Romance আধুরা ইন্সান !

[ddey333]

কথা মতো সকালবেলায় অভি দিয়ার বাড়ির সামনে চলে আসে ! পরনে একটা নীল জিন্স এর প্যান্ট আর একটা সাদা টি শার্ট ! দারুন স্মার্ট দেখতে লাগে অভিকে ! পেটানো শরীরের দিকে অপলক তাকিয়ে থাকে দিয়া ! দিয়ার পরনে একটা লাল রঙের লেগিংসের উপর নীল রঙের টপ ! সারা শরীর দিয়ে যৌবনের উন্মাদনা উঁকি ঝুকি মেরে যাচ্ছে ! দুজন দুজনকে অপলকে দেখতে থাকে ! পাশ দিয়ে একটা ছোকরা ছেলে যাবার সময় কমেন্ট করে যায় ।। উফফ ! একেবারে জিত আর শুভশ্রির জুটি !

লজ্জায় দিয়ার গাল আলা হয়ে ওঠে ! " এইভাবেই এখানে দাঁড়িয়ে থাকবে না কি যাবে?"
- হ্যাঁ হ্যাঁ চলো চলো অনেক দেরি হয়ে গেছে ! আসলে যে রকম ড্রেস পরেছ নিজের চোখ কে সামলাতে পারছিনা ! বলেই অভি বাইক স্টার্ট করলো ! অভির পিছনে বসে দিয়া অভির পিঠে দুম দুম করে বেশ কয়েকটা কিল বসিয়ে দিলো ! যদিও সেই কিল ছিল ভালোবাসার ! মেইন রোডে পরতেই অভির শরীরের পিছনে দিয়া নিজের শরিরকে মিশিয়ে দিতে চাইল ! অভির মনে তখন বিরহের বেদনা ! বেশ কয়েকদিন নিজের প্রেয়সিকে ছেরে থাকতে হবে ! নৈহাটি ধকার মুখে একটা এটিএম থেকে অভি টাকা তুলে দিয়ার হাতে তুলে দিলো ! যখন ওরা বিদ্যুতদের বাড়ি পৌঁছালো তখন প্রায় বারোটা বাজে ! দরজার ঘণ্টি টিপল দিয়া ! বেশ কিচ্ছুক্ষণ হয়ে গেলো কেউ দরজা খুলছে না ! অধৈর্য হয়ে আরও দুবার বেল টিপতেই ভিতর থেকে কারুর পায়ের শব্দ হোল ! কি হল দিয়ে দেখার চেষ্টা করলো লেখা ! সামনে দিয়াকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে দরজা খুলে দিলো ! পিছনেই যে অভি আছে সেটা লেখা খেয়াল করেনি ! সবে স্নান করতে ঢুকেছিল ! এমন সময় বেল বাজতেই কনরকমে ভিজে গায়ে তোয়ালে জরিয়েই বেড়িয়ে এসেছিল ! অভিকে দেখেই ত্রস্ত পায়ে বাথরুমে ছুটে চলে গেলো ! অভির আর দিয়ার মুখে মুচকি হাসি ! লেখার তোয়ালে পড়া শরীর দেখেই অভি বেশ গরম হয়ে যায় ! গভির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে দিয়ার দিকে  ! সারা চোখে মুখে কামনার আগুন ! বাথরুমের ভিতর থেকে লেখার আওয়াজ পাওয়া যায় " তোরা বস ! আমি এখুনি স্নান সেরে আসছি ! "
তার মানে বাড়িতে মাইমা নেই ! মামা আর বিদ্যুৎ তো দোকানে গেছে ! মাইমা কোথায় গেলো ? সোফায় বসে অভি চিন্তা করতে থাকলো ! বেশ কিছুক্ষণ পরে একটা শারি পরে ভেজা চুল মুছতে মুছতে লেখা বাথরুম থেকে বেড়িয়ে এলো ! সারা পিঠে চুল থেকে ঝরে পড়া জলের ধারা পিঠটাকে ভিজিয়ে দিয়েছে ! ফলে শারি আর ব্লাউজের ভিতর দিয়েই লেখার নগ্ন পিঠ দেখা যাচ্ছে ! লেখার এই রুপ অভিকে মুগ্ধ করে দিয়েছে ! মনে পরে গেলো বৃষ্টি ভেজা সেই সন্ধার কথা যখন লেখার ভিজে শরীর দেখে অভি নিজেকে সংযত রাখতে পারেনি ! লেখার বৃষ্টি ভেজা শরীর অভিকে পাগল করে দিয়েছিল ! সেই ভুলের মাশুল এখনও পর্যন্ত দিয়ে যাচ্ছে অভি ! বেশিক্ষণ লেখার দিকে তাকাতে পারল না ! এই পাগল করা ভেজা রুপ অভির মনের সেই শয়তানটাকে হয়তো আবার জাগিয়ে দেবে ! মাটির দিকে চোখ রেখেই অভি প্রশ্ন করলো " মাইমা কোথায় ? দেখতে পাচ্ছি না তো ?"
- তোমার মাইমা আর মামা  মায়াপুর বেরাতে গেছে সকাল বেলাতেই !তাই আমি বাড়িতে একা ! আজ কি মনে করে দুজনে এখানে ?
- না মানে দিয়া বলল যে তোমার সাথে দেখা করতে যাবে ! আমাকেও আসতে বলল ওর সাথে তাই চলে এলাম ! বেশ কিহুদিন তো এখানে থাকবো না ! তাই একবার দেখা করতে চলে এলাম !!
