23-02-2021, 07:54 PM
।। ৩ ।।
মেসেজের ডেলিভারি রিপোর্টের পাঁচ সেকেণ্ড না যেতেই ফোন। জ্বালাতন! টাওয়েলটা ছাড়ারও কি সময় দেবে না?
"বল পিপি"
নামটার ছোট্ট ইতিহাস আছে। একদা আমার সাথে মল-ভ্রমণকালে কিছু তৃষ্ণার্ত দর্শকের জুলজুল তাকিয়ে থাকা দেখে উষ্মা প্রকাশ করেছিল। নারীরা, বিশেষত যাঁরা আকৈশোর পুরুষের দৃষ্টিমারফত প্রেরিত অঞ্জলি পেয়ে অভ্যস্ত, তাঁরা যে উত্তর জানা থাকা সত্ত্বেও মাঝেমধ্যে এহেন প্রশ্নের অবতারণা করেন সে কথা সর্বজনবিদিত।
"কি যে এরা দেখে হাঁ করে গড নোস্!"
"এমন পিপি তো আর চট করে দেখা যায় না"
"পিপি? পিপি স্ট্যাণ্ডস ফর হোয়াট?"
অগত্যা ব্যাখ্যা করতে হয়। পিপি হল 'পীনপয়োধরা'-র ল্যাটিন হরফের সংক্ষিপ্ত রূপ। কনভেণ্ট শিক্ষিতাকে শব্দটার মানে বুঝিয়ে বলতে আমায় এই মারে কি সেই মারে।
সেই থেকে পিপি।
আমার গলা পাওয়ামাত্র ওপ্রান্ত ঝংকার দিয়ে উঠল।
"উফ্ কোথায় ছিলিস তুই? একটাও রিপ্লাই নেই, কি করছিলিস?"
"আরে সকাল থেকে তো ফোন কানেই রয়েছি, চানটা করার সময় দিবি তো অন্তত নাকি? তোর মত ভোর পাঁচটায় উঠে চান আমার দ্বারা হয় না"
"এতক্ষণ লাগে চান করতে?"
উত্তরটা চেপে যাওয়াই শ্রেয়।
"তুই রেডি হয়েছিস?"
"সেজন্যই তো টেক্সট করেছিলাম তোকে, কি পরে যাই বল তো?"
"আপনি যা পরবেন তাতেই মানাবে সম্রাজ্ঞী, এমনকি যদি কিছু নাও পরেন তাতে সবচেয়ে ভাল..."
"আবার ইয়ার্কি, বল না ঠিক করে প্লিজ"
"পর যেটা তোর মন চায়"
"শাড়ি পরব? অকোয়ার্ড হবে না সেটা?"
"দুর এত ভাবিস কেন? যাবি তো কয়েক ঘণ্টার জন্য"
"ওকে ওকে, উম্ম্ম্ম কোনটা পরে যাই বল না?"
"নীলটা পরে যা যেটা গত পুজোয় কেনা"
"তোর দেওয়া শাড়িটা? না না ওটার সাথে ম্যাচিং ব্লাউজ নেই"
"কি ভুলভাল বলছিস, ওটা পরেই তো দিওয়ালিতে এসেছিলিস, মনে নেই?"
"উফ্ ওটা স্লিভলেস রে হাঁদা"
"সো হোয়াট?"
"আছে, তুই বুঝবি না"
বুঝতে ঠিকই পেরেছি, আমার আবদারে ব্লাউজটা বেশ সংক্ষিপ্তাকারে বানানো হয়েছিল। পরলে ওর বাহুমূল, পেলব হাত, কাঁধের ডৌল, বুকের চাতাল অনেকটাই উন্মুক্ত হয়ে পড়ে; পুরুষ দর্শকের মনে ঝড় তুলে, অন্য নারীদের ঈর্ষান্বিত ক'রে। তাই এত দ্বিধা। তাই লজ্জা।
"তাহলে তুঁতে রঙেরটা পর"
"আমার আবার তুঁতে রঙের শাড়ি কোথায় পেলি তুই?"
