Thread Rating:
  • 51 Vote(s) - 3.29 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
WRITER'S SPECIAL কিছু কথা ছিল মনে
#32
Heart 
[Image: 20210212-191028.jpg]


বিছানায় অর্ককে শুইয়ে দিয়ে ওর গায়ে চাদরটা টেনে দিয়ে চুমু খেলাম ওর মাথায়. অর্কও আমার গালে চুমু খেয়ে বললো - গুডনাইট বাবা. আমিও ওর মাথায় হাত বুলিয়ে গুডনাইট সোনা বলে উঠে দরজার দিকে এগোতে লাগলাম.


বাবা......

হটাৎ পেছন থেকে ছেলের ডাক শুনে ঘুরে তাকালাম. অর্ক আমার দিকে তাকিয়ে.

কি হয়েছে জোজো? জিজ্ঞেস করলাম আমি. জোজো ওর ডাক নাম. ওর মায়ের দেওয়া.

মা কি আর আসবেনা বাবা? জিজ্ঞেস করলো অর্ক. এর কি উত্তর দেবো আমি নিজেই জানিনা. কারণ ওই টুকু বাচ্চাকে কিকরে বলবো যে ওর মা আর.........

যাইহোক এগিয়ে গেলাম ওর কাছে. পাশে বসে বললাম - মায়ের কথা মনে পড়ছে? অর্ক মাথা নাড়লো. আমি ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বললাম - মা ঠিক ফিরে আসবে. কিছুদিন সময় লাগবে. তারপর দেখবে মা ঠিক ফিরে আসবে. তোমার মা তোমায় ছাড়া বেশিদিন থাকতে পারে নাকি?

অর্ক বললো - মা তো আমায় ছাড়া কোথাও যায়না বাবা... তাহলে হটাৎ কোথায় গেলো মা? কালকেও কি মা আসবেনা বাবা?

কাল আমাদের ছেলের জন্মদিন. এইদিনটা নিন্দিনী নিজের হাতে ওর জন্য পায়েস করে, সারা একতলা বেলুন দিয়ে সাজানো হয়, ওর কলেজের বন্ধুরা আসে, নন্দিনী সেই বাচ্চাদেরও নিজের সন্তানের মতোই খেয়াল রাখতো. এই তো আগের বারেই অর্কর পঞ্চম জন্মদিনে কত আনন্দ করলাম আমরা. কেক কাটা হলো, নন্দিনী নিজে ছেলের বন্ধুদের জন্য রিটার্ন গিফট কিনে এনেছিল সেগুলো তাদের দেওয়া হলো. গান, আবৃত্তি গল্প আড্ডা..... পুরো জমে গেছিলো রাতটা.

আর কাল..... না কাল এসবের কিছুই হবেনা. তবু আমি নিজেই কিছু ব্যবস্থা করেছি. নন্দিনীর মা অর্থাৎ আমার শাশুড়ি মা বলেছিলেন অন্তত বাচ্চাটার মুখ চেয়ে আমায় নিজেকে সামলাতে হবে.

বলেছিলেন - মেয়েকে তো হারিয়েছি.... স্বামী তো কবেই..... এখন তুমি আর আমার নাতিই তো আমার সব বাবা. ওই বাচ্চাটার কথা ভেবে তোমায় স্বাভাবিক পরিবেশে আবার ফিরে যেতে হবে. ওকে সুস্থ পরিবেশে রাখতে হবে. জোজো যদি দেখে ওর বাবা সবসময় এইভাবে রয়েছে তাহলে ওর কি হবে বলো বাবা? ওকে কে সামলাবে? তুমিই তো এখন ওর সব বাবা.... সামলাও নিজেকে.

তাই ছেলের সামনে মনের সত্যি লুকিয়ে বন্ধুর মতো ওর সাথে মিশি. এখন আমিই ওর বাবা আর আমিই মায়ের দায়িত্ব পালন করে চলেছি. আজ বুঝতে পারছি মা হওয়া কত বড়ো দায়িত্ব.

