29-05-2021, 09:54 PM
সেদিন এর পর থেকে গাব্বুর সাথে আমার আর তেমন সম্পর্ক নেই । আমি নিজেই সম্পর্ক ছিন্ন করে দিয়েছি , গাব্বু কে দেখলেই আমার মরজিনার কথা মনে পরে । আর নিজেকে ছোট মনে হয় ওই স্রুজ এর সামনে । গাব্বু অনেক চেষ্টা করেছে আমাকে বোঝানোর , অনেক ক্ষমা চেয়েছে , কিন্তু আমি গাব্বু কে আর পাত্তা দেই না । আসলে গাব্বু কে দেখে আমি মনে মনে একটু শান্তি পেতাম আগে , মনে হতো গাব্বু আমার চেয়ে দুর্ভাগা , কিন্তু ওই মরজিনা আমার শান্তি কেড়ে নিয়েছে ।
আবার আমি একা হয়ে গেলাম , সাধারন ভাবে আমার দিন জাপন হতে লাগলো । ধিরে ধিরে লেখা পড়ায় ও মন বসতে সুর করলো আমার । এর মাঝে একদিন এক ঘটনা ঘটলো , মনি বুড়ো এসে হাজির হলো আমাদের বাড়ি , সাথে ছোট মামা । আব্বু তখন বাড়ি ছিলো না । আর গরম এর ছুটি চলছিলো বলে আমি বাড়ি ছিলাম ।
আমার সৎ মা নীলা দরজা খুলে দুজন অপরিচিত লোক দেখে একটু ঘাবড়ে গেলো । আমি তখন ড্রইং রুমেই বসে ছিলাম । আমি আমার সৎ মা কে বলতে শুনলাম জিজ্ঞাস করছে ওনারা কার কাছে এসেছে , তখনি আমি মনি বুড়োর গম্ভির কণ্ঠ শুনতে পেলাম
__ আমারা অপুর কাছে এসেছি , ওর বাবা জানে আমারা আসব , আমারা অপু কে নিয়ে যেতে এসেছি , ও কি তৈরি আছে ?
আমি প্রচণ্ড আবেগ তারিত হয়ে গেলাম , প্রচণ্ড রাগ এসে যেন আমাকে আঁকড়ে ধরলো । দৌরে নিজের ঘরে চলে গেলাম আমি। রাগে আমার পুরো শরীর কাঁপতে লাগলো । মনে মনে ঠিক করলাম আমি যাবো না ওদের সাথে আমি এখানেই ভালো আছি , দরকার নেই ওদের এই দয়ার । নিজের ঘর থেকেই আমি আমার সৎ মায়ের কথা শুনতে পেলাম ,
__ কিন্তু অপুর বাবা তো এমন কোন কথা আমায় বলেনি ,
তখন বুড়ো বলল
__ আপনি ফোন করে জিজ্ঞাস করে নিন ?
কিছুক্ষন পর আমার সৎ মা নীলা আমার ঘরে এলো , এসে বলল
__ অপু তোমাকে নিতে তোমার মামা আর একজন নানা এসেছে , তৈরি হয়ে নাও ? এটা আমার সৎ মায়ের মোলায়েম স্বর, যখন আব্বু অথবা অন্য কেউ সামনে থাকে তখন উনি এমন স্বরে কথা বলেন ।
__ আপনি গিয়ে ওদের বলেন আমি যাবো না ওদের সাথে , আমি সৎ মা নীলা কে উদ্দেশ্য করে বলাম । আমার কথা শুনে আমার সৎ মা একটু অবাক ই হলেন , সেই সাথে মনে হয় একটু রাগ ও । তবে আমি আপনাদের আগেই বলেছি ইনি অনেক চতুর , নিজের ইমসান লুকানোর এক আশ্চর্য ক্ষমতা আছে ইনার । তাই মাত্র কয়েক সেকেন্ড এর জন্য ওনার ভ্রূ জুগল কুঞ্চিত হয়ে উঠলেও দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় চলে এলো । উনি স্মিত হেঁসে আমার কাছে চলে এলেন । আমার মাথায় হাত বুলিয়ে খুব নরম গলায় আদর মাখা কন্ঠে বললেন
