Thread Rating:
  • 31 Vote(s) - 3.39 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica লেখিকা nandanadas1975 এর গল্পগুলি
#44
ঠিক সেই সময়ে মহারাজের কাছে অনুমতি না নিয়েই প্রবেশ করল শার্দূল। শার্দূল জন্মেছিল মানুষ হয়ে কিন্তু ওর চেহারা রাক্ষসদের ও হার মানাবে। মহারাজের উচ্চতার অনেক বেশি এবং বিশাল শার্দূলের মতন কায়া নিয়ে প্রবেশ করল শার্দূল মহারাজের কক্ষে। আর প্রবেশ করেই মৈথিলীর দিকে চোখ যেতে সময় লাগলো না। শার্দূল মহারাজের এক দুরবল জায়গা। পরাক্রমের জন্য শার্দূলএর সমস্ত অমানবিক কর্ম উপেক্ষা করতে বাধ্য হন। শার্দূলের ইশারায় কতই না নারী নিজের স্বামী ছেড়ে শার্দূলের সাথে শয্যা বিনিময় করেছে। মহারাজ মৃত্যু কামনা করতে পারেন না শার্দূলের। অত্যাচার ও তিনি মেনে নিতে পারেন না।আবার ছেড়ে দিতেও পারেন না, কারন শার্দূল রাজ-সিংহাসনে বসলে রাজ্যের কোন নারী ই আর সুরক্ষিত থাকবে না। সেইজন্য শার্দূলের আগমন মহারাজ কে চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল। আর তার কারন হল মৈথিলী।
– এই অতি সুন্দরি নারী টি কে মহারাজ”। শার্দূলের কথায় যুবরাজ উত্তর দিল
– “ ইনি আমার সখি, আমার সুরক্ষা দেখা সোনা সব কিছুর দায়িত্বেই ইনি”। যুবরাজের কথা সেশ হল না কিন্তু শার্দূলের , শার্দূল ভঙ্গীতে অট্টহাস্য যেন প্রাসাদের দেওয়াল কাঁপিয়ে দিল।
– “ যে নিজেই অবলা সে তোমাকে কি সুরক্ষা দেবে যুবরাজ, হা হা হা হা”।
চারিদিক কাঁপতে থাকল শার্দূলের ওই ভয়ঙ্কর অট্টহাস্যে। মহারাজ প্রমাদ গুনলেন। মনে হচ্ছিল শার্দূল প্রমোদ ভ্রমন থেকে ফিরে না আসলেই ভাল হত। মহারাজ যুবরাজ কে ইশারা করলেন মৈথিলী কে নিয়ে নিজের প্রাসাদে জাবার জন্য। যুবরাজ ভয় পেয়ে গেছিলেন, আর মৈথিলীর হাত ধরে বেড়িয়ে আসার চেষ্টা করতেই শার্দূল বিশাল শরীর নিয়ে যুবরাজএর পথ টা অবরোধ করেই দারালেন প্রায়। “ যুবরাজ তুমি চলে যাও, কিন্তু তোমার সখি টি কে আমার হাতে দিয়ে যাও, আমিও দেখতে চাই, যে তোমার সুরক্ষার দায়িত্বে আছে সে নিজেকে কত টা সুরক্ষা দিতে পারে, হা হা হা”।
যুবরাজ কিছু বলার সুযোগ ও পেলেন না তার আগেই শার্দূল নিজের বজ্র মুঠি তে মৈথিলীর রক্তিম কেশ আকর্ষণ করে নিজের কক্ষের দিকে টেনে নিয়ে চললেন। এতো সুন্দরি দিরঘাঙ্গি নারীর সাথে রমন করবে ভেবেই শার্দূলের কামাবেগ বাড়তে শুরু করল। ততোধিক বলপূর্বক কেশ আকর্ষণ করে মৈথিলী কে নিজের শয়ন কক্ষের দিকে টেনে নিয়ে চললেন শার্দূল।