"যাচ্চলে কদিন আগেই তো পরেছিলি"
"হায় ভগবান! কোন অন্ধের হাতে এনে ফেলেছ আমায়? ওটা মভ কালার হাঁদারাম"
এই হল ডাবল এক্স ক্রোমোজোমের মহিমা, তুঁতে আর মভের মধ্যে সূক্ষ্ম বিচার করে! কি করে বোঝাই শাড়ির আবরণে ঘেরা নারীটি দ্রষ্টব্য, তার পোষাকের রঙের তারতম্যে আমাদের কিস্সু এসে যায় না। তুঁতে-মভ-বেগুনি-গোলাপীর চাইতে শঙ্খিনী-পদ্মিনী-চিত্রিনী-হস্তিনীর প্রকারভেদটাই আগে ধরা পরে পুরুষচোখে, বাকি সব তো গৌণ।
"আচ্ছা বেশ মভ, মভটাই পরে যা"
"ধ্যাত্, ওটায় বিচ্ছিরি ভাঁজ পড়ে গেছে, আয়রন না করলে পরা যাবেনা"
এ তো মহা গেরো!
"আয়রন করা গুলোর মধ্যেই একটা পর তবে"
"বললি যা হোক, তোকে দিয়ে যদি কোনও কাজ হয়"
"আরে চটে যাচ্ছিস কেন, যেটা হোক পর না"
"একটাও পছন্দ হচ্ছে না, দুর ভাল্লাগে না"
"আলমারি ভর্তি শাড়ির মধ্যে একটাও আপনার অঙ্গে ওঠবার যোগ্য নয়?"
"তুই থামবি? সালওয়ার পরেই যাব"
"বেশ তো ঐ ময়ূরকণ্ঠী রঙের..."
"থাক তোকে কিচ্ছু ডিসাইড করতে হবে না, আমাকেই বুঝে নিতে দে"
দূরভাষ যোগ আচমকাই বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। ম্যাডামের রাগ হয়েছে। এটা অবশ্য নিয়মিত ব্যাপার, কোনও কিছুতে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগলেই তার সব রাগ এসে পড়ে আমার ওপর। যাক এখন না ঘাঁটানোই ভাল, নিজের মত শৃঙ্গার-প্রসাধন করলে রাগ আপনিই উবে যাবে।
কি মনে হতে একটা টেক্সট করলাম।
"জম্পেশ করে সাজুগুজু করিস আর এই অধমকে যাওয়ার আগে একবার চক্ষু সার্থক করার সুযোগ দিস"
নো রিপ্লাই। মুঠোফোন নীরব। কিন্তু আমার থেকে থেকে এরকম হচ্ছে কেন? তোয়ালেতে তাঁবুর আবির্ভাব, আবার! একটু আগেই তো বাথরুমের নিভৃতে শান্ত করে এলাম। নাহ্ ওকে সত্যিই বড্ড মিস করছি। কালকে ফিরে গিয়েই ওর ফ্ল্যাটে একবার ঢুঁ মারতে হবে।
ভাবনার মাঝেই বাইরে থেকে কাকিমার উচ্চগ্রামে আহ্বান, বৌভাতের জন্য সবাই একে একে যেতে আরম্ভ করেছে, একমাত্র দেবর হিসেবে আমারও যাওয়াটা কর্তব্য বৈকি। কিন্তু এদিকে যে... চেঁচিয়ে বলে দিলাম বাকিদের রওনা দিতে, আমি ছোড়দার বাইক নিয়ে সময়মত পৌঁছে যাব। হাজার হোক সে নতুন বর, আজকের দিনে দ্বিচক্রযানে চড়ার অনুমতি পাবেনা। যদিও ভালমতই জানি দূরবাসিনীকে একবার চোখের দেখা না দেখে এখন আমি কোথাও নড়তে পারব না। অন্তত রেডি হয়ে থাকি যাতে অনুষ্ঠানবাড়ি গিয়ে ঝাড়টা কম খেতে হয়।
ঘড়ির কাঁটা নিজের নিয়মে আবর্তিত হয়ে চলেছে। পাঁচ, দশ, পনেরো করে করে প্রায় পঁয়তাল্লিশ মিনিট অতিক্রান্ত। এরইমধ্যে জেঠুর দু'বার ফোন করা হয়ে গেছে, ক্রুদ্ধ তিরস্কারের সাথে দায়িত্বজ্ঞান সম্পর্কিত ছোটখাট ভাষণ শোনার মাঝেই মোবাইলে টেক্সট অ্যালার্টের শব্দ। জেঠুকে কোনওরকমে নিরস্ত করে ফোন রেখে মেসেজবক্স খুলতেই অভীপ্সিত বার্তা।
"ক্যান ইউ কাম টু স্কাইপে নাউ?"
