02-03-2021, 07:01 PM
(This post was last modified: 02-03-2021, 07:05 PM by রাজা রাম. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
স্টেশন থেকে বেরিয়ে গাড়ীর কাছে গিয়ে দেখা গেল…গাড়ী লক করা…ছেলেটাকে আশে পাশে দেখা যাচ্ছে না…বাপিরা তখোনো গল্প করতে ব্যাস্ত…এদিক ওদিক তাকাচ্ছি। হঠাৎ দেখলাম একটু দুরে একটা গাড়ীর আড়ালে দাড়িয়ে ছেলেটা আমার দিকে হাত নাড়িয়ে ইশারা করছে…প্রথমে কিছু বুঝতে না পেরে ওর দিকে তাকিয়ে থাকার পর বুঝলাম…বলতে চাইছে সিগারেট খেয়ে আসছি… ঘাড় নেড়ে জানালাম…ঠিক আছে।
একটু আগে ছেলেটার উপর খুব অভিমান হচ্ছিল কিন্তু এখন আর সেটা নেই…হোক না দুর থেকে শুধু ইশারা করে কথা বলেছে…সে …যাই বলুক না কেন…
ছেলেটা একটু পরেই চলে এল…সিগারেটের গন্ধ যাতে না পাওয়া যায় তার জন্য বোধ হয় মুখে লবঙ্গের মতো কিছু একটা দিয়ে এসেছে…সবাই গাড়িতে উঠতে যাচ্ছে এমন সময় বাপি বলল…এই যা…একেবারে ভুলে গেছি…আমাকে প্রাচি সিনেমার কাছে একটু যেতে হবে…আমার এক বন্ধু একটা জিনিষ দিয়েছে…পৌঁছে দিতে হবে। মেশো… চলো না…যাবো আর আসবো…বাপিরা চলে যাবার পর চুপ করে গাড়ীর সামনের সিটে বসে ছিলাম…ছেলেটা গাড়ীর পেছনে দাঁড়িয়ে। বুকের ভেতরে আবার সেই অভিমান দানা বাঁধছিল…আমি একা বসে আছি…আমার সাথে একবার তো কথা বলা উচিত…
লুকিং গ্লাস দিয়ে ছেলেটার দিকে চুরি করে দেখতে গিয়ে ধরা পড়ে গেলাম…ছেলেটা আবার একটা সিগারেট খেতে খেতে নিচু হয়ে পেছনের স্ক্রীনের ভেতর দিয়ে তাকাতেই ওর সাথে চোখাচুখি হয়ে গেল…অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে একটু পরে আবার যেই তাকিয়েছি…ছেলেটা আমার দিকেই তাকিয়ে আছে…ভীষন লজ্জা পেয়ে মুখ নিচু করে নিয়ে বসে থাকলাম…বুকের ভেতরের দ্রিম দ্রিম আওয়াজটা নিজেই শুনতে পাচ্ছি।
একটু পরেই ছেলেটা এসে ড্রাইভিং সিটে বসে আমার দিকে তাকিয়ে বলল…তুমি তিস্তা…তাইতো? অবশ্য নতুন করে জিজ্ঞেস না করলেও চলতো…
নিজেকে কেমন যেন সামান্য হলেও দুর্বল লাগছিল ওর সাথে একা থাকতে…মুখ তুলে ওর দিকে একবার তাকিয়ে আবার মুখটা নীচু করে নিয়ে ঘাড় নেড়ে হ্যাঁ বললাম…
আমি বাবাই…ভালো নাম…সৃজন…
জানি…
তুমি এত লজ্জা পাচ্ছো কেন…আমাকে দেখছিলে তো কি হয়েছে?
মোটেও তোমাকে দেখছিলাম না…একা একা বসেছিলাম তাই এদিক ওদিক তাকাচ্ছিলাম। তুমিই উলটে আমাকে চুরি করে দেখছিলে।
তাই? তো কি হয়েছে তোমাকে দেখছিলাম তো? তুমি ভীষন মিষ্টি দেখতে…তাই দেখছিলাম…
কথাটা শুনে আর কিছু ভাবতে পারছিলাম না…সারা শরীরে এক অদ্ভুত শিউরে ওঠার অনুভুতি…অনেকেই এর আগে একই কথা বলেছে কিন্তু আজ যেন মনে হল এভাবে এর আগে কেউ বলতে পারেনি… তার সাথে…একটু আগে যাকে খুব অহ্নকারী মনে হচ্ছিল…তার মুখ থেকে এত সহজ়ে এইটুকু সময়ের দেখা হলেও…বলে দেওয়া কথাটা যেন ভেতর থেকে নাড়িয়ে দিয়ে গেল। নিজেও তেমন একটা লাজুক না হলেও…আর কিছু বলতে পারলাম না…
একটু পরে কিছু বলা উচিত ভেবে জিজ্ঞেস করলাম…তুমি আবার একটা সিগারেট খেলে কেন?
