14-01-2021, 12:14 AM
আজকাল রিমি তার স্বামীর উপস্থিতিতেই মাঝে মাঝে ফোন করে। দু একবার নাকি বিমান বাবু জিজ্ঞেস করেছিল রিমিকে, কার সাথে এত কথা বলে সে এত। রিমি তাকে নাকি বেমালুম মিথ্যা বলে দিয়েছে, ইন্দ্র হচ্ছে তার এক মামাতো দাদার বন্ধু। ধানবাদে থাকে। তারপর থেকে বিমান বাবু নাকি আর তেমন কিছু জিজ্ঞেস করেননা রিমিকে। বিমান বাবুও ভেবে নেন যে কারও সাথে কথা বলে রিমি যদি একটু খুশি খুশি থাকে সারাদিন, তাহলে অসুবিধা টা কোথায়? আর দাদার বন্ধু তো। তাই বেশ খুশি হয়ে বিমান বাবু রিমিকে বলেছিলেন, একবার ঘরে ডাক তাকে, আলাপ করা যাক। বেচারি সারাটা দিন খুশি খুশি থাকে। গুন গুন করে গান গায়। বিমান বাবুর বাড়ির সেই গুমোট আবহাওয়া টা ধীরে ধীরে কাটতে থাকে। ব্যাপারটা বিমান বাবুর নজর এড়ায় না। তার রোজ রাত্রে মদ খাওয়া টা নিয়ে রিমি মাঝে মাঝেই নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করতো। অনেক বলার পরেও যখন বিমান বাবু সেটা আর যখন ব্যাপারটা ছাড়তে পারেনি তখন আর তার স্বামীর এই মদ্যপান কে মেনে নেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না রিমির। এখন আর বিমান বাবুর মুখের মদের গন্ধটা সহ্য করতে পারেনা রিমি। রাত্রে শোয়ার সময়, মাঝে মাঝেই রিমি বিরক্ত হয়ে পাশের রুমে মেয়ের কাছে শুতে চলে যায়। আজকাল খুব মিষ্টি করে কথা বলে রিমি, তার স্বামীর সাথে। কিছুদিন আগেও এমন তো ছিল না। বিমান বাবু অবাক দৃষ্টিতে মাঝে মাঝে রিমির দিকে তাকায়।
আজকাল বেশ সাজগোজের ওপরেও নজর পড়েছে তার। নানা রকম সুন্দর সুন্দর পশাক পড়া রিমির খুব শখ ছিল। কয়েক মাস আগেও অব্দি সে নিজের প্রতি এত যত্নশীল ছিল না। কিন্তু আজকাল ঘরেও ভালো পোশাক পড়ে রিমি, সুন্দর করে চুল বাঁধে। এইতো দুদিন আগে রিমি ভীষণ মিষ্টি করে বিমান বাবুর থেকে কিছু টাকা চেয়েছিল, বলেছিল, “এই শুনছো, বহুদিন হয়ে গেছে, আমি পার্লার যাই নি। খুব যেতে ইচ্ছে করছে। কিছু টাকা লাগবে আমার। পারবে দিতে”? বিমান বাবু একটু অবাক হয়ে রিমির দিকে তাকিয়ে থেকে বলেন, “ হুমমম……… তা যাওয়ার ইচ্ছে হলে যাও। সত্যি তো শেষ কবে তুমি পার্লার গেছিলে, আমার মনে নেই। যাওয়ার যখন ইচ্ছে আছে, নিশ্চয় যাবে”, বলে টাকার ব্যাগ বের করে রিমির হাতে বেশ কিছু টাকা দিয়ে দিয়েছিলেন।
রিমি যখন পার্লার থেকে এলো, অবাক দৃষ্টিতে অনেকক্ষণ তার দিকে তাকিয়ে ছিলেন বিমান বাবু। যৌবন যেন ঠিকরে বেরোচ্ছে রিমির থেকে। বড় বড় চোখে সুন্দর করে আই লাইনার লাগানো, সিল্কের মতন চুল খুব যত্ন সহকারে যেন কেও কেটে দিয়েছে, ভালবাসার রেশমি সুতোর মতন বেশ কিছুটা চুল কপালের ওপর এসে পড়ে, রিমি কে যেন অসুবিধায় ফেলে দিচ্ছে, কথা বলতে বলতে হাত দিয়ে মাঝে মাঝেই সেই অবিন্যাস্ত চুল গুলোকে শাসন করছে রিমি। ম্যানি কিওর