04-03-2021, 04:53 PM
বিরহ – তিস্তা #
আজ এক সপ্তাহ হয়ে গেছে ফিরে এসেছি কোলকাতা থেকে। কটা দিন যেন স্বপ্নের ভেতরে ছিলাম, কিভাবে যে সময় কেটে যেত বুঝতেই পারতাম না। বাড়ী ফিরে এসে যেন কিছুতেই সময় কাটতে চাইছে না। মন একেবারেই ভালো নেই, যতই ইচ্ছে হোক না কেন যখন তখন আমার বিচ্ছুর সাথে কথা বলতে পারি না… ওনার আবার মোবাইল ফোন নেই, ল্যান্ড লাইনে ফোন করে তো আর ঠিক মতো কথা বলা যায় না, বম্মা আছে…দাদাই আছে। কেমন বিদ্ঘুটে ছেলে কে জানে বাবা? মোবাইল ফোন নাকি নিজের স্বাধীনতা রাখতে দেয় না, তাই উনি মোবাইল ব্যাবহার করেন না। আজকালকার দিনে যে এই রকম ছেলে আছে তা হয়তো ওকে না দেখলে জানতেই পারতাম না। ওই, যখন ও নিজে থেকে আমাকে ফোন করে তখনই যা একটু কথা হয়… তাতে কি আর মন ভরে? তার উপরে আবার কাল ওর সাথে ছোট করে ঝগড়া হয়ে গেছে। এমনিতেই মন ভালো ছিল না…আমি ওকে এবারে একটা মোবাইল নেবার কথা বলতে কিছুতেই শুনতে চাইছিল না। এখন হঠাৎ মোবাইল নিলে মা বাবা কি ভাববে? বললাম…লুকিয়ে রাখবে…তাও শুনলো না। আমিও অভিমান করে বলে দিয়েছি… থাক, তোমাকে আর কষ্ট করে আমার সাথে কথা বলতে হবে না। কি দরকার বুথ থেকে এত ঝামেলা করে ফোন করার, আমার কিচ্ছু চাই না। ওকেও দেখলাম, আমি কথা গুলো বলার পর ফোনটা কেটে দিল। ভীষন কান্না পেয়ে গিয়েছিল, ফোনটা রেখে দিয়ে চুপ করে বসেছিলাম। কিছু ভালো লাগছিল না। বাপি দু একবার জিজ্ঞেস করেছে কি হয়েছে? বাপিকে বলেছি… না কিছু হয়নি, শরীর ভালো নেই। বাপিকে শরীর খারাপ বলেও আর এক ঝামেলা… বাপি বলল…চল, ডাক্তার দেখিয়ে নিয়ে আসি। এমনিতে ভালো লাগছিল না তার উপরে বাপির জোরাজুরি… বাপির সাথে তো আর খারাপ ব্যাবহার করতে পারিনা…তাই কোনো রকমে বুঝিয়ে থামালাম।
রাতে বিছানায় শুয়ে এপাশ ওপাশ করছি, কিছুতেই ঘুম আসছে না। খুব বিরক্ত লাগছে… ভাবছি… ইস, কি দরকার ছিল ওকে মোবাইল কেনার জন্য জোর করার। যেটুকু পাচ্ছিলাম… সেটাও আর হবে না হয়তো। আজ সারাদিন খুব আশা করে বসেছিলাম ও একবার হলেও ফোন করবে কিন্তু করলো না। নিশ্চয় ওর খুব খারাপ লেগেছে আমার কথাগুলো, না হলে ও এরকম করতোই না। ভাবছি, কাল যা হবে হোক সকালে উঠে আগে ওকে ফোন করবো। তারপরেই মনে হল…সে তো না হয় ফোন করবো…কিন্তু সকাল বেলাতেই ফোন করলে বম্মা আবার ধরে ফেলবে না তো? ধুস, কি যে করি…মরে যেতে ইচ্ছে করছে। ড্রয়িং রুমের দেওয়াল ঘড়ীটা টুং টাং করে বেজে উঠল…রাত দুটো বাজে, বালিশের পাশে আমার মোবাইল ফোনটা বেজে উঠলে চমকে উঠলাম। এত রাতে কে ফোন করল… তাড়াতাড়ি ফোনটা হাতে নিয়ে বুকের ভেতরটা কেঁপে উঠল। ওদের ল্যান্ড লাইন থেকে ফোনটা এসেছে। ও কি এত রাতে ফোন করবে? নাঃ…ও তো রেগে আছে। তাহলে কি কারুর কিছু বিপদ হয়েছে… ভাবতে ভাবতে কাঁপা কাঁপা হাতে ফোনটা রিসিভ করলাম… অজানা এক ভয়ে বুকের ভেতরটা ভীষন ভাবে ধুকপুক করছে। আস্তে করে হ্যালো বললাম… ওদিক থেকে ফিস ফিস করে কেউ বলল… এই তিস্তা, খুব রাগ করে আছো? নিজের কানকেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না… ও ফোন করেছে এত রাতে। কিছুক্ষন কথাই বলতে পারলাম না। মনে হচ্ছিল আনন্দে কেঁদে ফেলি। ও আমাকে চুপ করে থাকতে দেখে বলল… এই তিস্তা, প্লিজ… কথা বলো। আস্তে করে বললাম… বলো।
- খুব রেগে আছো?
