07-04-2021, 06:30 PM
(This post was last modified: 08-04-2021, 11:14 AM by bourses. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
১৫
অভিলাশা - ১
ঘুমটা হটাৎ করেই ভেঙে গিয়েছিল… সচরাচর একবার ঘুমালে রাতে আর ওঠে না… কিন্তু আজকে সেটা হয় নি… হয়তো গরমটা একটু বেশিই পড়েছে আজ… অন্ধকার ঘরের মধ্যে প্রথমটায় চোখে কিছু পড়ে না তার ঘুম জড়ানো চোখে… আস্তে আস্তে চোখ সয়ে আসতে সময় লাগে… অভ্যাস বশত পাশ ফিরে তাকায় বিপ্রনারায়ণ… যেখানে তার স্ত্রীর শুয়ে থাকার কথা…
ভ্রূ কুঁচকে ওঠে… খালি কেন? কোথায় গেল কণক? শুয়েই মুখ ফেরায় ঘরের চারপাশে… আধো অন্ধকারে বোঝার চেষ্টা করে কনকের উপস্থিতি… “নাহঃ… কেউ তো নেই ঘরে… তাহলে? বাথরুমে গেছে? সেটাই হবে হয়তো…” ভাবতে ভাবতে ফের চোখ বন্ধ করে নেয়… চোখ বন্ধ করে, কিন্তু ঘুম আসে না আর…
আজকেই দুপুরে তিতাসকে নিয়ে ফিরেছে তারা বেলাডাঙায়… সূর্য কিছু দিনের জন্য বিদেশে গিয়েছে… হয়তো আগামী কাল কি পরশু ফিরে আসবে… তেমনটাই কথা আছে… এদিকে তিতাসও কলকাতা যাবার বায়না ধরেছিল, তাই কণক ওকে নিয়ে কলকাতায় গিয়েছিল, থাকতে, অন্তত কিছুদিন তাদের কাছে রাখার কথা ভেবে… কিন্তু মেয়ে কি আর সেই রকম শান্ত? পারে কখনও কলকাতার মত জায়গায়, একটা ঘেরা টোপের আবহাওয়ায় থাকতে? দু দিনেই হাঁফিয়ে উঠেছিল ওইটুকু মেয়ে… বায়না ধরেছিল মায়ের কাছে ফিরে আসবে বলে… অনেক বোঝানো হয়েছিল যে আর দুটো দিন অন্তত থাকার জন্য… কিন্তু কে শোনা কার কথা… শেষে কণকই বলল, “চলো, তিতাসকে বেলাডাঙায় দিয়ে আসি… আর যতদিন না ঠাকুরপো ফিরছে, আমরা না হয় ওই ক’টা দিন থেকেও আসবো’খন…”
বিপ্রনারায়ণ প্রথমটায় রাজিই হচ্ছিল না… আর সেটাই তো স্বাভাবিক… হাজার একটা কাজ আছে তার… পারিবারিক ব্যবসাটা তাকেই দেখতে হয়… ছোট ভাই এখনও অনেকটা ছোট… আর মেজো, মানে সূর্যের তো ব্যবসার প্রতি কোন উৎসাহই নেই কোনদিন… কি যে সারাক্ষন ওই রঙ তুলি নিয়ে কাটিয়ে দেয় কে জানে… তাই ইচ্ছা ছিল তার কণককে গাড়ি দিয়ে পাঠিয়ে দেয় বেলাডাঙায়… কিন্তু বাধ সাধেন রুদ্রনারায়ণ… বাড়ির বউ একা যাবে কি ড্রাইভারের সাথে… এতে নাকি পরিবারের মর্যাদা নষ্ট হয় যায়… বিরক্ত হলেও সেটা প্রকাশ করার কোন উপায় নেই বাবামশায়ের সামনে… এখনও তাঁর কথাই এই পরিবারের শেষ কথা… তাই বাধ্য হয়েই মাথা নেড়ে হ্যা বলতে হয়েছিল বিপ্রকে… খুশি না হলেও… ভেবেছিল এসে কণককে রেখে চলে যাবে সে… তারপর না হয় কিছুদিন পর ফিরে এসে আবার কণককে নিয়ে ফিরবে কলকাতায়… সেই হিসাবেই আসা তার এখানে, বেলাডাঙায়…
“কিন্তু… এখনও তো আসছে না কণক?” এবার একটু অধৈর্যই হয়ে ওঠে বিপ্রনারায়ণ… “যদি বাথরুমেই গিয়ে থাকবে, তাহলে এতক্ষন কি করছে সে?” মনে মনে স্বগক্তি করে বিপ্র… একটু চিন্তীতও যে হয় না এমন নয়… “বাথরুমে গিয়ে শরীর খারাপ টারাপ হলো না তো আবার?” ভাবতেই যেন সন্দেহটা আরো চেপে বসে মনের মধ্যে… “এই রাতবিরেতে কিছু হলে তখন আবার ডাক্তার বদ্যি কি করে করব? এখন তো সে সব এখানে পাওয়াও যাবে না… এটা তো আর কলকাতা নয়, যে একটা ফোনে কল দিলাম, আর ডাক্তার এসে হাজির হয়ে গেলো…” ভাবতে ভাবতে ফের উঠে বসে বিছানায় বিপ্রনারায়ণ… “তাহলে কি একবার বাথরুমের দিকে গিয়ে দেখবো?” ভাবতে ভাবতেই বিছানার থেকে নামতে উদ্যোগি হয় বিপ্রনারায়ণ, আর ঠিক তখনই ঘরের দরজায় একটা খুট করে শব্দ হয়ে ওঠে… বিপ্র খাটের ওপরে বসেই তাকায় দরজার দিকে… আলতো করে দরজার পাল্লাটা ফাঁক করে ঘরে ঢোকে কণক… নিঃশব্দ পায়ে… তারপর খুব সন্তর্পনে ঘরের দরজাটা ভিজিয়ে দিয়ে ঢুকে আসে ঘরের মধ্যে… এগিয়ে আসতে থাকে নিজের বিছানার দিকে…
