07-03-2021, 02:50 PM
দ্বিতীয় কিস্তি
সত্যি আমার দ্বারা যে এরকম কিছু হবার নয় তা আমি জানি।
শৈশব-কৈশোর কেটেছে গ্রামের পাঠশালা আর কলেজে। এরপর কলকাতায় চলে আসি। কলেজ লাইফ আর ইউনিভার্সিটি লাইফ কেটেছে কলকাতায়। তারপর চাকরি জীবন। অনেকটা ভাসা মানিকের মতো। আমি এখনও ভাসছি। ভেসে বেড়াচ্ছি।
গ্রামে উনামাস্টারের কাছে টিউশন পড়তে যেতাম।
আমাদের গ্রামের থেকে সেটা প্রায় দুই মাইল দূরে। প্রত্যেক দিন হেঁটে যাওয়া আসা করতে হতো। আমাদের গ্রাম থেকে আমরা দু-জন যেতাম। আমি আর ভানু।
ভানু চারবার ফেল করে এখন আমার সঙ্গে একসঙ্গে মাধ্যমিক দেবে। স্বভাবতই ও আমার বস। আমার থেকে অনেক কিছু ও বেশি জানে। তাছাড়া বিড়ি খায়। বাবার বিড়ির বাণ্ডিল থেকে প্রত্যেক দিন ও দু-তিনটে করে বিড়ি গেঁড়াবেই গেঁড়াবে।
আর আমাদের বন্ধুদের সামনে এমন হাবভাব করে বিড়ি খাবে আর কথা বলবে যে আমরাও ওর কথাবার্তায় মহিত হয়ে যেতাম। ও আমাদের দলের পালের গোদা।
আমি মাঝে মাঝে ওর ফাই ফরমাস খাটতাম।
মনামাস্টার আমার গার্জেন। মনাকাকা।
মাঝে মাঝে আমাকে আড়ালে ডেকে নিয়ে গিয়ে বলতো, ভানুর সঙ্গে বেশি মিশিস না। ছেলেটা ভালো নয়। আমি মাথা নিচু করে থাকতাম।
সেদিন উনামাস্টারের কাছে পড়তে যাওয়ার কথা। সকাল ৬ টার সময়। আমি রেডি হয়ে ভানুর বাড়িতে গেছি। ভানুর মা বললো, ভানু চলে গেছে। অগত্যা আমি একা একাই গেলাম উনামাস্টারের কাছে।
গিয়ে দেখি সকলেই এসেছে। কিন্তু ভানু নেই। কেমন যেন লাগল।
সৌমিলি আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে পূর্ণিমাকে বললো, পুনি দেখ বাবু আজ একা একা, জুরিদার নেই।
আমি এমনিতে খুব কম কথা বলি। মেয়েদের সঙ্গে তো কথাই বলতাম না। ওদের দিকে তাকালাম। ওরা এমন ভাবে আমাকে চোখ মারলো যে আমার বুকটা কেঁপে উঠলো।
উনামাস্টার আমার দিকে তাকাল।
আর একটা হনুমান গেল কোথায় অনি?
আমি মাথা নিচু করে বললাম, জানিনা।
মিথ্যা কথা বলছিস।
সত্যি বলছি স্যার। কাকী বললো ও আমার আগে চলে এসেছে।
দেখ গিয়ে কার ঘরের আঁখ বাড়ি ধ্বংস করছে।
গুডবয় বলে আমার একটা সুনাম ছিল। তাই মাঝে মাঝে পাল্লায় পরে একটু-আধটু দোষ করলেও সাতখুন মাপ। অনি এটা করতেই পারে না।
পড়তে পড়তে অনেক দেরি হয়ে গেল। বইখাতা গুছিয়ে বেরতেই দেখি স্যারের বাড়ির বাঁশঝাড়ের কাছে পুকুর পাড়ে সৌমি আর পুনি দাঁড়িয়ে আছে। কাছে আসতেই সৌমি বললো, কোন দিক দিয়ে যাবি অনি?
দীঘাআড়ি দিয়ে যাব।
দীঘাআড়ি!