__ কেন যাবে না অপু? তোমার মায়ের সাথে দেখা হবে ওখানে গেলে , তুমি কি তোমার মায়ের সাথে দেখা করতে চাও না ?
মহিলার কথা গুলো আমার জেদ আরও বাড়িয়ে দিলো , আমি বললাম
__ না চাই না , ওদের বলেন চলে যেতে
__ ছিঃ অপু এমন করে না , তুমি এখন বড় হয়েছো এখন বাচ্চা দের মতো করলে চলে । কতদিন তোমার মায়ের সাথে তোমার দেখা হয় না , এছাড়া এখন তো তোমার কলেজ ও বন্ধ , প্রায় ১১ দিনের ছুটি পাচ্ছ । যাও এই সময়টা মায়ের কাছে থেকে আসো ।
আমার সৎ মা আমাকে নানা ভাবে বোঝাতে লাগলেন , আমার ও যে যেতে ইচ্ছা করছে না এমন নয় , কিন্তু একটা জেদ এসে জেঁকে বসেছে আমার ঘাড়ে , সেটা কিছতেই নামতে চাচ্ছে না । বার বার সুধু মনে হচ্ছে এতদিন পর আমার কথা মনে পড়েছে তার । কিন্ত আমার সৎ মা কে ধন্যবাদ দিতেই হবে , এতদিন পর ওনার কাছথেকে এমন মা সুলভ আচরন পেয়ে আমার মনটা আরও ব্যাকুল হয়ে উঠলো , শেষে আমি যেতে রাজি হলাম ।
নিজের ব্যাগ গুছিয়ে নিলাম নিজেই । খব বেশি কিছু নেইনি কটা জামা কাপড় নিয়ে নিলাম সুধু । সাথে কিছু পাঠ্য বই , এতদিনের পড়াশুনার যে ক্ষতি হয়েছে সেটা পুষিয়ে নেয়া যাবে এই ছুটিতে । ছোট মামা আর মনি বুড়ো কে ড্রইং রুমেই বসিয়ে রাখা হয়েছে । আমি যখন আমার ব্যাগ হাতে বেড়িয়ে এলাম , তখন ছোট মামা আমাকে জড়িয়ে ধরলেন । অনেক কষ্টে নিজের কান্না থামিয়ে রাখলাম আমি , কারন আমি কাউকে আমার মনের ব্যাপারটা দেখাতে চাই না ।
বাড়ি থেকে বেরোতেই ছোট মামা বলতে শুরু করলো
__ কি কষ্টটাই হলো অপু তোকে......। কিন্তু ছোট মামার কথা শেষ করতে দিলো না মনি বুড়ো । ছোট মামা কে মাঝ পথে থামিয়ে দিয়ে বলল
__ আহা এখন এসব কথা রাখো তো , চলো কোথাও গিয়ে কিছু খেয়ে নেই ।
আমি বুঝলাম এদের এখনো খাওয়া হয়নি । আমার অবশ্য খাওয়া হয়ে গেছে । দ্রুত খাওয়া সারলেন ছোট মামা আর বুড়ো । বুড়ো এমনিতে বাইরের খাওয়া খায় না । তাই দুটো কলা আর ডাবের পানি দিয়ে শেষ করলেন খাওয়া । দুপুর তিনটায় আমরা বাসে উঠলাম । মোট পাঁচ ঘণ্টার বাঁশ জার্নি , রাত আট টায় গিয়ে নামলাম নানা বাড়ি । পথে আমি একা এক সিটে বসেছি , আর ছোট মামা আর বুড়ো দুজনে এক সাথে । আমি ইচ্ছা করেই বসেছি এভাবে । যেন কারো সাথে বেশি কথা বলতে না হয় । পুরোটা রাস্তা জুড়ে আমার মনে রাগ আনন্দ আর ভয় এই টিনের মিশেলে এক অবাস্তব অনভুতি তাড়া করে ফিরেছে ।
রাগ এই জন্য যে , আমার আম্মু আমাকে এতদিন পর নিজের কাছে নিয়ে যাচ্ছে । আমি কেমন করে থেকেছি , কি খেয়েছি , আব্বু আমার সাথে কেমন আচরন করেছে সেটার কোন খবর ই রাখেন নি । হয়ত নিজের নতুন জীবন নিয়ে আনন্দে এতটাই আত্মহারা হয়ে ছিলো যে তার যে একটা ছেলে আছে সেটাই ভুলে গেছে । অবশ্য নানা বাড়ি যত কাছা কাছি এসেছি রাগ ততো কমেছে । সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বেরেছে ভয় আর আনন্দ ।
যদিও আমি মনে মনে ভাবি যে আমার আম্মু নিজের সুখ সান্তির জন্য আমাকে ত্যাগ করেছে । কিন্তু মনের গহিন কোনের একটা ছোট্ট জায়গা সেটা মেনে নেয়ে না । সেখানে একটা দৃঢ় বিশ্বাস বাসা বেধে আছে যে আমার আম্মু নিশ্চয়ই ইচ্ছা করে এমন করেনি । তার নিশ্চয়ই অন বাধা ছিলো। আর সেই জন্য ই ভয় হচ্ছে , যদি আম্মু কে দেখার পর আমার সেই শেষ বিশ্বাস টুকু ভেঙ্গে যায় । যদি গিয়ে দেখি আমি যা ভেবেছি তাই সত্যি । আর যতই রাগ হোক আর ভয় হোক , এতদিন পর নিজের আম্মু কে দেখার আনন্দ তো হবেই ।