- জানি না
- মন খারাপ?
- জানি না
- ঘুমিয়ে পড়েছিলে?
- জানি না
- এই, তিস্তা… প্লি-জ
- ব’লো
- তুমি তো শুধু জানি না বলে যাচ্ছো
- আর বলবো না
- এই, রেগে আছো?
- না
- মন খারাপ?
- হু
- ঘুমিয়ে পড়েছিলে?
- না
- আমিও ঘুমোতে পারছিলাম না
- কেন?
- মন খারাপ
- কেন?
- তোমার সাথে ঝগড়া করলাম…তাই…
- আচ্ছা
- আর কোরবো না
- কেন?
- তোমার খারাপ লাগবে
- লাগুক
- তাই?
- হু
- আচ্ছা… কোরবো
- ভালো
- কি ভালো?
- তুমি
- আচ্ছা
- কি আচ্ছা?
- তুমিও ভালো
- না
- কেন?
- তোমার সাথে ঝগড়া করেছি…তাই
- বেশ করেছো…আবার করবে
- আচ্ছা
- কি করছো?
- তোমার সাথে কথা বলছি
- ভালো
- তুমি কি করছো?
- তোমার সাথে কথা বলছি
- বম্মা উঠে পড়লে?
- লুকিয়ে পড়বো
- কোথায়?
- জানি না
- ভালো
- শুয়ে পড়ো এবারে
- কেন?
- ঘূমোবে না নাকি?
- না
- আচ্ছা
- তুমি যাও ঘুমোতে
- যাবো না
- কেন?
- তোমার সাথে কথা বলবো
- আচ্ছা
ফিস ফিস করে দুজনে কথা বলে যাচ্ছি… বুকের ভেতরটা খুশীতে ভরে যাচ্ছে…জানি…এইসব কথার কোনো মানে নেই তবুও ইচ্ছে করছিল সারারাত ওর সাথে এইভাবে কোনো মানে ছাড়াই কথা বলে যাই। আমাদের আবোল তাবোল কথার মাঝে মনে হ’ল ও উঃ করে উঠল… জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে। আস্তে করে বলল…একটা মেয়ে পায়ে বসে রক্ত চুষে খাচ্ছে। খুব খারাপ লাগলো…আমি আরাম করে বিছানায় শুয়ে আছি আর ও মশার কামড় খাচ্ছে। বললাম… লক্ষীটি এবারে রাখো… কিছুতেই রাখতে চাইছিল না দেখে বললাম… আমিও কিন্তু তাহলে বাইরের বারান্দায় চলে যাবো…ওখানে জানো তো এখন কোটি কোটি মশা ঘুরে বেড়াচ্ছে, তোমার তিস্তাকে একেবারে খেয়েই ফেলবে। ফোনেই দুজন দুজনকে চুমু দিলাম… ও চলে যাবার পর কোল বালিশটা বুকে চেপে বুক ভরা খুশী নিয়ে নিজের মনেই ভাবছি…হাসছি… ও শুধু বিচ্ছু নয়…পাগলও… না হলে এত রাতে কেউ এক ঘন্টা ধরে ওই ভাবে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থেকে কথা বলে… বুক ভরা সুখ নিয়ে কখন ঘুমিয়ে পড়েছি জানি না। সকালে বাপির ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো… কি রে মা… শরীর কেমন? বাপির হাতটা বুকে জড়িয়ে ধরে বললাম… আমার আবার কি হয়েছিল? বাপি বেশ অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বলল…কাল বললি যে শরীর খারাপ। মনে মনে ভাবছি, ইস…একেবারে ভুলে গেছি…কি বলি এখন বাপিকে… ভেবে বললাম…ও হ্যাঁ… ভুলে গেছিলাম…এখন ঠিক আছি। বাপি কি বুঝলো কে জানে…আমাকে আদর করে বলল… জানি তো…আমার মেয়েটা একেবারে পাগল। আমিও ঠোঁট ফুলিয়ে বললাম…আমি কিন্তু এবারে কাঁদবো। বাপি আমাকে আদর করে উঠে গেলে ভাবছিলাম… উঃ… প্রেম করা কি ঝামেলার রে বাবা। কত কিছু মাথায় রাখতে হয়। আর একটু হলেই ধরা পড়ে যাচ্ছিলাম বাপির কাছে।
