08-04-2019, 01:37 PM
(This post was last modified: 08-04-2019, 01:42 PM by Henry. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
না লালির বাচ্চা হয়নি।তার আগেই ও যে কোথায় চলে গেল খোঁজ নেই।এদিকে পাগলটা আস্তানা গেড়েছে জমিয়ে। মাথা ভর্তি ঝাঁকড়া চুল,দীর্ঘদিন না কাটা দাড়ি গোঁফ,ভীষন নোংরা চেহারার।গলায় একটা ঘুমসিতে যতরাজ্যের মাদুলি আর তামার পয়সা ঝোলানো।একটা ছেঁড়া,ফাটা ব্যাগ।ওতে যে কি আছে কে জানে।আঁকড়ে রাখে সবসময়।কিন্তু সবসময়ই যেন কিছু ভাবছে।একা একা দাঁত বের করে হাসছে।এবড়ো খেবড়ো দাঁতগুলোও জঘন্য।হলদে দাঁতে লাল ছোপ ছোপ।ঝুঁকে ঝুঁকে হাটে।দিনের বেলা মাঝে মাঝে হাইওয়ের দিকে যায়।রাস্তায় লোকের ফেলে যাওয়া পোড়া বিড়ি তুলে খায়।কিন্তু বেশি দূর যায়না।এই পাগলটাকে শুভ পর্যবেক্ষন করে।সমীরের কাছে জেনেছিল গোয়েন্দারা অনেক সময় পাগল সেজে থাকে।কিন্তু এর ধারে কাছে যায়না শুভ।ভীষন নোংরা বলে।তবে পাগলটা বেশি দূর যায়না আবার ফিরে আসে।বেশীর ভাগ সময়ই বাড়ীর পেছনের চাতালে কাটায়।
মাকেই বাজার যেতে হয়।কিন্তু বাবা বাড়ী থাকলে বাবা যায়।রবিবার সকালে বাবা বলল---শুভ আজ মাটন খাবি?
শুভ আনন্দে বলল---খাবো খাবো।
অর্চনা রান্না ঘরে চা করতে করতে বলল--বাপ--ছেলেতে খালি খাওয়ার চিন্তা না।
---আঃ অর্চনা।একটাই তো ছুটি পাই।শুভর বাবা মায়ের কাছে গিয়ে বলল।
---আর আমার তো কোনো ছুটি নেই।
---শুভ তবে আজ আর মাটন হচ্ছে না।তোর মা নাকচ করে দিয়েছে।
শুভ মনমরা হয়ে যায়।অর্চনা শ্বশুর মশাইকে চা দিয়ে দেবজিৎকে দেয়।সকালের কাজ সেরে সোজা বাথরুমে যায়।স্নান করে বেরিয়ে আসে একটা সাধারণ সুতির নাইটি পরে।
বেরিয়ে এসেই বলল---কি হল তুমি এখনো বাজার যাওনি?মাটন না কি আনবে বললে যে?
শুভ জানে তার মা এরকমই।সংসারে সব কাজ সামলেও তাদের আবদার মেটায়।
ছোট্ট ছেলে রাহুল নিচে খেলে বেড়াচ্ছে।মাটন খাওয়ার টোপে মা শুভকে অঙ্ক করতে বসিয়েছে।শুভ না পারলে রান্না ঘর থেকে সাহায্য করছে।
এদিকে অর্চনার শ্বশুরমশাই আবার চিবোতে পারেন না।তার জন্য তরল স্টু করে দিতে হবে।সবকিছু সামলেই অর্চনা চল্লিশ ছুঁই ছুঁই আটত্রিশ বছরের গৃহকত্রী।
শুভ বলল---মা অঙ্ক গুলো কমপ্লিট।রেঁধে রেখে ঘাম মুছতে মুছতে বেরিয়ে এলো মা।
খাতাটায় চোখ বুলিয়ে বলল---বই গুছিয়ে নিচে দাদুর ঘরে ভাই আছে ডেকে নিয়ে আয়।
শুভ এইটে পড়লেও এখনো মা স্নান করিয়ে দেয়।দুই ভাইকে মা স্নান করিয়ে দিয়ে বলল---কই গো এবার তুমি স্নানে যাও।
দেবজিৎ স্নান করে বেরিয়ে আসতেই দেখলো টেবিলে সাজানো খাবার।
খাওয়া-দাওয়ার পর।অর্চনা টেবিলে এঁটোকাঁটা তুলতে এসে বলল---দেখলে তো এই তোমাদের খাওয়া।খাবে কম নস্ট করবে বেশি।
---আহা অর্চনা।উচ্ছিষ্টগুলো পাগলটাকে দিয়েসো না।তবে আর নস্ট হল কই।
---হ্যা হাত পুড়িয়ে আমি তো পাগলের জন্য রাঁধি।
এঁটো খাবারগুলো যখন মা পাগলকে দিতে যায় শুভ পেছন পেছন যায় সবসময়।পাগলটা যেন হামলে পড়ে খাবারের ওপর।
অর্চনা খাবারটা পাগলের কাছে নিয়ে যেতে পাগলটা তার অ্যালুমিনে থালায় নিয়ে নেয়।
শুভ বলল---মা দেখো কেমন গোগ্রাসে গিলছে?
