Thread Rating:
  • 9 Vote(s) - 3.22 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অন্তিম উদ্দেশ্য by pikkuboss
#17
বাইরে সোফায় বসে থাকা বুড়ো লোকটা বুড়ির চেঁচানোর আওয়াজ শুনে হন্তদন্ত হয়ে সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে এগিয়ে যায় রান্না ঘরের দিকে।
স্ল্যাপ থেকে চুঁইয়ে পড়া জল গড়িয়ে গড়িয়ে রান্না ঘরের দরজার সামনের মেঝেতে চলে এসেছিল। বুড়ো ছুটতে ছুটতে গিয়ে ঠিক ওই জলের উপরেই পা রাখে আর স্লিপ খেয়ে এগিয়ে গিয়ে বুড়ির ঘাড়ের উপর পড়ে। যার ফলে বুড়ির মুখ বার্নারের উপর চেপে বসে যায় আর বুড়োর একটা হাত গিয়ে আটকে যায় চুলার ভিতরে। হাত টেনে বেড় করার অনেক চেষ্টা করে। কিন্তু ব্যর্থ হয়।
ওদিকে বুড়ির মুখ বার্নালের উপর পড়ায় বুড়ির মুখ আগুনে পুড়ে ঝলসাতে থাকে। মুখ থেকে মাংস খন্ড গলে গলে পড়তে থাকে চুলার মধ্যে, আর সাথে রক্ত।
বুড়ি করুন স্বরে কাঁদতে কাঁদতে চেঁচাতে থাকে। চুল আর মুখের রক্ত মাংস পুড়তে পুড়তে আগুনের তেজ আরও বেড়ে যায়। আর বুড়োর ফেঁসে থাকা হাতের উপর আগুন এসে লাগে। বুড়োও তারস্বরে চেঁচিয়ে ওঠে। কিন্তু ওদের আওয়াজ কেউ শুনতে পায় না। অপর হাত বাড়িয়ে রেগুলেটর ঘোরায়। কিন্তু রেগুলেটর ততক্ষনে ফ্রি হয়ে গেছে। আগুনের তেজ ক্রমশ বাড়তেই থাকে।
এবার বুড়ো স্টোভের ওপারে একটা জলের বোতল দেখতে পায়। হাতটা আর একটু বাড়িয়ে বোতলটাকে নাগালের মধ্যে নিয়ে আসে। জলের বোতলটা ধরে নিজের দিকে নিয়ে আসতে থাকে। কিন্তু বোতলের উপর ছিপিটা শুধু লাগানো ছিল। ফলে ছিপিটা বোতল থেকে খুলে কড়াইয়ের গরম তেলের মধ্যে পড়ে যায়।
গরম তেলের মধ্যে জল লেগে থাকা ছিপি পড়তেই তেল ছিটকাতে ছিটকাতে বুড়োর হাতে পড়ে। প্রচন্ড তীব্র এক যন্ত্রনায় বোতল বুড়োর হাত থেকে ফসকে কড়াইয়ের উপর পড়ে যায়। যার ফলে কড়াই উল্টে গিয়ে গরম তেল ছড়িয়ে যায় সারা ঘারের মধ্যে। আস্তে আস্তে আগুন গ্রাস করে নেয় তেল ছড়িয়ে পড়া জায়গাগুলোকে। ঘর পুড়ে ছাড়খাড় হতে থাকে প্রকান্ড দাবানলের মধ্যে।
এবার আগুন অগ্রসর হয় গ্যাস সিলিন্ডারের দিকে। নিজের চোখের সামনে সাক্ষাত মৃত্যুকে দেখে প্রানপনে চেঁচিয়ে ওঠে বুড়ো। কিন্তু চেঁচানোতে কোনো কাজ হয় না। ধীরে ধীরে আগুন গ্রস করে নেয় গ্যাস সিলিন্ডার। বুড়ো নিজের অস্রুভরা চোখ দুটো মুদে নেয়।
"দামমম...." প্রচন্ড একটা আওয়াজের সাথে ফেটে যায় গ্যাস সিলিন্ডার। লন্ডভন্ড করে দেয় পুরো রান্না ঘরটাকে। অসংখ্য মাংসের খন্ডে পরিনত করে দেয় দুটো জীবন্ত শরীরকে।
"ফটৃ.." ভেঙে চুড়মার হয়ে যায় রাহুলের হাতের মধ্যে থাকা কাঁচের গ্লাসটা। হাত ভরে ওঠে লাল রঙের তরলে। ফোঁটা ফোঁটা রক্ত পড়তে থাকে টেবিলের উপর। সবাইয়ের নজর চলে যায় রাহুলের দিকে। রাহুলের চোখ লাল হয়ে উঠেছিল আর ও স্থির দৃষ্টিতে দেয়ালের দিকে তাকিয়ে ছিল। কিন্তু কারও কিছু বলার আগেই চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে প্রানপনে চেঁচিয়ে ওঠে, "নাআআআ..."। রাহুলের কন্ঠ অনুরনিত হতে থাকে সারা ঘরময়। তারপর হঠাং ধুপ করে লুটিয়ে পড়ে মেঝেতে।
"রাহুল..." ইশিকা জোরে চেঁচিয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়। তারপর দৌড়ে গিয়ে তুলে নেয় রাহুলকে নিজের কোলের উপর। রাহুলের হঠাং এই আচরনে সবাই স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল। তারপর সবাই চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে রাহুলের কাছে এগিয়ে যায়।

কিছুক্ষন পরে, রাহুল নড়াচড়া করতে করতে চোখ খোলে। প্রথমে তো চোখের সামনে সবকিছু অন্ধকার দেখে। তারপর আরও কিছুক্ষন চোখ বন্ধ রেখে তারপর চোখ খুলতে আস্তে আস্তে সবকিছু পরিস্কার দেখতে পায়। চোখ খুলে ঘরের চারিদিকে তাকিয়ে দেখে সবাই ওকে গোল করে ঘিরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তারপর আঁচ করে যে ওর হাত নিয়ে কেউ কিছু করছে। সঙ্গে সঙ্গে মুখ ঘুড়িয়ে হাতের দিকে তাকিয়ে দেখে ইশিকা ওর হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধছে। কুবের রাহুলের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করে,"এখন কেমন আছিস?"
