04-04-2019, 08:38 PM
(This post was last modified: 17-04-2019, 06:47 PM by saddam052. Edited 4 times in total. Edited 4 times in total.)
বোটের কিনার ধরে ওরা ভেসে চললো পানির স্রোতের টানে, লক্ষ্যহীনভাবে, খাদ্য, পানি ও কাপড় ছাড়া। দিনটা পার হতেই যেন ওদের শরীরের শক্তি একদম নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। এভাবে কতদিন কাটাবে ওরা জানেনা। মনে মনে আহসান ওর আব্বুর উপর বেশ ক্ষিপ্ত হয়েছিলো। কারণ উনার জিদের কারনেই ওদেরকে দেশ ছেড়ে জাহাজে উঠতে হয়েছে, আর এখন ওদের এই অবস্থা। ওরা কি আদৌ উদ্ধার পাবে নাকি এভাবে ভেসে ভেসে মৃত্যুর দিকে ঢলে পড়বে?
একটা মাছ শিকার করে খাওয়ার মত শক্তিও যেন নেই ওদের কারো শরীরে, অবশ্য কোন হাতিয়ারও নেই। সাবিহা ছিল অতন্ত ভদ্র আর বিনয়ী একজন মহিলা। খাদ্যের চেয়েও নিজের শরীর পুরো ঢেকে রাখার মত কাপড়ও যে নেই ওর কাছে এটাই যেন ওকে বেশি বিড়ম্বনা আর অস্থিরতা দিচ্ছিলো। রাতের আধার নেমে এলে সেই বিব্রত অবস্থা যেন কিছুটা কমে এলো। যদিও কাল রাতের পর থেকে কারো পেটে কোন দানা পানি না পড়াতে ওদের অবস্থা আরও সঙ্গিন হয়ে পড়তে লাগলো সময়ের সাথে সাথে।
এভাবেই পরের দিনটিও কেটে গেলো। অনেকবার ওদের মনে হয়েছে যেন সামনে কিছু একটা দেখা যাচ্ছে, সেটা মনে হয় একটা দ্বীপ। তখন ওদের শরীরে আর মনে একটা আশার সঞ্চার হয়ে যায়, কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই সেটা মিলিয়ে যেতেই আবার নিরাশার চোরাবালি ওদেরকে ঘিরে ধরে। ঝড়ের রাতের পরে এভাবেই তিনটি দিন ও রাত কেটে গেলো। ওদের শরীর যেন আর পানির উপরেও নিজের ভার ধরে রাখতে পারছিলো না। অধিকাংশ সময় চোখ বুজে নির্জীব হয়ে পড়ে ছিলো ওরা। লাইফবোটে কোন খাবার না থাকাতে ওদের জীবনী শক্তি ধীরে ধীরে নিঃশেষ হতে শুরু করেছে।
হঠাৎই চতুর্থ দিন সকালে বাকেরের চোখে পড়লো দূরের একটা বিন্দু। সে মাথা সোজা করে ওদিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলো আর সাবিহাকে ডাক দিলো, “দেখো ওটা মনে হয় একটা দ্বীপ, সাবিহা উঠো…” সাবিহা চোখ মেলে স্বামীকে অনুসরণ করে দেখল একটা বিন্দু দেখা যাচ্ছে। কিন্তু ওটা কি দ্বীপ নাকি গত তিনদিনের মত কোন এক আলেয়া সেটা ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলনা সে। তবুও আশার বালিতে ঘর বেঁধে সাবিহা ডেকে তুললো আহসানকে, “বাবা, উঠ; দেখ, ওটা মনে হয় একটা দ্বীপ। জোরে জোরে সাতার কাট, বাবা; আমাদেরকে ওখানে যেতে হবে…”। মায়ের মুখের কথা ছেলে কি অবিশ্বাস করতে পারে? কিন্তু শরীরে যে শক্তি নেই তার! তারপরও সাবিহার কথায় ওরা তিনজনেই ঝাপিয়ে পরলো দ্রুত সাতার কেটে ওদিকে যাওয়ার জন্যে।
উপরওয়ালা এইবার সত্যি সত্যি ওদেরকে একটা দ্বীপে এনে পৌছালো। বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে সাতরে ওরা পায়ের নিচে বালির আস্তর টের পেলো। “আমরা পেরেছি…! ওহঃ খোদাঃ… আমরা পেরেছি…!” -সাবিহা বেশি খুশি ছিলো এই আশার বালি দ্বীপে পৌঁছতে পেরে। ওর ভিতরে এখনও অনেক উচ্ছ্বাস যেন উপচে পড়ছে। যদিও ওদের গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে তৃষ্ণার জলের জন্যে। সাবিহা ওর স্বামীর দিকে তাকালো, আহসানকে বেশি খুশি মনে হচ্ছেনা।
“বেশি খুশি হতে পারছি না, সাবিহা। আমরা কাছের কোন বসতীর থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে আছি। আর এই দ্বীপটা দেখে মনে হচ্ছে, এখানে কেউ নেই। আমাদের উদ্ধার পাবার আশা খুব কম…!” -বাকের মন খারাপ করে চারদিকে চোখ বুলাতে বুলাতে বললো। “কিন্তু এই দ্বীপে আমরা খাদ্য আর পানির ব্যবস্থা হয়ত করতে পারবো, তাই না?” -সাবিহা জানতে চাইলো। “হয়ত, দেখি আমাকে আগে খাবার পানির কোন উৎস খুঁজে বের করতে হবে, যদি পানি সত্যিই থেকে থাকে এই দ্বীপে। তোমরা দুজনে রোদ থেকে সড়ে ছায়ায় এসে বসো, আমি একটু চারদিকে ঘুরে দেখি কোথায় কি পাওয়া যায়” -এই বলে বাকের চলে গেলো দ্বীপের ভিতর দিকটাতে।