খাটের কাছে এসে বিপ্রকে বসে থাকতে দেখে যেন ভূত দেখার মত চমকে ওঠে কণক… “তু…তুমি জেগে?” আমতা আমতা করে প্রশ্ন করে কণক…
“না… এই… ঘুমটা ভেঙে গেলো হটাৎ…” এক দৃষ্টিতে ঘরের আধো অন্ধকারের মধ্যে কণককে দেখতে দেখতে আনমনে উত্তর দেয় বিপ্রনারায়ণ… চোখ ঘুরে বেড়ায় কণকের ওপরে… বুঝতে পারে না কণকের এহেন অবস্থার কারণ…
কোন রকমে যেন পরণের শাড়িটা গায়ের সাথে জড়িয়ে নিয়েছে কণক… চুল এলোমেলো… সারা শরীরের মধ্যে একটা বিদ্ধস্থতার লক্ষণ সুস্পষ্ট… যেন একটা ঝড় বয়ে গিয়েছে কণকের দেহের ওপর দিয়ে একটু আগে… একটু ভালো করে খেয়াল করার পর বিপ্রনারয়ণ বুঝতে পারে কণকের গায়ের ব্লাউজটাও নেই… কোন কারনে সেটা অনুপস্থিত শরীরে… শাড়ির আঁচলটাকে কোন মতে জড়িয়ে রেখে নিজের আদুর গায়ের লজ্জা ঢেকে রেখেছে কণক…
দেখতে দেখতে আপনিই চোয়াল শক্ত হয়ে ওঠে বিপ্রনারায়ণের… চোখ সরু করে তাকায় নিজের স্ত্রীর পানে… “কোথায় গিয়েছিলে?” গম্ভীর স্বরে প্রশ্ন করে সে… গলার আওয়াজটাকে চেষ্টা করে যতটা সম্ভব নীচে রাখার… রাত গভীর… এখন একটু জোরে কথা বললেও ঘরের কথা বাইরে থেকে শোনা অসম্ভব কিছু না… বাড়িতে বিশেষ লোক না থাকলেও, চাকর ঝিয়েরা তো আছেই…
বিপ্রনারায়ণের প্রশ্নে প্রথমে কোন উত্তর দেয় না কণক… তার চোখের দিকে একবার তাকিয়ে মাথা নীচু করে নেয় সে… বোধহয় কি বলবে সেটাই ভাবে মনে মনে… কণকের এই নিশ্চুপতায় যেন আরো মাথার মধ্যে দপ্ করে আগুন জ্বলে ওঠে বিপ্রর… তবে কি যেটা সে সন্দেহ করছে, সেটাই? ভাবতেই যেন গলাটা কেমন শুকিয়ে যায়… কেন? কিসের জন্য? কোন কিছুরই তো অভাব নেই? তাদের সাংসারিক সম্পর্ক, অর্থকরি… তাদের নিজের স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যেও… তাহলে? কিসের টানে? কোথায় তাহলে তার কমতি রয়ে গেলো? বিশ্বাস? সেটার কি তবে কোন দাম নেই? অমর্যাদাও তো কখনও করা হয় নি কণককে কোন ভাবে… কখনও… যদি সব কিছুই ঠিক থেকে থাকে? তাহলে? তাহলে কি করে কি ঘটে গেলো? কবে? কখন? কি ভাবে?
প্রশ্নের পর প্রশ্ন যেন সুনামীর ঢেউএর মত আছড়ে পড়তে থাকে বিপ্রর মনের মধ্যে… একটারও কোন সদুত্তর খুঁজে পায় না সে… নিজের থেকে… আর যত সে সদুত্তর খুঁজে পায় না…ততই যেন তার একটা ভিষন অস্বস্থি হয়… শরীরের মধ্যে… মাথার মধ্যে… একটা রাগে, দুঃখে, অনিশ্চয়তায় কাঁপতে থাকে পুরো শরীরটা… দাঁতে দাঁত চেপে চোয়াল শক্ত করে সোজা হয়ে দাঁড়ায় সে বিছানা ছেড়ে… হাত মুঠি করে ধরে শক্ত ভাবে… “কি হলো? উত্তর দিচ্ছ না যে?” গমগমে চাপা গলায় প্রায় গর্জে উঠে ফের প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয় কণকের দিকে… “উত্তর আছে? নাকি কোন উত্তরই নেই তোমার কাছে? বলার মত কিছু পাচ্ছ না খুঁজে?”
