Thread Rating:
  • 31 Vote(s) - 3.39 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica লেখিকা nandanadas1975 এর গল্পগুলি
#32


ছুটি নেওয়া সাত দিন নীলের কাটল ইচ্ছে মতন। বৃন্তকে প্রতিবারেই ও আধমরা করে দিয়েছে নিজের পুরুষত্বের জোরে। যেখানে নিচ্ছে হয়েছে ভোগ করেছে সে। বেডরুম তো বটেই, সিঁড়ি, বাথরুম, বাড়ির ছাদ, কোন জায়গাই বাদ নেই এই সেক্সি মাগীটাকে উলঙ্গ করে ভোগ করতে। উলঙ্গ হতে না চাইলে ছিঁড়ে দিয়েছে পোশাক। মেরেছে বৃন্তকে। বৃন্তের ভালবাসাকে গলা টিপে হত্যা করে যথেচ্ছ ভোগ করেছে বৃন্তকে। কিন্তু বৃন্তের ভালবাসা মরেছে কি? কি জানি। এ এক বড়ই বাজে রোগ। ধরলে ছাড়ে বলে তো মনে হয় না। সবার সামনে বৃন্তকে নিজের কাছে ডেকেছে নীল। বৃন্ত আসতে বাধ্য হয়েছে। নীল প্রমান করতে চেষ্টা করেছে যে যতই সম্মানীয় হোক না মাগী, আমার কাছে বউ মাত্র। ভোগ করেছে, নিজ জীবনে নীলের পায়ে নুইয়ে পড়া বৃন্তর মনকে, শরীরকে। ;., করেছে বৃন্তকে পাগলের মত নিজের ইচ্ছে মিটিয়ে। বৃন্ত এক ফোঁটা বাধা দেয়নি। যা ইচ্ছে করতে দিয়েছে। দৃষ্টিকে হারিয়ে ফেলার ভয় তাকে প্রতি মুহূর্তে গ্রাস করে। খুব যন্ত্রণা হলে মুখে মোটা কাঠি ঢুকিয়ে নিজের হাহাকারকে রোধ করেছে। দৃষ্টির ঘুম ভেঙে যাবে বলে দাঁতে দাঁত চিপে যন্ত্রণা সহ্য করেছে। যন্ত্রণা চোখের জল হয়ে গড়িয়ে পড়েছে কিন্তু মুখ দিয়ে একটা শব্দও করেনি বৃন্ত। অভিমানে, কষ্টে, নিজের ভালবাসার মানুষের কাছে ধর্ষিতা হবার অপমানে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে নীলের কাছ থেকে।

বাড়ির প্রতিটা লোকই এখন বৃন্তকেই অভিভাবক মনে করে। সেটাই স্বাভাবিক। কারন বৃন্ত যেখানেই যায় নিজেকে অভিভাবক বানিয়ে নেয় নিজের অসাধারণ ব্যক্তিত্ব ও ভালবাসার জোরে। এটা ওর ছোটবেলার অভ্যেস। তাই এখানেও সেই থেকে আলাদা কিছু হল না। সকালে কি রান্না হবে থেকে শুরু করে রাতের বিছানায় কি চাদর পাতা হবে সেই ব্যাপারে অব্দি নীলের মা বৃন্তকে জিজ্ঞাসা করে। নীলের মা ভেবে অবাক হয় এত জীবনী শক্তি কি করে একজনের কাছে থাকতে পারে। দৃষ্টি তো এক পলকও ছাড়ে না বৃন্তকে। বৃন্ত রান্নাও করে মাঝে মাঝে দৃষ্টিকে কোলে নিয়ে। কিন্তু কেন জানিনা মনে হয় নীলের সাথে ওর সম্পর্কটা স্বাভাবিক না। দুজনে কোন কথা নেই বললেই চলে। মাঝে মাঝে রাগ ধরে নীলের ওপরে নীলের মায়ের। ওর মা জানে নীল একটি অত্যন্ত দুর্বিনীত একটি ছেলে। ওকে নোয়ানো সহজ কাজ নয়।