আমাদের দুটো গ্রামের মাঝে একটা বিরাট ঝিল।
মাঝে মাঝে আমি একা একা ওখানে গিয়ে বসি। কতো পাখি আসে ওই ঝিলে। আমি বসে বসে দেখি। চারিদিকে গাছ আর গাছ। ঘনো জঙ্গলে ভর্তি। উনামাস্টারের বাড়ি থেকে বেরিয়ে প্রথমে পরবে বীরকটার শিবমাড়ো। একটু এগোলেই পুরীকুন্ডী শ্মশান। শ্মশানকে বাঁহাতে রেখে এগিয়ে গেলে কামার ঘর। তারপর বড়বিল, রামপুরার বাঁধে উঠে বাঁধ বরাবর দীঘাআড়ি।
লোকে ভয়ে ওই পাশে যায় না। বলে ওখানে নাকি ভূতেরা নাচানাচি করে। আমি বহু দিন একা একা ওইখানে গিয়ে বসেছি। কিন্তু ভূত দেখতে পাইনি। তাই আমাকে অনেকে ডাক সাইটে সাহসী বলেও ডাকে। বাড়ির সকলে জানে কোথাও না পেলেও অনিকে দীঘাআড়িতে পাওয়া যাবেই। আমাদের গ্রামে যারা মারা যান। তাদের ওই শ্মশানে পোড়ান হয়। আমার মা-বাবাকেও ওখানে পোড়ান হয়েছিল।
বোঁচকুল খাবি? পুনি বললো।
না।
আমাদের সঙ্গে আজ বাঁধে বাঁধে চল না।
অনেক ঘোরা হবে।
তাতে কি হয়েছে? একসঙ্গে গল্প করতে করতে যাব।
ওরা থাকে আমাদের গ্রামের পশ্চিম পাশে ধামসাই বলে একটা গ্রামে। ওই গ্রামের সকলেই বেশ পয়সা ওয়ালা লোক, গ্রামের লোকেরা বলে মাহেশ্ব পাড়া, সকলেই প্রায় চাষ আবাদ করে, আর গ্রামে সপ্তাহান্তে যে হাট বসে তাতে দোকান দেয়। সৌমি আগে আমি মাঝখানে পুনি পেছনে। হাঁটতে হাঁটতে ওরা আমাকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করছিল।
তুই একটা গবেট গোবিন্দ বুঝলি আনি।
কেন!
তুই মেয়েদের সঙ্গে কথা বলতে জানিস না।
আমি চুপ করে থাকলাম।
ভানুকে দেখেছিস, আজকে একটা মেয়েকে পটাচ্ছে। আবার কালকে আর একটা মেয়েকে পটাচ্ছে। আর তুই ওর সঙ্গে থেকে কি শিখলি?
ভানু ভালোছেলে।
এঃ । ভানুর কলাটা দেখেছিস?
ভানু কি কলাগাছ, যে ওর কলা থাকবে।
হি-হি, হি-হি তুই সত্যি একটা গাধা।
যা তোদের সঙ্গে আমি যাব না। আমি ফিরে দাঁড়ালাম।
পুনি, সৌমি দু-জনে আমার দু-হাত ধরলো।
আচ্ছা আচ্ছা তোকে গাধা বলবো না। কিন্তু গাধী বললে রাগ করবি না?
আমি সৌমির দিকে তাকালাম। ওর চোখের ভাষা সেই দিন সেই বয়সে বুঝতে পারিনি। কিন্তু ছবির মতো আমার চোখে আজও ভেসে আছে। এখন এই ভরা যৌবনে আমি চোখ বন্ধ করে একমনে চিনতা করলেই সেই চোখ দেখতে পাই। ভাষাও বুঝতে পারি।
তিনজনে হাঁটতে হাঁটতে একেবারে গ্রামের শেষ প্রান্তে এলাম।
সামনের বড়ো মাঠটাকে কাশিঘরের ডাঙা বলে। এখন ওটা সবুজ। সবে মাত্র ধান রোয়া শেষ হয়ে গাছগুলো সামান্য বেড়ে উঠেছে। ওটা পেরলেই সৌমিদের বাড়ি। আর আমাকে ডানদিক দিয়ে আবার ছিনার বাঁধে বাঁধে কিছুটা হেঁটে নদী পেরিয়ে আসতে হবে।
সামনে বিশাল বাঁশ বন। এই দিনের বেলাতেও সেখানে শেয়ালের আনাগোনা।
এই পুনি তুই বলনা অনিকে।
আমি! না না তুই বল।
কেন আমি কি শুধু একা ভাগ নেব? তুই নিবি না?