জোজোকে একা সামলাতো মেয়েটা. নিজে মায়ের দায়িত্ব যেমন পালন করতো তেমনি ঘরের সব কাজ একা সামলাতো ও.
ছেলে ছিল ওর কাছে সব. বিয়ের পর থেকে সে আমার কাছে শুধু একটাই উপহার চেয়ে ছিল. একটা বাচ্চা. আমি ওকে সেটা দিয়েছিলাম. আসলে একটা সময় এসেছিল যখন আমার ওপরে ওঠার সময়... এগিয়ে যাওয়ার সময়. তখন আমি সাংসারিক দায়িত্ব প্রায় ভুলেই গেছিলাম. পুরো দায়িত্ব এসে পড়েছিল ওর কাঁধে. তখন একা হাতে পুরো সংসার সামলেছে মেয়েটা. আমায় কখনো একটা কিছু বলেনি. হয়তো বুঝতো আমায়... আমার সমস্যা, আমার চাহিদা. শুধু একটা সন্তানের ইচ্ছে ছিল ওর. যাকে নিয়ে থাকবে ও. নিজের সব কিছু উজাড় করে ভালোবাসবে তাকে. আর তাই জোজো আসার পর তো আমাদের ফ্যামিলি আনন্দে ভোরে উঠেছিল. জোজোও মাকে ছাড়া থাকতেই পারতোনা. সারাদিন মায়ের পেছন পেছন ঘুরতো. মায়ের শাড়ী নয়তো ম্যাক্সি ধরে সারা ঘরে হেটে বেড়াতো বিচ্ছুটা.

কিন্তু আজ.....ছেলেটা সবজায়গায়, সব ঘরে খুঁজে বেড়ায় ওর মাকে. মায়ের পিছু পিছু হাঁটতে চায় কিন্তু...... কিন্তু সেতো আর.....

সেদিন একটা জরুরি ফোন সেরে নিজের ঘরের কাছে এসে দেখি বাচ্চাটা একদৃষ্টিতে মায়ের ছবির দিকে তাকিয়ে আছে পেছনে হাত দিয়ে. ছেলেটাকে ঐভাবে দেখে আমি ওখানে দাঁড়িয়ে থাকিনি.... বলা উচিত ছেলেটাকে ঐভাবে দেখে এগিয়ে যেতে পারিনি আমি. সরে এসেছিলাম. বুকটা কেমন করে উঠেছিল যেন. দোতলায় গিয়ে সিগারেট খেয়ে ওই সময়টা কাটিয়েছিলাম. 

কি গো বাবা? বলোনা? মা কাল আসবেনা? মাকে কতদিন দেখিনি  বাবা...... মা কিন্তু আমায় বলেছিলো এবারে আরো বড়ো করে পার্টি হবে.... অজয়, রাহুল, তিয়াস, পিঙ্কি, গোলাপ ওদের সবাইকে ডাকবে মা বলেছিলো.... দিদু, কাকলি আন্টি ওরা আসবেনা বাবা কালকে?

আমি - হ্যা সোনা..... দিদু, কাকলি আন্টি ওরা আসবে তো.... তোমার বন্ধুরাও আসবে তো. আমরা সবাই খুব আনন্দ করবো. তোমার মা যেমন করবে বলেছিলো ঠিক ওরকম হবে. তোমার কাকলি আন্টি তো সেদিন তোমায় বললো - তোমার জন্য দারুন একটা গিফট কিনেছে তোমায় দেবে.

জোজো হেসে বললো - হ্যা বললতো আমায় সেদিন .... জানো বাবা... কাকলি আন্টি খুব ভালো... আমায় খুব ভালোবাসে আন্টি.

আমি হেসে বললাম - হ্যা জানি তো সোনা..... তোমায় খুব ভালোবাসে উনি. 