স্বামীর প্রশ্নে ফের চোখ তোলে চকিতের জন্য কণক… তারপর মাথা নামিয়ে কিছু একটা অস্ফুট স্বরে বলে ওঠে… ভালো করে বিপ্রর কান অবধিও পৌছায় না সে কথাগুলো, এতটাই নিম্নস্বর সেই উত্তরের…
“স্পষ্ট ভাষায়, স্পষ্ট করে বলো… ও ভাবে মিনমিন করো না…” অধৈর্য বিপ্র প্রায় খিঁচিয়ে ওঠে স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে… আরো যেন শুনতে না পেয়ে ছটফটিয়ে ওঠে ভেতরটা তার… দু-পা এগিয়ে যায় স্ত্রীর দিকে…
বিপ্র এগিয়ে এলেও নিজের জায়গা থেকে নড়ে না কণক… কিন্তু মাথা নীচু করে থাকলেও নজর এড়ায় না তার স্বামীর অগ্রসর… ওই ভাবে, মাথা নীচু করেই সে ফের বলে ওঠে, গলাটাকে একবার ঝেড়ে নিয়ে… আগের থেকে অনেকটাই স্পষ্ট ভাবে… “আমি… আমি তোমায় অনেকদিন ধরেই ভেবেছি এটা বলার… কিন্তু বলা হয়ে ওঠে নি পারিপার্শিকতায়…”
কি? কি বলতে চেয়েছে তাকে অনেক আগে?... শুনে যেন বুকের ভেতরটায় কেমন একটা মুচড়ে ওঠে বিপ্রর… তাহলে সে যেটা ভাবছে সেটাই? তার অনুমানই ঠিক তবে? সেই তবে বোকা ছিল? হ্যা… বোকাই তো… তা না হলে তার নজর কি করে এড়িয়ে গেলো? কি করে সে ঘুর্ণাক্ষরেও টের পেলো না কিছু? কিন্তু কবে থেকে? কার সাথে? এই ভাবে কেন উত্তর দিচ্ছে কণক? এক বারে বলে দিলেই তো পারে… এই ভাবে বলার কি প্রয়োজন? কি করবে যেন বুঝে উঠতে পারে না বিপ্র… এখন তার কি করা উচিত? রেগে যাওয়া? নাকি বুক ভাঙা দুঃখে স্থবীর হয়ে যাওয়া? কোনটা সে করবে? নামটা শোনার পর? খুন করে দেবে? দুজনকেই? নাকি মুখ কালো করে মেনে নেবে ভবিতব্যকে? সেকি এই বাড়িরই কেউ? নাকি বাইরের? চাকরবাকরদের মধ্যে কেউ নয় তো? ছি ছি… এই রুচি কণকের? শেষে কি না সামান্য বেতনভুক চাকরের সাথে… আর যেন ভেবে উঠতে পারে না বিপ্র… ঘরের মধ্যে দাঁড়িয়ে ঘামতে থাকে সে… ভিজে ওঠে তার পরণের পাঞ্জাবীর পীঠটা, বগল… কপালে বিন্দু বিন্দু ঘামের রেখা দেখা দেয়…
“কিহহহহ…” কথা বলতে গিয়ে কথা বেরোয় না ঠিক করে… শুকনো হয়ে ওঠা গলায় স্বরটা যেন আটকে যায় তার… গলা খেকারী দিয়ে পরিষ্কার করে নিয়ে ফের জিজ্ঞাসা করে, “কি… কি বলো নি আমায়?”
কণক আগের মতই নীচু স্বরে উত্তর দেয়, “আমি… তুমি ছাড়াও আমার আর একজনের সাথে শারীরিক ভাবে সম্পর্ক তৈরী হয়েছে…”
সেটা আর এখন নতুন কথা নয় বিপ্রর কাছে… সেটা সে বুঝেই নিয়েছে… এটাই উত্তর হবে কণকের… তাই কথাটা শুনেও চুপ করে থাকে সে… অপেক্ষা করে বাকি কথাটা শোনার, কণকের নিজের মুখ থেকে… তারপরই না হয় যেটা করার, সেটাই করবে সে… তখনই না হয় একটা সিদ্ধান্তে আসা যাবে’খন…
“তাকে আমি ভালোবাসি…” ধীর গলায় বলে কণক… আরো একবার নিজের স্বামীর মুখটা ওই আধো অন্ধকারের মধ্যেই দেখে নিয়ে…
“আর সে?” একটা বড় শ্বাস টেনে ফের প্রশ্ন করে বিপ্র… এটাও তার জানার বিশেষ প্রয়োজন… পরবর্তি পদক্ষেপ কিছু নেবার আগে…
স্বামীর প্রশ্নে ইতিবাচক মাথা হেলায় কণক, “হ্যা… সেও…”
না চাইলেও মাথার মধ্যেটায় যেন আগুন জ্বলতে শুরু করে দেয় বিপ্রর… হাতের মুঠি আরো জোরে চেপে ধরে আপনা থেকে… মুঠিটাকে চেপে ধরে নিজের শরীরের পাশে… যেন অনেক কষ্টে মুষ্টিবদ্ধ হাতটাকে নিজের আয়ত্তে রাখার অপরিসিম চেষ্টা করে চলেছে… ভালোবাসে... ভালোবাসি... উফফফফফ... কথাগুলো যেন এক একটা হাতুড়ির বাড়ির মত মনে হয় তার মাথার মধ্যে... বুকের গভীরে... অসহ্য... অসহনীয়...
