06-06-2021, 05:59 PM
পরদিন ৯টায় ঘুম থেকে ওঠে গোসল করে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে সাদেক খান তার vip স্যুট এর বারান্দায় এসে বসল।তারপর শায়লাকে কল করল।শায়লাকে কল করার সাথে সাথেই গত রাতের ঘটনাটি মনে পরে যায়।সে মনে মনে আবার নিজের সাথে নিজেই কথা বলতে শুরু,``মহিলাটা তো শায়লার মতোই অনিন্দ্য সুন্দরী এবং তার বয়সী।নিশ্চই তারও শাকিল ও সারার মতো ছেলে মেয়ে রয়েছে।সে কেমন স্ত্রী?কেমন মা?স্বামী সন্তাদের সাথে বেইমানি করে একটা ঘৃণ্য ও কুৎসিত নিগ্রোর সাথে পরকীয়া করছে।ধিক্কার জানাই এই ব্যভিচারিণীকে।আমার শায়লা তো মরে গেলেও ব্যভিচার করা তো দূরের কথা সে ব্যভিচারের কল্পনাই করবে না।আর এই ধরনের ঘৃণ্য,জঘন্য ও কুৎসিত নিগ্রোর মতো কোনো জানোয়ার যদি খারাপ কোনো উদ্দেশ্যে শায়লার ধারে কাছেও যাওয়ার চেষ্টা করে তাহলে আমার শায়লা তাকে গুলি মেরে তার মাথার খুলি উড়িয়ে দেবে।আমি সত্যিই একজন ভাগ্যবান স্বামী যে শায়লার মতো এমন একজন অনিন্দ্য সুন্দরী,বিশ্বস্ত,সতীলক্ষী,পতিব্রতা,নিষ্পাপ স্ত্রী পেয়েছি। I love you my shaila, my darling wife,my janu.তোমার সুখের জন্য আমি আমার জীবন বাজি রাখতেও রাজি। আমার এই খান সাম্রাজ্য তোমার পদতলে বিলিয়ে দিতেও আমার কোনো আফসোস নেই। ``
একদিকে সাদেক খান মনে মনে এইসব চিন্তা করছে অন্য দিকে তার অবচেতন মনে সেই কুৎসিত নিগ্রোর সাথে অনিন্দ্য সুন্দরী মহিলাটির রগরগে যৌন দৃশ্যগুলো তার চোখের সামনে ভেসে উঠছে এবং খুবই অসস্থিকর অথচ অত্যন্ত তীব্র,অবৈধ ও নিষিদ্ধ একটা ভালো লাগার যৌন উত্তেজনার শিহরণ তার শরীরের মধ্য দিয়ে বৈদ্যুতিক তড়ঙ্গের মতো প্রবাহিত হচ্ছে।আর সে যখন ঐ মহিলার সাথে শায়লার তুলনা করছে তখন এই নিষিদ্ধ যৌন উত্তেজনার তীব্রতা যেন কয়েকগুণ বেড়ে যাচ্ছে।যৌন অনভিজ্ঞ সাদেক খানের কাছে এই ধরনের যৌন অনুভূতি সম্পূর্ণ নতুন এবং অপরিচিত।এর কোনো ব্যাখ্যা নেই তার কাছে।যার ফলে সাদেক খান অত্যন্ত অস্বস্তিকর ও বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে যায়।সে যখন এই ভাবনার মধ্যে ডুবে ছিল তখনই অফিস থেকে কল আসে যে মাল্টার রাজধানী ভেলাটায় খান কনস্ট্রাকশন কোম্পানি যে দুইটি ৫স্টার হোটেল নির্মাণ করতে যাচ্ছে তাতে স্থানীয় দুইটি ফার্ম সাবকন্ট্রাক্টর হিসেবে কাছ করতে আগ্রহী।তাই তাকে আজ বিকালেই বেলাটায় যেতে হবে।সাদেক খান দুবাই অফিসের সিইও মারুফ মল্লিককে গাড়ি নিয়ে আসতে বললেন এবং বসের কল পেয়ে মারুফ মল্লিক ১৫ মিনিটের মধ্যেই গাড়ি নিয়ে Burj Al Arab Jumeirah হোটেলের vip এক্সিস্ট গেইটে হাজির হয়ে যায়।সাদেক খান সবসময়ই নিজে গাড়ি চালান।আর তা না হলে তার অত্যন্ত বিশ্বস্ত কোনো কর্মকর্তাকে তাকে বহনকারী গাড়ি চালানোর অনুমতি দেন।আর দুবাই এলে এই দায়িত্ব পড়ে তার অন্যতম বিশ্বস্ত কর্মকর্তা মারুফ মল্লিকের উপর।সাদেক খান গাড়িতে ওঠলে মারুফ মল্লিক হাই সিকিউরিটির vip রোড দিয়ে ড্রাইভ করে Burj Khalifa টাওয়ারে পৌঁছে যায়।সাদেক খান দুবাই অফিসের সিনিয়র স্টাফদের নিয়ে আবার একটা মিটিং করলেন এবং তাদের গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা দিয়ে Burj Al Arab Jumeirah হোটেলে ফিরে এসে লাঞ্চ করে একটা ঘুম দিলেন।কারণ গত রাতে তার তেমন ভালো ঘুম হয়নি।বিকেল সাড়ে চারটায় ঘুম থেকে ওঠে ফ্রেশ হয়ে সাদেক খান আবার মারুফ মল্লিককে কল করেন।মারুফ মল্লিক গাড়ি নিয়ে আসল এবং তারা আবার হাই সিকিউরিটি vip রোড দিয়ে দুবাই ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের vvip টার্মিনালে পৌঁছে যায়।এদিকে যে গাড়িটি সাদেক খানকে বহনকারী গাড়িটিকে ছায়ার মতো অনুসরণ করতেছিল সেটি সাদেক খানের গাড়ির ধারে কাছে ভিড়তে পারেনি।কারণ সাদেক খানকে বহনকারী গাড়িটি সবসময় হাই সিকিউরিটির vip রোড ব্যবহার করছে।আর এই হাই সিকিউরিটির vipরোড কেবল হাই প্রোফাইল ব্যক্তিরাই ব্যবহার করতে পারে।এমিরেটস এয়ারলাইন্সের বিশেষ ফ্লাইটে সাদেক খান সন্ধ্যা ৭টায় মাল্টার রাজধানী ভেলাটায় পৌঁছে যায়।সেখানে Rosselli হোটেলের vip স্যুট এ ওঠেন।রাতে হোটেলে স্থানীয় দুইটি ফার্মের কর্মকর্তারা এসে তার সাথে দেখা করে এবং পরের দিন হোটেলে নির্মাণের স্থান পরিদর্শনের জন্য সাদেক খানকে অনুরোধ করে।পরের দিন সাদেক খান হোটেল নির্মাণের স্থান পরিদর্শন করেন এবং তিনি খুবই খুশি হলেন এমন সুন্দর জায়গা পাওয়ার জন্য।ভূমধ্যসাগরের এই দ্বীপ রাষ্ট্রে পর্যটকদের ভিড় দিন দিন বেড়েই চলছে।তাই ৫ স্টার হোটেলের চাহিদাও দ্রুত গতিতে বাড়ছে।সাইট পরিদর্শন শেষে সাদেক খান একটা রিসোর্টে দুপুরের লাঞ্চ করে একটু রেস্ট নিলেন।