Thread Rating:
  • 9 Vote(s) - 3.22 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অন্তিম উদ্দেশ্য by pikkuboss
#19
এইসব দৃশ্যগুলোই পর্যবেক্ষন করছিল রাহুল আর ভাবছিল ওর নিজের জীবনেও কি কখনও এই আনন্দমুখর দিন আসবে?
সারার উত্*সুকতা দমন করার জন্য রাহুল আবার বলতে শুরু করে ইশিকার সাথে কাটানো স্মৃতির কথা।"ট্রিপ থেকে ফিরে তো এসেছিলাম। কিন্তু ততদিনে যা ঘটবার ঘটে গিয়েছিল।"
ট্রিপ থেকে ফিরে আসার পরের দিন, রাহুল কলেজে ঢুকে দেখে সবাই এসে উপস্থিত। রাহুল ওদের কাছে এগিয়ে যায়। সবাই মুখ তুলে দেখে রাহুল এসেছে। কিন্তু কেউ কোনো কথা বলে না। আবার মুখ নামিয়ে নিজেদের কাজে মন দেয়। সবার মুখে বিষ্ময়ের ছাপ স্পষ্ট। রাহুল জানতো এরকম কিছু একটা হবে। তবুও এগিয়ে গিয়ে অজিতের কাছে বসে পড়ে।
"সবাই কেমন আছো?" রাহুল এতোটুকুই বল।
"চলো সবাই চলো, ক্যান্টিনে যাওয়া যাক।" বলে অজিত সবাইকে ঠেলা দিয়ে সিট থেকে তুলে দেয়।
রাহুলের খুব খারাপ লাগে ওদের এই ব্যবহার। মাথায় হাত দিয়ে বেঞ্চের উপর হেলান দিয় বসে পড়ে। সবাই ক্লাস থেকে বেড়িয়ে ক্যান্টিনের দিকে অগ্রসর হয়। ইশিকার রাহুলকে দেখে দুঃখ হয়। পিছন ঘুরে আবার ক্লাসের মধ্যে ফিরে আসতে যায়। কিন্তু,"চলো ইশিকা" বলে অজিত ইশিকার হাত ধরে টেনে টেনে নিয়ে যায় ক্যান্টিনের দিকে।
রাহুল কিছুক্ষন চুপচাপ বসে থাকে ক্লাসের মধ্যে। তারপর উঠে দাঁড়িয়ে এগিয়ে যায় ক্যান্টিনের দিকে। ক্যান্টিনে সবাই চুপচাপ বসেছিল। সবাইয়ের সামনে কিছু খাবার রাখা ছিল। কিন্তু শুধু রাখাই ছিল। খাবারে কেউ হাত দেয়নি। শুধু একজন ছাড়া।
"খাও খাও, এরকম বসে আছো কেন?" আজিত খাবার খেতে খেতে বলে।
"রাহুল এদিকেই আসছে।" কুবেরের কথায় সবাই মুখ তুলে সামনের দিকে তাকায়। রাহুল সবার সামনে এসে দাঁড়ায়।
"তোমরা এরকম কেন করছো? আমি কী করেছি?"রাহুল বলে।
"বাঃ বা চমত্*কার, কী করেছি? তুই কী করেছিস তুই জানিস না? তোর জন্য আমরা মরতে বসেছিলাম। আর তুই জিজ্ঞেস করছিস তুই কী করেছিল।" অজিত রাগে ফুঁসে উঠে চেঁচিয়ে ওঠে।
সোনিয়া,"অজিত চুপ করো।"
রক্তিম,"চুপ করবে কেন? বলতে দাও ওকে। অজিত ঠিকই তো বলছে।"
অজিত,"সালা ফুলি সাইকো..."