“কে?” ফ্যাসফ্যাসে গলায় প্রশ্ন করে বিপ্র… বুকের ভেতরে তখন তার ঝড় শুরু হয়ে গিয়েছে… তার পৌরষ, তার সন্মান, তার উঁচু মাথাটা… তার এতদিনকার ভালোবাসা, তার স্বামীত্ব… সব যেন ততক্ষনে ধূলায় গড়াগড়ি খাচ্ছে… “কি নাম তার?” অনেক কষ্টে যেন প্রশ্নটা করে কণককে… ইচ্ছা করেনা শুনতে আর তার… কিন্তু তাও… জানতে তাকে হবেই… চিনতেই হবে সেই মানুষটিকে… যে কি না তার সব কিছু উপড়ে দিয়ে কণককে ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে… আর তার টান এমনই যে তার উপস্থিতি সত্তেও তাকে ঘরের মধ্যে ঘুমন্ত রেখে অভিসারে যাওয়ার চিন্তা আসতে পারে কণকের মাথায়… এতটাই টান সেই মানুষটার প্রতি… ভাবতেই যেন আরো অস্বস্থিটা চেপে বসে মনের মধ্যে বিপ্রর… একটা পরাজয়, একটা গ্লানি যেন তার দিকে আঙুল তুলে অট্টহাসি হাসছে বলে মনে হয় তার…
“অনি… অনিন্দীতা…” খুব ধীরে ধীরে নামটা উচ্চারণ করে কণক…
নামটা শুনেও যেন শুনতে পায় না বিপ্রনারায়ণ… ঠিক শুনলো? নাকি সেই ভুল শুনলো নামটা? না না… এটা আবার কি করে হবে? এটা তো তার ভেবে নেওয়া নামের সাথে মিলছে না… কিছুতেই না… “কে? কি নাম বললে?” মাথা ঝুঁকিয়ে চোখ কুঁচকে ফের প্রশ্ন করে কণককে…
সেই একই রকম নীচু গলায় ফের বলে ওঠে কণক, “অনি… অনিন্দীতা…”
কি রকম যেন সব কিছু ওলোটপালট হয়ে যায় বিপ্রর… এটা আবার কি বলছে? নাকি নিজেকে বাঁচাতেই অনিন্দীতার নাম নিচ্ছে ও? একটা বিশ্বাস অবিশ্বাসএর দোলায় দুলতে থাকে সে… “অনিন্দীতা… মানে আমাদের অনিন্দীতা? সূর্যর বৌ অনিন্দীতা? মানে অলিভীয়া? মানে তিতাসের মা অনিন্দীতা?” কোণটা বললে যে ঠিক বোঝানো যাবে, বুঝে উঠতে পারে না বিপ্র… পর পর প্রশ্ন করে চলে কণকের কাঁধটা হাতের মধ্যে চেপে ধরে… মাথাটাকে একেবারে তার মুখের সামনে নামিয়ে এনে…
ইতিবাচক মাথা দোলায় কণক, ওপর নীচে করে… “হ্যা… তুমি ঠিকই শুনেছ… অনিন্দীতাই… আমাদের মেজবউ…” ধীর গলায় উত্তর দেয়…
বিপ্রর মনে হল যেন প্রচন্ড ঝড়ের পরমুহুর্তে একটা হটাৎ করে স্তব্দতা নেমে এসেছে তার মাথার মধ্যে… হটাৎ করে যেন সব কেমন ফাঁকা হয়ে গিয়েছে… মাথার মধ্যেটায় যেন কোন স্নায়ু কাজ করছে না… এতক্ষন ধরে ভেবে নেওয়া এতগুলো আশঙ্কা যেন নিমেষে কেমন অদ্ভুত ভাবে একেবারে কোন এক মন্ত্রবলে উধাও হয়ে গিয়েছে এক লহমায়… “তু… তু…” চেষ্টা করে কিছু একটা বলার… কিন্তু কি বলবে, কি ভাবে বলবে বুঝে উঠতে পারে না বিপ্র… ঘরের চারপাশটায় চোখ বুলিয়ে কথা খোঁজে সে… তারপর একটু যেন ধাতস্থ হলে ফের বলে ওঠে, “তুমি… তুমি অনিন্দীতার সাথে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে? এটা… এটা লুকোবার কি আছে?” এখন সে হাসবে না কাঁদবে বুঝে উঠতে পারে না যেন… কি ভাবছিল সে আর কি জানতে পারলো… দু পা পিছিয়ে গিয়ে ধপ করে বিছানার কিনারায় বসে পড়ে কণকের সামনে… “এটা লুকাবার কি আছে? আর তুমিই বা এই ভাবে এত অসহায়ের মত বলছ কেন?” বিপ্রর মনে হয় যেন বুকের ওপর থেকে কেউ একটা বিশাল ভার নামিয়ে দিয়েছে তার… ভিষন… ভিষন হাল্কা লাগে নিজেকে… “শোনো… এদিকে এসো আমার কাছে…” খানিক আগের গলার সে ক্রুদ্ধতার লেশ মাত্র থাকে না বিপ্রর… নরম গলায় কণকের উদ্দেশ্যে বলে হাত বাড়ায় তার দিকে…
ধীর পায়ে স্বামীর সামনে এসে দাঁড়ায় কণক… মাথা তার তখনও নিচু করে রাখা… যেন তার মনের মধ্যেও একটা অপরাধ বোধ, একটা সঙ্কোচ… ভার হয়ে চেপে বসে রয়েছে…
হাত ছেড়ে জড়িয়ে ধরে কণকের কোমরটাকে দুহাতের বন্ধনে বিপ্রনারায়ণ… কণকের শরীরটাকে আরো টেনে ঘন করে নিয়ে আসে নিজের কাছে… তারপর একটা হাতের আঙুলের ভরে কণকের মুখটা নিজের পানে তুলে ধরে বলে, “এই… এতে লজ্জার কি আছে? এতো ভালো কথা… তুমি এটা বলার জন্য এত ইতঃস্থত করছিলে?” বলতে বলতে হা হা করে হেঁসে ওঠে… হাসে সে… হয়তো যতটা না কণকের সরলতায়, তার থেকেও অনেক, অনেকটা বেশি নিজের মুর্খামীর জন্য… অবোধ চিন্তাধারার কারণে… ভেসে যাতে পারা সংসারটাকে সগরীমায় প্রতিষ্ঠিত দেখতে পেয়ে… হাসে নিজে সে পরাজীত হয় নি চিন্তা করে… পৌরষের অক্ষুণ্ণতা দেখে… এক অনাবীল নিশ্চিন্ততায়…
স্বামীকে হাসতে দেখে এবার সেও মুখ তুলে তাকায় বিপ্রর পানে… “তুমি রাগ করো নি তো?” আরো একবার সসঙ্কোচে প্রশ্ন করে…
“রাগ? কি পাগলের মত বলছো? আমি রাগ করবই বা কেন?” হা হা হা… ফের অট্টহাস্য করে ওঠে রাতের নিস্তব্দতার কথা চিন্তা না করেই… এখন আর তার মনে কেউ শুনে ফেলার ভয়টাই যেন আর নেই… শুনুক… যে খুশি শুনুক তার হাসি… শুনলে তার কিছু যায় আসে না… সে হাসতেই পারে, এই ভাবে… অট্টহাস্যে… নিজের স্ত্রীর সাথে, ঘরের মধ্যে… কার কি বলার আছে তাতে?
