23-02-2021, 07:49 PM
(This post was last modified: 26-02-2021, 01:17 PM by অনঙ্গপাল. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
স্বীকারোক্তি
(উপন্যাসের প্রথম ভাগ, পূর্বতন ক্সসিপে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত।)
।। ১ ।।
আজও মনে পড়ে সেই দিনটা।
ব্যাচেলর জীবনের দুই কামরার ফ্ল্যাট। কয়েক বছর হল চাকরিতে ঢুকেছি। বাড়ি থেকে দূরে, নতুন পরিবেশ, অচেনা শহর, আস্তে আস্তে সব মানিয়ে গেছে। কর্মজীবনে একের পর এক পদোন্নতি, নিশ্চিত মসৃণ ভবিষ্যতের দিকে একটা একটা করে পদক্ষেপ। রোববারের অলস বিকেলে শুয়ে সিলিঙের দিকে তাকিয়ে এলোপাথাড়ি ভেবে চলেছি। মনের মধ্যে কি চলছিল নিজেও বুঝে উঠতে পারছিলাম না। ভাবনারা অনবরত আসা যাওয়া করছে, তার মধ্যেই মনের কোণে জেগে উঠেছে অপরাধবোধ। এগুলো কি ঠিক করছি? ও কি ভাববে? আবার এসব কল্পনা করছি জানতে পারলে... সিলিঙ থেকে চোখটা অজান্তেই চলে গেল পাশের দিকে। ও এখন অঘোরে ঘুমোচ্ছে।
কিছুক্ষণের জন্য ভাবনারা আমায় ছেড়ে চলে গেল। তাকিয়ে তাকিয়ে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসতে চায়। এই নারী কি সত্যিই বাস্তব, না আমার অলীক কল্পনা? দ্বিতীয়টা ভাবার কোনও কারণ নেই, প্রায় পাঁচ বছর হতে চলল দুজনে প্রেম করছি। কলেজ ফেস্টে আলাপের প্রথম দিনটার বয়স তারও প্রায় এক বছর বেশি। সুতরাং ইঞ্চি কয়েক দূরে শায়িতা ঐ সুন্দরীকে আর যাই হোক অচেনা বলা চলে না। সেই টানা টানা চোখ, বন্ধ থাকায় আঁখিপল্লবগুলো আরো আকর্ষণীয় লাগছে। বালিশের ওপর এলিয়ে থাকা সেই এক ঢাল কালো চুল, বিছানার স্বল্প পরিসরে যাদের সবার জায়গা হয়নি বলে অনেকে অভিমানে লুটিয়ে মাটিতে গড়াগড়ি। দুই ভ্রূর মাঝখানে সেই পরিচিত ভঙ্গিমায় পরা টিপ, এখন অবশ্য সঙ্গত কারণেই নিজের জায়গা থেকে একটু সরে গেছে। সেই পুরন্ত ঠোঁট, জেগে থাকলে যারা কারণে-অকারণে প্রায়শই স্ফুরিত হয় অভিমানে, এখন যদিও কিঞ্চিৎ দ্বিধাবিভক্ত। সেই উন্নত চিবুক, সেই মরাল গ্রীবা যার প্রান্তভাগ গিয়ে মিশেছে চেনা পাহাড়ি উপত্যকায়। তারপরেই শুরু হয়েছে অসামান্য খাড়াই, দুইদিকের উত্তুঙ্গ প্রতিস্পর্ধী পর্বতশৃঙ্গে যার যাত্রা। চেনা হৃদ্স্পন্দনের ছন্দে সেই উচ্চ পার্বত্যভূমিতে নিয়মিত হারে মৃদু ভূকম্পনের আভাস। পাহাড়চুড়োয় চেনা বৃন্তেরা অবশ্য ঘুমোয়নি, মিলনের তৃপ্তিতে এখনও তারা জেগে আছে মাথা উঁচু করে। পাহাড়ি ঢাল বেয়ে নেমে গিয়ে চেনা প্রান্তরে মিশেছে, হাল্কা মেদের চিহ্নসমেত। সুগভীর নাভি ছাড়িয়ে একটু দূরত্বে লতাগুল্মের জঙ্গলে আচ্ছাদিত গোপন গহন গিরিখাত; চেনা, বলাই বাহুল্য। তারও পরে দুই রম্ভাসদৃশ জঙ্ঘা আয়েশে ছড়ানো একটু বাঁদিক ঘেঁষে, পরিচিত ভঙ্গিতে।