তারপর বিকালে দ্বীপের উত্তর প্রান্তে অবস্থিত আরেকটি পর্যটন এলাকায় যাওয়ার সিদ্বান্ত নিলেন।স্থানীয় ফার্মের সিইও তাদের একটা বিলাসবহুল গাড়ি এবং অত্যন্ত অভিজ্ঞ একজন ড্রাইভার দিলেন সাদেক খানকে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখানোর জন্য।বিকেল৫টার দিকে সাদেক খানকে বহনকারী একটা পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল।গাড়িটি যখন একটা মোড়ের মধ্যে ডান দিকে ইউ টার্ন দেয় তখনই হঠাৎ করে গাড়িটির সামনের একটা চাকা ফেটে যায়।সাথে সাথে গাড়িটি রাস্তা থেকে ছিটকে নিচে পড়ে যায়।গাড়িটি প্রথমে রাস্তার একটু নিচে বড় একটা পাথরের উপর পরে এবং সৌভাগ্যক্রমে সেখান থেকে আবার ছিটকে গিয়ে প্রায় ৩০০ ফিট নিচে বড় একটা গাছের উপর পড়ে।এদিকে গাড়িটি যখন প্রথমে পাথরে আঘাত করে তখনি গাড়ির সেফটি এয়ার বেলুন ফুলে ওঠে ফলে সাদেক খান ও গাড়ির ড্রাইভার কেউ ই তেমন কোনো আঘাত পায়নি।আবার সেখান থেকে গাড়িটি ঘন ডালপালায় ভরা বড় গাছের উপর পড়ায় এবং সেফটি এয়ার বেলুন ফুলে ওঠার কারণে তারা দুজনেই সুরক্ষিত থেকে যায়।কিছুক্ষণ পর তারা যখন দেখলো যে গাড়িটি গাছের উপর অত্যন্ত সুরক্ষিতভাবে আটকে আছে,তখন তারা লাথিদিয়ে গাড়ির দরজা খোলে বেরিয়ে এসে গাছ বেয়ে নিরাপদে নিচে নেমে এলো।
সাদেক খান ও গাড়ির ড্রাইভার পাহাড়ের ঢাল বেয়ে উপরে রাস্তায় ওঠে এলো।তারপর সেখানে থেকে প্রায় ২০ মিনিটের পথ হেটে এসে একটা পেট্রোল পাম্পে আসল।সাদেক খান ও গাড়ির ড্রাইভার বুঝতে পারছে না কি করে এবং কেন নিউ মডেলের গাড়িটির চাকা ফেটে গেল।ড্রাইভার ফোন করে তাদের সিইও কে তাদের দুর্ঘটনার কথা জানালো।কিছুক্ষণ পরেই আরেকটা গাড়ি এসে তাদেরকে আবার হোটেলে নিয়ে গেল।সাদেক খান লোকাল ফার্মের সিইও কে দুর্ঘটনার বিষয়টি মিডিয়ায় প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করে।আর যেহেতু দুর্ঘটনায় কেউ মারা যায়নি তাই মিডিয়াও কোনো নিউজ করেনি।সাদেক খান হোটেলে তার স্যুট এর বারান্দায় বসে উপরওয়ালার কাছে বারবার শুকরিয়া আদায় করতে লাগল এমন একটা ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে অক্ষত অবস্থায় বাঁচিয়ে দেয়ার জন্য।সাদেক খান দুর্ঘটনার বিষয়টি শায়লাকে জানাবে কিনা সে নিয়ে কিছুক্ষণ ভাবলেন।শেষে সিদ্ধান্ত নিলেন শায়লাকে জানালে হিতে বিপরীত হতে পারে।কারণ এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার কথা শায়লা খান যদি জানতে পারে তাহলে শায়লা সাদেক খানকে বিদেশে ট্যুর করতে আর দিবে না।মাল্টি বিলিয়ন ডলারের ছুটি বাতিল করে দিতে বলবে।এমনকি দুবাই এর অফিসও বন্ধ করে দিয়ে দুবাইএ রিয়েল এস্টেট ব্যবসা বাতিল করে শায়লা খানের আঁচল ধরে সারাদিন বসে থাকতে বলবে।আর শায়লা খান যদি তেমন আদেশ দেন তাহলে সাদেক খানের বাবারও ক্ষমতা নেই তা অবজ্ঞা করার।কারণ সাদেক খান যে শায়লা খানকে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসে।সাদেক খান এই দুর্ঘটনার কথা অফিসকেও জানায় নি।কারণ অফসি যদি সেটা জানে তবে কোনো না কোনো ভাবে শায়লার কানেও খবরটি চলে যেতে পারে।
সাদেক খান যখন এই নিয়ে সাত পাঁচ ভাবছিলেন ঠিক সেই সময় মাল্টার পশ্চিম উপকূলে সমুদ্রের তীরে নির্জন একটা স্থানে বসে ভয়ঙ্করদর্শী একটা লোক বিয়ার পান করছে।পাথরের উপর বসে স্নাইপার রাইফেলের বিভিন্ন অংশ খোলে একটা পলিথিনে ভরে জোরে একটা ডিল দিয়ে সেটাকে ভূমধ্য-সাগরের গভীর জলে ফেলে দেয়।এই ভয়ঙ্কর,নির্মম আততায়ী খুনি,সাদেক খানের একনম্বর গোপন দুশমন।এই আততায়ী নিশ্চিত ছিল যে সাদেক খান মারা গেছে।তাই সাদেক খানকে দুনিয়া থেকে সড়িয়ে দিতে পেরে আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ে।সে মনে মনে সাদেক খানকে গালিগালাজ করতে করতে বলতে লাগল,
`` সালা মাদারচোদ,তোর জন্য আমার অবৈধ মাদক ব্যবসার অনেক ক্ষতি হয়েছে,তোর জন্য আমার অত্যন্ত বিশ্বস্ত ও কাছের দুইজন প্রাণের চেয়েও প্রিয় বন্ধুকে পুলিশের এনকাউন্টারে প্রাণ দিতে হলো।প্রায় দশ বছর প্রতিশোধের এই আগুন বুকে নিয়ে ঘুরেছি।শালা এর আগে ভাগ্যক্রমে আমার হাত থেকে তুই দুইবার বেঁচে গেছিস।আমি যাকে টার্গেট করি সে কোনোদিনই বাঁচতে পারেনা।তুইও বাঁচতে পারলে না। অথচ সবাই জানবে তুই দুর্ঘটনায় মারা গেছিস।শালা তুই দুর্ঘটনায় মরিস নি।আমি তোকে হত্যা করেছি খানকির পোলা।
আজ আমার প্রতিশোধের আগুন নিভেছে।শালা মাদারচোদ,খানকির পোলা এখন তোর ছেলেকেও শেষ করে দিব।এই ঘৃণ্য ও ভয়ঙ্কর খুনি মনে মনে এইসব কথা বলতে বলতে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যাচ্ছে। এমন সময় তার মোবাইল ফোনের রিংটোন বেজে ওঠে।
কলার:`` মিশনের খবর কি ?
