20-05-2021, 12:45 PM
[যৌনতার ও একটা সুন্দর পোশাক থাকা উচিৎ। আমার কাছে সুন্দর একটা রুচিশীল যৌন গল্প সব সময়ই অনেক বেশী আবেদনময়ী। সেই দৃষ্টিকোন থেকে আমার এই গল্পটা লেখার চেষ্টা। আরেকটি বিষয় দেখারও ইচ্ছা সেটা হলো কিভাবে একটা গল্প এক সাইটে পোস্ট করার পর অন্য সাইটে যায় এবং কতদুর তা বিস্তৃত হতে পারে সেটা দেখা।এক ঝাক মাছের ভিতর যেমন একটুকরা খাওয়ার দেওয়া হলে যেভাবে কাড়াকাড়ি লাগে ঠিক তেমনই। আমার এই গল্প যে কেঊ যে কোন সাইটে পোস্ট করতে পারবেন। তবে লেখকের রেফারেন্স দেওয়াটাকে সৌজন্যতা মনে করি।] - জানভীরা
রুশী
@জানভীরা
ক. পরিচয়
মানুষ অনেক সময় না জেনে কিছুতে সম্মতি দিতে চায় না, কিন্তু পরবর্তীতে সেই বিষয়টিতে গিয়ে বুঝতে পারে যে, সে কি ভুল করতে যাচ্ছিল । ঠিক আমার সাথে রুশী আন্টির দেখা হওয়াটা ছিল সে ধরনেরই একটা ঘটনা। আমি তখন সবে মাত্র প্লান ইন্টারন্যাশনাল এ যোগ দিয়ে সিলেট এ গিয়েছি। সারাদিন অফিস নিয়েই ব্যাস্ত থাকতে হয়। আর আমার দায়িত্ব হলো এডোলসেন্স এন্ড এডুকেশান।এর বিভাগীয় দায়িত্ব আমার। আমাদের এই এনজিও সাহায্যপুষ্ট কলেজগুলো কেমন চলছে তার দেখাশোনা করেই এবং সেই সাথে নতুন কলেজ এর অন্তর্ভুক্তি, আর্থিক সাহায্য এগুলো করেই আমার দিন কাবার।
আমি কিশোরগঞ্জের মানুষ, সিলেট থেকে কিশোরগঞ্জ থেকে প্রতি সপ্তাহান্তে আমাকে প্রথম প্রথম আসতে-যেতে হতো। মা বললেন প্রতি সপ্তাহ শেষে এভাবে ঘন ঘন আসা যাওয়া করাটা যেমন ঝুকিপুর্ন তেমনি অর্থেরও অপচয়।বর্তমান সময়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কই বলতে গেলে এই আওয়ামী অপদার্থ যোগাযোগ মন্ত্রীর আমলে ভাল আছে,কারন এটা ওয়ার্ল্ড ব্যাংক করেছিলো বিএনপির সময়ে ট্রান্সএশিয়ান হাইওয়ের অংশ হিসাবে। তবে এই অপদার্থ আরো তিন বছর গদিতে থাকলে এটাও যাবে। সুন্দর রাস্তা গাড়ী চলে অনেক দ্রুত, সাথে আবার এইরকম হাইওয়েতে নামান হয়েছে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা। প্রতি সপ্তাহেই একটা না একটা দুর্গটনা ঘটছেই। যেহেতু এখনো বিয়ে করিনি’ তাই মায়ের আদেশ অনুসরন করেই মাসে দুই বার করে আসা শুরু করলাম কিশোরগঞ্জে, আর জরুরী প্রয়োজনে তো আছেই। শুক্রবার শনিবার সিলেটে থাকি অথচ আমার বন্ধু লিটুর লন্ডনের বন্ধু জিসানের মায়ের সাথে আমি বিশ্বনাথ এ দেখা করতে যাইনি শুনেই আমার ঊপর লিটু একচোট নিয়ে গালি ঝাড়তে লাগলো। -“বানচোত তরে কত কইরা কমু, জিসান বার বার কইরা আমারে জিগাইতেছে তুই গেছস কিনা। গিয়া কাগজগুলা একটু দেখবি।“ আমরা বন্ধুরা যখন কথা কই তখন এভাবেই কথা বলি ভার্সিটিতে থাকা কালিন ভাষা এখনো চলে। আর অপরিচিত কেঊ হলে তখন একেবারেই প্রমিত শুদ্ধ বানান এর উচ্চারনে কথা বলি। নরেন স্যারের উচ্চারনের কয়েকটি ক্লাস আমি করেছিলাম তো তাই। লিটুর অভ্যাস একবার মুখ থেকে গালি বের হয়ে গেলে যতক্ষন কথা বলে গালি চলতেই থাকে, তাই গালির হাত হতে বাঁচতে দ্রুত বললাম “ দোস্ত, দোস্ত বাপ না আমার ,আর গাল্যাইসনা আমি আগামী শুক্রবারেই যাইতাছি। “
ইমেইলে ওর পাঠানো এড্রেস নিয়ে রওনা দিলাম পরের শুক্রবারে দুপুরের খাওয়া দাওয়া সেরে। জিসান এর মায়ের নাম রুশনী আরা চৌধুরী। অধিকন্ত বশির ওরফে লিটু জিসান চৌধুরীর তৈরি ওয়ার্ড আর্ট এর একটা ফাইল পাঠিয়ছে যেখানে সিলেট থেকে একেবারেই বিশ্বনাথ থানা সদরে তাদের বাড়ীতে কিভাবে যাবো সেটাও আকিয়ে দেখানো আছে। কাজেই ইমেইলে দেওয়া রুশনী আরা চৌধুরীর মোবাইল নম্বরটা যদিও নিলাম কিন্তু সেটাতে কোন কল দিলাম না। এক্ষেত্রে কল দিয়ে যাওয়াটা কেন জানি নিজেকে অপদার্থ অপদার্থ মনে হচ্ছে। আসলে জিসানদের পরিবার সম্পর্কে আমি তেমন কিছু জানি না। ওদের পুরোপরিবারই লন্ডনে সেটেল্ড এবং বৃটিশ সিটিজেন। ওর মা বিগত তিন মাস ধরে দেশে এসেছেন ওদের বিশ্বনাথ থানা সদরের নিজেদের জায়গাটা বিক্রি করে ফেলবেন। কারন জিসান এর বাবা পাঁচ বছর হলো মারা গিয়েছেন। তাই এখানে আর তেমন ওদের আসা হয় না, সে কারনেই এটা ওরা বিক্রি করে ফেলবে। তবে কিছু কিছু কাগজপত্র লাগবে যেগুলো বিক্রির সময়ে তুলতে হয়। সেটা ওই মহিলার দ্বারা একা সম্ভব নয়।বশির এর সাথে আলাপকালে জিসান জানতে পেরেছিলো যে আমি ঢাকা থেকে সিলেট এ পোস্টেড হয়েছি চাকুরী সুবাদে,তাই জিসান বসির কে খুব আন্তরিকভাবেই অনুরোধ করছিলো আমি যেন যাই ওর মার সমস্যাগুলো হ্যান্ডেল করে মহিলাকে সাহায্য করি। আর সে কারনেই বশির বার বার আমাকে তাগদা দিতে লাগে। আমার আগ্রহ হচ্ছিলো না , প্রথমত আমি সিলেইট্যাদেরকে জঙ্গল এর ভুত ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারিনা। এই গুলার টাকা আছে কিন্তু কোন কালচার নাই। প্রমিত ভাষায় কিছু বলতে গেলে বা জিগ্যেস করতে গেলে আপনাকে বুঝেও না বোঝার ভান করে বলবে “কিতা মাতুইন?” বুঝঝিনা।“ তাই ভাবছিলাম কেমন না কেমন আরেক বুড়ী ভুতের সাথে দেখা হবে। আগ্রহ হচ্ছিল না বলেই এত গড়িমসি।