কতবার অ্যাডভেঞ্চার করেছি ঐ পরিচিত নারীদেহের অলিগলিতে, প্রতিটি রোমকূপ আমার কাছে চেনা। তবুও আজ এত অপরিচিতা মনে হয় কেন? তাকিয়ে থেকেও আশ আর মেটে না, ঠিক যেন পরস্ত্রীকে দেখার রোমাঞ্চ। নাঃ, কি হচ্ছে এসব, নিজের মনকে ধমকাই। চোখ ফেরালাম অন্যদিকে, দেয়ালের কাছে ট্রলিব্যাগটা দাঁড় করানো। এয়ারলাইন্সের ট্যাগটা এখনও ছেঁড়া হয়নি। বাড়ি থেকে ফিরেছি গত সোমবার, জামাকাপড়-জিনিসপত্র কাবার্ডে না গুছিয়ে রাখার জন্য সকালেই একপ্রস্থ বকুনি খেতে হয়েছে। মনে পড়তেই হাসি পেয়ে গেল। বকুনির মধ্যেই যখন ওর জন্য আনা 'সারপ্রাইজ গিফ্ট'গুলো ব্যাগ থেকে বেরোল, মুখের অবস্থাটা ছিল দেখবার মত। শাড়িটা যে খুবই পছন্দ হয়েছে সেটা বুঝতেই পারছিলাম কারণ বকুনির সুরটা তার পর থেকে আদুরে বিড়ালিনীর মত শোনাচ্ছিল। আর লেস দেওয়া ডিজাইনার ব্রায়ের প্যাকেটটা দেখে তো মনে হল কেউ এক কৌটো আবির লেপে দিয়েছে ওর গালে। যাক্ পরিশ্রম সার্থক। ছোড়দার বিয়ের পরদিন সবার দৃষ্টি এড়িয়ে কিনতে বেরোনোটা তবে বিফলে যায়নি।
বিফলে যে একেবারেই যায়নি সেটা তো পরিষ্কার। সকাল থেকে এখন অবধি মোট তিনবার বিছানার চাদর প্লাবিত হয়েছে রাগমোচনে। আজ পর্যন্ত তো এক দিনেও এতবার কখনও হয়নি, আর একবেলায়... ! শেষবার মিলিত হবার পরে যখন আমার বুকে মুখ গুঁজে পড়েছিল তখন ওর চোখেও কি একটা ছিল। মিলনের আবেশ,বিস্ময় আর অবিশ্বাস মাখানো সেই দৃষ্টিতে। অবাক আমি নিজেও কম হইনি। মানছি প্রায় ষোল-সতের দিন পরে দুজনের দেখা এবং... কিন্তু নিজের মধ্যে এতটা উত্তেজনা এর আগে কি কখনও অনুভব করেছি? নিশ্চিত যে এর জন্য অন্য কোনও কারণ দায়ী নয়? ছোড়দার বৌভাতের দিন যা হয়েছিল সেটা...
ব্যাচেলর জীবনের দুই কামরার ফ্ল্যাট। কয়েক বছর হল চাকরিতে ঢুকেছি। বাড়ি থেকে দূরে, নতুন পরিবেশ, অচেনা শহর, আস্তে আস্তে সব মানিয়ে গেছে। কর্মজীবনে একের পর এক পদোন্নতি, নিশ্চিত মসৃণ ভবিষ্যতের দিকে একটা একটা করে পদক্ষেপ। রোববারের অলস বিকেলে শুয়ে সিলিঙের দিকে তাকিয়ে এলোপাথাড়ি ভেবে চলেছি। মনের মধ্যে কি চলছিল নিজেও বুঝে উঠতে পারছিলাম না। ভাবনারা অনবরত আসা যাওয়া করছে, তার মধ্যেই মনের কোণে জেগে উঠেছে অপরাধবোধ। এগুলো কি ঠিক করছি? ও কি ভাববে? আবার এসব কল্পনা করছি জানতে পারলে... সিলিঙ থেকে চোখটা অজান্তেই চলে গেল পাশের দিকে। ও এখন অঘোরে ঘুমোচ্ছে।
কিছুক্ষণের জন্য ভাবনারা আমায় ছেড়ে চলে গেল। তাকিয়ে তাকিয়ে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসতে চায়। এই নারী কি সত্যিই বাস্তব, না আমার অলীক কল্পনা? দ্বিতীয়টা ভাবার কোনও কারণ নেই, প্রায় পাঁচ বছর হতে চলল দুজনে প্রেম করছি। কলেজ ফেস্টে আলাপের প্রথম দিনটার বয়স তারও প্রায় এক বছর বেশি। সুতরাং ইঞ্চি কয়েক দূরে শায়িতা ঐ সুন্দরীকে আর যাই হোক অচেনা বলা চলে না। সেই টানা টানা চোখ, বন্ধ থাকায় আঁখিপল্লবগুলো আরো আকর্ষণীয় লাগছে। বালিশের ওপর এলিয়ে থাকা সেই