মনি বুড়ো আর নানা বাড়ি ঢুকল না , সরাসরি নিজের বাড়ি চলে গেলো । আমি আর ছোট মামা এসে ঢুকলাম বাড়ির ভেতর , বাড়িতে ঢুকেই হাঁক দিলো ছোট মামা । অমনি দৌরে এলো নানিজান আর আমার দুই মামি । নানিজান এসেই আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলেন । বার বার আমার গালে কপালে চুমু খেতে লাগলেন । যদিও আমি পানের গন্ধ সহ্য করতে পারনি না , তবুও আজ নানিজান এর চুমু গুলি আমাকে প্রবল ভাবে আবেগ আপ্লত করে ফেলল । কয়েক ফোটা চোখের পানি আমার গালের উপর ও অনুভব করলাম । সবাই মিলে আমাকে বাড়ির ভেতর নিয়ে গেলো । এমন কি আমার দুই মামির চোখেও জল দেখলাম আমি । কিন্তু যাকে খুজছি তাকে কোথাও দেখলাম না । বার বার এদিক ওদিক তাকাচ্ছি কোথাও দেখতে পাচ্ছি না আম্মু কে । বেশ অবাক লাগলো আমার এমন উল্টো দৃশ্য দেখে । ভেবেছিলাম আম্মু কেই সবার আগে দেখতে পাবো , আমার জন্য ব্যাকুল হয়ে বারান্দায় দাড়িয়ে থাকবে । অথচ এখানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ উল্টো, আমাকে দেখে নানিজান খুশিতে আত্মহারা , মামীরা চোখের জল ফেলছে , আর যার সবচেয়ে বেশি খুসি হওয়ার কথা তাকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না ।
ইচ্ছা হলো একবার জিজ্ঞাস করি নানিজান কে , কিন্ত পরক্ষনেই সেই চিন্তা বাদ দিলাম । মনে মনে ভাবলাম আমার যে ভয় ছিলো সেটাই সত্যি হয়েছে । ইচ্ছা হলো এক্ষনি বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যাই , কিন্তু সেটা পারলাম না । এতদুর এসে ওই মুখটা একবার না দেখে চলে যেতে মন শ্বায় দিলো না । একবার দেখে কাল সকালেই চলে যাবো বলে সিধান্ত নিলাম । আর সাথে এও সিধান্ত নিলাম যে আমাকে পৌঁছে দেয়ার জন্য কারো যাওয়া লাগবে না আমার সাথে । আমি একাই চলে যাবো , এখন আমাকে আর ছোট হয়ে থাকলে চলবে না , যার বাবা মা থেকেও নেই তাকে ছোট হয়ে থাকা মানায় না ।
বাথরুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে এসে দেখি আমার জন্য খাবার বেড়ে রাখা আছে । নানান পদের খাবার সাজিয়ে রাখা আছে , নানিজান সেই খাবার এর সামনে বসে আছে । আমাকে দেখেই হাঁসি মুখে ডেকে পাশে বসালো । কিন্তু আমার খাবার রুচি একদম নেই , এটা সেটা আমার পাতে তুলে দেয়া হচ্ছে ,আর এতদিন আমি কি খেয়েছি না খেয়েছি তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে , হাহুতাশ করা হচ্ছে । কিন্তু যার এসব সবচেয়ে বেশি করার কথা তাকে কোথাও দেখতে পাচ্ছি না । এছাড়া এতক্ষণে আমার খেয়াল হলো রাজু আর মতিন কেও দেখেতে পাইনি আমি । আমার মনের ভেতর একটা সম্ভাবনা উঁকি দিলো । খাবার এম্নিতেও আমার গলা দিয়ে নামছিলো না , আর সেই সম্ভাবনার কথা মনে হএতেই আমার গলা যেন শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেলো । আমি দ্রুত উঠে পড়লাম , নানিজান অবশ্য অনেক চেষ্টা করলো আমাকে আরও খাওয়ানোর জন্য কিন্তু সেটা বৃথাই গেলো ।
হাত ধুয়ে আমি বারান্দায় এসে বসলাম , বেশ গরম পড়েছে আজ , এখানে হালকা বাতাস আছে । হালকা বাতাসে বসে চিন্তা ভাবনা করতে লাগলাম । আজ মনি বুড়ো কে দেখে খুব রোগা আর মন মড়া মনে হয়েছে । আমি প্রথমে নিয়ে তেমন ভাবিনি , কারন আমার রাগ ওর উপর ও ছিলো । কিন্তু এখন ব্যাপারটা আমাকে ভাবিয়ে তুলছে । মনি বুড়োর এমন মন মড়া হয়ে থাকার কারন কি ? বুড়ো কি দ্বিতীয়বার ছেঁকা খেয়েছে আমার আম্মুর কাছে । আম্মু কি বুড়ো কে আঙুল চুষিয়ে রাজু মতিন এর মতো জোয়ান ছেলেদের পাল্লায় পড়েছে ?