ওর সাথে ফোনেই গল্প, ঝগড়া, মান অভিমান করে দিন গুলো কেটে যাচ্ছিল। রাতে শুয়ে শুয়ে ওর কথা ভাবি… ও আমার কথা ভাবে। যেদিন আমাদের মান অভিমান হয় সেদিন মাঝ রাতটা কাটে আমাদের ফোনে, এক এক দিন দু ঘন্টার উপরেও কথা বলি আমরা, ও নাকি আজকাল হাতে পায়ে ক্রীম লাগিয়ে নেয় মশার হাত থেকে বাঁচার জন্য… পরে যখন মনে পড়ে যায়…মনে মনে হাসি, মশা নয় আমার হাত থেকে বাঁচার জন্য হয়তো। তারপরেই ভাবি… ইস, আমার জন্য নাকি শুধু…ও আমাদের ভালোবাসার জন্যই তো ফোন করে। ও যদি ফোন না করে তাহলে না পারবে ও ঘুমোতে, আমি তো পারবোই না।
কাউকেই বলিনি আমার রিজ সোনার কথা, এমন কি আমার খুব কাছের বন্ধুদেরও নয়। ও যে একেবারে আমার নিজের, ইস…আমি ছাড়া আর কেউ কেন জানবে ওর কথা। তবে ওরা যে সন্দেহ করে না তা নয়, আমি নাকি কোলকাতা থেকে ফিরে এসে অনেকটাই পালটে গেছি… কখন কি ভাবি কখন কি করি এই স্বভাবটা আগেও ছিল…কিন্তু তা নাকি এখন মাঝে মাঝে পাগলামীর পর্যায়ে চলে যায়। আমি নাকি একা একা বসে বসে কি সব ভাবি… নিজের মনেই হাসি… বিড় বিড় করে কারুর সাথে কথা বলি। আমাকে অনেক বারই ওরা চেপে ধরেছে স্বীকার করানোর জন্য যে আমি নাকি প্রেমে পড়েছি। ওদেরকে হেসে উড়িয়ে দিলে কি হবে ওরা আমার পেছন ছাড়তে রাজী নয়। আমিও এখন বুঝে গেছি ওদেরকে কি করে বুদ্ধু বানানো যায়।
যেদিন বিচ্ছুটা ফোন করেনা সেদিন মনটা খুব খারাপ হয়ে যায়…সারাদিন কেটে যায়…এই বুঝি ফোন করলো ভেবে ভেবে। বৃথা অপেক্ষা করে করে সন্ধের সময় বম্মাকে ফোন করি… সেই রকম একটা দিন… ফোন করে বললাম…বম্মা, কেমন আছো?
- আরে তিস্তা, তোদের কথাই ভাবছিলাম।
- কেন গো?
- কেন গো মানে? আমার মেয়েটা কেমন আছে…তার বাপি কেমন আছে জানতে হবে না? আজ সাত আট দিন হয়ে গেল কথা হয়নি।
- কিছু মনে কোরো না গো বম্মা… পড়ার চাপ
- জানি রে…
মনে মনে ভাবছি, বম্মা বিচ্ছুটার কথা কখন তুলবে। ভুলে গেলে তো আমাকেই ঘুরিরে ফিরিয়ে জিজ্ঞেস করতে হবে। আরো কিছু কথা হ’ল বম্মার সাথে, বিচ্ছুটার কথা উঠলো না দেখে নিজেই বললাম… বম্মা, তোমার বিচ্ছু ছেলের খবর কি গো?
- আর বলিস না, সেই কোন সকালে বেরিয়েছে…খেতেও আসেনি
- হুম, দেখো গিয়ে… কারুর সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে.
- না রে…ওর কোন বন্ধুর বাবা নাকি অসুস্থ, হাসপাতালে নিয়ে গেছে।
মনটা খুশীতে ভরে উঠল… ইস, আমার বিচ্ছু কি আর এমনি এমনি ফোন করতে পারেনি? ব্যাস্ত আছে সারাদিন, কি করে ফোন করবে? আজ রাতে নিশ্চয় ওর সাথে কথা হবে ভেবে আরো ভালো লাগলো। বম্মার সাথে আরো কিছুক্ষন বকবক করে তারপরে বাপির হাতে ফোনটা ধরিয়ে দিয়ে কেটে পড়েছি…আমি এখন ঘরের আলো নিভিয়ে বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে জানলার বাইরের দিকে তাকিয়ে আমার রিজ সোনার কথা ভাববো...