লোক:`` মিশন ১০০% successful boss .``
কলার:`` কিভাবে নিশ্চিত হলে?``
লোক:`` বস, প্রায় চারশ ফিট গভীর খাঁদে গাড়িটি পড়ে গেছে। সতরাং বেঁচে থাকার আশা জিরো পার্সেন্ট। `
কলার:`` কাছে গিয়ে দেখেছিস ?``
লোক:`` না BOSS , কারণ এসময় সেখানে আমাকে কেউ দেখলে সন্দেহ করতে পারে তাই কাছে যায়নি। ``
কলার:Good! শুন,আজই মালটা ছেড়ে চলে যা ,এখানে থাকা আর টিক হবে না। ``
লোক:`` কোথায় যাবো বস ?``
কলার:`` সিসিলি চলে যা। তবে শুন বিমানে না গিয়ে ফেরিতে করে যাবি। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করবি। ``
লোক:``ওকে বস ,``
সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে লোকটি সিসিলি যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে গেল।
আসলে সাদেক খান যখন মাল্টায় পৌঁছায় তার পরের ফ্লাইটেই সেখানে তার আততায়ী পৌঁছে গিয়েছিল এবং মাল্টায় অবস্থিত তাদের গুপ্ত এজেন্টের মাধ্যমে সাদেক খানের সিডিউল জেনে যায়।সাদেক খানকে হত্যার জন্য তারা দুর্ঘটনা থিওরি প্রয়োগ করে যাতে করে কেউ কোনো সন্দেহ করতে না পারে।কারণ সাদেক খানের মতো এমন হাই প্রোফাইল ব্যক্তিকে হত্যা করলে দেশে বিদেশে ব্যাপক আলোরণ সৃষ্টি হবে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তদন্ত শুরু হয়ে যাবে।যার ফলে হত্যাকাণ্ডের আসল কারণ ও এর পিছনে কে কে জড়িত তাও বেরিয়ে আসবে।তাই সাদেক খানকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য এমনভাবে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে যাতে করে কেউ কোনো দিন জানতে না পারে কেন তাকে হত্যা করা হলো এবং কে এর পিছনে কে জড়িত।
সাদেক খানকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য আন্ডার ওয়ার্ল্ডের অদৃশ্য এক শক্তি অত্যন্ত সূক্ষ্ম পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।তারা সাদেক খানকে এমনভাবে হত্যা করার পরিকল্পনা করছে যাতে করে কেউ কোনোদিন তার হত্যা কাণ্ডের কারণ ও হত্যাকারী হোতাদের খুঁজে বের করতে না পারে।তাই তারা অত্যন্ত ধৈর্য সহকারে এবং সঠিক সময় ও সুযোগের অপেক্ষা করে থাকে।ইতিমধ্যে তারা তিনবার সেই সুযোগ পেয়েছিল সাদেক খানকে শেষ করে দেওয়ার।কিন্তু তাদের দূর্ভাগ্য এবং সাদেক খানের সৌভাগ্যের কারণে তারা সাদেক খানকে হত্যা করতে পারেনি।এটা তাদের চতুর্থ ষড়যন্ত্র ছিল সাদেক খানকে হত্যা করার।সাদেক খানকে হত্যা করার জন্য তারা অসংখ্য খুনের অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ দুর্ধর্ষ, ভয়ংকর, নির্মম এক ভাড়াটিয়া খুনি নিয়োগ করে।আবার সাদেক খান এই ভাড়াটিয়া খুনিরও একনম্বর শত্রু।ফলে ভাড়াটিয়া খুনি এক ঢিলে দুই পাখি মারার সুযোগ পেয়ে যায়।একদিকে এই জঘন্য খুনি তার চির দুশমন সাদেক খানকে খুন করে তার প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ পেয়ে যায়।আর অন্যদিকে সাদেক খানকে খুনের বিনিময়ে সে আন্ডার ওয়ার্ল্ডের মাফিয়া বসের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা কামানোর সুযোগও পেয়ে যায়।যতই ভয়ঙ্কর হোক না কেন এই দুর্ধর্ষ খুনি একা একা তার চরম দুশমন সাদেক খানের মতো এমন একজন হাই প্রোফাইল ব্যক্তিকে হত্যা করা তার পক্ষে সম্পূর্ণ অসম্ভব ব্যাপার।তাই অদৃশ্য এক মাফিয়া ডনের কাছ থেকে যখন সাদেক খানকে হত্যা করা এবং হত্যার বিনিময়ে ১০কোটি টাকা ও নিরাপদ শেল্টারের অপার আসে তখন সাথে সাথে এই নির্মম ও ভয়ঙ্কর খুনি এই অপার লুফে নেয়।এতে করে এই খুনি তার চরম দুশমন সাদেক খানকে মাফিয়া ডনের ছত্রছায়ায় হত্যা করে দীর্ঘদিন ধরে জ্বলা প্রতিশোধের আগুন নিভাবে আর সাথে সাথে ১০কোটি টাকাও পেয়ে যাবে।একেবারে সোনায় সোহাগা।
সাদেক খানকে হত্যা করার জন্য তারা দুর্ঘটনা থিওরির উপর বেশি জোর দেয়।কারণ সুপরিকল্পিতভাবে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে যদি সাদেক খানকে হত্যা করা যায় তবে সেটা হবে তাদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ।তবে অন্যান্য উপায়ও তারা হাতে রাখে।তবে যে উপায়েই সাদেক খানকে হত্যা করা হোক না কেন তা যেন ১০০% নির্ভুল ও নিরাপদ হয় সে ব্যাপারে এই অদৃশ্য মাফিয়া শক্তি অত্যন্ত সতর্ক।