আমি বলছি না যে রাজুর মন কামনা পূর্ণ হয়ে গেছে , কিন্তু যদি আম্মু সত্যি ওদের সাথে বেশি মেলামেশা করে থাকে তবে রাজুর ইচ্ছা পুরন হতে বেশি সময় লাগবে না । নাকি ইতিমধ্যে হয়ে গেছে ?
এক দিকে মনি বুড়ো ছেঁকা খাওয়ায় আমার আনন্দ হচ্ছে অন্যদিকে রেনু খালার কথা চিন্তা করে আমার আম্মুর ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা হতে লাগলো আমার । আমি বারান্দায় পায়চারি করতে লাগলো । বার বার ঘড়ি দেখছি আমি , প্রায় সারে নটা বেজে গেছে কিন্তু আম্মুর বাড়ি ফেরার লক্ষন নেই । আম্মু রাজু মতিন এর সাথে কি কি করতে পারে সেরকম নানা বীভৎস দৃশ্য আমার চোখের সামনে ভেসে উঠছে আর আমি এই গরমে শিউড়ে শিউড়ে উঠছি । এর মাঝে নানাজান বাড়ি এলো । আমার সাথে কিছুক্ষন কথা বলে নিজের ঘরে চলে গেলেন উনি । আমি সুধু হু হাঁ করে উত্তর দিয়ে গেছি ওনার কথার।
নানিজান ও একবার আমার খোঁজ নিলেন , আমাকে চিন্তিত দেখে বললেন
__ মা এখনো এলো না বলে রাগ করেছিস ? তোর মা রাজু মতিন এর সাথে শহরে গেছে ।
আমি আর এ বিষয়ে কথা বলতে আগ্রহি হলাম না বলে নানিজান চুপ করে রইল তবে আমাকে ছেড়ে চলে গেলো না । বারান্দায় বসে রইলো একটা চেয়ারে । নানিজান এর এমন আচরণে আমার রাগ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছিলো । নানিজান এর তো এতো উতলা ওয়্যার কথা নয় আমার জন্য । যার এমন করার কথা সে তো আমি আসবো জেনেও রাজু মতিন এর সাথে শহরে চলে গেছে ।
একটু পর বড় মামা মেঝ মামা এলো , ওনাদের সাথেও হু হাঁ করে কথা শেষ করলাম আমি । নানিজানবার বার আমাকে রুমের ভেতরে আসতে বলছেন , কিন্তু আমি কিছুতেই রুমের ভেতরে যেতে চাই না । আমি চাই ওই মহিলার সাথে চোখে চোখ রেখে তাকাতে যখন সে ফুর্তি করে ফিরে আসবে । আমি দেখতে চাই সে কতটা ফুর্তিবাজ হয়ে উঠছে । আমাকে যেন দেখা না যায় সে জন্য আমি বারান্দার লাইট অফ করে দিয়েছি । কিন্তু উঠানের লাইট জ্বালানো আছে বলে আমি বারান্দা থেকে সব দেখতে পাচ্ছি ।
অবশেষে সেই সময় চলে এলো , অনেক দূর থেকেই হাসির শব্দ ভেসে আসছে , হ্যাঁ এই হাঁসি আমার খুব পরিচিত , রিনিঝিনি চুরি বাজার মতো হাসির শব্দ , যে শব্দ শুনলে আমার মনটা আনন্দে ভরে উঠত । যে হাসির কাছা কাছি থাকলে আমার মনে হতো আমি নিরাপদ আছি। আজ সে হাসির শব্দ শুনে শরীরে জ্বালাপোড়া উঠে যাচ্ছে । সাথে রাজু মতিন এর গলার শব্দ ও শুনতে পেলাম । তার একটু পর ই দেখতে পেলাম তাকে , যাকে দেখার জন্য এই কয়মাস আমার মনটা সারাক্ষন উতলা হয়ে থেকেছে । শত অভিমান ভুলে আমি চলে এসেছি এতো দূর । সেই মহিলা হেঁসে হেঁসে কি যেন বলছে আর রাজুর পিঠে দুষ্টুমি করে চড় মারছে ।
