14-03-2021, 05:35 PM
সন্ধার পর থেকেই অনিলার জ্বর আসতে শুরু হলো । ধিরে ধিরে জ্বর অনেক বেড়ে যাচ্ছিলো , তাই আমি আবার সোনিয়াকে খবর দিয়ে আনলাম । সোনিয়ার সাথে করিম ও এলো । জ্বর মেপে দেখা হলো প্রায় একশো দুই । আমি অনিলাকে হসপিটাল নিতে চাইলাম , কিন্তু সোনিয়া অভয় দিয়ে বলল তার কোন দরকার হবে না । ঝুমা আর সোনিয়া মিলে অনিলার যত্ন আত্তি করতে লাগলো , কিছুক্ষন পর পর পানি সেঁক দিচ্ছে মাথায় ।
আমিও বসে ছিলাম ওদের সাথে , একটু পর আমি ঘরের বাইরে বেড়িয়ে এলাম । দেখলাম করিম বারান্দায় বসে আছে , ওকে দেখে আমার আজমল চাচার কথা মনে পড়ে গেলো । যে করিম কে আমি চিনি তার পক্ষে এমন কোন কাজ করা সম্ভব নয় , কিন্তু মানুষ তো বদলায় । আর সবচেয়ে বেশি বদলায় যখন ক্ষমতা তার হাতে আসে । করিম এর হাতে এখন ক্ষমতা আর আমার উপস্থিতি ওর এই খমতার প্রতি কিছুটা হলেও হুমকি স্বরূপ । তাই করিম এমন কাজ করতেই পারে ।
ধিরে ধিরে আমি করিম এর দিকে এগিয়ে গেলাম । আমাকে দেখে করিম জিজ্ঞাস করলো “কিরে অনিলার শরীর কেমন এহন “
“ পানি পট্টি দিতাসে দেহি কি হয়” এই বলে আমি চুপ করে রইলাম । কিছুক্ষন করিম ও চুপ রইলো ওকে বেশ চিন্তিত দেখাচ্ছে । কিসের এতো চিন্তা করছে করিম , মনে মনে ভাবলাম আমি । ও কি কাজ সফল না হওয়ায় চিন্তিত , “ কিরে তোরে দেইখা মনে হইতাসে কোন কিছু নিয়া চিন্তা করতাসস ?” করিম এর রিএক্সন দেখার জন্য জিজ্ঞাস করলাম আমি ।
“ চিন্তার একটা ব্যাপার আছে , তয় এহন তোরে কিসু কমু না , আমি পুরা শিওর হইয়া তোরে কমু”
কি এমন ব্যাপার যে করিম এখন আমাকে বলতে পারছে না , ও কি অন্য কারো ঘাড়ে এই দোষ চাপাতে চাইছে ? আমি আরও শিওর হওয়ার জন্য বললাম
“ নৌকার মাঝি রে পাইসস “ কিন্তু করিম এর উত্তর দিলো না , বরং আমাকে আর একটা প্রস্ন করলো , করিম জিজ্ঞাস করলেও
“ তোরে কি কেউ কিসু বলসে?” করিম জিজ্ঞাস করলো আমায় ।
“ কি কইবো?” আমি অবাক হওয়ার ভাব করলাম , তবে আমার পুরো শরীর কেঁপে উঠলো , আমি কোনদিন বিশ্বাস করতাম না যে করিম এমন কিছু করবে । কিন্তু ও যে যেচে এসে জিজ্ঞাস করছে যে আজমল চাচা আমার কাছে কিছু বলেছে কিনা সেটা কিন্তু ওর দুর্বলাতা প্রকাশ করছে । এর আগে আমি নিশ্চিত ছিলাম না কিন্তু এখন আমি প্রায় নিশ্চিত এই কাজ করিম করেছে । তবে হয়ত
“ এহনো কয় নাই তাইলে? তয় কইবো “ এ কথা বলে করিম আমার কাঁধে একটা হাত রাখলো তারপর বলল “ লোকে অনেক কথা কইবো জামিল তয় তুই নিজেরে একবার প্রস্ন কইরা দেহিস বিশ্বাস করন এর আগে”
“ কি কইতাসস করিম , আমি কিছুই বুঝতে পারতাসিনা”
“ বুঝবি এহন না বুঝলেও পড়ে বুঝবি “ এই বলে করিম আবার চুপ হয়ে গেলো । এমন সময় সোনিয়া বেড়িয়ে এলো ।