বিস্বনাথ থানা সদরে এসেতো অবাক হয়ে গেলাম এতো ঢাকার আরেক মহল্লার মত। ৮/১০তলা বিল্ডিং পর্যন্ত এখানে আছে। সাধারন জেলা শহরের চাইতেও বড়। সব লন্ডনের পয়সা দিয়ে তৈরি হয়েছে। বাড়ীর সামনে এসেতো আরো অবাক হলাম অনেক বড় বাড়ী।দেওয়াল ঘেরা, প্রচুর ছোট বড় পুরোনো গাছ গাছালি দিয়ে ঢাকা। গাছগুলোর উপরে বিকালের রোদ হেলে পড়েছে। বাড়ীর গেটে এসে দাড়ালাম ,লোহার দরজায় কোন ফাক-ফোকরও নেই যে; ফাক দিয়ে বাড়ীটির অস্তিত্ব বুঝতে পারবো। তবে দেওয়ালের উপর দিয়ে অনেক দূরে একটি বাড়ীর ছাদের অস্পষ্ট অস্তিত্ব দেখা যাচ্ছে। আমি গেটের কলিং বোতাম এ চাপ দিলাম। বাজলো কি বাজলো না বুঝতে পারলাম না। ভাগ্য ভালো, বেশীক্ষন অপেক্ষা করতে হলো না। আনুমানিক পচিশ বছর বয়স হবে এমন একটি মহিলা লোহার গেটের সাইড এন্ট্রেন্স খুলে জিগ্যেস করার আগেই আমি বললাম “এটা জিসানদের বাড়ী? আমি জিসানের মায়ের কাছে এসেছি, লন্ডনে ওর বন্ধু লিটু আমাকে আসতে বলেছে।“ একবারে সব কথা বলে গেলাম কারন জেভাবে মেয়েটি সাইড ডোর ঢেকে দাঁড়িয়ে ছিল তাতে মনে হয়েছিল মেয়েটি বুঝি আবার বাড়ীর ভিতরে যাবে এবং নিশ্চিত হয়ে আবার আসবে, তাই আমি সমস্ত রেফারেন্সগুলো দিলাম যেন এক বারেই সব ফয়সালা হয়ে যায় জিসান এর মায়ের কাছে।কিন্তু সে গেল না, অবাক করে দিয়ে মেয়েটি এবার সরে গিয়ে আমাকে বাড়ীর ভিতরে ঢুকবার সু্যোগ করে দিয়ে সাইড গেট লাগিয়ে আমার সামনে দিয়ে যেতে যেতে বলল “ আমার লগে আইন।“ এবার আমি চতুর্দিক লক্ষ্য করলাম গ্রামের একটা বাড়ী যেমন পুকুর নিয়ে হয় এই বাড়ীটিও মনে হয় সে রকমি ছিল। গেট থেকে চল্লিশ গজের মত হবে একেবারেই মাঝ খানে বাড়িটি। পথ পাথরের টুকরা দিয়ে ঢাকা। একতালা বাড়ী লাল ইট দিয়ে তৈরি, কাচের স্লাইডিং জানালা। কোন আলো নেই। মনে হচ্ছে বাড়িটিতে কেঊ নেই। বাড়ী থেকে হাত বিশেক দূরে লোহার বার দিয়ে একটি দোলনা ঝুলানো আছে। বেশ পুরোন মনে হলো।বাড়ীর পিছনে অনেকটা ফাকা তারপরে দেওয়াল সম্ভবত অই ফাঁকা নিচু হওয়া জায়গাটা পুকুর হবে। সাধারনত মানুষ পুকুর বাড়ীর সামনে করে আর এখানে দেখলাম বাড়ীর পিছনে। বারান্দার গেট খুলে সামনের রুমে ঢুকে গিয়ে মেয়েটি লাইট জ্বালালো আবার বারান্দায় এসে আমাকে বলল “আপনে বইন তাইন আইবা’। শালার সিলেইট্যা ভুত। আবার মন পেচিয়ে একটা গালি দিলাম। “না জানি যেইন আইবা তাইন দেকতে কেমুন হইবা?” সিলেইট্যা ভাষাতেই ভেঙ্গাতে লাগলাম।তবে মনে মনে। আমি রুমের পুরনো কাঠের সোফা, ফ্লোর এর মোজাইক আর দেওয়ালে কিছু মহিলা হাতের তৈরি নকসা ফ্রেম দেখতে লাগলাম।
“আস্লালামুয়ালাইকুম, আপনে রনি নি বা?’ দ্রুতই তিনি রুমে ঢুকে আমার বিপরিত সোফাটার উপর বসে গেলেন। আমি ধাতস্ত হতে একটু সময় নিলাম।দ্রুত দাঁড়িয়ে সালাম এর উত্তর দিলাম ‘জি আমি রনি। লিটু আমাকে পাঠিয়েছে’
বইন বা বইন দারাইলায় কেনে?
আমি বসলাম,একটু সময় নিলাম তাকে দেখে নেওয়ার। একজন মহিলা যার বয়স আনুমানিক পয়তাল্লিশ হবে এই বয়সে মানুষ এমন সুন্দর থাকে! যৌবনে তিনি কেমন সুন্দর ছিলেন! হাসি হাসি একটা প্রসন্ন ভাব তার চেহারায় ।
“জিসান আমারে মাতছিলা, কইলা আফনে আইবা। ইগ্যুতো বাক্কা আগের কতা, আফনে আর আইছুইন না দেকিয়া ভাবলাম আর আইতায় না।“
আমার মেজাজ একেবারেই খারাপ হয়ে গেলো, এমন একটা সুন্দরী মহিলা তার মুখে এমন ভাষা বড়ই বেমানান লাগছে। তাছাড়া একজন মেহমান এসেছে তার সৌজন্যে তো একটু ভালো করে কথা বলা উচিত।
“আন্টি আই ডোন্ট আন্ডারস্ট্যান্ড ইয়র দিস ফাকিং লোকাল সিলেটি ডায়ালেক্ট, রেদার আ মোস্ট বীউটিফুল ওমেন এভার আই হ্যাভ সীন শুড স্পীক উইথ স্ট্যান্ডার্ড বাংলা।“ আমি একটা রিস্ক নিলাম ভাবলাম মহিলা অশিক্ষিতও যদি হয়, কিন্তু দীর্ঘদিন লন্ডনে ছিলেন এট-লিস্ট আমার ইংরেজী উচ্চারন বুঝতে পারবেন আমি কি বলতে চাচ্ছি। আমাকে অবাক করে দিয়ে তিনি বললেন “অহ আই এম সরি, আই মাস’ন্ট লেট ইউ ফেল ইন ট্রাবল, বাট মাইন্ড ইয়উর ল্যাঙ্গুয়েজ দ্যা ব্রাউন কালার মোস্ট হ্যান্ডসাম বয় এভার আই হ্যাভ সীন।“ বলেই তিনি সুন্দর একটা হাসি দিলেন তাতে মনে হলো আমার কথায় তিনি খুব একটা মাইন্ড করেন নি। বরং এবার আমি একটু লজ্জা পাওয়াতে তিনি মনে হয় উলটা উদ্বেগ এ পরে গেলেন। পরক্ষনেই বললেন,” আচ্ছা বাদ দাও আমি চেষ্টা করবো মোটামুটি একটা ভালো বাংলায় কথা বলতে। কিন্তু তোমাদের অই নাটক এর মত ভাষাতে পারবো না।বলেই এবার একটা খিল খিল করে অল্প বয়েসি মেয়েদের মত হাসি দিলেন।আমি অবাক হয়ে গেলাম ইংরেজীটা একেবারেই বৃটিশ উচ্চারনে তিনি বললেন। তার এই হাসির কারনেই কিনা আমি আবার তাকে পুরোপুরি নিরীক্ষণ না করে পারলাম।নাহ, বাঙ্গালী মেয়ে হিসাবে লম্বাটা দারুন হবেন,পাঁচ ফুট চার ইঞ্চির মত, সিল্কি চুল লালাভ কালার, সম্ভবত কালার করে নেওয়া, কিন্তু সন্দেহ জেগেছে সিথির আশে পাশে গোটা বিশেক সাদা চুল তাহলে কেন থাকবে?তবে, এটা তার বয়সটাকে মার্জিতভাবে উপস্থাপন করেছে।এবং আমার সব চেয়ে পছন্দ, চুলগুলো অর্ধপৃষ্ট পর্যন্ত লম্বা। মরা লাল ও খয়েরি রঙের স্ট্রাইফ একটা ফুললেন্থ ম্যাক্সি একেবারেই গোরালী পর্যন্ত, ম্যাক্সিটা খুব বেশী ঢোলা নয় আবার বডি ফিটিং ও নয়। যেকারনে আমার ধারনা উনার শরীরটা না ফেটি, আবার না একেবারেই স্লীম। তবে ম্যাজেন্টা কালার এর ওড়নাটা বুকের ওপর খুব সজতনে রাখা, থাকলেও একটা বিষয় একেবারেই স্পস্ট মনে হচ্ছে ওনার বক্ষ সম্ভার বিশাল হবে।
“কতদিন হলো আপনি সিলেট এ এসেছেন, থাকেন কোথায়?” এইতো কত সুন্দর ভাষায় তিনি আমাকে জিজ্ঞ্যেস করলেন ।
“আন্টি আপনি আমাকে তুমি করে বলেন, লিটুকে তো আপনি তুমি করে নিশ্চয় বলেন।আমি এসেছি এইতো আড়াই মাসের মত হলো, আর আমার অফিস উপশহরে; থাকি আপাতত আমার কিছু বন্ধু মিলে আম্বর খানা হাঊজিং এস্টেট এ একটা ফ্লাট নিয়েছে, সেখানেই। অনেক টা মেসের মতই। তবে উন্নত।“
“খাওয়া দাওয়া কোথায় কর?”
