03-06-2021, 09:49 PM
(This post was last modified: 06-06-2021, 03:47 PM by Bumba_1. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
ওই ঘটনার পর দু'দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও ইন্সপেক্টর আদিল খানের মৃত্যু রহস্যের এখনো পর্যন্ত সরকারিভাবে কোনো কূলকিনারা করতে পারেনি পুলিশ।
মৃত্যুর কারণ জানা গেলেও -- পটাশিয়াম সাইনাইড তিনি নিজেই নিয়েছিলেন নাকি অন্য কেউ বাইরে থেকে প্রয়োগ করেছিল সেই বিষয়ে পুলিশ এখনো ধন্দে রয়েছে। তবে পুলিশের একাংশের ধারণা খান সাহেবের মতো জাঁদরেল পুলিশ অফিসারকে জোর করে কেউ বিষ প্রয়োগ করতে পারবে না .. তাছাড়া সেই সময়ের মধ্যে তিনি কোনো খাদ্য বা পানীয় গ্রহণ করেননি যে তার মাধ্যমে বিষ প্রয়োগ করা যাবে .. অর্থাৎ এটি আত্মহত্যা বলেই প্রাথমিক তদন্তে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে পুলিশ।
উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে এবং সেইরকম কোনো ব্যক্তিগত মোটিভ না থাকার জন্য সোমাকে একরাত্রি লকআপে রেখে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ .. যদিও সে এখন পুলিশকর্তৃক অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে রয়েছে .. তাকে এই শহর ছেড়ে বাইরে কোথাও না যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে এই কেস'টি লোকাল পুলিশের হাত থেকে এবার হয়তো সিআইডির হাতে যেতে চলেছে। এই ঘটনার স্থান-কাল-পাত্র সবকিছু সম্বন্ধে শোনার পর নাকি কলকাতার একজন যুবক সিআইডি ইন্সপেক্টর তার ঊর্ধ্বতন অফিসারকে নিজে থেকে অনুরোধ করে এই কেসটার তদন্তভার নিজের কাঁধে তুলে নিতে চেয়েছেন। তবে বর্তমানে ভোট পরবর্তী হিংসা এবং একটি অমীমাংসিত জালিয়াতি কেসের তদন্তের জন্য ব্যস্ত আছেন, দিন চারেক পরে উনার আসার কথা।
এই ধরাধামে কারোর জন্য কিছু থেমে থাকে না .. খান সাহেবের মতো একজন (কু)খ্যাত পুলিশ অফিসারের মৃত্যুর খবর পেয়ে এলাকার দুর্বৃত্তমহল অর্থাৎ যারা উনার কাছ থেকে উপকৃত তারা কিছুটা মুষড়ে পড়েছিল প্রাথমিকভাবে, আবার যে সমস্ত পরিবারের সর্বনাশ তিনি করেছিলেন তারা বাইরে প্রকাশ না করলেও ভেতর ভেতর যথেষ্ট আনন্দিত হলো। তবে সব সুখ-দুঃখ ভুলে সুন্দরনগর আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এলো।
লোকাল রুলিং পার্টির লিডার হলেও তারক দাসের অনেক দুষ্কর্মের খুঁটি বাঁধা ছিলো ইন্সপেক্টর খানের কাছে .. তাই সিআইডি আগমনের খবর শুনে কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে যাবার ভয় তার সঙ্গী বাচ্চা যাদবের সঙ্গে পরামর্শ করে কয়েকদিন নিভৃতে চুপচাপ থাকার সিদ্ধান্ত নিলো। তবে যাদব মহাশয়ের মন দাস বাবুর মনের মত ধীর-স্থির নয় .. তার চিত্ত বড়ই চঞ্চল পুনরায় যৌবনবতী আকর্ষণীয়া শ্রীতমার মধু খাওয়ার জন্য। আসলে বাঘ একবার মানুষের রক্তের স্বাদ পেয়ে গেলে যেকোনো পরিস্থিতিতেই তাকে রোখা কঠিন। তাই সে হয়তো মনে মনে অন্য কিছু ভাবছে ..