কাকলি আমার স্ত্রীয়ের বান্ধবী. প্রায় চার বছর পর ওর সাথে নন্দিনীর দেখা. বিয়ের পর ও বোম্বে চলে গেছিলো. তারপর স্বামীর সাথে ডিভোর্স হবার পর আবার কলকাতা ফিরে এসেছে.  নন্দিনীই ওকে আমাদের বাড়িতে আসতে ওকে বলেছিলো. সেই থেকে ও আসতো মাঝে মাঝে এই বাড়িতে. আমাদের ছেলের সাথে প্রথম দিনই বন্ধুত্ব হয়ে গেছিলো তার. জোজোকে এতো ভালোবাসেন যেন ওনারই ছেলে. হয়তো নিজের জীবনে সেই সুখের মুহুর্ত আসেনি তাই জোজোকেই....

আজ এরকম একটা পরিস্থিতে সেও আমায় অনেকটা সাহায্য করছে. এখন প্রায় ও আসে আর আমার ছেলের সাথে সময় কাটায়. মায়ের স্থান না হলেও জোজোর অনেকটা স্থান জুড়ে ওর এই কাকলি আন্টি আছে. বান্ধবী চলে যাবার পর ও আমার পাশে বন্ধুর মতো না দাঁড়ালে কি করতাম জানিনা..... কি করে একা এই মা মরা বাচ্চাটাকে সামলাতাম আমি? 

জোজো হবার পর দূরে ভালো কোথাও ঘুরতে যাওয়াই হয়নি আমাদের. খুব ইচ্ছে ছিল আমার ওদের নিয়ে ভালো কোথাও বেরিয়ে আসবো. কিন্তু...... আমার,জোজো আর নন্দিনীর একসাথে মিলে পাহাড়ে ঘুরতে যাওয়াই যে ওর শেষ ঘুরতে যাওয়া হবে তা কি ভেবেছিলাম? কতদিন ধরে আমরা এই ঘুরতে যাবার প্ল্যান বানাচ্ছিলাম. টাকার হয়তো কোনো সমস্যা ছিলোনা. বর্তমানে আমি ভালোই অর্থের মালিক কিন্তু সময়ের সমস্যা হচ্ছিলো. কাজের উন্নতির সাথে দায়িত্ব চাপ বেড়ে গেছিলো. তাই  সময় কিছুতেই বার করতে পারছিলাম না আমি. শেষে কোনোরকমে কাজের থেকে সময় বার করে ছেলে বৌকে নিয়ে ঘুরতে যাবার প্ল্যান বানালাম. 

আজও মনে আছে এই সুখবর টা ওকে জানাতেই নন্দিনী আনন্দে জড়িয়ে ধরেছিলো আমায়. একদম বাচ্চাদের মতো খিল খিল করে হাসছিলো আনন্দে সেদিন. যেন জোজোর থেকেও ছোট হয়ে গেছিলো সেদিন ও.

ওর খুব ইচ্ছে ছিল পাহাড়ে ঘুরতে যাওয়া. ছোটবেলায় একবার বাবা মায়ের সাথে পাহাড়ে ঘুরতে গেছিলো... সেই থেকে নাকি পাহাড়ের সাথে ওর বন্ধুত্ব হয়ে গেছে. তারপর আর যাওয়াই হয়ে ওঠেনি ওদের. আমাদের বিয়ের পরেও ও বলতো পাহাড়ে ঘুরতে যাবার কথা কিন্তু তখন কিছুতেই হয়ে ওঠেনি. আর যখন সুযোগ এলো তখন.......    তখন.......... যে এরকম কিছু অপেক্ষা করছে কে জানতো? এই ভ্রমণ যে এরকম ভাবে শেষ হবে কে জানতো?

কে জানতো ওই হাসি মুখটা কে আর কোনোদিন দেখতেই পাবনা. এরকম একটা দুর্ঘটনা অপেক্ষা করছে যেটা জোজোর কাছ থেকে ওর মাকে কেড়ে নেবে কে জানতো?


বাবা? বলোনা... মা আসবেনা আর ?