এই তুমি আবার মাকে বলে দিও না যেন আমি সিগারেট খাই…পিটিয়ে ছাতু করে ফেলবে…বাড়ী ফিরে তো আর সারাদিন চান্স পাবো না…তাই সুযোগ পেয়ে খেয়ে নিলাম…
ওর কথা বলার ধরন দেখে হাসি চেপে রাখতে পারলাম না…
আমাকে হাসতে দেখে বলল…এতে আবার হাসির কি আছে বুঝলাম না।
আবার হেসে ফেলে বললাম…এত বড় ছেলে মায়ের কাছে পিটুনি খায়…হাসবো না তো কি…
মায়ের কাছে ছেলেরা সব সময়ই ছোটো থাকে…প্লিজ মাকে বলবে না কিন্তু…
আমার বয়ে গেছে বলতে…ছেলেরা একটু আধটু সিগারেট খেলে ভালোই লাগে…
কিছুক্ষন দুজনেই চুপচাপ বসে থাকলাম…আর বলার মতো কোনো কথা হয়তো খুঁজে পাচ্ছি না দুজনেই।
মুখ নিচু করে ভাবছি…যা বলার জন্য এতদিন অপেক্ষা করে থাকার পরে এতদুর থেকে এসেছি সেটা বলতে গিয়ে বুকের ভেতরে আটকে যাচ্ছে কেন…মন চাইছে আরো কিছু বলতে…কিন্তু সেটা কি…নিজেই বুঝতে পারছি না…
বাপিরা একটু পরেই ফিরে এল। পেছনের সিটে বসে আগের মতোই বকবক করে যাচ্ছে। সৃজন পার্কিং এর টাকা মিটিয়ে দিয়ে গাড়ীর ইঞ্জিন চালু করে আমার দিকে তাকিয়ে বলল…এই…তিস্তা…তোমার সিট বেল্ট আটকে নাও।
সিট বেল্টটা কোথায় যেন আটকে ছিল…টানাটানি করেও বেরোচ্ছিল না দেখে ওর দিকে তাকালাম…ও নিজের সিট বেল্টটা খুলে আমার দিকে ঝুঁকে ডান হাত বাড়িয়ে বেল্টটা ধরে টেনে ছেড়ে দিয়ে আবার টানতেই ওটা বেরিয়ে এল। ওই করতে গিয়ে ওর হাতটা আমার বুকের উপর একটু ছুঁয়ে গেলে…বেল্টটা আটকে দিয়ে বলল…সরি…ইচ্ছে করে করিনি।
ওর দিকে এক পলক তাকিয়ে মুখ নিচু করে নিয়ে আস্তে করে বললাম…আমি কিছু মনে করিনি। যদিও ওইটুকু সময়ের আলতো ছোঁয়ায় কেমন যেন একটা করে উঠল মনের ভেতরে।
আমার বম্মা #
বাড়ী পৌঁছোবার পর ওর মা আমাকে জড়িয়ে ধরল…ও মা…তিস্তা…তুই কত বড় হয়ে গেছিস…তুই আমাকে চিনতে পারছিস?…বম্মা বলে ডাকতিস…
ঘাড় নেড়ে জানালাম…মনে আছে।
আমাকে পেয়ে বম্মা কি করবে যেন ঠিক করতে পারছিল না। মায়ের কান্ড কারখানা দেখতে দেখতে সৃজন বলল…মা…ওনারা ট্রেন জার্নি করে এসেছেন…একটু বিশ্রাম নিতে দাও।
তুই থাম তো…আমার মেয়েকে এতদিন পর পেয়েছি…আদর কোরবো না? নিজের মায়ের আদর কাকে বলে কোনোদিন বুঝিনি… বম্মাই আমার মা বলে ভেবে এসেছি এতদিন…বম্মার আদরে বুকের ভেতর থেকে এক দলা কান্না বেরিয়ে আসতে চাইছিল… সবার সামনে কাঁদতে গিয়ে পারলাম না। ওকে বলতে শুনলাম…ঠিক আছে…তুমি তোমার মেয়েকে আদর কর…আপত্তি নেই কিন্তু তোমার এই অভাগা ছেলেটার জন্য কিছুটা বাঁচিয়ে রেখো। এমন ভাবে কথাটা বললো যে আমিও বাকিদের সাথে না হেসে থাকতে পারলাম না।
বেশ কিছুক্ষন পর সবাই মিলে বসে গল্প করছি… বিচ্ছু ছেলেটা নাকি বাজারে গেছে… ভাবছি…খুব সংসারী হয়ে গেছে নাকি…কে জানে…দেখে তো মনে হল না। কিছুক্ষন পর বম্মা উঠে গেল… রান্নাবান্না শুরু করতে হবে। বাপিরা টিভি তে খবর দেখছে। একা একা কি করবো…ভেবে বম্মা কে গিয়ে বললাম… স্নান করে নেবো?