আমি তো ওকে রাজি করিয়ে নিয়ে এলাম এপাশ দিয়ে আসার জন্য, তুই এবার বল।
আমি ওদের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। কি বলছে ঠিক মাথায় ঢুকছে না। ওরা আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে। আমরা এখন বাঁশ বনের ভেতরে। চারিদিকে লম্বা লম্বা বাঁশ মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। কোনটা হেলে পড়েছে। কোনটা একে অপরের শরীরে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বাঁশ গাছ ছাড়াও অনেক গাছ আছে। তাল, তমাল, শিরিষ, সেগুন, বট, অশ্বত্থ আরও কত কি।
ওই কোনের ঢেকটাতে একটা বড় জামরুল গাছ আছে। আমরা দঙ্গল বেঁধে কলেজ থেকে ফেরার পথে জামরুল খেতে আসি। হাওয়ার ধাক্কায় বাঁশ গাছগুলো একপাশ থেকে আর এক পাশে হেলে যাচ্ছে। গায়ে গায়ে ঘসা লেগে ক্যাঁচ ক্যাঁচ করে একটা আওয়াজ হচ্ছে। আমি প্রায়ই একা থাকলে এরকম নির্জনে চলে আসি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা একলা বসে থাকি। ভীষণ ভালো লাগে।
এই আওয়াজ শুনতে শুনতে মনে হয় বাঁশ গাছগুলো যেন একে অপরের সঙ্গে গায়ে গা লাগিয়ে কথা বলছে। আমরা কেউই ওদের শব্দ-স্পর্শ-গন্ধ বুঝি না। কিন্তু ওরা ওদের ভাষা বোঝে। আমি ওপরের দিকে তাকিয়ে ছিলাম।
একফালি সূর্যের আলো বাঁশ গাছের ফাঁক ফোকর দিয়ে নিচে আসার জন্য অবিরাম ছটফট করছে। কিন্তু আর একটা গাছ তাকে কিছুতেই নিচে আসতে দেবে না। এ যেন আলো ছায়ার খেলা। আমি নিজের মধ্যে নিজে যেন হারিয়ে গেলাম।
অনি।
সৌমিলির গলা শুনে চোখ নামাতেই দেখি দুজনের কেউই আমার পাশে নেই। একটু ভয় পেয়ে গেলাম।
অনি।
এদিক ওদিক তাকালাম। না কেউ কোথাও নেই।
অনি।
এবার বুঝতে পারলাম। ওই বাঁশ ঝারটার পেছন থেকে আওয়াজ আসছে।
কি হলো, তোরা ওখানে কি করছিস? যাবি না? আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে। মনাকাকা বকবে।
একবার এদিকে আয়, একটা জিনিস দেখাব।
আমি একটা হেলে পড়া বাঁশের তলা দিয়ে মাথাটা নিচু করে ওপাশে গেলাম।
কোথায়?
