চল আমার সাথে।"
"আপনার হুকুম শিরোধার্য, রাজকুমারী।"
"তুই এরকম করে কথা বলছিস কেন?" স্নিগ্ধা বলে।
"তুই যেভাবে হুকুম জারী করছিস তাতে মনে হচ্ছে তুই রাজকুমারী আর আমি তোর ভৃত্য।"
"ও তাই! ঠিক আছে আমি আর কোন হুকুম করব না। তুই তোর টিউশনিতেই যা, লাগবেনা আর তোকে।" অভিমানের সুরে বলে স্নিগ্ধা।
"আরে রাগ করিস কেন? আমি তো ইয়ার্কি করলাম। আই এম সরি। এই নে কানে ধরছি।"
"তার দরকার নেই, চুপচাপ চল।" স্নিগ্ধা বলে।
স্নিগ্ধাদের এপার্টমেন্টের সামনে চায়ের দোকানে বসে স্নিগ্ধা ও কবির চা খাচ্ছিল।
"কিরে উত্তর দিলি না। শরীর খারাপ নাকি?"
"নারে ঠিকই আছি। এমনিই যাইনি।"
"সামনে সেমিস্টার ফাইনাল, এসময় এমনি এমনি ক্লাস মিস করলে চলে?" বলে স্নিগ্ধার দিকে তাকায় কবির। কিন্তু স্নিগ্ধা ওর কথা শুনতে পেল বলে মনে হলোনা, অন্যমনস্কভাবে এক দিকে তাকিয়ে আছে।
হাত দিয়ে তুড়ি মারে কবির স্নিগ্ধার সম্বিত ফিরিয়ে আনার জন্য।
"কিরে ঝিম মেরে গেলি কেন? কি ভাবছিস এতো? আবার ঝগড়া করেছিস নাকি বয়ফ্রেন্ডের সাথে।" কবির বলে।
"ধুর, আর রিলেশনই রাখব না।" দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে স্নিগ্ধা।
"কেন কি হল আবার?"
"ওকে আমি যেমনটা ভাবতাম তেমন নয় ও। এতোদিন আমার সাথে ভালমানুষের অভিনয় করে গেছে। আমার আর প্রেমপ্রীতির ভেতর যাবার ইচ্ছা নেই, প্রেম মানেই অভিনয়।" স্নিগ্ধা বলে।
"একজনকে দিয়ে সবাইকে বিবেচনা করে নিলি?"
"আমার আর বিবেচনা করে কাজ নেই, মা বাবা যার সাথে বিয়ে ঠিক করবে তাকেই বিয়ে করব। ওহো আম্মু তো জামাই পছন্দ করেই রেখেছে, তাকেই বিয়ে করে নেই?" বলে মিটিমিটি হাসে স্নিগ্ধা।
"বিয়ে করলে কর, সমস্যা কোথায়?" কবিরও মিটিমিটি হেসে বলে।
"সমস্যা তো আছেই, ঘুমালো নাক ডাকে। রাতে ঘুমাতেই দিবেনা।"
"কি বললি? আমি নাক ডাকি?"
"ডাকিস না আবার?" বলে নাক ডাকার অনুকরন করে দেখায় স্নিগ্ধা।
"মিথ্যা বলছিস তুই। তুই কিভাবে জানিস?"
"জানব না কেন? তুই আর আমি কি একসাথে ঘুমাইনি?"
"সে তো ছেলেবেলায়। এখন কি আর নাক ডাকি নাকি?"
"এখন আর নাক ডাকিস না?"
"আরে নাহ।"
"আরো সমস্যা আছে। তুই খুব বেশিই চিকন। গলার হাড় দেখা যায় তোর।"
"তুইও তো চিকন।"
"আমাকে তো আর বাহাদুরি দেখাতে হবেনা। গায়ে জোর না থাকলে স্ত্রীকে রক্ষা করবি কিভাবে? বেশি খেয়ে গায়ে শক্তি বাড়া, নিয়মিত জিম কর, আর মার্শাল আর্ট শিখে নে। তারপর দেখা যাবে।"
"হয়েছে হয়েছে, আমাকে আর তোর বিয়ে করতে হবেনা।" নিরাশ হওয়ার ভঙ্গিতে বলে কবির।
খিল খিল করে হাসতে থাকে স্নিগ্ধা কবিরের কথা শুনে। ইদানিং স্নিগ্ধার এই মিষ্টি হাসিতে কবির কেন যেন বুকের ভেতর ব্যাথা অনুভব করে।
সারাদিন মন খারাপ ছিল স্নিগ্ধার, কিন্তু কবিরের সাথে কথা বলে মনটা ভাল হয়ে গেছে। আগেও লক্ষ করেছে স্নিগ্ধা মন যতই খারাপ থাকুক, ওর সাথে কথা বললেই ভাল হয়ে যায়, কি জাদু আছে কে জানে?