কুবেরে গলার আওয়াজ শুনে ইশিকা রাহুলের দিকে তাকিয়ে দেখে যে রাহুল চোখ খুলেছে। যেন ইশিকার ধরে প্রান আসে। রাহুল নিজেকে কিছুটা উঠিয়ে সোজা হয়ে বসে।
"কী হয়েছিল আমার? আর হাতে কীকরে লাগলো?" রাহুল সবাইয়ের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করে।
সবাই রাহুলের দিকে অবিশ্বাসের চোখে তাকায়। রক্তিম বলে,"তোর কিচ্ছু মনে নেই?"
রাহুল না তে ঘাড় নাড়ায়।
দিক্ষা রাহুলকে বুঝিয়ে বলে,"তুমি হঠাং উঠে দাঁড়িয়ে জোরে চেঁচিয়ে উঠলে। তারপর হাত দিয়ে শক্ত করে চেপে ওই গ্লাসটা ভাঙলে। আমরা তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। তারপর..."
"তারপর তুই হঠাং মেঝেতে পড়ে গেলি" অজিত দিক্ষার কথাটাকে সম্পুর্ন করে।
রাহুল কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে সবাইয়ের দিকে তাকিয়ে থাকে। ওর মাথায় ঢুকছিল না যে ওরা কী বলছে।
সোনিয়া রাহুলকে জিজ্ঞাসা করে,"তুমি 'না..' বলে হঠাং চেঁচিয়ে উঠেছিলে কেন? কিছু হয়েছে?"
সোনিয়ার কথায় রাহুলের চোখ যায় সেই দেওয়ারটার দিকে। আর চোখ সামনে ভেসে ওঠে সেই দৃশ্য যে একটু আগে দেখেছিল।
রাহুল হঠাং করে উঠে দাঁড়ায় আর এগিয়ে যায় হল ঘরের দিকে। দাঁড়িয়ে থাকা সবাই হতভম্ব হয়ে দেখছিল রাহুলের ক্রিয়াকলাপ। রাহুলকে চলে যেতে দেখে ওরাও রাহুলের পিছু নেয়।
রাহুল দ্রুত গতিতে সেই দেওয়ালটার সামনে এসে দাঁড়ায় যেখানে সেই ভয়ানক দৃশ্যটা দেখেছিল। তারপর দেয়ালে হাত ছুঁইয়ে যেন কিছু একটা খুঁজতে থাকে।
পিছনে সবাই হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। ওরাও বুঝতে পারছিল না যে কি হচ্ছে। তারপর ইশিকা রাহুলের সামনে এগিয়ে এসে রাহুলের কাঁধে হাত দিয়ে জিজ্ঞাসা করে,"রাহুল কী হয়েছে? কী খুঁজছো?"