আমাদের ফ্লাটেই রান্না হয়। বুয়া রান্না করে।
“রান্না কেমন?”
যাচ্ছে তাই,বাচার জন্য খাওয়া।
“বিয়ে কর নি? তোমার বন্ধুর তো দুই বাচ্ছা,জিসানের তিন।“
আমি একটু লজ্জা পেলাম, দেওয়ালের দিকে তাকিয়ে না বললাম। আমাকে অবাক করে দিয়ে তিনি বললেন
“অহ মি ঘোশ, মাই হ্যান্ডসাম বয় টার্ন্ড টু রেড।“
আন্টি অবজেকশান, আই এম নট হ্যান্ডসাম এজ লাইক এজ মাই লর্ড মেড ইঊ, ইঊর বিউটি ইস লাইক দ্যা সান এন্ড মাইন ইস আ ম্যান মেড স্যাটেলাইট, অ্যান্ড ইফ দ্যাট কামস টু ইঊ ইট উইল বি বার্ণ্ট আউট টু এশ। লর্ড শব্দটি উচ্চারনের সময় উপরের দিকে আঙ্গুল উত্তোলন করেছিলাম।
“বাহ-বাহ ভালোই কথা জানো, তা এ পর্যন্ত কত জনকে পটাতে পেরেছো? “ জিজ্ঞ্যেশ করেই আবার সেই খিল খিল হাসি।
একটিও না আন্টি।
“রিয়েলি?”
ইটস এ ফ্যাক্ট!
“ভেরী সেড!”
আবারো সেই খিল খিল হাঁসি। এবার আক্রমনটা আমিই করলাম।
তবে আন্টি আপনি একটু উদাসীন।
“কেন”! আন্টি সম্বিৎ ফিরে পেয়েছেন যেন।
আমি আমার ডান হাতের তর্জনী টা মুখের উপর নিয়ে, আমার ভ্রুর উপর এবং মুখের উপর ঘোরাতে লাগলাম। বললাম এগুলো অনেক দিন থ্রেড করা হয় নি আপনার।বলে আমি মুচকি হাসতে লাগ্লাম।আমার মনে হলো অনেক আগে পার্লারে যাওয়ায় সীমানায় নতুন করে ভ্রু উঠেছে, আবার আন্টির মোছের উপর হাল্কা কয়েকটি লোম যেটা তুলে ফেলা উচিৎ।
“অহ আমি তো এখান থেকে একা পার্লারে যাই না, আমার একটা দূর সম্পর্কের ভাগ্নি আছে সেই আমাকে নিয়ে যায়। ওর অনেক দিন ধরে সময় হচ্ছে না আমাকে এখান থেকে নিয়ে যাবে।দেখছো ছেলে বলে প্রেম করেনি তাহলে এসব মেয়েলি ব্যাপার জানলো কি করে!!!”
আমার বড় বোনের কাছে থেকে। ও তো প্রায়ই যেত।
“অহ, তোমার বড় বোন আছে? কি করে?”
বিয়ে হয়ে গিয়েছে,হাউজ ওয়াইফ।আমরা এক ভাই এক বোন।
অহ ফাইন।-দেখেছো !! কিছুই খেতে তো দিলাম না আমার হ্যান্ডসাম বয়টাকে শুধু কথাই বলে যাচ্ছি ।” -বলেই কাজের মেয়ে নার্গীস কে ডাক দিলেন। আন্টির মাধ্যমে জানতে পারলাম, এই নার্গীস এর বাড়ী আসলে ময়মনসিং এ ওর স্বামী সহ থাকার জন্য আন্টি তার বাড়ীর পিছনে সীমানার ভিতরে ওদের জন্য একটা টিনশেড ঘর তুলে দিয়েছেন। আন্টি ওর স্বামীকে একটা সিএনজিও কিনে দিয়েছেন। পাঁচ বছর ধরে এই বাড়ীর দেখাশোনা করছে। ওদের কোন বাচ্চা নেই। আলাপে আলাপে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে এলো।আন্টি খুব বার বার করে বলছেন রাতের খাবারটা খেয়ে যেতে। সময়টা আগস্ট এর দিক, বেশ গরম। তাই আর রাতে তাকে কস্ট দিতে চাইলাম না। আমিতো তাকে জানিয়ে আসিনি কাজেই তাকে এই পরিশ্রমে ফেলাটা আমার মন মত নয়। যদিও জিসানের মায়ের সাধাটা ছিল একেবারেই আন্তরিক, অধিকন্ত মনে হচ্ছিল উনি নিঃসঙ্গ মানুষ কোথায় যেন আমার এই থাকাটা তিনি আরো উপভোগ করতে চাচ্ছেন। আর আমাকে কেন জানি হ্যান্ডসাম বয় বলাতে, আমিও কোথায় একটা আকর্ষন বোধ করছি। যেটাকে বুঝতে দিতে চাই না। আমি চলে আশার সময় আন্টি আমার অনেক কাছাকাছি হয়েছিলেন,উনার শরীর থেকে ঠিক কেমন জানি একটা অতি হালকা কামিনি ফুলের গন্ধের মত সুবাস পেয়েছিলাম, আর লক্ষ্য করলাম উনাকে ফর্সা বলাটা বোকামী হবে, বলতে হবে গোলাপী। আমাকে একেবারে বাহিরের গেট পর্যন্ত এগিয়ে দিলেন। দেওয়ার সময় বললেন “তোমার সেল নম্বরটা কিন্তু আমাকে দিলা না। কারন ঠিক মত পৌছাতে পেরেছো কিনা জানব কি করে ?”