খান সাহেবের মৃত্যুর পরের দিন সকালেই খবরটা কানে পৌঁছেছিলো শ্রীতমার। একজন তরতাজা-হৃষ্টপুষ্ট লোক কিছুক্ষণ আগেও যার সঙ্গে সে সময় কাটিয়েছিলো .. সে কি করে কয়েক ঘন্টার মধ্যে এই ভাবে .. প্রথমদিকে বিশ্বাস করতে পারেনি সে .. পরে শ্রীতমা অনুভব করলো যাকে সে মনে মনে এতো ঘৃণা করে .. কাল থেকে একনাগাড়ে অপমান করে আসছে .. তার মৃত্যু সংবাদ পেয়ে আনন্দিত হওয়ার বদলে মনটা আস্তে আস্তে ভারাক্রান্ত হয়ে উঠছে তার।
মানুষটা যতই খারাপ হোক জুট পাচারের কেসে ফেঁসে যাওয়া তার স্বামীর পক্ষে পুলিশের তরফ থেকে তো একমাত্র খান সাহেব সবকিছু তদন্ত করছিলেন .. তিনি চলে যাওয়ার পর কিভাবে এই কেসের অগ্রগতি হবে সেটা ভেবে কিছুটা বিচলিত হয়ে পড়লো শ্রীতমা -- তাই হয়তো তার মন ভারাক্রান্ত .. কিংবা স্বামীর কাছ থেকে প্রকৃত অর্থে যৌনসুখ না পাওয়া একজন বঞ্চিতা স্ত্রী হয়তো ভেতর ভেতর ছাইচাপা আগুনে পরিণত হয়েছিল .. হয়তো ঘটনার আকস্মিকতায় এবং সতিলক্ষী মনের প্রভাবে তারক দাস আর যাদবের সঙ্গে প্রথম sex encounter সে ভাবে উপভোগ করতে পারেনি .. কিন্তু পরবর্তীকালে খান সাহেবের মতো একজন মত্ত, কামুক ও প্রকৃত অর্থে পুরুষের সঙ্গে যৌন সংসর্গের ফলে সে হয়তো মুখে যাই বলুক ভেতর ভেতর শারীরিকভাবে প্রচন্ড রকমের তৃপ্ত হয়েছিলো -- তাই হয়তো তার মন ভারাক্রান্ত .. এর মধ্যে কোনটা সঠিক তার উত্তর দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়, এর উত্তর একমাত্র শ্রীতমা নিজেই দিতে পারবে।
-------------------------------------
ওদিকে তখন মদ, জুয়া এবং তার সঙ্গে বেলেল্লাপনার আড্ডা বসেছে দীনেশ জি'র বাড়িতে। আড্ডায় উপস্থিত হিরেন ঘোষ, বাচ্চা যাদব, বিকাশ চতুর্বেদী এবং অবশ্যই বাড়ির মালিক দীনেশ আগারওয়াল।
শহরের উত্তরদিকে অর্থাৎ 'থমাসডাফ জুট ওয়ার্কস' ফ্যাক্টরির পশ্চাদ্ভাগের শেষ সীমানা থেকে রামডাঙ্গা কলিহারি যাওয়ার মাঝে দুই কিলোমিটার জনমানব শূন্য রাস্তাটির বাঁকে প্রায় পাঁচ কাঠা জমির উপর বিশাল উঁচু প্রাচীর দিয়ে ঘেরা প্রকাণ্ড দোতলা বাড়ি এই কোম্পানির জুট-সাপ্লায়ার দীনেশ আগারওয়ালের। অবশ্য এটাকে উনার residential address না বলে 'দুষ্কর্মের ঠেক' বলা ভালো। মদ, জুয়া, ভদ্র-বাড়ির বা বস্তির মেয়ে, বৌদের ফুঁসলিয়ে নিয়ে এসে বেলেল্লেপনা এসব তো চলেই .. নিন্দুকেরা বলে দীনেশ আগারওয়ালের এই বাগানবাড়িতে নাকি নীল-ছবির শুটিং করা হয়।
আগারওয়াল, চতুর্বেদী এবং হিরেন ঘোষের চেহারার বর্ণনা পূর্বেই কিছুটা দিয়েছি। পাঠকদের বোঝার সুবিধার্থে পুনরায় ব্যাপারটা বিস্তারিতভাবে ঝালিয়ে নেওয়া যুক্তিযুক্ত ..