______________________________
বিরহ – রিজ #
প্রায় এক বছরের মতো হয়ে গেছে তিস্তা ফিরে যাবার পর। আজ আর কোথাও বেরোইনি…চুপ করে বসে জানলার বাইরের দিকে তাকিয়ে আছি। মনটা কিছুক্ষন একেবারে ফাঁকা ছিল, জানি না কখন তিস্তা আমার মনের ভেতরে এসে উঁকি দিয়ে ফেলেছে। এতদিন হয়ে গেছে, আর ভালো লাগছে না, একবার যদি কাছে পেতাম ওকে। তিস্তাও বেশ কয়েকবার মন খারাপ করে বলেছে… আমি না হয় ইচ্ছে হলেও যেতে পারবো না… তুমি তো একবার এখানে আসতে পারো। কি করে ওকে বোঝাই… আমারও ইচ্ছে করে কিন্তু যাবো যাবো ভেবেও পিছিয়ে এসেছি…ওরা ছোটো শহরে থাকে…বলতে গেলে সবাই সবাইকে চেনে… আমাকে ওর সাথে দেখা করতে গেলে ওদের বাড়ী ছাড়া অন্য কোথাও সম্ভব নয়। হঠাৎ ওদের বাড়ী চলে গেলে অন্যরকম দেখাবে ভেবে আর এগোতে পারিনি। মা নীচ থেকে ডাকছে মনে হ’ল। নীচে গেলাম। মা জিজ্ঞেস করল…কি রে বাবাই…কি হয়েছে তোর?
- কেন মা?
- কখন থেকে ডাকছি… কি এত ভাবিস আজকাল?
- কই কিছু না তো… এমনি...
- আমি তোর মা বাবাই… আমি তোকে পুরোটা হয়তো বুঝি না ঠিকই… কিন্তু…কিছুটা হলেও তো বুঝি।
- না গো মা…এমনিই...
- আচ্ছা…ঠিক আছে…শোন… ভাবছি…এবারের পুজোয় তিস্তাদেরকে আসতে বললে হয়...
ভীষন ভালো লাগলো কথাটা শুনে, মনটা খুশীতে নেচে উঠতে চাইলো। নিজের অজান্তেই স্বপ্ন দেখতে শুরু করে দিয়েছি কখন নিজেই জানি না। আমাকে চুপ করে থাকতে দেখে মা বলল… কি রে, চুপ করে আছিস?
- ও হ্যাঁ… বলো…
- তুই থাকবি তো পূজোয়?
- কেন?
- বললাম না…তিস্তাদেরকে আসতে বলবো...
- হু, বলে দাও… ভালোই তো...
- আরে, মেয়েটা কি একা একা ঘুরবে নাকি?
- ও হ্যাঁ…ঠিক আছে…থাকবো।
- কি হয়েছে বলতো…তোর কি ইচ্ছে নেই নাকি?
মাকে জড়িয়ে ধরে বললাম… না গো…বললাম না এমনিই… ভাবছিলাম, আর তো দুটো বছর… তারপর তোমাদেরকে ছেড়ে কোথায় যেতে হবে। মা আমাকে আদর করে বলল… আমাদেরকে নিয়ে যাবি মাঝে মাঝে।
রাতে তিস্তাকে ফোন করলাম…দুদিন হয়ে গেছে ওর সাথে কথা বলা হয়নি। ও কি ফোনটা হাতে ধরে ছিল কিনা কে জানে… রিং হতে না হতেই মিষ্টি গলায় বলল… বাব্বা…বাবুর এতক্ষনে সময় হ’ল?
- হু
- কথা বলবো না তোমার সাথে...
- হু
- কি খালি হু হু করে যাচ্ছো?
- হু
- ধ্যাত…
- হু
- আমি কিন্তু এবারে ফোন রেখে দেবো...
- বুঝলাম…
- কি?
- তুমি জানো না...
- কি জানি না?
- পূজোয় তোমার সাথে দেখা হবে...
- ইস… কি করে?
- হুম
- এই… বলো না…প্লি-জ
- মা তোমাদেরকে আসতে বলবে...
- তা-ই? স-ত্যি?
- হু
- এই, আমার না নাচতে ইচ্ছে করছে...
- নাচো
- এই, এক্কেবারে মজা করবে না…সত্যিই আমার নাচতে ইচ্ছে করছে...
- বুঝলাম
- এই, আমাকে নিয়ে কোথায় কোথায় যাবে?
- কোথাও যাবো না...
- ইস…কেন?
- আমার ইচ্ছে...
- দেখাবো মজা...
- হু
- আবার হু?
- হু
- এই…
- ব’লো...
- তোমাদের ওখানে নাকি পূজোর সময় সারারাত সবাই ঘুরে বেড়ায়?
- হু
- আমরাও ঘুরবো… কি মজা...
- তাই?
- তাই তো… ইস…আমার কি আনন্দ হচ্ছে…জানো…
- কি দেবে আমাকে?
- কিচ্ছু দেবো না...
- আমিও তাহলে নিয়ে যাবো না কোথাও...
- আচ্ছা…দেবো…
- এই তো আমার মিষ্টি সোনা মেয়ে...
- আমি কি আমার রিজ সোনাকে কিছু না দিয়ে থাকতে পারবো …বলো…
- উমম… জানি তো...