আসলে আমি বুক ঢিপে ঢিপে এটাই চাইছিলাম, যেন আন্টি আমার মোবাইল নম্বরটা নেন। আবার যেচে তাকে দিতে মন সায়ছিল না। যেহেতু তারটা আমার কাছে আছে।আমার ভিজিটিং কার্ডটা দিলাম উনাকে।
“আমি তোমাকে ফোন দিব।”
জ্বী
বাড়ীটি থেকে বের হয়ে মনে হলো কোথায় যেন বিশ্ব জয় করেছি। ফুর ফুরে মেজাজে কিশোর কুমার এর গানের সেই কলিটা বেরিয়ে এলো “......এতদিন কোথায় ছিলে পথ ভুলে তুমি কি এলে।“
সপ্তাহ দুই পরে একদিন অফিস এ বসে প্রোগ্রাম সিডিউলটা দেখছিলাম।রিসিপশান থেকে ইন্টারকমে তাহের জানালো “স্যার আপনার একজন লেডী গেস্ট এসেছে।“
আমি একটু ভিমড়ী খেলাম যেন। আমার আবার লেডী গেস্ট কে আসবে এখানে। সিলেট শহরে এখন পর্যন্ত কোন পরিবারের সাথেই আমার পরিচয় হলো না। আর আমারো তো কোন আত্মীয়স্বজন কেঊ নেই।সামনে বসেছিলো আমার সেকশানের ডেপুটি ম্যানেজার মোজাম্মেল সাহেব।সারাদিনের ইন্সপেকশানের একটা রুটিন তাকে আমি বুঝিয়ে দিচ্ছিলাম। তাই আমি একটু বিব্রত বোধ করছি, মহিলাকে আমার রুমে পাঠিয়ে দিতে বলবো কি বলবো না।শেষে তাহের কে বললাম বসিয়ে রাখতে “আমি আসছি।“ আমি মোজাম্মেল সাহেব কে আরো কিছুক্ষন ইন্সট্রাকশান দিয়ে তার রুমে পাঠিয়ে দিলাম। এবার কিছুটা ফ্রী হয়ে রিসিপশান এ গিয়ে আমার চক্ষু চড়কগাছ। এতো রুশনী আরা আন্টি। তিনি এখানে আসলেন কিভাবে? আর তিনি যে আসতে পারেন এখানে সেটা আমার কল্পনাতেও ছিলনা। পরক্ষনেই বুঝতে পারলাম আমার দেওয়া কার্ডেই তো আমার অফিস এর এড্রেস আছে। তাহের বেটা দেখলাম মহিলার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। আন্টি ইরানী মহিলাদের মত * পরেছেন মুখটা উন্মুক্ত। কালো *র প্রান্তে ও মাথায় দেওয়া স্কার্ফের বর্ডারে সোনালী লেইছ দিয়ে কাজ করা তার ভিতরে গোলাপী মুখ একবারেই মিডিল ইস্টের অপুর্ব সুন্দরী একজন রমনীর কথাই মনে করিয়ে দেয় যেন। আমার মনে হলো আন্টিকে অনায়াসে একজন আরবীয় মহিলা বলে চালিয়ে দেওয়া যাবে। তাহের এর দৃষ্টি থেকে আন্টিকে রক্ষা করার জন্য আমি কুশলাদি জিগ্যেস বাদ দিয়েই তাড়াতাড়ি আন্টিকে আমার রুমে পথ দেখিয়ে আনলাম।রুমে আমার বিপরীতে আন্টিকে বসিয়ে আমি চেয়ারে বসলাম । এবার আমি শান্তি নিয়ে আন্টিকে দেখতে লাগলাম। মজার ঘটনা, কি একটা পরিবর্তন ধরতে গিয়েও পারছিনা ; এবার খেয়াল হলো, আন্টি তার ভুরু থ্রেড করিয়েছেন আর সেই মোছের ওপর হাল্কা কালো রোমের যে লাইনটা ছিল সেটাও নেই। তাই প্রথম বিশ্বনাথের বাসায় আন্টিকে আমি যেমন দেখেছিলাম আজকে তার চেয়েও সুন্দরী ও মুখটা গোলাপী গোলাপী লাগছে।অন্টি তার পিছনে আমার রুমের দরজা লাগানো দেখে বললেন “তোমার এখানে আর কেও আসবে না?”
-না। সারাদিনের যা কাজ ছিল, তা আমরা ১২টার ভিতরেই আমার অফিসার-স্টাফদের কে বুঝিয়ে ফিল্ড এ পাঠিয়ে দেই কাজে এখন আর তেমন কেঊ আসবে না। কেন দরজা খোলা রাখবো? সমস্যা আন্টী?-আমার মনে হলো সিলেটিরা তো আবার রক্ষনশীল।
“না থাক”
কোথায় এসেছিলেন?কেন?- আমি জিগ্যেস করলাম -সাথে সাথে আমি ব্যাস্ততার কারনে আমি তাকে আর ফোনই দিতে পারিনি, তিনি শুধু আমাকেসেইদিন রাতেই বিশ্বনাথ হতে আসার পরে ঠিকঠাক মত আসতে পেরেছিলাম কিনা সেটা জিগ্যেশ করেই আমাকে ফিরতি কল দিয়েছিলেন। নিজেকে অনেকটা অলস ও দায়িত্বহীন মনে করে আমি বললাম-
-আসলে আন্টি আমি সরি! ব্যাস্ততার কারনে আপনার সাথে আসার পর আর কথা বলতে পারিনি।
ওইযে আমার একটা দূর সম্পর্কের ভাগ্নীর কথা তোমাকে বলেছিলাম না, সে কয়েকদিন ধরে বলছে আমাকে নিয়ে আসবে আজকে সকালে গিয়ে আমাকে নিয়ে এসেছে।
-আর তারপরে আমার এখানে আসার পরে পার্লার হয়ে এসেছেন?
আন্টি একটু অবাক হয়ে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বললেন “ অহ এক্সপার্ট! ধরে ফেলেছো!!? আমার কি দোষ তুমিই তো বললে। আমি নাকি উদাসীন এ ব্যাপারে।“
-না না আন্টি আপনাকে খুবই সুন্দর লাগছে।
আহ আমার হ্যান্ডসাম বয় আমাকে আবারো সুন্দর বলছে।
-আন্টি।আপনি *টা খুলে ফেলেন,গরমে ঘামছেন; স্কার্ফ খোলার কারনে উৎসাহ নিয়ে বললাম কোথায় জানি একটা ডেভিল আইডিয়া এলো।
না না * খুলবো না, তোমার টয়লেট টা কি ব্যাবাহার করা যাবে?
-হোয়াই নট হান্ড্রেড টাইমস।
হান্ড্রেড নয় একবার ব্যাবহার করলেই হবে। আবার ও সেই খিল খিল হাসি। আমার তলপেটের নীচে একটা চিন চিন করে বিদ্যুৎ খেলে গেল।
স্কার্ফ টা হাতে নিয়ে দাড়িয়ে পাশের চেয়ার এর ঘাড়ে রাখলেন। আমার রুমের বামকোনে টয়লেট তার আগেই মেহগনি কাঠ দিয়ে বাধাইকরা ২.৫×১.৫ ফুটের একটা বেলজিয়াম আয়না যদিও টয়লেট এ ওয়াল কাভার্ড আয়না আছে। আন্টি দেখলাম চেয়ারটিকে ঠেলে বেরিয়ে যাওয়ার সময় আয়নাটার দিকে বারকয়েক ছন্দবদ্ধ ভাবে ঘাড় এপাশ ওপাশ ঘুরিয়ে নিজেকে দেখলেন। হঠাৎ দেখলাম চুলগুলোকে ঘাড়ের পিছনে দুইহাত নিয়ে এক ঝটকায় *র ভেতর থেকে বের করে আনলেন, খোপা করছেন। আর অপুর্ব দৃশ্যটা তখনই অবতরন হলো।স্কার্ফ না থাকার কারনে *র ভেতর আবৃত অবস্থায়ই প্রথম দিনের দেখায় যেটা অনুমান করেছিলাম আন্টির বিশাল বড় বক্ষ সম্পদ পরিস্ফুট। অতিভারে নিম্নমুখী,তবে ব্রা যে পড়েছেন আমি নিশ্চিত কেননা এত বড় বুক এই বয়সে নিম্নমুখী হয়েও যেভাবে সামনের দিকে দড়িয়ে আছে তা শুধু বক্ষবন্ধনীর দ্বারাই সম্ভব। আমার অবস্থান ঠিক রুমের মাঝখানে হওয়ায় আমি আন্টির পিছন সহ কোনাকুনি ভাবে বুকের অংশ দেখতে পাচ্ছিলাম,ঘাড়টি দারুন মসৃন কয়েকটি চুল হালকা ঘামে ভিজে লেগে আছে,তার উপরে চিক চিক করছে সুন্দর একটা হোয়াইট গোল্ড মিক্সড একটি চিকন চেন। আমার অশুরটা জেগে উঠলো, মনে হচ্ছিল আন্টির ঘাড়ের, এবং গলার ভাজের এই ঘামটুকু আমি চুষে খেয়ে ফেলতে পারতাম। আহ, হুশ ফিরে পেলাম।