এক অদৃশ্য মাফিয়া ডন এবং আরেক ভয়ঙ্কর খুনি যে তার চরম দুশমন হয়ে আছে ,তারা যে তাকে হত্যা করার জন্য ভয়ঙ্কর ও ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এই ব্যাপারে সাদেক খান কিন্তু সম্পূর্ণভাবে অন্ধকারে আছে। সাদেক খান কোনো দিন কল্পনাও করেনি যে তার কোনো শত্রু থাকতে পারে।কারণ খান পরিবারের কোনো সদস্যই কোনোদিন কারো কোনো ক্ষতি করেনি।বর্তমানে তাদের রিয়েল এস্টেটের যে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা রয়েছে তা কিন্তু সাদেক খানের দাদা পাকিস্তান আমলে সস্তায় ও ন্যায্য মূল্যে কেনা ভূমির উপর প্রতিষ্ঠিত।খান পরিবার অন্যায়ভাবে কোনো দিন কারো ভূমি জবরদখল করেনি যেমনটা করে থাকে বর্তমান কালের ভূমিদূস্য রিয়েল এস্টেটের মালিকেরা।খান কনস্ট্রাকশন ফার্ম যখন কোনো জমি ক্রয় করে তখন তারা বর্তমান বাজার মূল্যের চেয়ে বেশি দামেই ক্রয় করে।ফলে জমির মালিকেরা খান কনস্ট্রাকশন ফার্মের বিরুদ্ধে কোনোদিন কোনো অভিযোগ করেনি।আবার অন্যান্য রিয়েল এস্টেট কোম্পানিকেও কিন্তু খান কনস্ট্রাকশন কোম্পানি ভূমি দিয়ে ,আর্থিক সাহায্য দিয়ে এমনকি পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছে।যে কারণে অন্যান্য রিয়েল এস্টেট ফার্মের সাথে খান ফার্মের খুবই ভালো সম্পর্ক রয়েছে।আবার সরকার ও প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে খান ফ্যামিলির ঘনিষ্ট সম্পর্কের কথা সবাই জানে।এমনকি মধ্য প্রাচ্যের আরব দেশগুলোর অনেক প্রভাবশালী শাসকদের সাথেও যে খান পরিবারের ঘনিষ্ট যোগাযোগ আছে এই ব্যাপারেও সবাই ওয়াকিবহাল।আর এই জন্যই খান ফ্যামিলির কেউ কোনোদিন বিশ্বাস বা কল্পনাও করেনি যে খান ফ্যামিলিকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য কেউ কোনোদিন ষড়যন্ত্র করার সাহস পাবে।আর এই জন্য খান পরিবারের কেউ তাদের গোপন শত্রু সম্পর্কে বিন্দুমাত্র সতর্ক ছিল না কোনোদিন।আর গোপন এই দুই ষড়যন্ত্রকারী সেই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছে।
এদিকে আল্লাহর অশেষ রহমতে সাদেক খান আবারও অলৌকিকভাবে বেঁচে যায়।আগেও সৌদি আরবের পাহাড়ি এলাকায় এমনি একটা ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা থেকে অলৌকিকভাবে বেঁচে গিয়েছিল সে।কিন্তু সেটাও দুর্ঘটনা ছিল না।ছিল সাদেক খানকে হত্যা করার গভীর চক্রান্ত।আর এই চক্রান্তের পিছনে কলকাঠি নাড়ছে এক অদৃশ্য মাফিয়া ডন আর তা বাস্তবায়ন করার জন্য প্রাণপনে চেষ্টা করছে এই ভয়ঙ্কর,ঘৃণ্য ও নির্মম ভাড়াটিয়া খুনি।
মানবদরদী, নিষ্পাপ ও দানশীল সাদেক খান বারবার উপরওয়ালার অশেষ রহমতে বেঁচে যাচ্ছে।সাদেক খান এই দুইটি ঘটনাকেই নিছক দুর্ঘটনা হিসেবেই মনে করছে।কিন্তু সে কল্পনাও করতে পাচ্ছে না যে, এসব দুর্ঘটনা নয়। এসব ইচ্ছাকৃত দুর্ঘটনা তাকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র।
সাদেক খান প্রথমে যদিও বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন এই দুর্ঘটনার কারণে কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই সে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে সামলে নেন।সে উপরওয়ালার উপর পূর্ণ ভরসা রাখেন এই ভেবে যে উপরওয়ালা যদি কাওকে রক্ষা করে তবে যেকোন বিপদ আপদ তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।আর জন্ম নিলে একদিন সবাইকেই মরতে হবে।সতরাং মরনের কথা চিন্তা করে চার দেয়ালের মাঝে বন্দী হয়ে বসে থাকার কোনো মানে হয়না।মরনের সময় হলে সবাইকে মরতে হবে।সে যতই সুরক্ষিত স্থানে নিজেকে লুকিয়ে রাখুক না কেন।তাই সাদেক খান বিন্দুমাত্র আতঙ্কিত না হয়ে নিজেকে একদম স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসলেন।কেউ বুঝতেও পারছে না যে সে ভয়ঙ্কর একটা দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে গেছে।সাদেক খান পরদিনই দুবাই ফিরে যাওয়ার সিদ্বান্ত নেয়।তারপর দুইদিন দুবাই অবস্থান করে mauritius এ ট্যুর দেওয়ারও সিদ্বান্ত নীল।
এদিকে দুবাই এর আরেকটা হাই রাইজ বিল্ডিং Cayan Tower এর ৫০ তম তলায় অবস্থিত বিশাল এক বিলাসবহুল অফিস বসে আছে আরেকজন রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্যের বস।তার কাছে এই দুর্ঘটনার খবর আসতেই সে খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায়।সে যখন সংবাদ পেলো যে সাদেক খান আর বেঁচে নেই তখন সে তৃপ্তির একটা ফোকলা হাসি দিয়ে মনে মনে বলল,
``এতদিন পর আমার পথের কাঁটা সরে গেল।বাংলাদেশের রিয়েল এস্টেটের একচেটিয়া ব্যবসা এখন আমার হাথে এসে যাবে।আমি হব রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্যের একমাত্র সম্রাট।ঘুণাক্ষরেও কেউ জানতে পারবে সাদেক খানের মৃত্যুর আসল কারণ।সবাই সেটাকে দুর্ঘটনা হিসেবেই মনে করবে। ``