আজ এক সপ্তাহ হয়ে গেছে ফিরে এসেছি কোলকাতা থেকে। কটা দিন যেন স্বপ্নের ভেতরে ছিলাম, কিভাবে যে সময় কেটে যেত বুঝতেই পারতাম না। বাড়ী ফিরে এসে যেন কিছুতেই সময় কাটতে চাইছে না। মন একেবারেই ভালো নেই, যতই ইচ্ছে হোক না কেন যখন তখন আমার বিচ্ছুর সাথে কথা বলতে পারি না… ওনার আবার মোবাইল ফোন নেই, ল্যান্ড লাইনে ফোন করে তো আর ঠিক মতো কথা বলা যায় না, বম্মা আছে…দাদাই আছে। কেমন বিদ্ঘুটে ছেলে কে জানে বাবা? মোবাইল ফোন নাকি নিজের স্বাধীনতা রাখতে দেয় না, তাই উনি মোবাইল ব্যাবহার করেন না। আজকালকার দিনে যে এই রকম ছেলে আছে তা হয়তো ওকে না দেখলে জানতেই পারতাম না। ওই, যখন ও নিজে থেকে আমাকে ফোন করে তখনই যা একটু কথা হয়… তাতে কি আর মন ভরে? তার উপরে আবার কাল ওর সাথে ছোট করে ঝগড়া হয়ে গেছে। এমনিতেই মন ভালো ছিল না…আমি ওকে এবারে একটা মোবাইল নেবার কথা বলতে কিছুতেই শুনতে চাইছিল না। এখন হঠাৎ মোবাইল নিলে মা বাবা কি ভাববে? বললাম…লুকিয়ে রাখবে…তাও শুনলো না। আমিও অভিমান করে বলে দিয়েছি… থাক, তোমাকে আর কষ্ট করে আমার সাথে কথা বলতে হবে না। কি দরকার বুথ থেকে এত ঝামেলা করে ফোন করার, আমার কিচ্ছু চাই না। ওকেও দেখলাম, আমি কথা গুলো বলার পর ফোনটা কেটে দিল। ভীষন কান্না পেয়ে গিয়েছিল, ফোনটা রেখে দিয়ে চুপ করে বসেছিলাম। কিছু ভালো লাগছিল না। বাপি দু একবার জিজ্ঞেস করেছে কি হয়েছে? বাপিকে বলেছি… না কিছু হয়নি, শরীর ভালো নেই। বাপিকে শরীর খারাপ বলেও আর এক ঝামেলা… বাপি বলল…চল, ডাক্তার দেখিয়ে নিয়ে আসি। এমনিতে ভালো লাগছিল না তার উপরে বাপির জোরাজুরি… বাপির সাথে তো আর খারাপ ব্যাবহার করতে পারিনা…তাই কোনো রকমে বুঝিয়ে থামালাম।
রাতে বিছানায় শুয়ে এপাশ ওপাশ করছি, কিছুতেই ঘুম আসছে না। খুব বিরক্ত লাগছে… ভাবছি… ইস, কি দরকার ছিল ওকে মোবাইল কেনার জন্য জোর করার। যেটুকু পাচ্ছিলাম… সেটাও আর হবে না হয়তো। আজ সারাদিন খুব আশা করে বসেছিলাম ও একবার হলেও ফোন করবে কিন্তু করলো না। নিশ্চয় ওর খুব খারাপ লেগেছে আমার কথাগুলো, না হলে ও এরকম করতোই না। ভাবছি, কাল যা হবে হোক সকালে উঠে আগে ওকে ফোন করবো। তারপরেই মনে হল…সে তো না হয় ফোন করবো…কিন্তু সকাল বেলাতেই ফোন করলে বম্মা আবার ধরে ফেলবে না তো? ধুস, কি যে করি…মরে যেতে ইচ্ছে করছে। ড্রয়িং রুমের দেওয়াল ঘড়ীটা টুং টাং করে বেজে উঠল…রাত দুটো বাজে, বালিশের পাশে আমার মোবাইল ফোনটা বেজে উঠলে চমকে উঠলাম। এত রাতে কে ফোন করল… তাড়াতাড়ি ফোনটা হাতে নিয়ে বুকের ভেতরটা কেঁপে উঠল। ওদের ল্যান্ড লাইন থেকে ফোনটা এসেছে। ও কি এত রাতে ফোন করবে? নাঃ…ও তো রেগে আছে। তাহলে কি কারুর কিছু বিপদ হয়েছে… ভাবতে ভাবতে কাঁপা কাঁপা হাতে ফোনটা রিসিভ করলাম… অজানা এক ভয়ে বুকের ভেতরটা ভীষন ভাবে ধুকপুক করছে। আস্তে করে হ্যালো বললাম… ওদিক থেকে ফিস ফিস করে কেউ বলল… এই তিস্তা, খুব রাগ করে আছো? নিজের কানকেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না… ও ফোন করেছে এত রাতে। কিছুক্ষন কথাই বলতে পারলাম না। মনে হচ্ছিল আনন্দে কেঁদে ফেলি। ও আমাকে চুপ করে থাকতে দেখে বলল… এই তিস্তা, প্লিজ… কথা বলো। আস্তে করে বললাম… বলো।
- খুব রেগে আছো?