এই তো এখানে, আয়।
কাছে যেতেই অবাক হলাম। একটু ভয়ও পেলাম। পুনি, সৌমি দুজনেই উলঙ্গ অবস্থায় একটা ঝোপের আড়ালে দাঁড়িয়ে।
করবি।
আমি ভয় পেয়ে দৌড় লাগালাম। সেই যে ওখান থেকে দৌড় শুরু করলাম সোজা চলে এলাম দীঘাআড়ি।
দীঘির পাড়ে বইখাতা রেখে ঝিলের জলে চোখ-মুখ ধুলাম। পেট ভর্তি করে জল খেলাম। তারপর আমার পরিচিত সেই ঝোপটার কাছে গিয়ে বসলাম। সরাল, শামুকখোলা একবার দীঘির জলে মুখ ডোবাচ্ছ আবার ভেসে উঠছে। সামনেই কোথাও একটা ঘু ঘু পাখি ডাকছে। ঝিঁ ঝিঁ পোকার একটানা ঝিঁ ঝিঁ শব্দ। কাঠবিড়ালীগুলো আশপাশ দিয়ে ছোটাছুটি করছে। কেউ আবার সামনের দুইপায়ে খাবার নিয়ে পেছনের দুইপায়ে ভড় দিয়ে দাঁড়িয়ে কুট কুট করে খাবার খাচ্ছে। আমি আবার অন্যমনস্ক হয়ে পড়লাম।
মা-বাবা বেঁচে থাকলে হয়তো আমার জীবনটা একটু অন্য ভাবে লেখা হতো, কি করা যাবে। সবার ভাগ্যে সব কিছু জোটে না, আমারও তাই।
হঠাৎ একটা মেয়ের খিল খিল শব্দে চমকে উঠলাম। এদিক ওদিক তাকালাম। না কেউ কোথাও নেই। তারপর ভানুর গলার শব্দ।
আমি পায়ে পায়ে এগিয়ে গেলাম। ঝোপের আড়ালে ভানু আর কালীচরনের ঝি।
কালীচরন আমাদের বাড়ির খামারের ওপাশে একটা টং করে রয়েছে। এই সময় ওরা আসে মাঠে কাজ করার জন্য। আবার মাঠের কাজ শেষ হলে চলে যায়।
কালীচরন সাঁওতাল। ওর মেয়ের নাম ময়না। ময়না ভানুর কাছ ঘেঁসে বসে আছে। উদম গায়ে একটা বারো হাত কাপর কোনও প্রকারে পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে জড়িয়ে আছে। কতো বয়স হবে আমাদেরই মতো। সতেরো আঠারো, শরীরটা যেন পাথরে কুঁদে তৈরি। যেমনি মিশ কালো, তেমনি চকচকে।
আমার যে ময়নাকে ভালো লাগত না তা নয়। তবে ভালো লাগলেও বা করবো কি? আমি চেষ্টা করেও কখনও ভানুর মতো হতে পারব না। তাছাড়া আমার মনামাস্টার আছে। আমার গার্জেন। আমি বাপ-মা মরা ছেলে। গ্রমে আমাকে শাসন করার প্রচুর লোক। পান থেকে চুন খসলে গাঁ উজাড় হয়ে যাবে। আমার অনেক প্রতিবন্ধকতা। তাই সব ইচ্ছেগুলো বুকের মধ্যে গলা টিপে মেরে ফেলতাম।
মনে পড়ে গেল সৌমি আর পুনির ব্যাপারটা। ওরা ওই ভাবে নেংটো হয়ে আমার সামনে এলো? আর আমি দৌড়ে চলে এলাম!
তুই এতো জোরে চাপিস কেন?
ভালো লাগে।
আবার ওদের দিকে চোখ পড়ে গেল।
ভানুর শরীরে শরীর ঠেকিয়ে ময়না বসে আছে। বুক থেকে কাপরটা খসে পড়েছে।
ময়না বলে উঠল, বুদতি পালিছি বুদতি পালিছি…..।
ভানু হাসল, তুই বুঝতি পারছু?
হ।
তাইলে কাপরটা….?
না।
কেন?
কি দিবি।
বিকেলে হাটে তোকে ছোলার পাটালি কিনে দেব। আর মনিহারির দোকান থেকে একটা লাল ফিতে কিনে দেবো।
দিবি তো।
হ্যাঁ।
আগের বার দিলি নি।
এবার তোকে ঠিক দেব।
মোকে তাড়াতাড়ি যাইতে হবে। পান্ত লিয়ে মাঠে আসতি হবে।
ভানু ময়নার কানের লতিতে জিভ দিল। ময়না নড়ে চড়ে উঠল।
কেউ যদি এউঠি এইসে পড়ে?
