23-03-2019, 12:56 PM
মনের বিপরীতে ইশিকরা মুখ বলে ওঠে,"না.." বলে রাহুলের হাত থেকে নিজেকে মুক্ত করে ইশিকা পিছনে সরে যায়। কোমলের হাত চেপে ধরে ওকে টানতে টানতে নিয়ে চলে যায় রাহুলের থেকে দূরে।
"আমার সামনে আর কোনোদিনও আসবে না রাহুল। তোমাকে আমার দিব্যি রইল।" দূর থেকে ভেসে আসা ইশিকার কন্ঠ রাহুলের কানে বেজে ওঠে।
রাহুল অসহায়ের মতো দেখতে থাকে ইশিকার চলে যাওয়া। আটকাবার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে রাহুল। শুধু দুচোখ ভরা জল নিয়ে তাকিয়ে থাকে ইশিকার চলে যাওয়ার দিকে।
তবুও শেষবারের মতো চেষ্টা করে রাহুল ইশিকাকে আটকাবার। কিন্তু মাঝখানে অজিত এসে ওকে ধাক্কা দেয়। যাতে ধুলোয় লুটিয়ে পড়ে নিস্তেজ রাহুল, রিং হাত থেকে ছিকটে পড়ে যায় অন্যত্র। রাহুল ধুলোয় লুটিয়ে পড়েও দেখতে থাকে ইশিকার চলে যাওয়া।
"ইশিকা.." জোরে চেঁচিয়ে উঠে আটকাবার চেষ্টা করে ইশিকাকে আটকাবার। কিন্তু আওয়াজ বের হয় না গলা থেকে। ভলকে ভলকে অশ্রু বেড়িয়ে আসে চোখ থেকে। রাহুলের চোখ পড়ে মাটিতে পরে থাকা রিংটার ওপর। চকচক করছে সূর্যের আলো পড়ে। ধীরে ধীরে রিংটাও অদৃশ্য হয়ে আসে রাহুলের চোখের জলে।...
রাহুলের কথা শুনতে শুনতে সারার চোখে জল চলে এসেছিল, ফর্সা নাক লাল হয়ে গিয়েছিল। ইউরোপীয়দের কাঁদতে সাধারনত খুব কমই দেখা যায়।
রাহুলের হাতের মুঠোর মধ্যে এখনও সেই রিংটা ছিল। যেটা একদিন ইশিকাকে পড়াতে চেয়েছিল,কিন্তু পারেনি। রিংটা রাহুল সবসময় নিজের কাছে রাখে, রিংটা বুকে চেপে ধরে অনুভব করে ইশিকার উপস্থিতি। রাহুলের চোখের পাতাও কিছুটা ভিজে গিয়েছিল।
"ওই একটি ঘটনা আমার একমাত্র ভালোবাসাকে কেড়ে নিয়েছিল আমার কাছ থেকে, যেটা আমি মন থেকে বেসেছিলাম।" রাহুল ভারি গলায় বলে,"বোধ হয় ওতে আমারও ভুল ছিল। আর সেই ভুলের সাজা আমি এইভাবে পেয়েছি।"বলে রাহুল বাঁ হাতের তালু দিয়ে দুচোখ রগরে মুছে নেয়।
"তারপর কী হল ইশিকার?" সারা আবার উত্*সুক হয়ে জিজ্ঞেস করে।
রাহুল একটুখানি চুপ করে থেকে তারপর বলে," তারপর ইশিকার সাথে আমার আর কোনোদিন দেখা হয়নি। ওই ঘটনার পর ইশিকা অন্য কলেজে সিফ্ট করেছিল। প্রথম প্রথম পাপ বোধ আমাকে জ্বালিয়ে খেত। রাতের পর রাত কেটে যেত নির্ঘুম। কলেজে চুপচাপ যেতাম আর ক্লাস করে বাড়ি ফিরে আসতাম। তারপর কলেজ পাশ করলাম। হঠাত্*ই এখানে একটা চাকরির ইন্টার ভিউয়ের সুযোগ পেয়ে গেলাম। সুযোগটা হাতছাড়া করলাম না। দেশে থাকতে আমার আর ভালো লাগছিল না। চাকরিও পেয়ে গেলাম। তারপরেই তোমার সাথে সাক্ষাত হল। তারপরের কথা তো তুমি জানোই। মাঝে মাঝে দেখতে ইচ্ছে করে বাবা মাকে, আত্মিয় স্বজন, বন্ধুবান্ধবদের। কিন্তু দেশে ফিরে যেতে ইচ্ছে করে না।"
