11-02-2021, 09:49 AM
“হমমমমম……… চোরের আবার গলার জোর। এবারে শোনো, মায়ের অপারেশান হয়ে গেছে। মা এখন ভালো আছে। আমারও আর এখানে থাকার দরকার নেই। তুমি আগামিকাল এসে আমাদের নিয়ে যাবে বুঝলে? সকাল সকাল চলে আসবে, বেশী দেরি যেন না হয়। আর দয়া করে ভুলে যাবে না বলে দিলাম, বলে ফোন টা কেটে দেয় সুমিত্রা”।
শেষের কথা গুলো শুনে আকাশ থেকে পড়ে ইন্দ্র। আগামিকাল সুমিত্রা চলে আসবে এখানে। একটা অন্যরকম দুনিয়াতে ছিল সে এতদিন। রাত্রে চ্যাট, সারা রাত ফোনে কথা, তার দুর্গাপুর যাওয়া, ওখানে রাত্রি কাটানো, রিমির সাথে পাগল করা আদর ভালবাসায় ভেসে যাওয়া। নাহ……সব ঠিক করে ম্যানেজ করতে হবে। প্রথমেই রিমি কে একটা মেসেজ করা দরকার, জানিয়ে দেওয়া দরকার, যে সুমিত্রা আসছে, নাহলে যে কোনও সময়ে রিমি ফোন করে বসবে। আর সুমিত্রা যদি ব্যাপারটা জানতে পারে, তাহলে রক্ষে থাকবে না।
প্রথমেই একটা রিমি কে একটা এসএমএস করে রাখে ইন্দ্র। চ্যাট উইন্ডো তেও একটা মেসেজ দিয়ে রাখে। যাতে রিমি যখন অনলাইন হবে, তার মেসেজ টা দেখতে পায়। ফোনের কল লিস্ট থেকে রিমির কল গুলো মুছতে শুরু করে ইন্দ্র। মনে মনে ঠিক করে নেয়, সুমিত্রা ধানবাদে থাকতে সে আর রিমির সাথে দেখা করতে দুর্গাপুর যাবে না। তার চেয়ে ঢের ভালো, সুমিত্রা এসে বেশ কিছুদিন আগে এখানে থাকুক। তারপর ব্যাবসার বাহানা করে বাইরে যাওয়ার ব্যাপারটা নিখুত ভাবে প্ল্যান করতে হবে।
রাত্রের ডিনার করে, ফোন বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ে ইন্দ্র। ঘুমনোর আগে অবশ্য মা সুনন্দা দেবী কে বলে দেয় যে আগামিকাল সুমিত্রা, বুম্বা সবাই আসছে। শুনে উৎফুল্ল হয়ে ওঠেন সুনন্দা দেবী, তার বড় আদরের নাতি আসছে, স্পেশাল কিছু খাবার বানিয়ে রাখতে হবে। ব্যাপারটা লক্ষ্য করে ইন্দ্র। মনে মনে ভাবে, মা কত খুশি, একমাত্র নাতিকে আবার কাছে ফিরে পাবে। কোথা থেকে যেন একরাশ প্রানশক্তি এসে সুনন্দা দেবীর দেহ মন কে কানায় কানায় পূর্ণ করে দেয়। ছুটো ছুটি করে ঘর গোছাতে শুরু করেন। চিৎকার করে একবার ইন্দ্র কে বলেন, “এই শুনছিস তুই ইন্দ্র, একটু ভালো মিষ্টি আর আইসক্রিম নিয়ে আসবি, বুম্বা টা খুব ভালবাসে রে। আমি টাকা দেবো, সেই টাকায় নিয়ে আসবি। এসেই তো থাম্মা থাম্মা করে ঘর মাথায় করবে”। মায়ের কথা শুনে ইন্দ্রর মুখে এক চিলতে হাসি ফুটে ওঠে, মনে মনে ভাবে, কথায় আছে না, আসলের থেকে সুদ সব সময় প্রিয় হয়। ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ে ইন্দ্র।