রাহুল এতোকিছু শোনার পরেও শান্ত গলায় বলে,"আরে তোমরা আমার কথা বোঝবার চেষ্টা করো। আমি কি ইচ্ছে করে তোমাদের মারতে চেয়েছি? আমি নিজেই জানিনা আমার সাথে কী হচ্ছে। কিন্তু তোমরা বুঝবে না। কারন তোমাদের সাথে এটা হচ্ছে না..."বলতে বলতে রাহুলের গলা ভারী হয়ে আসে।

অজিত,"ওসব নাকে কান্না রাখ, তুই একটা খুনি, বুঝলি, ইউ আর এ ব্লডি মাডারার।"
এতক্ষন রাহুল চুপ করে ছিল। কিন্তু ওর পরিবারের কথা তোলায় রাহুলের মাথা গরম হয়ে যায়। "অজিত" ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে রাহুল চেঁচিয়ে উঠে অজিতের দিকে তেড়ে যায়। ইশিকা দ্রুত গিয়ে ওর হাত ধরে ফেলে।
"তোমরা সব চুপ করো। অজিত তুমি কী বলছো একবার ভেবে দেখেছো? রাহুলের জন্যই তুমি আর দিক্ষা আজ প্রানে বেঁচে আছো। আর তুমি ওকে দোষারোপ করছো?" ইশিকা চেঁচিয়ে ওঠে।
রাহুলের চোখ জলে ভরে উঠেছিল। জল ভরা চোখ নিয়ে ক্যান্টিন থেকে বেড়িয়ে যায়। ইশিকা ওকে বারবার ডাকে। কিন্তু রাহুল কারো কথায় কান না দিয়ে সোজা কলেজ থেকে বেড়িয়ে যায়।
"ইশিকা ঠিকই বলেছে।" সোনিয়া ইশিকার সাথ দেয়।,"রাহুল নিজে থেকে তো কিছু করেনি। যা হয়েছে সেটা একটা দূর্ঘটনা মাত্র।"
"হুঁ রাহুল খারাপ ছেলে তো নয়। ওর জন্যই তো আমরা এখনও বেঁচে আছি।" কুবেরও সায় দেয়।
"তোমরা ঠিকই বলেছো। রাহুলের কোনো দোষ নেই।" কোমল বলে। আস্তে আস্তে ইশিকার দল ভারী হয়ে যায়।
"যা কিছু হয়েছে সব ভুলে গিয়ে আমাদের আবার আগের মতো বন্ধু হয়ে যাওয়া উচিত।" সোনিয়া আবার বলে।
ইশিকার এই সোনিয়ার আচরন ভালো লাগে। খুশি হয়ে সোনিয়ার দিকে হাত বাড়িয়ে বলে,"ফ্রেন্ডস্?"
সোনিয়া ইশিকার হাতের ওপর হাত চেপে ধরে বলে,"হ্যাঁ, কেন নয়?"
"ওয়াও, সোনিয়া ইশিকা বন্ধু।" কোমল এই প্রথম লজ্জ্বা ভুলে চেঁচিয়ে ওঠে। কারন এটা ছিল অবিশ্বাস্য একটা ব্যাপার।
"সোনিয়া ইশিকা বন্ধু। অবাক হচ্ছো না। আমিও অবাক হয়েছিলাম যখন প্রথম শুনেছিলাম। কিন্তু....." রাহুল জানালার ধারে একজন ইংরেজ মহিলার দিকে তাকিয়ে থেকে বলছিল। যার কোলে ছিল একটি ফুটফুটে বাচ্ছা। মহিলা তার বাচ্ছাকে নিয়ে খেলা করছিল ফুলের বাগানে। আর বাচ্ছাটির বাবা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিল মা-সন্তানের আজগুবি খেলা। বিভিন্ন দেশের নারী পুরুষদের স্বভাব, আচার আচরন, চেহারা বিভিন্ন ধরনের হয়। কিন্তু মা সবদেশেই সমান। মা-সন্তানের সম্পর্ককে টলাতে পারেনি সৃষ্টিকর্তা।
রাহুলও চেয়েছিল ওর প্রেয়সি ঠিক ওই মহিলার মতো তার বাচ্ছাকে নিয়ে খেলা করবে। আর রাহুল তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করবে সেই দৃশ্য। কিন্তু....