থমাসডাফ জুট ওয়ার্কসের 'পার্সোনাল ম্যানেজার' হিরেন ঘোষ .. পাংশুটে মুখের দীর্ঘকায় হিরেন বাবুর চেহারা অনেকটা শুকনো কাঠের মতো। আড়ালে অনেকেই উনার মুখটাকে আমের সমস্ত শাঁস চুষে খেয়ে ফেলে দেওয়া আঁটির সঙ্গেও তুলনা করে।
এই কোম্পানির 'জুট সাপ্লায়ার' দীনেশ আগারওয়াল .. বেঁটে, মোটা, কালো, টাকমাথা চেহারার কদাকার এক ব্যক্তি। হামদো মুখে গভীর বসন্তের দাগ মুখমন্ডলটিকে যেন আরো ভয়ঙ্কর এবং কুৎসিত করে তুলেছে।
বিখ্যাত আইনজীবী এবং তার সঙ্গে এই কোম্পানির লিগাল অ্যাডভাইজার বিকাশ চতুর্বেদী .. উনাকে দেখতে অনেকটা বলিউড ফিল্ম তারকা আদিত্য পাঞ্চোলির মতো। তবে উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হলো ওনার দুটো চোখই কটা এবং উনি দুই কানে হীরের দুল পড়েন।
সঠিকভাবে প্রত্যেকের বয়স বলা শক্ত। তবে এরা প্রত্যেকেই মধ্যবয়সী .. ৪৫ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে।
আজকে এদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হলো অরুণবাবুর কেসের পরবর্তী পদক্ষেপ এবং অবশ্যই এইসব মধ্যবয়সী কামুক-দুর্বৃত্তদের কামনার নারী শ্রীতমা।
এদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা ধূর্ত হিরেন ঘোষ আজ সকালেই ফোন করে সরল মনের শ্রীতমার কাছ থেকে কায়দা করে জেনে নিয়েছে অরুণবাবুর সই করা সেই সাদা কাগজটি ইন্সপেক্টর খান শ্রীতমার কাছে দিয়ে গেছে। আসলে এই কাগজটা নিয়েই এদের সবার মনে একটা শঙ্কা তৈরি হয়েছিল .. ওটা যদি অন্য কারোর হাতে পড়ে তাহলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। কারণ সম্পূর্ণ কেসটাই সাজানো .. এদের সবার, বিশেষ করে হিরেন ঘোষের মস্তিষ্কপ্রসূত। বর্তমানে কাগজটির অবস্থান জানতে পেরে এরা সবাই অত্যন্ত খুশি .. একবার নিজেদের হাতের মুঠোয় ওই কাগজটা নিতে পারলেই কেল্লাফতে। সেই কারণেই আজ দীনেশ জি'র বাড়িতে আসর বসেছে। বন্ধু আদিল খানের বিরহে তার অনেক দুষ্কর্মের সঙ্গী তারক দাস দু'দিনের জন্য তার দেশের বাড়ি রূপনারায়ণপুরে গেছেন। তাই তার অজ্ঞাতসারেই তাকে বাদ দিয়ে এই আয়োজন।
আগামীকাল রাতে দীনেশ আগারওয়ালের প্রাসাদোপম এই বাগানবাড়িতে আয়োজিত এক পার্টিতে শ্রীতমাকে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে। তবে তার সঙ্গে এটাও বলে দেওয়া হয়েছে অরুণবাবুর সই করা কাগজটি নিয়ে আসার জন্য .. কাগজটিতে উকিল অর্থাৎ চতুর্বেদীর সাহায্যে অরুণবাবুর পক্ষে আইনি ভাষায় বয়ান লিখে এঁরা অর্থাৎ হিরেন বাবু এবং দীনেশ জি দুজনেই থানায় গিয়ে কেসটি withdraw করে আসবেন .. এর ফলেই নাকি অরুণবাবু নির্দোষ প্রমাণিত হবেন।
ফোনে কথা বলার ফাঁকে হিরেনবাবু এটাও বিনীতভাবে জানিয়েছেন .. সেইদিনের অসমাপ্ত নৃত্যপ্রদর্শনী দেখার বড় সাধ উনার এবং উনার বন্ধুদের। যদিও এতে অস্বস্তি বোধ করার কিছু নেই .. শ্রীতমাকে সঙ্গ দেবার জন্য এখানে আগারওয়াল এবং উনার নিজের সহধর্মিনীরা উপস্থিত থাকবেন। বাচ্চা যাদবের স্ত্রী (বলাই বাহুল্য সাজানো বউ) বিন্দু আনতে যাবে শ্রীতমাকে।