পথে ভানুপ্রতাপ কে দেখে শার্দূল কোন তোয়াক্কা না করে মৈথিলী কে টেনে নিয়ে চললেন। মৈথিলীর ইচ্ছে করছিল তখন ই এই শার্দূল টার ঘাড় ভেঙ্গে দিতে। কিম্বা দু টুকরো করে ফেলতে এই বিশাল বপু রাক্ষস টার। কিন্তু ভানুপ্রতাপ যেন বারন করলেন মৈথিলী কে। আকাশের দিকে প্রার্থনার ভঙ্গী তে “ হে ত্রিলোকেশ্বর রক্ষা করুন এই অবলা কে”। এর অর্থ হল তুমি অবলা অবলাই থাক।
যদিও নারী দেহ ধারনের সময়ে দাদা বলেই দিয়েছিলেন যে মিলনে বাঁধা নেই আর কোন ভয় ও নেই। কিন্তু নিজের নারী দেহের প্রথম মিলন এই ভাবে হবে ভাবতেই পারেনি মৈথিলী। কিন্তু দাদার আদেশ অমান্য করার সাহস এবং ইচ্ছে কোনটাই নেই মৈথিলীর। অসহায়ার মতন সে এগিয়ে যেতে থাকল শার্দূলের সাথে। নরম রেশমের মতন কেশ আকর্ষণ করে শার্দূলের কামাবেগ যে ভয়ঙ্কর আকার ধারন করেছে, সেটা মৈথিলী বুঝতেই পারছিল। কারন আকর্ষণের বল যেন বেরে চলেছিল।
সেই সময়ে যুবরাজ দৌড়ে এসে শার্দূলের সামনে দাঁড়িয়ে বলল “ হে শার্দূল আমি তোমার সাথে দ্বৈত যুদ্ধে প্রস্তুত, তুমি আমাকে হত্যা করে তবেই এই নারী কে ভোগ করতে পারবে নচেৎ নয় ”
শার্দূল যেন ভাবতেই পারছে না, একটা বাচ্চা ছেলে তাকে দ্বৈত যুদ্ধে আহ্বান করছে একটি নারীর জন্য। খানিক হেসে লুটোপুটি খেয়ে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে মহারাজের দিকে তাকিয়ে নিলো সে। তারপরে গম্ভীর হয়ে বলল,
– হুম্মম এই ব্যাপার? ঠিক আছে আগামী পুরনিমার দিন তোমার সাথে আমার দ্বৈত যুদ্ধই হবে। ততদিন এই নারীকে আমি ভোগ করব না” বলে মৈথিলীর কেশ নিজের হাত থেকে মুক্ত করে শার্দূলের ন্যায় শার্দূল চলে গেল নিজের কক্ষে।
ঘটনা টা ঘটল সেটা কাঙ্ক্ষিত ছিল না। কারোর কাছেই ছিল না। শার্দূল বেশ অবাক হয়েছিল নিজের ভাইপো র এমন সাহস দেখে। আর মহারাজ অবাক হয়েছিলেন নিজের পুত্রের একটি অবলা নারীর ওপর অন্যায়ের প্রতিবাদ দেখে। যুদ্ধ হবেই। আর তাঁর পরিনাম ও মহারাজ জানেন। শার্দূল কে দ্বৈত সমরে পরাজিত কেউ করতে পারে নি উল্লম রাজ্যে। উনি দুঃখী ছিলেন। দুঃখী ছিলেন নিজের প্রানাধিক প্রিয় পুত্র কে হারাবেন। সেই শোকে কাতর ছিলেন। কিন্তু ভবিষ্যতের রাজা কে ক্ষত্রিয় ধর্ম পালন তো করতে শিখতেই হবে। মৈথিলী কেও বেশ ভয়ার্ত লাগলো, ভবিষ্যতের খোঁজে। কিন্তু একজন বড়ই নিশ্চিন্ত ছিলেন যেন। তিনি ভানু। ভানুপ্রতাপ ছিলেন পাশেই।
– কোন চিন্তা নেই মহারাজ আপনার। মৈথিলী ওকে ঠিক তৈরি করে নেবে। আপনার যুবরাজের মতন বীর এই রাজ্যে দুটো পাওয়া যাবে না।