দিন কেটে মাস, প্রায় ছয় মাস হতে চলল ওদের বিয়ের এখন। নীলের কোন পরিবর্তন হচ্ছে বলে মনে হয় না। কারন নীল ওই রকমই। নিজে বুঝলে আলাদা কথা। না বুঝলে ভগবানও পারবে না তাকে পরিবর্তিত করতে। চলতে থাকে আগের মতই। বাড়ির সকলেই খুশি বৃন্ত ছাড়া। দৃষ্টির কাছে থাকলে সে খুশি থাকে। কিন্তু নীলের বাহুবন্ধনে আসলেই সে যেন কেমন দুঃখি অসহায় হয়ে পড়ে। মাঝে একদিন দম্পতিকে ডেকে পাঠিয়ে ছিল লোকাল কাউন্সিল। তাতে যা ঠিক ছিল বৃন্ত তাই বলেছে যে কাউন্সিলকে। যে সে খুশি এবং সুখি। নীল কোন কথা বলেনি। বাচ্চা কবে নেবে সেটা জিজ্ঞাসা করতেই বৃন্ত উত্তর দিয়েছিল দেড় বছরেই তারা বাচ্চা নেবে। বেরিয়ে এসে কোন কথা না বলে বৃন্ত চলে গেছিল হাসপাতালে। নীলকে ভালবাসলেও সে নীলকে সরিয়ে ফেলেছিল মন থেকে অনেকটাই। পেরেছিল কি? মনে হয় না। নীলের কোন কথায় আর সে কোন কষ্ট পায় না। কিন্তু সে সমাজের কীট কথাটা আজ তার বুকে বাজে। নীলও তোয়াক্কা করে না এই দেমাকি মাগীকে। রাতে পেলেই হল তার। মনের দিকে নীলও একলা। কিন্তু এই মাগীকে সে মনসঙ্গিনী করবে সেটা ভাবতেই পারে না। ফালতু মাগী একটা। সে ঠিক করেই নিয়েছে দেড় বছর পরে সে কমপ্লেন করে ওকে ভাগিয়ে দেবে। ততদিন ইচ্ছে মত ভোগ করে নেওয়া আরকি।


সেদিন বৃন্তর নাইট ছিল। বিকাল পাঁচটায় যখন জয়েন করল, দেখল একটা কল এল ফোনে। ওর পছন্দ হয়না এই সময়ে কল। ওর বাবা মা বা শ্বশুর বাড়ির লোকজন তো করবে না। ওরা জানে এই সময় বৃন্ত কোন কল রিসিভ করে না। আর নীল ফোন করে কিন্তু এটা তো নীলের নম্বর নয়। তাও ধরল ফোনটা ও।

হ্যালো!

মিসেস সেন বলছেন? বৃন্ত খানিক চুপ থেকে বলল-

হ্যাঁ বলছি।

শুনুন মিসেস সেন, আপনার স্বামীর প্রচণ্ড ভয়ঙ্কর এক্সিডেন্ট হয়েছে হাইওয়েতে। শহরের বাইরে অতিস হাসপাতালে রয়েছেন। আপনি চলে আসুন। বৃন্তর সারা শরীর কাঁপতে লাগলো ভয়ে। মনে হল মোবাইলটা পড়ে যাবে হাত থেকে। কোন রকমে জিজ্ঞাসা করতে পারল-

বেঁচে আছে তো?

সরি মিসেস সেন কিছুই বলতে পারা যাচ্ছে না। এখনও তো শ্বাস পড়ছে। বৃন্ত আর কিছু শুনল না যেন। ডিরেক্টরকে বলে কোন রকমে রঞ্জনকে সাথে নিয়ে চলে এল হাসপাতালে। গাড়িতে বসেই মাথাটা ঘুরতে লাগলো বৃন্তর। চোখ দুটো যেন বুজে আসছে এমনই ভয়ঙ্কর হল বৃন্তের অবস্থা। রঞ্জন বৃন্তরই মোবাইল থেকে শ্বশুর বাড়িতে ফোন করল-