আর এই মাফিয়া কিন্তু খান পরিবারের একজন ঘনিষ্ট বন্ধু।এই ছায়া শত্রু সাদেক খানের কাছ থেকে অনেক সুযোগ সুবিধা নিয়েছে বিভিন্ন সময়।এখনও খান ফ্যামিলির সাথে এই বর্ণচোরা বেঈমানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।কিন্তু বড় আফসোসের বিষয় হলো এই খান ফ্যামিলি যে অত্যন্ত মারাত্মক বিষধর সাপের মতো এক ভয়ঙ্কর মাফিয়ার সাথে বন্ধুত্ব করেছে তা সহজ সরল সাদেক খান কল্পনাও করতে পারছে না।আসলে মুনাফেক মানুষের কাছ থেকে আত্মরক্ষা করা বেশ কঠিন
কাজ।
এই অদৃশ্য মাফিয়া ডন তার অফিসের সকল স্টাফকে জানায় যে আগামীকাল তাদের সবার জন্য এক বিশেষ বোনাস ঘোষণা করা হবে এবং সাথে সাথে জাঁকজমকপূর্ণ এক বিশাল পার্টিরও আয়োজন করা হবে। অফিসের সবাই অবাক হয়ে যায় হঠাৎ করে এমন খুশীর সংবাদ শুনে।কিন্তু কি কারণে তাদের জন্য বোনাস ও পার্টির আয়োজন করা হচ্ছে সেটা তার বুঝতে পারছে না।তবে সাহস করে কেউ এর কারণ সম্পর্কে তাদের বসকে কোনো প্রশ্নও করতে পারছে না।
কারণ তারা জানে তাদের বস খুবই খেয়ালি প্রকৃতির মানুষ।কোন সময় কি করে ফেলে তার কোনো ঠিক নেই।অফিসের সকল স্টাফদের বিশেষ বোনাস ও পার্টির আয়োজনের জন্য কয়েক কোটি টাকার বাজেটও করে ফেলে তাৎক্ষণিকভাবে।
একদিকে সাদেক খান মনে মনে এইসব চিন্তা করছে অন্য দিকে তার অবচেতন মনে সেই কুৎসিত নিগ্রোর সাথে অনিন্দ্য সুন্দরী মহিলাটির রগরগে যৌন দৃশ্যগুলো তার চোখের সামনে ভেসে উঠছে এবং খুবই অসস্থিকর অথচ অত্যন্ত তীব্র,অবৈধ ও নিষিদ্ধ একটা ভালো লাগার যৌন উত্তেজনার শিহরণ তার শরীরের মধ্য দিয়ে বৈদ্যুতিক তড়ঙ্গের মতো প্রবাহিত হচ্ছে।আর সে যখন ঐ মহিলার সাথে শায়লার তুলনা করছে তখন এই নিষিদ্ধ যৌন উত্তেজনার তীব্রতা যেন কয়েকগুণ বেড়ে যাচ্ছে।যৌন অনভিজ্ঞ সাদেক খানের কাছে এই ধরনের যৌন অনুভূতি সম্পূর্ণ নতুন এবং অপরিচিত।এর কোনো ব্যাখ্যা নেই তার কাছে।যার ফলে সাদেক খান অত্যন্ত অস্বস্তিকর ও বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে যায়।সে যখন এই ভাবনার মধ্যে ডুবে ছিল তখনই অফিস থেকে কল আসে যে মাল্টার রাজধানী ভেলাটায় খান কনস্ট্রাকশন কোম্পানি যে দুইটি ৫স্টার হোটেল নির্মাণ করতে যাচ্ছে তাতে স্থানীয় দুইটি ফার্ম সাবকন্ট্রাক্টর হিসেবে কাছ করতে আগ্রহী।তাই তাকে আজ বিকালেই বেলাটায় যেতে হবে।সাদেক খান দুবাই অফিসের সিইও মারুফ মল্লিককে গাড়ি নিয়ে আসতে বললেন এবং বসের কল পেয়ে মারুফ মল্লিক ১৫ মিনিটের মধ্যেই গাড়ি নিয়ে Burj Al Arab Jumeirah হোটেলের vip এক্সিস্ট গেইটে হাজির হয়ে যায়।সাদেক খান সবসময়ই নিজে গাড়ি চালান।আর তা না হলে তার অত্যন্ত বিশ্বস্ত কোনো কর্মকর্তাকে তাকে বহনকারী গাড়ি চালানোর অনুমতি দেন।আর দুবাই এলে এই দায়িত্ব পড়ে তার অন্যতম বিশ্বস্ত কর্মকর্তা মারুফ মল্লিকের উপর।সাদেক খান গাড়িতে ওঠলে মারুফ মল্লিক হাই সিকিউরিটির vip রোড দিয়ে ড্রাইভ করে Burj Khalifa টাওয়ারে পৌঁছে যায়।সাদেক খান দুবাই অফিসের সিনিয়র স্টাফদের নিয়ে আবার একটা মিটিং করলেন এবং তাদের গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা দিয়ে Burj Al Arab Jumeirah হোটেলে ফিরে এসে লাঞ্চ করে একটা ঘুম দিলেন।কারণ গত রাতে তার তেমন ভালো ঘুম হয়নি।বিকেল সাড়ে চারটায় ঘুম থেকে ওঠে ফ্রেশ হয়ে সাদেক খান আবার মারুফ মল্লিককে কল করেন।মারুফ মল্লিক গাড়ি নিয়ে আসল এবং তারা আবার হাই সিকিউরিটি vip রোড দিয়ে দুবাই ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের vvip টার্মিনালে পৌঁছে যায়।এদিকে যে গাড়িটি সাদেক খানকে বহনকারী গাড়িটিকে ছায়ার মতো অনুসরণ করতেছিল সেটি সাদেক খানের গাড়ির ধারে কাছে ভিড়তে পারেনি।কারণ সাদেক খানকে বহনকারী গাড়িটি সবসময় হাই সিকিউরিটির vip রোড ব্যবহার করছে।আর এই হাই সিকিউরিটির vipরোড কেবল হাই প্রোফাইল ব্যক্তিরাই ব্যবহার করতে পারে।এমিরেটস এয়ারলাইন্সের বিশেষ ফ্লাইটে সাদেক খান সন্ধ্যা ৭টায় মাল্টার রাজধানী ভেলাটায় পৌঁছে যায়।সেখানে Rosselli হোটেলের vip স্যুট এ ওঠেন।রাতে হোটেলে স্থানীয় দুইটি ফার্মের কর্মকর্তারা এসে তার সাথে দেখা করে এবং পরের দিন হোটেলে নির্মাণের স্থান পরিদর্শনের জন্য সাদেক খানকে অনুরোধ করে।পরের দিন সাদেক খান হোটেল নির্মাণের স্থান পরিদর্শন করেন এবং তিনি খুবই খুশি হলেন এমন সুন্দর জায়গা পাওয়ার জন্য।ভূমধ্যসাগরের এই দ্বীপ রাষ্ট্রে পর্যটকদের ভিড় দিন দিন বেড়েই চলছে।তাই ৫ স্টার হোটেলের চাহিদাও দ্রুত গতিতে বাড়ছে।সাইট পরিদর্শন শেষে সাদেক খান একটা রিসোর্টে দুপুরের লাঞ্চ করে একটু রেস্ট নিলেন।তারপর বিকালে দ্বীপের উত্তর প্রান্তে অবস্থিত আরেকটি পর্যটন এলাকায় যাওয়ার সিদ্বান্ত নিলেন।