– ভানু তুমি জান না, এই শার্দূল কত বড় ধূর্ত আর শয়তান।
– জানি মহারাজ। যুদ্ধের আর মাত্র এগার দিন বাকি। তার আগেই আপনার যুবরাজ তৈরি হয়ে যাবে।
সেই রাতে ছোট কুমার ঘুমিয়ে যেতেই মৈথিলী যুবরাজের কক্ষে গেল। মৈথিলী ঘুমতে পারছে না। যদি শার্দূল ওকে ভোগ ও করত ও চাইলেই শার্দূল কে এক লহমায় বধ করতে পারত। কিন্তু যুবরাজ যে কেন ওর জন্য নিজের প্রান টা এই ভাবে দাঁও তে লাগাল, সেটা ভেবেই মৈথিলী খুব কাতর। যুবরাজ যে ওকে প্রেম করে সেটা বুঝতে বাকি থাকল না মৈথিলীর।ঘুমন্ত যুবরাজ এর কাছে গিয়ে আচ্ছাদন টা ভাল করে শরীরে ঢেকে দিল মৈথিলী। প্রদীপ টা নিভিয়ে আসতে যাবে ঠিক তখন ই একটা টান পেয়ে পিছনে ফিরে বুঝল যুবরাজ ঘুময় নি এখনো।
– আপনি ঘুমন নি যুবরাজ?
– না” বলে দ্বিতীয় টানে মৈথিলী কে নিজের শয্যায় টেনে নিল যুবরাজ। মৈথিলী এই প্রথম যুবরাজের শয্যায় এতো রাতে এলো। অন্ধকার কক্ষে যুবরাজের বাহুবন্ধনে মৈথিলীর খারাপ লাগছিল না। যুবরাজের পাশে শুয়ে মাথায় হাত বোলাতে লাগলো মৈথিলী।
– এবারে ঘুমন যুবরাজ, আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দি।
– না ঘুমবো না আমি। আর কত দিন আমার জীবন? একটু কি তোমার সাথে আমি থেকে নিজের জীবন কে ধন্য করতে পারি না”? কথা সেশ হল না যুবরাজের। তার আগেই মৈথিলী নিজের নরম হাতে যুবরাজের ওষ্ঠ ঢেকে দিল। যুবরাজের বুকের ওপরে নিজের উন্মুক্ত কেশ সহিত মাথা রাখল মৈথিলী। বিড়বিড় করে বলে উঠল –“ ছিঃ অমন কথা বলতে নেই। আমার প্রান থাকতে আপনার সামান্য কিছু আমি হতে দেব না”। যুবরাজ বুঝলেন মৈথিলীর চোখের জলে যুবরাজের চওড়া বুক সিক্ত।
– তুমি কাঁদছ মৈথিলী?
– উম্ম না।
– জান মৈথিলী, আমি কোনদিন ও ভয় পাই নি। কিন্তু আজকে পাচ্ছি। মনে হয় তোমাকে হারানোর ভয়। শার্দূলের কাছে বধ হবার ভয় আমার নেই। কিন্তু তোমাকে ছেড়ে চলে যেতে হবে এই সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে এটাই আমি মানতে পারছি না”।
যুবরাজের কথায় মৈথিলী চমকিত হল। কি বলছেন যুবরাজ? আর ও একবার নিজের হাত দিয়ে যুবরাজের ওষ্ঠ ঢেকে দিয়ে বলল
– যুবরাজ এই পৃথিবী ছেড়ে জাবার কথা আপনি দয়া করে বলবেন না। আমার প্রান চলে গেলে তবেই কেউ আপনাকে বধ করতে পারবে। জিষ্ণু শিশ্যা এই মৈথিলীর এটা প্রতিজ্ঞা”।
জিষ্ণু শিশ্যা শুনেই মৈথিলী কে নিজের বাহু তে নিয়ে যুবরাজ উঠে পড়লেন। চমকিত হয়েছেন সেটা বলাই বাহুল্য।
– তুমি জিষ্ণু শিশ্যা?