“না গো… সত্যিই আমি খুব ভয়ে ছিলাম… যদি এটা তুমি জানতে পেরে রাগ করো… আমি অনিন্দীতাকে বলেও ছিলাম… কিন্তু ওই বলল, দিদি কোন চিন্তা করো না… দাদা কিচ্ছুটি বলবে না জানতে পারলে…” বলতে বলতে মুখের ভাব অনেকটা সহজ হয়ে আসে কণকের… আগের সেই ভয়, সেই সঙ্কোচএর মেঘ যেন অনেকটা কেটে গিয়েছে ততক্ষণে…
“অনিন্দীতা বলেছে এ’কথা?” ঔৎসক্য যেন ঝরে পড়ে বিপ্রর গলার স্বরে… অনিন্দীতার প্রতি সেই প্রথম দেখা থেকেই একটা আলাদা আকর্ষণ সে অনুভব করে এসেছে… প্রথম দিকটায় আকর্ষণ থাকলেও, তার সাথে একটা বিরূপতায় মিশে ছিল… বাবামশাইয়ের মতই… মেনে নিতে পারে নি তাদের বংশে একজন বিদেশিনীর সংযুক্তিকরণকে… মেনে নিতে পারেনি, কিন্তু কামনা করতেও ছাড়ে নি সে মনে মনে… প্রকাশ্যে যদিও সেটা দেখাতে পারেনি সমাজ সংসারের সংকোচে… কিন্তু মনের মধ্যে একটা লোভ তার বরাবরই লুকিয়ে ছিল অনিন্দীতার শরীরটাকে অন্তত একবারের জন্য ভোগ করার অভিলাশায়… আর আজ, কণকের কথায় যেন হাতে চাঁদ পেয়েছে সে মনে হলো বিপ্রনারায়ণের… মনের মধ্যে লুকিয়ে রাখা এতদিনকার ইচ্ছাটা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে যেন… “অনিন্দীতা বলেছে? দাদা জানলেও কিছু হবে না?” ফের প্রশ্ন করে কণককে… ঘরের আধো অন্ধকারের মধ্যেও যেন তার চোখ দুটো একটা দুর্ণিবার লোভে চকচক করে ওঠে…
বিপ্রনারায়নের কথায় মাথা হেলায় কণক, “হ্যা… সেটাই… তবে আমার সত্যিই বলতে সাহস হচ্ছিল না তোমায় জানানোর, জানো…” মাথা নীচু করে উত্তর দেয় সে…
কণকের হাত ধরে তাকে বিছানায় তুলে আনে বিপ্রনারায়ণ…
বিছানায় উঠে গা এলিয়ে দেয় নরম তোষকে কণক… বালিশে মাথা রেখে একটা বড় করে নিঃশ্বাস টানে… নিঃশ্বাসএর তালে শাড়ির আড়ালে থাকা ভরাট বুকদুটো ফুলে ওঠে... “এখন আর আমার কোন চিন্তা নেই… তুমি এই ভাবে মেনে নেবে, সত্যিই… আমি ভাবতেই পারি নি একেবারে…” এখন আর মুখের ওপরে কোন রকমের চিন্তার ছায়ার চিহ্নের লেশমাত্র নেই… হাত বাড়িয়ে রাখে পাশে শুয়ে পড়া বিপ্রনারায়ণের বুকের ওপরে…
নরম হাতটাকে নিয়ে মুঠোর মধ্যে খেলা করতে করতে বলে ওঠে বিপ্রনারায়ণ, “কবে থেকে তোমাদের মধ্যে এটা শুরু হয়েছে?” বলতে বলতে অপর হাতটাকে বাড়ায় কণকের বুকের ওপরে এলিয়ে পড়ে থাকা বর্তুল স্তন লক্ষ্য করে… হাত ফেরে শাড়ির আঁচলের ওপর দিয়েই কোমল স্তনের অবয়বে… চাপ দেয় মুঠোয় পুরে নিয়ে…
“আহহহহ… এখন আর কিছু কোরো না গো… খুব ক্লান্ত লাগছে…” বুকের ওপরে খেলা করতে থাকা বিপ্রনারায়ণের হাতটাকে সরিয়ে দিতে দিতে বলে ওঠে কণক… স্বামীর দিকে পাশ ফিরে শোয় সে…
“কেন কেন? খুব ধামসেছে নাকি তোমায় অনিন্দীতা?” অনিন্দীতার নামটা উচ্চারণ করার সময় নিজের পুরুষাঙ্গে একটা মৃদু আলোড়ন অনুভব করে সে… ফের হাতটাকে বাড়িয়ে দেয় সামনে… এবার বুকের বদলে হাত রাখে কণকের পেট থেকে বাঁক খেয়ে স্ফিত হয়ে ওঠা কোমরের ওপরে…
“ভি-ষ-ন…” টেনে টেনে উত্তর দেয় কণক… “তবে আমিও ছাড়িনি ওকে… আমিও…” বলতে বলতে থমকায় সে, কতটা বলা উচিত হবে ঠিক যেন ঠাওর করতে পারে না…