আমি - এবারে ঘুমিয়ে পড়ো সোনা.. কাল কলেজ না... নাও ভালো ছেলের মতো ঘুমিয়ে পড়ো. কাল রাতে কত আনন্দ হবে..... সবাই আসবে দারুন মজা হবে. কিন্তু এবারে গুড বয় হয়ে ঘুমিয়ে পড়ো. নইলে মা আসলে কিন্তু খুব বকবে. জোজো চোখ বুজলো. আমি ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলাম. যখন বুঝলাম ও ঘুমিয়ে পড়েছে তখন আমি ওর ঘরের আলো নিভিয়ে দরজা আলতো করে ভিজিয়ে নিজের ঘরে চলে এলাম. 

ঘরে এসে বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম. উফফফফ সকাল থেকে এতো খাটনি.... নিজের ব্যাবসার কাজ,তারপর ছেলের সব দায়িত্ব....উফফফফ হাঁপিয়ে উঠেছি. আজ অনেক কাজ ছিল অফিসে. নন্দিনী থাকতে বুঝতেই পারিনি ছেলেকে সামলানো কি ভয়ানক দায়িত্বের কাজ. ও কখনো বুঝতেই দেয়নি. ছেলে অন্ত প্রাণ ছিল যে ওর.

বিছানায় উঠে বসে সামনের দেয়ালে তাকালাম. ওখানে দেয়ালে টাঙানো আমাদের বিয়ের ছবি. হাসি মুখে আমার পাশে দাঁড়িয়ে নন্দিনী. আর ওই ছবির নিচেই শোকেসের মাথায় রাখা আরেকটা ফটোফ্রেম. তাতে আমি নন্দিনী আর ওর কোলে আমাদের ছোট্ট জোজো. তখন জোজো ৬ মাসের ছিল. আমি উঠে গিয়ে ছবিটা হাতে নিলাম. নন্দিনীর ছবিটার ওপর হাত বোলালাম. খুব মিস করি ওকে. সারা বাড়িটা ফাঁকা ফাঁকা লাগে. পাশে ফিরে শুই যখন  তখন কাউকে পাইনা আমি. আগে ওই পাশটা শুয়ে থাকতো আমার অর্ধাঙ্গিনী. কত স্মৃতি জড়িয়ে আমাদের. ভালোবাসার, সুখের, আনন্দের.

সকালে উঠেই মেয়েটা আমায় টেনে তুলতো. আসলে আমার আবার খুব গভীর ঘুম. আবার কখনো দুস্টুমি করে মটকা মেরে পড়ে থাকতাম. সে হাত ধরে ডাকতেই টেনে নিয়ে আসতাম নিজের কাছে.... আমার ওপরে টেনে নিতাম ওকে. খিল খিল করে হাসতো আর নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতো. আমিও দুস্টুমি করতাম কত. আদুরে বকা দিয়ে আমার হলে আদুরে থাপ্পড় মেরে বলতো অসভ্য লোক একটা. আর আজ....... কেউ ঘুম থেকে তোলার জন্য পাশে নেই..... কেউ আর.....

ছবিতে নন্দিনীর মুখের ওপর হাত বোলাতে বোলাতে ফিসফিস করে বললাম - সরি.....খুব সরি.....আমি.... আমার....

তখনই আমার ফোনটা বেজে উঠলো. ছবিটা আবার যথাস্থানে রেখে এগিয়ে এসে ফোনটা তুলে দেখলাম কাকলির ফোন. নিশ্চই জোজোর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করবে. ও এখন রোজই জোজোর ব্যাপারে জানতে ফোন করে একবার. আমি ধরলাম ফোনটা. 

ওপাশ থেকে - হ্যালো

আমি - হ্যা..... বলুন... 

কাকলি - জোজো শুয়েছে?

আমি - হুম.... এই ঘুম পাড়িয়ে এলাম.

কাকলি - ও ঠিক আছে তো....?

আমি - হ্যা ঠিক আছে.... আপনি কাল.... আসছেন তো? 