স্থানীয় ফার্মের সিইও তাদের একটা বিলাসবহুল গাড়ি এবং অত্যন্ত অভিজ্ঞ একজন ড্রাইভার দিলেন সাদেক খানকে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখানোর জন্য।বিকেল৫টার দিকে সাদেক খানকে বহনকারী একটা পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল।গাড়িটি যখন একটা মোড়ের মধ্যে ডান দিকে ইউ টার্ন দেয় তখনই হঠাৎ করে গাড়িটির সামনের একটা চাকা ফেটে যায়।সাথে সাথে গাড়িটি রাস্তা থেকে ছিটকে নিচে পড়ে যায়।গাড়িটি প্রথমে রাস্তার একটু নিচে বড় একটা পাথরের উপর পরে এবং সৌভাগ্যক্রমে সেখান থেকে আবার ছিটকে গিয়ে প্রায় ৩০০ ফিট নিচে বড় একটা গাছের উপর পড়ে।এদিকে গাড়িটি যখন প্রথমে পাথরে আঘাত করে তখনি গাড়ির সেফটি এয়ার বেলুন ফুলে ওঠে ফলে সাদেক খান ও গাড়ির ড্রাইভার কেউ ই তেমন কোনো আঘাত পায়নি।আবার সেখান থেকে গাড়িটি ঘন ডালপালায় ভরা বড় গাছের উপর পড়ায় এবং সেফটি এয়ার বেলুন ফুলে ওঠার কারণে তারা দুজনেই সুরক্ষিত থেকে যায়।কিছুক্ষণ পর তারা যখন দেখলো যে গাড়িটি গাছের উপর অত্যন্ত সুরক্ষিতভাবে আটকে আছে,তখন তারা লাথিদিয়ে গাড়ির দরজা খোলে বেরিয়ে এসে গাছ বেয়ে নিরাপদে নিচে নেমে এলো।
সাদেক খান ও গাড়ির ড্রাইভার পাহাড়ের ঢাল বেয়ে উপরে রাস্তায় ওঠে এলো।তারপর সেখানে থেকে প্রায় ২০ মিনিটের পথ হেটে এসে একটা পেট্রোল পাম্পে আসল।সাদেক খান ও গাড়ির ড্রাইভার বুঝতে পারছে না কি করে এবং কেন নিউ মডেলের গাড়িটির চাকা ফেটে গেল।ড্রাইভার ফোন করে তাদের সিইও কে তাদের দুর্ঘটনার কথা জানালো।কিছুক্ষণ পরেই আরেকটা গাড়ি এসে তাদেরকে আবার হোটেলে নিয়ে গেল।সাদেক খান লোকাল ফার্মের সিইও কে দুর্ঘটনার বিষয়টি মিডিয়ায় প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করে।আর যেহেতু দুর্ঘটনায় কেউ মারা যায়নি তাই মিডিয়াও কোনো নিউজ করেনি।সাদেক খান হোটেলে তার স্যুট এর বারান্দায় বসে উপরওয়ালার কাছে বারবার শুকরিয়া আদায় করতে লাগল এমন একটা ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে অক্ষত অবস্থায় বাঁচিয়ে দেয়ার জন্য।সাদেক খান দুর্ঘটনার বিষয়টি শায়লাকে জানাবে কিনা সে নিয়ে কিছুক্ষণ ভাবলেন।শেষে সিদ্ধান্ত নিলেন শায়লাকে জানালে হিতে বিপরীত হতে পারে।কারণ এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার কথা শায়লা খান যদি জানতে পারে তাহলে শায়লা সাদেক খানকে বিদেশে ট্যুর করতে আর দিবে না।মাল্টি বিলিয়ন ডলারের ছুটি বাতিল করে দিতে বলবে।এমনকি দুবাই এর অফিসও বন্ধ করে দিয়ে দুবাইএ রিয়েল এস্টেট ব্যবসা বাতিল করে শায়লা খানের আঁচল ধরে সারাদিন বসে থাকতে বলবে।আর শায়লা খান যদি তেমন আদেশ দেন তাহলে সাদেক খানের বাবারও ক্ষমতা নেই তা অবজ্ঞা করার।কারণ সাদেক খান যে শায়লা খানকে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসে।সাদেক খান এই দুর্ঘটনার কথা অফিসকেও জানায় নি।কারণ অফসি যদি সেটা জানে তবে কোনো না কোনো ভাবে শায়লার কানেও খবরটি চলে যেতে পারে।
সাদেক খান যখন এই নিয়ে সাত পাঁচ ভাবছিলেন ঠিক সেই সময় মাল্টার পশ্চিম উপকূলে সমুদ্রের তীরে নির্জন একটা স্থানে বসে ভয়ঙ্করদর্শী একটা লোক বিয়ার পান করছে।পাথরের উপর বসে স্নাইপার রাইফেলের বিভিন্ন অংশ খোলে একটা পলিথিনে ভরে জোরে একটা ডিল দিয়ে সেটাকে ভূমধ্য-সাগরের গভীর জলে ফেলে দেয়।এই ভয়ঙ্কর,নির্মম আততায়ী খুনি,সাদেক খানের একনম্বর গোপন দুশমন।এই আততায়ী নিশ্চিত ছিল যে সাদেক খান মারা গেছে।তাই সাদেক খানকে দুনিয়া থেকে সড়িয়ে দিতে পেরে আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ে।সে মনে মনে সাদেক খানকে গালিগালাজ করতে করতে বলতে লাগল,
`` সালা মাদারচোদ,তোর জন্য আমার অবৈধ মাদক ব্যবসার অনেক ক্ষতি হয়েছে,তোর জন্য আমার অত্যন্ত বিশ্বস্ত ও কাছের দুইজন প্রাণের চেয়েও প্রিয় বন্ধুকে পুলিশের এনকাউন্টারে প্রাণ দিতে হলো।প্রায় দশ বছর প্রতিশোধের এই আগুন বুকে নিয়ে ঘুরেছি।শালা এর আগে ভাগ্যক্রমে আমার হাত থেকে তুই দুইবার বেঁচে গেছিস।আমি যাকে টার্গেট করি সে কোনোদিনই বাঁচতে পারেনা।তুইও বাঁচতে পারলে না। অথচ সবাই জানবে তুই দুর্ঘটনায় মারা গেছিস।শালা তুই দুর্ঘটনায় মরিস নি।আমি তোকে হত্যা করেছি খানকির পোলা।
আজ আমার প্রতিশোধের আগুন নিভেছে।শালা মাদারচোদ,খানকির পোলা এখন তোর ছেলেকেও শেষ করে দিব।এই ঘৃণ্য ও ভয়ঙ্কর খুনি মনে মনে এইসব কথা বলতে বলতে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যাচ্ছে। এমন সময় তার মোবাইল ফোনের রিংটোন বেজে ওঠে।
কলার:`` মিশনের খবর কি ?