হ্যালো কাকিমা। আমি বৃন্তর কলিগ বলছি রঞ্জন।

– আপনারা একবার অতিসে চলে আসুন এখনি— না না বৃন্তর কিছু হয়নি— না- প্লিজ আর প্রশ্ন করবেন না চলে আসুন তাড়াতাড়ি।

নিজের আই কার্ড দেখিয়ে সোজা চলে গেল ভিতরে বৃন্ত আর রঞ্জন। বৃন্ত কাঁদতে কাঁদতে অপারেশান রুমে শুয়ে থাকা নীলের কাছে গেল।

প্লীজ মিসেস সেন। নিজেকে শান্ত করুন। আপনি একজন ডাক্তার। এই রকম করলে কি করে হবে। প্লীজ বৃন্ত। বৃন্ত তাকিয়ে দেখল সুবিমল স্যার। সে হাউ হাউ করে কেঁদে ফেলল।

স্যার ওকে বাঁচান স্যার প্লীজ। সুবিমল বাবু বৃন্তকে বললেন-

তোমার উপকার আমি ভুলিনি। আমার যাবতীয় যা আছে শিক্ষা সেটা দিয়ে নীলাঞ্জনকে বাঁচানোর চেষ্টা আমি করব। তুমি এখন বাইরে যাও। আর হ্যাঁ কাঁদবে না। সবাইকে সান্ত্বনা দাও। আর রঞ্জন তুমি আমার কাছে থাক। হেল্প কর আমাকে। এই হাসপাতালে অতো ডাক্তার নেই।

ইয়েস স্যার। রঞ্জন দ্বিরুক্তি না করে রয়ে গেল ভিতরে।

বাইরে বেরিয়ে এসে দেখল মা, নিলু সবাই চলে এসেছে। নীলের মা বৃন্তকে জোরে জড়িয়ে ধরে ডুকরে ডুকরে কেঁদে উঠলেন। বৃন্তও পারল না থাকতে। কেঁদে উঠল ভালবাসার মানুষকে হারিয়ে ফেলার ভয়ে। টানা ১৬ ঘণ্টা অপারেশানের পরে যখন ড. সুবিমল বেরলেন মুখে তার প্রশান্তির হাসি। বৃন্ত ছুটে এল সুবিমল বাবুর কাছে।

মনে হচ্ছে এক যাত্রায় সব কিছু পজিটিভ। জানিনা এর পরে কি হবে। ডাক্তার বাবু বৃন্তকে বললেন।

আমি একবার দেখে আসব?

যাও তবে পুরো শরিরেই ব্যান্ডেজ।

দশ দিন কেটে গেল। জ্ঞান ফিরলেও অল্পক্ষণের জন্য। তার পরে আবার যে কে সেই। এই দশ দিন বৃন্ত কোথাও যায়নি। হাসপাতালেই আছে। নার্সকে সরিয়ে নিজেই রয়েছে নীলের নিথর দেহটার পাশে। খাওয়া দাওয়া আর যতটুকু পেরেছে শুয়েছে এইখানেই। কিন্তু নীলকে ছেড়ে কোথাও যায়নি সে। এগারো দিনের দিন জ্ঞান ফিরল নীলের। চারিদিকে তাকিয়ে দেখল। নীলের শুধু মস্তিস্কই কাজ করছে। দেখল বৃন্ত বসে রয়েছে পাশে। বড় ক্লান্ত লাগছে তার। আবার ঘুমের কোলে ঢলে পড়ল সে।

কত দিন কত সময় গেছে নীল জানে না। যখনই ঘুম ভেঙেছে দেখেছে হয় বৃন্ত পাশে বসে আছে। কিম্বা তাকে খাইয়ে দিচ্ছে কিম্বা গা মুছিয়ে দিচ্ছে, কিম্বা পাশে শুয়ে আছে। ব্যান্ডেজ অনেকই খোলা এখন। সেদিন দুপুরে নীলের মা নীলকে খাইয়ে দিচ্ছে। নীলের চোখ খুঁজছে বৃন্তকে। প্রথম কথা বলল সে-

বৃন্ত কোথায়? বড়ই অস্ফুট স্বর। নীলের মা আনন্দে পাগল হয়ে গেলেন প্রায়।

ওরে নিলা তোরা আয় দেখে যা, নীল কথা বলছে আমার। নীলের মাথাটা জড়িয়ে ধরে নীলের মা কেঁদে ভাসিয়ে দিয়ে বলল- সোনা রে তুই তিন মাস বাদে কথা বললি। নীলের যেন কোন দিকে খেয়াল নেই।

মা বৃন্ত কোথায়?