করার পর রিমির হাত গুলো যেন আরও বেশী চক চক করছে। চাঁপা কলির মতন সুন্দর আঙ্গুলে দুটো পাথর বসান সোনার রিং, আইভ্রু কে সুন্দর ভাবে সেট করে তাকে তার পরিসীমা বলে দেওয়া হয়েছে। সারা মুখমণ্ডল থেকে যেন একটা খুশি খুশি ভাব উপচে পড়ছে। ভারী মিষ্টি লাগছে রিমিকে। খুব ইচ্ছে করছে আজ ওকে একবার আদর করতে……… ভাবনা টা মাথায় আসতেই লজ্জায় কুঁকড়ে যান বিমান বাবু……… সেই সাধ্য যে তার নেই। টিভি টা চালিয়ে খবর দেখতে থাকেন। নিজের মনকে মানিয়ে নিতে চেষ্টা করেন তিনি। এটাই যে ভবিতব্য তার। কিছুক্ষণ টিভি তে খবর দেখার পর মেয়ে কে পড়াতে বসে যান বিমান বাবু।
আজ সকাল থেকে আকাশ যেন মুখ গোমড়া করে আছে। গতরাতের হাল্কা বৃষ্টি শীত টাকে আরও বাড়িয়ে দিল। গতরাত্রেই ঠিক করে ফেলেছিল ইন্দ্র, গাড়িটার একটা সার্ভিসিং করাতে হবে। বাবা মাঝে মাঝেই বলেন, ইন্দ্র, সুমিত্রাকে একবার ফোনে জিজ্ঞেস করে নে বাবু, ওর মা কেমন আছে? বুম্বা কেমন আছে? কিছু দরকার আছে কি না? কিছু দরকার থাকলে পৌঁছে দিয়ে আয়। বাবার কথায় শুধু মাথা নাড়িয়ে সন্মতি জানিয়ে চুপ করে সরে যায় ইন্দ্র। বুম্বার জন্য চিন্তা হয়। মাঝে একবার ফোন করে বুম্বার খোঁজ নিয়েছিল সে। তাতেও সুমিত্রা তাকে কড়া কথা শুনিয়ে দিয়ে বলেছে, আমিও তো মা হই নাকি? আমারও একটা দায়িত্ব আছে। তুমি কি ভেবেছ, বুম্বার কিছু অসুবিধা হলে আমি কি নাকি তেল দিয়ে ঘুমাব”? ইন্দ্র আর কথা না বাড়িয়ে ফোন রেখে দিয়েছিল। গাড়ি টা সার্ভিসিং সেন্টারে দিয়ে ওয়েটিং এরিয়াতে বসে বসে একটা ম্যাগাজিনের পাতা ওলটাচ্ছিল ইন্দ্র, হটাতই সেই সময় তার মোবাইল বেজে ওঠে। ফোনটার দিকে তাকিয়েই বুঝতে অসুবিধা হয় না ফোনটা রিমির বলে, মুহূর্তে ফোন টা তুলে নিয়ে জিজ্ঞেস করে, “কি হল সোনা”? ওপর প্রান্ত থেকে রিমির মিষ্টি কণ্ঠস্বরে বলে ওঠে, “ যা বলছি মন দিয়ে শোনো এবারে, আমার পুচ্ছু……আগামিকাল আমার বর একটু কাজে বেরোবে সকাল সকাল……ফিরতে রাত হয়ে যাবে, আমার মেয়েও তার মাসির বাড়ি গেছে। তুমি কি আসতে পারবে”? কথাটা কানে যেতেই হৃৎপিণ্ডের চলার গতি যেন এক লহমায় দ্বিগুন হয়ে যায় ইন্দ্রর। বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে ইন্দ্র। এই সেই ডাক…… এই সেই সুযোগ, যার জন্য হন্যে হয়ে অপেক্ষা করছিল সে। শরীরের ভেতরের প্রতিটা শিরায় উপশিরায় যেন রক্তের স্রোত তীব্র গতিতে ওঠা নামা করছে। রিমির মুখের কয়েকটা লাইন, তাকে মুহূর্তের মধ্যে সমস্ত পারিপার্শ্বিক জগত কে ভুলিয়ে দেয়। সেই ডাক যে আজকেই আসবে, একবারের জন্যও ভাবতে পারেনি সে। কোনরকমে নিজেকে সামলে, নিজের আবেগ কে সংযত করে উত্তর দেয় ইন্দ্র, “আমি আসছি সোনা তোমার কাছে”, বলে কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে সে। মাঝে প্রায় এক মিনিট