লোক:`` মিশন ১০০% successful boss .``
কলার:`` কিভাবে নিশ্চিত হলে?``
লোক:`` বস, প্রায় চারশ ফিট গভীর খাঁদে গাড়িটি পড়ে গেছে। সতরাং বেঁচে থাকার আশা জিরো পার্সেন্ট। `
কলার:`` কাছে গিয়ে দেখেছিস ?``
লোক:`` না BOSS , কারণ এসময় সেখানে আমাকে কেউ দেখলে সন্দেহ করতে পারে তাই কাছে যায়নি। ``
কলার:Good! শুন,আজই মালটা ছেড়ে চলে যা ,এখানে থাকা আর টিক হবে না। ``
লোক:`` কোথায় যাবো বস ?``
কলার:`` সিসিলি চলে যা। তবে শুন বিমানে না গিয়ে ফেরিতে করে যাবি। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করবি। ``
লোক:``ওকে বস ,``
সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে লোকটি সিসিলি যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে গেল।
আসলে সাদেক খান যখন মাল্টায় পৌঁছায় তার পরের ফ্লাইটেই সেখানে তার আততায়ী পৌঁছে গিয়েছিল এবং মাল্টায় অবস্থিত তাদের গুপ্ত এজেন্টের মাধ্যমে সাদেক খানের সিডিউল জেনে যায়।সাদেক খানকে হত্যার জন্য তারা দুর্ঘটনা থিওরি প্রয়োগ করে যাতে করে কেউ কোনো সন্দেহ করতে না পারে।কারণ সাদেক খানের মতো এমন হাই প্রোফাইল ব্যক্তিকে হত্যা করলে দেশে বিদেশে ব্যাপক আলোরণ সৃষ্টি হবে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তদন্ত শুরু হয়ে যাবে।যার ফলে হত্যাকাণ্ডের আসল কারণ ও এর পিছনে কে কে জড়িত তাও বেরিয়ে আসবে।তাই সাদেক খানকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য এমনভাবে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে যাতে করে কেউ কোনো দিন জানতে না পারে কেন তাকে হত্যা করা হলো এবং কে এর পিছনে কে জড়িত।
সাদেক খানকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য আন্ডার ওয়ার্ল্ডের অদৃশ্য এক শক্তি অত্যন্ত সূক্ষ্ম পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।তারা সাদেক খানকে এমনভাবে হত্যা করার পরিকল্পনা করছে যাতে করে কেউ কোনোদিন তার হত্যা কাণ্ডের কারণ ও হত্যাকারী হোতাদের খুঁজে বের করতে না পারে।তাই তারা অত্যন্ত ধৈর্য সহকারে এবং সঠিক সময় ও সুযোগের অপেক্ষা করে থাকে।ইতিমধ্যে তারা তিনবার সেই সুযোগ পেয়েছিল সাদেক খানকে শেষ করে দেওয়ার।কিন্তু তাদের দূর্ভাগ্য এবং সাদেক খানের সৌভাগ্যের কারণে তারা সাদেক খানকে হত্যা করতে পারেনি।এটা তাদের চতুর্থ ষড়যন্ত্র ছিল সাদেক খানকে হত্যা করার।সাদেক খানকে হত্যা করার জন্য তারা অসংখ্য খুনের অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ দুর্ধর্ষ, ভয়ংকর, নির্মম এক ভাড়াটিয়া খুনি নিয়োগ করে।আবার সাদেক খান এই ভাড়াটিয়া খুনিরও একনম্বর শত্রু।ফলে ভাড়াটিয়া খুনি এক ঢিলে দুই পাখি মারার সুযোগ পেয়ে যায়।একদিকে এই জঘন্য খুনি তার চির দুশমন সাদেক খানকে খুন করে তার প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ পেয়ে যায়।আর অন্যদিকে সাদেক খানকে খুনের বিনিময়ে সে আন্ডার ওয়ার্ল্ডের মাফিয়া বসের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা কামানোর সুযোগও পেয়ে যায়।যতই ভয়ঙ্কর হোক না কেন এই দুর্ধর্ষ খুনি একা একা তার চরম দুশমন সাদেক খানের মতো এমন একজন হাই প্রোফাইল ব্যক্তিকে হত্যা করা তার পক্ষে সম্পূর্ণ অসম্ভব ব্যাপার।তাই অদৃশ্য এক মাফিয়া ডনের কাছ থেকে যখন সাদেক খানকে হত্যা করা এবং হত্যার বিনিময়ে ১০কোটি টাকা ও নিরাপদ শেল্টারের অপার আসে তখন সাথে সাথে এই নির্মম ও ভয়ঙ্কর খুনি এই অপার লুফে নেয়।এতে করে এই খুনি তার চরম দুশমন সাদেক খানকে মাফিয়া ডনের ছত্রছায়ায় হত্যা করে দীর্ঘদিন ধরে জ্বলা প্রতিশোধের আগুন নিভাবে আর সাথে সাথে ১০কোটি টাকাও পেয়ে যাবে।একেবারে সোনায় সোহাগা।
সাদেক খানকে হত্যা করার জন্য তারা দুর্ঘটনা থিওরির উপর বেশি জোর দেয়।কারণ সুপরিকল্পিতভাবে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে যদি সাদেক খানকে হত্যা করা যায় তবে সেটা হবে তাদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ।তবে অন্যান্য উপায়ও তারা হাতে রাখে।তবে যে উপায়েই সাদেক খানকে হত্যা করা হোক না কেন তা যেন ১০০% নির্ভুল ও নিরাপদ হয় সে ব্যাপারে এই অদৃশ্য মাফিয়া শক্তি অত্যন্ত সতর্ক।
এক অদৃশ্য মাফিয়া ডন এবং আরেক ভয়ঙ্কর খুনি যে তার চরম দুশমন হয়ে আছে ,তারা যে তাকে হত্যা করার জন্য ভয়ঙ্কর ও ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এই ব্যাপারে সাদেক খান কিন্তু সম্পূর্ণভাবে অন্ধকারে আছে। সাদেক খান কোনো দিন কল্পনাও করেনি যে তার কোনো শত্রু থাকতে পারে।কারণ খান পরিবারের কোনো সদস্যই কোনোদিন কারো কোনো ক্ষতি করেনি।বর্তমানে তাদের রিয়েল এস্টেটের যে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা রয়েছে তা কিন্তু সাদেক খানের দাদা পাকিস্তান আমলে সস্তায় ও ন্যায্য মূল্যে কেনা ভূমির উপর প্রতিষ্ঠিত।খান পরিবার অন্যায়ভাবে কোনো দিন কারো ভূমি জবরদখল করেনি যেমনটা করে থাকে বর্তমান কালের ভূমিদূস্য রিয়েল এস্টেটের মালিকেরা।খান কনস্ট্রাকশন ফার্ম যখন কোনো জমি ক্রয় করে তখন তারা বর্তমান বাজার মূল্যের চেয়ে বেশি দামেই ক্রয় করে।