16-06-2021, 07:44 PM
স্নিগ্ধা ও কবির কলেজ শেষে বাড়ি ফিরছিল। আজ তাদের প্রথম সাময়িক পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়েছে। অবধারিতভাবেই স্নিগ্ধা ক্লাসে ফাস্ট হয়েছে, সবকয়টা সাবজেক্টেই সে এ প্লাস পেয়েছে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী আরিফ পেয়েছে জিপিএ ৪.৭২। গত তিন বছর ধরে আরিফ ক্লাসে ফাস্ট হয়ে আসছে, কিন্তু স্নিগ্ধার তাকে টপকে যাওয়ায় টিচার বা ছাত্রছাত্রি কেউই অবাক হয়নি।
"কিরে তোর রেজাল্ট তো আমাকে দেখালি না?" রিক্সায় উঠে কবিরকে জিজ্ঞাসা করে স্নিগ্ধা।
"আমার রেজাল্ট দেখে কি করবি? বললামই তো দুইটা সাবজেক্টে ফেল।"
"দেখিই না" স্নিগ্ধা অনুরোধ করে বলে।
কবির ব্যাগ থেকে রেজাল্ট কার্ড বের করে দেয়। স্নিগ্ধা রেজাল্ট কার্ড খুলে দেখে। বাকি সব সাবজেক্টে পঞ্চাশের উপরে পেলেও কেমিস্ট্রিতে পঁচিশ আর ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রে আট পেয়েছে সে।
"ছি ছি! ইংরেজি সেকেন্ড পেপারে মাত্র আট পেয়েছিস? ফাস্ট পেপারে তো পঞ্চাশ পেয়েছিস। সেকেন্ড পেপারে এতো দুরবস্থা কেন?" স্নিগ্ধা বলে।
"গ্রামার আমার মাথায় একেবারেই ঢোকেনা। তার মধ্যে কম্পজিশন, প্যারাগ্রাফ কমন পড়েনি।" কবির বলে।
"গ্রামার তো খুবই সোজা। আর প্যারাগ্রাফ, কম্পজিশন কি কমন পড়তে হয়? বানিয়েই লেখা যায়।"
"আমি তো আর তোর মতো মেধাবি ছাত্র নই।" কবির বলে।
"ইংরেজিতে ভাল করতে কি মেধার প্রয়োজন হয় নাকি! শুধু কিছু টেকনিক জানতে হয়। আমি তোকে শিখিয়ে দেব।" স্নিগ্ধা বলে।
ততোক্ষনে কবিরের বাসা এসে গেছে। কবির রিক্সা থামতে বলে নেমে যায়।
"সন্ধ্যায় আসিস কিন্তু। একসাথে পড়ব" স্নিগ্ধা বলে।
কবির কোন উত্তর না দিয়েই হাঁটতে থাকে।
সন্ধার সময় স্নিগ্ধা কবিরকে কল দেয় "হ্যালো কবির, কই তুই?"
"বাড়িতেই, কেন?" কবির উত্তর দেয়।
"তোর না আসার কথা ছিল। আসবি না?"
"আজ না, কালকে যাব।"
"এখনি আয়, আসতেই হবে। তুই না এলে আমি চলে আসব" স্নিগ্ধা বলে।
"ঠিক আছে চলে আয়।" বলে কবির রেখে দেয় ফোন।
ততোক্ষনে সুলতানা এসে থালা বাসন ধুচ্ছিল। কবির টিভি অফ করে রান্নাঘরের সামনে যায়।
"ফ্রিজে বোয়াল মাছ আছে না খালা?" কবির জিজ্ঞাসা করে।
"হ, আছে অল্প" সুলতানা জবাব দেয়।
"সেদিনের মতো করে মিষ্টি কুমড়া দিয়ে রান্না কইরেন, আর সাথে ডাল।"
"আইচ্ছা।"
"আর আগে ঘরটা একটু পরিষ্কার করবেন আর গোছাবেন" কবির বলে।
"আইচ্ছা কোন সমেস্যা নাই। এই রাইতের বেলা কুটুম আসবে নাকি কবির বাবু?"