-ওয়েট এ মিনিট রুশনি আরা আন্টি।
আমার দিকে অবাক হয়ে তাকালো, মনে হয় তাকে ওয়েট করতে বলার চেয়ে, আমি পুরো নাম ধরে ডেকেছি এই প্রথম, সেজন্যেই বোধ হয় অবাক হওয়া।
আমি ডান কর্নারে রাখা ফাইল কেবিনেট হতে একটা নতুন ঝক ঝকে টেরি টাওয়েল এগিয়ে দিলাম- বাথরুমেরটা ব্যাবহার করা, এটা নতুন আপনি ইউজ করেন।
“থ্যাঙ্কস। শোন আমার পূরো নাম বলতে গেলেতো তোমার দাঁত ভেঙ্গে যেতে পারে, আমার একটা ছোট্ট নাম আছে, তোমার আঙ্কেল সহ সবাই আমাকে রুশী নামে ডাকতো। কাজেই তুমি আমাকে রুশী আন্টি বলেই ডেকো। টাওয়েলটা হাতে নিয়ে আবার বললেন- একেতো আন্টি বলো, তারপরে যদি পুরো নামে ডাকো তাহলে আরো বুড়ী বুড়ী লাগে। “
-ইটস ওকে।- সেই থেকে জিসানের মা, আমার রুশী আন্টি।যার সাথে আমার জীবনের এক গভীর গোপন অধ্যায় লিখা হয়েছিলো।বলতে পারি আমার জীবনের এখন পর্যন্ত স্বর্গীয় সময় সেটা।
রুশী
@জানভীরা
ক. পরিচয়
মানুষ অনেক সময় না জেনে কিছুতে সম্মতি দিতে চায় না, কিন্তু পরবর্তীতে সেই বিষয়টিতে গিয়ে বুঝতে পারে যে, সে কি ভুল করতে যাচ্ছিল । ঠিক আমার সাথে রুশী আন্টির দেখা হওয়াটা ছিল সে ধরনেরই একটা ঘটনা। আমি তখন সবে মাত্র প্লান ইন্টারন্যাশনাল এ যোগ দিয়ে সিলেট এ গিয়েছি। সারাদিন অফিস নিয়েই ব্যাস্ত থাকতে হয়। আর আমার দায়িত্ব হলো এডোলসেন্স এন্ড এডুকেশান।এর বিভাগীয় দায়িত্ব আমার। আমাদের এই এনজিও সাহায্যপুষ্ট কলেজগুলো কেমন চলছে তার দেখাশোনা করেই এবং সেই সাথে নতুন কলেজ এর অন্তর্ভুক্তি, আর্থিক সাহায্য এগুলো করেই আমার দিন কাবার।
আমি কিশোরগঞ্জের মানুষ, সিলেট থেকে কিশোরগঞ্জ থেকে প্রতি সপ্তাহান্তে আমাকে প্রথম প্রথম আসতে-যেতে হতো। মা বললেন প্রতি সপ্তাহ শেষে এভাবে ঘন ঘন আসা যাওয়া করাটা যেমন ঝুকিপুর্ন তেমনি অর্থেরও অপচয়।বর্তমান সময়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কই বলতে গেলে এই আওয়ামী অপদার্থ যোগাযোগ মন্ত্রীর আমলে ভাল আছে,কারন এটা ওয়ার্ল্ড ব্যাংক করেছিলো বিএনপির সময়ে ট্রান্সএশিয়ান হাইওয়ের অংশ হিসাবে। তবে এই অপদার্থ আরো তিন বছর গদিতে থাকলে এটাও যাবে। সুন্দর রাস্তা গাড়ী চলে অনেক দ্রুত, সাথে আবার এইরকম হাইওয়েতে নামান হয়েছে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা। প্রতি সপ্তাহেই একটা না একটা দুর্গটনা ঘটছেই। যেহেতু এখনো বিয়ে করিনি’ তাই মায়ের আদেশ অনুসরন করেই মাসে দুই বার করে আসা শুরু করলাম কিশোরগঞ্জে, আর জরুরী প্রয়োজনে তো আছেই। শুক্রবার শনিবার সিলেটে থাকি অথচ আমার বন্ধু লিটুর লন্ডনের বন্ধু জিসানের মায়ের সাথে আমি বিশ্বনাথ এ দেখা করতে যাইনি শুনেই আমার ঊপর লিটু একচোট নিয়ে গালি ঝাড়তে লাগলো। -“বানচোত তরে কত কইরা কমু, জিসান বার বার কইরা আমারে জিগাইতেছে তুই গেছস কিনা। গিয়া কাগজগুলা একটু দেখবি।“ আমরা বন্ধুরা যখন কথা কই তখন এভাবেই কথা বলি ভার্সিটিতে থাকা কালিন ভাষা এখনো চলে। আর অপরিচিত কেঊ হলে তখন একেবারেই প্রমিত শুদ্ধ বানান এর উচ্চারনে কথা বলি। নরেন স্যারের উচ্চারনের কয়েকটি ক্লাস আমি করেছিলাম তো তাই। লিটুর অভ্যাস একবার মুখ থেকে গালি বের হয়ে গেলে যতক্ষন কথা বলে গালি চলতেই থাকে, তাই গালির হাত হতে বাঁচতে দ্রুত বললাম “ দোস্ত, দোস্ত বাপ না আমার ,আর গাল্যাইসনা আমি আগামী শুক্রবারেই যাইতাছি। “
ইমেইলে ওর পাঠানো এড্রেস নিয়ে রওনা দিলাম পরের শুক্রবারে দুপুরের খাওয়া দাওয়া সেরে। জিসান এর মায়ের নাম রুশনী আরা চৌধুরী। অধিকন্ত বশির ওরফে লিটু জিসান চৌধুরীর তৈরি ওয়ার্ড আর্ট এর একটা ফাইল পাঠিয়ছে যেখানে সিলেট থেকে একেবারেই বিশ্বনাথ থানা সদরে তাদের বাড়ীতে কিভাবে যাবো সেটাও আকিয়ে দেখানো আছে। কাজেই ইমেইলে দেওয়া রুশনী আরা চৌধুরীর মোবাইল নম্বরটা যদিও নিলাম কিন্তু সেটাতে কোন কল দিলাম না। এক্ষেত্রে কল দিয়ে যাওয়াটা কেন জানি নিজেকে অপদার্থ অপদার্থ মনে হচ্ছে। আসলে জিসানদের পরিবার সম্পর্কে আমি তেমন কিছু জানি না। ওদের পুরোপরিবারই লন্ডনে সেটেল্ড এবং বৃটিশ সিটিজেন। ওর মা বিগত তিন মাস ধরে দেশে এসেছেন ওদের বিশ্বনাথ থানা সদরের নিজেদের জায়গাটা বিক্রি করে ফেলবেন। কারন জিসান এর বাবা পাঁচ বছর হলো মারা গিয়েছেন। তাই এখানে আর তেমন ওদের আসা হয় না, সে কারনেই এটা ওরা বিক্রি করে ফেলবে। তবে কিছু কিছু কাগজপত্র লাগবে যেগুলো বিক্রির সময়ে তুলতে হয়। সেটা ওই মহিলার দ্বারা একা সম্ভব নয়।বশির এর সাথে আলাপকালে জিসান জানতে পেরেছিলো যে আমি ঢাকা থেকে সিলেট এ পোস্টেড হয়েছি চাকুরী সুবাদে,তাই জিসান বসির কে খুব আন্তরিকভাবেই অনুরোধ করছিলো আমি যেন যাই ওর মার সমস্যাগুলো হ্যান্ডেল করে মহিলাকে সাহায্য করি। আর সে কারনেই বশির বার বার আমাকে তাগদা দিতে লাগে। আমার আগ্রহ হচ্ছিলো না , প্রথমত আমি সিলেইট্যাদেরকে জঙ্গল এর ভুত ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারিনা। এই গুলার টাকা আছে কিন্তু কোন কালচার নাই। প্রমিত ভাষায় কিছু বলতে গেলে বা জিগ্যেস করতে গেলে আপনাকে বুঝেও না বোঝার ভান করে বলবে “কিতা মাতুইন?” বুঝঝিনা।“ তাই ভাবছিলাম কেমন না কেমন আরেক বুড়ী ভুতের সাথে দেখা হবে। আগ্রহ হচ্ছিল না বলেই এত গড়িমসি।
