Thread Rating:
  • 52 Vote(s) - 3.35 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery কোন কূলে যে ভীড়লো তরী/কামদেব
[৯৪]



ছোটো ছিল যখন কোমরে বেধে ঘুরতো মনে হতো কবে বড় হবে,হাটতে শিখবে।এখন হাটতে শিখে হয়েছে আরেক বিপদ।মুহূর্তকাল চোখের আড়াল করা যায়না।  সমস্যা একটা যায় আরেকটা সেই জায়গা নেয়।জানলা দিয়ে কেমন বাইরে তাকিয়ে আছে একেবারে শান্ত।উফস যা করল আজ তার দম বন্ধ হবার উপক্রম।কিছু একটা হয়ে গেলে অঙ্গনকে মুখ দেখাতে পারতো না। সন্তান নিয়েছে যশবিন্দার নিজের গরজে অঙ্গনের দিক থেকে কোনো চাপ ছিল না।নিজের ইচ্ছে কারও উপর চাপিয়ে দেওয়ার স্বভাব নয় ওর। দিল্লীতে ছিল বিয়ে হয়নি একেবারে স্বাধীন যখন যা ইচ্ছে করতো,তাকে এটা না ওটা না কিছু বলার মতো কেউ ছিলনা।এখনো নেই কিন্তু অদৃশ্য বাধন তাকে বেধেছে  আষ্টেপৃষ্ঠে। মানুষ যখন কোনো কিছু কামনা করে  সবদিক ভেবে দেখেনা।যখন সেটা হাসিল হয় বুঝতে পারে না চাইতে তার সঙ্গে আরও কিছু এসে গেছে।সন্তান জন্ম দেবার চেয়ে পালন করা আরো কঠিণ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে যশ। অঙ্গন বলে সব কিছুর সঙ্গে এ্যাডজাস্ট করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।নাথিং ইজ আনন্যাচারাল এভ্রিথিং ইজ ন্যাচারাল।ড সোম হয়তো এই শহরে অনেক আছে কিন্তু ড সোম বলতে সবাই অঙ্গনকেই চেনে। রিয়েলি হি ইজ আ গ্রেট ডক।যখন যে কাজ করে বাহ্য জগৎ ভুলে সেই কাজে ডুবে যায়।চোখমুখের চেহারা বদলে যায় তখন।অনেক বিদেশ ফেরত সার্জানও ওকে ঈর্ষার চোখে দেখে।অঙ্গনের একটা গুণ অতীতকে ভুলে যায়নি।অনেককে দেখেছে পুরানোকে ভুলতেই তারা স্বস্তি বোধ করে।দিলীপের কাছেই শুনেছে এক সময় গুণ্ডামী করে বেড়াতো।অঙ্গন তবু ওর সঙ্গে নিঃসঙ্কোচে মিশতো। দিলীপও ওকে খুব ভালবাসে।দিলীপ ছিল বলেই বাড়ীটা সংস্কার সম্ভব হয়েছে। কত বড় বড় লোকের ফোন আসে তাকেই ধরতে হয়।বলতে হয় লেকভিউতে যোগাযোগ করুন।অথচ সকালে যে আউরতটা এসেছিল দিলীপ বলছিল এই পাড়ায় এক সময় থাকতো।ঐ আউরতের জন্য অঙ্গনকে তাড়াতাড়ি বেরোতে হল।অঙ্গন তার হাবি ভেবে তৃপ্তির নিঃশ্বাস নিল।মুন্নার দিকে তাকিয়ে মনে মনে ভাবে শালা অঙ্গন কি বেটা বড় হয়ে কেমন হবে কে জানে?