তড়িঘড়ি ল্যাপটপ অন করতে করতেই ফোনে উত্তর পাঠিয়ে দিলাম, "এসো সখী"। উঃ এই ইন্টারনেটটা এত দেরি করে কেন? কয়েক সেকেণ্ডকে মনে হচ্ছে যেন অনন্তকাল। অবশেষে স্কাইপের নীল জানলা খুলতেই দেখি আকাঙ্ক্ষিত মহিলাটির নামের পাশে সবুজ আলো জাজ্বল্যমান। কয়েকটা অধৈর্য চ্যাটও আছে তবে সেগুলো পড়ার এখন ফুরসত নেই। ভিডিওতে কল যাওয়ামাত্র ওপাশ থেকে সংযোগস্থাপন, এত বিস্ময়ও অপেক্ষা করে ছিল আমার জন্য?
কম্পিউটার স্ক্রিনের ওপারে একটি অপ্সরা, যেন দেবলোকের সভায় যাওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেছে অনেক যত্নে। মর্ত্যের সামান্য মানুষের চোখ ধাঁধিয়ে গিয়েছিল, একটু ধাতস্থ হতে সময় লাগল তার। এ কি অপরূপ বেশ! জলপাইরঙা তনুতে সমুদ্রনীল শাড়ি, তার সাথে মানানসই নীল আভরণ হাতে-কানে-গলায়, কপালে নীল বিন্দি, অধররাগের আলতো প্রলেপ বিম্বোষ্ঠে, আর... আর অঙ্গে শোভিত স্লিভলেস বক্ষাবরণী যা নিয়ে একটু আগের মনকষাকষি। আবৃত করার ছলে আরও যেন প্রকট করেছে দু'কূল উপচানো ভরা যৌবন। চমকের উপর চমক, ঈষদচ্ছ ব্লাউজের ভিতর নীলরঙা কাঁচুলি দৃশ্যমান।
আনত চোখে ও বসেছিল ওয়েবক্যামের সামনে, হয়তো আমাকে স্বাভাবিক হওয়ার সময়টুকু দিতে। তারপর লজ্জারুণ দৃষ্টিতে তাকাল, চাহনিতে অব্যক্ত জিজ্ঞাসা, যেন বলছে "কেমন লাগছে আমায়?" অজস্র উড়ন্ত চুমুতে ভরিয়ে দিলাম ল্যাপটপের পর্দা, কয়েক মুহূর্ত ধরে ও সিক্ত হল চুম্বনস্নানে, তারপর ঠোঁট মুচড়ে একটা অপার্থিব ভঙ্গিমায় আমার কাঠিন্য বাড়িয়ে দিল কয়েকগুণ। সেটা ওর নারীইন্দ্রিয় সহজেই ধরতে পেরেছে, চোখের ইশারায় জানতে চাইল নীচে কি অবস্থা। কোনওরকম দ্বিধা না করে ল্যাপটপের ডালা নামিয়ে নিজের লৌহকঠিন অবস্থা দেখালাম। একইসাথে ওর চোখে তৃপ্তি আর কৌতুকের ঝিলিক খেলে গেল, গালে আবির ছড়িয়ে পড়ল আরেক পোঁচ। বাড়িতে এখন বোধহয় কেউ নেই, কান পেতে আওয়াজ শোনার চেষ্টা করলাম- নাঃ কিছু শোনা যাচ্ছে না। দূর কেউ থাকলে থাকবে, এখন আমার মন নিজের বশে নেই, একটানে খুলে নামিয়ে নিলাম প্যাণ্ট আর অধোবাস। ফুঁসে উঠতে থাকা উত্থান তীব্র লালসায় চেয়ে রইল ওপারের মাদকতাময়ী রূপসীর দিকে। তার চোখেও ঝরে পড়ছে কামনা, অধর স্ফুরিত। কয়েক মুহূর্ত দুজনেই স্থাণু, তারপর শব্দ তরঙ্গ বেয়ে একটা অর্ধস্ফুট আকুতি ভেসে এল।
