Thread Rating:
  • 15 Vote(s) - 3.07 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Thriller রক্তমুখী নীলা (সমাপ্ত)
#31
আমার দিকে তাকিয়ে হেসে ফেললো মুক্ত -- তুমি চিন্তা করোনা যাদের ফোন করবে তারা নিরাপদেই আছে। এখানে বেশিক্ষন থাকা যাবেনা কিছু খাবার নিয়েই বেরিয়ে পরবো তুমি গাড়ির কাছে থাকো। আমি আসছি। 

শক্তিগড় থেকে বেরিয়ে আধঘন্টা গাড়ি চালিয়ে পানাগড় যখন পৌছলাম তখন গাড়ির ড্যাশবোর্ডে রাখা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি সাতটা বাজে। এখনো বেশ কিছুটা যেতে হবে। পেটের মধ্যে যে আগুন জ্বলছিল মুক্তর আনা খাবারে তা কিছুটা উপশম হয়েছে। 
প্রায় ঘন্টা খানেক পর মুচিপাড়া এলো এখান থেকে বাঁদিকে ঘুরে পোলের নীচ দিয়ে আমরা বিধাননগর কমিউনিটি সেন্টারের দিকে এগিয়ে চললাম। বিধান নগর কলোনীকে বাঁদিকে রেখে ডানদিকে রাস্তায় গাড়ি আসতেই হঠাৎ মনে পড়লো এই রাস্তাটা আমার চেনা অবচেতন মন আমায় এই রাস্তাটাকে চিনিয়ে দিচ্ছে। সাথে কিছু ছবি ভেসে উঠছে। মাথার ভিতরটা যেন ফেটে যাবে। প্রচন্ড যন্ত্রনায় দুহাতে মাথার দুপাশ চেপে ধরলাম। ছবির পর ছবি ভেসে উঠছে মাথার মধ্যে কিন্তু সবগুলোই আবছা, যেন পুরোপুরি আসবে আসবে করেও আসতে পারছেনা। 
কিছুক্ষন পর যন্ত্রনাটা কমে গেলো একটা স্তব্ধ ভাব চলে এসেছে মাথার মধ্যে। চোখটা বন্ধ করে নিলাম।

একটা হাতের স্পর্শে স্তব্ধ ভাবটা এক লহমায় কেটে গেলো। মা, মা বলে জড়িয়ে ধরলাম মাকে। বুকের ভিতরটা যেন ছিঁড়ে যাচ্ছে যন্ত্রনায়। মনে হচ্ছে একযুগ পর মাকে দেখছি। বুক থেকে মুখ তুলে মায়ের মুখের দিকে তাকালাম সেই মাতৃময়ী রুপ। কিন্তু মনের মধ্যে আরো একটি ছবি যে ভাসছে মন বলছে সেও আমার অতি আপন। 
গাড়ি থেকে নেমে পড়লাম। মা হাত ধরে সামনে এগিয়ে নিয়ে চললো। সামনে বাবা দাঁড়িয়ে কাছে যেতেই বুকে জড়িয়ে ধরলো। চোখে জল না থাকলেও বুকটা যে ভেঙে গুঁড়িয়ে যাচ্ছে সেটা লাবুডুবু শব্দ শুনে বেশ বুঝতে পারছি। 
কিছু একটা বলতে চাইছিলাম তার আগেই আমায় থামিয়ে বাবা বলে উঠলো -- জানি তোর মনে অনেক প্রশ্ন, অনেক ধাঁধা লুকিয়ে আছে। সব উত্তর পাবি শুধু আর একটা রাত সময় দে আমায়। 
মুখ নীচু করে নিলাম। বাবার কথার ওপর কথা আমি বলতে পারবোনা। আমায় নিয়ে পিছনদিকে তাকালো বাবা। অনেকেই দাঁড়িয়ে রয়েছে সেখানে,সবার মুখেই বিস্ময়। সবাই আমার অপরিচিত, এক এক করে দেখতে দেখতে একজনের ওপর চোখ পরতেই চমকে উঠলাম। মনের সেই ছবির সাথে অদ্ভুত এক মিল রয়েছে এর। কিন্তু... 


রাতের অন্ধকারে বোঝা না গেলেও এই জায়গাটা যে যথেষ্ট নিরিবিলি তা এর স্তব্ধতা শুনেই বেশ বোঝা যাচ্ছে। আশেপাশে বাড়িঘর তেমন নেই বললেই চলে। 
বাবা মার কাছ থেকে জেনেছি আমি দুরাত ওদের ডেরায় কাটিয়েছি। তারমধ্যে কোন খাবারই পেটে পরেনি তাই বিনা বাক্যব্যায়ে খেতে বসে গেলাম। সাধারন মাটির মেঝেতে খাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। আমার পাশে মা, মুখোমুখি একটা আসন ফাঁক রেখে বাবা বসেছে। আর কেউ বসলোনা দেখে বেশ অবাক লাগলো। মাকে বলতে মুচকি হেসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। বেশি কথা না বাড়িয়ে প্রাণভরে খাওয়ার দিকে মনোনিবেশ করলাম। হঠাৎ মাথা তুলতেই চমকে উঠলাম। বাবার পাশে সেই ফাঁকা আসনটায় মনের ছবির সাদৃশ্য রমনী বসে আছে। খাওয়ার আর মুখে উঠলোনা। মা আমার দিকে তাকিয়ে বললো কিরে বাবু কি হয়েছে? ওর দিকে ওভাবে কি দেখছিস?
-- এ্যাঁ.... না। না কিছু না।
-- ওর নাম সংঘমিত্রা খুব ভালো মেয়ে নে এবার খেয়ে নে।
[+] 3 users Like HASIR RAJA 19's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: শুধুই কি গল্প? - by HASIR RAJA 19 - 20-05-2021, 11:20 PM



Users browsing this thread: 7 Guest(s)