কাকলি - হ্যা..... অবশ্যই.....কাল সন্ধে ঠিক পৌঁছে যাবো আমি.  কেক আমিই নিয়ে আসবো. 

আমি সামান্য হেসে - আচ্ছা থাঙ্কস ..... জোজো তো আপনায় খুব পছন্দ করে.. খালি আপনার কথা বলে. আন্টি কবে আসবে...কখন আসবে? আসলে খুব মিস করে মাকে..... আপনি এতো আদর করেন তাই আপনাকেও এখন মিস করে জোজো.

কাকলি হেসে - আমিও তো ওকে মিস করি.



আমি - শুধু ওকে মিস করেন ? আর কাউকে না?

ওপাশ থেকে হাসির শব্দ.

 আমিও হেসে উঠলাম. 

কাকলি - এই.....এমনি সব ঠিক আছে তো?

আমি পায়ের ওপর পা তুলে -  ফার্স্ট ক্লাস...... এই শোনোনা .......তোমার একটা ছবি পাঠাওনা...... খুব দেখতে ইচ্ছে করছে.....কি ছবি নিশ্চই বলে দিতে হবেনা?

কাকলি - উফফফ... খালি দুস্টিমি না? জন্তু একটা তুমি....

আমি - তা ঠিক..... জন্তু আমি জন্তু হে..... পাগল তোমার জন্য যে....

কাকলি - ধ্যাৎ.... কিকরে যে আমার বান্ধবীটা তোমায় সামলাতো কে জানে? উফফফ সত্যিই জন্তু হয়ে যাও তখন তুমি....যা সব করোনা তখন..

মুখে একটা শয়তানি হাসি ফুটে উঠলো আমার. বিছানায় হেলান দিয়ে বসে সামনে ওই নন্দিনীর ছবির দিকে তাকিয়ে বললাম - আরে ধুর..... কার কথা বলছো......? উফফফফ ও ছিল শুধুই বৌ.... আর তুমি..... তুমি তো আলাদা জিনিস. কোথায় তুমি আর কোথায় ও..... উফফফফফ সব যে ভালোয় ভালোয় মিটেছে এই রক্ষে.....

কাকলি - আমি তো খুব টেনশানে ছিলাম... আমাদের সব প্ল্যান ঠিকমতো এক্সেকিউট হবে কিনা....? তুমি ঠিক মতো কাজটা করতে পারবে কিনা? 

আমি হেসে - আরে ...... আমি থাকতে ওতো টেনশন কিসের ডার্লিং..... যা যা ভেবেছিলাম সব সেই মতো হয়েছে..... আসলে ধাক্কাটা দেবার আগে একটু হাত কাঁপছিলো... আর কাজটা সারার পর একটু ভয় আমারও হচ্ছিলো কিন্তু পরে নিজেকে সামলে নিয়েছিলাম. চোখে মুখে দুঃখ দুঃখ ভাব নিয়ে এমন অভিনয় চালিয়ে গেছি..... কারোর বাপের সাদ্ধ নেই যে ধরে. হি হি..

কাকলি - সত্যি.... সোনা.... আর কোনো ঝামেলা রইলানো আমাদের.... এবারে শুধু তুমি আর আমি.....

আমি - হ্যা সোনা....আর লুকিয়ে চুড়িয়ে দেখা করার প্রয়োজন হবেনা.... শুধু এইভাবে কদিন চালিয়ে যেতে হবে...জোজোকে নিয়েও কোনো প্রব্লেম নেই... ও তো তোমায় পছন্দই করে..... ঠিক সময় তোমায় পুরোপুরি আমার বাড়িতে নিয়ে আসবো সোনা.... তারপর নিজের হাতে তুমি গোছাবে  নিজের সংসার.

কাকলি - সত্যি আমি আরও আর পারছিনা তোমায় ছাড়া সোনা.... Love you .....

আমি - আমিও সোনা....

কাকলি - এবারে শুয়ে পড়ো.... সকাল থেকে নিশ্চই অনেক খাটাখাটনি গেছে......গুডনাইট.

