01-02-2021, 03:28 PM
(This post was last modified: 01-02-2021, 03:30 PM by bourses. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
- ২ -
বর্গী এলো দেশে
‘আমি চাই আজ সূর্যাস্তের আগে রাজা দর্পনারায়ণকে খবর করা হোক... তাঁকে বলো, আমি ওনাকে সসন্মানে আমার দরবারে আসতে অনুরোধ করেছি...’ চিন্তিত বাংলার সুবেদার মির্জা আবু তালিব তার সহচরকে নির্দেশ দেন... ‘এই সমস্যার সমাধানে আজ আমার দর্পনারায়ণের একান্ত প্রয়োজন, সেটা তাঁকে জানাতে ভুলো না... তিনি যদি আসেন, তাহলে আমি তাঁর কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকবো... তাঁর মত একজন পরাক্রমী যোদ্ধা ও রাজা আজ আমার পাশে না থাকলে আমি কিছুতেই এই নারকীয় সমস্যা থেকে মুক্ত হবো না...’
মোঘল সম্রাট শা’জাহান, মির্জা আবু তালিবের পরাক্রম আর যুদ্ধে পারদর্শিতা দেখে বাংলার সুবেদার এবং পরবর্তি কালে বাংলার নবাব নিয়োজিত করেন... শায়েস্তা খাঁ নামে পরিচিত হন মির্জা আবু তালিব তখন থেকে... তার সময়ে বাংলার মানুষের জন্য অনেক কীর্তি স্থাপন করেন... কিন্তু সবকিছু ঠিক থাকলেও, একটা বিষয়ে তার মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়... মগ... আরাকান দেশ থেকে আগত দস্যুদল...
বাংলায় মগেদের আক্রমণে দিশেহারা হয়ে ওঠে তখনকার সাধারণ মানুষ... লুঠ, খুন, জখম, ;., যেন একটা নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা সেই সময়কার বাংলার বুকে... মেহেন্দীগঞ্জ, বাউফল, গলাচিপা, হিজলা, মুলাদী... এই রকম কত শত গ্রাম আর লোকালয়ে হাজার হাজার বাড়ী জ্বলতে থাকে মগেদের আক্রমণে, বর্বরতায়, তার কোন ইয়ত্তা নেই... মেং খামাং হয়ে ওঠে একটা ত্রাশের নাম লোকের মনে... মোঘল সাম্রাজ্যের সাথে শত্রুতার কারণে পর্তুগীজ জলদস্যুদের সাথে হাত মিলিয়ে এই আরাকান মগেরা তখন বাংলায় একটা নৈরাজ্যের বাতাবরণ সৃষ্টি করে তুলেছে... লুন্ঠন, অপহরণ আর নারীদের ওপরে অকথ্য অত্যাচার যেন কোন ব্যাপারই নয় সেই সময়... ওদের এই অরাজকতার সৃষ্টিকে বোঝাবার কারণে একটা বিশেষ কথাই চালু হয়ে গেলো, ‘মগের মুলুক’, অর্থাৎ যা খুশি তাই করার দেশ...
কিন্তু এই নৈরাজ্য মেনে নিতে পারেন না শায়েস্তা খাঁ... এর বিহিত করতে ডাক দেন রাজা দর্পনারায়ণকে... সেই সময়ের বারো ভুঁয়ার একজন এই দর্পনারায়ণ চৌধুরী... তাঁর এক ডাকে প্রায় বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খায়... যেমন প্রচন্ড পরাক্রমী, তেমনই এক শক্তিধর যোদ্ধাও বটে... দুই হাতে সমান দক্ষতায় চালাতে পারেন তরবারী... বন্দুকের নিশানা অভ্যর্থ তাঁর... এহেন রাজাকে ডাকতে দুবার ভাবতে সময় নেন নি শায়েস্তা খাঁ... চরের মাধ্যমে খবর পাঠিয়ে ডাকিয়ে আনেন...
‘আসুন, আসুন রাজণ্য ... আপনাকে স্বাগত জানাই...’ দরবারে সাদর আমন্ত্রন জানান রাজা দর্পনারায়ণকে শায়েস্তা খাঁ... হাত তুলে ইশারা করেন অতিথি সেবার জন্য...
নবাবি আতিথেয়তায় নরম চেয়ারে উপবেশন করেন রাজা দর্পনারায়ণ... বাঁদির বাড়িয়ে দেওয়া রেকাব থেকে পেস্তা বাটা সুস্বাদু শরবতের পেয়ালা তুলে নিতে নিতে ভুরু কুঁচকে তাকান শায়েস্তা খাঁয়ের পানে... ‘হটাৎ এমন কি কারণ ঘটল যে এই ভাবে তলব করতে হলো আমায়? প্রায় একেবারে উড়িয়ে নিয়ে আসা যাকে বলে...’