একটু যেন রোগা হয়েছে বলে মনে হলো , হ্যাঁ তা তো হবেই , জোয়ান ছেলেদের মন রাঙ্গাতে হবে না ।
আমার গল্পের পাঠক সংখ্যা খুব বেশি নয় , অনেক পুরাতন পাঠক হারিয়েছি আমার দীর্ঘসূত্রতার জন্য , যারা এখনো টিকে আছেন তাদের কে অনুরধ করবো , আপনারা একটু ডিটেইল আলোচনা করেবনে প্রতিটা আপডেট এর । যদিও আমি জানি এই ধরনের অনুরধ করার অবস্থানে আমি নেই । তবুও করলাম
আবার আমি একা হয়ে গেলাম , সাধারন ভাবে আমার দিন জাপন হতে লাগলো । ধিরে ধিরে লেখা পড়ায় ও মন বসতে সুর করলো আমার । এর মাঝে একদিন এক ঘটনা ঘটলো , মনি বুড়ো এসে হাজির হলো আমাদের বাড়ি , সাথে ছোট মামা । আব্বু তখন বাড়ি ছিলো না । আর গরম এর ছুটি চলছিলো বলে আমি বাড়ি ছিলাম ।
আমার সৎ মা নীলা দরজা খুলে দুজন অপরিচিত লোক দেখে একটু ঘাবড়ে গেলো । আমি তখন ড্রইং রুমেই বসে ছিলাম । আমি আমার সৎ মা কে বলতে শুনলাম জিজ্ঞাস করছে ওনারা কার কাছে এসেছে , তখনি আমি মনি বুড়োর গম্ভির কণ্ঠ শুনতে পেলাম
__ আমারা অপুর কাছে এসেছি , ওর বাবা জানে আমারা আসব , আমারা অপু কে নিয়ে যেতে এসেছি , ও কি তৈরি আছে ?
আমি প্রচণ্ড আবেগ তারিত হয়ে গেলাম , প্রচণ্ড রাগ এসে যেন আমাকে আঁকড়ে ধরলো । দৌরে নিজের ঘরে চলে গেলাম আমি। রাগে আমার পুরো শরীর কাঁপতে লাগলো । মনে মনে ঠিক করলাম আমি যাবো না ওদের সাথে আমি এখানেই ভালো আছি , দরকার নেই ওদের এই দয়ার । নিজের ঘর থেকেই আমি আমার সৎ মায়ের কথা শুনতে পেলাম ,
__ কিন্তু অপুর বাবা তো এমন কোন কথা আমায় বলেনি ,
তখন বুড়ো বলল
__ আপনি ফোন করে জিজ্ঞাস করে নিন ?
কিছুক্ষন পর আমার সৎ মা নীলা আমার ঘরে এলো , এসে বলল
__ অপু তোমাকে নিতে তোমার মামা আর একজন নানা এসেছে , তৈরি হয়ে নাও ? এটা আমার সৎ মায়ের মোলায়েম স্বর, যখন আব্বু অথবা অন্য কেউ সামনে থাকে তখন উনি এমন স্বরে কথা বলেন ।
__ আপনি গিয়ে ওদের বলেন আমি যাবো না ওদের সাথে , আমি সৎ মা নীলা কে উদ্দেশ্য করে বলাম । আমার কথা শুনে আমার সৎ মা একটু অবাক ই হলেন , সেই সাথে মনে হয় একটু রাগ ও । তবে আমি আপনাদের আগেই বলেছি ইনি অনেক চতুর , নিজের ইমসান লুকানোর এক আশ্চর্য ক্ষমতা আছে ইনার । তাই মাত্র কয়েক সেকেন্ড এর জন্য ওনার ভ্রূ জুগল কুঞ্চিত হয়ে উঠলেও দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় চলে এলো । উনি স্মিত হেঁসে আমার কাছে চলে এলেন । আমার মাথায় হাত বুলিয়ে খুব নরম গলায় আদর মাখা কন্ঠে বললেন