কে আসবে এখন!
তুর ওই বন্ধুটা।
অনি?
হ।
ও তো পড়তে গেছে।
তুই যাস লাই?
না।
কেনি?
তোকে আজ খুব আদর করতে ইচ্ছে করছিল। তাই ওইখানে গিয়ে বসেছিলাম। জানি তুই আসবি।
তুর খালি নষ্টামি। এসব করা ভালো লয়।
কে বললো তোকে?
মা বইলছে।
তোকে আমার ভালো লাগে?
ভানু ময়নার গালে একটা চুমু খেল। তারপর….
আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিল। প্রায় আধঘণ্টা ধরে সব দেখলাম। শেষে দুজনেরই শরীর কেমন ভাবে যেন কেঁপে কেঁপে উঠল। এটাই তবে সেক্স!
বন্ধুরা অনেক গল্প করতো। আমি ঠিক আমল দিতাম না। মাঝে মাঝে অন্ধকার ঘরে উলঙ্গ হয়ে ছোটো আয়নাটা নিয়ে নিজেই নিজেকে দেখতাম। ভালো লাগত।
আমি বহু দিন ওদের দীঘাআড়ির এই জায়গাটায় দেখেছি। কিন্তু কোনও দিন ওরা আমাকে দেখতে পায়নি। তারপর একদিন ভানুকে ব্ল্যাকমেল করলাম।
ভানু আমার হাতে-পায়ে ধরে। আমি শুধু ওকে বলেছিলাম, আমি যা বলবো তোকে তাই করতে হবে। ও রাজি হয়ে গেল। তারপর থেকে ভানু দাদা। আমি ওর দাদা।
দেখতে দেখতে ১৫টা দিন যে কোথা দিয় কেটে গেল ঠিক বুঝতে পারলাম না। বড়োমা এর মধ্যে দু-তিনবার ফোন করেছিল। ছোটোমাও।
অমিতাভদা প্রতিদিন সকালে আর বিকেলে ফোন করতো। মল্লিকদাও। তনু মাঝে কয়েকবার ফোন করেছিল ঠিক, তবে ওর কথাবার্তা শুনে কেমন যেন একটু খটকা লাগল। বললাম ঠিক আছে, কলকাতায় গিয়ে সব শুনবো।
আসার সময় আমাকে প্লেনের টিকিট ধরানো হলো। কলকাতর অফিসে আমাকে জরুরি দরকার আছে তাই। কলকাতা এয়ারপোর্টে নামার পর দেখলাম বড়োমার মিস কল। প্লেনে থাকাকালীন হয়তো করেছিল। বড়োমাকে ফোন করলাম। কন্ঠে উৎকন্ঠা। আমাকে বললো।
তুই এখন কোথায়?
এই সবে নামলাম, এখনও লাউঞ্জে রয়েছি বেরোত পারিনি।
ঠিক আছে। প্রথমে একবার এ বাড়িতে আসিস।
একটু ভয় পেয় গেলাম—কেন!
আয়-না, এলে জানতে পারবি।
তুমি আগে বলো, দাদার কিছু হয়েছে!
না-রে না।
তাহলে!
তোর জন্য আমি ছোটো সকাল থেকে রান্না চাপিয়েছি। তুই এলে একসঙ্গে খাওয়া হবে।
সত্যিকথা বলো, তাহলে যাব। নাহলে যাব না। যেমন বিকেল বেলা যাই তেমন যাব।
না তুই এখুনি আসবি।
ঠিক আছে।
বুঝলাম গুরুতর একটা কিছু হয়েছে। যার জন্য বড়োমার তলব।
এয়ারপোর্টে নেমে অনেক পরিচিত মুখের দেখা পেলাম। কাজের তাগিদে এখানে প্রায় আসতে হয়। তাছাড়া সাংবাদিক মানুষ, তাই একটু আধটু খাতির আছেই, কলকাতা মার্কেটে আমার পরিচিতি খুব একটা খারাপ নয়।