মুখটা গম্ভীর হয়ে ওঠে শায়েস্তা খাঁর... খানিক ভেবে ধীর স্বরে বলেন রাজাকে, ‘আপনি মগদের অত্যাচারের কথা নিশ্চয়ই শুনেছেন... এটা এখন একটা মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশ চালাতে গিয়ে... আমি হয়তো মোঘল বাদশাহের সাহায্য নিতেই পারতাম, কিন্তু সেটা আমার অভিপ্রায় নয়, কারন এই বাংলার জল ও জংগল, বাদশাহী ফৌজ এর আয়ত্তে নয় ... আমি চাই আপনি আমাকে সাহায্য করুন এই মগদের মোকাবিলার জন্য... আপনি এ বাংলাকে হাতের রেখার মতন চেনেন... এখনই যদি এদের না ঠেকানো যায়, তাহলে এরা পর্তুগীজ জলদস্যুদের সাথে হাত মিলিয়ে বাংলার আরো বড় কোন ক্ষতি সাধন করে দেবে... আমার কাছে খবর আছে তাদের বিভীষিকায় মানুষ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে... মঠবেড়িয়া, পাথরঘাটা, ভাণ্ডারিয়া, আমতলী, বরগুনা, গলাচিপা, বামনা, রাজাপুর, বেতাগী... আরো, আরো কত যে এলাকার নাম আছে, সেই সব অঞ্চলে এখন আর মনুষ্য বসতিই মুছে গিয়েছে...’ বলতে বলতে থামেন শায়েস্তা খাঁ... উত্তেজনায় চোখ মুখ লাল হয়ে ওঠে তাঁর...
শায়েস্তা খাঁর কথা মাঝে একটা বর্ণও উচ্চারণ করেন না রাজা দর্পনারায়ণ... চেয়ারের ওপরে পীঠ সোজা করে বসে চুপ করে শুনতে থাকেন তিনি...
আবার বলতে শুরু করেন শায়েস্তা খাঁ... ‘আপনি জানেন কিনা জানি না, ভোলা, মেহেন্দীগঞ্জ, বাউফল, গলাচিপা, হিজলা, মুলাদী ইত্যাদি স্থানে হাজার হাজার ঘরবাড়ি পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছে এই মগেরা... শত শত লোককে হত্যা করেছে নির্বিচারে... আর শুধু তাই নয়, এই মগ জলদস্যুরা মগর গ্রামকে কব্জা করে সেখানে তাদের বসতি স্থাপন করেছে... আধা মাইল ব্যাপী একটি দূর্গও নির্মাণ করেছে তারা...’
‘তা আপনি আমায় কি করতে বলেন?’ রেকাবের ওপরে খালি হয়ে যাওয়া শরবতের গ্লাসটা নামিয়ে ধীর কন্ঠে প্রশ্ন করেন রাজা দর্পনারায়ণ... বাঁদীর এগিয়ে দেওয়া নরম কাপড় হাতে তুলে নিয়ে মুখ মুছতে থাকেন শায়েস্তা খাঁর দিকে তাকিয়ে...
‘আপনার সাহায্য... আমি চাই আপনি আমার পাশে থাকুন এই মগদের, এই বাংলার বুক থেকে চিরতরে মুছে দেবার জন্য... আপনি ছাড়া আর কারুকে সেই ভাবে ভরসা করা সম্ভব নয়... একমাত্র আপনার সাহসিকতা আর বীরত্বই পারে আমাকে এই জঘন্য দস্যুদের থেকে বাংলাকে মুক্ত করতে...’ সারা বাংলার একছত্র সুবেদার হয়েও নবাব শায়েস্তা খাঁ বিনীত স্বরে অনুরোধ জানান রাজা দর্পনারায়ণকে...
‘বেশ... তাই হবে...আছি আমি আপনার সাথে, এই বাংলা আমার ও মা, মা এর এহেন নিগ্রহ আমি ও মানতে পারছিলাম না। আপনি যদি মনে করেন আমি আপনার পাশে থাকলে আপনি বাংলার মানুষের এই বিভীষিকা থেকে দূর করতে পারবেন... তবে সেটাই হবে আমাদের মায়ের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধার্ঘ ... আমি আমার সর্ব শক্তি দিয়ে আপনার পাশে থেকে এই মগদের উচিত শিক্ষা দিতে প্রস্তুত...’ দীপ্ত কন্ঠে বলে ওঠে রাজা দর্পনারায়ণ... সবল হাত বাড়িয়ে হাত মেলান শায়েস্তা খাঁর সাথে...
শায়েস্তা খাঁর চোখে মুখে ফুটে ওঠে নিশ্চিন্ততার প্রকাশ... স্মিত হেসে দর্পনারায়ণকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কি বিশ্রাম নেবেন এখন?’