- জানি না
- মন খারাপ?
- জানি না
- ঘুমিয়ে পড়েছিলে?
- জানি না
- এই, তিস্তা… প্লি-জ
- ব’লো
- তুমি তো শুধু জানি না বলে যাচ্ছো
- আর বলবো না
- এই, রেগে আছো?
- না
- মন খারাপ?
- হু
- ঘুমিয়ে পড়েছিলে?
- না
- আমিও ঘুমোতে পারছিলাম না
- কেন?
- মন খারাপ
- কেন?
- তোমার সাথে ঝগড়া করলাম…তাই…
- আচ্ছা
- আর কোরবো না
- কেন?
- তোমার খারাপ লাগবে
- লাগুক
- তাই?
- হু
- আচ্ছা… কোরবো
- ভালো
- কি ভালো?
- তুমি
- আচ্ছা
- কি আচ্ছা?
- তুমিও ভালো
- না
- কেন?
- তোমার সাথে ঝগড়া করেছি…তাই
- বেশ করেছো…আবার করবে
- আচ্ছা
- কি করছো?
- তোমার সাথে কথা বলছি
- ভালো
- তুমি কি করছো?
- তোমার সাথে কথা বলছি
- বম্মা উঠে পড়লে?
- লুকিয়ে পড়বো
- কোথায়?
- জানি না
- ভালো
- শুয়ে পড়ো এবারে
- কেন?
- ঘূমোবে না নাকি?
- না
- আচ্ছা
- তুমি যাও ঘুমোতে
- যাবো না
- কেন?
- তোমার সাথে কথা বলবো
- আচ্ছা
ফিস ফিস করে দুজনে কথা বলে যাচ্ছি… বুকের ভেতরটা খুশীতে ভরে যাচ্ছে…জানি…এইসব কথার কোনো মানে নেই তবুও ইচ্ছে করছিল সারারাত ওর সাথে এইভাবে কোনো মানে ছাড়াই কথা বলে যাই। আমাদের আবোল তাবোল কথার মাঝে মনে হ’ল ও উঃ করে উঠল… জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে। আস্তে করে বলল…একটা মেয়ে পায়ে বসে রক্ত চুষে খাচ্ছে। খুব খারাপ লাগলো…আমি আরাম করে বিছানায় শুয়ে আছি আর ও মশার কামড় খাচ্ছে। বললাম… লক্ষীটি এবারে রাখো… কিছুতেই রাখতে চাইছিল না দেখে বললাম… আমিও কিন্তু তাহলে বাইরের বারান্দায় চলে যাবো…ওখানে জানো তো এখন কোটি কোটি মশা ঘুরে বেড়াচ্ছে, তোমার তিস্তাকে একেবারে খেয়েই ফেলবে। ফোনেই দুজন দুজনকে চুমু দিলাম… ও চলে যাবার পর কোল বালিশটা বুকে চেপে বুক ভরা খুশী নিয়ে নিজের মনেই ভাবছি…হাসছি… ও শুধু বিচ্ছু নয়…পাগলও… না হলে এত রাতে কেউ এক ঘন্টা ধরে ওই ভাবে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থেকে কথা বলে… বুক ভরা সুখ নিয়ে কখন ঘুমিয়ে পড়েছি জানি না। সকালে বাপির ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো… কি রে মা… শরীর কেমন? বাপির হাতটা বুকে জড়িয়ে ধরে বললাম… আমার আবার কি হয়েছিল? বাপি বেশ অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বলল…কাল বললি যে শরীর খারাপ। মনে মনে ভাবছি, ইস…একেবারে ভুলে গেছি…কি বলি এখন বাপিকে… ভেবে বললাম…ও হ্যাঁ… ভুলে গেছিলাম…এখন ঠিক আছি। বাপি কি বুঝলো কে জানে…আমাকে আদর করে বলল… জানি তো…আমার মেয়েটা একেবারে পাগল। আমিও ঠোঁট ফুলিয়ে বললাম…আমি কিন্তু এবারে কাঁদবো। বাপি আমাকে আদর করে উঠে গেলে ভাবছিলাম… উঃ… প্রেম করা কি ঝামেলার রে বাবা। কত কিছু মাথায় রাখতে হয়। আর একটু হলেই ধরা পড়ে যাচ্ছিলাম বাপির কাছে।
