20-05-2021, 11:01 PM
সন্ধ্যা হয়ে আসছে তবু যতটুকু আলো আসছে তাতে জলের ওপর আমাদের দেখে ফেলাটা কিছুই আশ্চর্যের নয়। যত দ্রুত সম্ভব কতকটা ডুব সাঁতার দিয়েই চলতে লাগলাম। খিদিরপুর ডককে পিছনে ফেলে বেশ কিছুটা এগিয়ে ছেলেটাকে অনুসরণ করে তীরে উঠলাম। দাঁড়িয়ে বিশ্রাম নেওয়ার এতটুকু অবকাশ নেই যতদূর শীঘ্র সম্ভব এখান থেকে সরে পরতে হবে। একপ্রকার দৌড়েই বনবাদাড় পেরিয়ে রাস্তায় এসে দাঁড়ালাম। সামনেই একটা গাড়ী,আমরা কাছে যেতেই দরজা খুলে গেলো কোন দ্বিধা না করে ছেলেটির পিছন পিছন গাড়িতে গিয়ে উঠলাম। গাড়ী চলতে শুরু করেছে ততক্ষনে। খিদিরপুরের মোরে গাড়ী আসতেই লক্ষ করলাম পিছন থেকে তীরবেগে একটা গাড়ি আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে।
-- আহঃ এরা কি কিছুতেই পিছু ছারবে না। রঞ্জুদা আরো জোরে চালাও। ছেলেটা উত্তেজিত কন্ঠে বলে উঠলো।
কিন্তু তার আগেই পিছনের গাড়ীটা আমাদের কাছে এগিয়ে এসে প্রচন্ড জোরে একটা ধাক্কা মারলো আমাদের গাড়ীর পিছনে। দক্ষহাতে স্টিয়ারিং হুইল ধরে সেই আঘাত সামলালো রঞ্জু নামের লোকটা। রাস্তায় গাড়ীর কমতি নেই হুসহাস করে গাড়ী চলছে এর মধ্যেই পিছনের গাড়ীটা এসে আমাদের পাশ থেকে আমাদের ওপর সজোরে আঘাত করতে লাগলো। দুটো গাড়ীরই স্পিড নেহাত কম নয়। দুর্ঘটনা ঘটলে বেলচা মারা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না। সামনেই হেস্টিংসের চারমাথা মোড়।
ছেলেটি তীব্র চিৎকার করে উঠলো রঞ্জুদা গাড়ী থামাবে না স্পিড বাড়াও।
হতভম্ব হয়ে গেলাম সিগন্যাল বোর্ডে লাল সিগন্যাল জ্বল জ্বল করছে। কোনদিকে যাবে এ গাড়ী? রাস্তায় ত গাড়ীর মেলা বসেছে বাঁদিক থেকে ডানদিকে গাড়ীগুলো হুসহাস করে বেরিয়ে যাচ্ছে।
না গাড়ী থামলো না। সবার শ্বাস রুদ্ধ করে দিয়ে নিয়ম ভেঙে এক্সলেটর ভীষন চাপ বসিয়ে দিলো রঞ্জু নামের লোকটা। ধন্যি ড্রাইভারি বিদ্যা, তীরবেগে গাড়ী এগিয়ে এসে সামনের গাড়ীটাকে কোনরকমে বাঁচিয়ে স্টিয়ারিং টাকে এপাশ ওপাশ করে চারমাথা ক্রশিং পার হয়ে গেলাম আর সাথে প্রচন্ড জোরে একটা শব্দে প্রায় সকলেই চমকে পিছনে তাকালাম। ধাওয়া করে আসা গাড়ীটা নিয়ন্ত্রন হারিয়ে একটা টেঙ্কারের পেটের ভিতর ঢুকে গেছে। গাড়ীর সামনের অংশটা ভেঙে গুঁড়িয়ে গেছে আশা করি আর কেউ প্রাণে বেঁচে নেই। হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম কিন্তু থামলে চলবে না, গাড়ী এগিয়ে চললো দ্বিতীয় হুগলি সেতুর দিকে। পিছন ফিরে একবার দেখে নিলাম। না আর কেউ নেই।
ব্রিজ পেরিয়ে কিছুদূর যাওয়ার পর আমাদের গাড়ীর গতি কমিয়ে দিলো, সামনে একটা গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে। ছেলেটির মুখের দিকে একবার তাকালাম আমার মুখের ভাষা বুঝতে পেরে একটু হেঁসে বললো ভয় নেই, এখন তুমি নিরাপদ। রঞ্জুদা কলকাতায় থাকে আমাদের এখানে নামিয়ে ও চলে যাবে। আমাদের ওই গাড়ীতে যেতে হবে চলো নামো।
-- আচ্ছা আমরা যাচ্ছি কোথায়। আর কে তুমি। নামতে নামতে জিজ্ঞেস করলাম।
-- বলছি আগে ওঠো।
গাড়ীতে উঠে বসলাম। গাড়ী চলতে শুরু করলো।
-- আমি মুক্ত। বলে উঠলো ছেলেটি।
-- তবে কি তুমিও বন্দি ছিলে ওই জাহাজে।
-- আরে না না আমার নাম মুক্ত। মুক্তধারা সিং।
-- কিন্তু তুমি আমায় চিনলে কি করে আর এভাবে আমায় উদ্ধার করলেই বা কেন?