দর্পনারায়ন শায়েস্তা খাঁয়ের দিকে একবার চোখ তুলে তাকিয়ে নজর ঘোরান পাশে দাঁড়ানো বাঁদির পানে... স্বল্প প্রায় স্বচ্ছ পোষাকে দাঁড়িয়ে থাকা বাঁদির শরিরের প্রতিটা চড়াই উৎরাই যেন কুয়াশা ঘেরা পর্বতমালার মত তাঁর সামনে মেলে রয়েছে... পাতলা বুকের ওপরের আঁচলের আড়ালে স্তনবৃন্তের হাতছানি... পরিধেয় ধূতির আড়ালে চঞ্চল হয়ে ওঠে বিশাল পুরুষ্ণাঙ্গটি... ফের মুখ ফিরিয়ে তাকান শায়েস্তা খাঁয়ের পানে... ‘হু... যদি অনুমতি করেন, তবে...’
দর্পনারায়ণের মুখের কথা শেষ হয় না, ওনার মনের অভিসন্ধি বুঝে মৃদু হাসেন শায়েস্তা খাঁ... ‘নিশ্চয়! আপনার যখন চোখে লেগেছে... তখন না হয় আজ রাতের জন্য এই আপনার সেবা করবে...’ বলেই দুবার হাত তালি দিয়ে হাঁক পাড়েন... ‘এই কে আছিস? রাজাবাবুর জন্য অতিথিশালা খুলে দে... আর এই বাঁদিটিকে ভালো করে স্নান করিয়ে সুন্দর সাজে সুজজ্জিত করে পাঠিয়ে দে রাজাবাবুর শয়ণ কক্ষে... আজ রাতে এই বাঁদির সেবা গ্রহণ করবেন ইনি...’
‘আমার একটা কথা ছিল...’ নরম গলায় বলে ওঠে রাজা দর্পনারায়ণ...
‘নিশ্চয়ই... আজ্ঞা করুন শুধু...’ তাড়াতাড়ি উত্তর দেন শায়েস্তা খাঁ...
‘মানে, আমি চাই না বাঁদিটিকে স্নান করিয়ে আমার কক্ষে পাঠানো হোক... আমি চাই ঠিক এখন যেমনটি সে রয়েছে, এই ভাবেই তাকে আমার কাছে পেতে...’ বলে ওঠেন দর্পনারায়ণ...
‘কিন্তু...!’ একটু কুন্ঠিত বোধ করেন শায়েস্তা খাঁ... ‘সারাদিনের ঘাম যে বাঁদিটির সারা শরীরে বর্তমান...’
‘সেটাই তো আমার অভিপ্রেয়... এই ঘামে ভেজা শরিরের বুনো গন্ধে মাতোয়ারা হয়ে যেতে চাই আমি...’ বলতে বলতে তির্যক হাসেন দর্পনারায়ণ... ফের আর একবার ঘাড় ফিরিয়ে বাঁদিটির পা থেকে মাথা অবধি যেন চোখ দিয়ে লেহন করে নেন... নাতিদীর্ঘ শরীরের বাঁদিটির স্তনবিন্যাস যারপরনায় লোভনীয়... সেই সাথে সামনে ফিরে থাকলেও বুঝতে অসুবিধা হয়না কাম পটিয়সু রাজাসাহেবের যে বাঁদিটির পশ্চাৎদেশও স্তনজোড়ার মতই বেশ স্ফিত ও ভারী... পাতলা কাপড়ের আড়াল থেকে সুস্পষ্ট আভাস সুগোল মাংসল থাইয়ের সংযোগ স্থল ঘন লোমে আচ্ছাদিত যোনিদেশের... নবাব সামনে রয়েছে বলে তাই... নিজের রাজসভা হলে এতক্ষনে কখন বাঁদিকে কোলে বসিয়ে ভক্ষণ করতে শুরু করে দিতেন তার ঠিক নেই... অতি কষ্টে নিজেকে সংযত রাখার চেষ্টা করেন রাজাসাহেব... তারপর নিজের ধূতিটাকে ঠিক করে নিয়ে উঠে দাড়ান বিশ্রাম কক্ষে যাবার অভিলাশায়... ওনার পেছন পেছন বাঁদি মুখ নিচু করে পদানুসরণ করে নবাবের আদেশে রাজাবাবুর সেবা করার জন্য...
.
.
.
এরপর ইতিহাস... রাজা দর্পনারায়ণের পরাক্রমে বাংলার মাটি থেকে পর্তুগিজ জলদস্যু আর মগদের ক্ষিপ্রকারিতায় পলায়ণ, যেটা স্থানীয়ভাবে এই ঘটনা মগ-ধাওনি নামে খ্যাত হয়। সেই সময় কথিত আছে যে মগরা ১,২২৩টি কামান ফেলে যায়, কিন্তু অধিকাংশ ধনসম্পদ ঘড়ায় করে মাটিতে পুঁতে রেখে যায়, পরবর্তিকালে, মগ-পুরোহিতরা সাঙ্কেতিক মানচিত্রের সাহায্যে গোপনে এইসব স্থানে সে ঘড়া উঠিয়ে নিয়ে যেতেন। রাজা দর্পনারায়ণের সাহস আর পরাক্রমে মগের মুলুকের অবসান ঘটে।
ক্রমশ…