__ কেন যাবে না অপু? তোমার মায়ের সাথে দেখা হবে ওখানে গেলে , তুমি কি তোমার মায়ের সাথে দেখা করতে চাও না ?
মহিলার কথা গুলো আমার জেদ আরও বাড়িয়ে দিলো , আমি বললাম
__ না চাই না , ওদের বলেন চলে যেতে
__ ছিঃ অপু এমন করে না , তুমি এখন বড় হয়েছো এখন বাচ্চা দের মতো করলে চলে । কতদিন তোমার মায়ের সাথে তোমার দেখা হয় না , এছাড়া এখন তো তোমার কলেজ ও বন্ধ , প্রায় ১১ দিনের ছুটি পাচ্ছ । যাও এই সময়টা মায়ের কাছে থেকে আসো ।
আমার সৎ মা আমাকে নানা ভাবে বোঝাতে লাগলেন , আমার ও যে যেতে ইচ্ছা করছে না এমন নয় , কিন্তু একটা জেদ এসে জেঁকে বসেছে আমার ঘাড়ে , সেটা কিছতেই নামতে চাচ্ছে না । বার বার সুধু মনে হচ্ছে এতদিন পর আমার কথা মনে পড়েছে তার । কিন্ত আমার সৎ মা কে ধন্যবাদ দিতেই হবে , এতদিন পর ওনার কাছথেকে এমন মা সুলভ আচরন পেয়ে আমার মনটা আরও ব্যাকুল হয়ে উঠলো , শেষে আমি যেতে রাজি হলাম ।
নিজের ব্যাগ গুছিয়ে নিলাম নিজেই । খব বেশি কিছু নেইনি কটা জামা কাপড় নিয়ে নিলাম সুধু । সাথে কিছু পাঠ্য বই , এতদিনের পড়াশুনার যে ক্ষতি হয়েছে সেটা পুষিয়ে নেয়া যাবে এই ছুটিতে । ছোট মামা আর মনি বুড়ো কে ড্রইং রুমেই বসিয়ে রাখা হয়েছে । আমি যখন আমার ব্যাগ হাতে বেড়িয়ে এলাম , তখন ছোট মামা আমাকে জড়িয়ে ধরলেন । অনেক কষ্টে নিজের কান্না থামিয়ে রাখলাম আমি , কারন আমি কাউকে আমার মনের ব্যাপারটা দেখাতে চাই না ।
বাড়ি থেকে বেরোতেই ছোট মামা বলতে শুরু করলো
__ কি কষ্টটাই হলো অপু তোকে......। কিন্তু ছোট মামার কথা শেষ করতে দিলো না মনি বুড়ো । ছোট মামা কে মাঝ পথে থামিয়ে দিয়ে বলল
__ আহা এখন এসব কথা রাখো তো , চলো কোথাও গিয়ে কিছু খেয়ে নেই ।
আমি বুঝলাম এদের এখনো খাওয়া হয়নি । আমার অবশ্য খাওয়া হয়ে গেছে । দ্রুত খাওয়া সারলেন ছোট মামা আর বুড়ো । বুড়ো এমনিতে বাইরের খাওয়া খায় না । তাই দুটো কলা আর ডাবের পানি দিয়ে শেষ করলেন খাওয়া । দুপুর তিনটায় আমরা বাসে উঠলাম । মোট পাঁচ ঘণ্টার বাঁশ জার্নি , রাত আট টায় গিয়ে নামলাম নানা বাড়ি । পথে আমি একা এক সিটে বসেছি , আর ছোট মামা আর বুড়ো দুজনে এক সাথে । আমি ইচ্ছা করেই বসেছি এভাবে । যেন কারো সাথে বেশি কথা বলতে না হয় । পুরোটা রাস্তা জুড়ে আমার মনে রাগ আনন্দ আর ভয় এই টিনের মিশেলে এক অবাস্তব অনভুতি তাড়া করে ফিরেছে ।
রাগ এই জন্য যে , আমার আম্মু আমাকে এতদিন পর নিজের কাছে নিয়ে যাচ্ছে । আমি কেমন করে থেকেছি , কি খেয়েছি , আব্বু আমার সাথে কেমন আচরন করেছে সেটার কোন খবর ই রাখেন নি । হয়ত নিজের নতুন জীবন নিয়ে আনন্দে এতটাই আত্মহারা হয়ে ছিলো যে তার যে একটা ছেলে আছে সেটাই ভুলে গেছে । অবশ্য নানা বাড়ি যত কাছা কাছি এসেছি রাগ ততো কমেছে । সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বেরেছে ভয় আর আনন্দ ।
যদিও আমি মনে মনে ভাবি যে আমার আম্মু নিজের সুখ সান্তির জন্য আমাকে ত্যাগ করেছে । কিন্তু মনের গহিন কোনের একটা ছোট্ট জায়গা সেটা মেনে নেয়ে না । সেখানে একটা দৃঢ় বিশ্বাস বাসা বেধে আছে যে আমার আম্মু নিশ্চয়ই ইচ্ছা করে এমন করেনি । তার নিশ্চয়ই অন বাধা ছিলো। আর সেই জন্য ই ভয় হচ্ছে , যদি আম্মু কে দেখার পর আমার সেই শেষ বিশ্বাস টুকু ভেঙ্গে যায় । যদি গিয়ে দেখি আমি যা ভেবেছি তাই সত্যি । আর যতই রাগ হোক আর ভয় হোক , এতদিন পর নিজের আম্মু কে দেখার আনন্দ তো হবেই ।