বাড়ীর নীচে গাড়ী থামিয়ে গাড়ী থেকে নেমে গ্যারাজের দরজা খুলে আবার গাড়ীতে উঠে গাড়ী গ্যারাজে ঢূকিয়ে দিল।
বেল বাজাতে ইকবালের বিবি নাজমা দরজা খুলে দিয়ে বলল,মিতাদিদি একটু বাড়ী গেছে এখুনি চলে আসবে।
মৌসী নেই বিরক্ত হল যশ। মুন্নার হাত ধরে সিড়ি বেয়ে উপরে ঊঠে নিজে চেঞ্জ করল মুন্নাকেও পোশাক বদলে দিয়ে রান্না ঘরে গিয়ে মুন্নার টিফিন করতে থাকে।ফ্রিজ খুলে একটা মুরগীর ঠ্যাং বের করে নুন হলুদ মাখিয়ে ভিনিগারে ভিজিয়ে রাখল।মুন্না এখন চিবিয়ে খেতে পারে।টিফিন করতে করতে মৌসী এসে গেল।
--সরেন মেমসাব আমি করতিছি।
যশ মুরগীর ঠ্যংটা মাইক্রোভেনে শেকে নিয়ে বলল,মৌসী তুমি টিফিন শেষ হলে মুন্নাকে খাইয়ে দিও তুমিও খেয়ে নিও।আমার জন্য কিছু করতে হবেনা।
একটা গেলাসে একটু পানীয় আর স্যাকা মুরগীর ঠ্যাং নিয়ে ব্যালকনিতে একটা চেয়ার নিয়ে বসল।ব্যালকনি থেকে সারা পাড়াটা দেখা যায়।শিপ করতে করতে উদাস চোখে দূরের দিকে তাকিয়ে থাকে।অঙ্গনের কথা মনে পড়ল।এখন কি করছে কে জানে হয়তো এখন গাড়ীতে বাড়ীর পথে। পর মুহূর্তে মনে হল অঙ্গনের কি তাকে মনে পড়ে যখন বাড়ীর বাইরে থাকে।
মৌসী চা নিয়ে এল।যশ চায়ের কাপ হাতে নিয়ে জিজ্ঞেস করে,মুন্না কি করছে?
--ঘুমিয়ে পড়েছে।
--একী না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ল।
--গল্প শুনতি শুনতি ঘুমিয়ে পড়ল।ডাকবো?
--না থাক। আচ্ছা তুমি যাও।
মৌসী চলে যেতে ভাবতে থাকে যশ। জেগে গেলে বিরক্ত করবে ভেবে সেকি দায় এড়াবার জন্য মুন্নাকে জাগাতে নিষেধ করল।অঙ্গন ক্লান্ত হয়ে বাড়ী ফিরলে মুন্না জ্বালাতন করলেও বিরক্ত হয়না।মৌসীর রান্না হয়ে গেছে মনে হয়।মিথ্যে ওকে আটকে রাখার কি দরকার?গলা তুলে বলল,মৌসী তোমার হয়ে গেলে তুমি যাও।কাল সকাল সকাল এসো।
--মুন্না একা রয়েছে।আমি আসতেছি?
মৌসী চলে গেল।মৌসী বেরিয়ে যেতে নাজমা দরজা বন্ধ করে দিল।নীচে থাকে নাজমার এই কাজ।
যশ বিন্দার এসে ঘরে উকি দিয়ে দেখল মুন্না ঘুমিয়ে আছে।খেতে দেবার সময় ডাকলেই হবে ভেবে ডাকেনা।গাড়ির শব্দ শুনে ব্যালকনিতে গিয়ে ঝুকে দেখল অঙ্গন ফিরেছে।ফিরে এসে দরজায় দাঁড়িয়ে শুনলো সিড়িতে পায়ের শব্দ।বেল বাজাবার আগেই দরজা খুলে দিল।ঘরে নিয়ে অঙ্গনকে চেঞ্জ করিয়ে সোফায় এসে বসল।পল্টু জিজ্ঞেস করে দস্যিটা কোথায়?
অঙ্গনের গা-ঘেষে যশ বলল,কেন আমাকে নজরে পড়ছে না?
পল্টু হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে হাসল।
--সকালে গেছিলে কেমন দেখলে?অঙ্গনের বুকে এলিয়ে পড়ে জিজ্ঞেস করে।
--ভাল নয়।তবে একটা নতুন অভিজ্ঞতা হল।
যশ মুখ উচু করে অঙ্গনের মুখের দিকে তাকায়।
এই রমেন কাকুর স্ত্রী ক্যান্সারে ভুগছিল।ওর এক ছেলে ছিল হীরু।রেল লাইনে গলা দিয়ে আত্মহত্যা করেছিল।
--কেন?
--মণিকা আন্টির পিছনে লেগে ছিল আণ্টী দূরছাই করতো তবু নাছোড়বান্দার মতো লেগেছিল।একবার পিকনিকে গিয়ে সেবার আমি যাইনি শুনেছি ডায়মণ্ড হারবারে একটা গির্জার কাছে মণিকাআন্টির সঙ্গে কি করছিল।সবাই ধরে রমেনকাকুকে কান ধরিয়েছিল।সেই লজ্জায় হীরু আত্মহত্যা করে।
--ভেরি স্যাড।
--কিছুদিন পরেই আণ্টি মারা গেল।মণিকাআণ্টির এক মেয়ে লায়লি হঠাৎ নিরুদ্দেশ হয়।কিছুকাল পর ফিরে আসে।ছেলেটির কাছে প্রতারিত হয়ে মেয়েটী নিজেই নিজের গায়ে আগুণ দিয়েছিল।এই নিয়ে থানা পুলিশ,রমেণকাকু সর্বক্ষন মণিকাআণ্টির পাশে পাশে ছিল।তাদের মধ্যে হৃদ্যতা তৈরী হয়।মাঝে মাঝে রমেনকাকুর বাসা থেকে মণিকাআণ্টিকে বেরোতে দেখে পাড়ার লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে।ওরা বাড়ী বিক্রী করে চলে যায় অন্যত্র।এই মোটামুটি অতীত।আজ দেখলাম বিয়ে করেনি কিন্তু দম্পতির মত জীবন যাপন করছে।যারা জানেনা বুঝতেই পারবে না তারা বিবাহিত নয়।একজন আরেকজনকে চোখে হারায়।অথচ একসময় ছিল আদায় কাচকলা সম্পর্ক। মানুষ কেমন বদলে যায় না দেখলে বিশ্বাসই করতাম না।
--কি হয়েছে?
