23-05-2021, 01:08 PM
(25-12-2020, 03:15 PM)riank55 Wrote:Dada aapni kothay gelen? Doya kore aapnar osonkho gunmugdho pathok er jonno fire aasun ei Blockbuster er notun update niye. Aamra sobai aapnar fire aasar opekkha korchi ekhono.পর্ব ২২
২২ (খ)
“আপনি নিশ্চয়ই জানেন,” শান্তার উদ্দেশ্যে বলছে নাসির সাহেব। “আপনার স্বামী একটা অবৈধ ব্যাবসায় জড়িত। বেবসাটা কি সেটা হয়ত আপনার বেশি জানা নেই। বেবসাটা আসলে হায়দার আলির - যে কিনা আপনার স্বামীর দূর সম্পর্কের মামা হন। তার সাথেই কাজ আরম্ভ করে আমাদের ফয়সাল সাহেব। কি ভুল বললাম!”
ফয়সাল কিছু বলে না। মাথা নিচু করে বসে থাকে। স্ত্রীর সঙ্গে চোখাচোখি হতে পারছে না ফয়সাল। শান্তা বুঝতে পারছে - আজ হয়ত সকল প্রশ্নের উত্তর পেতে চলেছে সে। তাই কৌতূহল নিয়ে তাকিয়ে আছে ও লোকটির দিকে।
“ফয়সাল সাহেবের ব্যবাসা হচ্ছে - আমার মত লোকদের কাছে নারী সাপ্লাই দেয়া... ” নাসির সাহেব বলে বসেন। “আপনি হয়ত আমাকে চেনেন না - কিন্তু ফয়সাল আমাকে ভালো করেই চেনে। আমি একজন শিল্পপতি - একজন রাজনীতিবিদ… বুঝেনই তো - শিল্পপতি রাজনিতীবিদ হওয়া চারটি খানি কথা নয়। অনেক কিছু সামলাতে হয় - আবার পাবলিক এর চোখে ধুলাও দিতে হয়। নিজের ইমেজটা নষ্ট করা চলে না… তাই বেঢ়াতে যখন যাই আমরা, তখন ফয়সাল সাহেবের মত লোকগুলো আমাদের খুজে নেয়। আমাদের জন্য বিনোদন এর বেবস্থা করে দেয়। হোটেল বলেন, বাসা বলেন - সব খানে আপনার মত সুন্দরী মেয়েরা টাকার লোভে চলে আসে আমাদের হাতে। ব্যাবসা ভালোই - হায়দার সাহেবকেও সম্মান করি আমরা তাই। কিন্তু আপনার স্বামী নতুন পন্থা এনেছেন এই ব্যাবসাতে। হোটেল ঘরে বেশ্যাদের সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্ত গুলো গোপন কেমেরায় ছবি তুলে আমাদের ব্লাকমেইল করার ধান্ধা। টু ওয়ে মিরর এর ওপাশ থেকে তুলতে থাকে ছবি আর এপাশে আমরা না জেনে বেশ্যার শরীরে হামলে পড়ি। তারপর মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হয়...”
“আমি আপনাকে বলেছি...” ফয়সাল বাধ সাদে। “আমি ওসব ছেড়ে দিয়েছি। আপনার লোক ওদিন আমাকে ধরতেই আমি সব কিছু পুরিয়ে ফেলেছি। আমি সত্যি বলছি...”
“তাহলে দুদিন আগেও আমার কাছে টাকা চাওা হল কেন ফয়সাল সাহেব?” লোকটির মুখ কঠিন হয়ে উঠে। “কেন আমার অফিসে পাঠানো হল ওই ছবি গুলো? কে করল কাজটা?”
“আমি বলছি তো আমি না - আমি জানি না...” মাথা নাড়ে ফয়সাল। অনেক কষ্টে যেন চোখ তুলে তাকায় শান্তার দিকে। “শান্তা - তুমিই বল - আমি পুরিয়ে ফেলেছি সব… আমি কিছু জানি না...”
শান্তা উত্তর করে না। আবছা ভাবে ওর চোখের সামনে ভেসে আসছে দৃশ্যটি। রাজীব, নাজিম ভাই আর সেই লিকলিকে গড়ন এর ছেলেটি। ওরা এসেছিল শান্তার বাসায়। কামের তাড়নায় এতটাই মুখিয়ে ছিল শান্তা - ব্রিফকেস খুলে কি বার করে নিয়েছে তাঁরা - খেয়াল করে নি। ও যখন শোবার ঘরে বেস্ত ছিল নাজিম ভাই আর অপিরিচিত ছেলেটির চোদোন খেতে - তখন রাজীব বাহিরে গিয়েছিল। একটা যাবার বেলায় একটা রীল নিয়ে গিয়েছিল ওরা প্রমান সরুপ। তারপর নিজ হাতেই শান্তা রাজীব এর ফেরত দেয়া রীলটা ধুকিয়ে রেখেছিল ব্রিফকেসে। শান্তার মুখ থেকে রক্ত সড়ে গেছে। রাজীবকে খুন করতে ইচ্ছে করছে তার। শুধু মাত্র ব্যাবহার করেছে তাকে রাজীব। পাপের তোরণ খুলে লোভ দেখিয়েছে শান্তাকে। সেই লোভে পড়ে শান্তা নিজেকে উজাড় করে দিয়েছে রাজীব এর কাছে। অতঃপর আজ হারাতে বসেছে যেন সব কিছু!