– হ্যাঁ যুবরাজ। আজকে তেমন ই এক কাহিনী বলব আপনাকে। আর শার্দূলের ক্ষমতা কি আপনাকে বধ করে? যুবরাজ, যুদ্ধ শক্তি তে জেতা যায় না। যুদ্ধ যেতে মস্তিষ্ক”। বলে নিজের ঘন কেশে ভরা মাথার দিকে ইঙ্গিত করল মৈথিলী। তৎক্ষণাৎ যুবরাজ মৈথিলীর কোলে শুয়ে পড়েছে কাহিনী শনার জন্য। মৈথিলী হেসে যুবরাজের মাথায় নিজের অঙ্গুলি চালনা করতে করতে শুরু করল কাহিনী।
“ এ কাহিনী প্রায় বেশ কয়েক বৎসর পূর্বের। আমি তখন জিষ্ণুর মাতা মহারানী ঐশী র প্রধানা দাসী। জিষ্ণু রা তিন ভাই, যথাক্রমে জয়, বালি এবং জিষ্ণু। জিষ্ণু তখন ঠিক আপনার মতন, যুবরাজ। অষ্টাদশ বর্ষীয়। প্রান চঞ্চল ভীষণ ছটফটে এক কিশোর। মহারানী আমাকে কুড়িয়ে পেয়েছিলেন এক নদির ধারে। সেই থেকে আমি ওনার নামে দাসী হলেও শিক্ষা আমাকে তিন রাজকুমার এর সাথেই নিতে হত। আর যুবরাজ জয় এর তাত মানে পিতার ভাই ছিলেন তখন মহারাজ কল্পতরু। বল্লভপুরের মতন বিশাল শক্তিশালী দেশের মহারাজ হলেও মানুষ হিসাবে তিনি ছিলেন সত্যি করেই অসামান্য। ওনার বড় পুত্রের নাম ইন্দ্রজিৎ। জিষ্ণুর পিতার মৃত্যু হয়েছিল জিষ্ণু তখন মহারানীর পেটে। অন্তত আমি তেমন টি ই শুনেছি। বড় মহারাজের মৃত্যুর পড়ে রাজা হন ওনার ভ্রাতা কল্পতরু। মহারাজ কল্পতরুর পাঁচ টি সন্তান। কিন্তু এই আট জন ভাই এর মধ্যে সব থেকে বড় যুবরাজ জয়। একদিন মহা ধুমধামের সাথে রাজকুমার জয় কে যুবরাজ পদে অভিষিক্ত করা হয়েছিল”। এতদুর বলে একটু দম নিয়ে মৈথিলী যুবরাজ কে বলল – যাইহোক কাহিনী এটা নয়। কিন্তু না বললে আপনি বুঝবেন না”।
– মৈথিলী !! আমি এই গুলো জানি, তুমি আগে বল, থেম না।
– হি হি আপনি বড্ড অধৈর্য
– হ্যাঁ জিষ্ণুর ব্যাপারে আমি সত্যি অধৈর্য
– কিন্তু কি জানেন জিষ্ণুর সব থেকে বড় গুন হল, ওর মত ধৈর্য ওর ধির স্থির শান্ত দাদা জয় এর মধ্যেও ছিল না।
– বেশ বেশ তুমি তোমার মতন করে বল, আমি আর তোমাকে জ্বালাব না
– বেশ
“যুবরাজ পদে অভিষেকের পরে রাজ পরিবারের আবহাওয়া টা যেন একটু বদলে গেল জুবরাজ। মহারাজ কল্পতরুর সন্তানেরা যেন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছিল এই তিন ভাই এর থেকে, কোন একটি অজানা কারনে। একদিন হঠাৎ ই যুবরাজের ওপরে হামলা হল। বেশ কিছু অচেনা ঘাতক যুবরাজ কে আক্রমন করল যখন যুবরাজ নগর পরিদর্শন করে ফিরছিলেন, নিজের বাছাই করা জনা দশেক দেহরক্ষী এবং মেজ ভাই বালির সাথে। সেদিন যুবরাজ বেঁচে