বিস্বনাথ থানা সদরে এসেতো অবাক হয়ে গেলাম এতো ঢাকার আরেক মহল্লার মত। ৮/১০তলা বিল্ডিং পর্যন্ত এখানে আছে। সাধারন জেলা শহরের চাইতেও বড়। সব লন্ডনের পয়সা দিয়ে তৈরি হয়েছে। বাড়ীর সামনে এসেতো আরো অবাক হলাম অনেক বড় বাড়ী।দেওয়াল ঘেরা, প্রচুর ছোট বড় পুরোনো গাছ গাছালি দিয়ে ঢাকা। গাছগুলোর উপরে বিকালের রোদ হেলে পড়েছে। বাড়ীর গেটে এসে দাড়ালাম ,লোহার দরজায় কোন ফাক-ফোকরও নেই যে; ফাক দিয়ে বাড়ীটির অস্তিত্ব বুঝতে পারবো। তবে দেওয়ালের উপর দিয়ে অনেক দূরে একটি বাড়ীর ছাদের অস্পষ্ট অস্তিত্ব দেখা যাচ্ছে। আমি গেটের কলিং বোতাম এ চাপ দিলাম। বাজলো কি বাজলো না বুঝতে পারলাম না। ভাগ্য ভালো, বেশীক্ষন অপেক্ষা করতে হলো না। আনুমানিক পচিশ বছর বয়স হবে এমন একটি মহিলা লোহার গেটের সাইড এন্ট্রেন্স খুলে জিগ্যেস করার আগেই আমি বললাম “এটা জিসানদের বাড়ী? আমি জিসানের মায়ের কাছে এসেছি, লন্ডনে ওর বন্ধু লিটু আমাকে আসতে বলেছে।“ একবারে সব কথা বলে গেলাম কারন জেভাবে মেয়েটি সাইড ডোর ঢেকে দাঁড়িয়ে ছিল তাতে মনে হয়েছিল মেয়েটি বুঝি আবার বাড়ীর ভিতরে যাবে এবং নিশ্চিত হয়ে আবার আসবে, তাই আমি সমস্ত রেফারেন্সগুলো দিলাম যেন এক বারেই সব ফয়সালা হয়ে যায় জিসান এর মায়ের কাছে।কিন্তু সে গেল না, অবাক করে দিয়ে মেয়েটি এবার সরে গিয়ে আমাকে বাড়ীর ভিতরে ঢুকবার সু্যোগ করে দিয়ে সাইড গেট লাগিয়ে আমার সামনে দিয়ে যেতে যেতে বলল “ আমার লগে আইন।“ এবার আমি চতুর্দিক লক্ষ্য করলাম গ্রামের একটা বাড়ী যেমন পুকুর নিয়ে হয় এই বাড়ীটিও মনে হয় সে রকমি ছিল। গেট থেকে চল্লিশ গজের মত হবে একেবারেই মাঝ খানে বাড়িটি। পথ পাথরের টুকরা দিয়ে ঢাকা। একতালা বাড়ী লাল ইট দিয়ে তৈরি, কাচের স্লাইডিং জানালা। কোন আলো নেই। মনে হচ্ছে বাড়িটিতে কেঊ নেই। বাড়ী থেকে হাত বিশেক দূরে লোহার বার দিয়ে একটি দোলনা ঝুলানো আছে। বেশ পুরোন মনে হলো।বাড়ীর পিছনে অনেকটা ফাকা তারপরে দেওয়াল সম্ভবত অই ফাঁকা নিচু হওয়া জায়গাটা পুকুর হবে। সাধারনত মানুষ পুকুর বাড়ীর সামনে করে আর এখানে দেখলাম বাড়ীর পিছনে। বারান্দার গেট খুলে সামনের রুমে ঢুকে গিয়ে মেয়েটি লাইট জ্বালালো আবার বারান্দায় এসে আমাকে বলল “আপনে বইন তাইন আইবা’। শালার সিলেইট্যা ভুত। আবার মন পেচিয়ে একটা গালি দিলাম। “না জানি যেইন আইবা তাইন দেকতে কেমুন হইবা?” সিলেইট্যা ভাষাতেই ভেঙ্গাতে লাগলাম।তবে মনে মনে। আমি রুমের পুরনো কাঠের সোফা, ফ্লোর এর মোজাইক আর দেওয়ালে কিছু মহিলা হাতের তৈরি নকসা ফ্রেম দেখতে লাগলাম।
“আস্লালামুয়ালাইকুম, আপনে রনি নি বা?’ দ্রুতই তিনি রুমে ঢুকে আমার বিপরিত সোফাটার উপর বসে গেলেন। আমি ধাতস্ত হতে একটু সময় নিলাম।দ্রুত দাঁড়িয়ে সালাম এর উত্তর দিলাম ‘জি আমি রনি। লিটু আমাকে পাঠিয়েছে’
বইন বা বইন দারাইলায় কেনে?
আমি বসলাম,একটু সময় নিলাম তাকে দেখে নেওয়ার। একজন মহিলা যার বয়স আনুমানিক পয়তাল্লিশ হবে এই বয়সে মানুষ এমন সুন্দর থাকে! যৌবনে তিনি কেমন সুন্দর ছিলেন! হাসি হাসি একটা প্রসন্ন ভাব তার চেহারায় ।
“জিসান আমারে মাতছিলা, কইলা আফনে আইবা। ইগ্যুতো বাক্কা আগের কতা, আফনে আর আইছুইন না দেকিয়া ভাবলাম আর আইতায় না।“
আমার মেজাজ একেবারেই খারাপ হয়ে গেলো, এমন একটা সুন্দরী মহিলা তার মুখে এমন ভাষা বড়ই বেমানান লাগছে। তাছাড়া একজন মেহমান এসেছে তার সৌজন্যে তো একটু ভালো করে কথা বলা উচিত।
“আন্টি আই ডোন্ট আন্ডারস্ট্যান্ড ইয়র দিস ফাকিং লোকাল সিলেটি ডায়ালেক্ট, রেদার আ মোস্ট বীউটিফুল ওমেন এভার আই হ্যাভ সীন শুড স্পীক উইথ স্ট্যান্ডার্ড বাংলা।“ আমি একটা রিস্ক নিলাম ভাবলাম মহিলা অশিক্ষিতও যদি হয়, কিন্তু দীর্ঘদিন লন্ডনে ছিলেন এট-লিস্ট আমার ইংরেজী উচ্চারন বুঝতে পারবেন আমি কি বলতে চাচ্ছি। আমাকে অবাক করে দিয়ে তিনি বললেন “অহ আই এম সরি, আই মাস’ন্ট লেট ইউ ফেল ইন ট্রাবল, বাট মাইন্ড ইয়উর ল্যাঙ্গুয়েজ দ্যা ব্রাউন কালার মোস্ট হ্যান্ডসাম বয় এভার আই হ্যাভ সীন।“ বলেই তিনি সুন্দর একটা হাসি দিলেন তাতে মনে হলো আমার কথায় তিনি খুব একটা মাইন্ড করেন নি। বরং এবার আমি একটু লজ্জা পাওয়াতে তিনি মনে হয় উলটা উদ্বেগ এ পরে গেলেন। পরক্ষনেই বললেন,” আচ্ছা বাদ দাও আমি চেষ্টা করবো মোটামুটি একটা ভালো বাংলায় কথা বলতে। কিন্তু তোমাদের অই নাটক এর মত ভাষাতে পারবো না।বলেই এবার একটা খিল খিল করে অল্প বয়েসি মেয়েদের মত হাসি দিলেন।আমি অবাক হয়ে গেলাম ইংরেজীটা একেবারেই বৃটিশ উচ্চারনে তিনি বললেন। তার এই হাসির কারনেই কিনা আমি আবার তাকে পুরোপুরি নিরীক্ষণ না করে পারলাম।নাহ, বাঙ্গালী মেয়ে হিসাবে লম্বাটা দারুন হবেন,পাঁচ ফুট চার ইঞ্চির মত, সিল্কি চুল লালাভ কালার, সম্ভবত কালার করে নেওয়া, কিন্তু সন্দেহ জেগেছে সিথির আশে পাশে গোটা বিশেক সাদা চুল তাহলে কেন থাকবে?তবে, এটা তার বয়সটাকে মার্জিতভাবে উপস্থাপন করেছে।এবং আমার সব চেয়ে পছন্দ, চুলগুলো অর্ধপৃষ্ট পর্যন্ত লম্বা। মরা লাল ও খয়েরি রঙের স্ট্রাইফ একটা ফুললেন্থ ম্যাক্সি একেবারেই গোরালী পর্যন্ত, ম্যাক্সিটা খুব বেশী ঢোলা নয় আবার বডি ফিটিং ও নয়। যেকারনে আমার ধারনা উনার শরীরটা না ফেটি, আবার না একেবারেই স্লীম। তবে ম্যাজেন্টা কালার এর ওড়নাটা বুকের ওপর খুব সজতনে রাখা, থাকলেও একটা বিষয় একেবারেই স্পস্ট মনে হচ্ছে ওনার বক্ষ সম্ভার বিশাল হবে।
“কতদিন হলো আপনি সিলেট এ এসেছেন, থাকেন কোথায়?” এইতো কত সুন্দর ভাষায় তিনি আমাকে জিজ্ঞ্যেস করলেন ।
“আন্টি আপনি আমাকে তুমি করে বলেন, লিটুকে তো আপনি তুমি করে নিশ্চয় বলেন।আমি এসেছি এইতো আড়াই মাসের মত হলো, আর আমার অফিস উপশহরে; থাকি আপাতত আমার কিছু বন্ধু মিলে আম্বর খানা হাঊজিং এস্টেট এ একটা ফ্লাট নিয়েছে, সেখানেই। অনেক টা মেসের মতই। তবে উন্নত।“
“খাওয়া দাওয়া কোথায় কর?”