ফোনটা রেখে দিলাম. মুখে এখনো একটা হাসি. শান্তির হাসি, আনন্দের হাসি........ পৈশাচিক হাসি. এবারে কাকলিকে পুরোপুরি নিজের করে পাবো আমি. এই খাট আর খালি থাকবেনা..... প্রতি রাতে আমি আর ও মেতে উঠবো আদিম খেলায়. উফফফফ যবে থেকে ওকে দেখেছিলাম পাগল হয়ে গেছিলাম আমি. এরকম নারী আমি দেখিনি উফফফ সো সেক্সি এন্ড এট্রাক্টিভ. কাকলির পাশে আমার নন্দিনী কোনোভাবেই পাত্তা পেতোনা. কোথায় আমার ছোটোখাটো বৌ আর কোথায় দীর্ঘাঙ্গি কাকলি. তার ওপর অমন পাগল করা রূপ, চাবুক ফিগার.  ওকে দেখার পর থেকেই তো আর নন্দিনীর ওপর থেকে সব মোহো যেন গায়েব হয়ে যেতে লাগলো. কেন জানিনা.... সেই ভালো অরিন্দম পাল্টে যেতে লাগলো. কাকলির ওই টানা টানা চোখের চাহুনি, ওই হাসি.... ওই তাকানো সব আমায় পাগল করে দিচ্ছিলো.

আমিও কম হ্যান্ডসম নই. তাই আমার যেমন ওর ওপর নজর পরে... কাকলিও আমার প্রতি একটু একটু করে দুর্বল হয়ে পড়ে.

 মনে আছে আমার সেই 31st এর রাতের পার্টি. সেদিন রাত হয়ে যাওয়ায় ও আমাদের বাড়িতেই থেকে গিয়েছিলো. সেদিনই প্রথম অজান্তে একে ওপরের খুব কাছে চলে এসেছিলাম আমরা . আসলে বাথরুম যেতে গিয়ে হটাৎ দুজনের সাক্ষাৎ আর তারপরেই   সব গন্ডগোল হয়ে গেলো. আমার স্ত্রীয়ের নাইটিতে কি লাগছিলো ওকে. ওই নাইটি যখন নন্দিনী পড়তো মোটামুটি লাগতো কিন্তু কাকলিকে ওই একই কাপড়ে কি লাগছিলো উফফফ. বুক দুটো যেন ফেটে বেরিয়ে আসতে চাইছে. আর ও হয়তো আমার মধ্যে কিছু খুঁজে পেয়েছিল. হয়তো আমার চোখে একটা ক্ষুদার্থ বাঘকে দেখতে পেয়েছিলো সেদিন ও. এই নজরই হয়তো একটা মেয়ে চায় পুরুষের চোখে দেখতে.

ব্যাস...... সব এলোমেলো হয়ে গেলো. আর সামলাতে পারলাম না আমি. সেই প্রথম চুমু. তারপরই সেই চরম ব্যাপার. দোতলায় নিয়ে গিয়ে দুজনে দুজনকে নিয়ে আদিম খেলায় মেতে উঠেছিলাম. নিচের ঘরে স্ত্রী ঘুমিয়ে আর দোতলায় তারই স্বামী তারই বান্ধবীর সাথে সারাটা রাত খেলা করেছিল. সেই আদিম খেলা. সেদিন  বুঝেছিলাম মিলনের সময় ও ক্ষুদার্ত বাঘিনী. এটাই তো চায় একটা পুরুষ. খুব অল্প সময়েই দুজনে দুজনের খুব কাছে চলে আসি. প্রেমে পড়ে যাই দুজন দুজনের . আমি এরকম নারী পেয়েও হাতছাড়া করবো? উহু..... কখনো নয়. ওর আগের বরটা শালা গান্ডু..... টাকা ছাড়া কিসুই বুঝতোনা, সময়ই দিতোনা ওকে. তাইতো ওরকম ফালতু স্বামীকে ছেড়ে দিয়েছিলো ও. কিন্তু আমার টাকাও আছে আবার নারীকে সুখ দেবার ক্ষমতাও. তাই কাকলিও আমায় পাবার জন্য পাগল ছিল. কতবার হোটেলে গিয়ে আমরা রুমে দুজনে দুজনকে নিয়ে মেতে উঠেছি. উফফফফ ওই সময়টায় আমি ভুলেই যাই আমি মানুষ..... তখন আমি একটা যৌন ক্ষুদার্থ জন্তু ছাড়া কিছুই হতাম না . আমিও নিজেও যেন জানতাম না আমার ভেতরে এরকম পরিমানে ক্ষমতা আছে. এরকম একটা পশু লুকিয়ে ছিল আমার ভেতরে. মেয়েটা সত্যি জানে কিভাবে পুরুষের ভেতরের কামুক জন্তুটাকে বার করে আনতে হয়. বুঝেছিলাম আর আমরা দুজন দুজনকে ছাড়া থাকতে পারবো না.