মনি বুড়ো আর নানা বাড়ি ঢুকল না , সরাসরি নিজের বাড়ি চলে গেলো । আমি আর ছোট মামা এসে ঢুকলাম বাড়ির ভেতর , বাড়িতে ঢুকেই হাঁক দিলো ছোট মামা । অমনি দৌরে এলো নানিজান আর আমার দুই মামি । নানিজান এসেই আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলেন । বার বার আমার গালে কপালে চুমু খেতে লাগলেন । যদিও আমি পানের গন্ধ সহ্য করতে পারনি না , তবুও আজ নানিজান এর চুমু গুলি আমাকে প্রবল ভাবে আবেগ আপ্লত করে ফেলল । কয়েক ফোটা চোখের পানি আমার গালের উপর ও অনুভব করলাম । সবাই মিলে আমাকে বাড়ির ভেতর নিয়ে গেলো । এমন কি আমার দুই মামির চোখেও জল দেখলাম আমি । কিন্তু যাকে খুজছি তাকে কোথাও দেখলাম না । বার বার এদিক ওদিক তাকাচ্ছি কোথাও দেখতে পাচ্ছি না আম্মু কে । বেশ অবাক লাগলো আমার এমন উল্টো দৃশ্য দেখে । ভেবেছিলাম আম্মু কেই সবার আগে দেখতে পাবো , আমার জন্য ব্যাকুল হয়ে বারান্দায় দাড়িয়ে থাকবে । অথচ এখানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ উল্টো, আমাকে দেখে নানিজান খুশিতে আত্মহারা , মামীরা চোখের জল ফেলছে , আর যার সবচেয়ে বেশি খুসি হওয়ার কথা তাকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না ।
ইচ্ছা হলো একবার জিজ্ঞাস করি নানিজান কে , কিন্ত পরক্ষনেই সেই চিন্তা বাদ দিলাম । মনে মনে ভাবলাম আমার যে ভয় ছিলো সেটাই সত্যি হয়েছে । ইচ্ছা হলো এক্ষনি বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যাই , কিন্তু সেটা পারলাম না । এতদুর এসে ওই মুখটা একবার না দেখে চলে যেতে মন শ্বায় দিলো না । একবার দেখে কাল সকালেই চলে যাবো বলে সিধান্ত নিলাম । আর সাথে এও সিধান্ত নিলাম যে আমাকে পৌঁছে দেয়ার জন্য কারো যাওয়া লাগবে না আমার সাথে । আমি একাই চলে যাবো , এখন আমাকে আর ছোট হয়ে থাকলে চলবে না , যার বাবা মা থেকেও নেই তাকে ছোট হয়ে থাকা মানায় না ।
বাথরুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে এসে দেখি আমার জন্য খাবার বেড়ে রাখা আছে । নানান পদের খাবার সাজিয়ে রাখা আছে , নানিজান সেই খাবার এর সামনে বসে আছে । আমাকে দেখেই হাঁসি মুখে ডেকে পাশে বসালো । কিন্তু আমার খাবার রুচি একদম নেই , এটা সেটা আমার পাতে তুলে দেয়া হচ্ছে ,আর এতদিন আমি কি খেয়েছি না খেয়েছি তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে , হাহুতাশ করা হচ্ছে । কিন্তু যার এসব সবচেয়ে বেশি করার কথা তাকে কোথাও দেখতে পাচ্ছি না । এছাড়া এতক্ষণে আমার খেয়াল হলো রাজু আর মতিন কেও দেখেতে পাইনি আমি । আমার মনের ভেতর একটা সম্ভাবনা উঁকি দিলো । খাবার এম্নিতেও আমার গলা দিয়ে নামছিলো না , আর সেই সম্ভাবনার কথা মনে হএতেই আমার গলা যেন শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেলো । আমি দ্রুত উঠে পড়লাম , নানিজান অবশ্য অনেক চেষ্টা করলো আমাকে আরও খাওয়ানোর জন্য কিন্তু সেটা বৃথাই গেলো ।
হাত ধুয়ে আমি বারান্দায় এসে বসলাম , বেশ গরম পড়েছে আজ , এখানে হালকা বাতাস আছে । হালকা বাতাসে বসে চিন্তা ভাবনা করতে লাগলাম । আজ মনি বুড়ো কে দেখে খুব রোগা আর মন মড়া মনে হয়েছে । আমি প্রথমে নিয়ে তেমন ভাবিনি , কারন আমার রাগ ওর উপর ও ছিলো । কিন্তু এখন ব্যাপারটা আমাকে ভাবিয়ে তুলছে । মনি বুড়োর এমন মন মড়া হয়ে থাকার কারন কি ? বুড়ো কি দ্বিতীয়বার ছেঁকা খেয়েছে আমার আম্মুর কাছে । আম্মু কি বুড়ো কে আঙুল চুষিয়ে রাজু মতিন এর মতো জোয়ান ছেলেদের পাল্লায় পড়েছে ?