“কবে? কবে থেকে তোমাদের এটা শুরু, বললে না তো?” ফের প্রশ্ন করে বিপ্রনারায়ণ… কণকের কোমর থেকে হাত পিছলে ফিরে আসে কণকের বুকের ওপরে… হাতের টানে বুকের ওপরে আলগোছে পড়ে থাকা শাড়ির আঁচলটাকে নামিয়ে দিয়ে উদলা করে দেয় ফর্সা সুগোল নরম দুটো স্তনের একটাকে… ঘরের আধো অন্ধকারের মধ্যেও যেন জ্বলজ্বল করে স্তনের ফর্সা ত্বক… হাতের তালুতে ধরে আলতো করে চাপ দেয় বুকের কোমলতায় বিপ্রনারায়ণ… মনে মনে যেন কণকের নয়, অনিন্দীতার স্তনের পরশ অনুভব করে হাতের তালুতে… পুরুষাঙ্গের আলোড়ন যেন আরো বৃদ্ধি পায় তার… শরীর ঘষটে আরো ঘন হয়ে সরে আসে কণকের দিকে…
এবার আর বাধা দেয় না কণক… ক্লান্ত লাগলেও নিজের বুকের ওপরে কর্কশ পুরুশালী হাতের ছোঁয়া একটা বেশ আবেশ ছড়ায় তার দেহে… উপভোগ করে স্তনের ওপরে বিপ্রনারায়ণের হাতের আলতো নিষ্পেশণ… “বছর খানেক আগে… সেই সেবার গো… দোলের সময় যখন আমরা এখানে এসেছিলাম… সেই সময় প্রথম ঘটে ব্যাপারটা…” স্মৃতি রোমন্থন করতে করতে বলে ওঠে কণক…
দোল বলতে মনে পড়ে যায় বিপ্রনারায়ণেরও… হ্যা… খেয়াল আছে তারও সেদিনটা… এই তো মাত্র বছর খানেক আগেই তো… সকলেই ছিল সেদিন, এই বেলাডাঙায়… প্রতি বছরের মতই… আনন্দ উৎসবে মেতে ছিল সকলে… ভাবতে ভাবতেই স্মৃতির প্রেক্ষাপটে ভেসে ওঠে সেদিনের অনিন্দীতা... একটা লালপাড় সাদা শাড়ি পরণে ছিল অনিন্দীতার, অন্যান্য বাড়ির আরো মেয়ে বউদের মতই… বিদেশীনি ফর্সা শরীরে অপূর্ব দেখাচ্ছিল তাকে… বার বার বিপ্রনারায়ণের চোখ চলে যাচ্ছিল অনিন্দীতার দীর্ঘ ভরাট শরীরটার দিকে… এখন আর আগের মত অসুবিধা হয় না শাড়ি পড়ে চলাফেরা করতে অনিন্দীতার… শাড়িতে যথেষ্ট অভ্যস্থ হয়ে উঠেছে সে… কিন্তু তাও… অনিন্দীতার বিদেশীনি শরীরে শাড়ির আবরণ যেন এক অন্য মাত্রা যোগ করে সর্বদা… শরীর চুঁইয়ে যেন যৌবনের সম্পদগুলো আরো প্রস্ফুটিত হয়ে ওঠে… প্রথম দিনের অলিভীয়ার সাথে আজকের অনিন্দীতার অনেকটা বদল ঘটে গিয়েছে, তার আচরণে, স্বভাবে, শরীরি বিভঙ্গে… অনিন্দীতার শরীরি গঠনের জন্য কিনা জানে না বিপ্রনারায়ণ… আর পাঁচটা বাঙালী মেয়ে বউদের শাড়ি পরিহিত দেহের থেকে একেবারেই যেন অনন্য সে… ভারী স্তন, চওড়া কাঁধ, মরাল গ্রীবা, নির্মেদ পেট আর উত্তল নিতম্বের দেহে শাড়ির আবরণ যেন অনেক, অনেকটাই যৌনাত্বক লাগে বিপ্রনারায়ণের চোখে… টান করে পরে থাকা শাড়ির আবরণ টেনে খুলে দেখতে ইচ্ছা করে তার আড়ালে থাকা শরীরটাকে বিপ্রনারায়ণের… কিন্তু সংকোচ, শালিণতা আর নিজের পরিবারে তার স্থান ভেবে সংবরণ করে রাখতে হয় তার এহেন ইচ্ছাটাকে… কিন্তু চোখ? সেটা তো কারুর বশ মানে না… তাই সকলের নজর এড়িয়ে অনিন্দীতার এহেন রূপসুধা পান করে চলে সে, যখনই সুযোগ আসে, তখনই… গতবছর কাজ ছিল বলে উৎসবের প্রথম দিকে আসতে পারেনি বিপ্রনারায়ণ বেলাডাঙায়… সে এসে পৌছেছিল দোলের দিন, মানে উৎসবের পঞ্চমদিনে, যেদিন রাধা-মাধবের বিগ্রহ নিয়ে গ্রামের পথে পথপরিক্রমায় বেরোয় তারা, তাদের বাড়ির সকলে, সেই সাথে গ্রামের প্রতিটা মানুষ সামিল হয় তাদের সেই পথপরিক্রমায়… সেও ছিল সেদিন সকলের সাথে… আবিরের রঙে সকলকে রাঙিয়ে তুলতে… সেদিন অনিন্দীতা সেজেছিল অপূরূপ সাজে, লাল পাড় সাদা শাড়িতে আরে সেই সাথে মানান সই শরীর আঁটো লাল রঙের পীঠ খোলা ব্লাউজে… তার সেই সাদা শাড়ি রেঙে উঠেছিল আবিরের রামধনূতে… লাল, বেগুনী, সবুজ, হলুদ, গোলাপী… অদ্ভুত সুন্দর দেখাচ্ছিল অনিন্দীতাকে সেদিন… ফর্সা শরীরে যেন একেবারে অপ্সরী নেমে এসেছে বলে মনে হচ্ছিল তাদের এই গ্রামের মেঠো পথে… আঁচলটাকে টান করে ঘুরিয়ে বেঁধে গুঁজে রেখেছিল কোমরের মধ্যে… আর