ও হাসপাতালে গেছে সোনা। আজকেই জয়েন করেছে। এই তিন মাস ও খায়নি দায়নি বললেই চলে। না ঘুমিয়ে তোকে সেবা করে গেছে রে সোনা। ডাক্তারই হাল ছেড়ে দিয়েছিল। একমাত্র ওই হাল ছাড়েনি। আজকে সকালে তোকে চেক আপ করে বলল মা ও ঠিক আছে। তাই হাসপাতালে গেল।

আমি একটু ঘুমব মা। ও অন্য দিকে পাশ ফিরে শুল। শুয়ে শুয়ে মনে পড়তে লাগল, বৃন্তর ওপরে ওর অত্যাচারের কথা। বুকটা মোচড় দিয়ে উঠল। কান্না দলা পাকিয়ে গলার কাছে এসে আটকে গেল যেন। এই বিছানাতেই বৃন্তকে মেরে ;., করত ও। আর সেই মানুষটাই তাকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে এনেছে। দুপুর থেকে সন্ধ্যে অবধি কাঁদল নীল। হয়ত এই কান্না দিয়েই বেরিয়ে গেল তার সব পাপ যা সে করেছিল বৃন্তর ওপরে। মাঝে মাঝেই বোন কিম্বা মা এসে দেখে যাচ্ছে। আর ও নিজেকে লুকিয়ে ফেলছে ঘুমের আড়ালে। এক বার দৃষ্টি এল। বাবার মাথায় ছোট ছোট হাত দিয়ে আদর করে চুমু খেল নীলকে। নীলের ভারী ভাল লাগল। আবার এদিক ওদিক হাতড়াতে হাতড়াতে চলে গেল নীচে। সবাই আসছে কিন্তু সে আসছে না কেন। তাকে দেখার জন্য মনটা যে তার খুব ব্যাকুল। এই সব ভাবতে ভাবতে চোখটা লেগে এসেছিল নীলের। তখনই শুনল বৃন্তর রিনরিনে গলার আওয়াজ। ঘুমিয়ে পড়ার ভান করল সে। ঘরে ঢুকেই, নীলের গলায় হাত দিয়ে কপালে হাত দিয়ে দেখল গরম কিনা। আআআআআআ হহহহহহহহ নীল যেন শান্তি পেল। কম্বলটা নামিয়ে দিয়ে নীলের বুকের দুটো বোতাম খুলে দিল। তার পরে উঠে গিয়ে বাথরুমে চলে গেল। নীল চোখ মেলল বৃন্ত পিছন ফিরতেই। সেই পরিচিত ভঙ্গী। চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে এল নীলের, বৃন্তর ওপরে করা অত্যাচার মনে পড়তেই। কোন কথা হল না। নীল বলতে পারল না কোন কথা। একটা সীমাহীন লজ্জা তাকে মৌন থাকতে বাধ্য করল।


