07-03-2021, 08:44 AM
এক নিঃশ্বাসের গল্প
ওয়ালজ
“আমাদের প্রথম ওয়ালজের কথা মনে আছে?”
“হ্যাঁ, তুমি খুব নার্ভাস ছিলে, আমার পা মাড়িয়ে দিয়েছিলে।”
পরেশকে হুইল চেয়ার থেকে হাত ধরে তুলে, এক পা এক পা করে অপরেশন থিয়েটারের দরজার দিকে নিয়ে যাচ্ছিল শিখা। তিন তিরিক্কে ন স্টেপ হাঁটা মাত্র। পরেশ বলল, “আজকেও আমার খুব নার্ভাস লাগছে। সেই প্রথম দিনের মতই...।”
সজনে ফুল
শহুরে ছেলে। বৌ মফসসলের। বিয়ের পর ছোটনাগপুরে বেড়াতে এসেছে। যায়গাটা এখনও গঞ্জ ধরণের। চারদিকে গাছগাছালি। সকালে ঘুম ভাঙতেই পাখিদের কিচির মিচির। বৌ শীত কাতুরে। লেপের মধ্যে গুটিসুটি। ছেলেটা বেরিয়ে পড়ল। এদিক সেদিক ঘুরে ফেরার সময় দেখল একটা গাছের নীচে সাদা ফুলে ঘাস ছেয়ে আছে। পায়ে ডিঙ্গি দিয়ে উঁচু ডালে ঝাঁকি দিতে আরও ফুল ঝরে পড়ল। দু হাত ভরে ফুল কুড়োল। রুমালেও কিছু বাঁধল। বাড়ি ফিরে মেয়েটার সামনে রাখতে মেয়েটা গালে হাত দিয়ে বলল – ওমা এতো সজনে ফুল। কোত্থেকে পেলে? কেটেকুটে আলু দিয়ে চচ্চড়ি রাঁধল। ছেলেটার মন খারাপ হল। এমন সুন্দর ফুলগুলো! ভাতের সাথে মেখে এক গ্রাস মুখে তুলে দেখল স্বাদটা মন্দ না। বৌ রাঁধে ভালো।
চোরকাঁটা
শহরের প্রধান রাজপথ অবরোধ করে মিছিল বেরিয়েছে। মানুষের অনেক দাবী দাওয়া। না মানলে বিপত্তি। অ্যাম্বুলেন্স আটকে আছে। মৃত্যু নিঃশর্ত। মৃত্যুপথযাত্রীর কোনো দাবী থাকতে নেই। সে অ্যাম্বুলেন্সের জানলা দিয়ে দেখল পাশেই ময়দান। হাওয়ায় পা ফেলে ঘাসের ওপর দিয়ে ছুটে সে হাসপাতালে পৌঁছে গেল। ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করার আগে দেখল তার পরণের কাপড়ে চোরকাঁটা বিঁধে আছে।
সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়
ওয়ালজ
“আমাদের প্রথম ওয়ালজের কথা মনে আছে?”
“হ্যাঁ, তুমি খুব নার্ভাস ছিলে, আমার পা মাড়িয়ে দিয়েছিলে।”
পরেশকে হুইল চেয়ার থেকে হাত ধরে তুলে, এক পা এক পা করে অপরেশন থিয়েটারের দরজার দিকে নিয়ে যাচ্ছিল শিখা। তিন তিরিক্কে ন স্টেপ হাঁটা মাত্র। পরেশ বলল, “আজকেও আমার খুব নার্ভাস লাগছে। সেই প্রথম দিনের মতই...।”
সজনে ফুল
শহুরে ছেলে। বৌ মফসসলের। বিয়ের পর ছোটনাগপুরে বেড়াতে এসেছে। যায়গাটা এখনও গঞ্জ ধরণের। চারদিকে গাছগাছালি। সকালে ঘুম ভাঙতেই পাখিদের কিচির মিচির। বৌ শীত কাতুরে। লেপের মধ্যে গুটিসুটি। ছেলেটা বেরিয়ে পড়ল। এদিক সেদিক ঘুরে ফেরার সময় দেখল একটা গাছের নীচে সাদা ফুলে ঘাস ছেয়ে আছে। পায়ে ডিঙ্গি দিয়ে উঁচু ডালে ঝাঁকি দিতে আরও ফুল ঝরে পড়ল। দু হাত ভরে ফুল কুড়োল। রুমালেও কিছু বাঁধল। বাড়ি ফিরে মেয়েটার সামনে রাখতে মেয়েটা গালে হাত দিয়ে বলল – ওমা এতো সজনে ফুল। কোত্থেকে পেলে? কেটেকুটে আলু দিয়ে চচ্চড়ি রাঁধল। ছেলেটার মন খারাপ হল। এমন সুন্দর ফুলগুলো! ভাতের সাথে মেখে এক গ্রাস মুখে তুলে দেখল স্বাদটা মন্দ না। বৌ রাঁধে ভালো।
চোরকাঁটা
শহরের প্রধান রাজপথ অবরোধ করে মিছিল বেরিয়েছে। মানুষের অনেক দাবী দাওয়া। না মানলে বিপত্তি। অ্যাম্বুলেন্স আটকে আছে। মৃত্যু নিঃশর্ত। মৃত্যুপথযাত্রীর কোনো দাবী থাকতে নেই। সে অ্যাম্বুলেন্সের জানলা দিয়ে দেখল পাশেই ময়দান। হাওয়ায় পা ফেলে ঘাসের ওপর দিয়ে ছুটে সে হাসপাতালে পৌঁছে গেল। ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করার আগে দেখল তার পরণের কাপড়ে চোরকাঁটা বিঁধে আছে।
সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়