---দেখ দেখি,বেচারা কত কষ্টে আছে।
---মা ওকি কখনো ভালো হবে না।
---ডাক্তার দেখালে হতে পারতো।
---মা,আমরা ডাক্তার দেখাতে পারি না? বলেই শুভ চাতালের দিকে সরে গেছিল।
অর্চনা বাধা দিয়ে বলে উঠলো--শুভ যাসনা।
অর্চনা প্রতিদিন পাগলটাকে খাবার দিয়ে আসে।তার ভীষন দয়া হয়।এঁটোকাঁটা সব চিবিয়ে খায়।শুধু তাই নয়,তার কুকুরটাকে ভাগ দেয়।
অর্চনার ইচ্ছে করে না এঁটো কাঁটা দিক পাগলটাকে।একটা মানুষ তাদের এঁটো খাবে কেমন যেন লাগে।তাই অনেক সময় ভালো খাবারও খেতে দেয়।
দেবজিৎ জানে অর্চনা ভীষন দয়ালু।তাই স্ত্রীকে বলে-- অর্চনা মানুষের কত যন্ত্রনা।সব কি দূর করতে পারবে?
(চলবে)
মাকেই বাজার যেতে হয়।কিন্তু বাবা বাড়ী থাকলে বাবা যায়।রবিবার সকালে বাবা বলল---শুভ আজ মাটন খাবি?
শুভ আনন্দে বলল---খাবো খাবো।
অর্চনা রান্না ঘরে চা করতে করতে বলল--বাপ--ছেলেতে খালি খাওয়ার চিন্তা না।
---আঃ অর্চনা।একটাই তো ছুটি পাই।শুভর বাবা মায়ের কাছে গিয়ে বলল।
---আর আমার তো কোনো ছুটি নেই।
---শুভ তবে আজ আর মাটন হচ্ছে না।তোর মা নাকচ করে দিয়েছে।
শুভ মনমরা হয়ে যায়।অর্চনা শ্বশুর মশাইকে চা দিয়ে দেবজিৎকে দেয়।সকালের কাজ সেরে সোজা বাথরুমে যায়।স্নান করে বেরিয়ে আসে একটা সাধারণ সুতির নাইটি পরে।
বেরিয়ে এসেই বলল---কি হল তুমি এখনো বাজার যাওনি?মাটন না কি আনবে বললে যে?
শুভ জানে তার মা এরকমই।সংসারে সব কাজ সামলেও তাদের আবদার মেটায়।
ছোট্ট ছেলে রাহুল নিচে খেলে বেড়াচ্ছে।মাটন খাওয়ার টোপে মা শুভকে অঙ্ক করতে বসিয়েছে।শুভ না পারলে রান্না ঘর থেকে সাহায্য করছে।
এদিকে অর্চনার শ্বশুরমশাই আবার চিবোতে পারেন না।তার জন্য তরল স্টু করে দিতে হবে।সবকিছু সামলেই অর্চনা চল্লিশ ছুঁই ছুঁই আটত্রিশ বছরের গৃহকত্রী।
শুভ বলল---মা অঙ্ক গুলো কমপ্লিট।রেঁধে রেখে ঘাম মুছতে মুছতে বেরিয়ে এলো মা।
খাতাটায় চোখ বুলিয়ে বলল---বই গুছিয়ে নিচে দাদুর ঘরে ভাই আছে ডেকে নিয়ে আয়।
শুভ এইটে পড়লেও এখনো মা স্নান করিয়ে দেয়।দুই ভাইকে মা স্নান করিয়ে দিয়ে বলল---কই গো এবার তুমি স্নানে যাও।
দেবজিৎ স্নান করে বেরিয়ে আসতেই দেখলো টেবিলে সাজানো খাবার।
খাওয়া-দাওয়ার পর।অর্চনা টেবিলে এঁটোকাঁটা তুলতে এসে বলল---দেখলে তো এই তোমাদের খাওয়া।খাবে কম নস্ট করবে বেশি।
---আহা অর্চনা।উচ্ছিষ্টগুলো পাগলটাকে দিয়েসো না।তবে আর নস্ট হল কই।
---হ্যা হাত পুড়িয়ে আমি তো পাগলের জন্য রাঁধি।
এঁটো খাবারগুলো যখন মা পাগলকে দিতে যায় শুভ পেছন পেছন যায় সবসময়।পাগলটা যেন হামলে পড়ে খাবারের ওপর।
অর্চনা খাবারটা পাগলের কাছে নিয়ে যেতে পাগলটা তার অ্যালুমিনে থালায় নিয়ে নেয়।
শুভ বলল---মা দেখো কেমন গোগ্রাসে গিলছে?
---দেখ দেখি,বেচারা কত কষ্টে আছে।
---মা ওকি কখনো ভালো হবে না।
---ডাক্তার দেখালে হতে পারতো।
---মা,আমরা ডাক্তার দেখাতে পারি না? বলেই শুভ চাতালের দিকে সরে গেছিল।
অর্চনা বাধা দিয়ে বলে উঠলো--শুভ যাসনা।
অর্চনা প্রতিদিন পাগলটাকে খাবার দিয়ে আসে।তার ভীষন দয়া হয়।এঁটোকাঁটা সব চিবিয়ে খায়।শুধু তাই নয়,তার কুকুরটাকে ভাগ দেয়।
অর্চনার ইচ্ছে করে না এঁটো কাঁটা দিক পাগলটাকে।একটা মানুষ তাদের এঁটো খাবে কেমন যেন লাগে।তাই অনেক সময় ভালো খাবারও খেতে দেয়।
দেবজিৎ জানে অর্চনা ভীষন দয়ালু।তাই স্ত্রীকে বলে-- অর্চনা মানুষের কত যন্ত্রনা।সব কি দূর করতে পারবে?
(চলবে)