এক ঢাল কালো চুল, বিছানার স্বল্প পরিসরে যাদের সবার জায়গা হয়নি বলে অনেকে অভিমানে লুটিয়ে মাটিতে গড়াগড়ি। দুই ভ্রূর মাঝখানে সেই পরিচিত ভঙ্গিমায় পরা টিপ, এখন অবশ্য সঙ্গত কারণেই নিজের জায়গা থেকে একটু সরে গেছে। সেই পুরন্ত ঠোঁট, জেগে থাকলে যারা কারণে-অকারণে প্রায়শই স্ফুরিত হয় অভিমানে, এখন যদিও কিঞ্চিৎ দ্বিধাবিভক্ত। সেই উন্নত চিবুক, সেই মরাল গ্রীবা যার প্রান্তভাগ গিয়ে মিশেছে চেনা পাহাড়ি উপত্যকায়। তারপরেই শুরু হয়েছে অসামান্য খাড়াই, দুইদিকের উত্তুঙ্গ প্রতিস্পর্ধী পর্বতশৃঙ্গে যার যাত্রা। চেনা হৃদ্স্পন্দনের ছন্দে সেই উচ্চ পার্বত্যভূমিতে নিয়মিত হারে মৃদু ভূকম্পনের আভাস। পাহাড়চুড়োয় চেনা বৃন্তেরা অবশ্য ঘুমোয়নি, মিলনের তৃপ্তিতে এখনও তারা জেগে আছে মাথা উঁচু করে। পাহাড়ি ঢাল বেয়ে নেমে গিয়ে চেনা প্রান্তরে মিশেছে, হাল্কা মেদের চিহ্নসমেত। সুগভীর নাভি ছাড়িয়ে একটু দূরত্বে লতাগুল্মের জঙ্গলে আচ্ছাদিত গোপন গহন গিরিখাত; চেনা, বলাই বাহুল্য। তারও পরে দুই রম্ভাসদৃশ জঙ্ঘা আয়েশে ছড়ানো একটু বাঁদিক ঘেঁষে, পরিচিত ভঙ্গিতে।
কতবার অ্যাডভেঞ্চার করেছি ঐ পরিচিত নারীদেহের অলিগলিতে, প্রতিটি রোমকূপ আমার কাছে চেনা। তবুও আজ এত অপরিচিতা মনে হয় কেন? তাকিয়ে থেকেও আশ আর মেটে না, ঠিক যেন পরস্ত্রীকে দেখার রোমাঞ্চ। নাঃ, কি হচ্ছে এসব, নিজের মনকে ধমকাই। চোখ ফেরালাম অন্যদিকে, দেয়ালের কাছে ট্রলিব্যাগটা দাঁড় করানো। এয়ারলাইন্সের ট্যাগটা এখনও ছেঁড়া হয়নি। বাড়ি থেকে ফিরেছি গত সোমবার, জামাকাপড়-জিনিসপত্র কাবার্ডে না গুছিয়ে রাখার জন্য সকালেই একপ্রস্থ বকুনি খেতে হয়েছে। মনে পড়তেই হাসি পেয়ে গেল। বকুনির মধ্যেই যখন ওর জন্য আনা 'সারপ্রাইজ গিফ্ট'গুলো ব্যাগ থেকে বেরোল, মুখের অবস্থাটা ছিল দেখবার মত। শাড়িটা যে খুবই পছন্দ হয়েছে সেটা বুঝতেই পারছিলাম কারণ বকুনির সুরটা তার পর থেকে আদুরে বিড়ালিনীর মত শোনাচ্ছিল। আর লেস দেওয়া ডিজাইনার ব্রায়ের প্যাকেটটা দেখে তো মনে হল কেউ এক কৌটো আবির লেপে দিয়েছে ওর গালে। যাক্ পরিশ্রম সার্থক। ছোড়দার বিয়ের পরদিন সবার দৃষ্টি এড়িয়ে কিনতে বেরোনোটা তবে বিফলে যায়নি।
বিফলে যে একেবারেই যায়নি সেটা তো পরিষ্কার। সকাল থেকে এখন অবধি মোট তিনবার বিছানার চাদর প্লাবিত হয়েছে রাগমোচনে। আজ পর্যন্ত তো এক দিনেও এতবার কখনও হয়নি, আর একবেলায়... ! শেষবার মিলিত হবার পরে যখন আমার বুকে মুখ গুঁজে পড়েছিল তখন ওর চোখেও কি একটা ছিল। মিলনের আবেশ,বিস্ময় আর অবিশ্বাস মাখানো সেই দৃষ্টিতে। অবাক আমি নিজেও কম হইনি। মানছি প্রায় ষোল-সতের দিন পরে দুজনের দেখা এবং... কিন্তু নিজের মধ্যে এতটা উত্তেজনা এর আগে কি কখনও অনুভব করেছি? নিশ্চিত যে এর জন্য অন্য কোনও কারণ দায়ী নয়? ছোড়দার বৌভাতের দিন যা হয়েছিল সেটা...