দেখতে দেখতে কেটে গেল আরও দশ দিন। নীল এখন অনেক সুস্থ। মাঝে মাঝে উঠে বসে। হাত নাড়ায়। নিজের খাবার নিজেই খায়। কিন্তু সন্ধ্যে হলেই নিজেকে আড়াল করে নেয় অসুস্থতার আড়ালে। নিজের কাপুরুষ চোখকে মিলতে দিতে চায় না বৃন্তর চোখের সাথে। লজ্জা করে তার। একদিন পৌরুষ নিয়ে দম্ভিত নীল আজকে সব কিছু হারিয়ে বসে আছে বাড়িতে অথর্বের মত। ভগবান আছেন। না হলে সে যা পাপ করেছে তার শাস্তি হবে না এটা নীল ভাবতেই পারে না এখন। সেদিন রাতে নীলের ঘুমটা ভেঙে গেল। ঘুম এল না কিছুতেই। উঠে পিঠে বালিশ দিয়ে ঠেস দিয়ে বসে পড়ল নীল। পাশেই দৃষ্টিকে জড়িয়ে ধরে ঘুমচ্ছে বৃন্ত। খুব ইচ্ছে করছে নীলের বৃন্তর ঘন লম্বা চুলে হাত বুলিয়ে ওকে আরাম দিতে। কিন্তু হাত দিলেই উঠে পড়বে বৃন্ত। কিন্তু এই কদিন নীলের পরিচর্যা করতে করতে বৃন্তের ঘুম পাতলা হয়ে গেছিল। মনে হত কোথাও যন্ত্রণা হচ্ছে হয়ত নীলের। এদিনও ব্যতিক্রম হল না। বৃন্ত ধড়মড় করে উঠে বসল। দেখল নীল বসে আছে। ও খুব ভয় পেয়ে গিয়ে বলল-

কি হয়েছে ?

কিছু না। নীল চেষ্টা করেও চোখটা সরাতে পারল না বৃন্তের চোখ থেকে। একটা পশুর, হ্যাঁ সে যা করেছে বৃন্তর সাথে পশুরাও অতো ক্ষমা মায়া দয়াহীন হয় না। সেই রকম একটা পশুকে এতটা কেন করল বৃন্ত সেটা জানা দরকার। চোখ দুটো জলে ভরে এল। ছাপিয়ে পড়ল নীলের গাল বেয়ে। বৃন্ত নীলের চোখে জল দেখে ভাবল নিশ্চয়ই কোথায় যন্ত্রণা হচ্ছে। সে উঠে এল নীলের কাছে। নীলের মাথাটা এক হাতে ধরে বুকে নিয়ে নিল ও।

কোথায় লাগছে আমাকে বল। এইখানে লাগছে? বলে লোমশ বুকে হাত বোলাতে লাগলো। শব্দ করে কেঁদে ফেলল নীল। ধরে রাখতে পারল না নিজেকে। বৃন্তর বুকে মুখ গুঁজে জোরে জোরে কাঁদতে কাঁদতে নীল বলল “আমার ব্যাথা তুমি আমাকে ক্ষমা না করলে যাবে নাআআআ আআআ...” জোরে জাপটে ধরল নীল বৃন্তকে। বৃন্ত কি বলবে ভেবে পেল না। এ যে এক নতুন নীল। সে সাবধানে জড়িয়ে ধরল নীলকে। টেনে নীল বুকের মাঝে। নীল বৃন্তর বুকে মাথা দিয়ে জড়িয়ে ধরে রইল আর মাঝে মাঝেই একই কথা বলতে থাকল “আমার ব্যাথা তুমি ক্ষমা না করলে যাবে না।” বৃন্ত নিঃশব্দে কাঁদতে থাকল। তার চোখের জলে ভিজেই গেল নীলের অবিন্যস্ত এবড়ো খেবড়ো করে কাটা চুল। পুরো রাতটাই দুজনে কেঁদে কাটাল ওই ভাবেই। নীল ঘুমের ঘোরে মাঝে মাঝেই ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠছিল বৃন্তকে জড়িয়ে ধরে।

খেয়ে নে এইটুকু। নীল মাথা নাড়ল আর খাবে না বলে। নীলের মা সকালে নীলকে খাওয়াচ্ছে। ওর খেতে ইচ্ছে নেই একদম। সকালে উঠে বৃন্তকে দেখতে পায়নি সে। ভাল লাগছে না একদম। জানে বৃন্ত তাকে ক্ষমা করেনি। ক্ষমা করা উচিৎও নয়। কিন্তু বৃন্তকে ছাড়া সে থাকবে কি করে? আবার সেই একটা দলা পাকানো কান্না উঠে এল গলায়। কোন উপায় নেই। একদিন বৃন্তকে সে নুইয়েছিল। আজ নীল নুইতে প্রস্তুত। কিন্তু বৃন্ত তাকে সেই সুযোগ দেবে তো?