"কিন্তু...তারপর কী হল?" রাহুল সারার উত্*সুকতা কমাতে পারেনি। বরং বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুনে। তাই প্রশ্নের পর প্রশ্ন ছুঁড়ে যাচ্ছে সারা।


রাহুল আবার একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলতে শুরু করলো,"তারপর ধীরে ধীরে সবকিছু স্বাভাবিক হতে লাগল। বন্ধুত্ব আবার আগের অবস্থায় ফিরে এলো। কলেজে হইহুল্লোড়, হাঁসাহাঁসি চলতো। ইশিকার সাথে আমার ঘনিষ্টতা আরও বাড়তে লাগল। কিন্তু তখনও 'আই লাভ ইউ' কথাটা বলতে পারিনি। তবে অজিত আমার সাথে সরাসরি কথা বলতো না।"
তারপর এলো সেই রাত...
সেদিন রাতে রাহুল বিছানায় শুয়ে শুয়ে ইশিকার কথাই ভাবছিল।
"কাল ১৪ই ফেব্রুরারী, কালই বলে দেবো ইশিকাকে আমার মনের কথা। কালকের মতো সুযোগ আর পাবো না। এই সুযোগটা হাতছাড়া করলে চলবে না। ইশিকাকে ছাড়া বাঁচা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু....আমি কি ইশিকাকে সত্যিই ভালোবাসি? আমার আর সোনিয়ার মধ্যে ঘটে যাওয়া অনেক ঘটনার কথা এখনও ইশিকাকে বলা হয়নি। কাল বলে দেবো সব কথা। কিন্তু বলে দিলে যদি ইশিকা আমাকে ভুল বোঝে? যদি আমাকে ছেড়ে চলে যায়? তাহলে আমি বাঁচবো কী নিয়? কিন্তু যদি না বলি, আর অন্যকোনো ভাবে জানতে পেরে যায় তাহলে আরো বড়ো কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে। কীভাবো বলবো আমি এইসব কথা? মুখে তো বলতে পারবো না। হ্যাঁ লিখে জানাতে পারি। তারপর না হয় বোঝাবো ওকে, আর সোনিয়াকে বলবো ওকে সাহায্য করতে। সোনিয়ার সাথে কথা বলতে হবে। তার আগে লিখে ফেলি চিঠিটা...."
পরের দিন, ১৪ই ফেব্রুয়ারী, ক্লাস খালি পড়েছিল। শুধু রাহুল আর সোনিয়ার ক্লাসে বলে নিজেদের মধ্যে কথা বলছিল।
"সোনিয়া তোমাকে আমার একটা সাহায্য করতে হবে।" সোনিয়ার হাত ধরে রাহুল বলে।
"হ্যাঁ, অবস্যই সাহায্য করবো। তুমি এত চিন্ত করছো কেন? আমি বুঝতে পারছি, তুমি ইশিকাকে ভালোবাসো এটা আমি আগে থেকেই জানি।" সোনিয়া রাহুলকে আশ্বাস দিয়ে বলে।
"হ্যাঁ, আমি ওকে পাগলের মতো ভালোবাসি। ওকে ছাড়া আমার বাঁচা সম্ভব নয়। জানি না কখন ভালোবাসা হয়ে গেল, সব সময় ওর কথাই ভাবি, ওর চিন্তাতেই ডুবে থাকি। কিন্তু সমস্যাটা হচ্ছে, তোমার আর আমার মধ্যে যে ভুলটা ঘটে গিয়েছিল সেটা যদি ইশিকা কোনো ভাবে জানতে পারে তাহলে বড়ো সমস্য হয়ে দাঁড়াবে।"
সোনিয়া"ওটা নিয়ে কিছু ভেবেছো?"