ফলে জমির মালিকেরা খান কনস্ট্রাকশন ফার্মের বিরুদ্ধে কোনোদিন কোনো অভিযোগ করেনি।আবার অন্যান্য রিয়েল এস্টেট কোম্পানিকেও কিন্তু খান কনস্ট্রাকশন কোম্পানি ভূমি দিয়ে ,আর্থিক সাহায্য দিয়ে এমনকি পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছে।যে কারণে অন্যান্য রিয়েল এস্টেট ফার্মের সাথে খান ফার্মের খুবই ভালো সম্পর্ক রয়েছে।আবার সরকার ও প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে খান ফ্যামিলির ঘনিষ্ট সম্পর্কের কথা সবাই জানে।এমনকি মধ্য প্রাচ্যের আরব দেশগুলোর অনেক প্রভাবশালী শাসকদের সাথেও যে খান পরিবারের ঘনিষ্ট যোগাযোগ আছে এই ব্যাপারেও সবাই ওয়াকিবহাল।আর এই জন্যই খান ফ্যামিলির কেউ কোনোদিন বিশ্বাস বা কল্পনাও করেনি যে খান ফ্যামিলিকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য কেউ কোনোদিন ষড়যন্ত্র করার সাহস পাবে।আর এই জন্য খান পরিবারের কেউ তাদের গোপন শত্রু সম্পর্কে বিন্দুমাত্র সতর্ক ছিল না কোনোদিন।আর গোপন এই দুই ষড়যন্ত্রকারী সেই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছে।
এদিকে আল্লাহর অশেষ রহমতে সাদেক খান আবারও অলৌকিকভাবে বেঁচে যায়।আগেও সৌদি আরবের পাহাড়ি এলাকায় এমনি একটা ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা থেকে অলৌকিকভাবে বেঁচে গিয়েছিল সে।কিন্তু সেটাও দুর্ঘটনা ছিল না।ছিল সাদেক খানকে হত্যা করার গভীর চক্রান্ত।আর এই চক্রান্তের পিছনে কলকাঠি নাড়ছে এক অদৃশ্য মাফিয়া ডন আর তা বাস্তবায়ন করার জন্য প্রাণপনে চেষ্টা করছে এই ভয়ঙ্কর,ঘৃণ্য ও নির্মম ভাড়াটিয়া খুনি।
মানবদরদী, নিষ্পাপ ও দানশীল সাদেক খান বারবার উপরওয়ালার অশেষ রহমতে বেঁচে যাচ্ছে।সাদেক খান এই দুইটি ঘটনাকেই নিছক দুর্ঘটনা হিসেবেই মনে করছে।কিন্তু সে কল্পনাও করতে পাচ্ছে না যে, এসব দুর্ঘটনা নয়। এসব ইচ্ছাকৃত দুর্ঘটনা তাকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র।
সাদেক খান প্রথমে যদিও বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন এই দুর্ঘটনার কারণে কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই সে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে সামলে নেন।সে উপরওয়ালার উপর পূর্ণ ভরসা রাখেন এই ভেবে যে উপরওয়ালা যদি কাওকে রক্ষা করে তবে যেকোন বিপদ আপদ তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।আর জন্ম নিলে একদিন সবাইকেই মরতে হবে।সতরাং মরনের কথা চিন্তা করে চার দেয়ালের মাঝে বন্দী হয়ে বসে থাকার কোনো মানে হয়না।মরনের সময় হলে সবাইকে মরতে হবে।সে যতই সুরক্ষিত স্থানে নিজেকে লুকিয়ে রাখুক না কেন।তাই সাদেক খান বিন্দুমাত্র আতঙ্কিত না হয়ে নিজেকে একদম স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসলেন।কেউ বুঝতেও পারছে না যে সে ভয়ঙ্কর একটা দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে গেছে।সাদেক খান পরদিনই দুবাই ফিরে যাওয়ার সিদ্বান্ত নেয়।তারপর দুইদিন দুবাই অবস্থান করে mauritius এ ট্যুর দেওয়ারও সিদ্বান্ত নীল।
এদিকে দুবাই এর আরেকটা হাই রাইজ বিল্ডিং Cayan Tower এর ৫০ তম তলায় অবস্থিত বিশাল এক বিলাসবহুল অফিস বসে আছে আরেকজন রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্যের বস।তার কাছে এই দুর্ঘটনার খবর আসতেই সে খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায়।সে যখন সংবাদ পেলো যে সাদেক খান আর বেঁচে নেই তখন সে তৃপ্তির একটা ফোকলা হাসি দিয়ে মনে মনে বলল,
``এতদিন পর আমার পথের কাঁটা সরে গেল।বাংলাদেশের রিয়েল এস্টেটের একচেটিয়া ব্যবসা এখন আমার হাথে এসে যাবে।আমি হব রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্যের একমাত্র সম্রাট।ঘুণাক্ষরেও কেউ জানতে পারবে সাদেক খানের মৃত্যুর আসল কারণ।সবাই সেটাকে দুর্ঘটনা হিসেবেই মনে করবে। ``
আর এই মাফিয়া কিন্তু খান পরিবারের একজন ঘনিষ্ট বন্ধু।এই ছায়া শত্রু সাদেক খানের কাছ থেকে অনেক সুযোগ সুবিধা নিয়েছে বিভিন্ন সময়।এখনও খান ফ্যামিলির সাথে এই বর্ণচোরা বেঈমানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।কিন্তু বড় আফসোসের বিষয় হলো এই খান ফ্যামিলি যে অত্যন্ত মারাত্মক বিষধর সাপের মতো এক ভয়ঙ্কর মাফিয়ার সাথে বন্ধুত্ব করেছে তা সহজ সরল সাদেক খান কল্পনাও করতে পারছে না।আসলে মুনাফেক মানুষের কাছ থেকে আত্মরক্ষা করা বেশ কঠিন
কাজ।
এই অদৃশ্য মাফিয়া ডন তার অফিসের সকল স্টাফকে জানায় যে আগামীকাল তাদের সবার জন্য এক বিশেষ বোনাস ঘোষণা করা হবে এবং সাথে সাথে জাঁকজমকপূর্ণ এক বিশাল পার্টিরও আয়োজন করা হবে। অফিসের সবাই অবাক হয়ে যায় হঠাৎ করে এমন খুশীর সংবাদ শুনে।কিন্তু কি কারণে তাদের জন্য বোনাস ও পার্টির আয়োজন করা হচ্ছে সেটা তার বুঝতে পারছে না।তবে সাহস করে কেউ এর কারণ সম্পর্কে তাদের বসকে কোনো প্রশ্নও করতে পারছে না।
কারণ তারা জানে তাদের বস খুবই খেয়ালি প্রকৃতির মানুষ।কোন সময় কি করে ফেলে তার কোনো ঠিক নেই।অফিসের সকল স্টাফদের বিশেষ বোনাস ও পার্টির আয়োজনের জন্য কয়েক কোটি টাকার বাজেটও করে ফেলে তাৎক্ষণিকভাবে।