কি রে কি ভাবছিস? খেয়ে নে। নীলের চোখের কোনে জল দেখে নীলের মা নীলের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন।

- “ওরে তোকে ছেড়ে ও কোথাও যাবে না। গত দশ দিনে তুই ঘুমের ঘোরে সব বলেছিস আমাদের। তুই জানিস না। তুই ঘুম ভেঙে চিৎকার করে উঠতিস। জ্বরের ঘোরে কত কথা আমাকে বলেছিস তুই। শুধু ও কেন, ওর বাবা মাও প্রতিদিন এসে তোকে দেখে গেছে। এই যে ভাল ভাল ডাঁশা পেয়ারাগুলো খেতে তোর ভাল লাগে সেটা তোর শ্বশুর শাশুড়িই নিয়ে আসে ওদের গ্রাম থেকে। চিন্তা নেই। কাঁদিস না। ও মন্দিরে গেছে। চলে আসবে এখনি। নীল মায়ের কথায় প্রবোধ পেল না। মুখটা ঘুরিয়ে অন্য দিকে করে শুয়ে রইল। ওর মা চলে গেল ওকে খাইয়ে দিয়ে। কিছুক্ষন পরে দৃষ্টির গলার আওয়াজ পেল নীল। দেখল তার মেয়ে হাতড়ে হাতড়ে তারই দিকে আসছে।

আমি এখানে সোনা! দৃষ্টি দৌড়ে এল প্রায় বাবার কাছে। নীল ওকে ধরে নিল।

বাবা তুমি উঠে বসেছ? ও মা বাবা উঠে বসেছে দেখবে এস। বৃন্ত ঘরে ঢুকেই দেখল নীল বসে আছে আর মেয়ে ওর কোলে।

ইসসস বাপ মেয়েতে আদর হচ্ছে? আর মা ফাঁক পড়ে গেল। বৃন্ত হেসে বলল। নীল হেসে উঠল। বৃন্ত নীলের কাছে এসে দেখল নীলের চোখ জলে ভিজে। বৃন্ত বসে থাকা নীলের মাথাটা নিজের বুকে টেনে নিয়ে বলল-

শোন কালকে অনেক কেঁদেছ। আর কিন্তু কাঁদবে না।

তুমি আমাকে ছেড়ে যাবে না বল?



সেদিন বিকালে হুইল চেয়ারে নীলকে নিয়ে নীলা বেরল। নীলের নীচের অংশ এখনও কাজ করছে না ঠিক করে। বৃন্ত ভাবতে লাগল সেটা কি করে তাড়াতাড়ি ঠিক করা যায়। মানসিক ভাবে ও চেষ্টা করলে তাড়াতাড়ি পারবে। সব থেকে বড় কথা ও এক্সিডেন্টের পর থেকে নীলের পুরুষাঙ্গ উত্থিত হতে দেখেনি। সেটাও ওকে অনেকটা চিন্তায় ফেলেছে। নীল চাইছে না না কোন অন্য কারনে লিঙ্গ উত্থিত হচ্ছে না সেটা জানা দরকার। তাই নীচে নেমে এসে বাগানে যেখানে নীল হুইল চেয়ারে বসে ছিল সমুদ্রের ধারে সেখানে এসে দাঁড়াল। দেখল দৃষ্টি সমুদ্রের ধারে দাঁড়িয়ে আছে। জল ওর পায়ে লাগলেই খিল খিল করে হেসে উঠছে। এটা ওর রোজকার খেলা। নীল বসে বসে দেখছে আর হাসছে। আজকে ও নীলের দাড়ি গোঁফ কামিয়ে দিয়েছে লোক ডেকে। চুল গুলোও কেটে দিয়েছে সুন্দর করে। বেশ রোগা হয়ে গেলেও হ্যান্ডসাম লাগছে তার বরকে।
[+] 1 user Likes modhon's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: গল্প সংকলন nandanadas1975 - by modhon - 10-04-2021, 09:06 AM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)