এই দেখো…মেয়ের কথা শোনো…স্নান করবি তো আবার আমাকে জিজ্ঞেস করার কি আছে। আচ্ছা শোন…গরম জল লাগলে গিজার টা চালিয়ে নিস। এমনিতে আমার স্নান করতে সময় লাগে …বারে বারে বিচ্ছু ছেলেটার কথা মনের ভেতরে এসে যাওয়াতে …আজ যেন আরো একটু বেশি লাগলো। স্নান হয়ে গেছে…কি করি ভাবতে ভাবতে বম্মার কাছে গেলাম…মাছ, মাংস, সব্জি… নিয়ে খুব ব্যাস্ত… ও বোধ হয় বাজার থেকে এসে গেছে। বম্মা আমাকে দেখে জিজ্ঞেস করল …কি রে … কি খেতে ভালোবাসিস… সব্জি খাসতো?
হ্যাঁ…কেন খাবো না… সব খাই… বাছাবাছির সু্যোগ আছে নাকি… রান্নার মাসী নিজের ইচ্ছে মতো রান্না করে…
সে কি রে… তুই কিছু বলিস না?
নিজে কিছু জানলে তো বলবো…
তা অবশ্য ঠিক… কে আর শেখাবে তোকে…
বেশ কিছুক্ষন বম্মার সাথে গল্প করার পর ইচ্ছে হচ্ছিল এক বার ওকে দেখতে…কোথায় আছে কে জানে… ভেবে বম্মা কে জড়িয়ে ধরে বললাম…বম্মা…তোমাদের বাড়ীটা একটু ঘুরে দেখবো?
ওমা মেয়ের কথা শোনো…তুই নিজেকে পর পর ভাবছিস কেন? এটা তোর ই বাড়ী…
বম্মা কে চুমু খেয়ে বললাম…একটু পরেই চলে আসছি কিন্তু…তোমার রান্না করা দেখবো…
একটু আগে ছেলেটার উপর খুব অভিমান হচ্ছিল কিন্তু এখন আর সেটা নেই…হোক না দুর থেকে শুধু ইশারা করে কথা বলেছে…সে …যাই বলুক না কেন…
ছেলেটা একটু পরেই চলে এল…সিগারেটের গন্ধ যাতে না পাওয়া যায় তার জন্য বোধ হয় মুখে লবঙ্গের মতো কিছু একটা দিয়ে এসেছে…সবাই গাড়িতে উঠতে যাচ্ছে এমন সময় বাপি বলল…এই যা…একেবারে ভুলে গেছি…আমাকে প্রাচি সিনেমার কাছে একটু যেতে হবে…আমার এক বন্ধু একটা জিনিষ দিয়েছে…পৌঁছে দিতে হবে। মেশো… চলো না…যাবো আর আসবো…বাপিরা চলে যাবার পর চুপ করে গাড়ীর সামনের সিটে বসে ছিলাম…ছেলেটা গাড়ীর পেছনে দাঁড়িয়ে। বুকের ভেতরে আবার সেই অভিমান দানা বাঁধছিল…আমি একা বসে আছি…আমার সাথে একবার তো কথা বলা উচিত…
লুকিং গ্লাস দিয়ে ছেলেটার দিকে চুরি করে দেখতে গিয়ে ধরা পড়ে গেলাম…ছেলেটা আবার একটা সিগারেট খেতে খেতে নিচু হয়ে পেছনের স্ক্রীনের ভেতর দিয়ে তাকাতেই ওর সাথে চোখাচুখি হয়ে গেল…অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে একটু পরে আবার যেই তাকিয়েছি…ছেলেটা আমার দিকেই তাকিয়ে আছে…ভীষন লজ্জা পেয়ে মুখ নিচু করে নিয়ে বসে থাকলাম…বুকের ভেতরের দ্রিম দ্রিম আওয়াজটা নিজেই শুনতে পাচ্ছি।
একটু পরেই ছেলেটা এসে ড্রাইভিং সিটে বসে আমার দিকে তাকিয়ে বলল…তুমি তিস্তা…তাইতো? অবশ্য নতুন করে জিজ্ঞেস না করলেও চলতো…
নিজেকে কেমন যেন সামান্য হলেও দুর্বল লাগছিল ওর সাথে একা থাকতে…মুখ তুলে ওর দিকে একবার তাকিয়ে আবার মুখটা নীচু করে নিয়ে ঘাড় নেড়ে হ্যাঁ বললাম…
আমি বাবাই…ভালো নাম…সৃজন…
জানি…
তুমি এত লজ্জা পাচ্ছো কেন…আমাকে দেখছিলে তো কি হয়েছে?