কিন্তু মাঝে যে কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছিলো ওই আমার বউটা. তাইতো........ হি... হি.... হি.... সরিয়ে দিলাম. এমনি এমনি কি আর পাহাড়ে ঘুরতে যাবার প্ল্যানটা বানিয়ে ছিলাম? বেচারি যখন আনন্দে আমায় জড়িয়ে ধরেছিলো তখন আমার যে একটু কষ্ট হয়নি বলবোনা কিন্তু ঐযে..... কিছু পেতে গেলে কিছু তো হারাতেই হবে. জানতাম ও আমায় ছাড়বেনা...বরং নানারকম ঝামেলা হবে, কেচ্ছা কেলেঙ্কারি... তাই এটাই ঠিক করলাম. কাকলিও আমার পাশে দাঁড়ালো. দুজনে মিলে একটা প্ল্যান বানালাম. আর সেই মতোই সব হলো. ওই যে তখন বলছিলাম না কে জানতো এরকম হবে, কে জানতো নন্দিনীর জন্য এরকম দুর্ঘটনা অপেক্ষা করছে?

দুজন কিন্তু জানতো. নন্দিনীর স্বামী আর বান্ধবী. কি করবো?  হাতের কাছে দামি Bmw পেয়েও কেউ কি ন্যানোর কথা ভাবে? হি.. হি..হি 

ব্যাস.... আর কি?  এভাবে আরো কিছু সময় নাটক চালিয়ে যেতে হবে. জোজোর মনে কাকলি এখনই নিজের জায়গা করে নিয়েছে. মনে হয়না জোজোর কোনো সমস্যা হবে কাকলিকে নতুন মা হিসেবে পেতে. দেখতে দেখতে কাকলি হয়ে উঠবে ওর মা. আর আমিও পাবো এরকম সেক্সি একটা বৌ.  ভাবছি নন্দিনীর ছবিটা বড়ো করে সামনে টাঙিয়ে রাখবো. প্রথম স্ত্রী বলে কথা. লোকের থেকে একটু সিম্পাথিও পাবো.

হটাৎ  হোয়াটস্যাপ এর এলার্ট টোন টা বাজলো. খুলে দেখি একটা ছবি. কাকলি নিজের ছবি পাঠিয়েছে. সেই ছবি যা দেখে যেকোনো পুরুষের শরীর গরম হয়ে উঠবে. আমার ঘুমন্ত সিংহ জেগে উঠে দানবের আকার ধারণ করলো. মুচকি হেসে ওকে ম্যাসাজ পাঠালাম - কাল কিন্তু তোমায় ফিরতে দেবোনা..... সারারাত খাবো কিন্তু.

একটু পরেই ওর রেপ্লায় এলো  - জন্তু একটা.

[Image: unnamed.png]
সমাপ্ত 
[Image: 20240716-212831.jpg]
[+] 7 users Like Baban's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: কিছু কথা ছিল মনে - My short stories❤ - by Baban - 14-02-2021, 06:53 PM



Users browsing this thread: 17 Guest(s)