“ ভাই অনিলার জ্বর কমে গেছে , তবে রাতে যেন কেউ ওর পাশে থাকে , জ্বর আসলে জেনো পানি দেয়া হয় আর একটা ওষুধ খাওয়াইয়া দেওয়া হয়”
“ তুমি অনেক কিসু করলা সোনিয়া “ আমি সোনিয়াকে বললাম ।
“ কি যে বলেন ভাই , ডাক্তার দের কাজ ই এইটা “ হেঁসে বলল সোনিয়া
কিছুক্ষন পর সোনিয়া আর করিম চলে গেলো । আমি বারান্দায় বসে রইলাম । ঝুমা নিচে গিয়েছে রাতের রান্না করতে অনিলার পাশে জালাল বসে আছে । বসে বসে ভাবছি করিম এর কথা , কেন এমন করলো করিম , আমি তো ওকে বলেই দিলাম যে আমি এর পর আর গ্রামে আসবো না । সময় আর ক্ষমতা মানুষ কে কতটা নিচে নামিয়ে দিতে পারে সেটা যত ভাবছি ততো অবাক হচ্ছি । কিন্তু যতই অবাক হই দুইয়ে দুইয়ে চার মেলাতে আমার সমস্যা হচ্ছে না । করিম জাস্ট আমার চলে যাওয়া শিওর করার জন্য এই কাজ টি করেছে । যেহেতু নৌকা ও ভারা করেছে আর নৌকার মাঝিকেও আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না । এই কাজ করিম ছাড়া আর কেউ করেনি ।
রাতে আজমল চাচা আবার এলেন আমার কাছে । আমাকে নানা ভাবে চলে যাওয়ার জন্য বলতে লাগলেন । কিন্তু আমি কিছুতেই রাজি হলাম না । যাই হোক নিজের বাড়ি ছেড়ে আমি যাবো না । হ্যাঁ আমি নিজে ব্যাপারটা নিয়ে সরাসরি কথা বলবো করিম আর সাথে , তার আগে অনিলাকে ঢাকা পাঠিয়ে দেবো । কিন্ত আমি যাবো না , আমি মিয়াঁ বাড়ির ছেলে এমন করে আমাকে তারিয়ে দেবে সেটা আমি কিছুতেই হতে দেবো না, তার উপর সবচেয়ে বড় কথা হলো আঘাত এসেছে আমার সবচেয়ে দুর্বল জায়গায় । আমার এক মাত্র মেয়ের উপর । এর শেষ আমি দেখে ছাড়বো বলে সিদ্ধান্ত নিলাম । আপাতত যে কয়দিন অনিলা আছে সেই কয়দিন আমি এ নিয়ে কিছুই করবো না বলে ঠিক করলাম ।
সব কথা অবশ্য আজমল চাচা কে বললাম না , তবে এটা সাফ জানিয়ে দিলাম আমি যাবো না । এবং এর শেষ দেখে তারপর এখান থেকে যাবো । আজমল চাচা আমাকে আরও বঝানোর চেষ্টা করলো কিন্তু আমি ওনাকে থামিয়ে দিলাম । শেষে উনি বিড়বিড় করে কি কি যেন বলতে বলতে চলে গেলেন ।
রাতের খাবার খেয়ে আমি আর ঝুমা অনিলার পাশে বসে আছি । অনিলা এখনো ঘুমাচ্ছে , কি সুন্দর লাগছে অনিলাকে । নিস্পাপ ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে মনটা আমার খারাপ হয়ে গেলো । মানুষ কত নীচ হলে এমন কাজ করতে পারে । এখন তো আমার লাভ্লুর মেয়ে সম্পর্কে যে কথা গুলি করিম বলেছিলো সেগুলি বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে ।
“ আপনে গিয়া ঘুমান ছোট মিয়াঁ, আমি একলা থাকলেই হইবো” ঝুমা হঠাত বলে উঠলো ।
ঝুমার কথায় আমার ধ্যান ভাংলো । ঝুমার চোখ দুটো লাল হয়ে আছে , সারাদিন কত খাঁটা খাটনি করে মেয়েটা এখন আবার রাত জাগবে । আমি বললাম “ না না ঝুমা আমার রাত জেগে অভ্যাস আছে , তুমি গিয়ে একটু ঘুমিয়ে নাও , সকালে তোমার কত কাজ”