তার ফলে অনিন্দীতার দেহের প্রতিটা অঙ্গবিভঙ্গ যেন আরো বেশি করে প্রস্ফুটিত হয়ে উঠেছিল… স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল টান করে রাখা শাড়ির আড়ালে থাকা নিতম্বের উত্তলতা… সেটার কোমলতা বুঝতে অভিজ্ঞ বিপ্রনারায়ণের অসুবিধা হয় নি… আরো বেশি করে, যখন সামনে সবার সাথে হেঁটে এগিয়ে যাচ্ছিল দোলের মাতোয়ারায়… তখন তার প্রতিটা পদক্ষেপে যেন তলতলিয়ে দুলে দুলে উঠছিল উত্থিত বর্তুল নিতম্বের অবয়বদুটো… শুধু নিতম্বই বা কেন? আবির খেলার সময় হাতের নড়াচড়ায় দেহের প্রতিটা কোমল অংশ যেন টলটলিয়ে দুলে উঠছিল বিপ্রনারায়ণের চোখের সন্মুখে… সাথে সূর্য থাকাতে বেশি কাছে যেতে পারে নি সে ঠিকই, কিন্তু সুযোগের সদব্যবহারও করতে ছাড়ে নি সে… সকলের নজর এড়িয়ে রাঙিয়ে দিয়েছিল আবিরের পরশে অনিন্দীতার গাল, ফর্সা লোভনীয় খোলা পীঠ… ইচ্ছা ছিল ফর্সা নির্মেদ পেটের ওপরে হাতটাকে নিয়ে যাওয়ার, কিন্তু অতটা সাহস কুলায়নি তার তখন… তাও বার দুয়েক চকিতে ছুঁয়ে দিয়েছিল অনিন্দীতার নধর বর্তুল নিতম্বদ্বয়… আনমনতার দোহাই দিয়ে… তাতেই যেন তার পৌরষে আগুন ধরে গিয়েছিল ঐ টুকু স্পর্শ পেয়েই… কিন্তু অনেক কষ্টে সংবরণ করে থাকতে হয়েছিল তাকে, তখন…
কিন্তু আজ… এখন… কণকের কাছে তার আর অনিন্দীতার সম্পর্কের কথা শুনে ভেতরে ভেতরে যেন পুলকিত হয়ে ওঠে বিপ্রনারায়ণ… একটা সম্ভাব্য আশার ক্ষীণ আলো যেন চোখের সন্মুখে জ্বলে ওঠে তার… নিজের স্ত্রীর দিকে আরো ঘন হয়ে আসে সে… দুহাতের আলিঙ্গণে টেনে নেয় কণকের দেহটাকে নিজের পানে… হাত রাখে কণকের ভরাট বুকের ওপরে… কল্পনা করার চেষ্টা করে হাত রাখা কোমল স্তনটায় অনিন্দীতার ত্বকের পরশের… প্রচন্ড দ্রুতবেগে সে কল্পনার অনুভূতি যেন ছড়িয়ে পড়ে বিপ্রনারায়নের দেহের প্রতিটা কোষে, শিরায়, উপশিরায়… “কি ভাবে? কি ভাবে শুরু তোমাদের এটা?” গলার মধ্যে যেন উত্তেজনা এসে পাকায় তার…
“ব্যাপারটা হয়েছিল বাড়ি ফেরার পর, বুঝলে…” নিজের শরীরটাকে স্বামীর সোহাগে ছেড়ে দিতে দিতে স্মৃতির সরণি বেয়ে ফিরে যায় সেই দিনটায় কণক… “এ বাড়িতে যতগুলো বাথরুম, তার থেকে তখন লোক সংখ্যা অনেক বেশি… এদিকে তোমাদের দুপুরের খাবারও বেড়ে দিতে হবে… প্রায় তখন একটা দেড়টা বেজে গিয়েছে… যদিও বাড়িতে তখন অনেকেই আছে, খাবার বেড়ে দেবার জন্য, তাও… মা রয়েছেন তখন, তাই আমরা, মানে বাড়ির বউরা স্বামীরা খেতে বসবে, আর সামনে থাকবো না, সেটা সম্ভব নয় ওনার আদেশে… জানোই তো…”
কণকের কথায় মাথা নাড়ে বিপ্রনারায়ণ… সত্যিই… এটা এই বাড়ির বরাবরের রীতি… বাড়ির পুরুষেরা এক সাথে খেতে বসে, আর বাড়ির বউরা প্রত্যেকে তখন সামনে হাজির থাকে… এটাই সর্বদা হয়ে এসেছে এ বাড়িতে… কলকাতাতেও… প্রভাবতীদেবীর এটা জারি করা হুকুম বলা যেতে পারে… “তো?” অধৈর্য বিপ্রনারায়ণ প্রশ্ন করে ফের… হাত নামে স্তন থেকে পেট তলপেট বেয়ে উরুসন্ধিস্থলের পানে… অতীব চেনা শরীরটার কতটা নামলে কি পাওয়া যাবে, সেটা বিপ্রনারায়ণের নখদর্পনে… বিপ্রনারায়ণের হাতের স্পর্শে পা মেলে দেয় কণক, দুই পাশে, অজান্তেই… আলগা করে দেয় উরুর জোড় বিপ্রনারায়ণের হাতের অগ্রসরে… হাত পৌছে যায় উরুসন্ধিতে… শাড়ির ওপর দিয়েই খামচে ধরে যোনিবেদী, নরম লোমের আচ্ছাদনে ঢাকা… “আহহহহ…” কণকের মুখ থেকে শিৎকার বেরিয়ে আসে যোনিতে হাতের চাপ পেয়ে… তখনও জায়গাটা ভিজে রয়েছে, খানিক আগের রমন শৃঙ্গারের ফলস্বরূপ…
