14-06-2021, 08:40 PM
স্নেহের আজিজ,
আশা করি পরম করুণাময়ের দয়ায় স্ত্রীকে লইয়া ভালই আছ। তোমার স্ত্রীর শরীর এখন কেমন? তাহার জন্যে মাঝে মাঝে বড় দুঃখ হয়। এমন ফুলের মত একটা মেয়ে, অথচ কি তার অসুখ। আল্লাহ তায়ালা কেন তাহার দিকে মুখ তুলিয়া তাকায় না তাহা আমার চিন্তার অতীত। আমরা সকলে ভাল আছি। তুমি তো এখন আর আমাদের বিশেষ খোজ খবর রাখ না।
যাহাই হউক, যে কারনে তোমার কাছে এই পত্র লিখতে বসিয়াছি। তোমার নিশ্চয় জরিনার কথা স্মরন আছে?আমি জানি তার কথা তোমার নিকট বলা ঠিক নয়। তোমার এখন নিজের স্ত্রী সংসার হইয়াছে। এইসব পুরনো কথায় তোমার বিপদ হইতে পারে। তথাপি বিশেষ পরিস্থিতির কারনে বাধ্য হইতেছি।
তুমি আর জরিনা অল্প বয়সে ঘর হইতে পলায়ন করিলে। কিন্তু তাহাতে লাভ হইল না। তোমার ধনবান পিতা লোক লাগাইয়া অল্প দিনের মধ্যেই তোমাকে ধরিয়া আনিল। ভাইজান তোমাকে শহরে পরাশুনা করতে পাঠাইয়া দিলেন। তুমি আর জরিনার কোন খোজ রাখিলে না। শহরেই বিবাহ করিয়া সংসার পাতিলে। জরিনা তোমার সহিত যোগাযোগের বহু প্রচেষ্টা করিয়াছে। কিন্তু তোমার পিতার কারনে সফল হয় নাই।
এক রাতে জরিনাকে তার পিতা মাতা আপন গৃহ হইতে বিতাড়িত করে। আর কোন উপায় না দেখিয়া সে আমার বাড়িতে উপস্থিত হয়। আমি জানিতে পারিলাম সে অন্তঃসত্ত্বা। আমি ভাইজানের আপত্তি সত্ত্যেও জুরিনাকে আপন গৃহে আশ্রয় দেই। সন্তান জন্ম দিবার কালে সে মারা যায়। মৃত্যুর আগে সে একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেয়। আমার উপর তোমার পিতার করা নির্দেশ ছিল কখনো ভুলেও যেন এই কন্যা সন্তানটির কথা তোমাকে জানতে না দেই। আমি তাহার নির্দেশ পালন করি। মেয়েটি আমার নিকট থাকিয়াই বাড়িয়া উঠে।
এখন তোমার পিতা বেহেস্তগামী হইয়াছেন। আমিও তাহার লৌহ শৃঙ্খলহইতে মুক্ত হইয়াছি। এখন আর তোমায় সত্য জানাইতে আর বাধা নাই। এই মেয়েটিকে লইয়া আমি নিদারুন অর্থ কষ্টে পরিয়াছি। ভাইজান বাঁচিয়া থাকিতে তিনি মাঝেমাঝে অর্থ সাহায্য করিতেন। এখন সেটাও বন্ধ। আর তাছাড়া যত বড় হইতেছে মেয়েটি ততই সুন্দর হইয়া উঠিতেছে। তাহাকে গ্রামের আর দশটা বদ পুরুষের নজর হইতে রক্ষা করিতে গিয়া আমি বিশেষ পেরেশান হইয়াছি। অতপর উপায়ন্তর না দেখিয়া মেয়েটিকে তোমার নিকট পাঠাইয়া দেয়াই মনঃস্থির করিয়াছি।
সে এখন জানে না তাহার পিতা কে। তাহাকে কিভাবে তুমি সত্যটা জানাইবে তাহা তোমার বিবেচনা। তোমার সহিত বহুবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করিয়াছি, সফল হই নাই। অতপর তোমার স্ত্রীর সহিত কথা বলিয়াছি। সে ভিতরের খবর কিছু জানে না। তাহাকে জানানো হইয়াছে ঘরের কাজে সাহায্য করিবার উদ্দেশ্যে এক খানা লোক পাঠানো হইতেছে। তাহাকে সত্যি ঘটনা জানানোর দায়িত্ব ও তোমার উপরই রইল।
তোমার সাথে বিষদ আলাপ না করিয়াই মেয়েটিকে পাঠাইয়া দিলাম। তুমি মনঃক্ষুন্য হইয়ো না। এছারা আমার আর কোন উপায় ছিল না।
ও আচ্ছা, আমি তাহার নাম রাখিয়াছি জরি। তাহার মায়ের সাথে মিলাইয়া নাম। আশা করি তুমি অখুশি হইবে না। মেয়েটি অতিশয় লক্ষ্মী কিন্তু বড় দুখী। এইবার আপন পিতার নিকট গিয়া সে হয়ত জীবনে দুই দণ্ড শান্তি খুঁজিয়া পাইবে এই প্রার্থনাই করি।
তোমরা সকলে ভাল থাক।
ইতি-
তোমার কাকা আজমল হাওলাদার ।
সমাপ্ত ...