"আই এম সরি রাহুল.." সারা রাহুলের কাধের উপর হাত রেখে বলে।
রাহুল জানালা থেকে মুখ সরিয়ে সারার দিকে তাকিয়ে মুখে একটু হাঁসি ফুটিয়ে বলে,"সরি বলবার দরকার নেই, আমার পাপের শাস্তি ভগবান আমাকে দিয়েছেন।"
সারা প্রচন্ড আবেগের বশে রাহুলের গলা জরিয়ে ধরে বলে,"ইশিকা যদি জানতে পারতো যে তুমি ওকে কতোটা ভালোবাসো।"
রাহুল নীরব থাকে। সারার আলিঙ্গনে আবদ্ধ থেকেই আবার জানালার বাইরে তাকায়। কখন যে সূর্যিমামা ডুবতে বসেছে ওদের কোনো খেয়াল ছিল না। নাম না জানা পাখিগুলো দল বেঁধে কিচির মিচির ঝগড়া করতে করতে বাসায় ফিরে যাচ্ছে। শীতের ছোঁয়ায় আকাশচুম্বি গাছগুলো আবার গুটিয়ে নিয়েছে নিজেদেরকে। যেন অপেক্ষা করছে নতুন ভোরের, নতুন আলোর। রাস্তায় জ্বলে উঠেছে উজ্জ্বল ইলেক্ট্রিকের বাতি। রাস্তার দুধারে সারি সারি দোকানগুলোতে, তৈরি হচ্ছে রকমারি গরম গরম খাবার। কাজ সেরে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরার তাড়ায় লোকারন্যে জ্যাম হয়ে রয়েছে রাস্তাঘাট। যেন সবাই বাড়ি গিয়ে আত্মিয়-স্বজন, ভাই-বোন, মা-বাবা, প্রেয়সিকে কাছে টেনে নিয়ে জুড়িয়ে নিতে চায় সারাদিনের ধকল। সব মিলিয়ে একটা আনন্দ, দুঃখ, শোক, খুশি মিশ্রিত কলরবে ভরে উঠেছে সারা পরিবেশ।
রাহুল একমনে এইগুলোই দেখে যাচ্ছিল। হঠাং খেয়াল হল সন্ধে হয়ে গেছে। ঘরির দিকে তাকিয়ে দেখল সাড়ে পাঁচটা বাজে। এতটা সময় পার হয়ে গেছে ওদের খেয়ালই ছিল না, আর এও খেয়াল ছিল না যে ওরা সকাল থেকে কিছুই খায়নি।
খাবার কথা মনে পড়তেই পেটে ছুঁচোয় ডন মারতে শুরু করে। রাহুল সারার আলিঙ্গনমুক্ত হয়ে বাইরে বেড়িয়ে হোটেল থেকে কিছু গরম গরম খাবার কিনে নিয়ে এসে খেয়ে নেয় দুজনে মিলে।
রাত্রে রাহুলের ঘুম আসে না। বার বার সপ্নের মধ্যে ভেসে ওঠে ইশিকার মুখ। বিছানায় শুয়ে ছটফট করতে থাকে সারারাত। অবশেষে ভোর রাতে চোখ বোজে।
"ক্রিং ক্রিং ..ক্রিং ক্রিং.." টেলিফোনে বাজার শব্দে রাহুলের ঘুম ভাঙে। রাহুল চোখ রগড়াতে রগড়াতে ফোন তোলে।
-হ্যালো, রাহুল স্পিকিং..
-ইয়েস, ওকে..
-ইজ ইট রিয়েলি ইম্প্রটেন্ট?
-ওকে, আই উইল গো..