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়ে ইন্দ্র। উঠেই ঘরের ডেস্কটপে লগ ইন করে চেক করে দেখে নেয়, রিমি মেসেজ গুলো দেখেছে কি না? লগইন করতেই চোখে পড়ে রিমির মেসেজ, “হ্যাঁ……… হ্যাঁ, বউ কে নিয়ে এসো বাড়িতে, আমাকে মনে রাখার কোনও দরকার নেই। ওকে নিয়েই ব্যাস্ত থাকো, ওকেই আদর করো, আমি কেও হই না তোমার, বুঝলে? ওর সাথেই রাত্রে এক বিছানায় শুয়ে থাকো। আমি তো শুধু মাত্র রক্ষিতা তোমার। আমাকে আর মেসেজ করার কোনও দরকার নেই। থাকো তুমি তোমার বউয়ের সাথে। আর একটা কথা আমাকেও ফোন করবে না তুমি”। রিমির লেখা গুলো পড়ে ইন্দ্র বুঝতে পারে, সুমিত্রা আসবে শুনে রেগে মেগে এই কথা গুলো লিখেছে রিমি। রিমির এই কপট রাগ দেখে একটু খুশিই হয় ইন্দ্র। ভালো লেগে যায়। মেয়েলী হিংসে, নিজের ভালবাসা ভাগ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকেই হয় এই ব্যাপারটা। ইন্দ্র বুঝতে পারে। ভালো লাগে, তাকে নিয়েও কেও হিংসে করে তাহলে।
সকাল্ সকাল কার নিয়ে বেড়িয়ে পড়ে ইন্দ্র বোকারোর উদ্দেশ্যে। মনের মধ্যে একরাশ দুশ্চিন্তা, সুমিত্রা যতদিন ধানবাদে ছিল না, বেশ নিশ্চিন্তে ছিল সে। রিমির সাথে আলাপ হওয়ার পর থেকে দিনগুলো যেন হাওয়ায় কাটছিল, কখন রাত হচ্ছে, কখন দিন হচ্ছে, টের পাওয়াই মুশকিল হয়ে যাচ্ছিল। নীল আকাশে সাদা তুলোর মেঘের মতন মনটা হয়ে গেছিলো। এতদিনের দুঃখ, একাকী একঘেয়ে জীবন যেন রিমি ঝড়ে উড়ে গেছিলো। সমস্ত কিছু ভুলতে বসেছিল সে। শুধু একটা ফোন কল তাকে আবার পূরানো জীবনে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। দেখা যাক ……… সুমিত্রা কি বলছে? ভালো কিছু অবশ্যই আশা করে না সে সুমিত্রার কাছের থেকে। পরিস্থিতি যেন হাতের বাইরে না চলে যায়, সেই জন্য বেশিরভাগ সময়ে নিজের সাথেই আপস করে নেয় ইন্দ্র। চুপ করে থাকে অধিকাংশ সময়ে। যাতে তর্ক করতে না হয়। সুমিত্রার সাথে তর্ক টা ভীষণ অপছন্দ করে ইন্দ্র। কেননা সেই সময় সুমিত্রার মুখের ভাষার ওপর তার কোনোরকম নিয়ন্ত্রন থাকে না। যা খুশি বলতে আরম্ভ করে। সুমিত্রার রাগ টা এমন লেবেলে চলে যায়, সেই সময় নিজে কি করছে না করছে, কোনও জ্ঞ্যান ই থাকে না সুমিত্রার। হাতে যদি চাকু, ছুরি কিছু থাকে, সে খুন ও করে দিতে পারে বলে মনে হয় ইন্দ্রর।
কলোনির ভেতরে সুমিত্রা দের বাড়ির সামনে দাড়াতেই দেখে বুম্বা গেটের ভেতরে বিশাল বাগানের মধ্যে একটা বল নিয়ে খেলছে। ইন্দ্রর কার টা তখনও দেখতে পায়নি বুম্বা, খেলাতে এতই মত্ত ছিল সে। ব্যাপারটা দেখেই সুযোগ নেয় ইন্দ্র। আসতে করে কার টা দাড় করিয়ে, কোনও শব্দ না করে গাড়ি থেকে নেমে আসে ইন্দ্র। তারপর ধীর পায়ে গেট খুলে, এগিয়ে গিয়ে বুম্বা কে পেছন থেকে ধরে ওপরে তুলে নেয় ইন্দ্র। আচমকা ঘটে যাওয়া ব্যাপারটা তে হতচকিত হয়ে যায় বুম্বা। তারপর বাবার দুই হাতের মাঝে নিজেকে শূন্যে আবিস্কার করে, খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে বুম্বা। ইন্দ্রর চুলের মুটি দুই হাতে টেনে ধরে আদো আদো গলায় ঠোঁট ফুলিয়ে বলে ওঠে, “তুমি কোথায় গেছিলে বাপি? আমাকে নিতে আসনি কেন তুমি? আমার এখানে একটুও ভালো লাগছে না। থাম্মা নেই এখানে। মাম্মাম শুধু বকে আমাকে। আমি আল এখানে থাকবো না। আমি আমার বালি যাব”।
