11-02-2021, 09:56 AM
বুম্বার গলায় অভিমানের সুর……… মনটা ভালো হয়ে যায় ইন্দ্রর। দুই হাতে বুম্বাকে নিজের বুকের সাথে “জড়িয়ে ধরে বলে, এই তো আমি এসে গেছি বাবু, সব ঠিক হয়ে যাবে। আমি তো এখন আমার বুম্বা কে নিতেই এসেছি। এই দেখো তোমার জন্য কি এনেছি আমি”? বলে পকেট থেকে একটা বড় ক্যাডবেরি বের করে বুম্বার হাতে দেয়। বুম্বা খুশিতে ইন্দ্র কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
দুজনেই খেয়াল করেনি, কখন যে সুমিত্রা এসে দূরে দাড়িয়ে সব কিছু লক্ষ্য করছে বলে। আচমকা সুমিত্রার আওয়াজে দুজনেই ঘুরে তাকায়।
“বাপ ব্যাটার পীড়িত যদি শেষ হয়েছে, তাহলে আমি কিছু কথা বলি এবারে? তা এতদিন বেশ সুখেই তো ছিলে মনে হচ্ছে। এতদিন তো একবারও ছেলের খোঁজ নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করনি তুমি। এখন এসে ক্যাডবেরি দিয়ে ভালোবাসা দেখাচ্ছ যে। এসো ভেতরে এসো, মা জলখাবার তৈরি করেছে, ওইগুলো আগে গেলো তারপর এখান থেকে বেরাব নাহলে আবার আমাকে ঘরে গিয়ে রান্না ঘরে ঢুকতে হবে”। সুমিত্রার কথা শুনে ইন্দ্রর মুড টা আবার বিগরে যায়। যে ব্যাপারটা চূড়ান্ত অপছন্দ করে, সেটাই এখন তাকে করতে বলা হচ্ছে, অর্থাৎ খেতে হবে এখানে।
“না না এখন কিছু খেতে ইচ্ছে করছে না আমার। মা ঘরে খাবার তৈরি করে রেখেছে। ওখানে গিয়ে খেলেই হবে, আমাকে তাড়াতাড়ি ফিরতে হবে, কাজ আছে”, বলে সুমিত্রার দিকে তাকায়।
“মানে তুমি কি বলতে চাইছ এখানে না খেয়ে তোমার মায়ের হাতের রান্না খাব? আর আমার মা যে এত কষ্ট করে জলখাবার বানিয়ে রেখেছে, সেইগুলো কি ফেলে দেবো? আর ওই তো তোমার মায়ের হাতের রান্না…………… কোনটাতে নুন নেই, কোনওটাতে ঝাল নেই। কোনরকমে খাই আমি। আমি তো বাবা একদম সহ্য করতে পারিনা। খেতে হয়, তাই খাই”। ইন্দ্র বুঝতে পারে, এরপর যদি সুমিত্রার কথা জবাব দেয়, তাহলে কথা বাড়বে, তাই আর কোনও কথা না বলে বুম্বার হাত ধরে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে।
ঘরে ঢুকতেই বিশাল ড্রয়িং রুম। খুব সুন্দর করে সাজানো। চারিদিকে আভিজাত্য ফুটে বেরোচ্ছে। রুচি বোধের প্রশংসা না করে উপায় নেই। দামি সব সাজানোর জিনিষে ভরা। এদিক সেদিক তাকিয়ে একটা সোফা তে বসে ইন্দ্র। বুম্বাও ইন্দ্রর গায়ে বসে ক্যাডবেরির র্যাপার টা খুলতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে। ইন্দ্র জানে, বুম্বা অনেকদিন পরে দেখছে তাকে, চট করে ছাড়বে না। এখন বেশ কিছুক্ষণ তার সাথেই তার গায়ে লেগে থাকবে। ব্যাপারটা খুব উপভোগ করে ইন্দ্র সব সময়। কিছুক্ষণ পরে খাবারের প্লেট হাতে করে ঘরে ঢোকে ঊর্মিলা দেবী। পড়নে একটা দামি তাঁতের সবুজ সাড়ী, হাতে দুই গাছা সোনার চুড়ি, গলায় একটা মোটা সোনার চেন, চোখে একটা রিমলেস চশমা। টকটকে ফর্সা গায়ের রং, কিছুক্ষণ আগেই স্নান করেছেন মনে হয়, একরাশ ঘন কুঁচকানো কালো চুলের তলায় একটা রিবন বাঁধা। এই বয়সেও চুলে পাক ধরেনি ভদ্রমহিলার। ধনী জমিদার গৃহিণীদের মতন। শাশুড়ি কে সামনে দেখে উঠে দাঁড়ায় ইন্দ্র, পা ছুয়ে প্রনাম করার জন্য। যতই হোক গুরুজন। কখনও কখনও মনে হয়, সুমিত্রা ভুল ভাবে তাঁর মা কে বুঝিয়েছে তার ঘরের পরিস্থিতি, তাই হয়তো উনি বুঝতে না পেরে এমন বলেন। যদি আসল পরিস্থিতি জানতে পারতেন তাহলে হয়তো মেয়েকে মিথ্যা সাপোর্ট করতেন না। ভদ্রমহিলা কে দেখেই কেমন একটা ভক্তি আসতে বাধ্য।