ওর সাথে ফোনেই গল্প, ঝগড়া, মান অভিমান করে দিন গুলো কেটে যাচ্ছিল। রাতে শুয়ে শুয়ে ওর কথা ভাবি… ও আমার কথা ভাবে। যেদিন আমাদের মান অভিমান হয় সেদিন মাঝ রাতটা কাটে আমাদের ফোনে, এক এক দিন দু ঘন্টার উপরেও কথা বলি আমরা, ও নাকি আজকাল হাতে পায়ে ক্রীম লাগিয়ে নেয় মশার হাত থেকে বাঁচার জন্য… পরে যখন মনে পড়ে যায়…মনে মনে হাসি, মশা নয় আমার হাত থেকে বাঁচার জন্য হয়তো। তারপরেই ভাবি… ইস, আমার জন্য নাকি শুধু…ও আমাদের ভালোবাসার জন্যই তো ফোন করে। ও যদি ফোন না করে তাহলে না পারবে ও ঘুমোতে, আমি তো পারবোই না।
কাউকেই বলিনি আমার রিজ সোনার কথা, এমন কি আমার খুব কাছের বন্ধুদেরও নয়। ও যে একেবারে আমার নিজের, ইস…আমি ছাড়া আর কেউ কেন জানবে ওর কথা। তবে ওরা যে সন্দেহ করে না তা নয়, আমি নাকি কোলকাতা থেকে ফিরে এসে অনেকটাই পালটে গেছি… কখন কি ভাবি কখন কি করি এই স্বভাবটা আগেও ছিল…কিন্তু তা নাকি এখন মাঝে মাঝে পাগলামীর পর্যায়ে চলে যায়। আমি নাকি একা একা বসে বসে কি সব ভাবি… নিজের মনেই হাসি… বিড় বিড় করে কারুর সাথে কথা বলি। আমাকে অনেক বারই ওরা চেপে ধরেছে স্বীকার করানোর জন্য যে আমি নাকি প্রেমে পড়েছি। ওদেরকে হেসে উড়িয়ে দিলে কি হবে ওরা আমার পেছন ছাড়তে রাজী নয়। আমিও এখন বুঝে গেছি ওদেরকে কি করে বুদ্ধু বানানো যায়।
যেদিন বিচ্ছুটা ফোন করেনা সেদিন মনটা খুব খারাপ হয়ে যায়…সারাদিন কেটে যায়…এই বুঝি ফোন করলো ভেবে ভেবে। বৃথা অপেক্ষা করে করে সন্ধের সময় বম্মাকে ফোন করি… সেই রকম একটা দিন… ফোন করে বললাম…বম্মা, কেমন আছো?
- আরে তিস্তা, তোদের কথাই ভাবছিলাম।
- কেন গো?
- কেন গো মানে? আমার মেয়েটা কেমন আছে…তার বাপি কেমন আছে জানতে হবে না? আজ সাত আট দিন হয়ে গেল কথা হয়নি।
- কিছু মনে কোরো না গো বম্মা… পড়ার চাপ
- জানি রে…
মনে মনে ভাবছি, বম্মা বিচ্ছুটার কথা কখন তুলবে। ভুলে গেলে তো আমাকেই ঘুরিরে ফিরিয়ে জিজ্ঞেস করতে হবে। আরো কিছু কথা হ’ল বম্মার সাথে, বিচ্ছুটার কথা উঠলো না দেখে নিজেই বললাম… বম্মা, তোমার বিচ্ছু ছেলের খবর কি গো?
- আর বলিস না, সেই কোন সকালে বেরিয়েছে…খেতেও আসেনি
- হুম, দেখো গিয়ে… কারুর সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে.
- না রে…ওর কোন বন্ধুর বাবা নাকি অসুস্থ, হাসপাতালে নিয়ে গেছে।
মনটা খুশীতে ভরে উঠল… ইস, আমার বিচ্ছু কি আর এমনি এমনি ফোন করতে পারেনি? ব্যাস্ত আছে সারাদিন, কি করে ফোন করবে? আজ রাতে নিশ্চয় ওর সাথে কথা হবে ভেবে আরো ভালো লাগলো। বম্মার সাথে আরো কিছুক্ষন বকবক করে তারপরে বাপির হাতে ফোনটা ধরিয়ে দিয়ে কেটে পড়েছি…আমি এখন ঘরের আলো নিভিয়ে বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে জানলার বাইরের দিকে তাকিয়ে আমার রিজ সোনার কথা ভাববো...