শ্রীরামপুর থেকে ফিরে আসার পর খান সাহেবের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে কিছুটা ব্যাকুল হয়ে পড়া ছাড়া এই দু'দিন বেশ নিরুপদ্রবেই কেটেছে শ্রীতমার। দাসবাবু এবং যাদবের অহেতুক ফোন করে বা বাড়িতে এসে বিরক্ত করা নেই, তার উপর গতকাল সকালে অরুণ বাবুর ঊর্ধ্বতন অফিসার মিস্টার ঘোষ তাকে ফোন করে আশ্বস্ত করেছে কাগজটা ওদের কাছে পৌঁছে দিতে পারলেই তার স্বামীর কেসের একটা সুরাহা হবে।
যদিও সেই রাতে অফিস ক্লাবে নৃত্যরতা শ্রীতমার প্রতি ওই কামুক মাঝবয়সী লোকগুলোর হ্যাংলাপনার কথা ভেবে প্রথমে তাকে কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলেছিলো তারপরে সে যখন শুনলো তাকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য ওখানে ওদের সহধর্মিনীরাও থাকবেন তখন কিছুটা চিন্তামুক্ত হলো সে। তাই আজ সকাল থেকেই সব মিলিয়ে শ্রীতমার মনটা বেশ নিশ্চিন্ত এবং ফুরফুরে। সকালে উঠে প্রাতঃরাশ সেরে সোমার বদলে অফিস থেকে আগত বুড়ো ওয়ার্কারটির সাহায্যে ঘরের সমস্ত কাজ সমাপ্ত করে অন্যদিনের তুলনায় অনেকটাই বেশি সময় স্নানঘরে কাটিয়ে অফিস ক্যান্টিন থেকে পাঠানো free of cost এ বিভিন্ন রকমের সুস্বাদু বাঙালি আইটেম দিয়ে দুপুরের খাবার সমাপ্ত করে বুকানকে নিয়ে দিবানিদ্রায় মগ্ন হলো শ্রীতমা।
নিদ্রাভঙ্গ হলো কলিং বেলের শব্দে। ধড়মড় করে উঠে শ্রীতমা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো প্রায় সন্ধ্যা ছ'টা বেজে গিয়েছে। তারপর দরজা খুলে দেখলো একটি গলাবদ্ধ, ফুলস্লিভ, গোড়ালি পর্যন্ত লম্বা, সামনের দিকটা পুরো চেইন বিয়ে আটকানো, গাঢ় নীল রঙের ভেলভেটের গাউন পড়ে মিটিমিটি হাসিমুখে বিন্দু দাঁড়িয়ে আছে। ওকে দেখে যে শ্রীতমা প্রথমে খুব একটা খুশি হতে পারলো তা নয়। কারণ সেই রাতে এই বিন্দুর সঙ্গে গিয়েই তার জীবনটা ওলটপালট হয়ে গিয়ে একেবারে অন্য খাতে বইতে শুরু করেছে। তবে এর জন্য প্রথমদিকে শ্রীতমার মনে আক্ষেপ থাকলেও বর্তমানে বোধহয় তা কিছুটা প্রশমিত, তার বদলে হয়তো সৃষ্টি হয়েছে অপরাধবোধের।
যাই হোক, বিন্দুকে ভেতরে নিয়ে এসে নিজের বেডরুমে নিয়ে গেলো শ্রীতমা। ভেতরে আসার পর লক্ষ্য করলো বিন্দুর হাতে একটি বড়োসড়ো প্যাকেট।
শ্রীতমা জিজ্ঞাসু চোখে ওর দিকে তাকাতে বিন্দু প্যাকেটটি এগিয়ে দিয়ে বললো "এটা আজ আমাদের পার্টির ড্রেস .. আমরা সব মহিলারা আজ একই রকম পোশাক পড়বো .. আমি পড়েই এসেছি .. তোমার জন্য দীনেশ জি পাঠিয়েছেন .. চেঞ্জ করে নাও"
কিন্তু দীনেশ আগারওয়াল তার জন্য উপহার পাঠালো কেনো! এটা ভেবে প্রথমে শ্রীতমা কিছুটা ইতস্তত করে প্যাকেটটি খুলে দেখলো বিন্দুর পরিধেয় বস্ত্রের অনুরূপ অপূর্ব সুন্দর টকটকে লাল রঙের ভেলভেটের long gown .. তার সঙ্গে লাল রঙের অত্যন্ত পাতলা গেঞ্জির কাপড়ের একটি sports bra এবং ওই একই কাপড়ের কালো রঙের একটি অত্যন্ত খাটো shorts .. এটিকে অবশ্য মাইক্রো হটপ্যান্ট বললেও হয়। এগুলি নামজাদা পরিধেয় বস্ত্র হিসেবে গণ্য হলেও আসলে একটু অন্যধরনের inner বৈ কিছুই নয়।