-- কি কেন কখন কিভাবে এসবের জবাব একজনই দিতে পারবে আমার বাবা।
-- কিন্তু আমাকে জানতে হবে এখন, এসব কি হচ্ছে আমার সাথে। আর আমি যাচ্ছি বা কোথায়।
-- দুর্গাপুর। আমরা দুর্গাপুর যাচ্ছি।
গাড়ি থামাও গাড়ি থামাও। চিৎকার করে উঠলাম আমি
-- এই কেন কি হয়েছে।
-- আমার বাবা মা কোলকাতায় ওদিকে ম্যাডাম আর দিদা কেমন আছে কে জানে আর তোমরা আমায় দুর্গাপুর নিয়ে যাচ্ছো। আমাকে এক্ষুনি কলকাতা ফিরতে হবে আমায় না পেয়ে নিশ্চয়ই ওই হারামীগুলো আমার বাবা মার ওপর অত্যাচার করবে ওরা জানোয়ার। মায়াদয়া নেই ওদের শরীরে দিদাকে কিভাবে মেরেছিলো ওরা।
-- হ্যাঁ ঠিক। ওরা জানোয়ার। তুমি কি মনে করেছো তুমি গেলে তোমার বাবা মাকে তুমি বাঁচাতে পারবে। পারবে না। বিরাতে যাদের মেরেছিলে তারা সবাই তুচ্ছ এরা ভয়ঙ্কর তুমি কলকাতায় ফিরলে তোমায় আর বেঁচে ফিরতে হবে না।
-- কিন্তু এভাবে পালিয়ে যাবো? বাবা মার বিপদ জেনেও।
-- হ্যাঁ এটাই এখন একমাত্র রাস্তা আর তুমি চিন্তা করোনা তোমার বাবা মা নিরাপদেই আছে।
চমকে তাকালাম মুক্তর দিকে। তুমি এতটা নিশ্চিত হচ্ছো কি করে?
-- সব উত্তর পেয়ে যাবে এখন শুধু একটু ধৈর্য ধরে থাকো।
গাড়ি এগিয় চলেছে বালি হয়ে দিল্লীরোডের উপর দিয়ে। শক্তিগড়ে পৌছে গাড়ি একটা ধাবায় থামলো। শক্তিগড় একটা জংশন জায়গার মতো এখানে সব রকমের দোকান আছে একটা পেট্রোল পাম্প আছে। বহু দূর পাল্লার গাড়ি এখানে দাঁড়ায়। এখানকার সেই বিখ্যাত ল্যাংচার কথা সবাই জানে।
আমার মোবাইল, মানিব্যাগের কোন হদিশ নেই সম্ভবত দিদার বাড়িতেই পড়ে আছে। পরণের বারমুন্ডা প্যানটা যে কি করে এলো সেটা ভগবান যানেন। ওসব নিয়ে মাথাও ঘামালাম না। গাড়ি থামতেই মুক্তকে বললাম আমি একটা ফোন করবো।
-- আহঃ এরা কি কিছুতেই পিছু ছারবে না। রঞ্জুদা আরো জোরে চালাও। ছেলেটা উত্তেজিত কন্ঠে বলে উঠলো।
কিন্তু তার আগেই পিছনের গাড়ীটা আমাদের কাছে এগিয়ে এসে প্রচন্ড জোরে একটা ধাক্কা মারলো আমাদের গাড়ীর পিছনে। দক্ষহাতে স্টিয়ারিং হুইল ধরে সেই আঘাত সামলালো রঞ্জু নামের লোকটা। রাস্তায় গাড়ীর কমতি নেই হুসহাস করে গাড়ী চলছে এর মধ্যেই পিছনের গাড়ীটা এসে আমাদের পাশ থেকে আমাদের ওপর সজোরে আঘাত করতে লাগলো। দুটো গাড়ীরই স্পিড নেহাত কম নয়। দুর্ঘটনা ঘটলে বেলচা মারা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না। সামনেই হেস্টিংসের চারমাথা মোড়।
ছেলেটি তীব্র চিৎকার করে উঠলো রঞ্জুদা গাড়ী থামাবে না স্পিড বাড়াও।
হতভম্ব হয়ে গেলাম সিগন্যাল বোর্ডে লাল সিগন্যাল জ্বল জ্বল করছে। কোনদিকে যাবে এ গাড়ী? রাস্তায় ত গাড়ীর মেলা বসেছে বাঁদিক থেকে ডানদিকে গাড়ীগুলো হুসহাস করে বেরিয়ে যাচ্ছে।
