05-04-2021, 08:33 PM
প্রথম পরিচ্ছেদ
অনন্যা মাঠের গ্যালারী তে বসে ছেলের খেলা দেখছে। সুজিত আর মিথুন বাপ্পা কে স্পেশাল ট্রেনিং দিচ্ছে, এটা অনন্যা কে খুব খুসি করে। খেলা শেষে ড্রেসিং কর্নারে সুজিত একটা খাম বাপ্পার হাতে দিয়ে বলে, এটা তোর মাকে দিবি, বাড়ি গিয়ে। বাপ্পা কিছু না বলে বাড়ি যায়। বাড়ি পৌঁছে বাপ্পা মা কে খাম টা দিয়ে বলে, এটা সুজিত কাকু দিয়েছে তোমাকে। অনন্যা অবাক হয়, টাকা তো দেওয়া হয়েছে, এটা আবার কি। ও রেখে দেয় ব্যাগের মধ্যে, পরে দেখবে। কাজের মাঝে ভুলে যায়। রাত্রে শোবার সময় ওর মনে পরে, ব্যাগ টা খুলে খাম টা বের করে, সাদা খাম, ছিঁড়তে একটা সাদা কাগজ, ভাঁজ খুলে অবাক-
তারপর ছাতা টা নিয়ে বেড়িয়ে পরে দীঘির দিকে, ওদিকটা নিরিবিলি, কেউ খুব একটা আসেনা, শিবরাত্রির সময় পুজো দিতে আসে, বাকি সময় মাতাল আর নেশাখোর দের আড্ডা।
ছোট্ট আধা গ্রাম আধা শহর, জায়গাটার নাম রাজগ্রাম। কলকাতা থেকে বাসে প্রায় ২০০ কিমি দুরের এই মফস্বল। সেখানে খুব বেশি বড়লোকের বাস নেই, অধিকাংশ চাষ বাস করে জীবিকা নির্বাহ করে, দু চার জন এর ব্যাবসা। গ্রামের মোট ৫টি পরিবার উচ্চ শিক্ষিত। সেই রকম এক পরিবারকে নিয়ে আমাদের এই কাহিনি।
ব্যানার্জি বাড়ির বর্তমান ছেলে সুধিন একজন ইঞ্জিনিয়ার, পশ্চিম বঙ্গ সরকারের অধিন পূর্ত দপ্তরে সহকারি বাস্তুকার পদে উন্নীত হয়ে কলকাতায় বদলি হয়ে গেল। সুধিন এর সংসার বলতে ওর স্ত্রী অনন্যা,বয়েস ৩৯, বড় মেয়ে অনুমতি এবং ছোট ছেলে সায়ান্তন। অনুমতির ডাক নাম তৃষা, ওর বয়েস 17, এবারে হায়ার সেকেন্ডারি দেবে। ছোট ছেলে সায়ন্তন, বাপ্পা বলে সকলে ডাকে, সে এবার মাধ্যমিক দেবে, বয়স ১৫।
অনন্যা সুন্দরী,মেয়েও বেশ সুন্দরী। তৃষার গায়ের রঙ একটু চাপা, কিন্তু চেহারা অতিব সুন্দর। বাপ্পার ভীষণ খেলার দিকে মন, তাই সপ্তাহে একদিন ওকে নিয়ে ওর মা অনন্যা ক্রিকেট খেলাতে যায়, সেখানে ওদের খেলা শেখায় মিথুন মণ্ডল আর সুজিত দাস। জায়গা টা ওদের বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে, একটু ফাঁকা ধরণের জায়গা, গঞ্জ বলা চলে এলাকা টা কে। মিথুন জাতিতে '., ওর বাবার ইলেকট্রিক সরজনাম এর দকান আছে, বেশ চালু। মিথুন জেলাতে একসময় খেলত, তবে রাজ্য দলে খেলার সুজোগ পায়নি, সুজিত দাস লোকাল ক্লাবে খেলে। ওর বাবার কাঠের গোলা ও কাঠ চেরাই কল আছে। মিথুনএর বয়েস ৩০ এর ওপর, সুজিত ২৩-২৪।
মিথুন আর সুজিত অনন্যা কে নিয়ে আলোচনা করে ইদানীং। অনন্যা বেশ সুন্দরী ও আকর্ষণীয় হওয়ায় ওদের কথা মিথুন সুজিতকে বলে, সুজিত বুদ্ধি দেয় বাপ্পাকে পটাতে, সেই মতো খেলার শেষে বাপ্পাকে নিয়ে বসে ওরা।
সুজিত- এই বাপ্পা, তোর মার ডাক নাম কিরে?
বাপ্পা- অনু
মিথুন- বাহ, যেমন দেখতে তেমন নাম, তোর মা কিন্তু হেভি দেখতে।
বাপ্পা- হাঁ, সকলে বলে।
সুজিত- তোর বাবা কত দিন অন্তর আসে?