গেছিলেন ভ্রাতা বালির জন্য। আর মজার কথা হল এই যে সেদিন বালির যুবরাজের সাথে থাকার কথাই ছিল না। ভ্রাতা বালি ওই দিন নিজের একটি বিশেষ অস্ত্র বানিয়ে ফিরছিলেন। মাঝ পথে যুবরাজের সাথে দেখা হতে যুবরাজের রথে চড়ে বসেছিলেন। ভ্রাতা বালি যুদ্ধ প্রিয়। ঘাতকেরা এক লহমা ও টিকতে পারে নি সামনে। বালির নতুন অস্ত্র মুগুরের দ্বারাই গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন অধিকাংশ ঘাতকের মাথা।
যাইহোক সেইদিনের ঘটনা টি কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় সেটা বোঝা গেল ঠিক তার দিন পাঁচেক পরেই। অমাবস্যার পরের দিন ছিল। আমি ভ্রাতা জয় এবং মাতা ঐশী মিলে গেছিলাম পাহারের চুড়ো তে দেবী দর্শনে। মহাকালী চামুণ্ডার দর্শন অমাবস্যার পরের দিন খুব ভাগ্যের ব্যাপার ছিল। আমাদের ফেরার পথে রথের ঘোড়া গুলি কে বিশ্রাম দিয়ে সারথি রথ একটু মনোরম সরোবরের তীরে দাঁড় করিয়েছিল। আমি আর মাতা একটু বড় গাছের তলায় বিশ্রাম নিচ্ছিলাম। আর যুবরাজ আমাদের জন্য জল আনতে গেছিলেন। কিছুক্ষন পরেই রে রে করে দিনের আলোয় একটি দস্যুর দল আমাদের নিমেষে ঘিরে ধরল। ততক্ষনে যুবরাজ জয় জল নিয়ে এসে গেছিলেন আমাদের কাছে। আমরা অবাক ই হয়েছিলাম। কারন যুবরাজের কৃপা তে দস্যু তো দূর ছোটোখাটো তস্কর ও ছিল না বল্লভপুরে। ভীষণ শান্তি বিরাজ করত। অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ভীষণ রকমের ভাল ছিল। তারপরেও আক্রমন দস্যু দলের এই ব্যাপার টা যুবরাজ কে ওই বিপদের মধ্যে ও ভাবাচ্ছিল। কিন্তু কিছুপরেই বোঝা গেল যে দস্যু দের উদ্দেশ্য লুণ্ঠন ছিল না। ছিল হত্যা। কিন্তু ভাগ্যের জোরে সেই স্থানে উপস্থিত হল ছোট জিষ্ণু। মনে মনে ভয় পেলেও কেমন যেন একটা আশার আলো দেখতে পাচ্ছিলাম। কারন জিষ্ণু কে তার আগে কোনদিন আমি লড়তে না দেখতে পেলেও গুরুদেবের মুখে খুব জিষ্ণুর নাম আমি শুনেছিলাম। জিষ্ণু আসাতে আমি দুই ভাই এর কথোপকথনে বুঝলাম এরা লড়বেন। কিন্তু তার আগেই জিষ্ণু ওদের বিশাল দলপতি কে বলে উঠল “ চল আমরা এই যুদ্ধের নিষ্পত্তি একটু পুরনো পদ্ধতি তেই করি। তুমি লড় আমার সাথে। যে জিতবে সেই বিজয়ী হবে আর তার কথা মতন ই কাজ হবে”। জিষ্ণুর কথা শুনে ওদের বিশালাকায় দলপতি হেসেই বাঁচে না। দলপতির আকার শার্দূলের থেকে ও বেশি ছিল আর জিষ্ণু তখন ঠিক তোমার মতন। দলপতি হাস্তে হাস্তেই বলল
– তো কে লড়বে তুমি ছোট কুমার?