--বয়স হয়েছে।শরীরের কলকব্জা একেবারে দুর্বল।চিকিৎসা নেবার মত সামর্থ্য নেই।আণ্টির পরিচর্যায় এখনো টিকে আছে।
হঠাৎ মুন্না এসে যশ ঠেলে দিয়ে মাঝখানে বসে পল্টূকে জড়িয়ে ধরে বলল,আমার বাপি।
পল্টু হাসতে থাকে।যশের চোখমুখ লাল।অঙ্গনের বুকে মাথা দিয়ে একটা আবেশ এসেছিল   সোফা হতে উঠে দাড়ায়।পল্টু বলল,কি হল?
--হিজ রুডনেস ইজ ইনক্রজিং ডে বাই ডে এ্যাণ্ড ইউ আর ইন্ডালজিং হিম।
পল্টু অবাক হয় বিল্লুর আচরণে বলে,ওকি অত বোঝে?
যশবিন্দার যেতে উদ্যত হলে পল্টু বলল,কোথায় যাচ্ছো?
--রাত হয়েছে ডিনার দিচ্ছি।
যশ চলে গেল।পল্টু ভাবে বিল্লুটা এক এক সময় এমন ছেলেমানুষী করে।ছেলে বলল,তুমি মমের সঙ্গে ওরকম করলে কেন?
মুন্না খিল খিল হাসে।যেন কোনো মজার ব্যাপার।
যশ গুরু গম্ভীর টেবিলে খাবার সাজিয়ে বলল,আসবে তো?
মুন্নাকে কোলে নিয়ে টেবিলে এসে বসল।বিল্লুর মুখ দেখে কথা বলতে ভরসা হয়না।কিন্তু বিল্লুকে এরকম দেখতে ভাল লাগেনা।
পল্টু মুন্নাকে বলল,মমকে স্যরি বলো।
--এনাফ এতরাতে এসব ন্যাকামী ভালো লাগেনা।যশ বিরক্ত হয়ে বলল।
কেউ কারো সঙ্গে কথা বলেনা নীরবে খেতে থাকে।ছেলের সামনে সিন ক্রিয়েট হোক ইচ্ছে নয়,পল্টু আর কথা বাড়ায় না।চুপচাপ খেয়ে ছেলের মুখ ধুইয়ে বিছানায় শুইয়ে দিল।
রাত বাড়তে থাকে ঘুমিয়ে পড়েছে সারা পাড়া।মুন্নাও ঘুমিয়ে পড়ে একসময়।পল্টূ বেরিয়ে দেখল একটা গেলাসে পানীয় ঢালা বিল্লু চুপচাপ শিপ করছে।পাশে বসে গেলাসটা তুলে চুমুক দিয়ে বলল,বিল্লু আর ইউ ক্রেজি?
যশ কোনো কথা বলেনা।
--হু ইজ অয়ন?
একবার ঘাড় ঘুরিয়ে অঙ্গনকে দেখে মুখ ঘুরিয়ে নিল।
--হি ইজ ইয়োর সান।ওকী তোমার প্রতিদন্দ্বী?
--আয় এ্যাম ক্রেজি,ওকে?যশ ভেংচিয়ে বলল।
পল্টু নিজের মনে বলতে থাকে,সারাদিন লেকভিউতে কেটে যায়।সূর্য অস্ত গেলে অস্থির লাগে মন।কখন বাড়ী ফিরে এই মুখটা দেখব।এসে যদি এমন মুখ দেখতে হয় কার ভালো লাগে।
যশ উঠে দাঁড়িয়ে কট্মট করে কয়েক পলক দেখে বলল,ঝুটি কাহিকা।
পিছন থেকে পল্টূ বলল,আমি অসত্য বলিনা।  
[+] 9 users Like kumdev's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: কোন কূলে যে ভীড়লো তরী/কামদেব - by kumdev - 15-01-2021, 05:50 PM



Users browsing this thread: 5 Guest(s)