শেষের কথা গুলো শুনে আকাশ থেকে পড়ে ইন্দ্র। আগামিকাল সুমিত্রা চলে আসবে এখানে। একটা অন্যরকম দুনিয়াতে ছিল সে এতদিন। রাত্রে চ্যাট, সারা রাত ফোনে কথা, তার দুর্গাপুর যাওয়া, ওখানে রাত্রি কাটানো, রিমির সাথে পাগল করা আদর ভালবাসায় ভেসে যাওয়া। নাহ……সব ঠিক করে ম্যানেজ করতে হবে। প্রথমেই রিমি কে একটা মেসেজ করা দরকার, জানিয়ে দেওয়া দরকার, যে সুমিত্রা আসছে, নাহলে যে কোনও সময়ে রিমি ফোন করে বসবে। আর সুমিত্রা যদি ব্যাপারটা জানতে পারে, তাহলে রক্ষে থাকবে না।
প্রথমেই একটা রিমি কে একটা এসএমএস করে রাখে ইন্দ্র। চ্যাট উইন্ডো তেও একটা মেসেজ দিয়ে রাখে। যাতে রিমি যখন অনলাইন হবে, তার মেসেজ টা দেখতে পায়। ফোনের কল লিস্ট থেকে রিমির কল গুলো মুছতে শুরু করে ইন্দ্র। মনে মনে ঠিক করে নেয়, সুমিত্রা ধানবাদে থাকতে সে আর রিমির সাথে দেখা করতে দুর্গাপুর যাবে না। তার চেয়ে ঢের ভালো, সুমিত্রা এসে বেশ কিছুদিন আগে এখানে থাকুক। তারপর ব্যাবসার বাহানা করে বাইরে যাওয়ার ব্যাপারটা নিখুত ভাবে প্ল্যান করতে হবে।
রাত্রের ডিনার করে, ফোন বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ে ইন্দ্র। ঘুমনোর আগে অবশ্য মা সুনন্দা দেবী কে বলে দেয় যে আগামিকাল সুমিত্রা, বুম্বা সবাই আসছে। শুনে উৎফুল্ল হয়ে ওঠেন সুনন্দা দেবী, তার বড় আদরের নাতি আসছে, স্পেশাল কিছু খাবার বানিয়ে রাখতে হবে। ব্যাপারটা লক্ষ্য করে ইন্দ্র। মনে মনে ভাবে, মা কত খুশি, একমাত্র নাতিকে আবার কাছে ফিরে পাবে। কোথা থেকে যেন একরাশ প্রানশক্তি এসে সুনন্দা দেবীর দেহ মন কে কানায় কানায় পূর্ণ করে দেয়। ছুটো ছুটি করে ঘর গোছাতে শুরু করেন। চিৎকার করে একবার ইন্দ্র কে বলেন, “এই শুনছিস তুই ইন্দ্র, একটু ভালো মিষ্টি আর আইসক্রিম নিয়ে আসবি, বুম্বা টা খুব ভালবাসে রে। আমি টাকা দেবো, সেই টাকায় নিয়ে আসবি। এসেই তো থাম্মা থাম্মা করে ঘর মাথায় করবে”। মায়ের কথা শুনে ইন্দ্রর মুখে এক চিলতে হাসি ফুটে ওঠে, মনে মনে ভাবে, কথায় আছে না, আসলের থেকে সুদ সব সময় প্রিয় হয়। ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ে ইন্দ্র।
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়ে ইন্দ্র। উঠেই ঘরের ডেস্কটপে লগ ইন করে চেক করে দেখে নেয়, রিমি মেসেজ গুলো দেখেছে কি না? লগইন করতেই চোখে পড়ে রিমির মেসেজ, “হ্যাঁ……… হ্যাঁ, বউ কে নিয়ে এসো বাড়িতে, আমাকে মনে রাখার কোনও দরকার নেই। ওকে নিয়েই ব্যাস্ত থাকো, ওকেই আদর করো, আমি কেও হই না তোমার, বুঝলে? ওর সাথেই রাত্রে এক বিছানায় শুয়ে থাকো। আমি তো শুধু মাত্র রক্ষিতা তোমার। আমাকে