রাহুল পিছন ঘুরে,"ইশিকা আমি এখানে..." কিছু একটা কথা বলতে বলতে থেমে যায়। ওর গলা দিয়ে আওয়াজ বেরচ্ছিল না। রাহুল সবাইয়ের দিকে একবার তাকায়। সবাইয়ের চোখে খুঁজে পায় বিষ্ময়। নিজেকে বড়ো অসহায় মনে হয় রাহুলের। মাথা নিচু করে দ্রুত পায়ে ফ্লাট থেকে বেড়িয়ে যায়।
"রাহুল..রাহুল.." ইশিকা চেঁচিয়ে ওঠে।
"রাহুল শোনো" সোনিয়াও ডাকে।
রাহুর ফিরে তাকায় না। ফ্ল্যাট থেকে বেড়িয়ে বারান্দা দিয়ে সিঁড়ির দিকে এগিয়ে গিয়ে নিচে নেমে যায়।
"তোমরা পার্টি এনজয় করো। আমি দেখছি ওকে।" ইশিকা সবার উদ্দেশ্যে বলে ফ্যাট থেকে দ্রুত পায়ে বেড়িয়ে যায়।

এদিকে ইশিকা বারান্দা দিয়ে যেতে যেতে রাহুলে নাম ধরে ডাকতে থাকে। এদিক ওদিক তাকিয়ে রাহুলকে খোঁজে। অবশেষে দেখতে পায় রাহুল নিচে নেমে একটা পোষ্টের গায়ে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ইশিকা দ্রুত পায়ে সিঁড়ি দিয়ে নেমে পৌঁছে যায় রাহুলের কাছে।
রাহুলের কাঁধে হাত রেখে ইশিকা জিজ্ঞাসা করে,"রাহুল তোমার কী হয়েছে?"
রাহুল থমথমে মুখ নিয়ে ইশিকার দিকে তাকিয়ে বলে,"ইশি আমি বাড়ি যাবো প্লিস।"
ইশিকা ঘাড় নাড়িয়ে গাড়ির দিকে এগিয়ে যায়। গাড়ির দরজা খুলে ঢুকে গাড়িতে স্টার্ট দেয়। রাহুর ওর পিছু পিছু গিয়ে পাশের সিটে বসে পড়ে।
বাইরের আবহাওয়া খুব ভালো ছিল। কিছুক্ষন আগে এক পসলা বৃষ্টি হয়ে যাওয়ায় ঠান্ডা বাতাস বইছিল। রাহুল গাড়ির জানালার কাঁচ খুলে দেয় আর দরজার দিকে হেলান দিয়ে ঠান্ডা বাতাস মেখে নিতে থাকে নিজের শরীরে।
প্রায় কুড়ি মিনিটের রাস্তা পার হয়ে যায়। রাত হয়ে যাওয়ায় ট্রাফিকও কম ছিল রাস্তায়। গাড়ি জোরে চালানো যেত। কিন্তু ইশিকা খুব আস্তে গাড়ি চালাচ্ছিল।
এতক্ষন ধরে চুপচাপ বসে থাকতে থাকতে ইশিকা অস্বস্থি বোধ করছিল। অবশেষে রাহুলকে না জিজ্ঞাসা করে থাকতে পারে না,"রাহুল তোমার কী হয়েছে? আমাকে বলো।"
রাহুল ইশিকার দিকে না তাকিয়েই বলে, "কিছু হয়নি।"
ইশিকা রাহুলকে আর ঘাঁটাবার সাহস পায় না। বুঝতে পারে রাহুলের মনের অবস্থা। তাই কথা না বাড়িয়ে গাড়ি চালানোর দিকে মন দেয়।
অবশেষে গাড়ি এসে পৌঁছোয় রাহুলের বাড়ির সামনে। কিন্তু রাহুলের এটা হুঁস ছিল না। অন্যমনস্ক হয়ে কোথায় যেন হারিয়ে ছিল। ইশিকা রাহুলের কাঁধে হাত দিয়ে আস্তে করে ঠেলা দিয়ে ডাকে,"রাহুল তোমার বাড়ি এসে গেছে।"
"ওহ্ সরি আমি বুঝতে পারিনি।" ইশিকার কথায় একটু চমকে উঠে রাহুল বলে। তারপর গাড়ির দরজা খুলে গাড়ি থেকে নেমে যায়। ইশিকা ভেবেছিল রাহুল ওকে আরও কিছু বলবে। কিন্তু রাহুলকে চলে যেতে দেখে ইশিকার মুখ শুকিয়ে যায়। তারপর গাড়ির দরজা বন্ধ করতে যায়।
"ইশি" রাহুল আবার ফিরে এসে ইশিকার কানের কাছে বলে। ইশিকা চমকে উঠে সামনে তাকিয়ে দেখে রাহুল। ইশিকার মন আবার খুশিতে ভরে যায়।
"তোমার যেমন ভালোবাসা চাই, তুমি সেরকমই পাবে। আমি তোমার সাথে আছি চিরকাল। না মানে, আমরা সবাই তোমার সাথে থাকবো।" বলে রাহুল দ্রুত পায়ে গেট পেরিয়ে বাড়ির ভিতর অদৃশ্য হয়ে যায়। ইশিকা কিছুক্ষন ভাবতে থাকে যে রাহুল কী বলে গেল। তারপর মনে পড়ে যায় আজ সকাল থেকে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর কথা। একটা লাজুক হাঁসি বেরিয়ে আসে ইশিকার ঠোঁট চিড়ে। তারপর গাড়ি স্টার্ট করে রওনা দেয় নিজের গন্তব্যে।
[+] 1 user Likes ronylol's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অন্তিম উদ্দেশ্য - by ronylol - 23-03-2019, 12:51 PM



Users browsing this thread: 3 Guest(s)