______________________________
বিরহ – রিজ #
প্রায় এক বছরের মতো হয়ে গেছে তিস্তা ফিরে যাবার পর। আজ আর কোথাও বেরোইনি…চুপ করে বসে জানলার বাইরের দিকে তাকিয়ে আছি। মনটা কিছুক্ষন একেবারে ফাঁকা ছিল, জানি না কখন তিস্তা আমার মনের ভেতরে এসে উঁকি দিয়ে ফেলেছে। এতদিন হয়ে গেছে, আর ভালো লাগছে না, একবার যদি কাছে পেতাম ওকে। তিস্তাও বেশ কয়েকবার মন খারাপ করে বলেছে… আমি না হয় ইচ্ছে হলেও যেতে পারবো না… তুমি তো একবার এখানে আসতে পারো। কি করে ওকে বোঝাই… আমারও ইচ্ছে করে কিন্তু যাবো যাবো ভেবেও পিছিয়ে এসেছি…ওরা ছোটো শহরে থাকে…বলতে গেলে সবাই সবাইকে চেনে… আমাকে ওর সাথে দেখা করতে গেলে ওদের বাড়ী ছাড়া অন্য কোথাও সম্ভব নয়। হঠাৎ ওদের বাড়ী চলে গেলে অন্যরকম দেখাবে ভেবে আর এগোতে পারিনি। মা নীচ থেকে ডাকছে মনে হ’ল। নীচে গেলাম। মা জিজ্ঞেস করল…কি রে বাবাই…কি হয়েছে তোর?
- কেন মা?
- কখন থেকে ডাকছি… কি এত ভাবিস আজকাল?
- কই কিছু না তো… এমনি...
- আমি তোর মা বাবাই… আমি তোকে পুরোটা হয়তো বুঝি না ঠিকই… কিন্তু…কিছুটা হলেও তো বুঝি।
- না গো মা…এমনিই...
- আচ্ছা…ঠিক আছে…শোন… ভাবছি…এবারের পুজোয় তিস্তাদেরকে আসতে বললে হয়...
ভীষন ভালো লাগলো কথাটা শুনে, মনটা খুশীতে নেচে উঠতে চাইলো। নিজের অজান্তেই স্বপ্ন দেখতে শুরু করে দিয়েছি কখন নিজেই জানি না। আমাকে চুপ করে থাকতে দেখে মা বলল… কি রে, চুপ করে আছিস?
- ও হ্যাঁ… বলো…
- তুই থাকবি তো পূজোয়?
- কেন?
- বললাম না…তিস্তাদেরকে আসতে বলবো...
- হু, বলে দাও… ভালোই তো...
- আরে, মেয়েটা কি একা একা ঘুরবে নাকি?
- ও হ্যাঁ…ঠিক আছে…থাকবো।
- কি হয়েছে বলতো…তোর কি ইচ্ছে নেই নাকি?
মাকে জড়িয়ে ধরে বললাম… না গো…বললাম না এমনিই… ভাবছিলাম, আর তো দুটো বছর… তারপর তোমাদেরকে ছেড়ে কোথায় যেতে হবে। মা আমাকে আদর করে বলল… আমাদেরকে নিয়ে যাবি মাঝে মাঝে।
রাতে তিস্তাকে ফোন করলাম…দুদিন হয়ে গেছে ওর সাথে কথা বলা হয়নি। ও কি ফোনটা হাতে ধরে ছিল কিনা কে জানে… রিং হতে না হতেই মিষ্টি গলায় বলল… বাব্বা…বাবুর এতক্ষনে সময় হ’ল?
- হু
- কথা বলবো না তোমার সাথে...
- হু
- কি খালি হু হু করে যাচ্ছো?
- হু
- ধ্যাত…
- হু
- আমি কিন্তু এবারে ফোন রেখে দেবো...
- বুঝলাম…
- কি?
- তুমি জানো না...
- কি জানি না?
- পূজোয় তোমার সাথে দেখা হবে...
- ইস… কি করে?
- হুম
- এই… বলো না…প্লি-জ
- মা তোমাদেরকে আসতে বলবে...
- তা-ই? স-ত্যি?
- হু
- এই, আমার না নাচতে ইচ্ছে করছে...
- নাচো
- এই, এক্কেবারে মজা করবে না…সত্যিই আমার নাচতে ইচ্ছে করছে...
- বুঝলাম
- এই, আমাকে নিয়ে কোথায় কোথায় যাবে?
- কোথাও যাবো না...
- ইস…কেন?
- আমার ইচ্ছে...
- দেখাবো মজা...
- হু
- আবার হু?
- হু
- এই…
- ব’লো...
- তোমাদের ওখানে নাকি পূজোর সময় সারারাত সবাই ঘুরে বেড়ায়?
- হু
- আমরাও ঘুরবো… কি মজা...
- তাই?
- তাই তো… ইস…আমার কি আনন্দ হচ্ছে…জানো…
- কি দেবে আমাকে?
- কিচ্ছু দেবো না...
- আমিও তাহলে নিয়ে যাবো না কোথাও...
- আচ্ছা…দেবো…
- এই তো আমার মিষ্টি সোনা মেয়ে...
- আমি কি আমার রিজ সোনাকে কিছু না দিয়ে থাকতে পারবো …বলো…
- উমম… জানি তো...