ভেলভেটের গাউনটি শ্রীতমার ভীষণরকম পছন্দ হলেও বাকি পরিধেয় বস্ত্রগুলির সম্পর্কে কিছুটা ইতস্তত করে বললো "গাউনটা আমার খুব পছন্দ হয়েছে, এটা পড়বো। কিন্তু ভেতরে এগুলো পড়া কি খুব জরুরী? আমি তো ভেবেছিলাম গাউনের নিচে শাড়ি বা সালোয়ার পড়ে নেবো।"
"ধুর বোকা মেয়ে .. এটাই তো আজকের পার্টির ড্রেস কোড .. তুমি খামোখা এর নিচে শাড়ি বা সালোয়ার করতে যাবে কেনো? গাউন দিয়ে তো শুধু মুখ ছাড়া পুরো শরীর ঢাকা থাকবে তোমার .. ভিতরে কি পড়েছ না পড়েছ কিছুই তো দেখা যাবে না .. এই দেখো আমি যেরকম পড়েছি" এই বলে বিন্দু গলার কাছ থেকে চেইন টা ধরে টেনে পুরো পা পর্যন্ত নামিয়ে দিয়ে পরনের গাউনটা দুপাশে সরিয়ে দিলো।
শ্রীতমা দেখলো ধুমসি চেহারার বিন্দুর গায়ে শোভা পাচ্ছে নীল রঙের ঐরূপ উর্ধাঙ্গের এবং নিম্নাঙ্গের বস্ত্র।
শ্রীতমা ভেবেছিলো আজ পার্টিতে সে শাড়ি পড়ে যাবে, সঙ্গে স্লিভলেস ব্লাউজ। কিন্তু তার থেকে দিনেশ জি যে উপহারটি পাঠিয়েছে সেটি যথেষ্ট উৎকৃষ্ট এবং ভদ্র একটি পোশাক। তাই আর কথা না বাড়িয়ে পাশের ঘরে চলে গেলো পোশাক পাল্টাতে।
পোশাক পরিবর্তন করার সময় ভিতরে কোনো extra protection না নিয়ে অর্থাৎ extra inner না পড়ে লাল রঙের স্কিম্পি স্পোর্টস ব্রা এবং কালো রঙের হট-প্যান্ট পরিধান করার পর আয়নায় দিকে তাকিয়ে শ্রীতমা দেখলো উর্ধাঙ্গের এবং নিম্নাঙ্গের ক্ষুদ্র পোশাক দুটি তার শরীরে একেবারে আটোসাঁটো হয়ে বসেছে। ব্রা-প্যান্টির কথা তো ছেড়েই দিলো সে, সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থাতেও তাকে এতোটা উত্তেজক এবং আকর্ষণীয়া লাগেনা এই অবস্থায় তাকে যেরূপ লাগছে। নিজেকে দেখে দুই পায়ের মাঝখানে কেমন যেন একটা শিরশিরানি অনুভব করলো শ্রীতমা।
সবশেষে লম্বা, ফুলহাতা গাউনটি নিজের গায়ে চাপিয়ে, মুখমন্ডলে হালকা প্রসাধনী করে শ্রীতমা বুকানকে কোলে নিয়ে বিন্দুর সঙ্গে বাড়ির সামনে অপেক্ষমান গাড়িতে উঠে যখন রওনা দিলো, ঘড়িতে তখন সাড়ে সাত'টা।
আমাদের বুকান বাবু অস্ফুটে বলে উঠলো "আ-বা-বু-তু"
-------------------------------------
ফ্যাক্টরির পাশের রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে একেবারে কম্পাউন্ডের শেষ সীমানায় পৌঁছে লাইন কোয়ার্টারগুলো ছাড়িয়ে গাড়ি যখন রামডাঙ্গা কলিহারি রোডের উপর পড়লো তখন প্রায় পৌনে আটটা বেজে গিয়েছে।
এই দিকটা কোনোদিন আসেনি সে বা আসার দরকার হয়নি। তার উপর এরকম জনমানব শূন্য রাস্তা দেখে বিন্দুর দিকে তাকিয়ে শ্রীতমা ভয় ভয় প্রশ্ন করলো "এখনই অনেকটা রাত হয়ে গেছে, আর কতদূর উনার বাড়ি? রাত্রে ফিরতে হবে তো আমাদের.."