"আসতেও পারে" বলে কবির নিজের ঘরে যায়। কবিরের মনের একটি দিক বলছে স্নিগ্ধা আসবে না অন্য দিকটা বলছে আসবে। এর প্রায় পনের মিনিট পর কলিং বেল বেজে ওঠে।
কবির দরজা খুলে দেখে স্নিগ্ধা এসেছে। ওর পরনে লেমন রংয়ের কামিজ, চুল একটি বেনি করা।
"বলেছিলাম না চলে আসব! " মিষ্টি করে হেসে বলে স্নিগ্ধা।
"ভেতরে আয়" বলে কবির স্নিগ্ধাকে ড্রয়িং রুমে নিয়ে যায়। কিছুক্ষনের ভেতর সুলতানা চানাচুর, বিস্কুট আর লেবুর সরবত নিয়ে আসে।
কবির পরিচয় করিয়ে দেয় "ইনি সুলতানা খালা, আর ও স্নিগ্ধা, আমার বন্ধু।"
"তোমরা গল্প কর। আমি যাই, আমার বেটা মনে হয় কান্নাকাটি করতাছে।" বলে সুলতানা চলে যায়।
"আমি কি তোর বাড়ি চানাচুর বিস্কুট খেতে আসছি?" স্নিগ্ধা অভিযোগের স্বরে বলে।
"না মানে ইয়ে...." আমতা আমতা করে কিছু বলতে চায় কবির।
"এক্ষুনি পড়তে বসবি, চল।" ধমক দিয়ে বলে স্নিগ্ধা।
নিজের ঘরে এসে পড়তে বসে কবির।
স্নিগ্ধা কবিরকে প্রথমে গ্রামার পড়ায়। প্রথমে স্ট্রাকচারাল নিয়মে গ্রামার পড়াতে গিয়ে বুঝতে পারে কাজটা সহজ না। দু একটা নিয়ম শিখিয়ে দিলে কয়েকটা সেন্টেন্স পারে, পরে আবার গুলিয়ে ফেলে। তবে স্নিগ্ধা আবিস্কার করে যে কবিরের ভোকাবুলারি বেশ ভাল। কবির প্রচুর শব্দের অর্থ জানে, অনেক জটিল বাক্যও ট্রানসলেট করতে পারে।
স্নিগ্ধা কবিরকে বেশ কিছু জটিল বাক্যের বাংলা থেকে ইংরেজি এবং ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ করতে দেয়। কবির তার সবগুলোই পারে। কবিরদের বাসায় আগে রোজ ইংরেজি পত্রিকা আসত, কবির তা পড়তো। স্নিগ্ধার মাথায় একটা আইডিয়া আসে, ট্রানসলেশন স্কিলকে ব্যবহার করে গ্রামাটিক্যাল কোশ্চেন সল্ভ করা সম্ভব। প্রথমে বাক্যকে বাংলায় অনুবাদ করতে হবে তারপর বাংলায় কাল বা উক্তি পরিবর্তন করে আবার ইংরেজিতে ট্রানসলেট করতে হবে। কবির খুব সহজেই পদ্ধতিটা শিখে যায়। সে রাতে টেন্স, ভয়েস চেঞ্জ আর ন্যারেশন পড়ায় স্নিগ্ধা।
"হায় হায় রাত এগারোটা বেজে গেছে।" ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলে স্নিগ্ধা।
ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে মোবাইলটা বের করে দেখে পঁচিশটা মিসকল সেখানে। কল দেয় সে, সাথে সাথে অন্যপ্রান্তে রিসিভ করে।
"স্নিগ্ধা কই তুই? এতো কল দিচ্ছি ধরিস না কেন? চিন্তায় পাগল হয়ে যাচ্ছি আমরা।" শিরিন বলে।
"আমি তো কবিরের বাসায়। বলেই তো এলাম। মোবাইল ব্যাগে ছিল, কল এসেছে তা বুঝতে পারিনি।" স্নিগ্ধা জবাব দেয়।
"তুই না বললি এক ঘন্টার ভেতর ফিরবি। কবিরের বাসার এড্রেস দে, তোর বাবা গিয়ে তোকে নিয়ে আসবে।"
স্নিগ্ধা এড্রেস বলে। কবির তখন হাত বাড়িয়ে ফোনটা নেয়।
"আন্টি, এত রাতে রিক্সা পাওয়া যাবেনা। তার চেয়ে বরং স্নিগ্ধা আজ রাত এখানেই থাকুক। আমি কাল সকালে পৌঁছে দিব।" কবির বলে।
এক মুহুর্ত পর উত্তর আসে "তোমাকে ভরসা করি কবির, কিন্তু দিনকাল ভাল না। সাবধানে থেকো তোমরা। স্নিগ্ধাকে দাও ফোনটা।"
কবির হাত বাড়িয়ে স্নিগ্ধাকে দেয় ফোনটা।
"রাতে আর আসার দরকার নেই। কাল সকালে আসিস। বেশি রাত পর্যন্ত জাগবি না, এখনি ঘুমিয়ে পড়।"
"ঠিক আছে আম্মু। টেনশন কোরোনা।" বলে স্নিগ্ধা ফোন রেখে দেয়।
স্নিগ্ধা ও কবির সে রাতে খেয়ে দেয়ে ঘুমতে যায়। কবির তার নিজের রুমেই শোয় আর স্নিগ্ধা কবিরের বাবা মায়ের রুমে শুতে যায়। শুয়ে শুয়ে স্নিগ্ধা সজলকে ফোন করে, দুইবার রিং হয়ে কেটে যায় এবং সাথে সাথে রিং বেজে ওঠে।
"কেমন আছ জান?" সজল বলে
"ভালই আছি। তুমি কেমন আছ?"