কিন্তু ঝুমা আমার আর কোন কথাই শুনল না । আমাকে জোড় করে আমার ঘরে পাঠিয়ে দিলো । আসলে আমি অনেক ক্লান্ত ছিলাম তাই ঘুমিয়ে পড়লাম ।
আমিও বসে ছিলাম ওদের সাথে , একটু পর আমি ঘরের বাইরে বেড়িয়ে এলাম । দেখলাম করিম বারান্দায় বসে আছে , ওকে দেখে আমার আজমল চাচার কথা মনে পড়ে গেলো । যে করিম কে আমি চিনি তার পক্ষে এমন কোন কাজ করা সম্ভব নয় , কিন্তু মানুষ তো বদলায় । আর সবচেয়ে বেশি বদলায় যখন ক্ষমতা তার হাতে আসে । করিম এর হাতে এখন ক্ষমতা আর আমার উপস্থিতি ওর এই খমতার প্রতি কিছুটা হলেও হুমকি স্বরূপ । তাই করিম এমন কাজ করতেই পারে ।
ধিরে ধিরে আমি করিম এর দিকে এগিয়ে গেলাম । আমাকে দেখে করিম জিজ্ঞাস করলো “কিরে অনিলার শরীর কেমন এহন “
“ পানি পট্টি দিতাসে দেহি কি হয়” এই বলে আমি চুপ করে রইলাম । কিছুক্ষন করিম ও চুপ রইলো ওকে বেশ চিন্তিত দেখাচ্ছে । কিসের এতো চিন্তা করছে করিম , মনে মনে ভাবলাম আমি । ও কি কাজ সফল না হওয়ায় চিন্তিত , “ কিরে তোরে দেইখা মনে হইতাসে কোন কিছু নিয়া চিন্তা করতাসস ?” করিম এর রিএক্সন দেখার জন্য জিজ্ঞাস করলাম আমি ।
“ চিন্তার একটা ব্যাপার আছে , তয় এহন তোরে কিসু কমু না , আমি পুরা শিওর হইয়া তোরে কমু”
কি এমন ব্যাপার যে করিম এখন আমাকে বলতে পারছে না , ও কি অন্য কারো ঘাড়ে এই দোষ চাপাতে চাইছে ? আমি আরও শিওর হওয়ার জন্য বললাম
“ নৌকার মাঝি রে পাইসস “ কিন্তু করিম এর উত্তর দিলো না , বরং আমাকে আর একটা প্রস্ন করলো , করিম জিজ্ঞাস করলেও
“ তোরে কি কেউ কিসু বলসে?” করিম জিজ্ঞাস করলো আমায় ।
“ কি কইবো?” আমি অবাক হওয়ার ভাব করলাম , তবে আমার পুরো শরীর কেঁপে উঠলো , আমি কোনদিন বিশ্বাস করতাম না যে করিম এমন কিছু করবে । কিন্তু ও যে যেচে এসে জিজ্ঞাস করছে যে আজমল চাচা আমার কাছে কিছু বলেছে কিনা সেটা কিন্তু ওর দুর্বলাতা প্রকাশ করছে । এর আগে আমি নিশ্চিত ছিলাম না কিন্তু এখন আমি প্রায় নিশ্চিত এই কাজ করিম করেছে । তবে হয়ত
“ এহনো কয় নাই তাইলে? তয় কইবো “ এ কথা বলে করিম আমার কাঁধে একটা হাত রাখলো তারপর বলল “ লোকে অনেক কথা কইবো জামিল তয় তুই নিজেরে একবার প্রস্ন কইরা দেহিস বিশ্বাস করন এর আগে”
“ কি কইতাসস করিম , আমি কিছুই বুঝতে পারতাসিনা”
“ বুঝবি এহন না বুঝলেও পড়ে বুঝবি “ এই বলে করিম আবার চুপ হয়ে গেলো । এমন সময় সোনিয়া বেড়িয়ে এলো ।
“ ভাই অনিলার জ্বর কমে গেছে , তবে রাতে যেন কেউ ওর পাশে থাকে , জ্বর আসলে জেনো পানি দেয়া হয় আর একটা ওষুধ খাওয়াইয়া দেওয়া হয়”
“ তুমি অনেক কিসু করলা সোনিয়া “ আমি সোনিয়াকে বললাম ।