"হুঁ, আমি একটা চিঠি লিখেছি। কিন্তু তুমি যদি ওকে বোঝাও যে সেরকম কিছু হয়নি, ভুলবসত ঘটে গিয়েছিল, তাহলে হয়তো ইশিকা সহজে মেনে নেবে ব্যাপারটা।" বলে রাহুল পকেটে হাত গলিয়ে চিঠিটা বের করে।

সোনিয়া,"হ্যাঁ, অবস্যই আমি ওকে বুঝিয়ে বলবো যে যা কিছু হয়েছে সেটা ভুলবসত ঘটে গেছে। ওতে তোমার কোনো দোষ নেই, সব দোষ আমার।" বলে চিঠিটা রাহুলের হাত থেকে নিয়ে নেয়।
এদিকে ইশিকা সিঁড়ি চড়তে চড়তে ক্লাসের দিকেই যাচ্ছিল। ও খবর পেয়েছিলত যে রাহুল ক্লাসের মধ্যে আছে। তাই ও মনের মধ্যে একটা উত্তেজনা নিয়ে ক্লাসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। ও আজ বেশ খুশি ছিল আর বেশ উত্তেজিতও ছিল, সেটা ওর মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল।
এদিকে ক্লাসের মধ্যে... "রাহুল তুমি কিচ্ছু চিন্তা কোরো না। কিন্তু কীভাবে প্রপোস করবে ওকে কিছু ঠিক করেছ?
"জানিনা কীভাবে প্রোপোজ করবো। তবে তোমাকে অমার এই সাহায্যটা করে দিতেই হবে। ওকে বুঝিয়ে বলতে হবে তোমাকে।"
"হ্যাঁ হ্যাঁ, চিন্তা করার কিছু নেই।"
"ধন্যবাদ সোনিয়া..." বলে রাহুল সোনিয়ার গলা জড়িয়ে ধরে।
সবকিছু দেখা বা শোনার বদলে ইশিকা শুধু শেষের দৃশ্যটা দেখে ফেলে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে। নিজের চোখের ওপর বিশ্বাস হয় না ইশিকার। মুখ যে খুশির ভাবটা বিচরন করছিল একটু আগে, সেটা এক ঝটকায় বদলে যায় দুঃখে। ক্লাসে না ঢুকে সোজা ওখান থেকে চলে যায়।
ক্লাসে রাহুল আর সোনিয়া নিজেদের গলা ছাড়িয়ে আলাদা হয়ে যায়। রাহুল পকেট থেকে মোবাইল বের করে ইশিকার ফোনে কল করে। রিং বাজে...
রাহুল-"হ্যালো ইশিকা? কোথায় আছো?
-"আমি কোমল বলছি। ইশিকার ফোন আমার কাছে। আমি নিচে মাঠে দাঁড়িয়ে আছি। আর ইশিকা তো তোমার কাছেই গেছে।
-"আচ্ছা, কিন্তু এখনও তো এলো না। কতক্ষন আগে গেছে?"
-"পাঁচ মিনিটের মতো হবে। কিন্তু এতক্ষনে তো পৌঁছে যাওয়ার কথা।"
রাহুল ক্লাস থেকে বারান্দার চারিদিকে খুঁজে দেখে। কিন্তু ইশিকাকে দেখতে পায় না।
রাহুল-"কই এখানে তো দেখতে পেলাম না। ওকি আমার কাছেই আসবে বলেছিল?"
-"ওতো আমাকে বলে গিয়েছিল যে... আরে.."
-"কী হল?"
-"ওতো এখানেই ফিরে আসছে।"
-"আচ্ছা, তোমরা ওখানেই থাকো। আমি এখুনি আসছি। আর ওকে এখনই কিছু বলবে না.." একটু হেঁসে বলে।
কোমল-"ঠিক আছে"বলে ফোন কেটে দেয়।
[+] 1 user Likes ronylol's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অন্তিম উদ্দেশ্য - by ronylol - 23-03-2019, 12:54 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)