আমাদের ফ্লাটেই রান্না হয়। বুয়া রান্না করে।
“রান্না কেমন?”
যাচ্ছে তাই,বাচার জন্য খাওয়া।
“বিয়ে কর নি? তোমার বন্ধুর তো দুই বাচ্ছা,জিসানের তিন।“
আমি একটু লজ্জা পেলাম, দেওয়ালের দিকে তাকিয়ে না বললাম। আমাকে অবাক করে দিয়ে তিনি বললেন
“অহ মি ঘোশ, মাই হ্যান্ডসাম বয় টার্ন্ড টু রেড।“
আন্টি অবজেকশান, আই এম নট হ্যান্ডসাম এজ লাইক এজ মাই লর্ড মেড ইঊ, ইঊর বিউটি ইস লাইক দ্যা সান এন্ড মাইন ইস আ ম্যান মেড স্যাটেলাইট, অ্যান্ড ইফ দ্যাট কামস টু ইঊ ইট উইল বি বার্ণ্ট আউট টু এশ। লর্ড শব্দটি উচ্চারনের সময় উপরের দিকে আঙ্গুল উত্তোলন করেছিলাম।
“বাহ-বাহ ভালোই কথা জানো, তা এ পর্যন্ত কত জনকে পটাতে পেরেছো? “ জিজ্ঞ্যেশ করেই আবার সেই খিল খিল হাসি।
একটিও না আন্টি।
“রিয়েলি?”
ইটস এ ফ্যাক্ট!
“ভেরী সেড!”
আবারো সেই খিল খিল হাঁসি। এবার আক্রমনটা আমিই করলাম।
তবে আন্টি আপনি একটু উদাসীন।
“কেন”! আন্টি সম্বিৎ ফিরে পেয়েছেন যেন।
আমি আমার ডান হাতের তর্জনী টা মুখের উপর নিয়ে, আমার ভ্রুর উপর এবং মুখের উপর ঘোরাতে লাগলাম। বললাম এগুলো অনেক দিন থ্রেড করা হয় নি আপনার।বলে আমি মুচকি হাসতে লাগ্লাম।আমার মনে হলো অনেক আগে পার্লারে যাওয়ায় সীমানায় নতুন করে ভ্রু উঠেছে, আবার আন্টির মোছের উপর হাল্কা কয়েকটি লোম যেটা তুলে ফেলা উচিৎ।
“অহ আমি তো এখান থেকে একা পার্লারে যাই না, আমার একটা দূর সম্পর্কের ভাগ্নি আছে সেই আমাকে নিয়ে যায়। ওর অনেক দিন ধরে সময় হচ্ছে না আমাকে এখান থেকে নিয়ে যাবে।দেখছো ছেলে বলে প্রেম করেনি তাহলে এসব মেয়েলি ব্যাপার জানলো কি করে!!!”
আমার বড় বোনের কাছে থেকে। ও তো প্রায়ই যেত।
“অহ, তোমার বড় বোন আছে? কি করে?”
বিয়ে হয়ে গিয়েছে,হাউজ ওয়াইফ।আমরা এক ভাই এক বোন।
অহ ফাইন।-দেখেছো !! কিছুই খেতে তো দিলাম না আমার হ্যান্ডসাম বয়টাকে শুধু কথাই বলে যাচ্ছি ।” -বলেই কাজের মেয়ে নার্গীস কে ডাক দিলেন। আন্টির মাধ্যমে জানতে পারলাম, এই নার্গীস এর বাড়ী আসলে ময়মনসিং এ ওর স্বামী সহ থাকার জন্য আন্টি তার বাড়ীর পিছনে সীমানার ভিতরে ওদের জন্য একটা টিনশেড ঘর তুলে দিয়েছেন। আন্টি ওর স্বামীকে একটা সিএনজিও কিনে দিয়েছেন। পাঁচ বছর ধরে এই বাড়ীর দেখাশোনা করছে। ওদের কোন বাচ্চা নেই। আলাপে আলাপে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে এলো।আন্টি খুব বার বার করে বলছেন রাতের খাবারটা খেয়ে যেতে। সময়টা আগস্ট এর দিক, বেশ গরম। তাই আর রাতে তাকে কস্ট দিতে চাইলাম না। আমিতো তাকে জানিয়ে আসিনি কাজেই তাকে এই পরিশ্রমে ফেলাটা আমার মন মত নয়। যদিও জিসানের মায়ের সাধাটা ছিল একেবারেই আন্তরিক, অধিকন্ত মনে হচ্ছিল উনি নিঃসঙ্গ মানুষ কোথায় যেন আমার এই থাকাটা তিনি আরো উপভোগ করতে চাচ্ছেন। আর আমাকে কেন জানি হ্যান্ডসাম বয় বলাতে, আমিও কোথায় একটা আকর্ষন বোধ করছি। যেটাকে বুঝতে দিতে চাই না। আমি চলে আশার সময় আন্টি আমার অনেক কাছাকাছি হয়েছিলেন,উনার শরীর থেকে ঠিক কেমন জানি একটা অতি হালকা কামিনি ফুলের গন্ধের মত সুবাস পেয়েছিলাম, আর লক্ষ্য করলাম উনাকে ফর্সা বলাটা বোকামী হবে, বলতে হবে গোলাপী। আমাকে একেবারে বাহিরের গেট পর্যন্ত এগিয়ে দিলেন। দেওয়ার সময় বললেন “তোমার সেল নম্বরটা কিন্তু আমাকে দিলা না। কারন ঠিক মত পৌছাতে পেরেছো কিনা জানব কি করে ?”
আসলে আমি বুক ঢিপে ঢিপে এটাই চাইছিলাম, যেন আন্টি আমার মোবাইল নম্বরটা নেন। আবার যেচে তাকে দিতে মন সায়ছিল না। যেহেতু তারটা আমার কাছে আছে।আমার ভিজিটিং কার্ডটা দিলাম উনাকে।
“আমি তোমাকে ফোন দিব।”
জ্বী
বাড়ীটি থেকে বের হয়ে মনে হলো কোথায় যেন বিশ্ব জয় করেছি। ফুর ফুরে মেজাজে কিশোর কুমার এর গানের সেই কলিটা বেরিয়ে এলো “......এতদিন কোথায় ছিলে পথ ভুলে তুমি কি এলে।“
সপ্তাহ দুই পরে একদিন অফিস এ বসে প্রোগ্রাম সিডিউলটা দেখছিলাম।রিসিপশান থেকে ইন্টারকমে তাহের জানালো “স্যার আপনার একজন লেডী গেস্ট এসেছে।“
আমি একটু ভিমড়ী খেলাম যেন। আমার আবার লেডী গেস্ট কে আসবে এখানে। সিলেট শহরে এখন পর্যন্ত কোন পরিবারের সাথেই আমার পরিচয় হলো না। আর আমারো তো কোন আত্মীয়স্বজন কেঊ নেই।সামনে বসেছিলো আমার সেকশানের ডেপুটি ম্যানেজার মোজাম্মেল সাহেব।সারাদিনের ইন্সপেকশানের একটা রুটিন তাকে আমি বুঝিয়ে দিচ্ছিলাম। তাই আমি একটু বিব্রত বোধ করছি, মহিলাকে আমার রুমে পাঠিয়ে দিতে বলবো কি বলবো না।শেষে তাহের কে বললাম বসিয়ে রাখতে “আমি আসছি।“ আমি মোজাম্মেল সাহেব কে আরো কিছুক্ষন ইন্সট্রাকশান দিয়ে তার রুমে পাঠিয়ে দিলাম। এবার কিছুটা ফ্রী হয়ে রিসিপশান এ গিয়ে আমার চক্ষু চড়কগাছ। এতো রুশনী আরা আন্টি। তিনি এখানে আসলেন কিভাবে? আর তিনি যে আসতে পারেন এখানে সেটা আমার কল্পনাতেও ছিলনা। পরক্ষনেই বুঝতে পারলাম আমার দেওয়া কার্ডেই তো আমার অফিস এর এড্রেস আছে। তাহের বেটা দেখলাম মহিলার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। আন্টি ইরানী মহিলাদের মত * পরেছেন মুখটা উন্মুক্ত। কালো *র প্রান্তে ও মাথায় দেওয়া স্কার্ফের বর্ডারে সোনালী লেইছ দিয়ে কাজ করা তার ভিতরে গোলাপী মুখ একবারেই মিডিল ইস্টের অপুর্ব সুন্দরী একজন রমনীর কথাই মনে করিয়ে দেয় যেন। আমার মনে হলো আন্টিকে অনায়াসে একজন আরবীয় মহিলা বলে চালিয়ে দেওয়া যাবে। তাহের এর দৃষ্টি থেকে আন্টিকে রক্ষা করার জন্য আমি কুশলাদি জিগ্যেস বাদ দিয়েই তাড়াতাড়ি আন্টিকে আমার রুমে পথ দেখিয়ে আনলাম।রুমে আমার বিপরীতে আন্টিকে বসিয়ে আমি চেয়ারে বসলাম । এবার আমি শান্তি নিয়ে আন্টিকে দেখতে লাগলাম। মজার ঘটনা, কি একটা পরিবর্তন ধরতে গিয়েও পারছিনা ; এবার খেয়াল হলো, আন্টি তার ভুরু থ্রেড করিয়েছেন আর সেই মোছের ওপর হাল্কা কালো রোমের যে লাইনটা ছিল সেটাও নেই। তাই প্রথম বিশ্বনাথের বাসায় আন্টিকে আমি যেমন দেখেছিলাম আজকে তার চেয়েও সুন্দরী ও মুখটা গোলাপী গোলাপী লাগছে।অন্টি তার পিছনে আমার রুমের দরজা লাগানো দেখে বললেন “তোমার এখানে আর কেও আসবে না?”