"আমিও ভাল আছি। মা বাবা ঘুমিয়েছে?" সজল জিজ্ঞাসা করে।
"জানিনা। আমি তো বাড়িতে নেই।" স্নিগ্ধা বলে।
"তাহলে কোথায় আছ?" সজল জিজ্ঞাসা করে।
"কবিরদের বাড়িতে।"
"কবির মানে তোমার সেই বন্ধু?"
"হ্যাঁ।"
"তুমি না বলেছিলে ওর পরিবারের সবাই মারা গেছে, ও একা থাকে।"
"হ্যাঁ।"
"তার মানে এখন বাড়িতে শুধু তুমি আর ঐ ছেলেটা?"
"কি বলতে চাইছো স্পষ্ট করে বলতো?" স্নিগ্ধা তীক্ষ কন্ঠে প্রশ্ন করে।
"ইয়ে মানে আসলে দিনকাল তো খুব খারাপ, যাকে তাকে বিশ্বাস করা তো উচিত নয়।" আমতা আমতা করে সজল বলে।
"আমি তো আর যাকে তাকে বিশ্বাস করছিনা।" একটু থেমে যোগ করে "এখন রাখি, ঘুম পাচ্ছে।" বলে কেটে দেয় স্নিগ্ধা। সাথে সাথে আবার কল আসে।
"আই এম সো সরি জান, আমি না বুঝেই উল্টাপাল্টা কি সব বলে ফেলেছি।" সজল অনুনয় করে বলে।
"ইটস ওকে। আমার আসলেই ঘুম পাচ্ছে, পরে কথা বলব জান।"
"ঠিক আছে জান। গুড নাইট।" বলে কেটে দেয় সজল।
"কিরে তোর রেজাল্ট তো আমাকে দেখালি না?" রিক্সায় উঠে কবিরকে জিজ্ঞাসা করে স্নিগ্ধা।
"আমার রেজাল্ট দেখে কি করবি? বললামই তো দুইটা সাবজেক্টে ফেল।"
"দেখিই না" স্নিগ্ধা অনুরোধ করে বলে।
কবির ব্যাগ থেকে রেজাল্ট কার্ড বের করে দেয়। স্নিগ্ধা রেজাল্ট কার্ড খুলে দেখে। বাকি সব সাবজেক্টে পঞ্চাশের উপরে পেলেও কেমিস্ট্রিতে পঁচিশ আর ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রে আট পেয়েছে সে।
"ছি ছি! ইংরেজি সেকেন্ড পেপারে মাত্র আট পেয়েছিস? ফাস্ট পেপারে তো পঞ্চাশ পেয়েছিস। সেকেন্ড পেপারে এতো দুরবস্থা কেন?" স্নিগ্ধা বলে।
"গ্রামার আমার মাথায় একেবারেই ঢোকেনা। তার মধ্যে কম্পজিশন, প্যারাগ্রাফ কমন পড়েনি।" কবির বলে।
"গ্রামার তো খুবই সোজা। আর প্যারাগ্রাফ, কম্পজিশন কি কমন পড়তে হয়? বানিয়েই লেখা যায়।"
"আমি তো আর তোর মতো মেধাবি ছাত্র নই।" কবির বলে।
"ইংরেজিতে ভাল করতে কি মেধার প্রয়োজন হয় নাকি! শুধু কিছু টেকনিক জানতে হয়। আমি তোকে শিখিয়ে দেব।" স্নিগ্ধা বলে।
ততোক্ষনে কবিরের বাসা এসে গেছে। কবির রিক্সা থামতে বলে নেমে যায়।
"সন্ধ্যায় আসিস কিন্তু। একসাথে পড়ব" স্নিগ্ধা বলে।
কবির কোন উত্তর না দিয়েই হাঁটতে থাকে।
সন্ধার সময় স্নিগ্ধা কবিরকে কল দেয় "হ্যালো কবির, কই তুই?"