"এইতো এসে গেছি.. আর কিছুক্ষণ .. আসলে দীনেশ জি'র বাড়ি শহরের অন্যপ্রান্তে .. আগে তো পৌঁছোই .. ফেরার কথা পরে হবে" শ্রীতমাকে অভয় দিয়ে বললো বিন্দু।
আট'টা নাগাদ দীনেশ আগারওয়ালের প্রাসাদোপম বাগানবাড়ির সামনে গাড়ি থামলো। যদিও শ্রীতমা জানে না যে এটা দিনেশ জি'র বসতবাড়ি নয় বাগানবাড়ি, তবুও এই প্রকাণ্ড অট্টালিকা দেখলে বাড়ির মালিকের অর্থনৈতিক অবস্থা সম্বন্ধে ধারণা জন্মায়।
সামনের অনেকটা জায়গা জুড়ে থাকা লন পেরিয়ে বুকানকে কোলে নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলো শ্রীতমা সঙ্গে বিন্দু। প্রধান গেটে অতিথি অভ্যর্থনার জন্য দাঁড়িয়েছিলো বাড়ির মালিক দীনেশ আগারওয়াল। খাতির করে ওদের ভেতরে একটি হলঘরের মতো বড়ো ড্রইংরুমে নিয়ে গেলো।
ঘরটির মধ্যে সোফার উপর মিস্টার হিরেন ঘোষ এবং বিকাশ চতুর্বেদী বিরাজমান থাকলেও ঘোষ বাবু আর দিনেশ জি'র স্ত্রীদের অনুপস্থিতি দেখে কিছুটা অবাক হয়ে শ্রীতমা প্রশ্ন করলো "আপনাদের স্ত্রী'রা থাকবেন বলেছিলেন .. তারা কি আসেন নি?"
শ্রীতমার মনের ভাব এবং বক্তব্য বুঝতে পেরে তৎক্ষনাৎ ব্যাপারটাকে সামলে নেওয়ার জন্য মিস্টার ঘোষ কৈফিয়ৎ দিলেন "ওরা তো এতক্ষণ ছিলো .. অপেক্ষা করছিল তোমার জন্য .. দীনেশ তো অনেক আগে গাড়ি পাঠিয়েছে তোমাদেরকে নিতে .. তোমরা এতক্ষণ দেরি করলে (যদিও দেরি করে আসার পুরোটাই প্ল্যানমাফিক এবং বলা বাহুল্য আজকের সান্ধ্য আসরের কথা এদের স্ত্রীরা কেউই জানে না) তাই ওরা একটু বাইরে গিয়েছে বিশুদ্ধ বাতাস সেবন করতে, কিছুক্ষণের মধ্যেই ফিরে আসবে, চিন্তা করো না।"
ঘরে তখন মৃদু ভলিয়্যুমে একটি ইংরেজি গান বাজছে। সোফার এক কোণে বসে অসভ্যের মত দাঁত বার করে হাসতে থাকা বাচ্চা যাদবের দিকে চোখ যাওয়াতে সেদিন রাতের সমস্ত ঘটনা পুনরায় মনে পড়ে গেলো অরুণবাবুর স্ত্রীর এবং ওই ঘটনা যদি যাদবের মত দুষ্টু লোক ঘরের বাকি সদস্যদের বলে থাকে .. সেই ভেবে প্রচন্ড অস্বস্তিতে পড়ে গেলো শ্রীতমা।
"এসো, প্রথমে কাজের কথাগুলো সেরে নেওয়া যাক .. পরে পার্টি এনজয় করা যাবে .. যাদব আমাদের ম্যাডামের ডিনারের ব্যবস্থা করো এখনই" এই বলে সোফায় তার পাশে বসতে ইঙ্গিত করলেন চতুর্বেদী।
"এখনই ডিনার করবো এখন তো সবে সাড়ে আটটা বাজে" মৃদু কণ্ঠে এই কথা বলে চতুর্বেদীর পাশে বসলো শ্রীতমা।