– হ্যাঁ, তোমার মতন দস্যুর জন্য আমাদের যুবরাজ নন, আমি যথেষ্ট।
– হা হা হা তবে এস, টা কি দিয়ে লড়বে, তোমার ওই সরু তলোয়ার দিয়ে? হা হা হা তুমি তো আমার তরবারি তুলতেও পারবে না”। এই কথা বলে তলোয়ার টা মাটিতে রেখে নিজের পাগড়ি টা বাঁধতে শুরু করল দলপতি।
অদ্ভুত ব্যাপার যুবরাজ, দলপতির কথা সেশ ও হল না, পাশে পরে থাকা দলপতির বিশাল তলোয়ার টা পা দিয়ে টোকা মেরে তলোয়ারের হাতল টা একটু ওপরে উঠতেই শরীর টা তীব্র বেগে ঘুরিয়ে তলোয়ার এর হাতল টা দুই হাতে ধরে প্রচণ্ড বেগে ঘুরিয়ে সোজা দলপতির গলায় বসাতে এক লহমার বেশি সময় নিলেন না জিষ্ণু। মুহূর্তেই বিশালাকায় দলপতির বিচ্ছিন্ন মুণ্ডু টা উড়ে গিয়ে সরোবরের জলে পড়ল। আমরা অবাক চোখে দেখলাম বাম হাতে তলোয়ার টা পালকের মতন ধরে রক্ত মাখা গায়ে দাঁড়িয়ে আছে জিষ্ণু। উফফ সে কি রূপ! দস্যু দল চোখের পলকেই পালাল”। এই বলে থামল মৈথিলী। যুবরাজের দিকে তাকিয়ে দেখল হাঁ করে কাহিনী শুনে ছলেছে যুবরাজ।
– উফফ সত্যি কি যে বড় মাপের মহাবীর উনি ওই বয়সেই ছিলেন মৈথিলী ভাবা যায় না।
– যুবরাজ আমি আপনাকে এই কাহিনী এই জন্যে বললাম জাতে আপনি ভয় না পান। জিষ্ণু যেমন ভয় পায় না সামনে কে আছে তাকে দেখে, ঠিক তেমনি। যুবরাজ, আপনি নিজের ওপরে ভরসা রাখবেন সব সময়েই।
– মৈথিলী তুমি তো জিষ্ণুর শিশ্যা, আমাকে শেখাবে না ?
– যুবরাজ আপনাকে আমি সব ই শিখিয়েছি যা আমি জানি। কিন্তু জিষ্ণুর মতন ঘাতক, শিখে হওয়া যায় না। ওটা আপনাকে আপনার ভিতর থেকেই আনতে হবে।
– আর তুমি? তুমি কি মহাবীর জিষ্ণুর মতন ঘাতক নউ?
– না যুবরাজ। সেটা হলে কি শার্দূল আমাকে কেশ আকর্ষণ করে ওই ভাবে নিয়ে যেতে পারত?
যুবরাজ ব্যথিত হলেন মৈথিলীর এই কথায়। কেন জানিনা কথা টা তে মৈথিলীর অসহায়তার সাথে সাথে যুবরাজের সেদিনের অসহায়তা ও প্রকট হল। যুবরাজ মৈথিলীর স্পর্শ উপভোগ করছিলেন। কিন্তু কেন জানিনা মনে হল এই নারীর স্পর্শ উপভোগ করার যোগ্যতা ওনার নেই। উনি উঠে দাঁড়িয়ে মৈথিলী কে মনে মনে বললেন- “ মৈথিলী তোমাকে আমি প্রেম নিবেদন যুদ্ধে জয়লাভের পরেই করব”।

-------
[+] 1 user Likes modhon's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: লেখিকা nandanadas1975 এর গল্পগুলি - by modhon - 01-05-2021, 01:21 AM



Users browsing this thread: 6 Guest(s)