"বাড়িতেই, কেন?" কবির উত্তর দেয়।
"তোর না আসার কথা ছিল। আসবি না?"
"আজ না, কালকে যাব।"
"এখনি আয়, আসতেই হবে। তুই না এলে আমি চলে আসব" স্নিগ্ধা বলে।
"ঠিক আছে চলে আয়।" বলে কবির রেখে দেয় ফোন।
ততোক্ষনে সুলতানা এসে থালা বাসন ধুচ্ছিল। কবির টিভি অফ করে রান্নাঘরের সামনে যায়।
"ফ্রিজে বোয়াল মাছ আছে না খালা?" কবির জিজ্ঞাসা করে।
"হ, আছে অল্প" সুলতানা জবাব দেয়।
"সেদিনের মতো করে মিষ্টি কুমড়া দিয়ে রান্না কইরেন, আর সাথে ডাল।"
"আইচ্ছা।"
"আর আগে ঘরটা একটু পরিষ্কার করবেন আর গোছাবেন" কবির বলে।
"আইচ্ছা কোন সমেস্যা নাই। এই রাইতের বেলা কুটুম আসবে নাকি কবির বাবু?"
"আসতেও পারে" বলে কবির নিজের ঘরে যায়। কবিরের মনের একটি দিক বলছে স্নিগ্ধা আসবে না অন্য দিকটা বলছে আসবে। এর প্রায় পনের মিনিট পর কলিং বেল বেজে ওঠে।
কবির দরজা খুলে দেখে স্নিগ্ধা এসেছে। ওর পরনে লেমন রংয়ের কামিজ, চুল একটি বেনি করা।
"বলেছিলাম না চলে আসব! " মিষ্টি করে হেসে বলে স্নিগ্ধা।
"ভেতরে আয়" বলে কবির স্নিগ্ধাকে ড্রয়িং রুমে নিয়ে যায়। কিছুক্ষনের ভেতর সুলতানা চানাচুর, বিস্কুট আর লেবুর সরবত নিয়ে আসে।
কবির পরিচয় করিয়ে দেয় "ইনি সুলতানা খালা, আর ও স্নিগ্ধা, আমার বন্ধু।"
"তোমরা গল্প কর। আমি যাই, আমার বেটা মনে হয় কান্নাকাটি করতাছে।" বলে সুলতানা চলে যায়।
"আমি কি তোর বাড়ি চানাচুর বিস্কুট খেতে আসছি?" স্নিগ্ধা অভিযোগের স্বরে বলে।
"না মানে ইয়ে...." আমতা আমতা করে কিছু বলতে চায় কবির।
"এক্ষুনি পড়তে বসবি, চল।" ধমক দিয়ে বলে স্নিগ্ধা।
নিজের ঘরে এসে পড়তে বসে কবির।
স্নিগ্ধা কবিরকে প্রথমে গ্রামার পড়ায়। প্রথমে স্ট্রাকচারাল নিয়মে গ্রামার পড়াতে গিয়ে বুঝতে পারে কাজটা সহজ না। দু একটা নিয়ম শিখিয়ে দিলে কয়েকটা সেন্টেন্স পারে, পরে আবার গুলিয়ে ফেলে। তবে স্নিগ্ধা আবিস্কার করে যে কবিরের ভোকাবুলারি বেশ ভাল। কবির প্রচুর শব্দের অর্থ জানে, অনেক জটিল বাক্যও ট্রানসলেট করতে পারে।
স্নিগ্ধা কবিরকে বেশ কিছু জটিল বাক্যের বাংলা থেকে ইংরেজি এবং ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ করতে দেয়। কবির তার সবগুলোই পারে। কবিরদের বাসায় আগে রোজ ইংরেজি পত্রিকা আসত, কবির তা পড়তো। স্নিগ্ধার মাথায় একটা আইডিয়া আসে, ট্রানসলেশন স্কিলকে ব্যবহার করে গ্রামাটিক্যাল কোশ্চেন সল্ভ করা সম্ভব। প্রথমে বাক্যকে বাংলায় অনুবাদ করতে হবে তারপর বাংলায় কাল বা উক্তি পরিবর্তন করে আবার ইংরেজিতে ট্রানসলেট করতে হবে। কবির খুব সহজেই পদ্ধতিটা শিখে যায়। সে রাতে টেন্স, ভয়েস চেঞ্জ আর ন্যারেশন পড়ায় স্নিগ্ধা।