মোটেও তোমাকে দেখছিলাম না…একা একা বসেছিলাম তাই এদিক ওদিক তাকাচ্ছিলাম। তুমিই উলটে আমাকে চুরি করে দেখছিলে।
তাই? তো কি হয়েছে তোমাকে দেখছিলাম তো? তুমি ভীষন মিষ্টি দেখতে…তাই দেখছিলাম…
কথাটা শুনে আর কিছু ভাবতে পারছিলাম না…সারা শরীরে এক অদ্ভুত শিউরে ওঠার অনুভুতি…অনেকেই এর আগে একই কথা বলেছে কিন্তু আজ যেন মনে হল এভাবে এর আগে কেউ বলতে পারেনি… তার সাথে…একটু আগে যাকে খুব অহ্নকারী মনে হচ্ছিল…তার মুখ থেকে এত সহজ়ে এইটুকু সময়ের দেখা হলেও…বলে দেওয়া কথাটা যেন ভেতর থেকে নাড়িয়ে দিয়ে গেল। নিজেও তেমন একটা লাজুক না হলেও…আর কিছু বলতে পারলাম না…
একটু পরে কিছু বলা উচিত ভেবে জিজ্ঞেস করলাম…তুমি আবার একটা সিগারেট খেলে কেন?
এই তুমি আবার মাকে বলে দিও না যেন আমি সিগারেট খাই…পিটিয়ে ছাতু করে ফেলবে…বাড়ী ফিরে তো আর সারাদিন চান্স পাবো না…তাই সুযোগ পেয়ে খেয়ে নিলাম…
ওর কথা বলার ধরন দেখে হাসি চেপে রাখতে পারলাম না…
আমাকে হাসতে দেখে বলল…এতে আবার হাসির কি আছে বুঝলাম না।
আবার হেসে ফেলে বললাম…এত বড় ছেলে মায়ের কাছে পিটুনি খায়…হাসবো না তো কি…
মায়ের কাছে ছেলেরা সব সময়ই ছোটো থাকে…প্লিজ মাকে বলবে না কিন্তু…
আমার বয়ে গেছে বলতে…ছেলেরা একটু আধটু সিগারেট খেলে ভালোই লাগে…
কিছুক্ষন দুজনেই চুপচাপ বসে থাকলাম…আর বলার মতো কোনো কথা হয়তো খুঁজে পাচ্ছি না দুজনেই।
মুখ নিচু করে ভাবছি…যা বলার জন্য এতদিন অপেক্ষা করে থাকার পরে এতদুর থেকে এসেছি সেটা বলতে গিয়ে বুকের ভেতরে আটকে যাচ্ছে কেন…মন চাইছে আরো কিছু বলতে…কিন্তু সেটা কি…নিজেই বুঝতে পারছি না…
বাপিরা একটু পরেই ফিরে এল। পেছনের সিটে বসে আগের মতোই বকবক করে যাচ্ছে। সৃজন পার্কিং এর টাকা মিটিয়ে দিয়ে গাড়ীর ইঞ্জিন চালু করে আমার দিকে তাকিয়ে বলল…এই…তিস্তা…তোমার সিট বেল্ট আটকে নাও।
সিট বেল্টটা কোথায় যেন আটকে ছিল…টানাটানি করেও বেরোচ্ছিল না দেখে ওর দিকে তাকালাম…ও নিজের সিট বেল্টটা খুলে আমার দিকে ঝুঁকে ডান হাত বাড়িয়ে বেল্টটা ধরে টেনে ছেড়ে দিয়ে আবার টানতেই ওটা বেরিয়ে এল। ওই করতে গিয়ে ওর হাতটা আমার বুকের উপর একটু ছুঁয়ে গেলে…বেল্টটা আটকে দিয়ে বলল…সরি…ইচ্ছে করে করিনি।
ওর দিকে এক পলক তাকিয়ে মুখ নিচু করে নিয়ে আস্তে করে বললাম…আমি কিছু মনে করিনি। যদিও ওইটুকু সময়ের আলতো ছোঁয়ায় কেমন যেন একটা করে উঠল মনের ভেতরে।