- বস তোমরা ! আমি এখুনি আসছি ! বলেই লেখা ঘরের ভিতর চলে  গেলো  !
- কি ব্যাপার গো তোমার ? তুমি লেখার দিকে ওই ভাবে তাকিয়ে ছিলে কেন? অভি হতচকিত হয়ে উত্তর দেয় !" লেখার এই সাধারন রুপ কোনোদিন দেখিনি তো ! তাই অবাক হয়ে গেছিলাম ! ভাবছিলাম যে বাড়িতে এতো সুন্দরী একটা বউ থাকতে কি করে বিদ্যুৎ তোমার দিকে হাত বারায় !
- ছাড়ো ! তোমরা সব পুরুষই এক ! সুন্দরী মেয়ে দেখলে তোমরা কেউই নিজেদের ঠিক রাখতে পারনা ! বেশ রাগের গলাতেই দিয়া বলে উঠল ! কারন অভির ওই ভাবে লেখার দিকে তাকিয়ে থাকা দিয়া যে সরল ভাবে নেয়নি সেটা বেশ বোঝা যাচ্ছিলো !
অভি দিয়াকে জরিয়ে ধরে বলে উঠল " ওরে আমার পাগলি রে ! অন্য কোন মেয়ে দেখার আমার দরকার নেই ! আমার দিয়াই আমার কাছে সব ! "
ছারো ছারো ! এখুনি লেখা চলে আসবে !
অভি দিয়াকে ছেরে দেয় ! লেখা ঘরে ঢুকে জিগ্যাসা করে "এবার বল হটাত এই সময় তোরা এখানে?"
- না মানে আসলে ও কাল চলে যাবে ! তাই একটু নিরিবিলিতে বসে কথা বলব বলে ভেবেছিলাম ! তার আগে তোদের ধার শোধ করার ছিল তাই আগে তোদের এখানে চলে এলাম ! এই নে তোর ব্যালেন্স টাকা ! বলেই নিজের ব্যাগ থেকে টাকার গোছাটা বের করে লেখার হাতে ধরিয়ে দেয় দিয়া !
টাকার গোছাটা হাতে নিয়ে ঠোঁট কামরে জিজ্ঞাসা করে " এই সময়ে তুই এতো টাকা পেলি কোথায় ! আর এতো তাড়াহুড়ো করে টাকা ফেরত দেবার মানেটা কি?"
না না সেই রকম কোন ব্যাপার না ! আসলে জমাতে জমাতে দেখলাম যা জমেছে তোর ধার শোধ হয়ে যাবে ! তাই ! ......। নিপাট মিথ্যা বলে দিলো দিয়া  ! লেখার মুখ থেকে সন্দেহের বীজ কিছুতেই যেতে চাইল না ! কথা ঘোরাতেই অভি বলে উঠল " এই দুপুর রোডে এলাম আমার ডার্লিঙের কাছে ! ডার্লিং এক গ্লাস ঠাণ্ডা জলও দিলনা ! কি জানি দুপুরে খেতে দেবে কি না সেটাও ভাবার বিষয় ! "
লজ্জায় লেখা জিভ কেটে বলে ফেলে " সরি সরি ! একদম ভুল হয়ে গেছে গো ! আসলে এই সময় তোমরা এলে কোন খবর না দিয়ে তাই একটু অবাক হয়ে গেছিলাম ! একটু বস এখুনি আসছি !
দুজনের হাতে দুটো কলদ ড্রিঙ্কস এর গ্লাস ধরিয়ে দিয়ে বলল " আসলে কালই তোমার দাদার সাথে আমার একটু কথা কাটাকাটি হয়ে গেছে দিয়াকে দেওয়া টাকা কে নিয়ে !  আর আজ দিয়া টাকা ফেরত দিলো ! তাই ব্যাপারটা কি সেটাই বোঝার চেষ্টা করছি !
- না না সে রকম কোন কথাই নেই ! আমার টাকার জোগাড় হয়ে গেলো ! আমি তোকে দিয়ে দিলাম ! আবার যদি দরকার পরে নিশ্চয়ই তোকে জানাবো ! এই চলো তুমি কাল সকালের ফ্লাইট তোমার অনেক কিছু কেনার বাকি আছে তোমার ! বলেই অভির হাতে টান দিলো দিয়া !
ওদের কে থামিয়ে দিয়ে লেখা চোখ দুটোকে সরু করে জিজ্ঞাসা করলো " তোরা কিন্তু আমাকে কিছু চেপে যাচ্ছিস ! আমি আসল ঘটনা জানতে চাই ! "
- সেই রকম কোন ব্যাপারই নয় ! আসলে আমি তোমার বান্ধবির প্রেমে পরে গেছি ! সেটাই জানাবার জন্য তোমার কাছে আসা ! হাসির ছলে বলে উঠল অভি !
লেখা কিছুই বলল না ! বেরুবার সময় শুধু বলল " আমি যেটা ভাবছি সেটা যদি সত্যি হয় তাহলে তোমাদের দুজনের সাথেই আমার বন্ধুত্ত কিন্তু শেষ হয়ে যাবে ! "
- এতো তারাতারিই যদি সব শেষ হয়ে যায় তাহলে না হয় আবার নতুন করে শুরু করবো  ! লেখার গাল ধরে ইয়ার্কির ভঙ্গিমায় বলে অভি বেড়িয়ে এলো ! পিছন পিছন দিয়া ! বাইক স্টার্ট করে দুজনেই হাত নারিয়ে লেখা কে বিদায় জানালো !