দামি প্লেটে খাবার সাজানো। আলু পরোটা, কসা মাংস, দুটো রসগোল্লা, সাথে একগ্লাস কমলালেবুর রস। প্লেট টা ইন্দ্রর সামনে নামিয়ে রেখে দূরের একটা চেয়ারে বসলেন। সুমিত্রা ও ঘরে এসে ঢুকেই বলল, “দেখছ কি? চটপট খাবার গুলো খেয়ে নাও। বুম্বার খাওয়া হয়ে গেছে। আমার ও হয়ে গেছে, শুধু মায়ের খাওয়া হয় নি। তোমাকে না খাইয়ে নাকি খাবেন না। জামাই আদর দেখলে গা জ্বলে যায়”, বলে একবার তাঁর মায়ের দিকে তাকাল।
না না ……মানে আমি সকাল সকাল এত কিছু খেতে পারবো না। আমি শুধু একটা পড়োটা নিচ্ছি আর একটু মাংস। বাকি টা উঠিয়ে নাও, বলে সুমিত্রার দিকে তাকায় ইন্দ্র। ইন্দ্রর কথা শুনেই ঊর্মিলা দেবী বলে ওঠেন, “আরে না না, বেশী দেওয়া হয়নি তো, এতদুর গাড়ি চালিয়ে এসেছ, খিদে পেয়ে যাবেই। আমি কোনও কথা শুনব না। চুপটি করে ভালো ছেলের মতন সব খেয়ে নাও তো। এত না না বলতে নেই”। ইন্দ্র আর কথা বাড়ায় না। খেতে খেতে ঊর্মিলা দেবী কে জিজ্ঞেস করে, “আপনি কেমন আছেন এখন? ফোন করবো করবো করেও কাজের চাপের জন্য সময় মতন খোঁজ নিতে পারিনি আমি। খারাপ লাগছে। এখন আর শরীরে কোনও অসুবিধা নেই তো”?
“আমি ভালো আছি এখন। কোনও কষ্ট নেই আর। তোমরা সবাই ভালো আছ তো? বাবা কেমন আছেন এখন? এবারে একটু ভালো করে থেকো তোমরা। দেখ ইন্দ্র আমি বুঝি, সংসারে একটু খুট খাট হতেই পারে, কিন্তু সেটা যেন মাত্রা না ছাড়িয়ে যায়, সেই ব্যাপারটা তো তোমাকেই দেখতে হবে, তাই না? একটু মানিয়ে নিতে চেষ্টা করো, দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে। সুমির বাবা যদি বেঁচে থাকতেন তাহলে দুঃখ পেতেন, মেয়ের কষ্ট দেখে। একটু মানিয়ে চল, দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে”।
দুজনেই খেয়াল করেনি, কখন যে সুমিত্রা এসে দূরে দাড়িয়ে সব কিছু লক্ষ্য করছে বলে। আচমকা সুমিত্রার আওয়াজে দুজনেই ঘুরে তাকায়।
“বাপ ব্যাটার পীড়িত যদি শেষ হয়েছে, তাহলে আমি কিছু কথা বলি এবারে? তা এতদিন বেশ সুখেই তো ছিলে মনে হচ্ছে। এতদিন তো একবারও ছেলের খোঁজ নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করনি তুমি। এখন এসে ক্যাডবেরি দিয়ে ভালোবাসা দেখাচ্ছ যে। এসো ভেতরে এসো, মা জলখাবার তৈরি করেছে, ওইগুলো আগে গেলো তারপর এখান থেকে বেরাব নাহলে আবার আমাকে ঘরে গিয়ে রান্না ঘরে ঢুকতে হবে”। সুমিত্রার কথা শুনে ইন্দ্রর মুড টা আবার বিগরে যায়। যে ব্যাপারটা চূড়ান্ত অপছন্দ করে, সেটাই এখন তাকে করতে বলা হচ্ছে, অর্থাৎ খেতে হবে এখানে।
“না না এখন কিছু খেতে ইচ্ছে করছে না আমার। মা ঘরে খাবার তৈরি করে রেখেছে। ওখানে গিয়ে খেলেই হবে, আমাকে তাড়াতাড়ি ফিরতে হবে, কাজ আছে”, বলে সুমিত্রার দিকে তাকায়।
“মানে তুমি কি বলতে চাইছ এখানে না খেয়ে তোমার মায়ের হাতের রান্না খাব? আর আমার মা যে এত কষ্ট করে জলখাবার বানিয়ে রেখেছে, সেইগুলো কি ফেলে দেবো? আর ওই তো তোমার মায়ের হাতের রান্না…………… কোনটাতে নুন নেই, কোনওটাতে ঝাল নেই। কোনরকমে খাই আমি। আমি তো বাবা একদম সহ্য করতে পারিনা। খেতে হয়, তাই খাই”। ইন্দ্র বুঝতে পারে, এরপর যদি সুমিত্রার কথা জবাব দেয়, তাহলে কথা বাড়বে, তাই আর কোনও কথা না বলে বুম্বার হাত ধরে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে।