একটা মাছ শিকার করে খাওয়ার মত শক্তিও যেন নেই ওদের কারো শরীরে, অবশ্য কোন হাতিয়ারও নেই। সাবিহা ছিল অতন্ত ভদ্র আর বিনয়ী একজন মহিলা। খাদ্যের চেয়েও নিজের শরীর পুরো ঢেকে রাখার মত কাপড়ও যে নেই ওর কাছে এটাই যেন ওকে বেশি বিড়ম্বনা আর অস্থিরতা দিচ্ছিলো। রাতের আধার নেমে এলে সেই বিব্রত অবস্থা যেন কিছুটা কমে এলো। যদিও কাল রাতের পর থেকে কারো পেটে কোন দানা পানি না পড়াতে ওদের অবস্থা আরও সঙ্গিন হয়ে পড়তে লাগলো সময়ের সাথে সাথে।
এভাবেই পরের দিনটিও কেটে গেলো। অনেকবার ওদের মনে হয়েছে যেন সামনে কিছু একটা দেখা যাচ্ছে, সেটা মনে হয় একটা দ্বীপ। তখন ওদের শরীরে আর মনে একটা আশার সঞ্চার হয়ে যায়, কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই সেটা মিলিয়ে যেতেই আবার নিরাশার চোরাবালি ওদেরকে ঘিরে ধরে। ঝড়ের রাতের পরে এভাবেই তিনটি দিন ও রাত কেটে গেলো। ওদের শরীর যেন আর পানির উপরেও নিজের ভার ধরে রাখতে পারছিলো না। অধিকাংশ সময় চোখ বুজে নির্জীব হয়ে পড়ে ছিলো ওরা। লাইফবোটে কোন খাবার না থাকাতে ওদের জীবনী শক্তি ধীরে ধীরে নিঃশেষ হতে শুরু করেছে।
হঠাৎই চতুর্থ দিন সকালে বাকেরের চোখে পড়লো দূরের একটা বিন্দু। সে মাথা সোজা করে ওদিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলো আর সাবিহাকে ডাক দিলো, “দেখো ওটা মনে হয় একটা দ্বীপ, সাবিহা উঠো…” সাবিহা চোখ মেলে স্বামীকে অনুসরণ করে দেখল একটা বিন্দু দেখা যাচ্ছে। কিন্তু ওটা কি দ্বীপ নাকি গত তিনদিনের মত কোন এক আলেয়া সেটা ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলনা সে। তবুও আশার বালিতে ঘর বেঁধে সাবিহা ডেকে তুললো আহসানকে, “বাবা, উঠ; দেখ, ওটা মনে হয় একটা দ্বীপ। জোরে জোরে সাতার কাট, বাবা; আমাদেরকে ওখানে যেতে হবে…”। মায়ের মুখের কথা ছেলে কি অবিশ্বাস করতে পারে? কিন্তু শরীরে যে শক্তি নেই তার! তারপরও সাবিহার কথায় ওরা তিনজনেই ঝাপিয়ে পরলো দ্রুত সাতার কেটে ওদিকে যাওয়ার জন্যে।
উপরওয়ালা এইবার সত্যি সত্যি ওদেরকে একটা দ্বীপে এনে পৌছালো। বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে সাতরে ওরা পায়ের নিচে বালির আস্তর টের পেলো। “আমরা পেরেছি…! ওহঃ খোদাঃ… আমরা পেরেছি…!” -সাবিহা বেশি খুশি ছিলো এই আশার বালি দ্বীপে পৌঁছতে পেরে। ওর ভিতরে এখনও অনেক উচ্ছ্বাস যেন উপচে পড়ছে। যদিও ওদের গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে তৃষ্ণার জলের জন্যে। সাবিহা ওর স্বামীর দিকে তাকালো, আহসানকে বেশি খুশি মনে হচ্ছেনা।
“বেশি খুশি হতে পারছি না, সাবিহা। আমরা কাছের কোন বসতীর থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে আছি। আর এই দ্বীপটা দেখে মনে হচ্ছে, এখানে কেউ নেই। আমাদের উদ্ধার পাবার আশা খুব কম…!” -বাকের মন খারাপ করে চারদিকে চোখ বুলাতে বুলাতে বললো। “কিন্তু এই দ্বীপে আমরা খাদ্য আর পানির ব্যবস্থা হয়ত করতে পারবো, তাই না?” -সাবিহা জানতে চাইলো। “হয়ত, দেখি আমাকে আগে খাবার পানির কোন উৎস খুঁজে বের করতে হবে, যদি পানি সত্যিই থেকে থাকে এই দ্বীপে। তোমরা দুজনে রোদ থেকে সড়ে ছায়ায় এসে বসো, আমি একটু চারদিকে ঘুরে দেখি কোথায় কি পাওয়া যায়” -এই বলে বাকের চলে গেলো দ্বীপের ভিতর দিকটাতে।