বাপ্পা- মাসে একবার এর বেশি আস্তে পারে না, খুব কাজ।
সুজিত- তোর বাবা এলে কোথায় শোয়? তোর মা’র কাছে?
বাপ্পা- নাহ, বাবা তো ওপরের ঘরে শোয়,আমার সাথে, মা আর দিদি নিচে শোয়।
সুজিত ও মিথুন এর মধ্যে চোখের ইসারা হয়।
সুজিত বলে যে বাপ্পা ওকে ওর মার খবর দিলে ওকে রোজ বেশি করে ব্যাট করাবে, আর যেন কাউকে না বলে, বাপ্পা ক্রিকেট অন্ত প্রাণ, ওর ইচ্ছে বিরাট কোহলি হওয়া, তাই বলার কথা ও ভাবতেই পারে না।
পরের রবিবার, বিকাল ৪ টে ঃ-
অনন্যা মাঠের গ্যালারী তে বসে ছেলের খেলা দেখছে। সুজিত আর মিথুন বাপ্পা কে স্পেশাল ট্রেনিং দিচ্ছে, এটা অনন্যা কে খুব খুসি করে। খেলা শেষে ড্রেসিং কর্নারে সুজিত একটা খাম বাপ্পার হাতে দিয়ে বলে, এটা তোর মাকে দিবি, বাড়ি গিয়ে। বাপ্পা কিছু না বলে বাড়ি যায়। বাড়ি পৌঁছে বাপ্পা মা কে খাম টা দিয়ে বলে, এটা সুজিত কাকু দিয়েছে তোমাকে। অনন্যা অবাক হয়, টাকা তো দেওয়া হয়েছে, এটা আবার কি। ও রেখে দেয় ব্যাগের মধ্যে, পরে দেখবে। কাজের মাঝে ভুলে যায়। রাত্রে শোবার সময় ওর মনে পরে, ব্যাগ টা খুলে খাম টা বের করে, সাদা খাম, ছিঁড়তে একটা সাদা কাগজ, ভাঁজ খুলে অবাক-
“অনু, আপনাকে দেখে আমি পাগল হয়ে গেছি, আপনাকে আমার ভীষণ ভাল লেগে গেছে, তাই আমি আপনার সাথে সম্পর্ক করতে চাই। যে কোন মুল্যে আমি আপনাকে চাই, প্লিস আমার সাথে কাল দুপুরে আপনাদের গ্রামের বটতলা দিঘির পশ্চিম পারের মন্দিরের পাশে আসবেন, ঠিক ১২ টা। আমি অপেক্ষা করব। খুব সুন্দর করে সেজে আসবেন। মনে রাখবেন, যে কোন মুল্যে আপনাকে আমার চাই, এর জন্য যত দূর যেতে হবে আমি যেতে প্রস্তুত। ইতি আপনার প্রেমে পাগল মিথুন মণ্ডল”।
অনন্যার গোটা শরীর ঘেমে যায়। একি বিপত্তি। ও খুব সাধারন মেয়ে, কোনদিন এসব ব্যাপারের মধ্যে ছিলনা, শেষে কিনা ছেলের ক্রিকেট কোচ এসব পাঠাল? ওর ইচ্ছে হল ছেলেকে ক্রিকেট ছাড়িয়ে দেবে, স্বামী কে জানাবে, থানায় জানাবে। সব দিক ভাবতে লাগলো কিন্তু সব শেষে ভাবল, যদি ক্ষতি করে, কারন এতে লেখা আছে যতদূর যেতে হয় ও যাবে। কিছুতেই ও রাস্তা খুজে পায়না। সারা রাত ভাল করে ঘুমতে পারেনা, সকালে ছেলে মেয়ে কে কলেজে পাঠিয়ে চিন্তা আরও বেড়ে যায়, কি করবে। কোথাও কোন উত্তর পায়না। বেলা যত বাড়ে চিন্তা তত বাড়ে, আর মনের ওপর নিয়ন্ত্রণ তত কমে যেতে থাকে। শেষে স্নান করে, ভাবে স্নান করলে মাথা ঠাণ্ডা হবে কিন্তু তাতেও কোন কাজ হয় না। বেলা ১১টা বাজলে ও বোঝে যেতে হলে এবার প্রস্তুত হতে হবে, ওর মন বলে, দেখা যাক না, এর মুখোমুখি মোকাবিলা করাই ভাল, সেই ভেবে প্রস্তুত হয়। সাজে।তারপর ছাতা টা নিয়ে বেড়িয়ে পরে দীঘির দিকে, ওদিকটা নিরিবিলি, কেউ খুব একটা আসেনা, শিবরাত্রির সময় পুজো দিতে আসে, বাকি সময় মাতাল আর নেশাখোর দের আড্ডা।