Thread Rating:
  • 15 Vote(s) - 3.07 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Thriller রক্তমুখী নীলা (সমাপ্ত)
#45
নীলা পাওয়ার পর ঠাকুরের তেজ দ্বিগুণ হয়ে গেছিলো, সেইসাথে প্রতিপত্তি। মাজননী স্বইচ্ছায় ঠাকুরের সাথে বিবাহ করলেন। 
এই নীলার কথা ঠাকুর, মাজননী আর আমি ছাড়া কেউ জানলো না।

এরপর কেটে গেছে বহুবছর, নেপালের কাঠমান্ডুতে অবস্থিত বাগমতী নদীর তীরে আমরা তখন স্থায়ীভাবে রয়েছি।
ঠাকুরের দুই ছেলে বেশ বড় হয়ে উঠেছে ততদিনে। দুই ছেলে দুরকমের হয়েছে বড়টি যেমন শান্ত ছোটটি তেমনি দুরন্ত। সবাই ভেবেছিলো বড়ো হলে ঠিক হয়ে যাবে কিন্তু ঠিক আর হলোনা। একদিন একটি কাজের মেয়ের সাথে অসভ্যতামি করলো। মেয়েটি আত্মহত্যা করলো। ঠাকুর যতই রাশভারী হোকনা কেন দুই ছেলেকে প্রাণের থেকেও বেশি ভালোবাসতেন। ছোট ছেলের সব অন্যায় এতদিন হাসিমুখে সহ্য করলেও আজ আর পারলোনা। পুলিশের হাতে তুলে দিলেন ছেলেকে। দশ বছরের জেল হয়ে গেলো ছোটছেলের।

এদিকে বড় ছেলে পড়াশোনায় ভীষন ভালো ঠাকুর তাকে বিলেতে পড়বার জন্য পাঠিয়ে দিলেন। পাঁচ বছর বাদে ফিরে নিজের ভালোবাসার কথা বাবা মাকে বললেন। ঠাকুর মাজননী খুশি মনে সব মেনে নিয়ে ধুমধাম করে বড় ছেলের বিয়ে দিয়ে দিলেন। 

এর ঠিক দুবছর পরের কথা।

কিছুদিন হলো ছোটছেলে জেল থেকে ফিরেছে। অনেক শান্ত হয়ে গেছে সে, সবাই ভাবলো অনুশোচনায় নিশ্চয়ই অনেক বদলে গেছে। কিন্তু সেটা যে কতবড় ভুল....
কিছুদিন পর থেকেই তার দৌরাত্ম শুরু হলো। রাতদিন ঠাকুরের কানের কাছে সম্পত্তির ভাগের জন্য বলতে শুরু করেছে। ঠাকুর কিন্তু একটুও দমলেন না। বললেন - বাড়ি ছেড়ে চলে যাও তবু এখন বাড়ির ভাগ পাবে না।

কিন্তু এসবের মধ্যে সুখের খবরও ছিলো......
পৃথিবীতে একটি নতুন জীবন আসতে চলেছে আর বেশিক্ষণ বাকি নেই। সবাই খুশিতে মত্ত। কখন কান্নার আওয়াজ শুনতে পাওয়া যাবে। ঠাকুর বাইরের বারান্দায় আরামকেদারায় বসে আছেন আমি তার পায়ের কাছে বসে তামাকে আগুন দিচ্ছি। 
-- মোক্তার। হঠাৎ ঠাকুরের ডাকে তার দিকে তাকিয়ে দেখি অবাক হয়ে আঙটির দিকে তাকিয়ে আছেন তিনি আর সেই মুহুর্তেই ভিতর থেকে বাচ্চার কান্না শোনা গেলো। খুশিতে ঝলমল করে উঠলো ঠাকুরের মুখ। আঙটির দিকে তাকিয়ে খেয়াল করলাম সেই লাল আভা অদৃশ্য হয়ে গেছে।


তারপর দশ বছর কেটে গেছে। 
ঠাকুর শয্যাশায়ী, শরীর বিছানার সাথে মিশে গেছে। আর কিছুটা সময়ই বোধহয় বাকি আছে। 
শেষের কয়েকটা বছর ঠাকুরের আদেশে এই দুর্গাপুরে আনা হয় তাকে। এই বাড়িতেই উনি ছিলেন। 
একদিন ঠাকুর সবাইকে কাছে ডাকলেন সম্পত্তির ব্যাপারে সবাইকে সবটা বুঝিয়ে দিলেন ছোট ছেলে যে তাতে খুশি হয়নি তাতে বেশ বুঝতে পেরেছিলেন। সবাইকে বেরিয়ে যেতে বলে শুধু আমায় আর মাজননীকে ঘরে থাকতে বললেন। আঙটির ব্যাপারে কঠোর কয়েকটা নির্দেশ দিলেন। 
ভোররাতের দিকে ঠাকুর আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। 


হাউ হাউ করে কেঁদে উঠলেন বুড়ো মোক্তার। বাবা এগিয়ে এলেন কাছে আমার কাঁধে হাত রেখে বলতে লাগলেন - তারপর আমরা মাকে নিয়ে কাঠমান্ডু ফিরে গেছিলাম। বাবা মারা যাবার পর ভাইও কোথায় চলে যায়। 
বেশ কিছুদিন পরে হঠাৎই একদিন একটা চিঠি পেলাম ভাই লিখছে "ওই নীলা ওর চাই"। আমি কিছুই বুঝতে পারিনি। মাকে জানালাম। মা শুনে মুখে কিছু না বললেও বেশ বিচলিত হয়েছেন বুঝতে পারলাম। আমি আর জোরাজুরি করলাম না। বেশ কিছুদিন পর আমি তোকে নিয়ে একটু বাজারে গেছিলাম ফিরে এসে দেখি সমস্ত ঘর লন্ডভন্ড তোর মায়ের মাথা ফেটে গেছে তোর ঠাকুমা অজ্ঞান হয়ে গেছে। সেবা শুশ্রুষার পর যখন জ্ঞান ফিরলো তখন ঠাকুমার আয়ু প্রায় শেষ হয়ে এসেছে অতি কষ্টে জড়ানো গলায় শুধু বললো পালিয়ে যা। নীলা যেন কোনমতেই তোর ভাইয়ের হাতে না যায়। 
মা চলে যাবার পর আমরা সোজা দুর্গাপুরে চলে আসি। মোক্তারকে সবটা খুলে বলি। উনি আমাদের খুলে বলেন নীলার ব্যাপারে। ওনার পরামর্শেই আমরা তোকে নিয়ে কোলকাতায় চলে যাই। 


সবটা বুঝতে পেরেছিলাম শুধু একটি জিনিস ছাড়া হঠাৎ আমাকেই কেন মারতে চাইছেন আমার নিজের কাকা। নীলার সঙ্গে আমার সম্পর্ক জড়িয়ে থাকলেও আমি তো জানিনা নীলা কোথায় তাহলে আমায় মারার চেষ্টার অর্থ কি ?
[+] 3 users Like HASIR RAJA 19's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: রক্তমুখী নীলা - by HASIR RAJA 19 - 01-06-2021, 10:52 PM



Users browsing this thread: 8 Guest(s)