রিসিভার নামিয়ে রেখে রাহুল কিছুক্ষন চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে। তারপর টেবিলের উপর রাখা ইশিকার ফটোটার দিকে তাকায়, যেটা ট্রিপে গিয়ে তুলেছিল। খুব সুন্দর দেখতে লাগছিল তখন ইশিকাকে।
"আমার সামনে আর কোনোদিনও আসবে না রাহুল। তোমাকে আমার দিব্যি রইল।" দূর থেকে ভেসে আসা ইশিকার কন্ঠ রাহুলের কানে বেজে ওঠে।
রাহুল অসহায়ের মতো দেখতে থাকে ইশিকার চলে যাওয়া। আটকাবার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে রাহুল। শুধু দুচোখ ভরা জল নিয়ে তাকিয়ে থাকে ইশিকার চলে যাওয়ার দিকে।
তবুও শেষবারের মতো চেষ্টা করে রাহুল ইশিকাকে আটকাবার। কিন্তু মাঝখানে অজিত এসে ওকে ধাক্কা দেয়। যাতে ধুলোয় লুটিয়ে পড়ে নিস্তেজ রাহুল, রিং হাত থেকে ছিকটে পড়ে যায় অন্যত্র। রাহুল ধুলোয় লুটিয়ে পড়েও দেখতে থাকে ইশিকার চলে যাওয়া।
"ইশিকা.." জোরে চেঁচিয়ে উঠে আটকাবার চেষ্টা করে ইশিকাকে আটকাবার। কিন্তু আওয়াজ বের হয় না গলা থেকে। ভলকে ভলকে অশ্রু বেড়িয়ে আসে চোখ থেকে। রাহুলের চোখ পড়ে মাটিতে পরে থাকা রিংটার ওপর। চকচক করছে সূর্যের আলো পড়ে। ধীরে ধীরে রিংটাও অদৃশ্য হয়ে আসে রাহুলের চোখের জলে।...
রাহুলের কথা শুনতে শুনতে সারার চোখে জল চলে এসেছিল, ফর্সা নাক লাল হয়ে গিয়েছিল। ইউরোপীয়দের কাঁদতে সাধারনত খুব কমই দেখা যায়।
রাহুলের হাতের মুঠোর মধ্যে এখনও সেই রিংটা ছিল। যেটা একদিন ইশিকাকে পড়াতে চেয়েছিল,কিন্তু পারেনি। রিংটা রাহুল সবসময় নিজের কাছে রাখে, রিংটা বুকে চেপে ধরে অনুভব করে ইশিকার উপস্থিতি। রাহুলের চোখের পাতাও কিছুটা ভিজে গিয়েছিল।
"ওই একটি ঘটনা আমার একমাত্র ভালোবাসাকে কেড়ে নিয়েছিল আমার কাছ থেকে, যেটা আমি মন থেকে বেসেছিলাম।" রাহুল ভারি গলায় বলে,"বোধ হয় ওতে আমারও ভুল ছিল। আর সেই ভুলের সাজা আমি এইভাবে পেয়েছি।"বলে রাহুল বাঁ হাতের তালু দিয়ে দুচোখ রগরে মুছে নেয়।
"তারপর কী হল ইশিকার?" সারা আবার উত্*সুক হয়ে জিজ্ঞেস করে।
রাহুল একটুখানি চুপ করে থেকে তারপর বলে," তারপর ইশিকার সাথে আমার আর কোনোদিন দেখা হয়নি। ওই ঘটনার পর ইশিকা অন্য কলেজে সিফ্ট করেছিল। প্রথম প্রথম পাপ বোধ আমাকে জ্বালিয়ে খেত। রাতের পর রাত কেটে যেত নির্ঘুম। কলেজে চুপচাপ যেতাম আর ক্লাস করে বাড়ি ফিরে আসতাম। তারপর কলেজ পাশ করলাম। হঠাত্*ই এখানে একটা চাকরির ইন্টার ভিউয়ের সুযোগ পেয়ে গেলাম। সুযোগটা হাতছাড়া করলাম না। দেশে থাকতে আমার আর ভালো লাগছিল না। চাকরিও পেয়ে গেলাম। তারপরেই তোমার সাথে সাক্ষাত হল। তারপরের কথা তো তুমি জানোই। মাঝে মাঝে দেখতে ইচ্ছে করে বাবা মাকে, আত্মিয় স্বজন, বন্ধুবান্ধবদের। কিন্তু দেশে ফিরে যেতে ইচ্ছে করে না।"