আর মেসেজ করার কোনও দরকার নেই। থাকো তুমি তোমার বউয়ের সাথে। আর একটা কথা আমাকেও ফোন করবে না তুমি”। রিমির লেখা গুলো পড়ে ইন্দ্র বুঝতে পারে, সুমিত্রা আসবে শুনে রেগে মেগে এই কথা গুলো লিখেছে রিমি। রিমির এই কপট রাগ দেখে একটু খুশিই হয় ইন্দ্র। ভালো লেগে যায়। মেয়েলী হিংসে, নিজের ভালবাসা ভাগ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকেই হয় এই ব্যাপারটা। ইন্দ্র বুঝতে পারে। ভালো লাগে, তাকে নিয়েও কেও হিংসে করে তাহলে।
সকাল্ সকাল কার নিয়ে বেড়িয়ে পড়ে ইন্দ্র বোকারোর উদ্দেশ্যে। মনের মধ্যে একরাশ দুশ্চিন্তা, সুমিত্রা যতদিন ধানবাদে ছিল না, বেশ নিশ্চিন্তে ছিল সে। রিমির সাথে আলাপ হওয়ার পর থেকে দিনগুলো যেন হাওয়ায় কাটছিল, কখন রাত হচ্ছে, কখন দিন হচ্ছে, টের পাওয়াই মুশকিল হয়ে যাচ্ছিল। নীল আকাশে সাদা তুলোর মেঘের মতন মনটা হয়ে গেছিলো। এতদিনের দুঃখ, একাকী একঘেয়ে জীবন যেন রিমি ঝড়ে উড়ে গেছিলো। সমস্ত কিছু ভুলতে বসেছিল সে। শুধু একটা ফোন কল তাকে আবার পূরানো জীবনে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। দেখা যাক ……… সুমিত্রা কি বলছে? ভালো কিছু অবশ্যই আশা করে না সে সুমিত্রার কাছের থেকে। পরিস্থিতি যেন হাতের বাইরে না চলে যায়, সেই জন্য বেশিরভাগ সময়ে নিজের সাথেই আপস করে নেয় ইন্দ্র। চুপ করে থাকে অধিকাংশ সময়ে। যাতে তর্ক করতে না হয়। সুমিত্রার সাথে তর্ক টা ভীষণ অপছন্দ করে ইন্দ্র। কেননা সেই সময় সুমিত্রার মুখের ভাষার ওপর তার কোনোরকম নিয়ন্ত্রন থাকে না। যা খুশি বলতে আরম্ভ করে। সুমিত্রার রাগ টা এমন লেবেলে চলে যায়, সেই সময় নিজে কি করছে না করছে, কোনও জ্ঞ্যান ই থাকে না সুমিত্রার। হাতে যদি চাকু, ছুরি কিছু থাকে, সে খুন ও করে দিতে পারে বলে মনে হয় ইন্দ্রর।
কলোনির ভেতরে সুমিত্রা দের বাড়ির সামনে দাড়াতেই দেখে বুম্বা গেটের ভেতরে বিশাল বাগানের মধ্যে একটা বল নিয়ে খেলছে। ইন্দ্রর কার টা তখনও দেখতে পায়নি বুম্বা, খেলাতে এতই মত্ত ছিল সে। ব্যাপারটা দেখেই সুযোগ নেয় ইন্দ্র। আসতে করে কার টা দাড় করিয়ে, কোনও শব্দ না করে গাড়ি থেকে নেমে আসে ইন্দ্র। তারপর ধীর পায়ে গেট খুলে, এগিয়ে গিয়ে বুম্বা কে পেছন থেকে ধরে ওপরে তুলে নেয় ইন্দ্র। আচমকা ঘটে যাওয়া ব্যাপারটা তে হতচকিত হয়ে যায় বুম্বা। তারপর বাবার দুই হাতের মাঝে নিজেকে শূন্যে আবিস্কার করে, খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে বুম্বা। ইন্দ্রর চুলের মুটি দুই হাতে টেনে ধরে আদো আদো গলায় ঠোঁট ফুলিয়ে বলে ওঠে, “তুমি কোথায় গেছিলে বাপি? আমাকে নিতে আসনি কেন তুমি? আমার এখানে একটুও ভালো লাগছে না। থাম্মা নেই এখানে। মাম্মাম শুধু বকে আমাকে। আমি আল এখানে থাকবো না। আমি আমার বালি যাব”।
তোমাকে খুঁজে বেড়াই