ঘরে ঢুকতেই বিশাল ড্রয়িং রুম। খুব সুন্দর করে সাজানো। চারিদিকে আভিজাত্য ফুটে বেরোচ্ছে। রুচি বোধের প্রশংসা না করে উপায় নেই। দামি সব সাজানোর জিনিষে ভরা। এদিক সেদিক তাকিয়ে একটা সোফা তে বসে ইন্দ্র। বুম্বাও ইন্দ্রর গায়ে বসে ক্যাডবেরির র্যাপার টা খুলতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে। ইন্দ্র জানে, বুম্বা অনেকদিন পরে দেখছে তাকে, চট করে ছাড়বে না। এখন বেশ কিছুক্ষণ তার সাথেই তার গায়ে লেগে থাকবে। ব্যাপারটা খুব উপভোগ করে ইন্দ্র সব সময়। কিছুক্ষণ পরে খাবারের প্লেট হাতে করে ঘরে ঢোকে ঊর্মিলা দেবী। পড়নে একটা দামি তাঁতের সবুজ সাড়ী, হাতে দুই গাছা সোনার চুড়ি, গলায় একটা মোটা সোনার চেন, চোখে একটা রিমলেস চশমা। টকটকে ফর্সা গায়ের রং, কিছুক্ষণ আগেই স্নান করেছেন মনে হয়, একরাশ ঘন কুঁচকানো কালো চুলের তলায় একটা রিবন বাঁধা। এই বয়সেও চুলে পাক ধরেনি ভদ্রমহিলার। ধনী জমিদার গৃহিণীদের মতন। শাশুড়ি কে সামনে দেখে উঠে দাঁড়ায় ইন্দ্র, পা ছুয়ে প্রনাম করার জন্য। যতই হোক গুরুজন। কখনও কখনও মনে হয়, সুমিত্রা ভুল ভাবে তাঁর মা কে বুঝিয়েছে তার ঘরের পরিস্থিতি, তাই হয়তো উনি বুঝতে না পেরে এমন বলেন। যদি আসল পরিস্থিতি জানতে পারতেন তাহলে হয়তো মেয়েকে মিথ্যা সাপোর্ট করতেন না। ভদ্রমহিলা কে দেখেই কেমন একটা ভক্তি আসতে বাধ্য।
দামি প্লেটে খাবার সাজানো। আলু পরোটা, কসা মাংস, দুটো রসগোল্লা, সাথে একগ্লাস কমলালেবুর রস। প্লেট টা ইন্দ্রর সামনে নামিয়ে রেখে দূরের একটা চেয়ারে বসলেন। সুমিত্রা ও ঘরে এসে ঢুকেই বলল, “দেখছ কি? চটপট খাবার গুলো খেয়ে নাও। বুম্বার খাওয়া হয়ে গেছে। আমার ও হয়ে গেছে, শুধু মায়ের খাওয়া হয় নি। তোমাকে না খাইয়ে নাকি খাবেন না। জামাই আদর দেখলে গা জ্বলে যায়”, বলে একবার তাঁর মায়ের দিকে তাকাল।
না না ……মানে আমি সকাল সকাল এত কিছু খেতে পারবো না। আমি শুধু একটা পড়োটা নিচ্ছি আর একটু মাংস। বাকি টা উঠিয়ে নাও, বলে সুমিত্রার দিকে তাকায় ইন্দ্র। ইন্দ্রর কথা শুনেই ঊর্মিলা দেবী বলে ওঠেন, “আরে না না, বেশী দেওয়া হয়নি তো, এতদুর গাড়ি চালিয়ে এসেছ, খিদে পেয়ে যাবেই। আমি কোনও কথা শুনব না। চুপটি করে ভালো ছেলের মতন সব খেয়ে নাও তো। এত না না বলতে নেই”। ইন্দ্র আর কথা বাড়ায় না। খেতে খেতে ঊর্মিলা দেবী কে জিজ্ঞেস করে, “আপনি কেমন আছেন এখন? ফোন করবো করবো করেও কাজের চাপের জন্য সময় মতন খোঁজ নিতে পারিনি আমি। খারাপ লাগছে। এখন আর শরীরে কোনও অসুবিধা নেই তো”?
“আমি ভালো আছি এখন। কোনও কষ্ট নেই আর। তোমরা সবাই ভালো আছ তো? বাবা কেমন আছেন এখন? এবারে একটু ভালো করে থেকো তোমরা। দেখ ইন্দ্র আমি বুঝি, সংসারে একটু খুট খাট হতেই পারে, কিন্তু সেটা যেন মাত্রা না ছাড়িয়ে যায়, সেই ব্যাপারটা তো তোমাকেই দেখতে হবে, তাই না? একটু মানিয়ে নিতে চেষ্টা করো, দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে। সুমির বাবা যদি বেঁচে থাকতেন তাহলে দুঃখ পেতেন, মেয়ের কষ্ট দেখে। একটু মানিয়ে চল, দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে”।
তোমাকে খুঁজে বেড়াই