দুই তরফেই নিস্তব্ধতা। সেই নিস্তব্ধতা কেটে যায় রিমির কণ্ঠস্বরে, “এসো বাবু……কাল……আমি তোমার জন্য রান্না করে রাখব। আমার হাতেই খেতে হবে কিন্তু। না বলা চলবে না বুঝলে………আমার হাঁদারাম। এবার যা বলছি মন দিয়ে শোনো। প্রথমত ……… তাড়াহুড়ো করে গাড়ি জোরে চালাবে না…… সাবধানে চালাবে। বিধান নগর কলোনির কাছে এসে আমাকে ফোন করবে, না হলে বাড়ি চিনতে তোমার অসুবিধা হতে পারে। আমি এখন আর তোমাকে ফোন করছি না………কিছু কাজ আছে, বাড়ির কাজের লোক ও এখনই চলে আসবে……… রাখলাম আমি”। ফোন টা কেটে যেতেই সম্বিত ফিরে পায় ইন্দ্র। ওয়েটিং এরিয়া থেকে বাইরে বেড়িয়ে একটা সিগারেট ধরায় ইন্দ্র। দু একটা টান মারতেই মাথাটা পরিষ্কার হতে শুরু করে।
আজকাল বেশ সাজগোজের ওপরেও নজর পড়েছে তার। নানা রকম সুন্দর সুন্দর পশাক পড়া রিমির খুব শখ ছিল। কয়েক মাস আগেও অব্দি সে নিজের প্রতি এত যত্নশীল ছিল না। কিন্তু আজকাল ঘরেও ভালো পোশাক পড়ে রিমি, সুন্দর করে চুল বাঁধে। এইতো দুদিন আগে রিমি ভীষণ মিষ্টি করে বিমান বাবুর থেকে কিছু টাকা চেয়েছিল, বলেছিল, “এই শুনছো, বহুদিন হয়ে গেছে, আমি পার্লার যাই নি। খুব যেতে ইচ্ছে করছে। কিছু টাকা লাগবে আমার। পারবে দিতে”? বিমান বাবু একটু অবাক হয়ে রিমির দিকে তাকিয়ে থেকে বলেন, “ হুমমম……… তা যাওয়ার ইচ্ছে হলে যাও। সত্যি তো শেষ কবে তুমি পার্লার গেছিলে, আমার মনে নেই। যাওয়ার যখন ইচ্ছে আছে, নিশ্চয় যাবে”, বলে টাকার ব্যাগ বের করে রিমির হাতে বেশ কিছু টাকা দিয়ে দিয়েছিলেন।
রিমি যখন পার্লার থেকে এলো, অবাক দৃষ্টিতে অনেকক্ষণ তার দিকে তাকিয়ে ছিলেন বিমান বাবু। যৌবন যেন ঠিকরে বেরোচ্ছে রিমির থেকে। বড় বড় চোখে সুন্দর করে আই লাইনার লাগানো, সিল্কের মতন চুল খুব যত্ন সহকারে যেন কেও কেটে দিয়েছে, ভালবাসার রেশমি সুতোর মতন বেশ কিছুটা চুল কপালের ওপর এসে পড়ে, রিমি কে যেন অসুবিধায় ফেলে দিচ্ছে, কথা বলতে বলতে হাত দিয়ে মাঝে মাঝেই সেই অবিন্যাস্ত চুল গুলোকে শাসন করছে রিমি। ম্যানি কিওর করার পর রিমির হাত গুলো যেন আরও বেশী চক চক করছে। চাঁপা কলির মতন সুন্দর আঙ্গুলে দুটো পাথর বসান সোনার রিং, আইভ্রু কে সুন্দর ভাবে সেট করে তাকে তার পরিসীমা বলে দেওয়া হয়েছে। সারা মুখমণ্ডল থেকে যেন একটা খুশি খুশি ভাব উপচে পড়ছে। ভারী মিষ্টি লাগছে রিমিকে। খুব ইচ্ছে করছে আজ ওকে একবার আদর করতে……… ভাবনা টা মাথায় আসতেই লজ্জায় কুঁকড়ে যান বিমান বাবু……… সেই সাধ্য যে তার নেই। টিভি টা চালিয়ে খবর দেখতে থাকেন। নিজের মনকে মানিয়ে নিতে চেষ্টা করেন তিনি। এটাই যে ভবিতব্য তার। কিছুক্ষণ টিভি তে খবর দেখার পর মেয়ে কে পড়াতে বসে যান বিমান বাবু।