"হায় হায় রাত এগারোটা বেজে গেছে।" ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলে স্নিগ্ধা।
ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে মোবাইলটা বের করে দেখে পঁচিশটা মিসকল সেখানে। কল দেয় সে, সাথে সাথে অন্যপ্রান্তে রিসিভ করে।
"স্নিগ্ধা কই তুই? এতো কল দিচ্ছি ধরিস না কেন? চিন্তায় পাগল হয়ে যাচ্ছি আমরা।" শিরিন বলে।
"আমি তো কবিরের বাসায়। বলেই তো এলাম। মোবাইল ব্যাগে ছিল, কল এসেছে তা বুঝতে পারিনি।" স্নিগ্ধা জবাব দেয়।
"তুই না বললি এক ঘন্টার ভেতর ফিরবি। কবিরের বাসার এড্রেস দে, তোর বাবা গিয়ে তোকে নিয়ে আসবে।"
স্নিগ্ধা এড্রেস বলে। কবির তখন হাত বাড়িয়ে ফোনটা নেয়।
"আন্টি, এত রাতে রিক্সা পাওয়া যাবেনা। তার চেয়ে বরং স্নিগ্ধা আজ রাত এখানেই থাকুক। আমি কাল সকালে পৌঁছে দিব।" কবির বলে।
এক মুহুর্ত পর উত্তর আসে "তোমাকে ভরসা করি কবির, কিন্তু দিনকাল ভাল না। সাবধানে থেকো তোমরা। স্নিগ্ধাকে দাও ফোনটা।"
কবির হাত বাড়িয়ে স্নিগ্ধাকে দেয় ফোনটা।
"রাতে আর আসার দরকার নেই। কাল সকালে আসিস। বেশি রাত পর্যন্ত জাগবি না, এখনি ঘুমিয়ে পড়।"
"ঠিক আছে আম্মু। টেনশন কোরোনা।" বলে স্নিগ্ধা ফোন রেখে দেয়।
স্নিগ্ধা ও কবির সে রাতে খেয়ে দেয়ে ঘুমতে যায়। কবির তার নিজের রুমেই শোয় আর স্নিগ্ধা কবিরের বাবা মায়ের রুমে শুতে যায়। শুয়ে শুয়ে স্নিগ্ধা সজলকে ফোন করে, দুইবার রিং হয়ে কেটে যায় এবং সাথে সাথে রিং বেজে ওঠে।
"কেমন আছ জান?" সজল বলে
"ভালই আছি। তুমি কেমন আছ?"
"আমিও ভাল আছি। মা বাবা ঘুমিয়েছে?" সজল জিজ্ঞাসা করে।
"জানিনা। আমি তো বাড়িতে নেই।" স্নিগ্ধা বলে।
"তাহলে কোথায় আছ?" সজল জিজ্ঞাসা করে।
"কবিরদের বাড়িতে।"
"কবির মানে তোমার সেই বন্ধু?"
"হ্যাঁ।"
"তুমি না বলেছিলে ওর পরিবারের সবাই মারা গেছে, ও একা থাকে।"
"হ্যাঁ।"
"তার মানে এখন বাড়িতে শুধু তুমি আর ঐ ছেলেটা?"
"কি বলতে চাইছো স্পষ্ট করে বলতো?" স্নিগ্ধা তীক্ষ কন্ঠে প্রশ্ন করে।
"ইয়ে মানে আসলে দিনকাল তো খুব খারাপ, যাকে তাকে বিশ্বাস করা তো উচিত নয়।" আমতা আমতা করে সজল বলে।
"আমি তো আর যাকে তাকে বিশ্বাস করছিনা।" একটু থেমে যোগ করে "এখন রাখি, ঘুম পাচ্ছে।" বলে কেটে দেয় স্নিগ্ধা। সাথে সাথে আবার কল আসে।
"আই এম সো সরি জান, আমি না বুঝেই উল্টাপাল্টা কি সব বলে ফেলেছি।" সজল অনুনয় করে বলে।
"ইটস ওকে। আমার আসলেই ঘুম পাচ্ছে, পরে কথা বলব জান।"
"ঠিক আছে জান। গুড নাইট।" বলে কেটে দেয় সজল।