"আই মিস ইউ সো মাচ হানি"
"মিস ইউ টু বেবি"
"ডাইং টু বি ইন ইয়োর আর্মস"
"আই ওয়ান্না মেক লাভ টু ইউ সেক্সি"
মদির কটাক্ষে আমায় বিদ্ধ করে একটা অদ্ভুত দেহভঙ্গি করল, পীনোন্নত বুকজোড়া চোখের আরো কাছে এখন। আর বোধহয় নিজেকে ধরে রাখতে পারব না। নিষ্ঠুর রমণী সেটা উপলব্ধি করেই বিদায় চাইছে।
"এবার যাই? কিপ মিসিং মি"
"সো উইল হি"
নীচের দিকে ইঙ্গিত করলাম।
"নটি বয়েজ"
আদুরে স্বরে কথাটা বলে একটা বিদায়চুম্বন, তারপরেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল।
অনেক হয়েছে, বেরোনোর আগে আরেকবার মুক্ত না হলেই নয়। সন্তর্পণে লাগোয়া বাথরুমে ঢুকলাম। স্নানঘরের নির্জনে নিজের পৌরুষকে তীব্র পেষণ করছি, বন্ধ চোখের পাতায় ভেসে উঠছে নীলবসনা সুন্দরীর প্রতিচ্ছবি। একটা একটা করে আবরণ উন্মোচিত হচ্ছে, পেষণের গতি বেড়ে যাচ্ছে কয়েকগুণ। আঃ কি ভীষণ রিরংসা, যেন ভিতরটা ফেটে চৌচির হয়ে যাবে; গোটা শরীরটা অণু-পরমাণুতে বিভক্ত হয়ে বাতাসে ভেসে যেতে চাইছে, আছড়ে পড়তে চাইছে দু'হাজার কিলোমিটার দূরের প্রযুক্তি নগরীতে অবস্থিত প্রিয়তমার দেহে। খুঁজে নিচ্ছে তার শরীরের অন্ধিসন্ধি, কল্পনায় দলিত মথিত করছে উদ্ভিন্নযৌবনাকে।
সহসা মোবাইলে পরিচিত টেক্সট আগমন ধ্বনি।
"অলমোস্ট দেয়ার। বাট তুই কিন্তু আমায় থেকে থেকে ফোন করবি না। উম্ম্ম্ম ওকে? লাভ ইউ সুইটি"
মনের অন্দরে কি যেন একটা হল। একটা বিস্ফোরণ, বা ঐ জাতীয় কিছু। নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলাম না, কেউ যেন আমায় এক অতলস্পর্শী খাদের দিকে গড়িয়ে দিয়েছে। মুক্তি, নাকি বন্ধন? জানি না।
যুগান্তরের পর চেতনা ফিরে আসতে দেখি সেই বাথরুমেই দাঁড়িয়ে রয়েছি। চারপাশ ভেসে যাচ্ছে কামনার লাভাস্রোতে। এঃ এটা পরিষ্কার না করে গেলেই নয়।
দুর্বল পায়ে বেরিয়ে এলাম খানিক পর। ঘড়ির কাঁটা সবেগে দৌড়চ্ছে। আজ প্রচুর গালাগাল জুটবে। আপনমনেই হেসে ফেললাম। ইজন্ট দ্যাট ওয়ার্থ ইট?