আমার বম্মা #
বাড়ী পৌঁছোবার পর ওর মা আমাকে জড়িয়ে ধরল…ও মা…তিস্তা…তুই কত বড় হয়ে গেছিস…তুই আমাকে চিনতে পারছিস?…বম্মা বলে ডাকতিস…
ঘাড় নেড়ে জানালাম…মনে আছে।
আমাকে পেয়ে বম্মা কি করবে যেন ঠিক করতে পারছিল না। মায়ের কান্ড কারখানা দেখতে দেখতে সৃজন বলল…মা…ওনারা ট্রেন জার্নি করে এসেছেন…একটু বিশ্রাম নিতে দাও।
তুই থাম তো…আমার মেয়েকে এতদিন পর পেয়েছি…আদর কোরবো না? নিজের মায়ের আদর কাকে বলে কোনোদিন বুঝিনি… বম্মাই আমার মা বলে ভেবে এসেছি এতদিন…বম্মার আদরে বুকের ভেতর থেকে এক দলা কান্না বেরিয়ে আসতে চাইছিল… সবার সামনে কাঁদতে গিয়ে পারলাম না। ওকে বলতে শুনলাম…ঠিক আছে…তুমি তোমার মেয়েকে আদর কর…আপত্তি নেই কিন্তু তোমার এই অভাগা ছেলেটার জন্য কিছুটা বাঁচিয়ে রেখো। এমন ভাবে কথাটা বললো যে আমিও বাকিদের সাথে না হেসে থাকতে পারলাম না।
বেশ কিছুক্ষন পর সবাই মিলে বসে গল্প করছি… বিচ্ছু ছেলেটা নাকি বাজারে গেছে… ভাবছি…খুব সংসারী হয়ে গেছে নাকি…কে জানে…দেখে তো মনে হল না। কিছুক্ষন পর বম্মা উঠে গেল… রান্নাবান্না শুরু করতে হবে। বাপিরা টিভি তে খবর দেখছে। একা একা কি করবো…ভেবে বম্মা কে গিয়ে বললাম… স্নান করে নেবো?
এই দেখো…মেয়ের কথা শোনো…স্নান করবি তো আবার আমাকে জিজ্ঞেস করার কি আছে। আচ্ছা শোন…গরম জল লাগলে গিজার টা চালিয়ে নিস। এমনিতে আমার স্নান করতে সময় লাগে …বারে বারে বিচ্ছু ছেলেটার কথা মনের ভেতরে এসে যাওয়াতে …আজ যেন আরো একটু বেশি লাগলো। স্নান হয়ে গেছে…কি করি ভাবতে ভাবতে বম্মার কাছে গেলাম…মাছ, মাংস, সব্জি… নিয়ে খুব ব্যাস্ত… ও বোধ হয় বাজার থেকে এসে গেছে। বম্মা আমাকে দেখে জিজ্ঞেস করল …কি রে … কি খেতে ভালোবাসিস… সব্জি খাসতো?
হ্যাঁ…কেন খাবো না… সব খাই… বাছাবাছির সু্যোগ আছে নাকি… রান্নার মাসী নিজের ইচ্ছে মতো রান্না করে…
সে কি রে… তুই কিছু বলিস না?
নিজে কিছু জানলে তো বলবো…
তা অবশ্য ঠিক… কে আর শেখাবে তোকে…
বেশ কিছুক্ষন বম্মার সাথে গল্প করার পর ইচ্ছে হচ্ছিল এক বার ওকে দেখতে…কোথায় আছে কে জানে… ভেবে বম্মা কে জড়িয়ে ধরে বললাম…বম্মা…তোমাদের বাড়ীটা একটু ঘুরে দেখবো?
ওমা মেয়ের কথা শোনো…তুই নিজেকে পর পর ভাবছিস কেন? এটা তোর ই বাড়ী…
বম্মা কে চুমু খেয়ে বললাম…একটু পরেই চলে আসছি কিন্তু…তোমার রান্না করা দেখবো…