আমি বলছি না যে রাজুর মন কামনা পূর্ণ হয়ে গেছে , কিন্তু যদি আম্মু সত্যি ওদের সাথে বেশি মেলামেশা করে থাকে তবে রাজুর ইচ্ছা পুরন হতে বেশি সময় লাগবে না । নাকি ইতিমধ্যে হয়ে গেছে ?
এক দিকে মনি বুড়ো ছেঁকা খাওয়ায় আমার আনন্দ হচ্ছে অন্যদিকে রেনু খালার কথা চিন্তা করে আমার আম্মুর ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা হতে লাগলো আমার । আমি বারান্দায় পায়চারি করতে লাগলো । বার বার ঘড়ি দেখছি আমি , প্রায় সারে নটা বেজে গেছে কিন্তু আম্মুর বাড়ি ফেরার লক্ষন নেই । আম্মু রাজু মতিন এর সাথে কি কি করতে পারে সেরকম নানা বীভৎস দৃশ্য আমার চোখের সামনে ভেসে উঠছে আর আমি এই গরমে শিউড়ে শিউড়ে উঠছি । এর মাঝে নানাজান বাড়ি এলো । আমার সাথে কিছুক্ষন কথা বলে নিজের ঘরে চলে গেলেন উনি । আমি সুধু হু হাঁ করে উত্তর দিয়ে গেছি ওনার কথার।
নানিজান ও একবার আমার খোঁজ নিলেন , আমাকে চিন্তিত দেখে বললেন
__ মা এখনো এলো না বলে রাগ করেছিস ? তোর মা রাজু মতিন এর সাথে শহরে গেছে ।
আমি আর এ বিষয়ে কথা বলতে আগ্রহি হলাম না বলে নানিজান চুপ করে রইল তবে আমাকে ছেড়ে চলে গেলো না । বারান্দায় বসে রইলো একটা চেয়ারে । নানিজান এর এমন আচরণে আমার রাগ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছিলো । নানিজান এর তো এতো উতলা ওয়্যার কথা নয় আমার জন্য । যার এমন করার কথা সে তো আমি আসবো জেনেও রাজু মতিন এর সাথে শহরে চলে গেছে ।
একটু পর বড় মামা মেঝ মামা এলো , ওনাদের সাথেও হু হাঁ করে কথা শেষ করলাম আমি । নানিজানবার বার আমাকে রুমের ভেতরে আসতে বলছেন , কিন্তু আমি কিছুতেই রুমের ভেতরে যেতে চাই না । আমি চাই ওই মহিলার সাথে চোখে চোখ রেখে তাকাতে যখন সে ফুর্তি করে ফিরে আসবে । আমি দেখতে চাই সে কতটা ফুর্তিবাজ হয়ে উঠছে । আমাকে যেন দেখা না যায় সে জন্য আমি বারান্দার লাইট অফ করে দিয়েছি । কিন্তু উঠানের লাইট জ্বালানো আছে বলে আমি বারান্দা থেকে সব দেখতে পাচ্ছি ।
অবশেষে সেই সময় চলে এলো , অনেক দূর থেকেই হাসির শব্দ ভেসে আসছে , হ্যাঁ এই হাঁসি আমার খুব পরিচিত , রিনিঝিনি চুরি বাজার মতো হাসির শব্দ , যে শব্দ শুনলে আমার মনটা আনন্দে ভরে উঠত । যে হাসির কাছা কাছি থাকলে আমার মনে হতো আমি নিরাপদ আছি। আজ সে হাসির শব্দ শুনে শরীরে জ্বালাপোড়া উঠে যাচ্ছে । সাথে রাজু মতিন এর গলার শব্দ ও শুনতে পেলাম । তার একটু পর ই দেখতে পেলাম তাকে , যাকে দেখার জন্য এই কয়মাস আমার মনটা সারাক্ষন উতলা হয়ে থেকেছে । শত অভিমান ভুলে আমি চলে এসেছি এতো দূর । সেই মহিলা হেঁসে হেঁসে কি যেন বলছে আর রাজুর পিঠে দুষ্টুমি করে চড় মারছে ।
একটু যেন রোগা হয়েছে বলে মনে হলো , হ্যাঁ তা তো হবেই , জোয়ান ছেলেদের মন রাঙ্গাতে হবে না ।
আমার গল্পের পাঠক সংখ্যা খুব বেশি নয় , অনেক পুরাতন পাঠক হারিয়েছি আমার দীর্ঘসূত্রতার জন্য , যারা এখনো টিকে আছেন তাদের কে অনুরধ করবো , আপনারা একটু ডিটেইল আলোচনা করেবনে প্রতিটা আপডেট এর । যদিও আমি জানি এই ধরনের অনুরধ করার অবস্থানে আমি নেই । তবুও করলাম