"খেতে খেতেই ন'টা বেজে যাবে .. তারপরে আর সময় পাবে না ডিনার করার .. কাগজটা এখন আমাকে দাও তারপর আমি সব আইনি ব্যবস্থা করে তোমাকে পরে জানাবো।" ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে মুচকি হেসে জবাব দিলো চতুর্বেদী।
অরুন বাবুর সই করা কাগজ, বলা ভালো তার ভবিষ্যৎ হস্তান্তর হয়ে গেলো আইনজীবী বিকাশ চতুর্বেদী হাতে। সকলে মুখ চাওয়া-চাওয়ি করে বিজয়ের হাসি হাসলো।
আজ এখানে আসার পর থেকেই শ্রীতমা লক্ষ্য করলো ঘরের বাকি পুরুষ সদস্যরা তাকে 'আপনি'র বদলে 'তুমি' বলে সম্বোধন করছে। তবে এরা তার থেকে বয়সে অনেকটাই বড়ো.. তাই এই নিয়ে বিশেষ কিছু মনে করলো না সে।
ডিনারের মেনু তে অনেক কিছুই ছিলো কিন্তু শ্রীতমা শুধুমাত্র চিকেন তন্দুরি, বাসন্তী পোলাও, মটন কষা আর ডেজার্টের মধ্যে ক্ষীরকদম্ব দিয়ে ডিনার সারলো।
বিন্দুর কোলে থাকা অবস্থায় হঠাৎ "মাম্মাম খাবো" অর্থাৎ মাতৃদুগ্ধ পান করবো বলে কান্নাকাটি জুরে দিলো বুকান।
এই কথা শুনে স্বভাবতই অপ্রস্তুতে পড়ে গেলো বুকানের মাম্মাম। যদিও এখন বুকানের দুদু খাওয়ার সময় .. তবুও এতগুলো অচেনা লোকের সামনে সে কি করে তার সন্তানকে ব্রেস্ট ফিড করাবে!
"তুমি কোনো চিন্তা করো না .. আজ রাতে তোমার ছেলের সব দায়িত্ব আমার .. তুমি ওদের সঙ্গে দরকারি কথাবার্তা বলো .. আমি একে দুদু খাওয়াচ্ছি" মিটিমিটি হেসে বললো বিন্দু।
"কিন্তু তুমি ওকে কি করে .. I mean তোমার তো .." এইটুকু বলেই মাঝপথে লজ্জায় চুপ করে গেলো শ্রীতমা।
"ও হরি .. তুমি ভাবছো আমার বুকে দুধ আসবে কোথা থেকে! আছে গো আছে .. আমার এতগুলো ভাতারের কোনো একজনের কল্যাণে দুধ এসেছে তো" এই বলে নিজের গাউনের চেনটা খুলে পা পর্যন্ত নামিয়ে দিলো বিন্দু।
শুধুমাত্র বিন্দু ছাড়া কেউ যাতে শুনতে না পায় সেইভাবে ফিসফিসিয়ে চোখ কটমট করে হিরেন ঘোষ বললো "মুখের ভাষা সংবরণ কর বোকাচুদি মাগী .. ক্যারেক্টার থেকে বেরিয়ে যাস না"
একটু আগে বলা বিন্দুর এইসব কথার মাথামুণ্ডু কিছুই না বুঝে বড়ো বড়ো চোখ করে কিংকর্তব্যবিমূঢ়ের মতো তাকিয়ে থাকলো শ্রীতমা। তারপর হাত বাড়িয়ে একটা সফট ড্রিঙ্ক চাইলো।
(ক্রমশ)
ভালো লাগলে লাইক, রেপু এবং কমেন্ট পাবো .. এটুকুই আশা