হঠাত রিংটোন বেজে ওঠে স্নিগ্ধার মোবাইলে। সজল কল দিয়েছে, দুইবার রিং হওয়ার পর রিসিভ করে স্নিগ্ধা।
"হ্যালো স্নিগ্ধা, তুমি কালকে একটু আসতে পারবে বাসায়? আম্মা তোমাকে খুব দেখতে চাচ্ছেন।" সজল বলে।
"কালকে আমার ক্লাস আছে। পরীক্ষার আগে ক্লাস মিস করা উচিত হবেনা।" স্নিগ্ধা বলে।
"অন্তত বিকেলের দিকে এসো।"
"ঠিক আছে। কিন্তু আমার দুটি শর্ত আছে। প্রথমতো আমাকে নিতে আসবে না, দ্বিতীয়ত তখন তুমি বাসায় থাকবে না।" স্নিগ্ধা বলে।
"ঠিক আছে, তবুও এসো।" দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে সজল।
স্নিগ্ধা কল কেটে দেয়।
"তুই না বললি রিলেশন রাখবি না?" কবির বলে।
"কি করব বল, পাঁচ বছরের রিলেশন। মাকড়শার জালের মতো আষ্টেপিস্টে আটকে গেছি, যতো ছাড়াতে চাই ততো আটকে যাচ্ছি। আর তাছাড়া ওর মা বেশ সহজ সরল মানুষ, ওর মতো না। তুইও চল না, তোরও ভাল লাগবে।"
"আরে না, বিকেলে আমার টিউশনি আছে।"
"একদিন টিউশনি মিস দিলে কিছু হবে না।" স্নিগ্ধা বলে।
বিকেল চারটের সময় স্নিগ্ধা কবিরকে কল করে। কয়েকবার রিং হওয়ার পর রিসিভ হয়।
"হ্যালো কবির, কোথায় তুই?"
"আমি বাসে। ধানমন্ডি যাচ্ছি, টিউশনি আছে।" কবির বলে।
"তোর না আমার সাথে এক যায়গায় যাওয়ার কথা? " স্নিগ্ধা বলে।
"আমি বললাম না যে আমি যেতে পারবনা, টিউশনি আছে?" কবির বলে।
"আমি কোন কথা শুনবনা, তোকে আমার সাথে যেতেই হবে। তুই পান্থপথে অপেক্ষা কর, আমি আসছি।"
"সামনে ছাত্রের পরীক্ষা, এসময় টিউশনি ফাঁকি দেয়া ঠিক হবে?"
"আমি ওসব কথা শুনব না, আমি এখন রওনা দিচ্ছি, যদি পান্থপথ মোড়ে তোকে না পাই তো তোর খবর আছে।" বলে ফোন কেটে দেয়।
স্নিগ্ধা তারপর এপার্টমেন্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসে।
স্নিগ্ধা পান্থপথ মোড়ে এসে কবিরকে আবারও কল দেয়।
"কোথায় তুই?" স্নিগ্ধা বলে।
"পান্থপথ মোড়ে, যেমনটা হুকুম করেছেন আমায়।"
"ও, তোকে দেখতে পেয়েছি, রাস্তা পার হয়ে আয়।"
"আপনার হুকুম শিরোধার্য শাহাজাদী।"
"চুপ।" বলে কেটে দেয় স্নিগ্ধা।
"চা খাবি? দারুন চা বানায় ওই চাচা।" ফুটপাতে একটি চায়ের দোকানে দেখিয়ে বলে কবির।
"না, পরে খাব, এখন চল, বনানি যেতে হবে।"
"তুই তোর হবু শাশুড়ির সাথে দেখা করতে যা না, আমাকে টানছিস কেন?"
"চুপ, তুই খুব বেশি কথা বলিস। চুপচাপ চল আমার সাথে।"
"আপনার হুকুম শিরোধার্য, রাজকুমারী।"
"তুই এরকম করে কথা বলছিস কেন?" স্নিগ্ধা বলে।
"তুই যেভাবে হুকুম জারী করছিস তাতে মনে হচ্ছে তুই রাজকুমারী আর আমি তোর ভৃত্য।"
"ও তাই! ঠিক আছে আমি আর কোন হুকুম করব না। তুই তোর টিউশনিতেই যা, লাগবেনা আর তোকে।" অভিমানের সুরে বলে স্নিগ্ধা।
"আরে রাগ করিস কেন? আমি তো ইয়ার্কি করলাম। আই এম সরি। এই নে কানে ধরছি।"
"তার দরকার নেই, চুপচাপ চল।" স্নিগ্ধা বলে।