আজ সকাল থেকে আকাশ যেন মুখ গোমড়া করে আছে। গতরাতের হাল্কা বৃষ্টি শীত টাকে আরও বাড়িয়ে দিল। গতরাত্রেই ঠিক করে ফেলেছিল ইন্দ্র, গাড়িটার একটা সার্ভিসিং করাতে হবে। বাবা মাঝে মাঝেই বলেন, ইন্দ্র, সুমিত্রাকে একবার ফোনে জিজ্ঞেস করে নে বাবু, ওর মা কেমন আছে? বুম্বা কেমন আছে? কিছু দরকার আছে কি না? কিছু দরকার থাকলে পৌঁছে দিয়ে আয়। বাবার কথায় শুধু মাথা নাড়িয়ে সন্মতি জানিয়ে চুপ করে সরে যায় ইন্দ্র। বুম্বার জন্য চিন্তা হয়। মাঝে একবার ফোন করে বুম্বার খোঁজ নিয়েছিল সে। তাতেও সুমিত্রা তাকে কড়া কথা শুনিয়ে দিয়ে বলেছে, আমিও তো মা হই নাকি? আমারও একটা দায়িত্ব আছে। তুমি কি ভেবেছ, বুম্বার কিছু অসুবিধা হলে আমি কি নাকি তেল দিয়ে ঘুমাব”? ইন্দ্র আর কথা না বাড়িয়ে ফোন রেখে দিয়েছিল। গাড়ি টা সার্ভিসিং সেন্টারে দিয়ে ওয়েটিং এরিয়াতে বসে বসে একটা ম্যাগাজিনের পাতা ওলটাচ্ছিল ইন্দ্র, হটাতই সেই সময় তার মোবাইল বেজে ওঠে। ফোনটার দিকে তাকিয়েই বুঝতে অসুবিধা হয় না ফোনটা রিমির বলে, মুহূর্তে ফোন টা তুলে নিয়ে জিজ্ঞেস করে, “কি হল সোনা”? ওপর প্রান্ত থেকে রিমির মিষ্টি কণ্ঠস্বরে বলে ওঠে, “ যা বলছি মন দিয়ে শোনো এবারে, আমার পুচ্ছু……আগামিকাল আমার বর একটু কাজে বেরোবে সকাল সকাল……ফিরতে রাত হয়ে যাবে, আমার মেয়েও তার মাসির বাড়ি গেছে। তুমি কি আসতে পারবে”? কথাটা কানে যেতেই হৃৎপিণ্ডের চলার গতি যেন এক লহমায় দ্বিগুন হয়ে যায় ইন্দ্রর। বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে ইন্দ্র। এই সেই ডাক…… এই সেই সুযোগ, যার জন্য হন্যে হয়ে অপেক্ষা করছিল সে। শরীরের ভেতরের প্রতিটা শিরায় উপশিরায় যেন রক্তের স্রোত তীব্র গতিতে ওঠা নামা করছে। রিমির মুখের কয়েকটা লাইন, তাকে মুহূর্তের মধ্যে সমস্ত পারিপার্শ্বিক জগত কে ভুলিয়ে দেয়। সেই ডাক যে আজকেই আসবে, একবারের জন্যও ভাবতে পারেনি সে। কোনরকমে নিজেকে সামলে, নিজের আবেগ কে সংযত করে উত্তর দেয় ইন্দ্র, “আমি আসছি সোনা তোমার কাছে”, বলে কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে সে। মাঝে প্রায় এক মিনিট দুই তরফেই নিস্তব্ধতা। সেই নিস্তব্ধতা কেটে যায় রিমির কণ্ঠস্বরে, “এসো বাবু……কাল……আমি তোমার জন্য রান্না করে রাখব। আমার হাতেই খেতে হবে কিন্তু। না বলা চলবে না বুঝলে………আমার হাঁদারাম। এবার যা বলছি মন দিয়ে শোনো। প্রথমত ……… তাড়াহুড়ো করে গাড়ি জোরে চালাবে না…… সাবধানে চালাবে। বিধান নগর কলোনির কাছে এসে আমাকে ফোন করবে, না হলে বাড়ি চিনতে তোমার অসুবিধা হতে পারে। আমি এখন আর তোমাকে ফোন করছি না………কিছু কাজ আছে, বাড়ির কাজের লোক ও এখনই চলে আসবে……… রাখলাম আমি”। ফোন টা কেটে যেতেই সম্বিত ফিরে পায় ইন্দ্র। ওয়েটিং এরিয়া থেকে বাইরে বেড়িয়ে একটা সিগারেট ধরায় ইন্দ্র। দু একটা টান মারতেই মাথাটা পরিষ্কার হতে শুরু করে।
তোমাকে খুঁজে বেড়াই