-না। সারাদিনের যা কাজ ছিল, তা আমরা ১২টার ভিতরেই আমার অফিসার-স্টাফদের কে বুঝিয়ে ফিল্ড এ পাঠিয়ে দেই কাজে এখন আর তেমন কেঊ আসবে না। কেন দরজা খোলা রাখবো? সমস্যা আন্টী?-আমার মনে হলো সিলেটিরা তো আবার রক্ষনশীল।
“না থাক”
কোথায় এসেছিলেন?কেন?- আমি জিগ্যেস করলাম -সাথে সাথে আমি ব্যাস্ততার কারনে আমি তাকে আর ফোনই দিতে পারিনি, তিনি শুধু আমাকেসেইদিন রাতেই বিশ্বনাথ হতে আসার পরে ঠিকঠাক মত আসতে পেরেছিলাম কিনা সেটা জিগ্যেশ করেই আমাকে ফিরতি কল দিয়েছিলেন। নিজেকে অনেকটা অলস ও দায়িত্বহীন মনে করে আমি বললাম-
-আসলে আন্টি আমি সরি! ব্যাস্ততার কারনে আপনার সাথে আসার পর আর কথা বলতে পারিনি।
ওইযে আমার একটা দূর সম্পর্কের ভাগ্নীর কথা তোমাকে বলেছিলাম না, সে কয়েকদিন ধরে বলছে আমাকে নিয়ে আসবে আজকে সকালে গিয়ে আমাকে নিয়ে এসেছে।
-আর তারপরে আমার এখানে আসার পরে পার্লার হয়ে এসেছেন?
আন্টি একটু অবাক হয়ে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বললেন “ অহ এক্সপার্ট! ধরে ফেলেছো!!? আমার কি দোষ তুমিই তো বললে। আমি নাকি উদাসীন এ ব্যাপারে।“
-না না আন্টি আপনাকে খুবই সুন্দর লাগছে।
আহ আমার হ্যান্ডসাম বয় আমাকে আবারো সুন্দর বলছে।
-আন্টি।আপনি *টা খুলে ফেলেন,গরমে ঘামছেন; স্কার্ফ খোলার কারনে উৎসাহ নিয়ে বললাম কোথায় জানি একটা ডেভিল আইডিয়া এলো।
না না * খুলবো না, তোমার টয়লেট টা কি ব্যাবাহার করা যাবে?
-হোয়াই নট হান্ড্রেড টাইমস।
হান্ড্রেড নয় একবার ব্যাবহার করলেই হবে। আবার ও সেই খিল খিল হাসি। আমার তলপেটের নীচে একটা চিন চিন করে বিদ্যুৎ খেলে গেল।
স্কার্ফ টা হাতে নিয়ে দাড়িয়ে পাশের চেয়ার এর ঘাড়ে রাখলেন। আমার রুমের বামকোনে টয়লেট তার আগেই মেহগনি কাঠ দিয়ে বাধাইকরা ২.৫×১.৫ ফুটের একটা বেলজিয়াম আয়না যদিও টয়লেট এ ওয়াল কাভার্ড আয়না আছে। আন্টি দেখলাম চেয়ারটিকে ঠেলে বেরিয়ে যাওয়ার সময় আয়নাটার দিকে বারকয়েক ছন্দবদ্ধ ভাবে ঘাড় এপাশ ওপাশ ঘুরিয়ে নিজেকে দেখলেন। হঠাৎ দেখলাম চুলগুলোকে ঘাড়ের পিছনে দুইহাত নিয়ে এক ঝটকায় *র ভেতর থেকে বের করে আনলেন, খোপা করছেন। আর অপুর্ব দৃশ্যটা তখনই অবতরন হলো।স্কার্ফ না থাকার কারনে *র ভেতর আবৃত অবস্থায়ই প্রথম দিনের দেখায় যেটা অনুমান করেছিলাম আন্টির বিশাল বড় বক্ষ সম্পদ পরিস্ফুট। অতিভারে নিম্নমুখী,তবে ব্রা যে পড়েছেন আমি নিশ্চিত কেননা এত বড় বুক এই বয়সে নিম্নমুখী হয়েও যেভাবে সামনের দিকে দড়িয়ে আছে তা শুধু বক্ষবন্ধনীর দ্বারাই সম্ভব। আমার অবস্থান ঠিক রুমের মাঝখানে হওয়ায় আমি আন্টির পিছন সহ কোনাকুনি ভাবে বুকের অংশ দেখতে পাচ্ছিলাম,ঘাড়টি দারুন মসৃন কয়েকটি চুল হালকা ঘামে ভিজে লেগে আছে,তার উপরে চিক চিক করছে সুন্দর একটা হোয়াইট গোল্ড মিক্সড একটি চিকন চেন। আমার অশুরটা জেগে উঠলো, মনে হচ্ছিল আন্টির ঘাড়ের, এবং গলার ভাজের এই ঘামটুকু আমি চুষে খেয়ে ফেলতে পারতাম। আহ, হুশ ফিরে পেলাম।
-ওয়েট এ মিনিট রুশনি আরা আন্টি।
আমার দিকে অবাক হয়ে তাকালো, মনে হয় তাকে ওয়েট করতে বলার চেয়ে, আমি পুরো নাম ধরে ডেকেছি এই প্রথম, সেজন্যেই বোধ হয় অবাক হওয়া।
আমি ডান কর্নারে রাখা ফাইল কেবিনেট হতে একটা নতুন ঝক ঝকে টেরি টাওয়েল এগিয়ে দিলাম- বাথরুমেরটা ব্যাবহার করা, এটা নতুন আপনি ইউজ করেন।
“থ্যাঙ্কস। শোন আমার পূরো নাম বলতে গেলেতো তোমার দাঁত ভেঙ্গে যেতে পারে, আমার একটা ছোট্ট নাম আছে, তোমার আঙ্কেল সহ সবাই আমাকে রুশী নামে ডাকতো। কাজেই তুমি আমাকে রুশী আন্টি বলেই ডেকো। টাওয়েলটা হাতে নিয়ে আবার বললেন- একেতো আন্টি বলো, তারপরে যদি পুরো নামে ডাকো তাহলে আরো বুড়ী বুড়ী লাগে। “
-ইটস ওকে।- সেই থেকে জিসানের মা, আমার রুশী আন্টি।যার সাথে আমার জীবনের এক গভীর গোপন অধ্যায় লিখা হয়েছিলো।বলতে পারি আমার জীবনের এখন পর্যন্ত স্বর্গীয় সময় সেটা।