“আপনার স্বামী তো বলছে কিছু জানে না শান্তা মেডাম, আপনি কিছু জানেন নাকি!” নাসির সাহেব কৌতূহল নিয়ে তাকিয়ে আছে শান্তার দিকে। হয়ত আচ করতে পেরেছে শান্তার চেহারা থেকে রক্ত সরে যাবার ব্যাপারটি। “বলুন বলুন - বলে ফেলুন। যত তাড়াতাড়ি আমি জানতে পারব - তত তাড়াতাড়ি আপনারা বাড়ি ফিরে যেতে পাড়বেন...।”
“রি-রি-রিল খুজছেন?” শান্তা মুহূর্তে নিজেকে গুছিয়ে নেয় খানিকটা। “ছবির রীল?”
“হ্যাঁ,” মাথা দোলায় নাসির সাহেব।
“ওদিন - ওদিন রাতে...” মিথ্যাটা বলার আগে এক মুহূর্ত চিন্তা করে শান্তা। “ওদিন রাতে ফয়সাল যখন সব পুরিয়ে ফেলছিল, তখন একটা রীল পড়ে গিয়েছিল নিচে। আমি পরদিন সেটা পেয়েছি...”
“বাহ বাহ… তারপর?” নাসির সাহেবের ঠোঁট থেকে হাসিটা মুছে যায়।
“আমি ভেবেছিলাম নেগেটিভ এর ছবির লোকটি ফয়সাল… তাই…… তাই একজনকে ওটা দিয়েছিলাম।”
“কাকে?” এক সঙ্গেই চেচিয়ে উঠে ফয়সাল আর নাসির। ওদের এমন চিৎকার এ ঘাবড়ে যায় শান্তা। ও কাদতে আরম্ভ করে। দুই হাতে মুখ আড়াল করে। কান্নার ফাকেই কোন মতে নামটা উচ্চারন করে শান্তা।
“রাজীবকে...”
#
শান্তা আর ফয়সাল বসে আছে মুখোমুখি। ফয়সালের হাত তখন দেয়ালের সঙ্গে হ্যান্ডকাফ দিয়ে আটকে রাখা। দুজন ওরা দুজনের দিকে তাকাতে পারছে না। নাসির সাহেব বেড়িয়ে গেছে ব্রিফকেস নিয়ে বেশ অনেকক্ষন হয়েছে। ঘরের মধ্যে এই নিরবতা যেন অসহ্য হয়ে উঠতে আরম্ভ করেছে। অবশেষে ফয়সালই মুখ খুলল - “রাজীব এর সঙ্গে তোমার যোগাযোগ কি করে হয়েছে?”
“ও … ও একদিন এসেছিল বাসায়… বলছিল… যে তুমি - তুমি নাকি একটা মেয়ের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছ।” শান্তা সত্য মিথ্যা একাকার করে ফেলছে। ওর মাথায় কিছু আসছে না। কিছু ভাবতে পারছে না শান্তা।
“ও তোমার হয়ে আমার উপর গোয়েন্দাগিরি করছিলো!” ফোঁস করে শ্বাস ফেলে ফয়সাল। “কাজটা আমার করাই উচিত হয় নি শান্তা। জঘন্য কাজ করেছি, বেআইনি কাজ করেছি… কিন্তু আমি ভাবতে পারছি না... তুমি আমায় অবিশ্বাস করেছ...।”
“তুমি শেষ কবে আমায় সব খুলে বলেছ? অবিশ্বাস করবো না তো কি করবো!” শান্তা ফুসে উঠে হঠাৎ। “আজ এসবের জন্য তুমি দায়ী। আমায় তুমি কোন দিন ভালবাসতে পার নি।”
“আমি আমার ভুল স্বীকার করছি শান্তা...” দীর্ঘশ্বাস ফেলে ফয়সাল। “কিন্তু তোমায় আমি কি করে বলতাম আমি এমন নোংরা ব্যাবসা করছি? আমি বলতে পারতাম না... আর হ্যাঁ, এও সত্যি আমি লোভ সামলাতে পাড়ি নি… ওই মেয়ে গুলো - ওরা - ওরা কেমন জানি শান্তা… ওদের পাল্লায় পরলে নিজেকে সামলানো যায় না… আমি আমি...” ফয়সালের গলা ভেঙ্গে আসে। ও কাদতে আরম্ভ করে। “আমি নিজেকে এতটাই অপরাধি মনে করতাম যে তোমায় ছুতেও আমার বাঁধত শান্তা। নিজেকে পাপী মনে হতো...”