আশা করি পরম করুণাময়ের দয়ায় স্ত্রীকে লইয়া ভালই আছ। তোমার স্ত্রীর শরীর এখন কেমন? তাহার জন্যে মাঝে মাঝে বড় দুঃখ হয়। এমন ফুলের মত একটা মেয়ে, অথচ কি তার অসুখ। আল্লাহ তায়ালা কেন তাহার দিকে মুখ তুলিয়া তাকায় না তাহা আমার চিন্তার অতীত। আমরা সকলে ভাল আছি। তুমি তো এখন আর আমাদের বিশেষ খোজ খবর রাখ না।
যাহাই হউক, যে কারনে তোমার কাছে এই পত্র লিখতে বসিয়াছি। তোমার নিশ্চয় জরিনার কথা স্মরন আছে?আমি জানি তার কথা তোমার নিকট বলা ঠিক নয়। তোমার এখন নিজের স্ত্রী সংসার হইয়াছে। এইসব পুরনো কথায় তোমার বিপদ হইতে পারে। তথাপি বিশেষ পরিস্থিতির কারনে বাধ্য হইতেছি।
তুমি আর জরিনা অল্প বয়সে ঘর হইতে পলায়ন করিলে। কিন্তু তাহাতে লাভ হইল না। তোমার ধনবান পিতা লোক লাগাইয়া অল্প দিনের মধ্যেই তোমাকে ধরিয়া আনিল। ভাইজান তোমাকে শহরে পরাশুনা করতে পাঠাইয়া দিলেন। তুমি আর জরিনার কোন খোজ রাখিলে না। শহরেই বিবাহ করিয়া সংসার পাতিলে। জরিনা তোমার সহিত যোগাযোগের বহু প্রচেষ্টা করিয়াছে। কিন্তু তোমার পিতার কারনে সফল হয় নাই।
এক রাতে জরিনাকে তার পিতা মাতা আপন গৃহ হইতে বিতাড়িত করে। আর কোন উপায় না দেখিয়া সে আমার বাড়িতে উপস্থিত হয়। আমি জানিতে পারিলাম সে অন্তঃসত্ত্বা। আমি ভাইজানের আপত্তি সত্ত্যেও জুরিনাকে আপন গৃহে আশ্রয় দেই। সন্তান জন্ম দিবার কালে সে মারা যায়। মৃত্যুর আগে সে একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেয়। আমার উপর তোমার পিতার করা নির্দেশ ছিল কখনো ভুলেও যেন এই কন্যা সন্তানটির কথা তোমাকে জানতে না দেই। আমি তাহার নির্দেশ পালন করি। মেয়েটি আমার নিকট থাকিয়াই বাড়িয়া উঠে।
এখন তোমার পিতা বেহেস্তগামী হইয়াছেন। আমিও তাহার লৌহ শৃঙ্খলহইতে মুক্ত হইয়াছি। এখন আর তোমায় সত্য জানাইতে আর বাধা নাই। এই মেয়েটিকে লইয়া আমি নিদারুন অর্থ কষ্টে পরিয়াছি। ভাইজান বাঁচিয়া থাকিতে তিনি মাঝেমাঝে অর্থ সাহায্য করিতেন। এখন সেটাও বন্ধ। আর তাছাড়া যত বড় হইতেছে মেয়েটি ততই সুন্দর হইয়া উঠিতেছে। তাহাকে গ্রামের আর দশটা বদ পুরুষের নজর হইতে রক্ষা করিতে গিয়া আমি বিশেষ পেরেশান হইয়াছি। অতপর উপায়ন্তর না দেখিয়া মেয়েটিকে তোমার নিকট পাঠাইয়া দেয়াই মনঃস্থির করিয়াছি।
সে এখন জানে না তাহার পিতা কে। তাহাকে কিভাবে তুমি সত্যটা জানাইবে তাহা তোমার বিবেচনা। তোমার সহিত বহুবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করিয়াছি, সফল হই নাই। অতপর তোমার স্ত্রীর সহিত কথা বলিয়াছি। সে ভিতরের খবর কিছু জানে না। তাহাকে জানানো হইয়াছে ঘরের কাজে সাহায্য করিবার উদ্দেশ্যে এক খানা লোক পাঠানো হইতেছে। তাহাকে সত্যি ঘটনা জানানোর দায়িত্ব ও তোমার উপরই রইল।
তোমার সাথে বিষদ আলাপ না করিয়াই মেয়েটিকে পাঠাইয়া দিলাম। তুমি মনঃক্ষুন্য হইয়ো না। এছারা আমার আর কোন উপায় ছিল না।
ও আচ্ছা, আমি তাহার নাম রাখিয়াছি জরি। তাহার মায়ের সাথে মিলাইয়া নাম। আশা করি তুমি অখুশি হইবে না। মেয়েটি অতিশয় লক্ষ্মী কিন্তু বড় দুখী। এইবার আপন পিতার নিকট গিয়া সে হয়ত জীবনে দুই দণ্ড শান্তি খুঁজিয়া পাইবে এই প্রার্থনাই করি।
তোমরা সকলে ভাল থাক।
ইতি-
তোমার কাকা আজমল হাওলাদার ।
সমাপ্ত ...