না গাড়ী থামলো না। সবার শ্বাস রুদ্ধ করে দিয়ে নিয়ম ভেঙে এক্সলেটর ভীষন চাপ বসিয়ে দিলো রঞ্জু নামের লোকটা। ধন্যি ড্রাইভারি বিদ্যা, তীরবেগে গাড়ী এগিয়ে এসে সামনের গাড়ীটাকে কোনরকমে বাঁচিয়ে স্টিয়ারিং টাকে এপাশ ওপাশ করে চারমাথা ক্রশিং পার হয়ে গেলাম আর সাথে প্রচন্ড জোরে একটা শব্দে প্রায় সকলেই চমকে পিছনে তাকালাম। ধাওয়া করে আসা গাড়ীটা নিয়ন্ত্রন হারিয়ে একটা টেঙ্কারের পেটের ভিতর ঢুকে গেছে। গাড়ীর সামনের অংশটা ভেঙে গুঁড়িয়ে গেছে আশা করি আর কেউ প্রাণে বেঁচে নেই। হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম কিন্তু থামলে চলবে না, গাড়ী এগিয়ে চললো দ্বিতীয় হুগলি সেতুর দিকে। পিছন ফিরে একবার দেখে নিলাম। না আর কেউ নেই।
ব্রিজ পেরিয়ে কিছুদূর যাওয়ার পর আমাদের গাড়ীর গতি কমিয়ে দিলো, সামনে একটা গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে। ছেলেটির মুখের দিকে একবার তাকালাম আমার মুখের ভাষা বুঝতে পেরে একটু হেঁসে বললো ভয় নেই, এখন তুমি নিরাপদ। রঞ্জুদা কলকাতায় থাকে আমাদের এখানে নামিয়ে ও চলে যাবে। আমাদের ওই গাড়ীতে যেতে হবে চলো নামো।
-- আচ্ছা আমরা যাচ্ছি কোথায়। আর কে তুমি। নামতে নামতে জিজ্ঞেস করলাম।
-- বলছি আগে ওঠো।
গাড়ীতে উঠে বসলাম। গাড়ী চলতে শুরু করলো।
-- আমি মুক্ত। বলে উঠলো ছেলেটি।
-- তবে কি তুমিও বন্দি ছিলে ওই জাহাজে।
-- আরে না না আমার নাম মুক্ত। মুক্তধারা সিং।
-- কিন্তু তুমি আমায় চিনলে কি করে আর এভাবে আমায় উদ্ধার করলেই বা কেন?
-- কি কেন কখন কিভাবে এসবের জবাব একজনই দিতে পারবে আমার বাবা।
-- কিন্তু আমাকে জানতে হবে এখন, এসব কি হচ্ছে আমার সাথে। আর আমি যাচ্ছি বা কোথায়।
-- দুর্গাপুর। আমরা দুর্গাপুর যাচ্ছি।
গাড়ি থামাও গাড়ি থামাও। চিৎকার করে উঠলাম আমি
-- এই কেন কি হয়েছে।
-- আমার বাবা মা কোলকাতায় ওদিকে ম্যাডাম আর দিদা কেমন আছে কে জানে আর তোমরা আমায় দুর্গাপুর নিয়ে যাচ্ছো। আমাকে এক্ষুনি কলকাতা ফিরতে হবে আমায় না পেয়ে নিশ্চয়ই ওই হারামীগুলো আমার বাবা মার ওপর অত্যাচার করবে ওরা জানোয়ার। মায়াদয়া নেই ওদের শরীরে দিদাকে কিভাবে মেরেছিলো ওরা।
-- হ্যাঁ ঠিক। ওরা জানোয়ার। তুমি কি মনে করেছো তুমি গেলে তোমার বাবা মাকে তুমি বাঁচাতে পারবে। পারবে না। বিরাতে যাদের মেরেছিলে তারা সবাই তুচ্ছ এরা ভয়ঙ্কর তুমি কলকাতায় ফিরলে তোমায় আর বেঁচে ফিরতে হবে না।
-- কিন্তু এভাবে পালিয়ে যাবো? বাবা মার বিপদ জেনেও।
-- হ্যাঁ এটাই এখন একমাত্র রাস্তা আর তুমি চিন্তা করোনা তোমার বাবা মা নিরাপদেই আছে।
চমকে তাকালাম মুক্তর দিকে। তুমি এতটা নিশ্চিত হচ্ছো কি করে?
-- সব উত্তর পেয়ে যাবে এখন শুধু একটু ধৈর্য ধরে থাকো।
গাড়ি এগিয় চলেছে বালি হয়ে দিল্লীরোডের উপর দিয়ে। শক্তিগড়ে পৌছে গাড়ি একটা ধাবায় থামলো। শক্তিগড় একটা জংশন জায়গার মতো এখানে সব রকমের দোকান আছে একটা পেট্রোল পাম্প আছে। বহু দূর পাল্লার গাড়ি এখানে দাঁড়ায়। এখানকার সেই বিখ্যাত ল্যাংচার কথা সবাই জানে।
আমার মোবাইল, মানিব্যাগের কোন হদিশ নেই সম্ভবত দিদার বাড়িতেই পড়ে আছে। পরণের বারমুন্ডা প্যানটা যে কি করে এলো সেটা ভগবান যানেন। ওসব নিয়ে মাথাও ঘামালাম না। গাড়ি থামতেই মুক্তকে বললাম আমি একটা ফোন করবো।