“কোই… তারপর? বলো…” অধৈর্যতা ঝরে পড়ে বিপ্রনারায়ণের কন্ঠস্বরে…
“যা শুরু করেছ, তাতে কি আর কথার তাল ঠিক রাখা যায়?” চোখ ঘুরিয়ে মুচকি হেসে বলে ওঠে কণক… যোনিতে হাতের চাপে তার শরীরের মধ্যে তখন ফের নতুন করে কামনা বিনবিনিয়ে ঊঠতে শুরু করেছে… বিপ্রনারায়ণের হাত ঘসার তালে তাল মিলিয়ে একটু একটু আন্দোলিত হতে শুরু করেছে কণকের দেহটাও, কোমর থেকে…
একটু ভেবে নিয়ে শুরু করে কণক, “হ্যা… যা বলছিলাম তোমায়…” কথার ফাঁকে পরণের শাড়ির আঁচলটা টেনে নিয়ে ফের ঢাকা দেবার চেষ্টা করে নিজের উদলা বুকটাকে, মেয়েলি সঙ্কোচে… কিন্তু সাথে সাথে সেটা আটকায় বিপ্রনারায়ণ… যোনির ওপর থেকে হাত তুলে এনে বাধা দেয় কণককে… “থাক না… ওগুলো ঢাকা দেবার কি দরকার… আমিই তো রয়েছি… আর তো কেউ নয়… আর এগুলো তো আর আমার সামনে নতুন করে খুলে রাখা নয়? থাক ওগুলো ওই রকম… তুমি বলো…” বলে ফের হাত ফিরিয়ে নিয়ে যায় উরুসন্ধির ওপরে… তারপর কি মনে করে কণকের পরণের শাড়িটাকে নীচ থেকে ধরে গুটিয়ে কোমর অবধি তুলে এনে হাত ঢুকিয়ে দেয় নগ্ন হয়ে পড়া যোনির দিকে, দুই পুরুষ্টু উরুর মাঝখান দিয়ে…
এবার নিজের যোনির ওপরে একেবারে সরাসরি হাতের পরশ পেয়ে গুনগুনিয়ে ওঠে কণক… “উমমমমম…” নিজের পা দুখানি আরো ভালো করে মেলে ধরার চেষ্টার সাথে… আনমনে হাত বাড়িয়ে রাখে ঝুঁকে থাকা বিপ্রনারায়ণের পীঠের ওপরে… সোহাগ ভরে হাত বোলায় সেখানে… “বাথরুম কম থাকায় আমিই অনিন্দীতাকে পরামর্শ দিই, যে, ‘চল… আমরা বরং দুই বৌ মিলে এক সাথে চানটা সেরে নিই… তাতে সময় বেঁচে যাবে…”
“শুনে কি বললো অনিন্দীতা?” প্রশ্নর সাথে উত্তেজনার পারদের উর্ধমুখিতা মেখে থাকে বিপ্রনারায়ণের…
“শুনে প্রথমটায় লজ্জাই পাচ্ছিলো বেচারি… অন্তত আমার তো তাই মনে হয়েছিল… বললো, ‘দিদি, যদি কেউ জানতে পারে?’” ফের বলা শুরু করে কণক… “তা আমি বলি, ‘তো? জানলে কি হলো? তুই কি পরপুরুষের সাথে চান করতে ঢুকছিস নাকি?’ শুনে ও যা বললো, তাতে তো আমিই হাঁ…”
“কি?” চোখ বড় বড় করে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয় বিপ্রনারায়ণ… “কি বললো অনিন্দীতা, শুনে?” হাতের মুঠোয় চেপে ধরে কণকের যোনিটাকে…
যোনির ওপরে হাতের মুঠোর মোচড়ানোতে বেশ সুখ হতে শুরু করে দিয়েছে ততক্ষনে কণকের… কোমরটাকে একটু আলগোছে তুলে ধরার চেষ্টা করে বিপ্রনারায়ণের হাতের পানে… “বলে, ‘পরপুরুষ মানে তো অন্য কোন লোক? তাই তো? সে নিয়ে আমার কোন চিন্তা নেই… আমি অনেক পুরুষএর সাথেই চান করেছি…’”
“মানে? অনেক পুরুষ মানে?” কণক কিছু বলার আগেই ফের প্রশ্ন করে ওঠে বিপ্রনারায়ণ…
“অনেক পুরুষ মানে সত্যিই অনেক পুরুষ গো… সেটাই তো বললো আমায় অনিন্দীতা…” গুটিয়ে যাওয়া শাড়িটাকে কোমর থেকে আলগা করতে করতে বলে কণক… “বিয়ের আগে, ঠাকুরপোর সাথে দেখা হবার আগেই নাকি অনেক পুরুষ এসেছে মেজবউএর জীবনে… এটা নাকি ঠাকুরপোও জানে…”
“অনেক পুরুষ এসেছে মানে…” গলার কাছে উত্তেজনা ফের দলা পাকায় বিপ্রনারায়ণের… “তাদের সাথে…” কথাটা শেষ করতে পারে না আর…
“হ্যা… তাদের সাথে মেজবউএর সব কিছু হয়েছে…” বলতে বলতে কণকও যেন উত্তেজনা অনুভব করে নিজে শরীরে… যোনির মধ্যে তার নতুন করে রস কাটতে শুরু করে দেয়…