"আই এম সরি রাহুল.." সারা রাহুলের কাধের উপর হাত রেখে বলে।
রাহুল জানালা থেকে মুখ সরিয়ে সারার দিকে তাকিয়ে মুখে একটু হাঁসি ফুটিয়ে বলে,"সরি বলবার দরকার নেই, আমার পাপের শাস্তি ভগবান আমাকে দিয়েছেন।"
সারা প্রচন্ড আবেগের বশে রাহুলের গলা জরিয়ে ধরে বলে,"ইশিকা যদি জানতে পারতো যে তুমি ওকে কতোটা ভালোবাসো।"
রাহুল নীরব থাকে। সারার আলিঙ্গনে আবদ্ধ থেকেই আবার জানালার বাইরে তাকায়। কখন যে সূর্যিমামা ডুবতে বসেছে ওদের কোনো খেয়াল ছিল না। নাম না জানা পাখিগুলো দল বেঁধে কিচির মিচির ঝগড়া করতে করতে বাসায় ফিরে যাচ্ছে। শীতের ছোঁয়ায় আকাশচুম্বি গাছগুলো আবার গুটিয়ে নিয়েছে নিজেদেরকে। যেন অপেক্ষা করছে নতুন ভোরের, নতুন আলোর। রাস্তায় জ্বলে উঠেছে উজ্জ্বল ইলেক্ট্রিকের বাতি। রাস্তার দুধারে সারি সারি দোকানগুলোতে, তৈরি হচ্ছে রকমারি গরম গরম খাবার। কাজ সেরে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরার তাড়ায় লোকারন্যে জ্যাম হয়ে রয়েছে রাস্তাঘাট। যেন সবাই বাড়ি গিয়ে আত্মিয়-স্বজন, ভাই-বোন, মা-বাবা, প্রেয়সিকে কাছে টেনে নিয়ে জুড়িয়ে নিতে চায় সারাদিনের ধকল। সব মিলিয়ে একটা আনন্দ, দুঃখ, শোক, খুশি মিশ্রিত কলরবে ভরে উঠেছে সারা পরিবেশ।
রাহুল একমনে এইগুলোই দেখে যাচ্ছিল। হঠাং খেয়াল হল সন্ধে হয়ে গেছে। ঘরির দিকে তাকিয়ে দেখল সাড়ে পাঁচটা বাজে। এতটা সময় পার হয়ে গেছে ওদের খেয়ালই ছিল না, আর এও খেয়াল ছিল না যে ওরা সকাল থেকে কিছুই খায়নি।
খাবার কথা মনে পড়তেই পেটে ছুঁচোয় ডন মারতে শুরু করে। রাহুল সারার আলিঙ্গনমুক্ত হয়ে বাইরে বেড়িয়ে হোটেল থেকে কিছু গরম গরম খাবার কিনে নিয়ে এসে খেয়ে নেয় দুজনে মিলে।
রাত্রে রাহুলের ঘুম আসে না। বার বার সপ্নের মধ্যে ভেসে ওঠে ইশিকার মুখ। বিছানায় শুয়ে ছটফট করতে থাকে সারারাত। অবশেষে ভোর রাতে চোখ বোজে।
"ক্রিং ক্রিং ..ক্রিং ক্রিং.." টেলিফোনে বাজার শব্দে রাহুলের ঘুম ভাঙে। রাহুল চোখ রগড়াতে রগড়াতে ফোন তোলে।
-হ্যালো, রাহুল স্পিকিং..
-ইয়েস, ওকে..
-ইজ ইট রিয়েলি ইম্প্রটেন্ট?
-ওকে, আই উইল গো..
রিসিভার নামিয়ে রেখে রাহুল কিছুক্ষন চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে। তারপর টেবিলের উপর রাখা ইশিকার ফটোটার দিকে তাকায়, যেটা ট্রিপে গিয়ে তুলেছিল। খুব সুন্দর দেখতে লাগছিল তখন ইশিকাকে।