“আমি - আমি কিছু মনে করি নি ফয়সাল...” উঠে দাড়ায় শান্তা। ছুটে এসে ফয়সালের পাশে বসে। ওর কাধে হাত রাখে। ফয়সাল নিজেকে সামলাতে না পেরে স্ত্রীর কাধে মুখ গুজে কাদতে আরম্ভ করে। ওর চুলের মধ্যে আজ যেন প্রথম বারের মত আঙ্গুল চালায় শান্তা। চোখ বুজে আসে ওর। বুক ভারী হয়ে আসে। “আমি- আমরা কি আমাদের জীবনটাকে নতুন করে শুরু করতে পাড়ি না ফয়সাল?”
“ওহহ শান্তা… আমি যে অপরাধী তোমার কাছে… আমি বেআইনি কাজ করেছি… তোমায় রেখে বেশ্যা মেয়েদের পেছনে ছুটেছি - রাত কাটিয়েছি… আমি আমি… দুঃখিত শান্তা...”
শান্তা আরও শক্ত করে আঁকড়ে ধরে স্বামীর চুল গুলো। ওর বুক ধপধপ করছে। নির্ঘাত ফয়সালও শুনতে পারছে। তবে হয়ত আচ করতে পারছে না এর কারণ। শান্তা মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। নিজের কুকর্মের কথা স্বীকার করবে না ও ফয়সালের কাছে। ওর জীবন থেকে একেবারে বন্ধ করে দেবে পাপের তোরণ। “ভুল মানুষই করে… আমি তোমায় ক্ষমা করে দিয়েছি ফয়সাল… চল আমরা আমাদের সংসারতা আবার...”
এই সময়ই দরজা খুলে যায়। নাসির সাহেব ভেতরে ধুকে রাগত মুখে। ওদের স্বামীস্ত্রীকে এভাবে জড়াজড়ি করে বসে থাকতে দেখে তার কপাল কুচকে যায়। “আপনাদের প্রেম কবরে গিয়ে দেখান… এখানে না… আমার এখান থেকে লাশ হয়ে বেরবেন দুজনেই আজকে...”
“আমরা তো...” ফয়সাল স্ত্রীর ভরসা পেয়ে ফুসে উঠতে আরম্ভ করে। কিন্তু তার হাত চেপে ধরে শান্তা।
“আমি দেখছি,” শান্তা দৃঢ় গলায় বলে উঠে দাড়ায়। “আমি যদি রাজীবকে রীলটা নিয়ে আসতে বলি - তাহলেই তো হল… আপনি তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে পারেন। আমাদের যেতে দিতে পারেন… আমি তার সাথে কথা বলব...”
“বলবেন?” নাসির সাহেব কিছু একটা ভাবছে। অপাদ্মস্তক জরীপ করছে শান্তাকে। “আপনার কথা বিশ্বাস করে রাজীব বাঘের মুখে আসবে?”
“এখানে না… আমি তাকে বাসায় ডাকব,” শান্তা বলে তাঁদের। “আপনার রীল আর রাজীবকে পেলেই তো হল তাই না!”
“হ্যাঁ, হবে...” চিন্তিত ভঙ্গিতে মাথা দোলায় নাসির। “কিন্তু একটা ব্যাপার বুঝতে পারছেন তো! পুলিশের কাছে গিয়ে লাভ নেই… উল্টো আপনার স্বামীই ফেসে যাবে কেস খেয়ে।”
“আমি পুলিশের কাছে যাবো না,” মাথা নাড়ে শান্তা। “আমাকে একটা দিন সময় দিন… ফয়সালকে ছেড়ে দেন...”
“না না না,” মাথা নাড়ে নাসির। “আপনি আমাকে আমার জিনিষ ফেরত দেবেন রাজীবকে সহ - তারপর আমি আপনার স্বামীকে যেতে দেবো। ততক্ষন উনি এখানে আমাদের অতিথি হয়ে থাকবে।”
শান্তা বুঝতে পারছে আর কোন উপায় নেই ওর হাতে। ও বড় করে দম নেয়। “ঠিক আছে… আমায় বাসায় দিয়ে আসুন।”
নাসির গভির কৌতূহল নিয়ে তাকিয়ে থাকে শান্তার দিকে। কি যেন মেলাবার চেষ্টা করে। তার ঠোঁটের কণে হাসি ফুটে হাল্কা। তারপর মাথা দোলায়। “আমার গাড়ি আপনাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে আসবে… আপনার হাতে ২৪ ঘণ্টা সময় রয়েছে... কাল ঠিক এই সময় রাজীব আর আমার জিনিষ আমার হাতে চাই...”
“পেয়ে যাবেন আপনি...” শান্তা ভেবে পায় না - এত আত্মবিশ্বাস কি করে এলো তার মাঝে! তবে এক ধরনের শিহরণ খেলা করছে শান্তার ভেতরে। ও জানে - একটাই পথ খোলা রয়েছে তার জীবনে। সেই পথ ধরে এগোতে এই আত্মবিশ্বাসখানি তার একান্ত প্রয়োজনই নয় কেবল - বরং সর্বশেষ ভরসা।
#####
রিয়ান খান