“ কি যে বলেন ভাই , ডাক্তার দের কাজ ই এইটা “ হেঁসে বলল সোনিয়া
কিছুক্ষন পর সোনিয়া আর করিম চলে গেলো । আমি বারান্দায় বসে রইলাম । ঝুমা নিচে গিয়েছে রাতের রান্না করতে অনিলার পাশে জালাল বসে আছে । বসে বসে ভাবছি করিম এর কথা , কেন এমন করলো করিম , আমি তো ওকে বলেই দিলাম যে আমি এর পর আর গ্রামে আসবো না । সময় আর ক্ষমতা মানুষ কে কতটা নিচে নামিয়ে দিতে পারে সেটা যত ভাবছি ততো অবাক হচ্ছি । কিন্তু যতই অবাক হই দুইয়ে দুইয়ে চার মেলাতে আমার সমস্যা হচ্ছে না । করিম জাস্ট আমার চলে যাওয়া শিওর করার জন্য এই কাজ টি করেছে । যেহেতু নৌকা ও ভারা করেছে আর নৌকার মাঝিকেও আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না । এই কাজ করিম ছাড়া আর কেউ করেনি ।
রাতে আজমল চাচা আবার এলেন আমার কাছে । আমাকে নানা ভাবে চলে যাওয়ার জন্য বলতে লাগলেন । কিন্তু আমি কিছুতেই রাজি হলাম না । যাই হোক নিজের বাড়ি ছেড়ে আমি যাবো না । হ্যাঁ আমি নিজে ব্যাপারটা নিয়ে সরাসরি কথা বলবো করিম আর সাথে , তার আগে অনিলাকে ঢাকা পাঠিয়ে দেবো । কিন্ত আমি যাবো না , আমি মিয়াঁ বাড়ির ছেলে এমন করে আমাকে তারিয়ে দেবে সেটা আমি কিছুতেই হতে দেবো না, তার উপর সবচেয়ে বড় কথা হলো আঘাত এসেছে আমার সবচেয়ে দুর্বল জায়গায় । আমার এক মাত্র মেয়ের উপর । এর শেষ আমি দেখে ছাড়বো বলে সিদ্ধান্ত নিলাম । আপাতত যে কয়দিন অনিলা আছে সেই কয়দিন আমি এ নিয়ে কিছুই করবো না বলে ঠিক করলাম ।
সব কথা অবশ্য আজমল চাচা কে বললাম না , তবে এটা সাফ জানিয়ে দিলাম আমি যাবো না । এবং এর শেষ দেখে তারপর এখান থেকে যাবো । আজমল চাচা আমাকে আরও বঝানোর চেষ্টা করলো কিন্তু আমি ওনাকে থামিয়ে দিলাম । শেষে উনি বিড়বিড় করে কি কি যেন বলতে বলতে চলে গেলেন ।
রাতের খাবার খেয়ে আমি আর ঝুমা অনিলার পাশে বসে আছি । অনিলা এখনো ঘুমাচ্ছে , কি সুন্দর লাগছে অনিলাকে । নিস্পাপ ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে মনটা আমার খারাপ হয়ে গেলো । মানুষ কত নীচ হলে এমন কাজ করতে পারে । এখন তো আমার লাভ্লুর মেয়ে সম্পর্কে যে কথা গুলি করিম বলেছিলো সেগুলি বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে ।
“ আপনে গিয়া ঘুমান ছোট মিয়াঁ, আমি একলা থাকলেই হইবো” ঝুমা হঠাত বলে উঠলো ।
ঝুমার কথায় আমার ধ্যান ভাংলো । ঝুমার চোখ দুটো লাল হয়ে আছে , সারাদিন কত খাঁটা খাটনি করে মেয়েটা এখন আবার রাত জাগবে । আমি বললাম “ না না ঝুমা আমার রাত জেগে অভ্যাস আছে , তুমি গিয়ে একটু ঘুমিয়ে নাও , সকালে তোমার কত কাজ”
কিন্তু ঝুমা আমার আর কোন কথাই শুনল না । আমাকে জোড় করে আমার ঘরে পাঠিয়ে দিলো । আসলে আমি অনেক ক্লান্ত ছিলাম তাই ঘুমিয়ে পড়লাম ।